শিক্ষাবিদ
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্তির নিন্দা শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের প্রকাশ্য ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
তারা এটিকে ‘একজন বিদেশি কূটনীতিকের দ্বারা দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নজিরবিহীন আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এই বিষয়ক একটি প্রশ্নের জবাবে ‘গণমাধ্যম’র বিষয় উল্লেখ করেননি। অথচ রাষ্ট্রদূত হাস এক টিভি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গণমাধ্যমও নতুন ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় পড়তে পারে।
রাষ্ট্রদূতের গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করা এই মন্তব্যকে কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার প্রাক্তন প্রেস কর্মকর্তা মুশফিক ফজল আনসারী ‘স্বাধীন গণমাধ্যমকে’ ‘সরকারের হাতিয়ার’ হিসেবে বর্ণণা করায় তার তীব্র সমালোচনা করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদরা।
তারা আরও বলেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের আগে ‘বিরোধীদের পক্ষে’ কাজ করানোর জন্য মিডিয়া আউটলেট মালিকদের ও সাংবাদিকদের আরও বেশি ভয় দেখানো।
সব ধরনের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড- একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘সাংবাদিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার এবং গণমাধ্যমের উপর অদৃশ্য সেন্সরশিপ আরোপ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যা গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রধান স্তম্ভ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগের বক্তব্য ও পরের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যম অন্তর্ভুক্ত 'সঠিক সিদ্ধান্ত' নয়: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে ‘গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া বা ভয় দেখানোর জন্য দায়ী’ অর্থাৎ, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা ভিসা বিধিনিষেধের মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত হাসের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও তারা আগে বলেছিল গণমাধ্যমের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে, এখন আমরা তাদের আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ইউ-টার্ন দেখতে পাচ্ছি। এটি বাস্তবায়িত হলে, স্বাধীন সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটি।’
কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ সাংবাদিক বলেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এই বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করে। এখন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হাসের ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব দেখা বাকি আছে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তবিউর রহমান প্রধান প্রশ্ন রেখেছেন, ‘একইসঙ্গে আপনারা কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্যদের পরামর্শ দিতে পারেন এবং গণমাধ্যমকে ভিসা বিধিনিষেধের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন?’
অন্যদিকে, মানবাকারকর্মী সুলতানা কামাল একজন টিভি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, ‘একটি দেশের ভিসা বাতিল করার অধিকার আছে। তবে তারা ভিসা দেবে না- এমন একাধিক পূর্ব ঘোষণার পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘোষণা জারি করার এই ধরনের পদক্ষেপ কি সত্যিই কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে সমর্থন করে?’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঘোষণার পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ও নেতা কিছু মিডিয়া আউটলেটের সমালোচনা করেন এবং দলগুলোর সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্যও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নামও উল্লেখ করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ও তাদের সমর্থকদের শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে তারা ভিসা বিধিনিষেধে গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিএনপি বর্জন করেছে এমন বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের নাম উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়াও, জামায়াতে ইসলামের একটি এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট ‘বাঁশেরকেল্লা’তে পোস্ট করা একটি টুইটে বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু।’
এই বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টটি সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ চালানোর জন্য সংবাদ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: কোনো নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনাকে থামাতে পারবে না: কাদের
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেননি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র
১ বছর আগে
ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা সমিতির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তাপস, সা. সম্পাদক ডা. পান্নু
ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. ইকবাল হোসেন তাপস ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ডা. মো. মসিউজ্জামান পান্নু।
সম্প্রতি ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা সমিতির নির্বাচন (২০২৩-২৪) অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের পুরানা পল্টন স্থায়ী কার্যালয়ে এ নির্বাচনে সর্বসম্মতিক্রমে তাপসকে সভাপতি, আ ব ম মহিউদ্দীন খান চৌধুরী, মো. রিয়াজ হাসান, মো. মফিজুর রহমান খান, আবুল কালাম আজাদ, সাইয়েদা খানমকে সহসভাপতি এবং ডা. মো. মসিউজ্জামান পান্নুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ভোলা প্রেসক্লাব নির্বাচন: সভাপতি হাবিবুর ও সম্পাদক অমিতাভ অপু
এছাড়া ফইজুল আবেদীন, মো. সাইদুল হককে যুগ্ম সম্পাদক, মো. রকনুজ্জামানকে অর্থ সম্পাদক, ফয়সাল মঈন মামুনকে সাংগঠনিক সম্পাদক, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনকে দপ্তর সম্পাদক, মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, মাহবুব লাভলুকে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, কাজী গোলাম মাইনউদ্দীন আহম্মদকে সমাজসেবা সম্পাদক, এইচএম আব্বাস আলীকে আইন সম্পাদক, মো. আমিনুল ইসলামকে শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সরদার মুজিবর রহমান, মো. গোলাম মাহবুব, এএস মাহমুদ, মো. দেলোয়ার হোসেন, এসএম শফিউল্লাহ, মো. মীর্জা জাহাঙ্গীর হোসেন শানু, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
নির্বাচনপূর্ব সম্মেলনে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, সমিতির সাবেক সভাপতি সরদার মজিবুর রহমান, গোলাম মাহবুব, বিচারপতি আবদুর রব, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. দেলওয়ার হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এসএম শফিউল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক ডা. মো. মসিউজ্জামান পান্নু প্রমুখ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মো. আব্দুর রউফ, নির্বাচন কমিশনার তোফায়েল আহমেদ ও মাহমুদ হাসান।
আরও পড়ুন: ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সম্পাদক মামুন
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব নির্বাচনে সালাউদ্দিন রেজা ও দেবদুলাল সভাপতি-সা. সম্পাদক নির্বাচিত
১ বছর আগে
শামীমা ও মঈন উদ্দিন: যুক্তরাজ্যের দ্বৈতনীতির নিন্দা বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের
১৯৭১ সালের একজন যুদ্ধাপরাধীকে দেশে ফেরত পাঠানোর বাংলাদেশের অমীমাংসিত অনুরোধ স্থগিত করায় যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিভাবের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক এবং সিরিয়ায় গিয়ে এক ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল এর বিপরীত বলেও উল্লেখ করেন তারা।
যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা শামীমা এখন তার নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে লড়ছেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার পর যদি তার বাবা-মার আদি দেশ বাংলাদেশে পাঠানো হয় তাহলে তাকে সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হতে হতো। একটি আদালত যা শুনেছে তাতে তিনি এখন কার্যকরভাবে রাষ্ট্রহীন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদনের পেমেন্ট পদ্ধতির পরিবর্তন
শামীমার আইনি লড়াই সম্প্রতি সবার নজরে এসেছিল। কারণ বিশেষ অভিবাসন আপিল কমিশনে তার আপিলকে বলা হয়েছিল যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ২০১৯ সালে শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব বাতিলের ‘গুরুতর পরিণতি’ বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলে সাজিদ জাভিদ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর পাশাপাশি ১৯৭১ সালে চৌধুরী মঈন উদ্দিনের কর্মকাণ্ডকে ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধ বিবেচনা করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সরকার। যুক্তরাজ্য সরকারের এই ধারাবাহিক ‘দ্বিভাব’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিরোধীরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. অধ্যাপক একেএম জাকির হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়া ও হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পরও মঈন উদ্দিনের প্রত্যার্পণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ যুক্তরাজ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, এমনকি তারা মঈন উদ্দিন ও মানিলন্ডারিং মামলায় তারেকের রহমানের মতো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে যারা আশ্রয় দিয়েছেন, আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকার তাদের নেই।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জঘন্য গ্রেনেড হামলার দায়ে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা চালানো হয়েছিল।
এমনকি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলাটির বিষয়ে এফবিআইয়ের কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া ২০১৩ সালে নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের সময় অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১০০ জন মানুষকে হত্যার দায়েও অভিযুক্ত করা হয়।
শামীমার বিপরীতে মঈন উদ্দিনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা এখন বাংলাদেশে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তাদের গণহত্যা চালিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য এই ভূখণ্ডের জনগণের ওপর নৃশংস যুদ্ধাপরাধ চালিয়েছিল, যা বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম একটি। কারণ ১৯৭১ সালের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরপরই, যখন বাংলাদেশ যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে, তখন কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর নেতা মঈন উদ্দিন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন।
পলাতক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে সক্ষম হন এবং ইস্ট লন্ডন মসজিদ এবং লন্ডন মুসলিম সেন্টারের ভাইস-চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে মুসলিম আধ্যাত্মিক তদারককারী পরিচালক হন।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য সান অনুসারে, তিনি এখন উত্তর লন্ডনের সাউথগেটে এক মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়িতে থাকেন।
তার অপরাধের চার দশক পর, বাংলাদেশের একটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল অন্তত ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক এবং চিকিৎসককে হত্যার জন্য মঈন উদ্দিন এবং তার সহযোগী আশরাফুজ্জামান খানের অনুপস্থিতিতে বিচার করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ২০১৩ সালের নভেম্বরে যুদ্ধাপরাধের জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও ঢাবির সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক এবং ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, ‘এটা স্পষ্ট যে এই ধরনের দ্বৈতনীতির পিছনে একটি নির্দিষ্ট স্বার্থ রয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্বার্থের বাইরে কিছুই নয়। মঈন উদ্দিনকে আশ্রয় দেয়ার এই নীতিটি দেখায় যে কীভাবে সেই স্বার্থ মানবাধিকারের ওপর জয়লাভ করে। শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই নয়, যুক্তরাজ্যের দ্বৈতনীতি আরও বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে প্রদর্শিত হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেছেন, মানবাধিকার নিয়ে যতই বিড়ম্বনা থাকুক না কেন পররাষ্ট্র নীতির ফ্রন্টে যুক্তরাজ্য সবসময় তার নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।
অধ্যাপক হাফিজুর আরও বলেন, ‘একজন যুদ্ধাপরাধীকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের অবস্থান মঈন উদ্দিনের মতো যুদ্ধাপরাধীর হাতে তাদের প্রিয়জন হারিয়ে লাখ লাখ ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা প্রদর্শন করে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক সহায়তা ২০২৭ সাল পর্যন্ত স্থগিত হতে পারে: প্রতিবেদন
২ বছর আগে
চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী মারা গেছেন
বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও শিক্ষাবিদ সমরজিৎ রায় চৌধুরী (৮৫) রবিবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, একুশে পদক জয়ী এই চিত্রশিল্পী একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রদ্ধেয় এই শিল্পী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং পরে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন।
চৌধুরীর ছেলে সুরজিৎ রায় চৌধুরী জানান, ৫ সেপ্টেম্বর এই শিল্পীকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর ১২ সেপ্টেম্বর পরিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে যাযওয়া হয়; তবে, স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে ১৫ সেপ্টেম্বর তাকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার প্রয়াণের খবরে দেশের শিল্পাঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সোমবার সকাল ১০টায় শিল্পীর মরদেহ ঢাবির চারুকলা অনুষদে আনা হবে। সেখানে তার ভক্তরা তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
আরও পড়ুন: বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান মারা গেছেন
১৯৩৭ সালে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণকারী সমরজিৎ চৌধুরী ১৯৬০ সালে সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে গ্রাফিক ডিজাইনে স্নাতক হন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, মোহাম্মদ কিবরিয়া, সাফিউদ্দিন আহমেদ ও আনোয়ারুল হাসানসহ দেশের কিংবদন্তি শিল্পীদের কাছ থেকে তিনি সরাসরি শিক্ষা লাভ করেন।
তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে যোগদান করেন এবং ৪৩ বছর অধ্যাপনা করার পর ২০০৩ সালে অবসর নেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে ঢাবির সুপারনিউমারারি প্রফেসর হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিতে ফাইন অ্যান্ড পারফর্মিং আর্ট বিভাগের ডিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের শিল্পক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।
আরও পড়ুন: একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রণেশ মৈত্র মারা গেছেন
আ.লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী মারা গেছেন
২ বছর আগে
সাংস্কৃতিকভাবে টেকসই বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছি: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সংস্কৃতিকভাবে টেকসই বাংলাদেশ অর্জন করতে তারা কাজ করছে এবং তারা ইউনেস্কো ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের মতো বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে কাজ করছে।
স্কটিশ পার্লামেন্টে সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী খালিদ বলেন, আমরা সত্যিই বিশ্বাস করি সাংস্কৃতিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ টেকসই বাংলাদেশ নির্মাণে এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আমাদের কাজের হৃদপিণ্ড।
এডিনবার্গের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্কটিশ পার্লামেন্টে ২৬-২৮ আগস্ট আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি সম্মেলনে ব্রিট্রিশ কাউন্সিল অংশগ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়াও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে ‘হোল অব সোসাইটি’ অ্যাপ্রোচ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন ‘আমরা বিশ্বাস করি একটি সুখী, সমৃদ্ধ, অগ্রসর ও সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের এই চেষ্টায় কেউ পিছিয়ে থাকবে না।’
এই শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য সাংস্কৃতিক নীতি এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবকে অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি অনন্য এবং বৈশ্বিক সুযোগ দেয়া।
আয়োজনটিতে আমাদের সময়ের সংস্কৃতি এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের প্রধান উদ্বেগের ধারণা উঠে আসে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল, এডিনবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল, স্কটিশ পার্লামেন্ট এবং স্কটিশ ও যুক্তরাজ্য সরকারসহ ইভেন্টটির আয়োজকরা সারা বিশ্ব থেকে আসা শিল্পী, মন্ত্রী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই ৬ষ্ঠ এডিনবার্গ আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি সম্মেলনে স্বাগত জানিয়েছে।
সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সাংস্কৃতিক বিনিময় বিভাগ) কাজী নুরুল ইসলাম ও ব্রিট্রিশ কাউন্সিলের হেড অব আর্টস নাহিন ইদ্রিসসহ একটি প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন খালিদ।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতাদের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের সংস্কৃতির অবস্থান এবং অনুশীলনের উদাহরণগুলি ভাগ করে নেন।
এডিনবার্গ আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক সম্মেলন ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্যার জোনাথন মিলস বলেন, স্কটিশ পার্লামেন্টে এডিনবার্গের বিশ্ব-বিখ্যাত উৎসবের সময় একটি ব্যক্তিগত সাংস্কৃতিক সম্মেলনে ফিরতে পেরে আমরা পুলকিত। কারণ তারা তাদের ৭৫তম বছর উদযাপন করছে।
মিলস বলেন, সম্মেলনের অংশীদাররা –দ্যা ব্রিটিশ কাউন্সিল, এডিনবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল, স্কটিশ পার্লামেন্ট এবং স্কটিশ ও যুক্তরাজ্য সরকার এমনকি সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও জীবন ও সমাজকে পরিবর্তন করার জন্য সংস্কৃতির শক্তির পক্ষে জোরালোভাবে সমর্থন করার জন্য আবার একত্রিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে: কে এম খালিদ
২ বছর আগে
জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আর নেই
প্রসিদ্ধ শিক্ষাবিদ, জাতীয় অধ্যাপক, লেখক, গবেষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের(ইউল্যাব) সেন্টার ফর বাংলা স্টাডিজের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আর নেই। ইন্নালিল্লাহি………রাজিউন। মঙ্গলবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৮৭ বছর বয়সী এই গুণীব্যক্তিত্ব।
রফিকুল ইসলামের ছেলে বর্ষণ ইসলামের বন্ধু আফজাল রহমান বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাঁর পরিবারিকসূত্রে জানা যায়, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আগামীকাল বুধবার দুপুর ২টায় তার মৃতদেহ জাতীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর বাদ আসর রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
প্রফেসর রফিকুল ইসলামকে ২৬ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এর এক সপ্তাহ আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক শামীম মাশরেকী আর নেই
গত ৭ অক্টোবর পেটে ব্যথা নিয়ে বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন ৮৭ বছর বয়সী এই জাতীয় অধ্যাপক। বিভিন্ন পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন, তার ফুসফুসে পানি জমেছে। পরবর্তীতে পানি বের করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম দেশেই চিকিৎসা নিতে চেয়েছিলেন। এমনকি তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে আসতেও চাননি, বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা করতে ইচ্ছুক ছিলেন তিনি।
১৯৩৪ সালের ১লা জানুয়ারি চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার কোলাকান্দা গ্রামে ডা. মো. জুলফিকার আলী ও জান্নাতুনেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাশ করেন। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।
তিনি ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে ভাষাবিজ্ঞানে এমএ পাশ করেন। এবং ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি আর নেই
বরেণ্য অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদ আর নেই
৩ বছর আগে
অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর শ্বশুর ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব গুহ’র মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি তিন ছেলে, তিন মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্ব্জন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
৩ বছর আগে
চলে গেলেন ইতিহাসবিদ বজলুল করিম
ইতিহাসবিদ ও খুলনার সরকারি বিএল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. বজলুল করিম আর নেই। শুক্রবার সকাল ৭ টায় দৌলতপুরের পাবলা ২নং ক্রস রোডে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
গুণী এই শিক্ষাবিদ এ অঞ্চলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও বি. করিম স্যার নামেই সর্বাধিক পরিচিত। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রজলাল কলেজের ইতিহাসসহ বহু গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদনার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী গোলাম মোস্তাফা
অধ্যাপক মো. বজলুল করিম ১৯৩৮ সালের ১১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহকুমার করিমপুর থানা চেচানিয়া দেওয়ানের পাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রফিজ উদ্দিন বিশ্বাস ছিলেন রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা এবং মা বিধুজান নেছা (নক্সীকাঁথা শিল্পী) গৃহিনী। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫৯ সালে এমএ (দর্শন) ডিগ্রি লাভ করেন। ময়মনসিংহ, মাদারিপুর নাজিমউদ্দিন কলেজ ও পরবর্তীতে খুলনা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে এবং ১৯৬২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সরকারি বিএল কলেজে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন তিনি।
অধ্যাপনার সুবাদে সাবেক ইউওটিসি’র সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট থেকে ক্রমান্বয়ে বিএনসিসি’র মেজর পদ মর্যাদা লাভ করেন। অবসর নিয়েই বসে থাকেন নি তিনি। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
৩ বছর আগে
সুফিয়া কামালের ১১০ তম জন্মবার্ষিকী আজ
কবি ও নারীবাদী বেগম সুফিয়া কামালের আজ রবিবার ১১০ তম জন্মবার্ষিকী।
নারীবাদী, কবি, শিক্ষাবিদ হিসেবে শ্রদ্ধেয় সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের একটি অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি ১৯৫০ দশকের বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অংশ নিয়ে এবং পরে নিজেকে স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশীল সমাজের নেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলো যথাযথ সম্মানের সাথে দিবসটি পালন করছে।
দিবসটির স্মরণে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ (বিএমপি) ও ছায়ানটসহ একাধিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কবি ও কর্মীর স্মরণে বিশেষ কর্মসূচি পালন করছে।
যাই হোক করোনা মহামারির চলমান দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে উভয় সংস্থা ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠানগুলি পরিচালনা করে দিবসটি পালন করছে।
আরও পড়ুন: বেগম সুফিয়া কামালের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ (বিএমপি) তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বেলা ৩ টায় একটি বিশেষ অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ১১০ তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে অনুষ্ঠানটিতে অনলাইনে স্মরণীয় বক্তৃতা, কবি সুফিয়া কামাল পুরষ্কার প্রদান ও সংগীত পরিবেশনা উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিএমপির বর্তমান সভাপতি ডা. ফৌজিয়া মোসলেম।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ অনুষ্ঠানে "সুফিয়া কামাল এবং বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলন" শীর্ষক একটি স্মরণমূলক বক্তব্য দিবেন। এছাড়াও কবি সুফিয়া কামাল অ্যাওয়ার্ড -২০২০ (মরণোত্তর) সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ এবং কর্মী হিসাবে ভূষিত করা হবে নূরজাহান মুর্শিদকে ও কবি সুফিয়া কামাল পুরস্কার -২০১২ দেয়া হবে কুমুদিনী কল্যাণ ট্রাস্টকে।
প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতির জন্মবার্ষিকী এবং বর্ষার প্রত্যাবর্তন উদযাপন করতে দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট প্রতিবছর একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যা গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।
আরও পড়ুন: কবি নজরুলের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
এ বছর ছায়ানট বর্ষার গান, কবিতা ও নৃত্যের সমন্বয়ে এবং বিশিষ্ট কবি, ছায়ানটের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুলতানা কামালের বিশেষ বক্তৃতার মাধ্যমে একটি বিশেষ অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
রবিবার রাত ৯ টায় অনুষ্ঠানটি ছায়ানটের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল সহ ছায়ানটের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি নিজে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এতে অংশ নেওয়ার জন্য নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। ১৯৫৬ সালে শিশুদের সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা হোস্টেলকে ‘রোকেয়া হল’ নামকরণের দাবি জানান। রোকেয়া হল নামকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন কিংবদন্তী শিক্ষাবিদ বেগম রোকেয়ার নাম অনুসারে।
সাহসী সামাজকর্মী হিসাবে সুফিয়া কামাল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে ও তার সময়ে জাতির বিরুদ্ধে নিপীড়ন এবং তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি বড় বড় মানবাধিকার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
শৈশবকালে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব সত্ত্বেও তিনি বাড়িতে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু, আরবী, কুর্দি এবং ফার্সিসহ একাধিক ভাষা শিখেছিলেন। ১৯৩৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ সাঁঝের মায়ার মুখবন্ধ লেখেন কাজী নজরুল ইসলাম। বইটি বিদগ্ধজনের প্রশংসা কুড়ায় যাদের মাঝে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আরও পড়ুন: জীবনানন্দ দাশের ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ
কবি ও লেখিকা হিসাবে তিনি তখন এক ডজনেরও বেশি সংখ্যক কবিতা এবং ছোটগল্প, ছোট উপন্যাস রচনা করেন। তার ডকুমেন্টারি গ্রন্থ ‘একাত্তুরের ডায়েরি’ তে তিনি ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ভয়াবহ গল্পগুলি বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলাদের পত্রিকা বেগমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন।
সুফিয়া কামাল বাংলাদেশ মহিলা পুনর্বাসন বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন এবং নারী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ছিলেন। তিনি ব্র্যাকের প্রথম চেয়ারপার্সনও ছিলেন।
সুফিয়া কামাল ৫০টির বেশি পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মাঝে পাকিস্তান সরকারের তমঘা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬১) যা তিনি ১৯৬৯ সালে প্রত্যাখান করেন। এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬২), সোভিয়েত লেনিন পদক (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৭৬), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৭৭), সংগ্রামী নারী পুরস্কার, চেকোশ্লোভাকিয়া (১৯৮১), মুক্তধারা পুরস্কার (১৯৮২), বেগম রোকেয়া পদক (১৯৯৬), জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (১৯৯৫), দেশবন্ধু সি আর দাস গোল্ড মেডেল (১৯৯৬), স্বাধীনতা দিবস পদক (১৯৯৭) সহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়াও ঢাকার জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরির নাম সুফিয়া কামাল জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরি এবং বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর তার সম্মানে প্রধান মিলনায়তনের একটি তার নামে নামকরণ করেছে।
১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর সুফিয়া কামাল মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশি নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন। প্রতি বছর এই দিনটিতে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করা হয়। ২০ জুন, ২০১৯ তারিখে তার ১০৮ তম জন্মদিন উপলক্ষে গুগল ডুডল তৈরি করে সম্মাননা প্রদান করে।
৩ বছর আগে
ড. আলীম-আল-রাজীর ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার
বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদ ড. আলীম-আল-রাজীর ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার (১৫ মার্চ)।
৩ বছর আগে