লন্ডন
লন্ডন কি ২০২৫ এ আপনার পরবর্তী ভ্রমণ গন্তব্য?
সারা বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের রিভিউ ও রেটিংয়ের ভিত্তিতে জনপ্রিয় সব ঘুরে বেড়ানোর শহর এবং রেস্তোরাঁর তালিকা প্রকাশ করে ট্রিপ অ্যাডভাইজার। এ বছর ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিনোদন ও পর্যটনসহ সামগ্রিক বিচারে ভ্রমণের সেরা গন্তব্যের খেতাব পেয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। এই অর্জন বছরের পরবর্তী দিনগুলিতে লন্ডনের অত্যাশ্চর্যগুলো আলাদা করে আকর্ষণ করবে বিশ্ব পরিব্রাজকদের। যে মাপকাঠিগুলোর ভিত্তিতে ইউরোপের প্রসিদ্ধ মহানগরীটি এমন গুরুত্বপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে, চলুন, তার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা যাক।
২০২৫ সালে লন্ডনের বিশ্বসেরা ভ্রমণ গন্তব্য হওয়ার নেপথ্যে
.
সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সুদৃশ্য স্থাপনা
লন্ডনের প্রতিটি ইমারতের গাঁথুনিতে মিশে আছে শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাসের নির্যাস, যা অর্বাচীন দর্শনার্থীদের শিহরিত করে শহরের প্রাণকেন্দ্র বিচরণের সময়। রোমান শাসনের প্রতিধ্বনি থেকে শুরু করে রাজকীয় বংশের মহিমার ঐতিহাসিক উপকরণগুলো এই নির্যাসকে রীতিমত অমৃত সুধায় রূপ দেয়। সংমিশ্রণে উদ্ভাসিত হয় শক্তি ও স্থায়িত্বের প্রতীক টাওয়ার অফ লন্ডন, রাজ্যাভিষেক ও রাজকীয় বিবাহের মঞ্চ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে এবং ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সিংহাসন বাকিংহাম প্রাসাদ।
টাওয়ার ব্রিজ, বিগ বেন ও হাউস অফ পার্লামেন্টের অভিজাত স্থাপত্যশৈলী রাঙিয়ে তোলে লন্ডনের আকাশকে। শহরের সহস্র অতীতের চিহ্ন ধরে রাখা এই বহুতল ভবনগুলো খোরাক যোগায় বিস্ময়ের, একই সঙ্গে ফ্রেমবন্দি করার জন্য কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্তের।
আরো পড়ুন: শীতকালে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালকদের প্রয়োজনীয় সেফটি গিয়ার ও পোশাক
বিশ্বমানের যাদুঘর ও গ্যালারী
শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গে লন্ডনকে বলা যেতে পারে সর্বকালের বিশ্বকোষ। কেবল দর্শনের জন্যই নয়, এখানকার যাদুঘর ও গ্যালারীগুলো প্রাচীন নিদর্শন নিয়ে গবেষণার জন্যও যথেষ্ট রসদ যোগায়। তন্মধ্যে প্রাচীন নিদর্শনগুলোর বিস্ময়কর সংগ্রহশালা ব্রিটিশ মিউজিয়াম। সঙ্গে রহস্যময় প্রকৃতির অভিজ্ঞতা দিতে রয়েছে ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম।
ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট মিউজিয়াম ও টেট মডার্নে ফ্যাশন থেকে আসবাবপত্র পর্যন্ত সবকিছুতেই মেলে কারুশিল্পের ছোঁয়া। যুগযুগ ধরে এগুলোতে সংরক্ষিত নিদর্শনের সমাহার কেবল অমূল্যই নয়, খুব কাছ থেকে এক নজর দর্শনও অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে।
বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং প্রাণবন্ত নগর উপকণ্ঠ
ইংল্যান্ডসহ যুক্তরাজ্যের বৃহৎ এই নগরীতে পা রাখা মাত্রই যেকোনো আগন্তুক সর্বপ্রথম যে বিষয়টি অনুভব করেন, তা হলো এর স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। ক্যামডেন, শোরডিচ, নটিং হিল ও চায়নাটাউনের মতো শহুরে উপকণ্ঠগুলোর প্রত্যেকটি যেন এক টুকরো লন্ডন।
গভীর দৃষ্টিতে অচিরেই ধরা পড়ে শোরডিচের রাস্তায় ইট-কাঠ ও গলা ইস্পাতের সৃজনশীলতা ও নটিং হিলের পটে আঁকা ভিক্টোরিয়ান টাউনহাউস। নিভৃত নগরীর বেরসিক মানুষটিও ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান ক্যামডেনের বাজার ও চায়নাটাউনের খাবার পাড়ার বৈঠকখানায় শামিল হতে।
আরো পড়ুন: ফিলিপাইনের ভিগান ভ্রমণ গাইড : ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
নাট্যমঞ্চ ও বিনোদন
যুদ্ধটা যখন নাট্যমঞ্চ নিয়ে, তখন নিউ ইয়র্কের ব্রডওয়ের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে লন্ডনের ওয়েস্ট ইন্ড। এখানে সাক্ষী হওয়া যায় কিংবদন্তি দ্য ফ্যান্টম অফ দ্য অপেরা-র। ঐতিহাসিক গ্লোব থিয়েটারে গিয়ে উপভোগ করা যায় শেক্সপিয়রের জগদ্বিখ্যাত কাজগুলো।
এখানে সঙ্গীত উৎসাহীদের জন্য রয়েছে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলের গ্র্যান্ড অ্যাকোস্টিক ক্লাসিক্যাল ও ২ অ্যারিনার স্ফুলিঙ্গ দ্বীপ্ত কনসার্ট সন্ধ্যা। সঙ্গীতপ্রেমীরা যাই হোক না কেন, গীতি আর বাদ্যের ঐকতান নিমেষেই ঝড় তোলে আনমনে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যেকোনো শ্রোতার মনের মুকুরে।
মনোরম পার্ক
শহুরের ব্যস্ততা আর জনাকীর্ণতাকে বহু যতনে আগলে রেখেছে সবুজ উদ্যানগুলো। নিঃসীম যান্ত্রিকতার মোড়কে যেন এক প্রাণোচ্ছল অভয়ারণ্য। হাইড পার্ক, রিজেন্টস পার্ক এবং হ্যাম্পস্টেড হিথ যেন তা-ই সগৌরবে ঘোষণা করে। সব বয়সের লোকের জন্য এখানে রয়েছে পিকনিক থেকে শুরু করে খেলাধুলার জায়গা। যারা একটু নিরিবিলিতে থাকতে চান তাদের জন্য রয়েছে হল্যান্ড পার্কের কিয়োটো গার্ডেন ও ব্রকওয়েল পার্কের বিস্তীর্ণ তৃণভূমি।
এই সবুজায়নের মাঝে শহরের বাসযোগ্যতা, গতিশীলতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। ক্লান্তিকর দিনের শেষে তাই ঘরে ফেরা লোকটির মনের মতো অবকাশ খুঁজে পেতে তেমন বেগ পেতে হয় না।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান,শপিংমল ও জনপ্রিয় খাবার
শপিংমল ও খাবারের দোকান
বাহারি পোশাকের সাজে ইউরোপীয় বিপণীকে কাছে থেকে দেখতে হলে অবশ্যই যেতে হবে লন্ডনে। তন্মধ্যে বিলাসবহুল পণ্যের খোঁজে ঢুঁ মারা যায় বন্ড স্ট্রিট, হ্যারডস ও বেস্পোক-এ। বাজেট-বান্ধব পণ্য পাওয়া যাবে পোর্টোবেলো রোড এবং ক্যামডেন মার্কেটে, যেগুলো কেনাকাটা ছাড়া ঘুরে বেড়ানোর জন্যও উপযোগী। ওয়েস্টফিল্ড স্ট্রাটফোর্ড সিটি ও ব্রেন্ট ক্রস শপিং সেন্টারে দারুণ মেলবন্ধন ঘটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর সঙ্গে উচ্চ ফ্যাশন ও ব্র্যান্ডের সামগ্রীর।
একই সঙ্গে বিচিত্র ইউরোপকে স্বাদের মাধ্যমে পরখ করে দেখার জন্য ভোজনরসিকদের শ্রেষ্ঠ জায়গাও এই লন্ডন। মিশেলিন-তারকার স্থাপনা থেকে শুরু করে বোরো মার্কেটের দোকানগুলোর খাবার প্রত্যেক শহরবাসীর হৃদয়কে জয় করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে। ফিশ অ্যান্ড চিপস বা সানডে রোস্টের মতো ব্রিটিশ ভোজগুলো বিশ্বমানের শেফদের রন্ধনশৈলীকে প্রতিনিধিত্ব করে।
স্বাচ্ছন্দ্যময় পথঘাট
গহীন লোকারণ্য হলেও ভিড়গুলোর চলাফেরায় আরামদায়ক বেশভূষা অচিরেই টের পাওয়া যায়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে শহরের সহজলভ্য সরকারি যাতায়াত ব্যবস্থা। টিউব অথবা লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে শহরের প্রতিটি গন্তব্যে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বাস এবং ওভারগ্রাউন্ড ট্রেনগুলো অতিরিক্ত সংযোগের মাধ্যমে ভ্রমণকে আরও নির্বিঘ্ন এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
কর্মব্যস্ততার বাইরে অবকাশ যাপন ও পায়চারির জন্য নিবেদিত রাস্তাগুলোতে মেলে সুপরিকল্পিত নগরায়নে পরিচয়। ফলে যাত্রা একক বা সম্মিলিত যাই হোক না কেন, শহরের সুশৃঙ্খল পরিবহন নেটওয়ার্ক ভ্রমণের শতভাগ সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আরো পড়ুন: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ভ্রমণ গাইড
রাজকীয় ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা
এখানকার রাজসিক বহুতল দর্শনীয় ভবনগুলো অকপটে প্রকাশ করে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ঐতিহাসিক চাকচিক্য। গার্ড পরিবর্তনের অনুষ্ঠানের সময় বাকিংহাম প্যালেসের জাঁকজমক ভাব রীতিমত চোখ কপালে তোলার মতো। সুপরিচিত রাজকীয় মুখগুলোর প্রাক্তন বাসভবন দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন কেনসিংটন প্রাসাদে। সময় পরিভ্রমণে অতীতে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি দেয় হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস টিউডর।
এগুলো ভ্রমণের সময় সুদৃশ্য দেয়ালের জড় আভরণে সুপ্ত অভিজাত গল্পগাঁথাগুলো অনুগত শ্রোতায় পরিণত করে পর্যটকদের। ফলশ্রুতিতে প্রায়ই চোখে পড়ে সদ্য আসা কোনো দর্শনার্থী কোনো ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতির সামনে মোহাবিষ্ট হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
উদ্ভাবন ও আধুনিকতা
মহাকালের বির্বতনের এক উন্মুক্ত প্রতিচ্ছবি এই লন্ডন। শতাব্দী পুরনো ইতিহাস অঙ্গে ধারণ করে এখনও অগ্রগতির ধারা বজায় রেখেছে মহানগরীটি। দ্যা শার্ড, দ্যা ঘের্কিন এবং দ্যা লন্ডন আই-এর মতো আধুনিক কাঠামো তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এগুলোর স্থাপত্যশৈলী প্রাচীনতা থেকে নগরের অধুনা যুগের পথে বিবর্তিত যাত্রাকে অভিহিত করে।
তাই প্রযুক্তি উৎসাহীদেরকেও এতটুকু হতাশ করে না আধুনিক লন্ডন। বিশ্ব-মানের প্রযুক্তি ইভেন্ট ও প্রদর্শনী হোস্ট করার জন্য এই শহরের রয়েছে আলাদা বিশ্বখ্যাতি। এই উদ্দেশ্যে প্রতি বছরই শত শত মেধাবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পশ্চিমা ইউরোপের এই প্রাণকেন্দ্রটি।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
সমগ্র ইউরোপের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার
দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের টেম্স নদীর অবস্থিত এই বিস্তৃত অঞ্চল পৃথিবীর আন্তঃসংযুক্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। হিথ্রো ও গ্যাটউইকসহ একাধিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর ইউরোস্টার রেল লিংকের মাধ্যমে অনায়াসেই প্রবেশ করা যায় ইউরোপে। সঙ্গত কারণে অনেক আগে থেকেই যাত্রাপথটা ঘুরে বেড়ানোর জন্য অনুকূল হয়েই তৈরি হয়েছে। তাই বিশ্ব পরিব্রাজকদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।
সেই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ জীবনধারণের সব রকম অত্যাধুনিক সুবিধা থাকায় আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় উভয় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য শহরটি একটি উৎকৃষ্ট গন্তব্য।
প্রতিটি মৌসুমের উৎসবমুখরতা
লন্ডন ভ্রমণের জন্য আসলে কোনো মৌসুমই অফ-পিক টাইম হিসেবে প্রতীয়মান হয় না। গ্রীষ্মের খরতাপ, কনকনে শীত, শুভ্র মেঘের শরৎ, আর নতুন পাতার বসন্ত সব সময়ই এখানে থাকে মন্ত্রমুগ্ধতা। বছরব্যাপী পুরো মৌসুম জুড়ে ক্রিসমাস মার্কেট যান্ত্রিক শহরকে রূপান্তরিত করে যাদুর নগরে। এছাড়াও বছরজুড়ে মিউজিক ফেস্ট ও ফুড ফেস্টসহ বর্ণীল উৎসবগুলো প্রকৃতির রঙের মতোই গোটা শহরকে রাঙাতে থাকে ভিন্ন রঙে।
শেষাংশ
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ে লন্ডন ট্রিপ অ্যাডভাইজার ২০২৫-এর শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিগ বেন ও বাকিংহাম প্যালেস থেকে শুরু করে দ্য শার্ড-এর মতো সমসাময়িক বিস্ময় যেন শতবর্ষজীবী নগরের বিবর্তনের গল্প বলে। এলাকার পথঘাট, ভোজন, কেনাকাটা ও বিনোদনের নিরন্তর মূর্ছনায় প্রাণবন্ত আধুনিক অবকাঠামোগুলো। সার্বজনীন সংস্কৃতি ও প্রশান্ত সবুজ উদ্যান যেন উজ্জীবনের পূণ্যভূমি। ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগসূত্রগুলো কেবল নতুন ভূখণ্ডের নয়, নতুন অভিজ্ঞতারও দিগন্ত উন্মোচন। সর্বপরি, বছরব্যাপী ভিন্ন মৌসুমে বিচিত্র উৎসবের নিবেদন ফেরার সময় আরও একবার ঘুরে যাওয়ার সাধ জাগাবে পর্যটকের মনে।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা
৪ দিন আগে
রাতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আজ (মঙ্গলবার) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেছেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) রাত ৮টায় গুলশানের বাসা থেকে বের হবেন এবং রাত ৯টার মধ্যে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল টিমের ছয়জন চিকিৎসকসহ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রাত ১০টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি।
ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি এবং সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে দলটি, যাতে রাস্তায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে কোনো বিঘ্ন না ঘটে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন মঙ্গলবার রাতে
এছাড়া, খালেদা জিয়ার গাড়িবহর কোন পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবে, ইতোমধ্যে সেই রুটের তথ্যও জানানো হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গুলশান-২ নম্বরের বাসা ফিরোজা থেকে রাত ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে গাড়িটি গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর হয়ে কাকলী গোলচত্বর হয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিমানবন্দরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সমম্বয়ে বৈঠক করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১০ প্লাটুন পুলিশের পাশাপাশি এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, র্যাব, বেবিচকের অ্যাফসেক বাহিনীসহ সোয়াটের মতো স্পেশাল টিমও মোতায়েন থাকবে।
বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর জমায়েতে যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য বিশেষ এই সতর্কাবস্থা বলে জানিয়েছেন তারা।
যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে তার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, যুক্তরাজ্যের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হবেন খালেদা জিয়া। সেখানকার চিকিৎসকরা উনাকে দেখার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঠিক করা হবে। সেখান থেকে সুপারিশ করা হলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
ডা. জাহিদ বলেন, হিথ্রো বিমানবন্দরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী এবং যুক্তরাজ্য শাখার বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন।
আরও পড়ুন: খালেদা লন্ডনে পৌঁছেই সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি হবেন
২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন তারেক রহমান। কারাবন্দি হওয়ার আগে সবশেষ ২০১৭ সালে লন্ডন সফরে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। তখনই শেষবার সরাসরি দেখা হয়েছিল মা-ছেলের।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরবেন; আবারও এগিয়ে নেবেন সবকিছু— এমন প্রত্যাশায় বুক বেঁধে আছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের লাখো কর্মী-সমর্থক।
২ সপ্তাহ আগে
তারেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে লন্ডন যাচ্ছেন ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১০ দিনের সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শনিবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ফখরুলের সঙ্গে তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম রয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব আগামী ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক করার ষড়যন্ত্র চলছে, সতর্ক থাকুন: ফখরুল
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক ও দলীয় বিষয়ে আলোচনা করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডনে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল ফিরলে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
৭৯ বছর বয়সি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী প্রথমে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নেবেন। এরপর আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন।
আরও পড়ুন: অভ্যুত্থানে ‘ইউনিক নেতৃত্ব’ দিয়েছেন তারেক রহমান: ফখরুল
১ মাস আগে
নয়াদিল্লি ও লন্ডনে নতুন প্রেস মিনিস্টার নিয়োগ
ভারতের নয়াদিল্লি এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস উইংয়ে দুই সাংবাদিককে প্রেস মিনিস্টার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের যুক্তরাজ্য মিশনে নিয়োগ পেয়েছেন বিবিসি ঢাকা ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আকবর হোসেন মজুমদার। অন্যদিকে, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফয়সাল মাহমুদ।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুই বছরের চুক্তিতে তাদের এই পদে নিয়োগ দিয়ে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা প্রেস মিনিস্টার পদে যোগদান করার আগে অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা, সরকারি, আধা-সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগ করবেন।
যোগদানের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
২ মাস আগে
চিকিৎসার জন্য শিগগিরই লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে লন্ডন এবং পরে তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, 'তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাকে বিদেশের একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা একটি দূরপাল্লার বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করছি এবং প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করছি। প্রাথমিকভাবে তাকে (খালেদা জিয়া) বিমানযোগে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখানে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর তাকে বহুমুখী চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন কোনো দেশে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি শিগগিরই সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারব, যাতে ম্যাডাম দ্রুত বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন।’
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের জন্য ২ লাখ টাকা অনুদান দিলেন খালেদা জিয়া
জাহিদ আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বজনদের বিস্তারিত তথ্য ইতোমধ্যে তার কার্যালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে তিনি গুলশানের বাসায় থাকবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না।
৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৫ মামলা থেকে খালাস পেলেন খালেদা জিয়া
২ মাস আগে
লন্ডনে নিজ বাড়িতে ৩ নারীকে হত্যা, ক্রসবো সজ্জিত ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ
লন্ডনের কাছে একটি বাড়িতে তিন নারী নিহত হওয়ার পর ক্রসবো-সশস্ত্র এক ব্যক্তিকে খুঁজছে ব্রিটিশ পুলিশ।
মঙ্গলবার(৯ জুলাই) সন্ধ্যায় লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বুশে এলাকার একটি বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
হার্টফোর্ডশায়ার পুলিশ জানিয়েছে, তিন খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন ২৬ বছর বয়সী কাইল ক্লিফোর্ডকে খুঁজছেন তারা।
হারফোর্ডশায়ার পুলিশের চিফ সুপারিনটেনডেন্ট জন সিম্পসন বলেন, ক্লিফোর্ড ওই নারীদের হত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিম্পসন বলেন, ‘একটি ভয়াবহ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান দলও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। এই হত্যাকাণ্ডে ক্রসবো এবং অন্যান্য অস্ত্রও ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২, আহত ৩
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার(৯ জুলাই) সন্ধ্যায় লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বুশে এলাকার একটি বাড়িতে ২৫, ২৮ ও ৬১ বছর বয়সী তিন নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করলেও ঘটনাস্থলে তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়।
লন্ডনের বাসিন্দা ক্লিফোর্ড ওই নারীদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানায়নি পুলিশ।
ক্লিফোর্ড এখনও সশস্ত্র থাকতে পারে এবং জনগণকে তার কাছে না যেতে সতর্ক করা হয়েছে।
সিম্পসন বলছিলেন, 'কাইল, আপনি যদি এসব দেখে বা শুনে থাকেন, তাহলে দয়া করে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে বাসভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪
৬ মাস আগে
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ: লন্ডনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শান্তিপূর্ণ ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা এবং গাজা ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসানে সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় চার্চিল হলে বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা ও ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি বাড়াতে আগ্রহী রাশিয়া
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল। হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘের এফসিডিও মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণবিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার, সেদেশের নাগরিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উষ্ণ অভ্যর্থনাকারী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশকারী প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের নজর এখন ২০৩০ সালের মধ্যে নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।
আরও পড়ুন: এডিবির বার্ষিক সভা: এডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান এ সময় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন পত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি 'বঙ্গবন্ধু-অ্যাডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' চালু করার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। পেনি মর্ডান্ট এমপি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনা উদ্বোধন, 'বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ' এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন' অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের স্পিকার, হাইকমিশনার ও বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশের দুই বন্ধু লর্ড মারল্যান্ড এবং লর্ড স্বরাজ পলের হাতে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশেষ প্রদর্শনী, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী শাড়ি প্রদর্শনীতে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত, কমনওয়েলথ ও ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সিনিয়র প্রতিনিধি, কূটনীতিক, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, মিডিয়া, একাডেমিয়া এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যরা যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গাম্বিয়ায় ওআইসি সম্মেলনে যোগ দেবেন হাছান মাহমুদ
৮ মাস আগে
লন্ডনে তলোয়ার নিয়ে হামলায় কিশোরের মৃত্যু, আহত ৪
পূর্ব লন্ডনের একটি শহরতলীতে এক ব্যক্তি তলোয়ার নিয়ে জনসাধারণ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার ভোরের এ ঘটনায় ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়। আরও ৪ জন আহত হয়।
ছুরিকাঘাতে আহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় হাইনল্ট আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের কাছে একটি আবাসিক এলাকা থেকে ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই আক্রমণকে সন্ত্রাস সংশ্লিষ্ট বা 'টার্গেটেড অ্যাটাক' হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কেনিয়ায় চলমান বন্যায় অন্তত ৭০ জন মারা গেছেন, আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস
চিফ সুপারিনটেনডেন্ট স্টুয়ার্ট বেল এই ঘটনাকে 'সত্যিকার অর্থেই ভয়ংকর' বলে বর্ণনা করেছেন।
পূর্ব লন্ডনের ওই বাড়ির বাইরে তিনি বলেন, 'আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবস্থা কেমন, আমি কল্পনাও করতে পারছি না।’
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে হাইনল্ট আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের কাছে একটি আবাসিক এলাকা থেকে ফোন আসে যে একটি গাড়ি ওই এলাকায় একটি বাড়িতে ঢুকে লোকজনকে ছুরিকাঘাত করছে।
তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, হলুদ হুডি পরা এক ব্যক্তি লম্বা তলোয়ার বা ছুরি হাতে ওই এলাকার বাড়িগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ চিৎকার করে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে অস্ত্র নামিয়ে রাখার আহ্বান জানাচ্ছিল বলে শুনেছেন তারা।
এই ঘটনাকে 'মর্মান্তিক' উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, 'আমাদের রাস্তায় এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অ্যাডে অ্যাডেলেকান বলেন, এ ঘটনায় বড় আকারের কোনো হুমকি রয়েছে বলে পুলিশ বিশ্বাস করে না।
তিনি আর বলেন, ‘আমরা আর কোনো সন্দেহভাজনকে খুঁজছি না। এই ঘটনা সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে হচ্ছে না।’
ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন জানিয়েছে, ওই এলাকায় পুলিশি তদন্তের কারণে হাইনল্ট আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ কর্মকর্তা নিহত
গাজায় মৃত মায়ের গর্ভ থেকে উদ্ধারের ৫ দিন পর মারা গেছে শিশুটি
৮ মাস আগে
লন্ডন থেকে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছে বিএনপি-জামায়াত: সিলেটে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি তৎপরতার উস্কে দেওয়ার জন্য বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতেই এই ধরনের কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
আরও পড়ুন: বুধবার সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী
লন্ডন থেকে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি-জামায়াত কাজ করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এ ধরনের অপরাধ সহ্য করবে না।
নাগরিকদের সাংবিধানিক ভোটাধিকারের উপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগে কেউ যেন অন্যকে বাধা না দেয় বা ক্ষতি না করে।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে সিলেটে মাজার জিয়ারত করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করে।
তিনি আস্থা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের জনগণ শেষ পর্যন্ত এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের প্রত্যাখ্যান করবে।
সম্প্রতি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি অপরাধীদের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার এবং ভোটারদের অংশগ্রহণ ব্যাহত করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: চীনে ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোক
তিনি বলেন, বিএনপির ধর্মঘটে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা কী অর্জন করবে? বরং জনগণ শেষ পর্যন্ত তাদের ঘৃণা করবে।
আওয়ামী লীগের অতীতের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের কথা স্মরণ করেন এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে আওয়ামী লীগের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, বাকি চাহিদাও পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ যদি ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দেয় এবং আমরা আবার সরকার গঠন করতে পারি।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাতিজার উপর প্রতিপক্ষের হামলা, আহত ৩
তিনি বলেন, আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করব এবং কেউ বাড়ি ও ভূমিহীন থাকবে না।
শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে দরিদ্রদের সুখী করার তার সরকারের লক্ষ্য স্মরণ করেন এবং দেশ উন্নয়নশীল জাতির মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
বিএনপি'র নির্বাচন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি অগ্নিসংযোগের মতো সহিংস কৌশল অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এগুলোকে তিনি ‘সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি বেসামরিক নাগরিক, পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি: কৃষিমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে কাদের
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, দলটি সব সদস্যকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয় এবং সংসদ সদস্যদের পছন্দের বিষয়টি ভোটারদের উপর ছেড়ে দেয়।
মঙ্গলবার ঢাকায় ট্রেনে অগ্নিসংযোগে মা ও শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে এ ধরনের সহিংসতার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, এর চেয়ে বেদনাদায়ক আর কিছু হতে পারে না... কিভাবে একজন মানুষ আরেকজনের সঙ্গে এমন করতে পারে?
তিনি ২০১৩ ও ২০১৪ সালে একই ধরনের ব্যর্থ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন বিঘ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত কৌশলের বিরুদ্ধে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: আমি যা বলেছি, কোনো ভুল বলিনি: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুন: লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী
বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাজ করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষ হচ্ছে আজ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিদেশে বসবাসরত একদল লোক ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু লোক; যারা বিভিন্ন অপরাধ বা অপকর্ম বা দুর্নীতি করে দেশ ত্যাগ করেছে এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে চাকরি হারিয়েছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তারা (সরকারের) কোনো ভালো ও উন্নয়নমূলক কাজ দেখতে পায় না, বরং সবসময় ত্রুটি খুঁজে বের করে।
এই ঘৃণ্য অপপ্রচার মোকাবিলায় ডিজিটাল ও সামাজিক প্লাটফর্মে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য দলীয় সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমালোচকদের (সরকার ও এর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের) সারা বাংলাদেশে ভ্রমণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ বাংলাদেশে কোনো অভিযোগ শোনা যায় না। আমি দাবি করতে পারি, বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তাদের উন্নত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ আমরা করব।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে। চরম দারিদ্র্য মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং বেকারত্বের হার এখন মাত্র ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ও অন্যান্য সামরিক স্বৈরশাসকরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করায় তারা ১৯৮০ সালে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ ঘটলে সহ্য করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা প্রত্যক্ষ করছে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে দেশে এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দেশের অভ্যন্তরে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো স্থানীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করা যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে, আর এ জন্যই আমার সংগ্রাম।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কথা শোনেন।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
এসময় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঞ্চে ছিলেন লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। এছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আ.লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আ.লীগ নেতা আল মামুনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
১ বছর আগে