শীতের রোগ
রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী, ৬ শিশুর মৃত্যু
দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঝেঁকে বসেছে শীত। এরই সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অন্তত ৬ জন।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডাক্তার মেশকাতুল আবেদ বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ৮ জেলায় শিশু ও বৃদ্ধসহ আরও ৪৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শীতে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
এদিকে, রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডেই গত সাত দিনে ৬১৩ জন ভর্তি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
রমেক হাসপাতালে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তাছাড়া হাসপাতালে বেডের তুলনায় রোগী অনেক বেশি। দূর-দূরান্ত থেকে এই হাসপাতালে আসছেন রোগীরা। অন্যদিকে সংকট রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের। সরবরাহ না থাকার অজুহাতে এক বেলা পেলে আরেক বেলা কিনতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
এদিকে, ওই হাসপাতালের ১০ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে শয্যার তুলনায় চারগুণ শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। আজ (বুধবার) সকালে ওই ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, এক বেডে চারজন শিশু রাখা হয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বেড রয়েছে ৪০টি। তার বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছে ১৭৮ জন।
৬ ঘণ্টা আগে
শীত ও কুয়াশায় বিপর্যস্ত লালমনিরহাট, চরম দুর্ভোগে জনজীবন
কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষের জীবন। ভোর হতেই জেলা সদরসহ পাঁচটি উপজেলাজুড়ে কুয়াশার ঘনত্ব কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে। রাস্তা, মাঠ ও বসতবাড়ি ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত এখানে শুধু একটি ঋতু নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্য টিকে থাকার কঠিন এক সংগ্রামে পরিণত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্যমতে, বুধবার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতভাগ এবং গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
শীত ও কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন তিস্তা নদীতীরবর্তী চরাঞ্চল ও খোলা প্রান্তরের বাসিন্দারা। টিনের চালাঘর, ফাঁকা দেওয়াল আর কয়েক টুকরো পুরোনো কাপড়ই তাদের শীত নিবারণের একমাত্র সম্বল। গভীর রাতে কুয়াশা শিশিরের মতো নয়, বরং বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে এখানে। এতে ভিজে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও কাপড়চোপড়; বেড়ে যাচ্ছে শীতের তীব্রতা।
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের চরের বাসিন্দা আব্দুল হাই বলেন, এত ঠান্ডায় হাত-পা শক্ত হইয়া যায়। রাইতে ঠিকমতো ঘুম আইসে না। নদীপাড়ের মানুষ, বড় কষ্টে আছি। আর খুব বেশি বাতাস আইছে বাহে।
জেলা সদর, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম, আদিতমারী, কালীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে সকাল থেকেই কুয়াশার কারণে চারপাশের তেমন কিছুই দেখা যায় না। দিনের বেলায়ও যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ভোরে কাজে বের হওয়া দিনমজুর, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
আদিতমারী রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অটোরিকশাচালক সামছুল হক (৫৭) বলেন, শীতে শরীর নড়ে না, তাও সকাল হইলেই গাড়ি নিয়ে বাহির হইতে হয়। কাজ না করলে খাবার জুটে না।
শীতের সঙ্গে সঙ্গে রোগবালাইও বাড়ছে জেলাজুড়ে। জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। তবে দরিদ্র পরিবারের অনেকেরই প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই।
আদিতমারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আজমল বলেন, শীতে স্বাস্থ্যের পরিচর্যায় শিশু ও বয়স্কদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ঠান্ডা এড়িয়ে চলা এবং অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
৯ ঘণ্টা আগে
শীতে বিপর্যস্ত চুয়াডাঙ্গা, শীতজনিত রোগে বেড়েছে ভোগান্তি
দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমেই চলেছে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সকালবেলায় সূর্যের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা কমছে না। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষ। এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। চলতি মৌসুমে এটিই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
শীতের প্রভাবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ জন বৃদ্ধ মানুষ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশাপাশি ৩০০ থেকে ৪০০ শিশুও চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন।
গ্রাম থেকে জেলা শহরে কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিকরা জানান, ভোর থেকে দুপুর ২টা–৩টা পর্যন্ত কাজ করতে হলেও প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। হিমেল বাতাসে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের।
স্থানীয় কৃষক আজিম উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির রোগী। কৃষিকাজ করেই তার জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। সকালে মাঠে কাজ করতে পারেন না। ঠান্ডার মধ্যে কাজ করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরতে হচ্ছে। তবুও পেটের দায়ে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভবনা রয়েছে। মাসের শেষের দিকে কিংবা নতুন বছরের শুরুতে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
চুয়াডাঙ্গায় রোটা ভাইরাসের তাণ্ডব, ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৩৬৬
চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত ১৬ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই শিশুসহ ১ হাজার ৩৬৬ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালের আউটডোরে গড়ে আরও ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন।
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা করাকেই রোগ বিস্তারের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকেরা। তবে আতঙ্কিত না হয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ধারণক্ষমতার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হতে দেখা যাচ্ছে। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় অনেক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীকে ঠান্ডা মেঝেতেই শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
৪ দিন আগে