বিশ্বব্যাংক
ভৌগলিক নয়, অগ্রগতির দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে দেখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশকে কেবল একটি ‘ভৌগোলিক সীমানা’ হিসেবে না দেখে বরং অগ্রগতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ভৌগলিক সীমানার চেয়ে বৃহত্তর।
সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের নবনিযুক্ত দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিষয়ক নতুন বিভাগীয় পরিচালক জ্যাঁ পেসমে। সাক্ষাতকালে বিশ্বব্যাংকের প্রতি এই আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হলে, পুরো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল সমৃদ্ধ হবে। যদি আমরা নিজেদের বিচ্ছিন্ন করি, তবে আমরা অগ্রগতি করছি না। আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সুবিধা এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে। এটি আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন জুট। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে সাধুবাদও জানান তিনি।
আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতি নিজের গভীর ভালোবাসার কথা জানান জুট। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের স্মৃতিচারণও করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন সর্বোচ্চ অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, আশা রাষ্ট্রদূত মাসদুপুইয়ের
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে জুট বলেন, ‘আপনার এবং আপনার চমৎকার টিমকে ভালো কাজের জন্য সাধুবাদ।’
এ সময় বিশেষ করে আর্থিক খাতের অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কিছু বিষয় মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই যাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং বাংলাদেশের মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় অংশীদার হতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
এ ছাড়াও বৈঠকে গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জুট। একে তিনি ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত সবার জন্য একটি অত্যন্ত আবেগঘন মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন।
জুটের সমর্থন ও প্রশংসার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন দেশের অবস্থা ছিল একটি ধ্বংসস্তূপের মতো, যেন ভূমিকম্প-পরবর্তী এলাকা। আমাদের অভিজ্ঞতা না থাকার পরও সব উন্নয়ন অংশীদার আমাদের সমর্থন করেছে। এটি আমাদের অনেক সাহায্য করেছে; আমাদের আত্মবিশ্বাসী করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস গত জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘তরুণরা এই জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, গত জুলাইয়ে আমাদের তরুণরা যা করেছে তা ঐতিহাসিক। বিশেষ করে আমাদের মেয়েরা এবং নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা আজ জুলাই নারী দিবস পালন করছি, তাদের ত্যাগ যেন ব্যর্থ না হয়। তরুণরাই আমাদের দেশের মূল কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের উচিত তাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বেশিরভাগ দেশেই তরুণদের অভাব রয়েছে। তাই আমরা তাদের বলেছি, তাদের কারখানাগুলো এখানে নিয়ে আসতে। আমরা শিল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করব যাতে এটি একটি উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
আরও পড়ুন: নেপাল-বাংলাদেশের মধ্যে দৃড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশাবাদ
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নারীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা আপনাকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখব। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশে মেয়েদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি চালু হয়েছিল যা অন্যান্য দেশেও অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একইরকম সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটিতে নতুন পরিচালন ব্যবস্থা চালুর পর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এটি আরও কার্যকর করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নিট বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ করেছি, যা মূলত কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ ঋণ ও শক্তিশালী ইকুইটি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে হয়েছে।
১৪৩ দিন আগে
সরকারি ক্রয় পদ্ধতি ডিজিটাল করতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে সরকার
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সরকারি ক্রয় পদ্ধতি পুরোপুরি ডিজিটাল করা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ‘সরকারি সেবার উন্নয়নে ক্রয় আধুনিকীকরণ’(পিএমআইপিএসডি) শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। ইউএনবির হাতে আসা একটি নথিতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায়, প্রকল্পটিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
সরকারি নথি থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরকারি ই-ক্রয় (ই-জিপি) ব্যবস্থাকে দেশের সব সরকারি কেনাকাটার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা—যাতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়।
এদিকে, প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ ( বিপিপিএ) ও বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।
মোট ব্যয়ের মধ্যে ৪৩ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় সব সরকারি কেনাকাটা ই- জিপি (সরকারি ক্রয়) ব্যবস্থার আওতায় আনা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে সরকার। এ ছাড়া, বিপিপিএয়ের ডেটা সেন্টারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উন্নত করে এর কার্যকারিতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও টেকসই পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে সরকার।
তাছাড়া, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে— নিরাপদ, সময়োপযোগী ও আধুনিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা; যেখানে ব্যবহার করা হবে খোলামেলা সরকারি চুক্তির তথ্য প্রকাশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (ওপেন কন্ট্রাক্টিং ডেটা স্ট্যান্ডার্ডস-ওসিডি’স), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি।
পাশাপাশি, সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নে সব স্তরের সরকারি ক্রয়-সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা-ভিত্তিক মধ্য-মেয়াদি সক্ষমতা উন্নয়ন কৌশল তৈরি করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে, যাতে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হালনাগাদ করা সহজ হয়। এ ছাড়া, বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড টেন্ডার ডকুমেন্টের (এসটিডি) প্রয়োজনভিত্তিক ব্যবহারযোগ্যতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময় জরুরি সরকারি ক্রয়ের জন্যও পদ্ধতি তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে, বিপিপিএকে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্তৃপক্ষ হিসেবে রূপান্তরের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হবে।
এই উদ্যোগটি ২০১৭ সাল থেকে বাস্তবায়িত ‘বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সরকারি ক্রয় আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় নেওয়া হচ্ছে।
পিএমআইপিএসডি প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিপিপিএর তথ্যকেন্দ্রকে উন্নত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ওসিডি সংযুক্ত করে নিরাপদ ও তাৎক্ষণিক তথ্য বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা, এবং দুর্যোগের সময় জরুরি সরকারি ক্রয় পদ্ধতি তৈরি করা।
এছাড়াও, প্রকল্পের আওতায় সরকারি ক্রয়চুক্তি ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়ে মধ্য-মেয়াদি দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশল প্রণয়ন, বহুল ব্যবহৃত পণ্যের জন্য নতুন মান নির্ধারণ এবং বিদ্যমান এসটিডির ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
প্রকল্পের কাজের মধ্যে থাকবে—আধুনিক সরকারি ইলেকট্রনিক ক্রয় তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চুক্তি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক পেমেন্ট ও সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক সই যুক্ত করা, ক্রয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য নতুন অনলাইন প্রশিক্ষণ প্ল্যাটফর্ম চালু করা এবং টেকসই সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া তৈরি করা।
সরকারি কর্মকর্তারা জানান, বিপিপিএ বর্তমানে দুটি তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে—একটি ঢাকার শেরেবাংলা নগরে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এবং অন্যটি তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের জাতীয় তথ্যকেন্দ্রে। ২০১৮ সালে স্থাপিত বিপিপিএর নিজস্ব কেন্দ্রটি আরও বেশি কার্যকর, বিস্তৃত সেবা প্রদান ও উন্নত সাইবার নিরাপত্তার জন্য আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
২০১১ সালে চালু হওয়া সরকারি ই-ক্রয় ব্যবস্থা সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের ডিজিটাল রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এটি দরপত্র প্রস্তুতি ও প্রকাশ থেকে শুরু করে মূল্যায়ন, বরাদ্দ ও চুক্তি ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত ক্রয়ের পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থা সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়িয়েছে এবং প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই ই-ক্রয় ব্যবস্থা টেকসই সরকারি ক্রয়ের অন্যতম ভিত্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকার। তাছাড়া, এটি জনসেবার মানোন্নয়ন ও সরকারি সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান আলী রীয়াজের
১৬১ দিন আগে
বাংলাদেশকে আরও ৫০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মানুষের আস্থা বাড়াতে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
শনিবার (২১ জুন) আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, এই সহযোগিতা দেশের আর্থিক খাতে করপোরেট সুশাসন ও স্থিতিশীলতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গায়েল মার্টিন বলেন, ‘সরকারি অর্থ কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মক্ত ও জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে সরকার বিভিন্ন উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে তারা মানুষকে আরও ভালোভাবে সেবা দিতে পারে।’
‘আরও শক্তিশালী ও জনবান্ধব অর্থনীতির জন্য বিভিন্ন নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করার সরকারি চেষ্টায় এই ঋণ সহায়ক হবে। সরকারকে এসব সংস্কারে সহায়তা করতে গত সপ্তাহেও আমরা এ ধরনের একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে,’ বলেন তিনি।
সংস্থাটি জানায় বর্তমানে, মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, যা জনগণের কাছে মানসম্পন্ন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করে। এই কর্মসূচি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির লক্ষ্যে সংস্কারগুলোকে সমর্থন করে।
এই সংস্কারগুলো আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কর প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণকে আরও স্বচ্ছ এবং দক্ষ করে তুলবে। এছাড়াও, এটি কর ছাড় পরিচালনার জন্য আরও কৌশলগত, নিয়মতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য সংস্কারগুলোকে সমর্থন করবে যার জন্য সমস্ত ছাড়ের জন্য সংসদীয় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহ ও বায়ুমান উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৬৪ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
এরআগে গেল ১৯ জুন বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ অবকাঠামো ও দুষণ রোধে বায়ুমান উন্নয়নে ৬৪ কোটি ডলারের দুটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জ্বালানি খাতে নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার জন্য ব্যয়-সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার করতে ৩৫ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বায়ুমান উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ কোটি ডলার দেওয়া হবে।
জ্বালানি খাত নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) একটি গ্যারান্টি ব্যবহার করে সাত বছরের মধ্যে ২১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। এর ফলে নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি সম্ভব হবে।
মূলত, বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করা হয় তার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অংশ এলএনজি আমদানিনির্ভর। এ ছাড়া, দেশের মোট গ্যাসের প্রায় ৪২ শতাংশ বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার হয়, তাই সরবরাহে ঘাটতি হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
১৬৬ দিন আগে
গ্যাস সরবরাহ ও বায়ুমান উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৬৪ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও দুষণ রোধে বায়ুমান উন্নয়নে ৬৪ কোটি ডলারের দুটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জ্বালানি খাতে নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার জন্য ব্যয়-সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার করতে ৩৫ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বায়ুমান উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ কোটি ডলার দেওয়া হবে।
জ্বালানি খাত নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) একটি গ্যারান্টি ব্যবহার করে সাত বছরের মধ্যে ২১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। এর ফলে নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির খালগুলোর টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক
আইডিএ গ্যারান্টির সহায়তা পেট্রোবাংলার আর্থিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে এবং এলএনজি সরবরাহ নিরাপদ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন।
মূলত, বাংলাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করা হয় তার এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অংশ এলএনজি আমদানিনির্ভর। এ ছাড়া, দেশের মোট গ্যাসের প্রায় ৪২ শতাংশ বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার হয়, তাই সরবরাহে ঘাটতি হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানির জন্য অর্থ দেওয়ার নিশ্চয়তা ও কার্যকর মূলধনের ব্যবস্থা থাকবে, ফলে ব্যয়বহুল স্পট মার্কেট গ্যাস আমদানির (তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে স্বল্পমেয়াদে গ্যাস কেনা) ওপর নির্ভরতা কমাবে।
অন্যদিকে, বায়ুমান উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ কোটি ডলার সহয়তা দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের বাতাসের মান উন্নয়ন করতে একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণের কথা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে ২০১৯ সালে এক লাখ ৫৯ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঘটেছে। এতে সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য খাতের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮ দশমিক ৩ শতাংশের সমান।
ঢাকা শহর বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর একটি। শহরটিতে বার্ষিক ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটারের (পিএম ২.৫) মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুমান নির্দেশিকার তুলনায় ১৮ গুণ বেশি। প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ককে নতুন ও উন্নত স্টেশনের মাধ্যমে শক্তিশালী করবে বলে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়াও, শিল্পকারখানার মূল দূষণ উৎসের বাস্তব সময় নিরীক্ষণের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় স্বয়ংক্রিয় নির্গমন নিরীক্ষণ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে সহায়তা করা হবে। এই স্বয়ংক্রিয় নিরীক্ষণ ব্যবস্থার সমন্বিত নেটওয়ার্কের ভিত্তিতে নির্গমন সীমা বাস্তবায়ন ও প্রধান উৎসগুলো থেকে সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ নিশ্চিত করা হবে।
এই প্রকল্পে যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে এবং ৪০০টি পুরনো দূষণকারী ডিজেল বাসের পরিবর্তে নতুন, শূন্য-নির্গমনক্ষম ইলেকট্রিক বাস চালু করা হবে। এই বাসগুলো একক অপারেটরভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজ মডেলের অধীনে পরিচালিত হবে যাতে সেবার মান উন্নত হয়। ইলেকট্রিক বাসগুলোর জন্য চার্জিং, পার্কিং এবং রক্ষণাবেক্ষণের ডিপো নির্মাণ করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন করে পাঁচটি যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, অকার্যকর দুটি কেন্দ্রকে সক্রিয় করতে এগুলো উন্নত করা হবে ও কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এছাড়াও যানবাহন থেকে দূষণ নির্গমন পরীক্ষায় ২০টি ভ্রাম্যমাণ ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে।
পরিবহন খাতে এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন প্রাথমিক পিএম২.৫ নির্গমন কমবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য জ্বালানিনিরাপত্তা ও বায়ুর মান উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়। গ্যাস সরবরাহের সংকট ও শহর এলাকায় বায়ুদূষণের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের লক্ষ্যে এ দুই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প এ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়ক হবে।’
এ ছাড়া, বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার ওলায়িংকা বিসিরিউ এডেবিরি বলেন, ‘এই প্রকল্প ব্যয়-সাশ্রয়ীভাবে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার করবে এবং শিল্প ও গৃহস্থালী ব্যবহারকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ নিশ্চিত করবে।’
আরও পড়ুন: সরকারি খাতের কর্মদক্ষতা বাড়াতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
তিনি আরও বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে প্রকল্পটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা জোরদারে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।’
তাছাড়া দেশের বায়ুমান উন্নয়নে একটি নতুন ধারার প্রথম প্রকল্প হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার আনা লুইসা গোমেস লিমা।
তিনি আরও বলেন, ‘বায়ু দেশের সীমানা পেরিয়ে চলাচল করে, তাই এককভাবে কোনো দেশ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই প্রকল্প আঞ্চলিক সংলাপ ও তথ্য বিনিময় জোরদারে সহায়তা করবে, যা বায়ুদূষণ হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।’
১৬৮ দিন আগে
দেশের অর্থনীতি নড়বড়ে: ধীরগতির প্রবৃদ্ধি, কারখানা বন্ধ, বাড়ছে বেকারত্ব
গত ১০ মাসে একদিকে কমেছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, অন্যদিকে তলানিতে কর্মসংস্থান; এ অবস্থা দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে বলে শঙ্কা অর্থনীতিবিদ এবং খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে, চলতি অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে তিন দশমিক তিন শতাংশে নেমে আসতে পারে, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন—এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ কমবে উল্লেখযোগ্যহারে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য-উপাত্ত অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৭০ শতাংশের বেশি।
এপ্রিলে দেওয়া বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে নতুন করে ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্রের কবলে পড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বিনিয়োগের এ বেহাল দশা এবং অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যার সরাসরি প্রভাব পড়বে দেশের সাধারণ মানুষের ওপরে।
দিনকে-দিন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশের জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর টাকা পাচারকারী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর অনেকেই পালিয়ে গেছেন। সেখানে বড় সুযোগ ছিল পুরো কাঠামোকে ঢেলে সাজানোর, কিন্তু তা হয়নি। আগে যে নিয়মে অর্থনীতি চলে এসেছে একই ধারা বজায় রাখায় বর্তমানেও কোনো সুফল আসেনি।’
আরও পড়ুন: পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে: গভর্নর
শিল্প পুলিশের তথ্যনুযায়ী, প্রধান তিন শিল্প এলাকা গাজীপুর, নারায়ণঞ্জ-নরসিংদী এবং সাভার-ধামরাই এলাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন ৬০ হাজারের বেশি কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশিরভাগ কারখানা বন্ধের প্রধান কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা এসব কারখানায় বিনিয়োগ করেছেন, তারা অনেকে কারাগারে, অনেকে গেছেন পালিয়ে, কেউ কেউ দিয়েছেন গা-ঢাকা। নতুন করে কারখানা চালু করতে যে অর্থের প্রয়োজন; সেটি না থাকা এবং ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে উৎপাদন।
এ প্রসঙ্গে আনু মুহম্মদ বলেন, ‘শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হওয়ায় নতুন করে কয়েক লাখ লোক বেকার হয়েছেন। যারা কারখানা বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন, তাদের অনেকেই বিগত সরকারের আমলে অবৈধ সুবিধাভোগী মানুষ। শাস্তি সুবিধাভোগীরা পাবে কিন্তু যারা এসব কারখানায় কাজ করেন, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না রাখা বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ না। এর প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়তে বাধ্য।’
জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর বদলে আগামী অর্থবছরের বাজেটে আমদানি নির্ভরতা বাড়াবে। বিশেষ করে দেশীয় শিল্পকে উপেক্ষা করে বিদেশি আমদানি ওপরে নির্ভরশীলতা- সংকট আরও ঘনীভূত করবে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ।
এদিকে যে-সব কারখানা চালু আছে, সেখানে দিনকে দিন প্রকট হচ্ছে অর্থ প্রবাহ, সংকট জ্বালানির। চাহিদার সঙ্গে জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতি এবং ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানের অভাব অনিশ্চিত করে তুলেছে শিল্পখাতকে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) পরিচালক আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে কারখানা চালানো দিনকে দিন কঠিন হয়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: ব্যাংকে নতুন নোট নেই, চড়া দামে মিলছে খোলাবাজারে
‘জ্বালানি সংকটে ভুগছে বেশিরভাগ কারখানা। কারখানায় উৎপাদন কম হলে এর প্রভাব সরাসরি অর্থনীতিতে পড়বে,’ যোগ করেন তিনি।
এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘অন্যদিকে ২০১২-২০২২ এই দশ বছরে বেসরকারি খাতে আর্থিক প্রবাহ ছিল শক্তিশালী। দিনকে দিন এই ক্রেডিট ফ্লো কমে আসায় বেসরকারি খাত রীতিমতো ধুকছে। মালিকদের হাতে অর্থ নেই, কারখানায় উৎপাদন নেই; ফলাফল শ্রমিকদের বেতন দিতে না পারা এবং অর্থনীতিতে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া।’
আশরাফ বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এলেও বাকি খাতগুলো এখনো নড়বড়ে। দেশের অনেক ব্যাংক এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে, তারা ব্যবসায়ীদের অর্থের জোগান দিতে পারছে না। অন্যদিকে প্রায় ১৬ শতাংশ হারে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালানো রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘শিল্পকারখানায় গ্যাসের অভাবে উৎপাদন নেমেছে প্রায় অর্ধেকে। এ অবস্থায় জ্বালানি বিভাগ নতুন করে এলএনজি আমদানি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন করে দেশে কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার না হওয়া, বঙ্গোপসাগরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে না পারা এবং দিন দিন গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাওয়ায় শুধু আমদানিকৃত এলএনজির ওপর নির্ভরশীলতা পরিস্থিতি আরও সংকটময় করে তুলছে।’
বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের ২৬ ব্লক থেকে বাংলাদেশ কেন জ্বালানি সুবিধা নিতে পারছে না এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক টেন্ডার ডাকা হলেও কোনো কোম্পানি আগ্রহ দেখায়নি। নতুন সরকার দরপত্রের সময়সীমা বাড়িয়েও সাড়া পায়নি। এতে করে আপাতত বঙ্গোপসাগর থেকে জ্বালানি সুবিধা পাওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।’
কেন আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের জ্বালানি এ অপার সম্ভাবনার খাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না; এমন প্রশ্নের জবাবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার এ সময়ে কোনো কোম্পানিই নীতিগত নিশ্চয়তা ছাড়া নতুন কোনো চুক্তিতে যেতে চাইবে না। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় আসা।’
আরও পড়ুন: সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নে আন্তরিক: বিএসইসি চেয়ারম্যান
যতই সাংবিধানিক বা নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার হোক না কেন, গত ১০ মাসে ২১ লাখ মানুষ যারা কাজ হারিয়ে বেকার বসে আছেন, যাদের মধ্যে ১৮ লাখই নারী এদের ব্যাপারে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত জরুরি বলে মনে করেন তৌফিক।
সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে সরকারের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে এসে বিনিয়োগ, ব্যাংক এবং জ্বালানির যে-সব সমস্যা দেখা যাচ্ছে, এর প্রত্যেকটি বিগত সরকারের আমলের দীর্ঘদিনের অনিয়মের ফসল, যার ফলাফল ভোগ করতে হচ্ছে এখন।’
যারা বর্তমানে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন তারা ধীরে এগনোর নীতিতে আছেন। বিশেষ করে নির্বাচন পরবর্তী সরকারের নীতি কেমন হবে, তার ওপর আগামী দিনের বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের অর্থনীতির অনেক ভুল নীতির মাশুল আগামী আরও কিছু সময়েও দিতে হবে বলে মনে করেন হেলাল উদ্দিন।
১৭১ দিন আগে
সরকারি খাতের কর্মদক্ষতা বাড়াতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে সরকারি খাতের কর্মদক্ষতা বাড়াতে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। শনিবার (১৪ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি (সিটার) প্রকল্প’-এর আওতায় এই অর্থায়ন অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারে চলমান সংস্কার কর্মসূচিগুলোকে সহায়তা করা হবে, বিশেষ করে পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আহরণ, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় প্রক্রিয়া ও আর্থিক তদারকির ক্ষেত্রে।
প্রকল্পটি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা জোরদারে কাজ করবে—বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) এবং মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘এই বিনিয়োগ সরকারের ডিজিটাল রূপান্তরকে উৎসাহিত করবে, যা স্বচ্ছতা বাড়াবে ও দুর্নীতির ঝুঁকি কমাবে। একই সঙ্গে জনগণের কাছে সরকারি পরিষেবার গুণমান ও প্রবেশাধিকার উন্নত হবে এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা বাড়বে।’
আরও পড়ুন: চামড়া শিল্পে ১৫ বছরে ব্যাপক নৈরাজ্য হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
প্রকল্পটির মাধ্যমে ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ, ট্যাক্স আদায়ে স্বেচ্ছানুভূতিতে অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে। সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানো, ই-জিপি’র দ্বিতীয় প্রজন্ম চালু এবং অডিট ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্পের মূল অংশ।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং প্রকল্পটির টিম লিডার সুলেমান কুলিবালি বলেন, ‘একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্প এবং ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট উভয়ই সরকারকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও জনপরিষেবা উন্নয়নে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের সমন্বিত সমর্থন দেবে।’
১৭৩ দিন আগে
২০২৬ সাল থেকে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার চালু করবে তিতাস
আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন করতে যাচ্ছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিসট্রিবিউশন পিএলসি। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে একটি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক (পিএমসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রকল্পটি শুরু করতে পারবো।’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটিতে শিগগরই আরও একটি পিএমসি নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এরইমধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পে ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট লিমিটেডকে (ডিটিসিএল) পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিতাস স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে অগ্রগতি সামান্য
এর আগে ২০১১ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু করে তিতাস। পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করার পর এ পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকায় মোট চার লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার বসিয়েছে তিতাস। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে এই মিটারগুলো বসানো হয়েছিল।
তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এবারের প্রকল্পটি এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে এবং সব মিটারই স্মার্ট প্রিপেইড হবে। আগের মিটারগুলো প্রিপেইড হলেও স্মার্ট ছিল না।’
তিনি জানান, ‘প্রিপেইড ও স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের মধ্যে পার্থক্য হলো—প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ করতে ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট ভেন্ডর পয়েন্টে যেতে হয়, কিন্তু স্মার্ট প্রিপেইড মিটারে স্মার্টফোনের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকেই রিচার্জ করা যাবে।’
নতুন প্রকল্পের আওতায় তিতাসের আওতাধীন এলাকায় মোট সাড়ে ১৭ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার বসানো হবে বলে জানান তিনি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১৮ মাস আগে এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দুটি পৃথক চুক্তি সই হয়েছে বলে তিতাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ
সরকারি তথ্য মতে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে এই ঋণ চুক্তি করেছে তিতাস।
নতুন এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা দক্ষিণ ও নারায়ণগঞ্জে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। আর এডিবির অর্থায়নে স্মার্ট মিটার বসানো হবে ঢাকা উত্তর ও গাজীপুরে।
তিতাস গ্যাস বর্তমানে ২৮ লাখ ৭৮ হাজার গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ২৮ লাখ ৫৩ হাজার আবাসিক, ১২ হাজার ৭৮টি বাণিজ্যিক, ৫ হাজার ৪২৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, ১ হাজার ৭৫৫টি ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট এবং ৩৯৬টি সিএনজি স্টেশন রয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিতাস গ্যাস দেশের মোট গ্যাস বিতরণ বাজারের ৫৫ শতাংশ দখলে রেখেছে। বাকি ৪৫ শতাংশ বিতরণ করছে অন্য পাঁচটি কোম্পানি।
২৩৩ দিন আগে
ঈদে দীর্ঘ ছুটি হলেও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্থবিরতা আসবে না: অর্থ উপদেষ্টা
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতেও অর্থনীতিতে কোনো স্থবিরতা আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সব উপদেষ্টা ও বেশিরভাগ সচিব ঢাকাতেই থাকবেন। যেকোন প্রয়োজনে আলোচনা হবে, দরকার হলে জুমে মিটিং করা হবে।’
এবার ঈদে দীর্ঘ ছুটি হচ্ছে অর্থনীতির কোনো স্থবিরতা দেখা দেবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘না, না, না, অর্থনীতিতে কোন স্থবিরতা আসবে না। সবকিছু সচল থাকবে। উপদেষ্টা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্য আমরা ঢাকায় থাকব।’
‘দরকার হলে বন্ধের মধ্যে আমরা মিটিং করবো। এটা আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। আর ছুটিতে যদি যাই-ও দেশে থাকলে তো সমস্যা নেই, বিদেশে গেলে আমরা জুমের মাধ্যমে মিটিং করবো। আমি বিশ্বব্যাংকে থাকতে জুমে অনেকগুলো মিটিং করেছি। এগুলো কোনো সমস্যা হবে না। কোনো স্থবিরতা তৈরি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আজকেও চাল আনতে বলেছি। আমরা তো খুব সজাগ। আর টিসিবির মাধ্যমে একটা পক্ষকে তো আমরা এনশিওর করছি। আজকে একটা প্রস্তাব আসছে আলু এতো অতিরিক্ত, সেটা কিভাবে দেয়া যায়। কিন্তু একটা সমস্যা আছে, বেশি দামে কিনে, স্বস্তা দামে দেওয়া ডিফিকাল্ট।’আরও পড়ুন: আমরা একশ চাপের মধ্যে আছি, খুরের ওপর দিয়ে হাঁটছি: অর্থ উপদেষ্টা
ওয়ান/ইলেভেনের সময় সাবেক তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম একটা প্রোগ্রাম করেছিলেন ১০০ দিনের গ্যারান্টি কর্মসংস্থান। আপনারা এ ধরনের কোনো প্রকল্প নেবেন কি না? এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখি, আমরা এটা দেখবো। তবে ১০০ দিনের প্রকল্পের থেকে ভালো হবে রেগুলার প্রকল্পের মাধ্যমে লোকাল বেজ কর্মসংস্থান।’
বৈঠকের বিষয়ে তিনি জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
২৫২ দিন আগে
ডিএনসিসির খালগুলোর টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন খাল খনন, পানি দূষণ রোধ এবং খালগুলোর টেকসই উন্নয়নে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে ডিএনসিসির নগরভবনে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ডিএনসিসির আওতাধীন খালগুলোর উন্নয়ন এবং খালের পানি দূষণ রোধকল্পে খালের ময়লা অপসারণ (ফিক্যাল স্ল্যাজ ম্যানেজমেন্ট) ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা হবে।
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বিতভাবে খালের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ঢাকার জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে এবং খালের দূষণ রোধ করে পরিবেশবান্ধব শহর গড়তে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে ডিএনসিসির শিশুপার্কে বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ওয়াটার স্পেশালিস্ট ও টাস্ক টিম লিডার হার্শ গোয়েল, লিড ওয়াটার স্পেশালিস্ট ডেভিড ম্যালকম লর্ড, সিনিয়র ওয়াটার সাপ্লাই ও স্যানিটেশন স্পেশালিস্ট আরিফ আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ প্রমুখ।
২৮১ দিন আগে
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে আরও ৩ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে আরও তিন কোটি ডলার দেবে বিশ্ব ব্যাংক। 'এনহ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ইন ইস্টার্ন রিজিয়ন প্রজেক্ট' এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসেবে ৩ কোটি ডলারের একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।
বৃহত্তর কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
বিশ্বব্যাংকের স্কেল-আপ ফ্যাসিলিটির (এসইউএফ) আওতায় ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ৪৫ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের প্রাথমিক অর্থায়ন চুক্তি সই হয়। কোভিড মহামারির সময় কোভিড-১৯ সম্পর্কিত প্রকল্পে পুনঃব্যবহারের জন্য মূল প্রকল্পের পরিমাণ থেকে ৫ কোটি মার্কিন ডলার বাতিল করা হয়।
৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ৩০ বছর।
এই ঋণ চুক্তির সুদের হার ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সার্ভিস চার্জ শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। সর্বোচ্চ কমিটমেন্ট চার্জ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
তবে বিশ্বব্যাংক বোর্ড এ বছরের জন্য কমিটমেন্ট চার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: জরুরি সংস্কারের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পারে বাংলাদেশ: বিশ্ব ব্যাংক
৩১৫ দিন আগে