উচ্চ রক্তচাপ
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে মস্তিষ্ক। শারীর-বৃত্তীয়ভাবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোর উপর আধিপত্য থাকে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের। পেশী কার্যকলাপের ধারা বজায় রাখা এবং হরমোন নিঃসরণের মতো কার্যকলাপ নির্ভর করে এর সক্রিয়তার উপর। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এর কার্যকারিতার অসামঞ্জস্যতা বিরূপ প্রভাব ফেলে সারা শরীরের ওপর। এমনি একটি স্বাস্থ্য জটিলতা মস্তিষ্কে রক্তপাত, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে মৃত্যু ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগের নিরসণকল্পেই আজকের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিবন্ধ। চলুন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণ ও লক্ষণসহ এর প্রতিরোধের উপায়গুলো জেনে নেই।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ কী
ট্রমা বা বাহ্যিক ভয়াবহ কোন আঘাতের কারণে রক্ত প্যারেনকাইমা বা মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোকে উদ্দীপিত করে। এতে করে টিস্যুগুলো ফুলে যায়। এই অবস্থার নাম সেরিব্রাল এডিমা। এ সময় রক্ত জমাট বেধে হেমাটোমার সৃষ্টি করে। ফলে কাছাকাছি অন্যান্য টিস্যুতে চাপ ছড়িয়ে পড়ে মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে। এতে করে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষগুলোকে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
মাথার খুলির মধ্যে সংঘটিত এই ঘটনাকে সামগ্রিক ভাবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বলা হয়ে থাকে। চিকিৎসা শাস্ত্রে এটি ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (আইসিএইচ), হেমোরেজিক স্ট্রোক বা ব্রেন হেমোরেজ নামে পরিচিত।
এই রক্তপাত মাথার খুলির ভেতরে বিভিন্ন স্থানে ঘটতে পারে। যেমন- মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে, মস্তিষ্ক ও একে ঘিরে আচ্ছাদিত ঝিল্লির মধ্যে অথবা ঝিল্লির স্তরগুলোর মধ্যে।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
মস্তিষ্কে রক্তপাত কাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
সেরিব্রাল রক্তপাত বিশেষ করে পুরুষ এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি ঘটে। আক্রান্তদের প্রায় ৪৪ শতাংশই এক মাসের মধ্যে মারা যায়। ৮৫ বা তদূর্ধ্ব বয়স্কদের আইসিএইচ হওয়ার সম্ভাবনা মধ্যবয়স্কদের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ গুণ বেশি। এছাড়া নিয়মিত ধূমপায়ীদেরও মস্তিষ্কেও এমন রক্তপাতের জন্য সহায়ক পরিবেশ বিরাজ করে।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণ
মাথায় ভয়াবহ আঘাত
৫০ বছরের কম বয়সীদের মস্তিষ্কে রক্তপাতের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল বাহ্যিক আঘাত। সাধারণত সড়ক দুর্ঘটনা, কোথাও পড়ে যাওয়া, খেলাধুলা সংক্রান্ত আঘাত, বা সহিংসতা বা হামলায় মাথায় গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ
সেরিব্রাল হেমোরেজের ক্ষেত্রে আরও একটি শ্রেণী অনেক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। আর সেটি হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ সম্পন্ন ব্যক্তিদের শ্রেণী। অনেক সময় নিয়ে এই অবস্থার উদ্ভব হলেও এটি রক্তনালীর দেয়ালকে ভয়ঙ্কর ভাবে দুর্বল করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
রক্ত জমাট বাধা
মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাধলে রক্তনালী ভেঙ্গে ভেতরটা রক্তে ভরে গিয়ে ধমনী ব্লক করে দেয়। ফলে রক্ত মস্তিষ্কের বাইরে বেরতে না পেরে রক্তের কোষগুলো ভেঙে মস্তিষ্কের টিস্যুতে ছড়িয়ে পরে। ফলে পর্যাপ্ত অস্কিজেন না পাওয়ায় মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
অ্যানিউরিজম
এটি মূলত রক্তনালীর প্রাচীরের একটি সমস্যা, যেটি হলে প্রাচীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যায়। এই ফোলা অংশ ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত ঘটতে পারে, যেটি সরাসরি স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।
আর্টেরিওভেনাস ম্যালফর্মেশন্স
রক্তনালীর এই অবস্থাটি মূলত ধমনী এবং শিরাগুলোর মধ্যকার সংযোগস্থলগুলোতে চিড় ধরাকে বোঝায়। রক্তনালী যতই দুর্বল হতে থাকে মস্তিষ্কের মধ্যে ও তার চারপাশে ততই এই সমস্যাটি বাড়তে থাকে।
অ্যামাইলয়েড অ্যাঞ্জিওপ্যাথি
এটি মস্তিষ্কের রক্তনালীর দেওয়ালগুলোতে অ্যামাইলয়েড-বিটা প্রোটিন জমা হওয়াকে নির্দেশ করে। এই অস্বাভাবিকতা কখনও কখনও বার্ধক্য এবং উচ্চ রক্তচাপের ফলস্বরূপ ঘটে থাকে। এটি চূড়ান্ত অবস্থায় যাওয়ার আগে অনেক ছোট ছোট হেমোরেজের কারণ হতে পারে, যেগুলোর অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির অলক্ষ্যেই থেকে যায়।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
রক্ত-সংক্রান্ত ব্যাধি
হিমোফিলিয়া এবং সিকেল সেল অ্যানিমিয়া রোগের কারণে রক্তের প্লেটলেট এবং জমাট বাঁধার মাত্রা হ্রাস পায়। রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়াটাও আইসিএইচ-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
যকৃতের রোগ
যখন যকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন বিষক্রিয়া রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষগুলোতে থাকে অ্যামোনিয়া এবং ম্যাঙ্গানিজ, যেগুলো স্নায়ু কোষের ক্ষতি করতে পারে।
ব্রেন টিউমার
এটি একটি ক্যান্সার যা কতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে নির্দেশ করে। এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু থাকে সুপ্ত, যেগুলোকে ম্যালিগন্যান্ট বলা হয়ে থাকে। টিউমার মস্তিষ্কে শুরু হতে পারে, আবার শরীরের অন্য কোথাও শুরু হয়ে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
৭ মাস আগে
উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের প্রধান কারণ: বক্তারা
বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের প্রধান ঝুঁকির কারণ এবং বাংলাদেশে প্রতি বছর ২ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগের এই প্রতিরোধযোগ্য কারণটি মোকাবিলা করা যেতে পারে।
শনিবার (০২ মার্চ) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে 'ইমপ্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ (এনএইচএফবি), প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রেজলভ টু সেভ লাইভসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও এবং ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের সাবেক পরিচালক ড. টম ফ্রিডেন বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। সংক্রামক রোগে মৃত্যু ঠেকাতে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এখন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধেও বিশ্বনেতা হতে পারে দেশটি। চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২০ গুণ বৃদ্ধি এবং চিকিৎসার মান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ নাটকীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। রক্তচাপের চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রাথমিক যত্ন পরিষেবাগুলোকে শক্তিশালীকরণে বিনিয়োগ করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক প্রতিরোধ এবং বাঁচাতে পারে অনেক জীবন।’
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
তিনি বলেন, বয়স্ক জনসংখ্যা, দ্রুত নগরায়ণ, অলস জীবনযাত্রা বৃদ্ধি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণ এবং অন্যান্য আর্থ-সামাজিক ও জীবনযাত্রার কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য উচ্চ রক্তচাপজনিত অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দ্রুত বাড়ছে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে আরোপিত অসংক্রামক রোগের বোঝা হ্রাস করতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার মধ্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা এবং এই প্রচেষ্টা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।
সোডিয়ামকে উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান ঝুঁকির কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ড. ফ্রাইডেন বলেন, 'সরকারি নীতি সোডিয়াম গ্রহণ কমাতে পারে এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে পারে। বিশ্বব্যাপী, অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়। এই পাঁচজনের মধ্যে চারটিই ঘটেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং এনএইচএফবি ২০১৮ সাল থেকে প্রাথমিক পরিচর্যায় উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং ফলোআপ জোরদার করার লক্ষ্যে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য অলাভজনক সংস্থা আরটিএসএল’র সঙ্গে সহযোগিতা করছে।
আরও পড়ুন: সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করবে
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, 'বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ‘বর্তমানে ১৭১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ কার্যক্রম চলমান এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার ২৬ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হওয়ার অর্থ হবে সারা বাংলাদেশে আরও বেশি মানুষের জীবন উন্নত ও বাঁচানো।’
জিএইচএআই তার অংশীদারদের সঙ্গে বাংলাদেশে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যও পরামর্শ দেয়। জিএইচএআইয়ের বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘স্বাস্থ্য কার্যক্রম অবশ্যই ব্যাপক হতে হবে। আমরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওষুধের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি এবং লবণের ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রগতিকে সমর্থন করতে আগ্রহী।’
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।আরও পড়ুন: বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দিবে কমিউনিটি ক্লিনিক: সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা
৮ মাস আগে
বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দিবে কমিউনিটি ক্লিনিক: সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা
সম্প্রতি সরকার কর্তৃক গৃহীত কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপ মোকাবিলায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজনে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর বিএমএ ভবনে ‘হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’- শীর্ষক এক সাংবাদিক কর্মশালায় এ তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২২জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, সিদ্ধান্তটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশব্যাপী উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ ও মৃত্যু কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে ওষুধের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে এ খাতে বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।
এতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ডব্লিউএইচও এর গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশন ২০২৩ এর তথ্য অনুযায়ী- বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছে; যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ।
কর্মশালায় এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জাকির হোসেন জানান, ‘আগামী অর্থবছরে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল বিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের বলেন, ‘কেবল লবণ গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।’
উল্লেখ্য, ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রতি ৫ জনে ৪ জনই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায়না।
এক্ষেত্রে সেবার আওতা বাড়ানো হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৭ দশমিক ৬ কোটি মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হবে।
সভায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ওবায়দুল কবির এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
আরও পড়ুন: সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করবে
উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
১ বছর আগে
সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করবে
গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকা হালনাগাদ কমিটি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শনিবার প্রজ্ঞার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি ১৪ মে এক বৈঠকে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের জন্য "অ্যামালোডিপাইন ৫মিলি.’ এবং ডায়াবেটিসের জন্য ‘মেটফরমিন ৫০০ মিলি.’ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এতে বলা হয়েছে, এটি বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ব্যাপকতা মোকাবিলায় একটি বড় পদক্ষেপ।
এটি বলছে, বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপ ও উচ্চরক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ও মৃত্যু ক্রমশ বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক স্তরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ উপলব্ধ করার সিদ্ধান্ত উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য এই বিষয়ে একটি সাশ্রয়ী পদ্ধতি হতে পারে।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল: শেখ হাসিনার উদ্যোগ তুলে ধরে জাতিসংঘে রেজুলেশন গৃহীত
উল্লেখ্য, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এবং এর অংশীদার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা (নলেজ ফর প্রগ্রেস) বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে যাতে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধক ওষুধের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যায়। কমিউনিটি ক্লিনিকের বিদ্যমান ওষুধের তালিকা; উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে বহু মাস (২ থেকে ৩ মাস) হাইপারটেনসিভ ওষুধের প্রেসক্রিপশন এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমান করেছে যে বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ২৮ বিলিয়ন মানুষ (৩০-৭০ বছর বয়সী) উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে, যার দুই তৃতীয়াংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করে।
উচ্চ রক্তচাপ কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগের পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূয়সী প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে
উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রা অপেক্ষা বেশি হয়ে থাকে। প্রতিটি মানুষের নিত্য-নৈমিত্তিক কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে তার রক্তচাপের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এই পরিবর্তন কখনো এতটাই জটিল আকার ধারন করে যে, মানবদেহের ভেতরে ধমনীর প্রাচীরে দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত রক্তচাপের সৃষ্টি হয়। একটি স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা প্রতি পারদ চাপে ১২০/৮০ মিলিমিটারের মধ্যে থাকে। রক্তচাপকে এই মাত্রার মধ্যে রাখার জন্য কিছু কিছু খাবার ও পানীয়ের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস পরিত্যাগ করা জরুরি। চলুন, সেই করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
উচ্চ রক্তচাপে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত
লবণযুক্ত খাবার
উচ্চ রক্তচাপে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভূমিকা হচ্ছে লবণের, যার প্রধান উপাদান সোডিয়াম। বেশিরভাগ চিপস, ক্র্যাকার এবং পপকর্ন সোডিয়ামে ভরপুর থাকে। ১-আউন্স প্লেইন পটেটো চিপসে সোডিয়ামের পরিমাণ প্রায় ৫০ থেকে ২০০ মি.গ্রা. (মিলিগ্রাম)। একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে ২,৩০০ মি.গ্রা. বা এক চামচের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যে লবণযুক্ত খাবারগুলো প্রায় খাওয়া হয় সেগুলো হলো- রুটি, পনির পিজা, স্যান্ডউইচ, প্রোসেস করা মাংস, স্যুপ, এবং টাকোস।
আরো পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
চিনিযুক্ত খাবার
রক্তচাপ বাড়ানোর পেছনে কোন কোন ক্ষেত্রে চিনিযুক্ত খাবার লবণের চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। চিনি প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বাড়ায়। এছাড়া উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ যুক্ত খাবার রক্তচাপ বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ। এধরনের খাবারের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত মিষ্টি, বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত খাবার, পিনাট বাটার অন্যতম।
ট্রান্স বা স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার
একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য নির্ধারিত দৈনিক ক্যালোরির ৫ থেকে ৬ শতাংশের বেশি ক্যালোরি স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে আসা উচিত নয়। এধরনের খাবার এখন খুব বেশি দেখা যায় আর এর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
মিষ্টি খাবারের মধ্যে চকোলেট, টফি, কেক-পেস্ট্রি, পুডিং, এবং বিস্কুটে অনেক স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। লাল মাংস যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষে মাংস, আর প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন সসেজ, বার্গার এবং কাবাবের মধ্যে এ ধরনের ফ্যাট প্রচুর পরিমাণে থাকে। রান্নার চর্বি যেমন মাখন, ঘি, হাসের চর্বি থেকেও এই ফ্যাট আসে। এছাড়া তেলের মধ্যে আছে নারকেল তেল এবং পাম তেল আর পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, যেমন ক্রিম, দুধ, দই এবং পনিরও এধরনের খাবারের অন্তর্ভূক্ত।
আরো পড়ুন: হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
সস এবং মশলাদার খাবার
যারা অতিরিক্ত মশলাদার খাবার পছন্দ করেন তাদেরকে সাবধান হতে হবে। অতিরিক্ত মশলা মানেই উচ্চ পরিমাণে চিনি বা সোডিয়ামের যোগান। অনেক সময় নোনতা স্বাদের না হওয়া সত্ত্বেও মশলাগুলোতে সোডিয়াম ভরপুর থাকতে পারে। বেশিরভাগ টিনজাত টমেটো সস ও কেচাপ, পাস্তা সস, টমেটোর রস, চিলি সস, ও সয়া সসে সোডিয়াম বেশি থাকে।
আচারযুক্ত খাবার
আচারযুক্ত খাবার লবণের একটি ভালো উৎস। আচার তৈরির প্রক্রিয়াটাই এমন যে, এখানে খাবার লবণের সাথে অন্যান্য স্বাদ বর্ধক উপাদান মিশিয়ে খাবার সংরক্ষণ করা হয়। এই কারণে আচারযুক্ত খাবারে প্রায়শই লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। তাছাড়া খাবার লবণ যে কোন খাবারকে ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং এর মাধ্যমে খাবারটি দীর্ঘ সময় ধরে খাবারের উপযুক্ত থাকে। যাদের প্রায় আচার খাওয়ার অভ্যেস তাদের উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বেশি।
আরো পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
উচ্চ রক্তচাপে যে পানীয়গুলো এড়িয়ে চলা উচিত
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন কফি, সোডা এবং এনার্জি ড্রিংক্স শরীরে অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণের মাধ্যমে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। অনেকেরই সাত সকালে ক্যাফেইন নেয়ার অভ্যেস আছে। এ বিষয়টি তাদের খেয়াল রাখা উচিত যে ক্যাফেইন গ্রহণটি নিমেষেই আসক্তিতে পরিণত হতে পারে।
আর ইতোমধ্যে যারা কফির প্রতি আসক্ত তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য এখনি সাবধান হতে হবে। কেননা এক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের ঘটনাগুলো প্রথমে অস্থায়ী থাকে তারপর ধীরে ধীরে জটিল সমস্যার সৃষ্টি করবে। সারাদিনে একবার এক কাপ কফি তেমন ক্ষতিকর কিছু নয়। তবে কফি দিয়ে দিন শুরুর পর দুপুরের খাবারের সাথে ক্যাফেইনযুক্ত সোডা এবং বিকেলে এনার্জি ড্রিংক নেয়া সব মিলিয়ে দিনটিতে বিপজ্জনক মাত্রার ক্যাফেইন সরবরাহ করতে পারে।
চিনিযুক্ত পানীয়
লেবুর শরবতে হালকা চিনি তেমন ক্ষতিকর নয়। এমনকি সপ্তাহে দু’একবার চিনি একটু বেশি দিয়ে কোন মিষ্টি শরবত পান করাটা সমস্যা করবে না। কিন্তু শরীরে চিনির এই প্রবেশটা নিয়মিত হতে থাকলে রক্তচাপের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। এমনকি, অনেক চিনিযুক্ত পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা রক্তচাপকে অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়িয়ে তুলতে পারে। উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপযুক্ত সোডা এবং ফলের রস এই পানীয়ের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত।
আরো পড়ুন: মধু কি সত্যি অমৃত?
দোকানের স্যাকারিন দেয়া ফলের জুসগুলো সাময়িকভাবে গলা ঠান্ডা করলেও তা সামগ্রিকভাবে শরীরকে দুর্বল করে ফেলে। প্রতিদিন যে কোন কাজে বা খেলাধুলার সময় এগুলোর একটি করে পান করা শরীরে প্রচুর চিনির যোগান দেয়। ফলে বেশ স্বল্প হারে বাড়তে থাকে রক্তচাপ। এরকম মিষ্টি স্বাদের জুস বা কার্বনেটেড পানীয় দিনে ৩৫৫ মিলিলিটারের বেশি পান করা মানেই শরীরে রক্তচাপের ভারসাম্য নষ্ট করা।
অ্যালকোহল
অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন নিশ্চিত ভাবে রক্তচাপের মাত্রা ছাড়িয়ে দিতে পারে। যারা রক্তচাপ সহ অন্যান্য রোগের জন্য নিয়মিত ঔষধ খাচ্ছেন তাদের শরীরের জন্য অ্যালকোহল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। কারণ অ্যালকোহল ওষুধগুলোকে রোগ প্রতিরোধে সক্রিয় হতে দেয় না। এভাবে একসময় ঔষধগুলো কার্যকারিতা হারায়।
সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, ঔষধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শরীরে থেকে যাওয়ার দরুণ ঔষধ খাওয়ার ফলে উল্টো হিতে বিপরীত ঘটে। এছাড়াও অনেক অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়তে চিনি এবং ক্যালোরির পরিমাণ এতটাই থাকে যে, তা অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতার কারণ হয়ে দাড়ায়। এ সবকিছু একত্রে উচ্চ রক্তচাপের দিকে ধাবিত করে।
আরো পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
উচ্চ রক্তচাপের সময় যে অভ্যাসগুলো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে
অতিরিক্ত ওজন এবং পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাব
যারা নিজেদের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভাবছেন না তাদের জন্য রক্তচাপ অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ নিয়ে আসতে পারে। একটি স্বাস্থ্যকর ওজন শুধু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণই করে না; পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যারও সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। নিয়মিত শরীরচর্চা এরকমাত্র উপায় এই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার। একটি প্রাপ্তবয়স্ক দেহে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা মাঝারি ব্যায়ামের চাহিদা থাকে। অল্প সময়ের জন্য ম্যারাথন হাঁটা হৃদপিণ্ডের স্পন্দন দ্রুত করে এবং ফুসফুসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি অক্সিজেন প্রবেশ করে।
ধূমপান
প্রতিটি সিগারেট ধূমপান শেষ করার পর কয়েক মিনিটের জন্য রক্তচাপ বাড়ায়। এভাবে ঘন ঘন ধূমপান রক্তচাপ বাড়ানোর বিরতিটাকে কমিয়ে এনে বিপদের কারণ হতে পারে। তাই বলে দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ধূমপান মানে এই নয় যে সে সময়টাতে ফুসফুস আবার তার আগের সুস্থতায় ফিরে আসবে।
আরো পড়ুন: এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কার্যকরী উপায়
অল্প ধূমপানও ধীরে ধীরে উচ্চ রক্তচাপের অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে মারা না গেলেও জীবনের আয়ু তো কমেই; পাশাপাশি শেষ বয়সে বিধ্বস্ত ফুসফুস নিয়ে মৃত্যুর দিন গুণতে হয়। যারা কখনো ধূমপান ছাড়েন নি, তাদের চেয়ে যারা ধূমপান ত্যাগ করেন তারা বেশি দিন বাঁচতে পারেন।
দীর্ঘ সময় যাবত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকা
দুশ্চিন্তা শুধুমাত্র মানসিক সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর দৈহিক প্রভাবও বেশ ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় ফলাফল হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। আর এটিই দেহের মধ্যে অনেক বিপজ্জনক রোগের ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে পারে। অনেকে দুশ্চিন্তার কারণে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, অ্যালকোহল পান বা ধূমপানের দিকে অগ্রসর হন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সারা দেহ উচ্চ রক্তচাপের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। জীবনের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব, বদরাগ, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাও দুশ্চিন্তার সাথে সম্পৃক্ত। এগুলোর কারণেও রক্তচাপ দীর্ঘ সময় ধরে মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় থাকতে পারে।
শেষাংশ
উচ্চ রক্তচাপের সময় ক্ষতিকর খাবার ও পানীয়গুলো এড়িয়ে চললে রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে । এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এই উদ্যোগকে ফলপ্রসু করতে প্রয়োজন জীবন ধারণ পদ্ধতি তথা কিছু উপরোক্ত অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করা। এ কথা অনস্বীকার্য যে, রাতারাতি সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হওয়া সম্ভব নয়। এখানে প্রয়োজন দীর্ঘ দিনের পরিশ্রম, ধৈর্য্য ও আত্মবিঃশ্বাস। যৌবন থেকে বার্ধক্যে পদার্পণের পরেও সুস্থ দেহ ও মন নিয়ে দিন যাপনে স্বাস্থ্যচর্চার কোন বিকল্প নেই।
আরো পড়ুন: ‘মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়’
২ বছর আগে
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি অবস্থা যেখানে মানবদেহের অভ্যন্তরে ধমনীর প্রাচীরে রক্তের দীর্ঘমেয়াদী অতিরিক্ত চাপের ফলে চূড়ান্তভাবে হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। রক্তচাপ হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করা এবং ধমনী সরু হওয়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। পারদের মিলিমিটারে রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকসহ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয়গুলো নিয়ে এবারের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ফিচার।
যে খাবারগুলো উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
১। সাইট্রাস ফল
জাম্বুরা, কমলা এবং লেবুর মত সাইট্রাস ফলগুলোতে রক্তচাপ-হ্রাসের শক্তিশালী প্রভাব আছে। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ এবং উদ্ভিদ যৌগ রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপের মতো হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি হ্রাস করে যা হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
২। তরমুজ, কলা
তরমুজ ও কলা হলো পটাসিয়ামের আধার যা একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। এটি শরীরকে সোডিয়াম থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীতে চাপ কমায়।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
৩। শিম
শিম ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। খনিজ উপাদানে ভরপুর এই সবজি রক্তনালীগুলোকে শিথিলকরণে ভূমিকা রাখে।
৪। বাধাকপি
এটি সেই সুপারফুডগুলোর মধ্যে একটি যেগুলোতে পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রচুর ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে। এগুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়।
৫। রসুন
রসুন প্রাকৃতিক ওষুধের নামান্তর। এই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকে রক্তনালীগুলোর প্রসারণকে পরিবর্তন করে, ফলে রক্তচাপও পরিবর্তন হয়। কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুনের বেশ সহজলভ্যও বটে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
৬। মটরশুটি এবং মসুর ডাল
মটরশুটি এবং মসুর ডালের ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২ বছর আগে
কী করলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে উচ্চ রক্তচাপ?
অনেকেরই আজকাল দুবেলা ওষুধ খাওয়ার পরেও নিয়ন্ত্রণে থাকছে না উচ্চ রক্তচাপ। এক্ষেত্রে ওষুধের চেয়েও বেশি কাজে দেয় লাইফস্টাইল পরিবর্তন। জীবনযাপনে খুব ছোট ছোট পরিবর্তন এনে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় নিজের শরীর-মন।
৪ বছর আগে