গুম
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আবারও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গুম করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সরকার বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে তাদের ওপর দোষ চাপানোর পরিকল্পনা করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে ডিবি পুলিশ তুলে নেয়ার পর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের নেতা-কর্মীদের গুম করা নতুন করে শুরু হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটারদের অংশগ্রহণ ছাড়া আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। ‘তাই জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য তারা (সরকার) গুমের নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার তরুণদের গুম করার জন্য টার্গেট করছে, যেহেতু তরুণরা অগ্রগামী হিসেবে রাজপথে আন্দোলন করছে।
অবিলম্বে এফ মাহমুদুল ও সাইফুল ইসলামকে তাদের পরিবারের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান রিজভী।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তাদের এক দফা দাবি আদায়ে বুধবার সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি জনগণের দাবির ওপর ভিত্তি করে। এটা শুধু বিএনপির কর্মসূচি নয়। যারা দেশের মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের সবার কর্মসূচি এটি।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় ১১২ মামলায় ১০ দিনে গ্রেপ্তার ১৬৩৬ জন : ডিএমপি
বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের অতীতের মতো সব বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক অবরোধ করুন, মহাসড়ক অবরোধ করুন এবং শান্তিপূর্ণ থাকুন। কিন্তু তারা (সরকার) আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার বিভিন্ন মহাপরিকল্পনা করছে। আমরা রাজপথে থাকব এবং সরকারের অশুভ চক্রান্ত প্রতিহত করবো।
চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে দেশের লাখ লাখ মানুষ বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৪৯৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
গুম ও হত্যার দায় সরকারের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে বিএনপি: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে গুম ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বিদেশি বন্ধু ও তাদের প্রতিনিধিদের সহানুভূতি পাওয়ার আশায় গুম-হত্যার ঘটনা নিয়ে অবিরাম মিথ্যাচার করে চলেছেন। তারা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে গুম ও হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।’
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতাদের ‘অসত্য, মিথ্যা ও বানোয়াট’ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্রকারীরা প্রস্তুত হচ্ছে, আমরাও প্রস্তুত আছি : ওবায়দুল কাদের
তিনি এ দাবিকে ভিত্তিহীন আখ্যায়িত করে বলেন, বিএনপি নেতারা দীর্ঘদিন ধরে গুম নিয়ে যেসব বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে আসছেন, তা বাস্তবতা বর্জিত।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, চট্টগ্রাম বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিনের নিখোঁজের জন্য প্রথমে আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হলেও পরে দেখা গেছে জামাল উদ্দিন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার।
একইভাবে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের নিখোঁজের পর সরকারকে দোষারোপ করার অপচেষ্টা করা হলেও পরে দেখা গেছে বিএনপি নেতা ভারতে আত্মগোপন করে আছেন বলে মন্তব্য করেন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, এমনকি বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়েও বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ইলিয়াস আলীকে জোর করে গুম করেছে বিএনপি নেতারা- যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে।
কাদের বলেন, ‘বিএনপি গুম নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য সরকারকে দোষারোপ করছে। কিন্তু তাদের নিখোঁজ হওয়ার নাটকের পেছনের গল্প আজ মানুষের অজানা নয়।’
আরও পড়ুন: বিশ্বের কিছু বড় শক্তি বাংলাদেশে তাদের অনুগত সরকার চায়: প্রধানমন্ত্রী
তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে ঘটে যাওয়া গুম ও হত্যার বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করেন।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুন-গুমের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগই বারবার হত্যা, অভ্যুত্থান, গুম ও ষড়যন্ত্রের নিষ্ঠুর শিকার হয়েছে।’
তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
কাদের বলেন,‘আমরা উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। যেখানে সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী সকল নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হবে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল হোতাদের চিহ্নিত করতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মায়ের ডাক’ -এর সমন্বয়কের বাসা থেকে ফেরার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বুধবার তিনি জরুরি ভিত্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একথা বলেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জরুরি ভিত্তিতে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, তিনি এক বাসায় গিয়েছিলেন সেখানে অনেক লোক ছিল, বাসার বাইরেও অনেক লোক ছিল। তারা ওনাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। এসময় তার সিকিউরিটির লোকেরা ওনাকে বলেছে আপনি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। কারণ ওরা আপনার গাড়ি ব্লক করে দেবে। সেই নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় তিনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন। এতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই অবস্থা জেনে তাকে বলেছেন, আপনার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আমাদের।
পিটার হাস ও তার লোকদের ওপর কেউ আক্রমণ করেছে কি না পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা জানতে চাইলে জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেছেন, না হামলা হয়নি। তবে গাড়িতে হয়তো দাগ লেগেছে। তাও সেটি নিশ্চিত নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে আবারও আশ্বস্থ করে বলেন, আমরা আপনাকে ও আপনার লোকদের নিরাপত্তা দেবো। আপনি অধিকতর নিরাপত্তা চাইলে আমরা দিবো। তবে আপনি ওখানে গেছেন এই খবরটা কে প্রচার করলেন? আমি তো জানি না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাননি। আমরা কিছুই জানি না। আপনি যাবেন আপনি এই তথ্য উল্লেখ করলো কে? ওইটার উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে আরও বলেছেন যে আপনি ওখানে গেছেন এটা কেমন করে প্রচার হলো। আপনি এটা বের করেন। আপনার লোকেই তো প্রকাশ করতে পারে। তিনি একটু দুশ্চিন্তায় আছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
মোমেন বলেন, আমাদের দেশের মিডিয়াকে আটকাতে পারবেন না, তারা খুব সোচ্চার। আপনারা যদিও বলেন বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। আমাদের মিডিয়া খুব সোচ্চার। যখনি যা হয় তারা এইটার পিছনে লেগে থাকে।
নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রী বলেন, আপনি যদি চান আমি তাদের ১০ ফুট বা ১৫ ফুট দূরে রাখতে পারি। কিন্তু আমি তাদের কোথাও বাধা দিতে পারবো না। আর ওখানে লোকজন গেছে সে লোকজনকেও বাধা দিতে পারবো না। আপনার নিরাপত্তার জন্য আমরা তাদের দূরে রাখবো। আপনি জানেন এটি বাকস্বাধীনতার দেশ। তারা তাদের বক্তব্য দিবে, কর্মসূচি করবে আমি তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবো না। আর যদি আপনি বা আপনার লোকের ওপর কোনো আক্রমণ হয়ে থাকে, জনগণের জানমাল ধ্বংস করে থাকে আমি তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবো। এছাড়া আমি তাদের কিছু করতে পারবো না। তবে আপনার নিরাপত্তা আমরা দিবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিডিয়াতে অনেক বানানো বানোয়াট তথ্য বিভিন্ন মিডিয়াতে আসে, ইউটিউবে আসে, আর বিদেশিরাও ওইসব দেখে ওখান থেকে রিপোর্ট করে ফেলে।
আরও পড়ুন: আত্মস্বীকৃত খুনিদের যেন কোন দেশ আশ্রয় না দেয় সে জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব তোলা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এটি লজ্জার বিষয় যে জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা, যাদেরকে আমরা অত্যন্ত বিশ্বাস করি, তারাও আমাদের একটা খবর দিলো যে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ জন লোক নিখোঁজ হয়ে গেছে। ওই ৭৬ জনের নামের তালিকা দেখে ১০জনকে পাওয়া যায়। তারা বেশ শান্তিতে আছে। আর ইন্ডিয়ানরা বললো তাদের দেশের দুই নাগরিক আমাদের লিস্টে ঢুকতে দেখেছে। ওরা খারাপ কাজ করেছিল তারা এখন দেশে আছে।
‘যারা অপকর্ম করে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘের মতো একটি সম্ভ্রান্ত সংস্থা আমাদের প্রশ্ন করে, তখন আমার দুঃখ লাগে এই জন্য যে জাতিসংঘকে পয়সা আমরা দেই, তারা যাচাই বাছাই না করেই কেমন করে এরকম অভিযোগ করে। যারা এ ধরনের কাজটা করেছে ওদের চাকরি চলে যাওয়া উচিৎ। কারণ অনেকে অনেক কিছু বলবে। তাদের দায়দায়িত্ব তারা তথ্যটা যাচাই বাছাই করে আমাদের কাছে পেশ করবে। আমাদের যদি কোনো অসুবিধা থাকে, আমরা তা গ্রহণ করবো। সংশোধনমূলক কিছু বললে আমরা সেটা চেষ্টা করবো।
গুমের বিষয়ে তিনি বলেন, দুনিয়ার সব দেশে কিছু লোক গুম হয়, কিছু লোক হারিয়ে যায়, তার চেয়ে বাংলাদেশ ভালো, আমেরিকায় তো অনেক বেশি লোক গুম হয়।
মোমেন বলেন, আমেরিকার তথ্যানুযায়ী প্রতিবছর কোনো আইনি প্রক্রিয়া না মেনেই আমেরিকান পুলিশ এক হাজার লোককে মেরে ফেলে। কত লোক মলে যায়, স্কুলে যায়, তাদের মেরে ফেলে। আমরা চাই না আমাদের দেশে একটা লোকও মারা যাক। বিনা বিচারে লোক মারা যাক। দুর্ঘটনা হলে আমরা তার বিচার করি। এবং যদি আমাদের সিকিউরিটির কেউ মারে অবশ্যই তার দায়ভার নিতে বাধ্য হবে। কোনো উপায় নেই। আমাদের দেশের মানুষ খুব সাবধান। ইউটিউবে অকামা বক্তব্য দিলে কেউ বিশ্বাস করবে না। দিন শেষে ওরাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত। আর মিথ্যাবাদী হিসেবে পরিচিত হবে।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ডিক্যাব সদস্যদের সংবর্ধনা
জোরপূর্বক গুম: জাতিসংঘ ২১ দেশের ৬৯৬ মামলা পর্যালোচনা করবে
জাতিসংঘের জোরপূর্বক বা অনিচ্ছাকৃত গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ ২১টি দেশের ৬৯৬টি মামলা পর্যালোচনা করার জন্য ১২৮তম অধিবেশন বসবে ১৯-২৮ সেপ্টেম্বর।
পাঁচটি স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞের দল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত জোরপূর্বক গুম সম্পর্কে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করবে এবং এগুলো নথিভুক্ত করবে৷
বিশেষজ্ঞরা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন, রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে পৃথক ঘটনা ও কাঠামোগত বিষয় এবং জোরপূর্বক গুম সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের জন্য বৈঠক করবেন।
এই দলের সদস্যরা ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর গঠিত ‘জোরপূর্বক গুম বিষয়ক কমিটি’র সঙ্গে বার্ষিক যৌথ সভা করবেন।
আরও পড়ুন: দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
অধিবেশন চলাকালীন বিশেষজ্ঞরা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষা সংক্রান্ত ঘোষণার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলো পরীক্ষা করবেন। যেমন প্রত্যাবর্তনমূলক আইন ও অনুশীলন, বা বলপূর্বক গুমের ঘটনাগুলো মোকাবিলায় পদ্ধতিগত ব্যর্থতা; বিশেষত সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে।
তারা অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় ও ভবিষ্যত কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা করবে। যেমন: নির্দিষ্ট দেশসমূহ পরিদর্শন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে নতুন প্রযুক্তি ও জোরপূর্বক গুম নিয়ে তাদের করা গবেষণা প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫১তম অধিবেশনে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সঙ্গে এই গ্রুপের অধিবেশনও হবে।
১২৮তম অধিবেশন চলাকালীন ওয়ার্কিং গ্রুপের সিদ্ধান্তগুলো এর পরবর্তী পোস্ট সেশনাল রিপোর্টে প্রকাশিত হবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের সতর্কতা: ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে
খুলনায় ৫৫ বছর বয়সী এক নারী নিখোঁজ
খুলনার দৌলতপুরে শনিবার রাত থেকে ৫৫ বছর বয়সী এক নারী নিখোঁজ রয়েছেন বলে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে।
নিখোঁজ রহিমা খাতুন দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফুল হায়দার জানান, ওই নারীর মেয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দৌলতপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিতাস নদীতে ধান বোঝাই নৌকাডুবি, শ্রমিক নিখোঁজ
তিনি জানান, এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে বাসা থেকে বের হন রহিমা। ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা তাকে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে পায়নি।
তার সন্ধ্যানে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান এসআই।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে দু’দিন ধরে নিখোঁজ ৪ কিশোরী
আরও পড়ুন: ঋণের টাকা আনতে গিয়ে খুলনায় নারী নিখোঁজ
গুমের ঘটনা জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত করুন: সরকারকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি জাতিসংঘের অধীনে জোরপূর্বক গুমের ঘটনার তদন্ত না করেন, তাহলে তাদেরকে সেসকল অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা গুমের শিকার পরিবারের সদস্য, সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়ে জোরপূর্বক গুম করার ঘটনাগুলোর জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে দ্রুত একটি তদন্ত দাবি করছি।’
‘অন্যথায়, অতীতে বলপূর্বক গুম ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের মতো বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে এক মানববন্ধন করে। এতে ভুক্তভোগীদের পরিবারের
সদস্য, সন্তান এবং অনেক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন।
ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ‘তারা ভয়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম ও হত্যার হুমকি দিয়ে দেশ চালাচ্ছে।’
জোরপূর্বক গুম করা মানুষদের উদ্ধার করে তাদের পরিবার ও সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে দলীয় নেতাকর্মীদের আরও বেশি ত্যাগ করা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের চলমান আন্দোলনকে ভয় পেয়ে সীমাহীন বল প্রয়োগ শুরু করেছে। মানুষ জেগে উঠেছে, কোন প্রকার দমননীতি এই সময় কাজে আসবে না।’
তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে জনগণকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা একা নন, সমগ্র দেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে, তারা আপনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ইউএনকপে আইজিপি’র নাম অন্তর্ভুক্তি: ফখরুলের সমালোচনা
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, দেশে যারা ‘গুম দিবস’ পালন করে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন তারা একটি উদ্দেশ্য নিয়েই করে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে তুলে নিয়ে গেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করে থাকে।
রবিবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাতের পর গুম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জাতিসংঘের অভিযোগের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এদের বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক অভিযোগ রয়েছে। অনেকে পারিবারিক অশান্তিতে রয়েছে। অনেকে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে রয়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে ভালো করতে না পেরে, ঋণে জর্জরিত হয়ে ও নানা ঝামেলায় অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ ইচ্ছাকৃত গুম হলে তাকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
এর আগে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকোচন, সুশীল সমাজসহ মানবাধিকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়েও কথা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে কোনো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
তিনি জানান, মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন মিয়ানমারের অবস্থা ভালো নয় বলে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে পারছে না দেশটিতে। তাদের ফিরিয়ে নিতে কাজ করছে জাতিসংঘ।
আরও পড়ুন: ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের শিগগিরই দেশে আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকারের কোনো বাধা থাকবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
দেশে গুম এবং গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের স্বাধীনতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই বলে সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ব্যাচলেটের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুমের বিষয়টি উত্থাপন করেননি। তবে বাংলাদেশ পক্ষ তা নিজ থেকে উত্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (জাতিসংঘ পক্ষ) বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তোলেনি। কিছু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের অবহিত করা হয়। আমরা বলেছি এ রকম কোনো তথ্য থাকলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’
সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো ঘটনার কথা শোনেননি বলে জানান মোমেন। তবে ২০০২-২০০৩ সালে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি: আইনমন্ত্রী
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানের কাছে নেত্র নিউজের (ইংরেজি) সম্পাদক ডেভিড বার্গম্যানের খোলা চিঠির বিষয়ে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে- এ জন্য তারা (বার্গম্যান ও অন্যরা) খুবই অসন্তুষ্ট ও এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক তাদের (বার্গম্যান ও অন্যদের) টাকা দিচ্ছে। তারা পেইড ব্যক্তি।’
যারা তাদের (বার্গম্যান ও অন্যরা) পয়সা দেয় তাদের পক্ষে কাজ করে- এমন শুনেছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় বার্গম্যানের ভূমিকার কথা স্মরণ করে মোমেন বলেন, তিনি তখন অর্থের বিনিময়ে কাজ করতেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানকে আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধের ধারণাটি সত্য নয়। ‘আমি দেখছি এখানে মিডিয়া খুব শক্তিশালী।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা (জাতিসংঘের পক্ষ) খুবই উদ্বিগ্ন।
ব্যাচলেট রোহিঙ্গাদের প্রতি উদারতার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। তবে একই সঙ্গে তারা রোহিঙ্গাদের প্রতি আরও বেশি সহযোগিতা চান, বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট
দেশে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে ব্যাচলেটকে অবহিত করেন মোমেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাখাইন রাজ্যে তাদের সহায়তা বাড়াতে তাকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পক্ষ।
এর আগে রবিবার সকালে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাচলেটকে স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ব্যাচলেট সকাল ৯টায় পৌঁছানোর কথা ছিল, কিন্তু ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়।
ব্যাচলেট দুই দফায় (২০০৬-২০১০ ও ২০১৪-২০১৮) চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
রবিবার ব্যাচলেট পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ছাড়াও সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
তিনি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
ইলিয়াস আলীর পরিবার অনেক বিপদে আছে: ফখরুল
গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর পরিবার অনেক বিপদে আছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ইলিয়াস আলীসহ গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরা তাদের নিকটাত্মীয়দের অনুপস্থিতিতে চরম সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।
শনিবার নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর বনানী এলাকার বাড়ি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, এসব ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কারণে সরকার এখনও পর্যন্ত গুমের শিকার ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতো তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।
আরও পড়ুন: আ’লীগ একদলীয় শাসনের সঙ্গে এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, জনগণ দেখেছে এক দশক আগে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালককে ধরে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এটা খুব স্পষ্ট যে এই ঘটনাটি এই সরকারের মাধ্যমে ঘটেছে।
ফখরুল বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় তাদের পরিবারকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং কঠিন সময়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সঙ্গে নিয়ে ফখরুল ইলিয়াস আলীর বাসায় যান এবং তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুনাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদের ঈদ উপহার দেন।
লুয়ানের সঙ্গে কথোপকথনের উদ্ধ্বৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, তারা খুব সমম্যায় পড়েছেন। তারা (ইলিয়াস আলীর) ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারছেন না। তারা তার গাড়ির ট্যাক্সও দিতে পারেনি। এই জিনিসগুলো পরিবারকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিউমার্কেটে সহিংসতায় পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ও ছাত্রলীগকে আড়ালের চেষ্টা করছে: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, কিছু কলেজ ভর্তির অনুমতি না দেয়ায় মেয়ের কলেজে ভর্তির বিষয়ে ইলিয়াসের পরিবারকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। শুধু ইলিয়াস আলীর পরিবারই নয়, গুমের শিকার সব পরিবারই অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তাদের দল নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের উপহার ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী তার গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন।
আরও পড়ুন: জার্মান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য প্রত্যাখান বিএনপির
পরকীয়ার জেরে স্বামী গুম, ৮ বছর পর প্রেমিক গ্রেপ্তার
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় আট বছর আগে আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি গুম হন। এঘটনার আট বছর পর স্ত্রী লতিফা বেগমের প্রেমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর মাধবপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রবিবার সকালে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার সাবুল হোসেনকে (৩৫) উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার আমিন উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: বিদেশি মুদ্রা জালিয়াতি: ঝিনাইদহে গ্রেপ্তার ৩
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ২০১৪ সালে উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার সাবুল হোসেন প্রতিবেশী বন্ধু আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী লতিফা বেগমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধু সাবুলের পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তাদের বাধা দেন আনোয়ার। একপর্যায়ে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে আনোয়ারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান বন্ধু সাবুল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাড়িতে ফেরেননি আনোয়ার হোসেন। ওই সময় নিখোঁজ আনোয়ার হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম হাতীবান্ধা থানায় একটি জিডি করেছিলেন।
এদিকে, স্বামী আনোয়ার হোসেন নিখোঁজ থাকায় সাবুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন লতিফা বেগম। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ছেলে আনোয়ার হোসেনের সন্ধান না পেয়ে গত বছর ২৪ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মা আনোয়ারা বেগম।
আরও পড়ুন: ডাকাতি করতে গিয়ে বাড়ির মালিককে খুন, ৭ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
ওই মামলার সূত্র ধরে অভিযুক্ত সাবুল ও তার সহযোগীদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার রাতে গাজীপুরের মাধবপুর এলাকা থেকে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় সাবুলকে গ্রেপ্তার করে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ।
ওসি এরশাদুল আলম জানান, অভিযুক্ত সাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিখোঁজ আনোয়ার হোসেনের সন্ধান পেতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।