ব্যবসা-বাণিজ্য
চাল রপ্তানিতে ২০ভাগ শুল্ক আরোপ করল ভারত
বাংলাদেশে চাল রপ্তানি বন্ধ না করলেও রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত করতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক রবিউল ইসলাম জানান, আমরা এতদিন ভারত থেকে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি করছিলাম। ভারতও বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত চাল রপ্তানি করে আসছিল। হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চাল রপ্তানিতেতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়টি আমাদের জানান। নতুন এই শুল্ক শুক্রবার থেকেই কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে চালের আমদানি মুল্য বেড়ে যাবে। যার কারণে দেশের বাজারে চালের দাম আরও বাড়বে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারত সরকারের শুল্ক বসানোর পরও যদি দামে পড়তা হয় তাহলে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করা হবে। না হলে চাল আমদানি নিয়ে শঙ্কা আছে। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। শনিবার বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলে বিষয়টি বোঝা যাবে।
উল্লেখ্য, দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির অনুমতি দিলে গত ২৩ জুলাই বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। অনুমতি পাওয়া আমদানিকারকরা হিলিসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু করেন। ২৮ আগস্ট চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। এরপর থেকে বন্দর দিয়ে চালের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কেজি প্রতি ৪-৫ টাকা করে দাম কমে আসছিল। কিন্তু এরমধ্যেই ভারত সরকার নতুন ঘোষণা দিল।
‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল প্রাণ-আরএফএল
ব্যবসা ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পেয়েছে দেশের শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শুক্রবার সকালে প্রাণ গ্রুপের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,এই বছর তিন শ্রেণিতে দুই প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তিকে ‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’দেয়া হয়। ‘এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী দিলো প্রাণ-আরএফএল
প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিপূর্বক মানুষের মর্যাদা ও আত্মসম্মান বৃদ্ধি করা। আমরা এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অবিরামভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ স্বীকৃতি আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আরও বেশি উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: সেরা ভ্যাটদাতা সম্মাননা পেল প্রাণ-আরএফএলের ৪ প্রতিষ্ঠান
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম, ডিএইচএল এক্সপ্রেস ইন্ডিয়া’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএস সুব্রামানিয়ান, ডিএইচএল এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিয়ারুল হকসহ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে প্রাণ-আরএফএলের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যৌথভাবে এ সম্মাননা দিয়ে আসছে।
ব্রোকার সেবা প্রদানে এশিয়া সিকিউরিটিস ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটালের সমঝোতা স্মারক সই
টি এশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড -এর মধ্যে ব্রোকার সেবা প্রদানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করেছে।
বৃহস্পতিবার বনানীর তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ে এ চুক্তি সাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তির অধীনে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এর পরিচালিত সকল মিউচ্যুয়াল ফান্ড তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড থেকে সব ধরনের ব্রোকারেজ পরিষেবা পাবে।
তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুরুল আলম এ চুক্তিতে সাক্ষর করেছেন।
এ চুক্তি দু’পক্ষের মধ্যে একটি সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করবে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকতা রক্ষায় তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড -এর মধ্যকার চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন নগদ লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক , নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক , তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড -এর পক্ষে চেয়ারম্যান আসওয়াদ আকসির মুজিব ওয়াসি, এফআইএসডিএস ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন ।
অপরদিকে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড-এর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন শাহরিয়ার হাসান চৌধুরী উদয় (ম্যানেজার ফান্ড অপারেশন)।
অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যম: বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন?
জীবনে স্বচ্ছলতা আনার জন্য অর্থ বিনিয়োগ একটি জরুরি বিষয়। মধ্যম আয় থেকে শুরু করে উচ্চ আয়ের কর্মজীবীরা বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা নিয়ে নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকেন। দেখা গেছে যে বেশিরভাগ বাংলাদেশিই তাদের উপার্জিত অর্থের একটা অংশ ব্যাংকে জমা রাখেন। নির্দিষ্ট সুদের হারের সঙ্গে বিনিয়োগের স্কিমগুলো দিন দিন বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তবে সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত বিনিয়োগ ভবিষ্যতে আর্থিক সুরক্ষায় সম্পদ গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারে। সদূরপ্রসারী বিনিয়োগের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ অধিকাংশ ক্ষেত্রে এতোটাই লাভজনক যে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারে। গড়পড়তায় যে কোনো আয়ের লোকদের জন্য ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করাটা নিরাপদ। আসুন জেনে নেয়া যাক বৈধভাবে অর্থ কোথায় বিনিয়োগ করলে লাভবান হতে পারেন।
অর্থ বিনিয়োগের সেরা কয়েকটি মাধ্যম
ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি)
ব্যাংকিংয়ের এই মাধ্যমের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম খেয়াল রাখতে হয় দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ জমা রাখার ব্যাপারে। কম বেশি যে রকমেরই সুদের হার হোক না কেন, উপার্জনের বড় সংখ্যক অর্থটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকবে লম্বা সময় ধরে। মূলত এই ধরনের অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি সাধারণ সঞ্চয় ভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি সুদ পেয়ে থাকেন।
শুধু ব্যাংকিই নয়; যেকোনো ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও ফিক্সড ডিপোজিটের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সুদের হার কম বেশি হয়ে থাকে। নিশ্চিত রিটার্নস পাওয়ার জন্য ফিক্সড ডিপোজিট বিনিয়োগের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এখানে সুদের পরিমাণ মার্কেটে সুদের হারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটি যে হারে সুদ নির্ধারণ করেছিল সেই হারেই বিনিয়োগকারি রিটার্নস পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রিমিয়াম ভিসা চালু করছে মালয়েশিয়া
যেকোনো সময় ডিপোজিটের মেয়াদ নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতায় পরিবর্তন করা যায়। সুদের হার পে-আউট, মাসিক ও ত্রৈমাসিক হিসেবে নির্বাচন করা যায়। পুনঃবিনিয়োগের ব্যবস্থা তো থাকছেই, সেই সঙ্গে আছে পাঁচ বছর মেয়াদের এফডির জন্য কর মুক্তির সুবিধা।
সঞ্চয়পত্র
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ঝুঁকিমুক্তভাবে জনগণের বিনিয়োগের পথ তৈরি করে সঞ্চয়পত্র। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিমে জনগণকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে এখানে বিনিয়োগ নেয়া হয়ে থাকে। স্থানীয় ও প্রবাসী; এই দুই ধরনের বাংলাদেশিদের জন্য আলাদা আলাদা সঞ্চয়পত্র গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদের এই সঞ্চয়পত্রগুলো অর্থ বিনিয়োগের বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফা দিয়ে থাকে। সেই সূত্রে, এটি নিঃসন্দেহে বৈধভাবে টাকা বিনিয়োগের একটি উপযুক্ত মাধ্যম।
বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা সঞ্চয়পত্রে ভিন্ন মেয়াদের সুদের হার পরিচালনা করে। ১৮ বছরের ওপরে যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক সঞ্চয়পত্র কেনার যোগ্যতা সম্পন্ন। এই মাধ্যমে একক বা যৌথভাবেও অর্থ বিনিয়োগ করা যায়। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত একজন ব্যক্তি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারে। মেয়াদের ওপর ভিত্তি করে এতে লাভ থাকে কমপক্ষে ৯ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেয়ার বাজার
বিনিয়োগকারিদের জন্য রীতিমত স্বর্গ বলা যেতে পারে শেয়ার বাজারকে। এখানে কেবল অর্থই না; সেই সঙ্গে দরকার হয় নানা ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য, শিক্ষা, বুদ্ধি ও সুদূরপ্রসারি দৃষ্টিভঙ্গি।
এই দক্ষতা কারণেই প্রায়ই সময় দেখা যায় যে একদিকে কেউ শেয়ার বাজারে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর অন্যদিকে কেউ নিজের সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসছে। তাই বলে শেয়ার বাজার কিন্তু কোনো জুয়া নয়। এখানে যে ব্যাপারটি দিন শেষে ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়, সেটি হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণের জ্ঞান ও মেধা। উপযুক্ত শেয়ার সঠিক সময়ে যারা ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারছে তাদের কাছে পুরো ব্যাপারটি বেশ লাভজনক হয়ে ওঠে। আর এক্ষেত্রে অপারগরাই দিন শেষে ক্ষতির সম্মুখীন হন।
শেয়ার বাজারে সাফল্য লাভের নিদিষ্ট কোনো ফর্মুলা নেই, তবে তুখোড় ব্যক্তিরা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারেন যে কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনা ঠিক আর কোনটা ভুল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বৈধভাবে রেমিটেন্স পাঠানোর সেরা কয়েকটি মাধ্যম: বিদেশ থেকে টাকা পাঠাবেন যেভাবে
মিউচুয়াল ফান্ড
বিনিয়োগ থেকে উচ্চ হারে রিটার্নপ্রাপ্তি মানেই মিউচুয়াল ফান্ড। বিনিয়োগকারীর টাকাটা এখানে বিনিয়োগ হয় ঋণ তহবিলে। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত দীর্ঘমেয়াদে, তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাজারের ওঠানামা। তাই স্বাভাবিকভাবেই বড় পরিমাণে ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা কম।
অনেকেই ভাবেন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের প্রথম শর্ত ভারতীয় হওয়া। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, শুধু বাংলাদেশই নয়; বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে নির্দিষ্ট ব্যাংক শাখা কিংবা বুকারের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে এই ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়। বর্তমানে এর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এটাই বোঝায় যে, মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আসলেই ভালো পরিমাণ লাভের মুখ দেখা যায়। বাংলাদেশে অনেক ব্যাংকের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে গ্রাহকরা বিনিয়োগ করে থাকে।
গোল্ড বা স্বর্ণ
বর্তমানে মুদ্রাস্ফিতির এক বিভীষিকাময় অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ববাসী। আজকের ১০০ টাকায় যা ক্রয় করা সম্ভব, আগামী ১০ বছর পরের ১০০ টাকায় তা কল্পনাও করা যাবে না। আর অর্থের এই সময় মূল্যের যখন ভয়াবহ হারে অধঃগমন ঘটে তখনি অর্থনীতির খারাপ সময় শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড
এটা খুবই স্বাভাবিক যে মূল্য কমে যাওয়া থেকে টাকাকে বাঁচাতে হলে কোনো না কোনো খাতে অবশ্যই বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু এই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুঃসাহসের চর্চায় যারা ভয় করেন তাদের একমাত্র গন্তব্য স্বর্ণ মজুদ। স্বর্ণের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলে; বিশেষত দীর্ঘ মেয়াদে মূল্য অনেক বেশি বেড়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। স্বর্ণ ক্রয় করে মজুদ রাখাটা অর্থ বিনিয়োগের বৈধ একটি উপায়।
এখন ডিজিটাল গোল্ড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই যেকোনো অর্থের ওপর কিংবা যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বর্ণ বিনিয়োগ করা যায়। এই ইনভেস্টমেন্ট হলো প্রকৃত স্বর্ণ না কিনেও তার মালিক হওয়া, যা সেই মালিকের নামে মজুদ থাকবে নিদিষ্ট একটি কোম্পানির ভল্টে।
রিয়েল এস্টেট
টাকা বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। রিয়েল এস্টেট হলো আবাসিক ও অনাবাসিক প্লট বা বাড়ি ক্রয় ও বিক্রয়, ডেভেলপমেন্ট, ব্যবস্থাপনা, ভাড়া দেয়া বা নেয়া ইত্যাদি। আবাসন একজন নাগরিকের মৌলিক চাহিদা। স্বভাবতই বসবাস ভিত্তিক আবাসিক স্থানের চাহিদা যতই দিন যাচ্ছে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে জায়গা বা বাড়িগুলোর দাম।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আবুধাবির বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তাছাড়া এই লেনদেনে অর্থের পরিমাণ থাকে প্রচুর। একদিকে যেমন খরচ হয় আরেক দিকে পাল্লা দিয়ে উপার্জনও হয় অত্যাধিক। তাই রিটার্নের কথা ভাবলে রিয়েল এস্টেটের অবস্থান শীর্ষস্থানীয় ব্যবসার তালিকায় থাকবে। এমনকি যখন দেশের মুদ্রাস্ফিতির প্রভাব পরে, তখনও এই ব্যবসার বাজার ভালো থাকে। সঠিন জ্ঞান ও মূলধনের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই ব্যবসায় বিনিয়োগ হতে পারে দীর্ঘ মেয়াদি আয়ের উৎস।
বীমা
বীমা মানেই কিন্তু শুধুমাত্র ঝুঁকি কমানোর কোন স্কিম নয়। ঝুঁকির হ্রাস পাওয়া একটা সুবিধা; আর এর সঙ্গে সঙ্গে মেয়াদান্তে যথেষ্ট পরিমাণে মুনাফাও লাভ করা যায়। বাংলাদেশে অনেকগুলো বীমা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লাভ সরবরাহ করে আসছে।
এই খাতটিও বিনিয়োগের একটি ভালো পছন্দ হতে পারে। তবে অবশ্যই এর আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। শুধুমাত্র এই একটি খাতকে কেন্দ্র করে সমুদয় বিনিয়োগ ঢেলে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। একজন সুবিবেচক ততটুকুই ঝুঁকি নেন, যতটুকু তিনি পুষিয়ে নিতে সক্ষম থাকেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বহুমুখী বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
পরিশেষে
সবশেষে বলা যেতে পারে যে চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই আয় বাড়ানোর সেরা উপায় অর্থ বিনিয়োগ। কর্মজীবনের প্রথম দিক থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করলে বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা নিয়ে যাবতীয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব ধীরে ধীরে কেটে যায়। ফলশ্রুতিতে অবসর গ্রহণের বেশ আগেই হাতে মোটা অঙ্কের টাকা চলে আসে। অর্থাৎ অভিজ্ঞতা একজন বিনিয়োগকারিকে অর্থায়নের নানা খাত সম্বন্ধে জ্ঞানী করে তোলে। তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হলেও বিনিয়োগ করাতে অভ্যস্ত হতে হবে। নতুবা অভাবের নিষ্পেষনে বেঁচে থাকাটাই দায় হয়ে দাঁড়াবে। বিনিয়োগ কিন্তু যে কোনো বয়স থেকেই শুরু করা যায়। শুধু প্রয়োজন বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করে সেরা বিকল্পটা বেছে নেয়া।
আগস্টে রেমিটেন্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে আগস্টে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাইতে অভিবাসী শ্রমিকরা ২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছিল।
জুলাইতে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের আগস্টে ছিল ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্সন্স আহরণ করেছে, যা ২১ অর্থবছরে আহরিত ২৪ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলারের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের রেমিটেন্স প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আশার আলো দেখালেও ক্রমবর্ধমান আমদানি চাহিদা মেটানো কঠিন হয়েছে।
পড়ুন:দেশের অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের ৩ অগ্রাধিকার
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহ তৈরিতে প্রক্রিয়াগুলোকে সহজীকরণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, সরকার রেমিটেন্স প্রণোদনার পাশাপাশি নীতিগত সহায়তা প্রদান করছে। এখন ডলারের মূল্যহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছে, মহামারি পরবর্তী বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি ও চাকরির সুযোগ ও রেমিটেন্স প্রবাহ গত অর্থবছরের তুলনায় আরও বাড়াবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, ২০২২ অর্থবছরে ৯ লাখ ৮৮ হাজার কর্মী বিদেশে গেছে যা ২০১১ অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার।
পড়ুন: মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
গত সাত বছরে বার্ষিক বৈদেশিক চাকরির এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা।
কর্মকর্তারা আশা করছেন, মালয়েশিয়ার সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী পুনরায় জনশক্তি নেয়া শুরু করলে এই অর্থবছরে কর্মীদের বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২১ অর্থবছরে করোনা মহামারির মধ্যে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৫ জন চাকরি পেয়েছে, যা ২০২০ সালে ছিল ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৩ জন, ২০১৯ সালে ছিল ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪ জন, ২০১৮ সালে ছিল ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৪১৭ জন, ২০১৭ সালে ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৭৩৬ জন এবং ২০১৬ সালে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৭২১ জন।
আরও পড়ুন: ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
চলতি আগস্টের প্রথম ২৫ দিনে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া বিভিন্ন ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এই সময়ে বাংলাদেশি প্রবাসীরা সরকারি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এক দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
জুলাই মাসে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স পেয়েছে। সেসময় বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পরিজনদের জন্য আরও বেশি অর্থ পাঠায়।
গত অর্থবছরের আগস্টে প্রবাসীরা এক দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।
ক্রমবর্ধমান আমদানি বিলের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যেও বেসরকারি খাতের অনেক ব্যাংক এখন সরকারি খাতের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স দেশে আনছে।
বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের চেয়ে বেশি হারে ডলার কিনছে, যা তাদের বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করতে সহায়তা করছে।
১ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক ৩৫৬.২৩ মিলিয়ন ডলার, অগ্রণী ব্যাংক ১১০.১২ মিলিয়ন ডলার এবং সিটি ব্যাংক ১০৯.৪৩ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।
পূবালী ব্যাংক ৫ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৯৫ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার এবং রূপালী ব্যাংক ৯৩ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ২.০৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে জুলাইয়ে
জুলাইয়ের ২১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৬৪ বিলিয়ন ডলার
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেইটে স্ক্যানার বসানো হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেইটে আমদানি-রপ্তানি জন্য স্ক্যানার বসানো হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘ চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। এর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য স্ক্যানার বসানোর কার্যক্রম চলমান আছে। বন্দরের প্রত্যেক গেইটে আমদানি-রপ্তানি জন্য স্ক্যানার বসানো হবে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে সিভিল এভিয়েশনের কর্মচারী আটক, ৪টি স্বর্ণের বার জব্দ
রবিবার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যাতে স্ক্যানার বসানো না হয়, এখানে যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া না লাগে সেজন্য সংঘবদ্ধ চক্র জোরালো ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের ডিজিটাল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যা যা করণীয় তা করা হবে। শুধু চট্গ্রাম বন্দর নয়, মোংলা বন্দরসহ স্থলবন্দরগুলোতেও স্ক্যানার বসানোর কাজ চলমান রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে চুক্তি অনুসারে তাদের দেশের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারবে এবং সেখান থেকে সড়ক পথে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে মালামাল যেতে পারবে। এজন্য চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের জাহাজের ট্রায়াল রান হয়েছে। আরও ট্রায়াল হবে। চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও আপগ্রেড করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মিত হয়েছে। অধিক জাহাজ বাড়ার চাপ সামাল দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর প্রস্তুত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এস আর ও হয়ে গেলে নিয়মিতভাবে ভারতীয় জাহাজ আসা শুরু করবে।
ভারতের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে পণ্য ভারতের অন্যান্য রাজ্যের পাঠানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক রাষ্ট্র। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছি। আমরা সবসময় মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর বিদেশ নীতি হলো-সকলের সাথে বন্ধুত্ব। সে অনুযায়ি আমরা মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল অপারেশন এবং লজিস্টিকস সাপোর্টে ইউএই’র আগ্রহ প্রকাশ
চট্টগ্রাম বন্দরের মাস্টার অপারেটর ও তার স্ত্রীর হিসাব জমার নির্দেশ দুদকের
শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, ভোমরা স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ
ব্যবসায়ীরা শ্রমিকদের দাবিকৃত লেবার বিল দিতে রাজি না হওয়ায় ও শ্রমিক কর্তৃক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীদের মারধরের ঘটনায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রবিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে স্থলবন্দরে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হাদিউজ্জামান বাদশা জানান, শনিবার অযৌক্তিক দাবিতে হঠাৎ করে পণ্য খালাস বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। শনিবার সন্ধ্যায় ভারত থেকে বন্দরে আসা একটি ফলবাহী ট্রাক থেকে কিছু পণ্য অন্য ট্রাকে লোড করছিলেন আন্দোলন না মানা কিছু শ্রমিক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা। এ সময় অপর পক্ষের শ্রমিকরা তাদের ওপর হামলা করেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের দু’জন সদস্য গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তারা হাসপাতালে ভর্তি। এই ঘটনার সঠিক বিচার ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরা কলম বিরতির ঘোঘণা দিয়েছি।
ভোমরা স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের এক পক্ষের নেতা হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা পণ্য খালাস বাবদ ট্রাক প্রতি ১২শ টাকা দাবি করে গতকাল কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা আমাদের কিছু শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি ট্রাক থেকে নিজেরাই পণ্য খালাস শুরু করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের বাধা দিলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এজাজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, প্রতি ট্রাক পণ্য খালাসে লেবার বিল বাবদ ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়। তবে শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ১১শ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছি। ৪টি শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ২টি সংগঠন এটি মেনে নিয়ে গতকাল কাজ শুরু করে। কিন্তু অপর দুটি সংগঠনের শ্রমিকরা ১২শ টাকা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে গতকাল বিকালে হঠাৎ করে কিছু শ্রমিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীদের মারধর করেছে। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ শ্রমিকের মৃত্যু
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, শনিবার বিকালে বন্দরের ভেতরে প্রবেশ করে কর্মরত এক পক্ষের শ্রমিক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীদের মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেয় অন্য পক্ষ। ওই ঘটনায় আজ সকাল থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় আহত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
আরও পড়ুন:বেশি পারিশ্রমিকের চেয়ে ভালো কাজের গুরুত্ব সবসময় বেশি: সুনেরাহ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: চা-শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ
ট্রেসেবিলিটি ও রকেট্রি বিষয়ক উদ্ভাবনী আইডিয়ার খোঁজে প্রতিযোগিতা শুরু
কৃষি, চামড়া ও ওষুধ শিল্পখাতে উৎপাদিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য শনাক্তকরণ ও সঠিক সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতে এবং দেশে রকেট্রি গবেষণায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ইকোসিস্টেম তৈরির লক্ষ্যে উদ্ভাবনী আইডিয়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
এটুআই এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আয়োজিত ‘ট্রেসেবিলিটি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এবং ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ পর্যন্ত আগ্রহী উদ্ভাবকেরা স্ব স্ব আইডিয়ার প্রস্তাবনা জমা দিতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ দুই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআইয়ের পলিসি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী এবং বেসিসের সহসভাপতি আবু দাউদ খান। এটুআই প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
‘ট্রেসেবিলিটি চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় কৃষি, চামড়া ও ওষুধ শিল্পখাতের সাপ্লাই চেইনে জড়িত প্রান্তিক পর্যায়ের অংশীজনদের খুঁজে বের করা এবং এর প্রতিটি পর্যায়ের সম্ভাব্য ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে একীভূত করা যায় এমন পদ্ধতির সন্ধান করা হবে।
যাতে খামার থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানোর পরিবহন ব্যবস্থার গতিবিধি চিহ্নিতকরণ, অনুসরণ ও শনাক্তকরণ ছাড়াও পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া, মেয়াদোত্তীর্ণসহ সব প্রয়োজনীয় তথ্য সংযুক্ত করা সম্ভব হয়। যা ভবিষ্যতে নিরাপদ খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের টেকসই ও স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।
এই ট্রেসেবিলিটি প্রতিযোগিতায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি অথবা বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক তাদের উদ্ভাবনী সমাধান প্রস্তাবনা আকারে জমা দিতে পারবেন।
অন্যদিকে, রকেট্রি এর প্রতি আগ্রহীদের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা ও উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে চালু হল ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’। মডেল রকেটের নকশা তৈরি, নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য নিরাপদ ইকোসিস্টেম তৈরির উদ্দেশ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের শিক্ষার্থীদের মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী করে তুলবে।
বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। এটুআই ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এনএম জিয়াউল আলম বলেন, ‘ব্লকচেইন ও অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনবান্ধব উদ্ভাবনী আইডিয়ার মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাতের উন্নয়নে দেশীয় উদ্ভাবকেরা তাদের প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। মহাকাশ গবেষণা এবং ট্রেসেবিলিটি উন্নয়নে দেশীয় উদ্ভাবকদের কাছ থেকে আসা আইডিয়াগুলোর সফল বাস্তবায়ন করতে পারলে ভবিষ্যতে এখাতে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো। এছাড়াও আগামী দিনে নতুন নতুন খাতে এটুআই এধরনের আরও প্রতিযোগিতার আয়োজন অব্যাহত রাখবে, যেখানে দেশের তরুণ উদ্ভাবকেরা তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে এগিয়ে আসবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এটুআইয়ের পলিসি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী বলেন, ‘এধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে আগামীর বাংলাদেশকে বিশ্বমানের প্রযুক্তি তৈরিতে সহায়তা করবে। উদ্ভাবনী আইডিয়া বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এটুআই পূর্বের চেয়ে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দেশের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের পাশাপাশি একাডেমিয়ার অংশগ্রহণে এমন প্রতিযোগিতা ব্লকচেইন ভিত্তিক মৌলিক কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পখাতের উন্নয়নে উদ্ভাবনী আইডিয়া বিশ্ববাজারে দেশীয় শিল্পের নতুন বাজার তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে আগামীর বিশ্ব সহজ থেকে সহজতর হবে। এ প্রেক্ষাপটে উদ্ভাবনকে অভ্যাসে পরিবর্তনের কাজ করছে এটুআই। উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে পণ্যের ট্রেসেবিলিটি নিশ্চিত করা গেলে মজুদদারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের পাশাপাশি অ্যাকাডেমিয়া, নাগরিক, বাজারকে একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসে উদ্ভাবনকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলা সম্ভব। এছাড়া উদ্ভাবনের প্যাটেন্টের বিষয়েও এটুআই সার্বিক সহযোগিতা করবে।’
আরও পড়ুন:গ্রামাঞ্চলে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকবে: কৃষিসচিব
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জনাব একেএম এনায়েতুল কবির, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুয়ের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এটুআইয়ের ইনোভেশন ফান্ড এক্সপার্ট নাঈম আশরাফী এবং দুটি চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার ধারণাপত্র উপস্থাপন এবং সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল।
অনুষ্ঠানটি সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন বেসিসের পরিচালক এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু। এছাড়া অনলাইন এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ও বেসিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং উদ্ভাবক যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:কিছু অসাধু ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে দাম বাড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করেছে: কৃষিমন্ত্রী
সারের দাম বেশি নিলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
৮ লাখের বেশি কর্মীকে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা
সরকার চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) আট লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে বিদেশে পাঠানোর এবং পাঁচ লাখ ২০ হাজার কর্মীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
এছাড়াও, বৈদেশিক চাকরির বাজারের চাহিদা মেটাতে আরও বেশি কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিতে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একটি সরকারি নথি অনুসারে, কর্মীদের দক্ষতা বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া ও বিদেশে তাদের আরও ভাল চাকরি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এই লক্ষ্যে, কারিগরি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও মেরিন প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সব ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গত অর্থবছর (২০২১-২২) থেকে জাতীয়, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক যোগ্যতা ফ্রেমওয়ার্ক (এনটিভিকিউএফ) এর অধীনে পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: দুর্বল ১০ ব্যাংককে রক্ষায় চুক্তি হচ্ছে
বিদেশের শ্রমবাজারে তাদের (বাংলাদেশি শ্রমিকদের) আয় বাড়ানোর জন্য রিকগনিশন অব প্রায়োর লার্নিং (আরপিএল) কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৪৩টি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে (টিটিসি) বিদেশি ভাষা শেখানোর কোর্স চালু রয়েছে।
এ ছাড়া, অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার জন্য তিনটি নতুন অনলাইন সিস্টেম চালু করা হয়েছে- ‘এমপ্লয়ি কানেক্টিভিটি রিপোর্টিং সিস্টেম’, ‘অনলাইন গ্রিভেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ ও ‘রিক্রুটিং এজেন্সি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরএআইএমএস)’।
প্রবাসী শ্রমিক ও বিদেশ থেকে ফেরত শ্রমিক উভয়ের কল্যাণে সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
নিয়মিতভাবে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সেক্টরটিকে সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল করা হয়েছে। যেমন- কর্মচারী নিয়োগের জন্য পেশাদার ডাটাবেস তৈরি করা; মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভিসা ফরম যাচাই করা; অভিযোগ গ্রহণের জন্য পৃথক পোর্টাল এবং ‘জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’ (বিএমইটি) এর স্বয়ংক্রিয় কার্যক্রম।
দেশে ফিরে আসা অভিবাসী শ্রমিকদের পুনঃসংহতকরণের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি কার্যক্রম চলছে এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহজ শর্তে বিনিয়োগ ঋণ প্রদান, প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান এবং প্রতিবন্ধী প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরে আসার সময় চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
সারাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত করার জন্য পর্যায়ক্রমে প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ৩৬.১০ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে, ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স থেকে আয় কিছুটা কমেছে।
আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে প্রণোদনার হার ০.৫ শতাংশ পয়েন্ট থেকে ২.৫ শতাংশ করেছে।
এছাড়া সরকার পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে রেমিটেন্স পাঠানো ব্যক্তিদের উপার্জনের নথি জমা দেয়ার বাধ্যতামূলক বিধান প্রত্যাহার করেছে।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে শিগগিরই রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক অবস্থায় ফিরে আসবে।
২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসা দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ১৮ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছিল।
এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি দেশের বাইরে বসবাস করছেন এবং কাজ করছেন, যার বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যে বাস করেন। তৈরি পোশাক রপ্তানির পর এটি দেশের দ্বিতীয় বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রাপ্তির খাত।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র গত বছরই তারা ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে।
বিএমইটি এর মতে, শুধুমাত্র ২০১৯ সালে, সাত লাখেরও বেশি অভিবাসী শ্রমিক বিদেশে কর্মসংস্থানের সন্ধানে দেশ ছেড়েছেন এবং ৭৩ শতাংশেরও বেশি রেমিট্যান্স উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলভুক্ত দেশসমূহ থেকে পাঠানো হয়েছিল।
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ সরাসরি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে প্রভাবিত করে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য একটি লাইফলাইন হিসেবে কাজ করে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের পরামর্শ মতে, শিক্ষা ও দক্ষতার উন্নতিতে বিনিয়োগ করা উচিত। যাতে স্বল্প-দক্ষ অভিবাসী শ্রমিকেরা আরও বেশি উপার্জন করতে পারে এবং ঋণের চক্র ভেঙে বাইরে আসতে পারে।
আরও পড়ুন: দেশে কাতারের বিনিয়োগ চায় ঢাকা