অধ্যাপক আবু সুফিয়ান
অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের ‘বীর প্রতীক’ পদবি বাতিল
খুলনার দৌলতপুরের অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নাম থেকে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ভিত্তিতে যুক্ত করা ‘বীর প্রতীক’ পদবি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কিনা—তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একটি বেসামরিক গেজেট প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে তার স্ত্রী সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান একটি ডিও লেটারের মাধ্যমে স্বামীর নামের শেষে ‘বীর প্রতীক’ যুক্ত করার আবেদন করেন। ওই চিঠিতে অধ্যাপক আবু সুফিয়ান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন—এমন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়। পাশাপাশি দাবি করা হয়, তিনি যুদ্ধকালীন শরণার্থীদের দুর্দশা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে কথিকা হিসেবে পাঠ করতেন।
জামুকার বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিও লেটারের ভিত্তিতেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের ১৫ জুন একটি সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামের শেষে ‘বীর প্রতীক’ যুক্ত করে।
তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ১০২য় সভায় তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ২০২৩ সালের ১৫ জুন জারি করা সংশোধিত প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হবে এবং অধ্যাপক আবু সুফিয়ান প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না, সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে তাকে নোটিশ দেওয়া হবে।
জামুকা আরও জানায়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৯৭৩ সালে ৪৭৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে চারটি রাষ্ট্রীয় খেতাব—বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক প্রদান করে গেজেট প্রকাশ করে। ওই তালিকায় অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নাম নেই এবং পরবর্তী সময়ে নতুন করে কাউকে এসব রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া হয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের সংশোধিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামের শেষে ‘বীর প্রতীক’ যুক্ত হওয়ায় জনমনে যে ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল, পদবি বাতিলের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটানো হলো।
১৯ ঘণ্টা আগে