বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশকে ক্লিন এয়ার প্রকল্পে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্টে (বিসিএপি) ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক।
এ প্রকল্পে আইডিএ ক্রেডিটের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে, পাশাপাশি জাতীয় বায়ু মান নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিচ্ছন্ন রান্নার উদ্যোগগুলোর জন্য সম্ভাব্য অনুদানও দেওয়া হবে।
রবিবার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ বিষয়ক কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা 'ব্লু নেটওয়ার্ক' তৈরিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ঢাকার খালগুলো পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার আহ্বান জানান।
তিনি ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে সহায়তার পাশাপাশি জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) বাস্তবায়নে সহায়তার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন।
পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সমন্বিত পদ্ধতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন রিজওয়ানা।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার উন্নত পরিবেশ নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে বৈশ্বিক সেরা অনুশীলনের সঙ্গে এই প্রচেষ্টার সমন্বয়ে তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে তুলতে পারিনি: উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ
আবদৌলায়ে সেক দীর্ঘমেয়াদি টেকসই লক্ষ্য অর্জনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কৌশলগত বিনিয়োগের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন।
বৈঠকে পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উভয় পক্ষ বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যতের দিকে কাজ করার পারস্পরিক লক্ষ্য নিয়ে পরিবেশগত শাসন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় গভীর সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনা শেষ হয়।
আরও পড়ুন: সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে: উপদেষ্টা
১ মাস আগে
বাংলাদেশের সংস্কারে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক: অজয় বাঙ্গা
বাংলাদেশে আর্থিক খাত সংস্কারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
নিউইয়র্ক সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু বাঙ্গা জানান, কমপক্ষে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার নতুন ঋণ দেওয়া হবে। আর আগে প্রতিশ্রুত দেড় বিলিয়ন ডলার নতুন করে যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে পাকিস্তানের সমর্থন চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিশ্বব্যাংক ডিজিটাইজেশন, তারল্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে সংস্কারে সহায়তা করবে।
অজয় বাঙ্গার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত ব্যাপক সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের সমর্থন চান অধ্যাপক ইউনূস।
বিশ্বব্যাংককে ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে সৃজনশীল হতে বলেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’
দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতে সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগাভাগি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে আরও ছিলেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী চীন
১ মাস আগে
পাট, বস্ত্র ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিশ্বব্যাংককে বিনিয়োগের আহ্বান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াতের
পাট ও বস্ত্র এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিশ্বব্যাংককে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠককালে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব এবং দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অংশ। একটা সময় ছিল দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত ছিল পাট। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধিতে এ ধারায় কিছুটা ছেদ পড়লেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয়রোধে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীতে পানির অধিকার ও হিস্যা নিয়ে শিগগিরই ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: পানিসম্পদ উপদেষ্টা
উপদেষ্টা আরও বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব সোনালী ব্যাগ ও জুট জিও টেক্সটাইল বহুমুখী পাটপণ্য ইত্যাদি উদ্ভাবনের ফলে দেশে-বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের ৭০ ভাগ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় একটি খাত।
এম সাখাওয়াত বলেন, আমাদের ২৫টি সরকারি পাটকল ও ২৫টি বস্ত্রকল উৎপাদন কার্যক্রম কয়েক বছর পূর্বেই বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে মিলগুলোতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমাদের শিল্প কারখানাগুলো কৌশলগতভাবে যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। সে কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত সহজে এখানে বিনিয়োগ করতে পারে। এছাড়াও বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক শিল্প ক্রমশ উন্নতি করছে।
বিশ্ব বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মসলিন কাপড় একসময় জগৎ বিখ্যাত ছিল। সরকার মসলিনের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসলিন কাপড় তৈরির সুতা তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’ শুরু করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
উপদেষ্টা বলেন, জাহাজ নির্মাণ দেশের একটি সম্ভাবনাময় ও ক্রমবিকাশমান শিল্প। স্থানীয়ভাবে তৈরি জাহাজ রপ্তানি করার মাধ্যমেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাহাজ নির্মাণ প্রধান প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। বিশ্বব্যাংক দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক অঙ্গীকারাবদ্ধ। দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করায় আবদৌলায়ে সেক উপদেষ্টাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
এসময় তিনি বলেন, পাট, বস্ত্র, শিপিংসহ সব সেক্টরেই নতুন নতুন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয় এবং উপদেষ্টা চলমান প্রকল্পগুলোকে যথাসময়ে সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিকসহ মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নতুন যাত্রা সফল করতে বিদেশি বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা প্রধান উপদেষ্টার
১ মাস আগে
'আমাদের ওপর আস্থা রাখুন, আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত': ইউনূসকে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট
বিশ্বব্যাংক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন সংস্থাটির প্রধান বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, দুর্নীতি দূর এবং বিচার বিভাগের মতো ক্ষেত্রে মূল সংস্কার গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপে বৃহত্তর সমর্থনের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। এর জবাবে মার্টিন বলেন, ‘আমাদের উপর নির্ভর করুন। আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: জাতি পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান ইউনূস
রেইজার বলেন, সরকারের সংস্কার এজেন্ডায় বিশ্বব্যাংক 'উচ্ছ্বসিত' এবং তিনি মনে করেন 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সফর করা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এখানে অনেক প্রত্যাশা আছে।’
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ব্যাংকিং, কর, শুল্ক, ভ্যাট, ডিজিটালাইজেশন, দুর্নীতি প্রতিরোধের মতো পদক্ষেপের সংস্কারে সহায়তা করতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে ইউনূস বলেন, দুর্নীতি থেকে মুক্তি পেতে এবং নতুন করে শুরু করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের কাছ থেকে একটি বৃহত্তর ম্যান্ডেট পেয়েছে।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান বিদ্যমান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন থেকেই শুরু করতে চাই।এখন সংস্কারের মৌসুম।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ফিরে যেতে চাই না। অতীত সম্পূর্ণরূপে বাতিল। এটি একেবারে নতুন ক্ষেত্র।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, সরকার এ পর্যন্ত যেসব সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি, শ্রম সংস্কার ও যুবসমাজকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শ্রম সংস্কারে আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে সরকার। এতে বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্থানীয় উৎপাদকদের আন্তর্জাতিকভাবে অবস্থান বাড়াতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে কাজ করুন, বিশ্বে কার্যকর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ান: শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতি ড. ইউনূস
তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক ক্রীড়নক হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা এটি করতে চাই।’
সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রেইজার বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক এফডিআই দেশের জিডিপির প্রায় অর্ধেক শতাংশ এবং এটি এই অঞ্চলের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রাইজার বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা মানবিক সংকট এবং কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও ৭০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা লাখ লাখ তরুণের সমর্থনে আগ্রহী। তিনি বলেন, 'আমাদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।’
প্রধান আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা লুৎফে সিদ্দিকী; সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক; অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বৈঠকে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে: ড. ইউনূস
১ মাস আগে
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট
দুই দিনের সফরে বুধবার ঢাকায় এসেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম সারির উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার বেশিরভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহায়তায় বড় কর্মসূচি চলমান।
আরও পড়ুন: চলতি বছরের মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ: অর্থ উপদেষ্টা
১ মাস আগে
বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
বাংলাদেশকে ঋণ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, জরুরি সংস্কার, বন্যা মোকাবিলা, উন্নত বায়ুর মান এবং স্বাস্থ্যের জন্য চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার নতুন অর্থায়ন করতে পারে।
মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি নতুন এই সহায়তার কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডায় সহায়তা করার জন্য চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে ঋণ বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্যাংকটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রয়োজনে সহায়তা করবে উল্লেখ করে সেক বলেন, ‘আমরা আপনাকে যত তাড়াতাড়ি এবং যত বেশি সম্ভব সমর্থন করতে চাই।’
আরও পড়ুন: জাতি পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান ইউনূস
তিনি বলেন, নতুন প্রতিশ্রুতি ছাড়াও, বাংলাদেশের সব উন্নয়ন সহযোগীদের প্রধান উপদেষ্টার সহায়তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থাটি বিদ্যমান প্রোগ্রামগুলোতে আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত দেবে কি না তা পুনর্বিবেচনা করবে।
সেক বলেন, বিদ্যমান প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা হলে চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহজ শর্তে যে ঋণ ও অনুদান দেবে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ বলেন, সংস্কারগুলো সম্পন্ন হওয়া বাংলাদেশ এবং প্রতি বছর শ্রমবাজারে যোগ দেওয়া ২০ লাখ মানুষসহ তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ'।
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি হেডকে বলেন, বাংলাদেশের সংস্কারে অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের শিথিলতা প্রয়োজন এবং ১৫ বছরের 'চরম অপশাসনের' পর নতুন যাত্রায় সহায়তা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এই ভগ্নদশা থেকে আমাদের নতুন কাঠামো তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের দিকে নজর দিতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের অংশ হোন।’
আরও পড়ুন: একসঙ্গে কাজ করুন, বিশ্বে কার্যকর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ান: শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতি ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ স্বৈরশাসনের সময় দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশ থেকে চুরি করা কোটি কোটি ডলারের সম্পদ পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চুরি যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তি আপনাদের আছে।’ ‘দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ' গড়তে বাংলাদেশেরও বিশ্বব্যাংকের দক্ষতার প্রয়োজন হবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পেরে খুশি।’
তিনি বলেন, ব্যাংকটি বাংলাদেশকে ডেটা স্বচ্ছতা, ডেটা সম্পূর্ণতা, কর সংগ্রহে ডিজিটালাইজেশন এবং আর্থিক খাতের সংস্কারেও সহায়তা করতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার এবং বড় ধরনের সংস্কার করার এই সুযোগ হারাতে পারে না।
আরও পড়ুন: আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে: ড. ইউনূস
তিনি বলেন, 'একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না।’
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহের শহীদদের প্রতি শোক জানান সেক।
তিনি বলেন, ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা দেয়ালচিত্র ও ম্যুরাল দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে এমন দৃশ্য কোথাও দেখিনি।’
সেক বলেন ‘তাদের ক্ষমতায়ন করা দরকার।’
২ মাস আগে
চলতি বছরের মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বছর শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ের অর্থ বিভাগে বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক ম্যাথিউ এ ভার্গিসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান উপদেষ্টা।
ড. সালেহউদ্দিন দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে জরুরি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বিশ্বব্যাংকের দ্রুত আর্থিক সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, 'যেহেতু বিশ্বব্যাংক আমাদের বৃহত্তম বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার, তাই আমাদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা আকারে বিশেষ সহায়তা আশা করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, এসব সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন: প্রাইভেট বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার চাকরির বাজারের জন্য উদ্বেগপূর্ণ: বিশ্বব্যাংক অর্থনীতিবিদ
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত কীভাবে সংস্কার করা যায় তা নিয়ে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে এবং আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।’
বাংলাদেশ নতুন করে ২ বিলিয়ন ডলার তহবিল চেয়েছে, এমন খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন টাকার পরিমাণ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে বলেন, অর্থের পরিমাণ পরে চূড়ান্ত করা হবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বিশ্বব্যাংক সম্ভবত ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে পারে, যার মধ্যে নীতিগত সংস্কারের জন্য বিশেষভাবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এই আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে। সেগুলো হলো-
১. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনাদায়ী ঋণ আদায়ের জন্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।
২. ঋণের প্রকৃত উপকারভোগীদের চিহ্নিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন।
৩. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ফরেনসিক অডিটের সুযোগ নির্ধারণ করা।
৪. বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য একটি পৃথক বিভাগ তৈরি করা।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সংস্কারের প্রয়োজনে এই অর্থ সহায়তা পাওয়ার আশা করছে বলে জানিয়েছে এক সূত্র।
সংস্কারগুলো যাতে বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য হয় তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, 'সংস্কারগুলো বাস্তবায়নযোগ্য হতে হবে। না হলে কার্যকর করা সম্ভব হবে না এবং দাতাদের কাছ থেকেও সমর্থন পাওয়া যাবে না।’
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বৈঠকে দেশের আর্থিক অবকাঠামো সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ঋণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেলে এই প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
২ মাস আগে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে ও মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রা সংস্কার জরুরি: বিশ্বব্যাংক
কোভিড-১৯ মহামারি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, অর্থপ্রদানে ভারসাম্যের ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারি-পরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট হালনাগাদে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি কমাতে জরুরি মুদ্রা সংস্কার এবং একক বিনিময় হার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হবে। বৃহত্তর বিনিময় হারের নমনীয়তা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, 'দেশের শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনীতির মূলনীতি অতীতের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে।’
দ্রুত ও শক্তিশালী রাজস্ব, আর্থিক খাত ও আর্থিক সংস্কার বাংলাদেশকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং প্রবৃদ্ধি পুনরায় ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি বলেছে, অবকাঠামো ও মানব মূলধনে বিনিয়োগকে সমর্থন করার জন্য সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর পদক্ষেপসহ অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে সহনশীলতা গড়ে তুলতে কাঠামোগত সংস্কার মূল চাবিকাঠি হবে।
ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতি ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস করেছে। একইসঙ্গে কঠোর তারল্যের শর্ত, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, আমদানি বিধিনিষেধ এবং জ্বালানির দামের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধন থেকে উদ্ভূত উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে।
২০২৪ সালে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও ধীর হয়েছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগে ব্যাপক মন্দার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
ব্যাংকিং খাতে নন-পারফর্মিং লোনের (এনপিএল) অনুপাত বেশি এবং শিথিল সংজ্ঞা ও প্রতিবেদনের মান, সহনশীলতা ব্যবস্থা ও দুর্বল নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের কারণে ব্যাংকিং খাতের চাপ কমছে।
২০২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ঘাটতি কমানো হয়েছে এবং চলতি অ্যাকাউন্টে উদ্বৃত্ত রয়েছে।
প্রতিবেদনের সহযোগী অংশে 'জবস ফর রেজিলিয়েন্স' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছর দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অঞ্চল হিসেবে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালে ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ এবং ২০২৫ সালে ৬ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।’
দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি মূলত ভারত ও বাংলাদেশের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি। সেই সঙ্গে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পুনরুদ্ধারও।
কিন্তু এই দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি বিভ্রান্তিকর বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি এখনও প্রাক-মহামারি স্তরের নিচে রয়েছে এবং সরকারি ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল।
ক্রমাগত কাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলো টেকসই প্রবৃদ্ধিকে হ্রাস করার হুমকি দেয়, এই অঞ্চলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জলবায়ু প্রভাবের প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতাকে বাধাপ্রাপ্ত করে।
দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই বেসরকারি বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি দ্রুত মন্থর হয়ে পড়েছে এবং দ্রুত বর্ধমান কর্মক্ষম জনসংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এই অঞ্চলে যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার বলেন, ‘স্বল্প মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উজ্জ্বল থাকলেও ভঙ্গুর রাজস্ব অবস্থা ও ক্রমবর্ধমান জলবায়ু অভিঘাত হতাশা তৈরি করেছে।’
এতে বলা হয়, ‘প্রবৃদ্ধি আরও সহনশীল করতে দেশগুলোকে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।’
দক্ষিণ এশিয়ার কর্মক্ষম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ছাড়িয়ে গেছে।
কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার অংশ ২০০০ সাল থেকে হ্রাস পাচ্ছে।
২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মসংস্থানের অনুপাত ছিল ৫৯ শতাংশ, যেখানে অন্যান্য উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির অঞ্চলে এই হার ৭০ শতাংশ।
এটি একমাত্র অঞ্চল যেখানে গত দুই দশকে কর্মক্ষম পুরুষদের হার হ্রাস পেয়েছে এবং এই অঞ্চলে কর্মক্ষম বয়সের নারীদের কর্মসংস্থান সবচেয়ে কম অংশ রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রান্সিসকা ওনসোর্গ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া তার জনতাত্ত্বিক লভ্যাংশকে পুরোপুরি পুঁজি করতে এই মুহূর্তে ব্যর্থ হচ্ছে। সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যদি এই অঞ্চলে অন্যান্য উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির মতো কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার একটি বৃহত্তর অংশ যোগ হয়, তবে এর ফলাফল ১৬ শতাংশের বেশি হতে পারে।’
আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
৭ মাস আগে
সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
প্রথম অফিসিয়াল সফরে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) আনা বিজার্ড।
একদিনের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বিজার্ড।
আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের সৌজন্য সাক্ষাৎ
তার সঙ্গে থাকবেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তা করা প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম।
তখন থেকে বাংলাদেশকে ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যার বেশিরভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহায়তায় বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি চলছে।
আরও পড়ুন: শিশুদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ২১০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
৮ মাস আগে
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিতে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে আলোচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে চাওয়া এক বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে ৫৩৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ এবং ৪৬৫ মিলিয়ন অনুদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশের বাধ্য হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত: টিআইবি জরিপ
একই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের মতো বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য অনুদান হিসেবে দিতে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
পাশাপাশি, এই নীপিড়নমূলক মানবিক সংকট মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ন্যায্য ও যথাযথভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের মতো এমন একটি মানবিক সংকট মোকাবিলার সব ভার শুধু বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া পুরোপুরি অন্যায্য এবং তা মোটেই কার্যকর ও টেকসই সমাধান নয়।
এই সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ ও বৈশ্বিক সংহতি। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান ও বছরের পর বছর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ করেছে বাংলাদেশ।
এই বাড়তি অর্থনৈতিক বোঝা সম্মিলিতভাবেই বহন করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। নির্যাতনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে, এই অর্থনৈতিক বোঝার পুরোটাই অনন্তকাল ধরে বাংলাদেশের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
বিশেষত, যখন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেই মুহূর্তে এই ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত দ্বিগুণ উদ্বেগজনক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং রোহিঙ্গা সংকটসংশ্লিষ্ট সব খরচের সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ নয় অনুদান হিসেবে সহায়তা প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।’
বাস্তুহীন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অনুদান হ্রাসের প্রবণতায় টিআইবি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কাপুরুষের মতো তাদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে এবং এই বোঝা বহনের দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনুদান কমে যাওয়ার কারণে মাথাপিছু খাদ্য সহযোগিতায় বরাদ্দ প্রতি মাসে ১২ ডলার থেকে ৮ ডলারে নেমে এসেছে।
ড. জামান বলেন, ‘বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মিয়ানমারের বহুমাত্রিক অংশীদারত্ব, স্বার্থসংশ্লিষ্ট দেশসমূহের দায়িত্ব হলো রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের টেকসই সমাধান এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য মায়ানমারকে জবাবদিহির মুখোমুখি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো।’
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সমন্বয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য জাতিসংঘ এবং তার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করা জাতিসংঘের নৈতিক দায়িত্ব। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের উপর চলমান নিপীড়নসহ এই সংকটের মূল কারণসমূহ মোকাবিলায় জাতিসংঘকেও কাজ করতে হবে।’
পরিচালক আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনের অধিকার তাদের আছে। রোহিঙ্গা নিপীড়ন-গণহত্যা থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ বইতে গিয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি চাপে রয়েছে। এখন সেই চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে ঋণ নিতে বাধ্য করার মতো নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য কাজ আর কী হতে পারে!’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অ্যামনেস্টি,আরএসএফ ও টিআইবি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে টিআইবি মিথ্যাচার করেছে: মন্ত্রী
১১ মাস আগে