বই
অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই
যানজট ঠেলে সময় ও শ্রম নষ্ট করে দোকানে যেয়ে বই কেনার দিন শেষ। নানান উপলক্ষ এমনকি বইপ্রেমিদের বৃহৎ উৎসব বইমেলার জন্যও আকর্ষণীয় পসরা সাজিয়ে বসে বই কেন্দ্রিক ই-কর্মাস সাইটগুলো। অন্যান্য পণ্যের মতো এখন অর্ডার করা কাগুজে বইও এসে হাজির হয় বাড়ির দোরগোড়ায়। চলুন, ঘরে বসে প্রিয় বইটি কেনার জন্য বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ কয়েকটি ওয়েবসাইটের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অনলাইনে বই কেনার জন্য সেরা ১০টি ওয়েবসাইট
.
রকমারি
সাইট লিঙ্ক: https://rokomari.com/
বর্তমান সময়ে বইয়ের অনলাইন স্টোরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত নাম রকমারি। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিস্তৃত পরিসরে সমৃদ্ধ এই ডিজিটাল সংগ্রহশালায় সার্বক্ষণিক আনাগোনা থাকে দেশীয় পাঠকদের।
আরো পড়ুন: ছোটদের বাংলা ভাষা শেখার ১০টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
এখানে বই অর্ডারের প্রক্রিয়া শুরু হয় অ্যাকাউন্ট তৈরির মধ্য দিয়ে। এক বা একাধিক পছন্দসই বই নিয়ে কার্ট তৈরি করে চেকআউট দিলেই সম্পন্ন হয় কাঙ্ক্ষিত অর্ডারটি। ব্যাংকিং সিস্টেম, মোবাইল গেটওয়ে, এবং ক্যাশ অন ডেলিভারিসহ দেশের প্রায় সব প্রচলিত পরিষেবা রয়েছে মূল্য পরিশোধের জন্য।
রকমারি বই ডেলিভারি সেবা ছড়িয়ে রয়েছে সারা দেশব্যাপী। ঢাকার মধ্যে হলে ডেলিভারিতে সময় লাগবে ২ থেকে ৩ দিন, আর বাইরে হলে ৩ থেকে ৫ দিন সময় নেয়। পণ্যের ধরন, পরিমাণ, ওজন এবং ডেলিভারি অবস্থানের উপর ভিত্তি করে শিপিং চার্জ ন্যূনতম ৪৮ টাকা থেকে শুরু হয়।
অফিসের ঠিকানা: ২/১/ই, ইডেন সেন্টার, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.rokomari
অ্যাপেল অ্যাপ: https://apps.apple.com/us/app/rokomari-trusted-online-store/id1493045502
আরো পড়ুন: অভ্র কি-বোর্ড: বাংলা ভাষার ডিজিটাল রূপান্তরে মেহেদী হাসান ও নেপথ্য কুশলীরা
পিবিএস
সাইট লিঙ্ক: https://pbs.com.bd
পাঞ্জেরি বুক শপ সংক্ষেপে পিবিএস অনেক আগে থেকে দেশের সর্বস্তরের পাঠকদের নিকট একটি স্বনামধন্য প্রকাশনা। প্রথমদিকে ছোট্ট বইয়ের দোকান থেকে শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমানে অনলাইনে রয়েছে সরব উপস্থিতি। ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে খুব সহজেই গ্রাহকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত বইটির জন্য কার্ট তৈরি করতে পারেন। চেকআউট শেষে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ঘরে বসেই বইয়ের দাম পরিশোধ করা যায়। অগ্রিম পেমেন্টের পাশাপাশি আছে ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থা।
পিবিএস’র বই ডেলিভারি পরিষেবা সারা বাংলাদেশ জুড়ে বিস্তৃত। ডেলিভারি চার্জ, সময়সীমা পণ্যের পরিমাণ ও লোকেশন ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।
অফিসের ঠিকানা: ৪৩ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সড়ক (পুরাতন ১৬ শান্তিনগর), ঢাকা-১২১৭
আরো পড়ুন: নতুন স্মার্টফোন কিনছেন, জেনে নিন সেটি আসলেই নতুন কিনা!
পাঠক সমাবেশ
সাইট লিঙ্ক: https://pathakshamabesh.com/
৩৮ বছরের পুরোনো সংগঠন পাঠক সমাবেশ এখন দেশি-বিদেশি বইয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এর মেম্বারশিপ থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে গ্রাহকরা চাইলে সশরীরেও যেতে পারেন এর সুদৃশ্য লাইব্রেরিতে।
বর্তমানে কম্পিউটার এবং মোবাইল উভয় মাধ্যমেই পাঠক সমাবেশের জন্য নিবন্ধন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একই সঙ্গে বই ক্রয়, প্রি অর্ডার, পেমেন্ট, এবং মেম্বারশিপ সব কার্যকলাপ সম্পন্ন করা যায় এই অ্যাকাউন্টের অধীনে। এর বিষয়ভিত্তিক হেডার মেনু, ক্যাটাগরি, লেখক, এবং শিরোনামকেন্দ্রিক সার্চ অপশন গোটা ইন্টারফেসকে দিয়েছে সহজবোধ্যতা। এতে গ্রাহকরা সহজেই এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে চেকআউটের সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেন।
আরো পড়ুন: শিশুদের টিকটক আসক্তি: ঝুঁকি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
পাঠক সমাবেশের সেবার পরিধি বিস্তৃত রয়েছে গোটা দেশে। অর্থপ্রদানের একাধিক বিকল্প রয়েছে, তবে ক্যাশ অন ডেলিভারি শুধুমাত্র ঢাকার জন্য প্রযোজ্য।
অফিসের ঠিকানা: পাঠক সমাবেশ প্রাইভেট লিমিটেড, বিল্ডিং নং ৪, ১ম তলা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর (আজিজ মার্কেটের বিপরীতে) শাহবাগ, ঢাকা-১০০০
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.pathak.shamabesh
অ্যাপেল অ্যাপ: https://apps.apple.com/us/app/pathak-shamabesh/id1571038621
আরো পড়ুন: লেখকদের সৃজনশীলতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব: ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা
বই বাজার
সাইট লিঙ্ক: https://www.boibazar.com/
বৈচিত্র্যপূর্ণ সংগ্রহের দিক থেকে বই কেন্দ্রিক একটি প্রসিদ্ধ ই-কমার্স সাইট বই বাজার। যেকোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মতো এখানে গ্রাহকরা নিজেদের ই-মেইল বা মোবাইল নাম্বার দিয়ে সহজেই নিবন্ধন করতে পারেন।
কার্টে বই সংযুক্ত করা থেকে শুরু করে চেকআউট পর্যন্ত সার্বিক প্রক্রিয়া অত্যন্ত সাবলীল। অর্থপ্রদানের মাধ্যমগুলোর মধ্যে থেকে ক্রেতারা নিজের পছন্দ মতো পরিষেবাটি বেছে নিতে পারেন। এছাড়া বই বুঝে নিয়েও মূল্য পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।
বই বাজার সমগ্র বাংলাদেশে হোম ডেলিভারি করে থাকে। বইয়ের ধরণ, পরিমাণ ও লোকেশনের উপর নির্ভর করে ডেলিভারি চার্জ এবং সময়সীমা কমবেশি হয়ে থাকে।
অফিসের ঠিকানা: লেভেল: ১৪, সাত্তারা সেন্টার ৩০/এ ভিআইপি রোড, নয়া পল্টন, ঢাকা-১০০০
আরো পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
বুকস ডট কম ডট বিডি
সাইট লিঙ্ক: https://books.com.bd
শুরুতে বই-মেলা ডট কম (boi-mela.com) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এই সাইটটির ডোমেইন নাম বুকস ডট কম ডট বিডি। পাঠক, লেখক, ও প্রকাশকদের ভিন্ন ভিন্ন সাইটসহ এই অনলাইন লাইব্রেরিটি একটি সমন্বিত মঞ্চ। প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্ট সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
গ্রাহকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত বইটি সার্চ করে খুঁজে বের করে শপিং কার্টে যুক্ত করতে পারেন। কার্ট চূড়ান্ত হলে চেকআউটের পর ডেলিভারি এবং অর্থপ্রদানের জন্য বিশদ তথ্য প্রদান করতে হয়। অগ্রিম ও ক্যাশ অন ডেলিভারি উভয় পদ্ধতিতেই মূল্য পরিশোধের সুযোগ আছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই ঘরে বসেই পরিশোধ করা যায়।
নির্দিষ্ট চার্জের বিনিময়ে বুকস ডট কম ডট বিডি সারা দেশে হোম ডেলিভারি সেবা প্রদান করে। ঢাকার ভেতরে ও বাইরের অঞ্চলভেদে ডেলিভারি চার্জ এবং সময়সীমার মধ্যে তারতম্য হয়ে থাকে।
অফিসের ঠিকানা: নোয়াখালী টাওয়ার, ৯/সি (৮ম তলা), ৫৫/বি পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০
আরো পড়ুন: কীভাবে জানবেন ঢাকার যানজটের সর্বশেষ অবস্থা?
বাতিঘর
সাইট লিঙ্ক: https://baatighar.com
বাংলাদেশের বইপ্রেমিদের নিকট প্রিয় একটি গন্তব্য এই বাতিঘর। অফলাইনের মতো অনলাইনেও রয়েছে এর ব্যাপক পরিচিতি।
ইন্টারফেস যথেষ্ট সুবিধাজনক হওয়ায় গ্রাহকরা লেখক ও জনরা ভেদে বই অনুসন্ধানের সুযোগ পান। নিজস্ব অ্যাকাউন্ট পরিচালনার ব্যবস্থা থাকায় কার্ট থেকে চেকআউট পর্যন্ত পুরো অর্ডার পদ্ধতিতে কোনো জটিলতার অবকাশ থাকে না।
ডেলিভারি পেয়ে ক্যাশ দেওয়াসহ অর্থ পরিশোধের জন্য বিভিন্ন ধরণের মোবাইল ও ব্যাংকিং সেবা সংযুক্ত আছে। ফলে মূল্য পরিশোধ নিয়ে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত হোম ডেলিভারি চালু রাখায় বাতিঘর এখন সর্বস্তরের পাঠককের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট, ও রাজশাহীতে এর শাখা রয়েছে।
হেড অফিসের ঠিকানাঃ সপ্তম তলা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবন, ১৭ ময়মনসিংহ রোড/বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গোলি, ঢাকা-১২০৫
আরো পড়ুন: ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের উপায়
ওয়াফিলাইফ
সাইট লিঙ্ক: https://www.wafilife.com
ইসলামী বইয়ের এক অনন্য ডিজিটাল সংগ্রহশালা ওয়াফিলাইফ। দেশের প্রথম সারির বই ভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর মতো এতেও রয়েছে অত্যাধুনিক ফিচার। এর মধ্যে জনরা ভিত্তিক মেনু ও সার্চ সিস্টেম, পছন্দনীয় লিস্ট, অ্যাকাউন্ট, শপিং কার্ট এবং একাধিক পেমেন্ট সিস্টেম অন্যতম।
মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে অগ্রিম এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি উভয় সুবিধাই দেওয়া হয়। অ্যাকাউন্ট, বই সার্চ, এবং অর্ডারের প্রক্রিয়া মোবাইল থেকেও সম্পন্ন করা যায়।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সর্বত্র ওয়াফিলাইফের হোম ডেলিভারি সেবা রয়েছে।
অফিসের ঠিকানা: বাড়ি ৩১০, রোড ২১, মহাখালী ডিওএইচএস, ঢাকা-১২০৬
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.wafilife.app&utm_source=website
আরো পড়ুন: এয়ার পিউরিফায়ার: প্রয়োজনীয়তা, দাম, জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ও নতুন মডেল
ই-বইঘর
সাইট লিঙ্ক: https://eboighar.com
শিক্ষাগত ও কর্মজীবনের সকল গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের জন্য ওয়ান-স্টপ-পয়েন্ট বলা যেতে পারে ই-বইঘরকে। সাধারণ সার্চ ফিচার ছাড়াও এতে রয়েছে লেখক ও পাবলিশার সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরি ভিত্তিক মেনু। পৃথক অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থা ইতিপূর্বে অর্ডারকৃত বইগুলো পুনরায় কেনার জন্য নতুন করে খুঁজে বের করতে হয় না।
তাছাড়া সহজাত ইন্টারফেস নিয়মিত কার্ট পরিচালনা, চেকআউট, এবং অর্থ পরিশোধের পদক্ষেপগুলোকে ঝামেলাহীন করে তুলেছে।
ই-বইঘরের সেবার পরিধি সারা দেশে বিস্তৃত এবং সব অঞ্চলের গ্রাহকরাই ডেলিভারি পরবর্তী অথবা অগ্রিম পেমেন্টের সুবিধা পান।
অফিসের ঠিকানা: ২১৫/এ আউটার সার্কুলার রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকবে
দারাজ বুকস অ্যান্ড ম্যাগাজিন্স
সাইট লিঙ্ক: https://www.daraz.com.bd/books-magazines
দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজও দীর্ঘ দিন ধরে বইপ্রেমিদের আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। কম্পিউটারের জন্য এর ওয়েব ভার্সন এবং মোবাইল অ্যাপ দুটোতেই সমানভাবে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে গ্রাহকরা। তাই অ্যাকাউন্ট তৈরি, কার্ট সম্পাদনা, এবং অর্থ পরিশোধ; কোনো ক্ষেত্রেই তেমন ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় না। এরপরেও কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে ‘দাজ’ (Daz) নামক চ্যাটবটের সাহায্য নেওয়া যায়।
বিশেষ করে কেনার আগে নির্দিষ্ট বইটির জন্য প্রয়োজনীয় রিভিউ দেখার ক্ষেত্রে এই সাইটের জুড়ি মেলা ভার। ডেলিভারি হাতে পেয়ে মূল্য পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরণের অর্থ পরিশোধের পদ্ধতির সঙ্গে রয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ ডেলিভারি সেটিং। দারাজের সেবার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে রয়েছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.daraz.android
অ্যাপেল অ্যাপ: https://apps.apple.com/gb/app/daraz-online-shopping-app/id978058048
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বুক হাউস
সাইট লিঙ্ক: https://bookhousebd.com
বয়স ও পেশা নির্বিশেষে সব ধরণের পাঠকদের কাছে প্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম এই বুক হাউস। বই কেনাবেচার ক্ষেত্রে দেশের প্রসিদ্ধ অনলাইন সাইটগুলোর মতো এর ইন্টারফেসও যথেষ্ট সহজবোধ্য। অর্ডারের সঙ্গে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্ট, শপিং কার্ট, চেকআউট, ডেলিভারি ও পেমেন্ট-সংক্রান্ত তথ্য প্রদান প্রতিটি বিষয় বেশ নিরবচ্ছিন্ন।
বুক হাউসের সেবার পরিব্যাপ্তি দেশ জুড়ে বিস্তৃত। শিপমেন্ট ব্যবস্থায় একাধিক অপশন না থাকলেও বিভিন্ন ধরণের পেমেন্ট ক্যাটাগরির সুবিধা প্রত্যেক অঞ্চলের গ্রাহকরাই পেয়ে থাকেন।
অফিসের ঠিকানা: প্রীতম ভবন, ২১৫, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, নিচতলা, রুম নং: ৩২-৩৬, (পুরানা পল্টন), ঢাকা-১০০০
আরো পড়ুন: টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
পরিশিষ্ট
অনলাইনে বই কেনার জন্য এই ১০টি ওয়েবসাইট পাঠকদের বই বিপণীর বিড়ম্বনাকে কমিয়েছে। এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইতোপূর্বে স্বনামধন্য এবং সাহিত্যানুরাগীদের প্রিয় গন্তব্য ‘পিবিএস’ পাঠক সমাবেশ, এবং ‘বাতিঘর’। অনলাইন বই বিপণীর এই বিপ্লবে ‘রকমারি’র সহযোদ্ধারা হলো ‘বুক্স ডট কম ডট বিডি’, ‘বই বাজার’, এবং ‘ই-বইঘর’। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ডিজিটাল স্টোরগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ওয়াফিলাইফ’ এবং ‘বুক হাউস’। এমনকি দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স সাইট ‘দারাজ’ও সমান আস্থা নিয়ে বইপ্রেমিদের চাহিদা পূরণ করে আসছে। সামগ্রিকভাবে এই প্ল্যাটফর্মগুলো বাংলাদেশিদের বইপ্রীতি বাড়াতে ব্যাপক অবদান রাখছে।
আরো পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
২০ দিন আগে
আমানুল্লাহ খানের প্রিয় বইয়ের নতুন ঠিকানা এইউবির পাঠাগার
ইউএনবির প্রয়াত চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ খান স্মরণে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এইউবি) পাঠাগারে শিক্ষাসামগ্রী প্রদান করেছে তার পরিবার। এ উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক স্মরণসভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আমানুল্লাহ খান স্মরণে এইউবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে তার সহধর্মিণী বিশিষ্ট সমাজসেবী শিরিন খান বলেন, ‘দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন বই পড়তে এবং সংগ্রহ করতে।’
‘বই ছিল আমানুল্লাহ খানের প্রাণ। আমার বাসার সব জায়গায় শুধু বই আর বই। কোথাও গেলে কার্টন কার্টন বই নিয়ে যেতেন আমানুল্লাহ। বই আর লাইব্রেরিই ছিল তার সব।’
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৫৩ বছরের সংসারের স্মৃতির সঙ্গে বই জড়িয়ে আছে। পেশাগত জীবনে আমানুল্লাহ ছিলেন চার্টার অ্যাকাউন্টেন্ট। কিন্তু ইউএনবির সঙ্গে জড়িয়ে তার ধ্যান-ধারণা সাংবাদিকতা আর বই নিয়েই ছিল। আজকে আমানুল্লাহ খানের এই বই আপনাদের হাতে তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাফর সাদিক বলেন, ‘আমানুল্লাহ খান আজকে মহানুভবতার উদহারণ তৈরি করে গেলেন। আজকে তার পরিবার বই উপহার দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। মানুষ চলে যায় কিন্তু হয়তো কিছুই রেখে যায় না। তবে আমানুল্লাহ খান জ্ঞানের বিশাল ভান্ডার রেখে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য।’
বই গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘আমানুল্লাহ খান ও শিরিন খানের কোনো সন্তান নেই; বই ছিল তাদের কাছে সন্তানসম। আর এই মহামূল্যবান সম্পদই আজকে তারা আমাদের হাতে তুলে দিলেন। এই বই আমাদের কাছে মহামূল্যবান সম্পদ হিসেবে গচ্ছিত থাকবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এইউবির ব্যবসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমানুল্লাহ খানের এই অনুদান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষকদের জন্য অতি মূল্যবান উপহার। তার পরিবারের এই বদান্যতায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। এই বই উপহার আমানুল্লাহ খানের দেওয়া সদকায়ে জারিয়া। এই বইয়ের উসিলায় আল্লাহ তার আত্মার মাগফিরাত নসিব করবে—এই দোয়া করছি।’
৩৯ দিন আগে
বছরের সাত দিন চলে গেলেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা
ফেনীতে নতুন বছরের সাত দিন অতিবাহিত হলেও নতুন বই পায়নি ছয় উপজেলার প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তবে প্রাথমিকের সব বই পেয়েছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জেলায় প্রাথমিকের ৫০ শতাংশ বই এলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য বই এসেছে মাত্র ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। অপরদিকে মাদরাসা ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা এখনও বই হাতে পায়নি। মাধ্যমিকে জেলার ৩৭ লাখ বইয়ের চাহিদা থাকলেও এখনও বই আসেনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকে জেলায় মোট বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৬টি। তারমধ্যে এখন পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
এ ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির চাহিদার ৩ লাখ ১৬১টি বইয়ের একটিও এখনও আসেনি বলে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়।
জেলা শিক্ষা অফিসার কার্যালয় সূত্র জানায়, ফেনীতে মাধ্যমিক ও মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী তিন লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৮ জন। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৬টি।
৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় বই এসেছে ৭৯ হাজার ৩০৪টি। বিগত বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ফেনী সদর উপজেলায় মাধ্যমিকে নবম শ্রেণির ৩টি বিষয়ের ৩৪ হাজার ৫০০টি বই ও মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ১২ হাজার ৯০০টি বই এসেছে। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলায় মাধ্যমিকে নবম, দশম শ্রেণির দুইটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত) ২৫ হাজার ৮০০টি বই ও মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত, ইংরেজি) ৮ হাজার ৪০০টি বই এসেছে।
বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ফেনী সদর উপজেলার গোয়াডুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তারের। সে জানায়, বছরের প্রথম দিন বিদ্যালয়ে এসেছি। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পেলেও আমরা বই পায়নি। পরে বই দেবে বলে শিক্ষক জানিয়েছেন।
দাগনভূঞা উপজেলার লালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অনিন্দ্র দে জানান, প্রতিবার বই উৎসব হত, এবার তাও হয়নি। নতুন বইও পাইনি। বই কবে দেবে তাও ঠিক জানাতে পারেননি শিক্ষকরা।
ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টর স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক জাফর আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, নতুন বই পাবে না জেনে ছেলে স্কুলে যায়নি। সরকার আন্তরিক হলে শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই বই পেত।
নতুন শিক্ষাবর্ষে দেরিতে বই পাওয়া নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে নতুন বই।
আরও পড়ুন: নতুন সব বই শিক্ষার্থীরা কবে পাবে, জানেন না শিক্ষা উপদেষ্টা
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই বিতরণ শেষ হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই হাতে পেলেই বিতরণ করা হবে।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উল্লাহ বলেন, ‘নতুন বছরে আগের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসব হয়নি। মুদ্রণ জটিলতায় ও কিছু পরিবর্তনের কারণে ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলায় কিছু বই এসেছে।
এছাড়া জেলায় চাহিদার সব বই আসতে আরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো লাগতে পারে বলে জানান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উল্লাহ।
৬৮ দিন আগে
বুক রিভিউ লিখবেন যেভাবে
সুনিপুণভাবে সৃষ্ট শিল্পের সার্থকতায় নতুন মাত্রা যোগ করে তার গঠনমূলক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা। প্রবন্ধ বা গল্প-উপন্যাস নির্বিশেষে সযত্নে লেখা একটি বইও তার ব্যতিক্রম নয়। বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলী নিয়ে পক্ষপাতহীন অন্তর্দৃষ্টি নিছক কতক কাগজের গণ্ডি ছাড়িয়ে বইকে দান করে অবর্ণনীয় বিশালতা। এই দৃশ্যমানতা পাঠকদের কাছে বইকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে। সঙ্গত কারণেই একটি বই ঠিক কতটা পাঠক পৃষ্ঠপোষকতা পাবে- তার রূপরেখা গড়ে দেয় বই রিভিউ। এই সৃজনশীলতারই সাতকাহন নিরূপণ করা হবে আজকের নিবন্ধে। চলুন, একটি সার্থক বুক রিভিউ লেখার ধারাবাহিক পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।
বুক রিভিউ লেখার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা উচিত
স্পয়লার ব্যতিরেকে বইয়ের সারাংশ উত্থাপন
সারসংক্ষেপের মাধ্যমে বইয়ের নির্যাস সংগ্রহ রিভিউয়ের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় ঘটনাপ্রবাহ ও উদ্দেশ্য ব্যক্ত করার সময় ক্লাইমেক্স বা প্লট টুইস্টের ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধের পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে চূড়ান্ত পরিণতি এড়িয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অক্ষুণ্ন থাকে বইয়ের প্রধান আকর্ষণ।
এর পরিবর্তে যে ভিত্তির ওপর বইটির পটভূমি দাঁড়িয়ে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এতে করে রহস্য উদ্ঘাটনের স্বাধীনতাটা পাঠকদের হাতে থাকে। এটি বইয়ের মতো একটি সৃষ্টিকর্মের সার্থকতার জন্য অতীব জরুরি। তাছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ সারাংশ থেকেই বিকশিত হয় সমালোচনা ও পর্যালোচনার খোরাকগুলো।
আরো পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
বইটির কেন্দ্রীয় বিষয় বিশ্লেষণ এবং যুক্তি খণ্ডন
প্রতিটি লেখার মাঝে নিহিত থাকে লেখকের দাবি ও নিজস্ব দর্শন। এই স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি লেখকের দিক থেকে তার রচনাকে ন্যায়সঙ্গত করে। আর এই মতার্দশের ওপর ভিত্তি করেই একটি লেখার অবকাঠামো তৈরি হয়। একজন রিভিউদাতার দায়িত্ব এই ভিত্তিগুলোকে জনসমক্ষে নিয়ে আসা।
একইসঙ্গে প্রয়োজন লেখকের দাবিগুলোকে সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা। এই নিরীক্ষণের আওতায় আসে ঘটনার প্রতীকীকরণ, চরিত্রের বিকাশ ও প্লট গঠন। এখানেই লুকিয়ে থাকে একটি লেখার অন্য লেখা থেকে আলাদা হওয়ার মৌলিক উপাদানগুলো। তাই এই পর্যালোচনা কেবল সমালোচনাই নয়, রচয়িতার সৃজনশীলতা খুঁজে বের করাতেও সাহায্য করে।
লেখকের রচনাশৈলী ও লেখার মূল্যায়ন
একটি বই কতটুকু নিখুঁত তা যাচাইয়ের জন্য একজন রিভিউদাতারও উপযুক্ত যোগ্যতার প্রয়োজন। সাধারণত যে কোনো শিল্পের কারিগরি দিকগুলো সাধারণ দর্শক বা পাঠকদের জন্য নয়। বিশেষজ্ঞদের বিচরণটাই এখানে বরং বেশি থাকে। তবে ব্যাকরণগতভাবে সিদ্ধ লেখা অবচেতনেই পাঠকদের হৃদয়স্পর্শ করে যায়। আর এই কারণেই বইয়ের প্রমিত রূপ মূল্যায়নে অংশ নেওয়া উচিত রিভিউদাতাদের।
সুস্পষ্ট করে বলতে গেলে বাক্যের গঠন, শব্দভাণ্ডার ও সামগ্রিক বর্ণনামূলক প্রবাহ পঠনযোগ্যতাকে উন্নত করে। রূপকের ব্যবহারটি অভিনব হলেও তার প্রাসঙ্গিকতার মাত্রা ও সাহিত্যিক আমেজ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। পাশাপাশি বইয়ের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু বা জনরার সঙ্গেও বাক্য গঠন ও শব্দ চয়নের সমন্বয় সাধন জরুরি।
আরো পড়ুন: ঢাকার সেরা ১০টি জাদুঘর: ইতিহাস রোমন্থনের সঙ্গে জ্ঞান আহরণের অভাবনীয় সুযোগ
বইয়ের শক্তিমান ও দুর্বলতম অংশগুলো তুলে আনা
একটি রিভিউকে এক নজরে দেখে বোঝার উপযোগী করার মোক্ষম উপায় হচ্ছে তুলনামূলক বিশ্লেষণ। আর এই পর্যালোচনার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রভাবকগুলো হচ্ছে শক্তি ও দুর্বলতাগুলো।
চরিত্রের বিকাশ বা উদ্ভাবনী প্লটের মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যেগুলো বইটির প্রতি পাঠকদের আকর্ষণ বাড়ায়। এই শক্তিগুলোকে উদাহরণসহ লিপিবদ্ধ করে ব্যাখ্যা করা যায়। অন্যদিকে, ঘটনার ধারাবাহিকতার আকস্মিক ছন্দ পতন এবং চরিত্রের পূর্ণতা না পাওয়ার মত বিষয়গুলো বইয়ের দুর্বলতাকে জাহির করে। এগুলোর বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্ভাব্য সমাধান দাড় করানো যেতে পারে। এটি রিভিউয়ের সময় গঠনমূলক সমালোচনার অন্যতম একটি উপাদান।
সরাসরি বই থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া
পর্যালোচনার সময় লেখকের দাবিগুলোকে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়ে তা খণ্ডন করার জন্য প্রয়োজন প্রমাণের। এর জন্য সরাসরি লেখকের লেখা বইয়ে থাকা উদ্ধৃতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ আর হয় না। উদ্দেশ্যটি একদম নিরেটভাবে ব্যক্ত থাকলে পুরো বাক্য বা অনুচ্ছেদটি তুলে আনা যেতে পারে। তবে একদম স্পষ্ট করে বলা নেই তবে ইঙ্গিত দেওয়া আছে বা বোঝানো হয়েছে, এমন দাবিগুলোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিরীক্ষণ দরকার।
এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা সাধারণ উদাহরণ হলো দীর্ঘ সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর মাঝের সম্পর্ক ও তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে যাচাই করা। বইয়ের শক্তি বা দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্যও এই গবেষণা প্রয়োজন।
আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপায়
অনুরূপ সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে তুলনা
তুলনামূলক পর্যালোচনার আরও একটা উপায় হলো একই ধারার বা একই লেখকের অন্যান্য কাজের সঙ্গে বইটির তুলনা করা। এই বিশ্লেষণে উঠে আসবে রচনাশৈলী, বিষয়বস্তু বা চরিত্রের বিকাশ, প্রাঞ্জলতা এবং বোধগম্যতার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। এছাড়া অন্য বইটি পাঠকের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তার স্বাপেক্ষে রিভিউকৃত বইটির জনপ্রিয়তা পাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা যায়।
এমনকি এই তুলনামূলক বিবৃতির মাধ্যমে কোন উপাদানগুলো বেশি চাহিদাসম্পন্ন সেগুলো চিহ্নিত হয়। ফলশ্রুতিতে বিষয়টি পাঠকদের উপলব্ধিতে আসার পাশাপাশি স্বয়ং লেখকের দৃষ্টিতেও তা ধরা পড়ে। এমনকি এটি বইয়ের মার্কেট রিসার্চের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং পাঠকদের নতুন বই কেনার সিদ্ধান্তকেও প্রভাবিত করে।
সুসংগঠিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ
একটি সফল রিভিউয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি পরিচ্ছন্ন ও যৌক্তিক কাঠামো। প্রথমে তথ্যপূর্ণ সারাংশ দিয়ে শুরু হবে বইয়ের প্রাথমিক উপাদানগুলোর রূপরেখা। অতঃপর এর নিরিখে ধীরে ধীরে গভীর বিশ্লেষণ হবে লেখার শৈলী এবং যুক্তি তর্ক নিয়ে। প্রতিটি পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে পরের পর্যায়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকা উচিত, যা পাঠকদের পরবর্তীতে কি আছে তা জানার জন্য উদ্যত করবে।
আরো পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
এককভাবে শুধুমাত্র লেখা ও লেখকের কথা না বলে প্রাসঙ্গিকভাবে অন্যান্য অনুরূপ কাজেরও হস্তক্ষেপ ঘটানো প্রয়োজন। পরিশেষে ব্যক্তিগত মতামতের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে একটি তথ্যনির্ভর সুপারিশ বা বইটি পড়ার প্রতি নিরুৎসাহিতকরণ অন্তর্ভূক্ত হবে।
ব্যক্তিগত প্রতিফলন
একটি বই একজন পাঠকের ব্যক্তিগত পর্যায়ে কতটা অনুরণন ঘটাতে পারছে তার ওপর নির্ভর করে বইটির সফলতা। তাই বইটি পড়ার পর রিভিউদাতার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেটাও রিভিউয়ে থাকা জরুরি। বিশেষ করে পাঠকের ভালো বা খারাপ লাগা যেখানে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেখানে অন্য পাঠকের অনুভূতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই পাঠক যখন কোনো বই পড়ার কথা ভাবেন তখন আগেই তার রিভিউ খোঁজার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে সেই রিভিউকে তিনি সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেন যেখানে ব্যক্তিগত অভিমতের উপস্থিতি রয়েছে। এই অনুভূতিগুলোর সঙ্গে তারা নিজেদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আবেগের সম্পর্ক খুঁজে পান। রিভিউ পড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা বইটির কিনতে বাধ্য হন।
ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা বজায় রাখা
রিভিউ মানেই বইয়ের কেবল ভালো দিক নিয়ে আলোচনা করা নয়। আবার এমনও নয় যে, শুধু মন্দ দিকগুলোকেই তুলে আনতে হবে। একটি পক্ষপাতহীন স্বচ্ছ পর্যালোচনার জন্য ভালো-মন্দ দুটোর মধ্যেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুর বজায় রাখা অপরিহার্য। এর ফলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিশ্লেষণটি ব্যক্তিগত পছন্দের বাইরে যেয়ে সুষ্ঠু প্রমাণের ভিত্তিতে করা হয়েছে। গুণগুলো অকপটে স্বীকার করার পাশাপাশি ত্রুটিগুলোর সন্নিবেশ ঘটাতে হবে গঠনমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে। এই ভারসাম্যপূর্ণতা রিভিউয়ের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং একই সঙ্গে তা পেশাদারিত্বেরও পরিচয় বহন করে।
আরো পড়ুন: ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
বইটি পড়ার জন্য সুপারিশ বা নিরুৎসাহিতকরণ
সবশেষে বইটি পড়ার জন্য সময় দেওয়া পাঠকের জন্য সমীচীন হবে কিনা তার একটি স্পষ্ট ঘোষণা থাকা উচিত। এই ঘোষণা শেষে দেওয়া হলে তা ন্যায়সঙ্গত হয় কেননা এরই মধ্যে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ পাঠকদের উদ্দেশ্যে পরিবেশন করা হয়ে গেছে। সেই অর্থে চূড়ান্ত মতামতটি অবিসংবাদিতভাবে তথ্যবহুল ও যৌক্তিক হিসেবে প্রতীয়মান হবে।
বইটি সুপারিশযোগ্য হলে কোন ধরনের পাঠক সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে, তা উল্লেখ করা যায়। আর যদি তা না হয় তবে কেন বইটি পড়া উচিত নয় তার নেপথ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে। এতে করে পাঠকরা তাদের নিজ নিজ সাহিত্যিক রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
শেষাংশ
একটি বুক রিভিউ লেখার মাধ্যমে মূলত প্রমাণ ও ব্যক্তিগত অন্তর্দৃষ্টির পটভূমিতে একত্রিত হয় বইয়ের মূল নির্যাস ও রচয়িতার লেখনী। সেই সঙ্গে বইয়ের শক্তি ও দুর্বলতা এবং ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার ভারসাম্যপূর্ণ মূল্যায়ন একটি উন্মুক্ত মঞ্চ পায়। অন্যান্য সৃষ্টিকর্মের সহিত তুলনা, রিভিউদাতার ব্যক্তিগত প্রতিফলন ও সুপারিশে স্পষ্ট হয়ে ওঠে পাঠকশ্রেণীর প্রতি বইয়ের আবেদন। সর্বোপরি, বইয়ের সুসংগঠিত বিশ্লেষণ পর্যালোচকের সুসংহত চিন্তার পরিচায়ক, যা বইয়ের মতো রিভিউকেও পরিণত করে শিল্পে।
আরো পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
১৯৭ দিন আগে
সময়মতো বই দিতে পারব বলে আমরা আশাবাদী: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা এখনো আশাবাদী এবং বিশ্বাস করি সময়মতো বই দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।
এ ছাড়া বছরের শুরুতে বই পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি গণমাধ্যমে দুই রকম হেডলাইন দেখেছি। একটি বলছে- পহেলা জানুয়ারিতে বই দেওয়া যাবে কোনো শঙ্কা নেই। অপরটি বলেছে- পহেলা জানুয়ারিতে বই দেওয়া নিয়ে শঙ্কা। কীসের উপর ভিত্তি করে এই সংবাদ প্রকাশ করছেন এবং কেন করছেন (!) আমি জানি না।
আরও পড়ুন: দেশে পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় চান শিক্ষামন্ত্রী
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর সার্কিট হাউজে নতুন শিক্ষাক্রমের সংস্কার ও বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম একেবারে রূপান্তর। আপনারা-আমরা কিন্তু একটি মুখস্থ বিদ্যার জগৎ পার করে এসেছি। আমরা যখন পড়াশুনা করেছি, তখন একটি নতুন প্রযুক্তি এসেছে ১০-১৫ বছর বিরতিতে।
তিনি আরও বলেন, এখন ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। এখন আমাদের শিক্ষার্থীরা যে জগতে বড় হবে, সেখানে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে নেতৃত্বের জায়গায় টিকে থাকতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কি সারা জীবন পিছিয়ে থাকব? নিশ্চয়ই না।
তিনি বলেন, এখন পৃথিবীতে মূল জিনিস হচ্ছে দক্ষতা। সেই কারণে আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম রূপান্তর। এখন বিশ্বের অনেক দেশ এটি করেছে। বাকি দেশগুলো করার চেষ্টা করছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি খুব ভালো জায়গায় নিজেদের নিয়ে আসতে পেরেছি, এটি হুট করে হয়নি। ২০১৭-১৮ সালে অনেকগুলো গবেষণার পর ২০১৯ সালে সিদ্ধান্ত হয়ে আজকে আমরা এই অবস্থায় এসেছি। এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: শিক্ষায় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে: শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেন, একটি দীর্ঘ সময় নিয়ে, অসংখ্য বিশেষজ্ঞদের কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের এই জায়গায় এসেছি এবং এটি আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।
সুতরাং এটি নিয়ে যারা আজকে তথাকথিত আন্দোলন করছে, তাদের বেশিরভাগ কোচিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। যারা একেবারে স্কুল পর্যায় গিয়ে কমিশনে গাইড বই বিক্রি করেন, তারা এসবের সঙ্গে জড়িত এবং দুঃখজনক হলেও সত্য কোনো কোনো শিক্ষকও এর সঙ্গে জড়িত।
মন্ত্রী বলেন, তারা অনেক অভিভাবককেও বিভ্রান্ত করছেন। এত বড় রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমরা একটি বছর পার করে এসেছি। এটি কম সময় নয়। আমাদের অভিভাবকরা অভ্যস্ত হবেন, শিক্ষকরা ক্রমাগত প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন এবং প্রশিক্ষণ চলবে। কাজেই আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে এবং বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বইগুলো এখনো বলছি পরীক্ষামূলক সংস্করণ। আমরা ক্রমাগত এর পরিমার্জন ও পরিশীলন করব। কিন্তু এই পদ্ধতির পরিবর্তন হবে না। বইগুলো আরও উন্নত করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মোসা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বেপারী, সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আইনজীবী হুমায়ুন কবির সুমনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার বিষয়ে সজাগ থাকুন: শিক্ষামন্ত্রী
৪৯৩ দিন আগে
নতুন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপাতে কোনো ধরনের সমস্যা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপাতে কোনো ধরনের সংকট কিংবা সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, গত বছর কাগজ, বিদ্যুৎসহ অন্য সংকট থাকলেও এ বছর তা নেই। ইতোমধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপানোর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর সার্কিট হাউজে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে, এইচএসসি এপ্রিলে: শিক্ষামন্ত্রী
এসময় মন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিকেরও টেন্ডার কাজ চলছে। টেন্ডার কাজ সম্পন্ন করার জন্য কমিটি রয়েছে। সেসব কমিটিতে এসব টেন্ডারগুলো যাচ্ছে এবং অনুমোদন হয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আশা করছি আগামী শিক্ষাবর্ষে যথাসময়ে সকল বই উপজেলাগুলোতে পৌঁছে যাবে এবং জানুয়ারির ১ তারিখে আমরা বই উৎসব করতে পারব।
এ সময় জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, চাঁদপুর পৌর সভার মেয়র জিল্লুর রহমান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: দীপু মনি
১৭ আগস্টেই এইচএসসি পরীক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী
৫৭০ দিন আগে
বঙ্গবন্ধুর ২০০ ভাষণ সম্বলিত ‘ভায়েরা আমার’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভায়েরা আমার’ শিরোনামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২০০টি ভাষণ সম্বলিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের শুরুতেই মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
‘ভাইয়েরা আমার’ নামটি প্রধানমন্ত্রীর নিজের দেওয়া। এছাড়া বইটির ভূমিকাও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষণসমগ্রটির সংগ্রহ, সংকলন ও সম্পাদনা করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম। বইটি প্রকাশ করেছে জিনিয়াস পাবলিকেশন্স।
জাতির পিতার এই ভাষণ সমগ্রের প্রধান বৈশিষ্ট হলো এতে এখন পর্যন্ত পাওয়া সকল ভাষণ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বইটির ২০০ ভাষণের মধ্যে বাংলাদেশ বেতারের আর্কাইভস থেকে প্রাপ্ত টেপ-সিডি হতে ১০০টিরও বেশি ভাষণ সংগ্রহ করা হয়; যা শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বইটিতে সংযোজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর হাতে বই তুলে দিলেন গাজীপুরের আ.লীগ নেতা আজমত উল্লাহ
প্রতিটি ভাষণের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে। বইটিতে প্রতিটি ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাইলাইট করে আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে।
এছাড়া সূচিতে ভাষণের বিষয়বস্তু, সাল ও তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতির পিতার ভাষণ শুধু বাংলাদেশেই নয় সমগ্র বিশ্বে এক অমূল্য দলিল।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো: রাষ্ট্রপতি
ভাষণসমগ্রটির ভূমিকাতে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু পড়া নয়, সেগুলোর মর্মার্থ অনুধাবন করে নিজ নিজ জীবনে অনুশীলন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সেই সোনার মানুষ হতে হলে জাতির পিতার আদর্শ ও জীবনাচরণ চর্চা করা অত্যাবশ্যক।
ভাষণসমগ্রটি রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী, ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে মর্মে মন্তব্য করেন এর সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জনপ্রিয় কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস নিয়ে চলচ্চিত্রকার অনার্য মুর্শিদের বই
৬৪৪ দিন আগে
জনপ্রিয় কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস নিয়ে চলচ্চিত্রকার অনার্য মুর্শিদের বই
কোরিয়ার জনপ্রিয় পপ সংগীতের দল বিটিএসের আদ্যোপান্ত নিয়ে ‘বিটিএস: সিউল টু সোল’- শিরোনামে নিবন্ধধর্মী একটি বই লিখেছেন চলচ্চিত্রকার অনার্য মুর্শিদ। শুক্রবার (১৯ মে) থেকে বইটি বাজারে পাওয়া যাবে।
বিটিএসের সাত তারকার জীবনবৃত্তান্ত, বিটিএসের সংকট-সংগ্রাম, শো, অ্যালবাম এবং পুরস্কারেরও একটি তালিকা রয়েছে এই বইতে।
কোরিয়ার ‘কালচারাল ওয়েভ’ এবং সফট পাওয়ার চর্চা বিষয়েও একটি গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে এই বইয়ে।
বইয়ের লেখক অনার্য মুর্শিদ বলেন, আমি একজন বাংলাদেশি বিটিএস ভক্তের সাংস্কৃতিক সংকটকে কেন্দ্র করে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি। চলচ্চিত্রটির প্রি-প্রোডাকশন করতে গিয়ে কে-পপ বিষয়ে একটি বইয়ের খুব প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। এর মধ্যে প্রকাশক একদিন বললেন যে তিনিও এই ধরনের কিছু কালচারল ডিপ্লোমেটিক বই প্রকাশ করতে চান। ইতোপূর্বে তার প্রকাশনী এই ধরনের বই প্রকাশও করেছে। আমি আশা করি দীর্ঘদিন থেকে কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যে সাংস্কৃতিক সেতু নির্মাণ হচ্ছে সেখানেও বইটি একটি ভূমিকা পালন করবে। বইটির মাধ্যমে প্রবীণরাও এই প্রজন্মকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পাবেন।
প্রায় দেড়শ পৃষ্ঠার পেপার ব্যাকের এই বইটি প্রকাশ করেছে উজান। প্রচ্ছদ করছেন লায়লা ফেরদৌসী। মুদ্রিত মূল্য রাখা হয়েছে ৩৫০ টাকা। ৩০% কমিশনে বইটি বিক্রি করছে বিটিএস আর্মি পেইজ (FB/BTSARMYFILM)।
এছাড়াও উজানের পেইজ, রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিবঙ্গের বিটিএস ভক্তরা বইটি ‘তবুও প্রয়াস’, ‘লালন’ ও ‘চন্ডাল বুকস’ থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: প্রথম সোলো অ্যালবাম 'ইন্ডিগো' নিয়ে আসছে বিটিএসের আরএম
কে-পপ আইডল ভি’র জন্মদিন: ঢাকা থেকে নিউইয়র্কের আর্মিরা কিভাবে তার জন্মদিন উদযাপন করছে
৬৬৮ দিন আগে
জাপানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি চিত্রকলা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান
বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে জাপানের টোকিওতে জাপানি চিত্রকলা 'মাঙ্গা' ফর্মের কমিক বই 'ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' এর দ্বিতীয় প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, 'ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' বইটিতে ছবি ও বর্ণনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শিশু ও কিশোররা বইটি পড়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে যেমন জানতে পারবেন তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
বিশেষ অতিথি লেখক ও সাংবাদিক মনজুরুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন কমিক বই আর হয়নি। এই কমিক বই তিন ভাষায় প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশের তরুণদের পাশাপাশি জাপানি তরুণদের আকৃষ্ট করবে। এছাড়া ইংরেজি পাঠকদেরও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে। এই বই থেকে অ্যানিমেশন মুভি হলে তা আরেকটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি চিত্রকলা 'মাঙ্গা' ফর্মে কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই মাঙ্গা কমিক বই প্রকাশ করা একটি দারুণ ব্যাপার। এর ফলে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আরও একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হলো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাপান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের বাংলা রেডিও বিভাগের প্রধান শিখা মুরাকামি, বইটির লেখক ও প্রকাশক স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এম ই চৌধুরী শামীম, বইটির সহ-লেখক শাইন পার্টনারস করপোরেশন জাপানের প্রধান নির্বাহী ইয়েমতো কিয়েতা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।
শুক্রবার জাপানের রাজধানী টোকিও'র আকাসাকা প্যালেসে জাপান সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোনের হাতে বইটি তুলে দেন বইটির লেখক ও প্রকাশক স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এম ই চৌধুরী শামীম ও বইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক স্কলার্স বাংলাদেশের সোসাইটির উপদেষ্টা, ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান, বুয়েট গ্র্যাজুয়েটস ক্লাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। এ সময় পাঁচ পর্বে প্রকাশিতব্য বইটির বাকি চার পর্বের প্রকাশ ও প্রকাশনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তার মূল্যবান দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বইটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা, সহ-লেখক শাইন পার্টনারস করপোরেশন জাপানের প্রধান নির্বাহী ইয়েমতো কিয়েতা, শাইন পার্টনারস করপোরেশনের সিএফও ইয়েমতো এআই, লেখক ও অভিনেতা আল মনসুর বেলাল, তথ্যচিত্র নির্মাতা কায়সার কাদের সেলিম।
গত ৫ এপ্রিল ঢাকায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি। বইটি প্রকাশ করেছে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠান এনএস পাবলিশার্স।
প্রকাশনা সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস ও ম্যাক্স গ্রুপ।
জাপানিদের কমিক ও কার্টুন ধাঁচের চিত্রকলার একটি সৃজনশীল এবং সুপরিচিত ধরন হচ্ছে মাঙ্গা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস মাঙ্গা ফর্মে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বইটিতে বর্ণনা এবং ব্যতিক্রমী ছবির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
জাপানি আর্ট ফর্ম 'মাঙ্গা' চিত্রকলার একটি ব্যতিক্রমী ধারা, যা নিজ বৈশিষ্ট্যে স্বতন্ত্র। এর সঙ্গে পাশ্চাত্য ধারা বা অন্য কোনো ফর্মের সম্পৃক্ততাও নেই। জাপানি কমিকের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ফর্মটি জাপানি চিত্র ও প্রকাশনা শিল্পে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। অভিযান কাহিনি থেকে ফ্যান্টাসি, শিশুপাঠ থেকে বরণীয় ব্যক্তিত্বের জীবনী, লোককথা থেকে শুরু করে আধুনিক বাস্তব ও পরাবাস্তববাদী উপন্যাস, ইতিহাস থেকে শুরু করে রোমাঞ্চ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী থেকে শুরু করে রহস্যভেদী কাহিনি সবই অল্পকথায় এবং অসনাতন ছবিতে মাঙ্গায় মূর্ত হয়ে থাকে।
‘ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' বইটি মাঙ্গা ফর্মে বাংলা, ইংরেজী এবং জাপানি ভাষায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে চিত্রশিল্পের এই ফর্মটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত হওয়ার প্রয়াস পাবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সংগ্রামী জীবন সুপাঠ্য আকারে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হলো ৭টি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে শিশু-কিশোর আনন্দমেলা
৬৮৭ দিন আগে
একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা সবসময়ই অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছে। অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা হয়।
এটি দেশের বৃহত্তম বইমেলা, যেখানে প্রকাশকরা বিভিন্ন ধারায় লেখা মুদ্রিত বই প্রদর্শন ও বিক্রি করেন।
এই মেলা পাঠকদের জন্য তাদের প্রিয় লেখক, কবি, ঔপন্যাসিক ও প্রকাশকদের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা করার দুর্দান্ত সুযোগ করে দেয়। পাঠকদের বই পড়তে ও কিনতে উৎসাহিত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিবেশন করার পাশাপাশি বইমেলা মাসব্যাপী একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করে– যা বাংলাদেশের বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।
অমর একুশে বইমেলার ইতিহাসের শিকড় অনুসন্ধান করা যাক-
চিত্তরঞ্জন সাহা
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি মাঠ থেকে বইমেলা শুরু হয়। চিত্তরঞ্জন সাহা ১৯২৭ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার বাংলাবাজারে অবস্থিত তার প্রকাশনা সংস্থা পুঁথিঘর প্রকাশনী ১৯৭১ সালে পুড়িয়ে দেয়া হয়। চিত্তরঞ্জন সাহা ২৬ মার্চের পর ঢাকা ছেড়ে যান। তিনি আগরতলায় আশ্রয় নেন এবং তারপরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় চলে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অনেক বিশিষ্ট লেখক, শিল্পী, সাংবাদিককে শরণার্থী হিসেবে কলকাতায় থাকতে হয়েছিল।
সেই সময়কালে চিত্তরঞ্জন কলকাতায় বসবাসরত কয়েকজন বিশিষ্ট সাহিত্যিকের সঙ্গে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। তারা বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ওপর হওয়া অন্যায় ও যুদ্ধ নিয়ে লেখার ও তা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবেই মুক্তধারার জন্ম হয়।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চিত্তরঞ্জন সাহা বাংলা একাডেমি ভবনের সামনে গাছের নিচে একটি মাদুর বিছিয়ে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রায় ৩২টি (কিছু সূত্র অনুসারে ৩৩টি) বই প্রদর্শন করেন।
যদিও চিত্তরঞ্জন সাহা প্রথমদিককার উদ্যোক্তা হিসেবে বইমেলার সূচনা করেছিলেন, তবে কিছু সূত্র অনুসারে তিনিই প্রথম ব্যক্তি নন যিনি ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বই বিক্রি শুরু করেছিলেন। স্ট্যান্ডার্ড পাবলিশার্সের রুহুল আমিন নিজামী রাশিয়ান বই প্রদর্শন শুরু করেন। এই বইগুলো তাদের সমৃদ্ধ বিষয়বস্তু এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য সেসময়ে খুব জনপ্রিয় ছিল।
আরও পড়ুন: দুই বছর পর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুরু হচ্ছে বইমেলা
বাংলাদেশে প্রথম বইমেলার পেছনের ইতিহাস
চিত্তরঞ্জন সাহা একুশের বইমেলার প্রবর্তক হিসেবে স্বীকৃত হলেও বইমেলার শিকড় আরও গভীরে প্রোথিত।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৫ সালে।
উদ্যোগটি নিয়েছিলেন সরদার জয়েনউদ্দীন। তিনি ১৯১৮ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন।১৯৬৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) গ্রন্থাগারের নিচতলায় কিছু শিশুতোষ বই প্রদর্শন শুরু করেন। তখন তিনি শিশুদের বই নিয়ে ইউনেস্কোর একটি প্রকল্পে কাজ করছিলেন।
১৯৭০ সালে জয়েনউদ্দীন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জে একটি বইমেলার আয়োজন করেন।
ইউনেস্কো ১৯৭২ সালকে ‘আন্তর্জাতিক বই বর্ষ’ ঘোষণা করায়, ডিসেম্বরে জয়েনউদ্দীন বাংলা একাডেমিতে বইমেলার আয়োজনের উদ্যোগ নেন। এরপর থেকে বাংলা একাডেমি বইমেলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়।
একুশে বইমেলার যাত্রা
চিত্তরঞ্জন সাহা আরও কয়েক বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বই প্রদর্শন ও বিক্রি চালিয়ে যান। ১৯৭৬ সালে বই বিক্রির এই ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যান্য প্রকাশকরা একত্র হন এবং এতে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়।
আশরাফ সিদ্দিকী সে সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন এবং বইমেলার সঙ্গে একাডেমির যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এরপর ধীরে ধীরে বাংলা একাডেমির আয়োজক সমিতি বইমেলাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে ‘বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি’ (চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত) এবং বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় একটি বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: এবার একুশে বইমেলায় সাড়ে ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি
৭৭৫ দিন আগে