ব্যবসা-বাণিজ্য
এপ্রিলে ১৭ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজার
এপ্রিল মাসজুড়ে পুঁজিবাজার মোটেও ভালো কাটেনি বিনিয়োগকারীদের। ঈদের ছুটি কাটিয়ে শুরু হওয়া লেনদেনে লাগাতার পতনে ঢাকার বাজারে প্রধান সূচক কমেছে ৩০২ পয়েন্ট এবং বাজার পুঁজি হারিয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরো মাসের লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৫২১৯ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন মাস শেষে এসে ঠেকেছে ৪৯১৭ পয়েন্টে।
মাসে মোট ১৮ কার্যদিবস বাজারে লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ কার্যদিবসেই হয়েছে পতন। পতনের ধাক্কায় বাজার থেকে অর্থ তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা, হয়নি নতুন করে অর্থলগ্নি। এতে করে বাজার হারিয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার: সপ্তাহজুড়ে চলল সূচক, লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যপতন
শুধু প্রধান সূচক নয়, মাসিক লেনদেনে বেহাল দশা শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএসেও। পুরো মাসে এ খাতের সূচক কমেছে ৭৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে, বাছাইকৃত ভালো কোম্পানির শেয়ারেও হয়েছে বড় পতন। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৯২ পয়েন্ট।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিসংখ্যান বলছে, এক মাসে ১১ হাজার ৪২৯ জন বিনিয়োগকারী নিজেদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন। বাজারে জিরো ব্যালেন্সের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। চালু থাকা বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক মাসে ১০ হাজারের ওপরে কমেছে।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এভাবে বাজারে পতন হতে থাকলে দেশের পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। যারা বুকে আশা বেঁধে এখনও বাজারে আছেন, প্রতিদিনই আশাভঙ্গ হচ্ছে তাদের। বাজারের ওপর থেকে আস্থা উঠে যাওয়ায় কোনোভাবেই বাজার ঠিক করা যাচ্ছে না।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে শেয়ার ব্যবসা করছেন তারেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হতো, ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লোকসান হবে না। বিনিয়োগকারীরা মন্দ শেয়ারে বিনিয়োগ করে, তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত কয়েক মাসে যেসব শেয়ারের দাম কমেছে তার বেশিরভাগই ভালো কোম্পানি। কী করে ১০০ টাকার শেয়ার ৩০-৪০ টাকায় নেমে আসে—এর জবাব কমিশন দিতে ব্যর্থ।’
আরেক বিনিয়োগকারী মনসুর আলী বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মার্জিন ঋণের কারণে। এই ঋণ নিয়ে যারা শেয়ার কিনেছেন, ফোর্স সেলের কারণে তাদের ভালো শেয়ারও বিক্রি হয়ে গেছে। এতে করে বাজারে প্রতিটি শেয়ারের ওপর খারাপ প্রভাব পড়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, ‘মার্জিন ঋণ বাজারে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়য়েছে। এতদিন এই ঋণ প্রদান ও গ্রহণে শক্ত কোনো রীতি ছিল না। সম্প্রতি কমিশনের কাছে টাস্কফোর্স মার্জিন ঋণ নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ১০ কোটি টাকা, সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা এবং বাজার বিনিয়োগ না থাকলে ঋণ দেওয়া হবে না মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে।’
কমিশনের কাছে লক-ইন শেয়ার, উদ্যোক্তা শেয়ার, প্লেসমেন্ট, অতালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অতালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডে মার্জিন ঋণের অর্থ ব্যবহার না করার সুপারিশ জানিয়েছে টাস্কফোর্স।
আরও পড়ুন: পতন যেন থামছেই না পুঁজিবাজারে
বাজারে পুঁজি যোগানদাতা প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে বাজারে নিয়ে আসতে হবে। এসব কোম্পানি বাজারে আনতে পারলে বিনিয়োগকারীরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।’
তবে কমিশনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বাজারে বড় কোনো আইপিও আসার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে করে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর আশু কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’
তার ওপর সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভ্যন্তরীণ গোলোযোগ এবং পরবর্তীতে ২১ কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের মতো ঘটনা বাজারে ভালো কোনো বার্তা বয়ে আনেনি বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
২৩৯ দিন আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের আওতায় ‘মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশনের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি একটি পণ্যের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল এবং আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা উচিত। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য আমাদের দুর্নীতি দুর করতে হবে এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।’
‘দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) সম্প্রতি একটি সফল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। সেখানে আমরা আমাদের সক্ষমতা এবং সুযোগগুলো সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করেছি,’ যোগ করেন তিনি।
এ সময়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা উদ্যোক্তা আছেন, যারা নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বাংলাদেশকে আজ এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, আমি তাদের প্রতি আন্তরিক সম্মান জানাই। যারা এখানে নিজেদের পণ্যগুলো প্রদর্শন করতে নিয়ে এসেছেন তাদেরকে এবং বিদেশি ক্রেতাদেরও ধন্যবাদ জানাতেই চাই যোগ করেন উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, প্রদর্শনীতে ১২০টির বেশি কোম্পানি অংশ নিয়েছে। সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা এতে অংশ নিয়েছেন। তারা প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশি উৎপাদনকারী বিভিন্ন শিল্পকারখানা পরিদর্শন করবেন।
২৪৯ দিন আগে
ঢাকার পুঁজিবাজারে এ বছরের সর্বনিম্ন লেনদেন
একের পর এক সূচকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে এবার বছরের সর্বনিম্ন লেনদেন হলো ঢাকার পুঁজিবাজারে। গড়ে ৪৫০ কোটি টাকার ওপর হওয়া লেনদেন এসে ঠেকেছে ৩০০ কোটিতে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার (২৩ এপ্রিল) ৩০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা এ বছরে সর্বনিম্ন। একদিনের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি টাকা।
লেনদেন কমার পাশাপাশি প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪ পয়েন্ট। নেতিবাচকের ঘরে ছিল শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস। তবে লম্বা পতন শেষে ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৭ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন: পতন দিয়ে লেনদেন শুরু ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানরই দাম ছিল নিম্নমুখী। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ১১৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২১৪ কোম্পানি এবং ৬২ কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি, জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানি দাম হারিয়েছে। বিশেষ করে এ ক্যাটাগরির তালিকাভুক্ত ২১৫ কোম্পানির মধ্যে ৭১ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর নেমেছে ১১৮ কোম্পানিতে।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৫ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৩ কোম্পানির দাম বেড়েছে। বাকি ২৩ কোম্পানির ইউনিটের দাম ছিল নিম্নমুখী এবং অপরিবর্তিত আছে ৯ কোম্পানির দাম।
ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৫ কোম্পানি প্রায় ১১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এরমধ্যে রেনেটা সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং ৯.৯৩ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
অব্যাহত পতন চট্টগ্রামে
ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) পতনের ধারা অব্যাহত আছে, সার্বিক সূচক কমেছে ৫৪ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ২০৭ কোম্পানির মধ্যে ৭২ কোম্পানির দাম বাড়লেও কমেছে ১১৩ কোম্পানির দাম এবং ২২ কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত আছে।
আরও পড়ুন: পতনের ধারা যেন থামছেই না পুঁজিবাজারে
গতদিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে সিএসইতে। মোট ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৬ কোটি টাকার ওপরে।
৯.৮২ শতাংশ দর বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেড। অন্যদিকে ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে বিচ হ্যাচারি।
২৪৯ দিন আগে
পুঁজিবাজার: সপ্তাহজুড়ে চলল সূচক, লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যপতন
সপ্তাহজুড়ে টানা পতনে সবদিক থেকে বড় রকমের হোঁচট খেয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। সূচক কমার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চার কার্যদিবসের লেনদেনে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০৮ পয়েন্ট। ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তাহ শুরু করে পতনে শেষমেষ সূচক ঠেকেছে ৫ হাজার ৯৭ পয়েন্টে।
সারা সপ্তাহের লেনদেনে প্রধান সূচক ২ শতাংশের বেশি কমার পাশাপাশি বাকি সূচকের রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। শরীয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সূচকও (ডিএসইএস) কমেছে ২৯ পয়েন্ট। এতে করে প্রায় আড়াই শতাংশ সূচক হারিয়েছে এই খাত।
গত সপ্তাহে ভালো কোম্পানির শেয়ারও ভালো করতে পারেনি। বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৫২ পয়েন্ট।
এক ধাক্কায় সূচক ২.৭২ শতাংশ কমে যাওয়ায় যারা ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন তারাও চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন।
ছোট ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.১৫ শতাংশ। এক সপ্তাহে ডিএসএমইএক্স সূচক হারিয়েছে ৪০ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে সূচকের হিসাবে ঢাকার পুঁজিবাজারের বেহাল দশা।
একই অবস্থা লেনদেনেও। আগের সপ্তাহে যেখানে গড় লেনদেন ছিল ৪৮৭ কোটি টাকা, এবার সেটি কমে নেমেছে ৩৯৯ কোটি টাকায়। এক ধাক্কায় লেনদেন কমেছে ১৮.১১ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যার ছাপ পড়েছে শেয়ার হাতবদলের পরিমাণের ওপরে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে যেখানে ৯৮ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, তৃতীয় সপ্তাহে এসে তা কমে হয়েছে ৫৭ কোটি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে আবারও পতন, সূচক কমলো ১০৮ পয়েন্ট
সারা সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৭৭টির। বিপরীতে ২৯৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হারিয়েছে দর, ২০টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সপ্তাহজুড়ে মাত্র দুই খাতে রিটার্ন জমা বেড়েছে। করপোরেট বন্ড আর সাধারণ বীমা খাতে রিটার্ন জমা বাড়লেও বাকি খাতগুলো রীতিমতো ধুঁকছে। বিশেষ করে মিউচুয়াল ফান্ড ও সিরামিক খাতে রিটার্ন জমা কমেছে ৬ শতাংশের বেশি।
সামগ্রিক হিসাবে ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম বাড়লেও পৃথক প্রাতিষ্ঠানিক হিসাবে ভালো সময় যাচ্ছে না পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টিরই শেয়ারের দাম কমেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৪১ শতাংশ এবং লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশ। ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুরো সপ্তাহে দাম বেড়েছে মাত্র একটির, কমেছে ১৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সাধারণ বীমা খাতে ৮৫ শতাংশ দাম বাড়লেও জীবন বীমা খাতে দাম কমেছে ৫০ শতাংশের ওপরে। টেলিকম খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ এবং আইটি খাতে কমেছে ৩৮ শতাংশ। ভালো করতে পারেনি প্রকৌশল খাতও, ১৬ শতাংশ দর হারিয়েছে এই খাত।
পতনের মধ্যেও ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ম্যারিকো, বিচ হ্যাচারি ও এসিআই লিমিটেড। ম্যারিকো ২৫ কোটি ২০ লাখ, বিচ হ্যাচারি ২৫ কোটি ১০ লাখ ও এসিআই ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সপ্তাহের শীর্ষ শেয়ারে জায়গা করে নিয়েছে দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটি চার কার্যদিবসে ২৪ শতাংশের ওপরে রিটার্ন দিয়েছে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৫ টাকা যা এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৩১ টাকা।
অন্যদিকে, ১৫ শতাংশের ওপর রিটার্ন হারিয়ে তলানিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ১২ টাকা থেকে কমে ১০ টাকায় নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: পতন যেন থামছেই না পুঁজিবাজারে
পর্যদুস্ত চট্টগ্রামও
ঢাকার মতো বেহাল দশা চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এক সপ্তাহে সেখানকার সার্বিক সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট।
লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের সিলেক্টিভ ইনডেক্স সিএসসিএক্সেও পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’, ‘বি’, ‘জি’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ারের সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামের বেঞ্চমার্ক সূচক সিএসই-৫০ কমেছে ১৭ পয়েন্ট এবং শরীয়াভিত্তিক সূচক সিএসআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। এছাড়া সিএসই তালিকাভুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.৫৭ শতাংশ।
সারা সপ্তাহে ৩০১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ২১৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনে শীর্ষে আছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড। চার কার্যদিবসে ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৮ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বাজার মূল্য ৮৭ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৮ টাকা।
এদিকে, পুরো সপ্তাহে শেয়ারপ্রতি ২০ টাকা দর হারিয়ে তলানিতে আছে শমরিতা হাসপাতাল। সিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। চার দিনে কোম্পানিটির ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোদুল্যমান সূচকে লেনদেন চলছে পুঁজিবাজারে
হতাশ বিনিয়োগকারীরা
টানা দরপতনে বাজারের ওপর হতাশ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট শূন্য করে বাজার ছাড়ছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বিও অ্যাকাউন্টের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঈদের ছুটির আগে শূন্য ব্যালেন্সের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১০, যা সর্বশেষ কার্যদিবসে বেড়ে হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৭। অর্থাৎ এই কদিনে ৪ হাজার ১৫৭ জন বিনিয়োগকারী নিজেদের বিও অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী তারেক হোসেন জানান, ‘বাজার সংস্কারে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। যাদের জরিমানা করা হয়েছে এবং কারসাজির জন্য আটক করা হয়েছে, তাদের বিচারেরও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। সব মিলিয়ে বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।’
আরেক বিনিয়োগকারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কোনো দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। খারাপ কোম্পানি থেকে বেরিয়ে আসতে বাই-ব্যাক আইন চালু কথা বারবার বলা হলেও কমিশন সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করছে না। আবার যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে সর্বহারা হয়েছেন তাদের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
মার্জিন ঋণ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী ফরিদুর রহমান বলেন, “এই ঋণের কারণে খারাপ কোম্পানির শেয়ারে ধস নামলে বাধ্য হয়ে ভালো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়। এতে করে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অনেক কোম্পানির জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির দাম কমে। সব মিলিয়ে বাজারে সৃষ্টি হয় পতনের ধারা।”
আরও পড়ুন: পতনে পর্যদুস্ত পুঁজিবাজার
আইপিও কেন আসছে না?
পুঁজিবাজারের মুখ থুবড়ে পড়ার বড় আরেকটি কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে ভালো কোম্পানির আগ্রহ না থাকা। চলতি বছর ভালো কিছু কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক পদের এক কর্মকর্তা জানান, ‘চলতি বছর নতুন আর কোনো আইপিও আসার সম্ভাবনা নেই। ভালো ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে বিনিয়োগে ভরসা পাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সুপারিশ অনুযায়ী কোম্পানি তালিকাভুক্তির নিয়মনীতি ঢেলে সাজাচ্ছে বিএসইসি। গেজেট আকারে নতুন আইপিও আইন আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাস হয়ে যাবে। নতুন আইনের আওতায় নতুন কোম্পানি আসতে আরও পাঁচ-ছয় মাস। এতে করে ২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলের আগে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ।’
গত বছর আগস্টে দায়িত্ব নেওয়া নতুন কমিশন এতদিনে কেন ভালো কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে পারল না, এ প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ‘যেসব কোম্পানি ভালো মুনাফা করছিল, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে তাদের প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। নতুন পর্ষদের অধীনে অনেক কোম্পানি এখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে ব্যাংক ঋণের সুদহার আগের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে কোম্পানির মুনাফার ওপরে। সব মিলিয়ে কোম্পানিগুলো ভালো করতে শুরু করলে তারা নিজ থেকেই পুঁজিবাজারের দিকে ঝুঁকবে।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শুরুতেই সূচকের বড় পতন দেখল পুঁজিবাজার
ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে চাইলে তাদের বড় অঙ্কের কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা। দেশের বড় বড় কোম্পানিকে নানা ধরনের সুবিধা দিয়ে বাজারে আনতে পারলে বাজার চাঙ্গা হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
২৫৩ দিন আগে
আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল: বাণিজ্য উপদেষ্টা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপ নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ: চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক বিএসআরএফ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই প্রতিনিধিদলে আমাদের অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে যারা কাজ করে ইউএসটিআর, তাদের সাথে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও ননট্যারিফ নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবে।’
আরও পড়ুন: দুই সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম কমবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, এই পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ সময়ে আমাদের কার্যক্রম কি হবে? এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সচেতন। আমাদের যেসব দেশের সাথে বাণিজ্য রয়েছে, বিশেষ করে রপ্তানি বেশি, আমদানি কম। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম, ক্রেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র একক বৃহত্তম দেশ। সেজন্য আমাদের কাছে বিষয়টি চিন্তার। যুক্তরাষ্ট্র যখন তাদের বাণিজ্য ঘাটতি নিরূপণ করছে, সেটা পণ্যের ক্ষেত্রে করছে, সেবার ক্ষেত্রে করছে না। এজন্য আমরা কিছু কর্মসমষ্টি তৈরি করেছি।’
‘এই কর্মসমষ্টি নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিবসহ একটি প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন, সেখানে যে ইউএসটিআর রয়েছে, যারা এই শুল্ক নিয়ে কাজ করেন, তাদের সাথে আলোচনা করে কিছু ট্যারিফ ও ননট্যারিফ কাঠামো রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা আরো নিদিষ্ট কিছু পদক্ষেপ চিহ্নিত করবো,’ বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনেরা জানেন যে ডব্লিউটিও-এর ফ্রেমওয়ার্কে আমরা সারা দুনিয়ার সাথে বাণিজ্য করি। সেখানে বাণিজ্যের যে বৈচিত্র্য আমাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের, যে ২.২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য দেশের থেকে আমাদের দেশে আসে। এছাড়া আমাদের কিছু পণ্য আছে, যা দুই দেশকেই সুবিধা দেয়। সেসব পণ্যের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারি। একই সঙ্গে আমাদের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন রকমের অবকাঠামোগত চিন্তা করছি। যেখানে আমাদের পণ্যের মান বাড়বে, গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে ও বাণিজ্য বাড়বে।’
২৫৭ দিন আগে
সপ্তাহের শুরুতেই সূচকের বড় পতন দেখল পুঁজিবাজার
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। সূচকের বড় পতন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় নাজেহাল অবস্থা বিনিয়োগকারীদের।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৫ পয়েন্ট, যা চলতি মাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস-৬ এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০-ও কমেছে ১৫ পয়েন্ট।
আজ লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী। লেনদেন অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে ৭৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরপতন হয়েছে ২৭০টি কোম্পানির। ৪৮টি কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারমূল্য কমেছে। সবচেয়ে বেহাল দশা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে। তালিকাভুক্ত ৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৯টির, ৬৯টিরই দাম কমেছে, আর অপরিবর্তিত আছে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি এবং ৭টি কোম্পানির দর পরিবর্তন না হওয়ার বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫টি কোম্পানি।
আরও পড়ুন: সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার: লেনদেনে সুবাতাস বইলেও সূচকে মন্দা
ব্লক মার্কেটে ৩০টি কোম্পানির মোট ৩৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এর মধ্যে সানলাইফ ইনস্যুরেন্স সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনেও ভাটা পড়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। সারা দিনে মোট ৪১৪ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যা ছিল ৫৪০ কোটি টাকা।
খাতভিত্তিক দর
ঢাকার পুঁজিবাজারে করুণ দশা ব্যাংক খাতের শেয়ারে। তালিকাভুক্ত ২৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টির শেয়ারের দরবৃদ্ধি এবং আর পাঁচটির দর অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দর কমেছে ১৬টি ব্যাংকের। এক দিনের লেনদেনে এই খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
একইভাবে পতনের ছোঁয়া লেগেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও। এই খাতে মাত্র একটি কোম্পানির দাম বেড়েছে, অপরিবর্তিত আছে ৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম এবং দাম কমেছে ১৮টি কোম্পানির।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ইনস্যুরেন্স খাতেও পতনের ধারা বজায় আছে। ১১টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।
টেলিযোগাযোগ খাতে ৩টি কোম্পানির সবগুলোরই দাম কমেছে। টেক্সটাইল খাতে ৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টি কোম্পানির। ওষুধশিল্প খাতে ২৪টি কোম্পানির দাম কমেছে, বেড়েছে ৭টির এবং আইটি খাতে ৮টি কোম্পানির দর কমার বিপরীতে দর বেড়েছে মাত্র একটি কোম্পানির।
সামগ্রিকভাবে পাট, প্রকৌশল, খাদ্য ও সিমেন্ট খাতের প্রবৃদ্ধি হলেও এসব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী। বিশেষ করে সিমেন্ট খাতে পতনের দিনেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৪৭ শতাংশ, কিন্তু তালিকাভুক্ত ৭টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৪টি কোম্পানিরই।
মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষে যারা
ঢাকার পুঁজিবাজারে ৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। দিনের শুরুতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১২৫ টাকা, যা দিন শেষে শেষে বেড়ে হয়েছে ১৩১.৬০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯০ শতাংশ দর বেড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেড। দিনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১২৪ টাকা, যা লেনদেন শেষে বেড়ে হয়েছে ১৩৪.৩০ টাকা।
এছাড়া ৮.৭৪ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে হাইডেলবার্গ মেটারিয়ালস। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ১০ এপ্রিল কোম্পানিটির সর্বশেষ শেয়ারপ্রতি দাম ছিল ২৭৩.৬০ টাকা, যা একদিনের ব্যবধানে বেড়ে ২৯৭.৫০ টাকা হয়েছে।
ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের দাম এক দিনে ৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। ৮৫০.৯০ টাকা প্রতিটি শেয়ারের দাম দিন শেষে বেড়ে হয়েছে ৯১৪.১০ টাকা।
শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় পঞ্চমে থাকা মুন্নু অ্যাগ্রোর দাম বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। এক দিনের ব্যবধানে ৩২০ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৪২.১০ টাকা।
পতনে শীর্ষে যেসব প্রতিষ্ঠান
ডিএসইতে পতনে শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যে ৯.৯৪ শতাংশ দাম হারিয়ে প্রথমে উঠে এসেছে আল-হ্বাজ টেক্সটাইল মিলস। ১৪১.৪০ টাকার লেনদেন হওয়া শেয়ারের দাম দিন শেষে কমে হয়েছে ১২৮.৬০ টাকা।
ব্যাংক খাতের মধ্যে ৯.৫৮ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে আছে প্রাইম ব্যাংক। এছাড়া সিরামিক খাতে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারের দাম কমেছে ৮.১৪ শতাংশ।
আর্থিক খাতে ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের দাম কমেছে ৭.৫০ শতাংশ এবং ৫.৯১ শতাংশ দর হারিয়ে পতনের পঞ্চমে আছে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস।
পতন চট্টগ্রামেও
ঢাকার মতো পতনের মুখে পড়েছে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৩৮ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১৯৫টি কোম্পানির মধ্যে ৫৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১১৯টি কোম্পানি। এছাড়া ২০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসইতে। সারা দিনে সিএসইতে মোট ১৫ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা এ মাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: পতনের ধাক্কা দিয়ে শুরু পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবস
ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও শীর্ষে আছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। এক দিনে সিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, ১১.১৬ শতাংশ দর হারিয়ে সিএসইতে তলানিতে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক। গত কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৪.২০ টাকা, যা সারা দিনের লেনদেন শেষে কমে ২১.৫০ টাকায় নেমেছে।
২৫৯ দিন আগে
সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার: লেনদেনে সুবাতাস বইলেও সূচকে মন্দা
ঈদের লম্বা ছুটির পর দেশের পুঁজিবাজারে পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় লেনদেন। টানা সূচক কমে সপ্তাহের শেষ দুই দিনে তা কিছুটা বাড়লেও সপ্তাহজুড়ে অস্বস্তিতেই ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এর মধ্যেও শেয়ার বিক্রিতে মোটেও ভাটা পড়েনি।
সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩ পয়েন্ট। ছুটি শেষে ৫২১৯ পয়েন্ট নিয়ে শুরু করা সূচক বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ৫২০৫ পয়েন্টে ঠেকেছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি মধ্যম ও ক্ষুদ্র কোম্পানির এসএমই সূচকেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ঢাকার বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসএমইএক্স কমেছে ২৫ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে এই খাতে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অবশেষে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন
অবশ্য ডিএসইর বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ও ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ পতনের ধারা থেকে নিজেদের ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই সময়ে ডিএসইএস বেড়েছে ৪ এবং ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমছে। ১৪১টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৩৫টি কোম্পানি। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের পর দাম অপরিবর্তিত আছে মাত্র ১৯টি কোম্পানির।
সূচক হারালেও ঢাকার বাজারে বেড়েছে লেনদেন। সাপ্তাহিক গড় লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে ৪৮৭ কোটি টাকা হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০৬ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে লেনদেন বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি।
ঢাকার পুঁজিবাজারে ব্যাংকখাতে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৩টি ব্যাংকের। এর বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টি কোম্পানির।
সপ্তাহ শেষে এ খাতে সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্ট এবং লেনদেন বেড়েছে ৫ শতাংশ। তবে মোট রিটার্ন কমেছে ১.৭৫ শতাংশ।
অন্যান্য খাতে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন এসেছে সিমেন্ট এবং মিউচুয়াল ফান্ড খাতে। সিমেন্ট খাতে সর্বোচ্চ ৬.৯ শতাংশ এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৬.৫৫ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।
ডিএসইতে সবচেয়ে কম রিটার্ন এসেছে টেক্সটাইল খাতে। এ খাতে ৪.৭৫ শতাংশ রিটার্ন কম এসেছে। এছাড়া কাগজ শিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, চামড়া শিল্প, সাধারণ বীমা, টেলিকম ও আইটি খাতেও রিটার্ন ছিল নেতিবাচক।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারে। সারা সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের দামও বেড়েছে ৫.১০ শতাংশ।
ব্লক মার্কেটে সপ্তাহজুড়ে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ব্যাংক এশিয়া। কোম্পানিটি এক সপ্তাহে মোট ১৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শেষ দিনে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, চট্টগ্রামে পতন
চট্টগ্রামের হালচাল
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। পুরো সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনেও ভাটা পড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। ছুটির আগের সপ্তাহে যেখানে চট্টগ্রামের বাজারে মোট লেনদেন হয়েছিল ৫০ কোটি টাকা, গত সপ্তাহে এসে তা কমে হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩১৮ কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ১৬৫টি কোম্পানির। অন্যদিকে দর বেড়েছে ১৩১টি কোম্পানির এবং দাম অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির।
চট্টগ্রামের বাজারে শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় আছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা।
অন্যদিকে, এই বাজারে তলানিতে আছে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড। এক সপ্তাহে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির দাম কমেছে ১৮.৫১ টাকা।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একদিকে ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে এশিয়ার শেয়ারবাজারে ধস, অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস—পুরোটাই দেশের পুঁজিবাজারে কম-বেশি প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
তবে বর্তমানে দেশের অর্থনীতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় এবং সিংহভাগ দেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের শুল্কনীতি প্রশমনের সিদ্ধান্তের পর আগামী সপ্তাহ দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে পারে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
২৬০ দিন আগে
বিদেশি বিনিয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকছে না: নাহিয়ান রহমান
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ব্যবসা উন্নয়ন (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) প্রধান নাহিয়ান রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এসে যে পাঁচটি সমস্যার কথা বলেন, তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঝামেলা। সরকার সেগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এছাড়া সিদ্ধান্তগুলো অনেক বেশি কেন্দ্রীভূত ও সহজ হওয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও থাকছে না।
বিনিয়োগ সম্মেলনের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে এনবিআরের হয়রানি নিয়ে কথা ওঠে। সে বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিয়ান বলেন, ‘বিডা থেকে যখন দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলি, তখন তাদের মূল পাঁচটি সমস্যার একটি ছিল এনবিআরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে জিনিসপত্র বের করতে যে অনেক সময় লাগে বা ঝামেলায় পড়তে হয়, সেটি।’
‘কীভাবে আমরা এই জিনিসটা আরও সহজ করতে পারি, সেটি এখন আমাদের অগ্রাধিকার এজেন্ডা। আর আমরা এখন গ্রিন চ্যানেল বা অথরাইজড ইকনোমিক অপারেটর চালু করেছি; আমাদের সিঙ্গেল উইন্ডো চালু হয়েছে। সুতরাং এনবিআরের পক্ষ থেকে এই জিনিসগুলো কীভাবে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টা চলছে।’
সম্মেলনে এদিন তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল অধিবেশনে মূল বক্তব্য রাখেন ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিহাক সাং।
বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনামে শ্রমিকের ক্ষেত্রে ত্রিশ শতাংশ বেশি খরচ হওয়ার পরও সেখানে তাদের লাভ বেশি হচ্ছে। তাদের মতে, বাংলাদেশের শ্রমিকদের উৎপাদনক্ষমতা কম। এটি নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন—প্রশ্নে নাহিয়ান বলেন, ‘কিহাক সাংয়ের অভিযোগটিকে আমরা ভ্যালিড (বৈধ) বলে মনে করি। কিন্তু ভিয়েতনামে যে পণ্য তিনি বানান, সেগুলো মোর ভ্যালু অ্যাডেড গার্মেন্টস ও সিনথেটিক গার্মেন্টস। এজন্য সেখানে খরচ বেশি পড়লেও লাভ পুষিয়ে নিতে পারেন।’
‘আমাদের এখানে তাদের ব্যবসায়ের পুরোনো দিনের কিছু সমস্যা ছিল। সে কারণে সেই সমস্যার সমাধানের আগে নতুন করে সিনথেটিক বা হাইভ্যালু গার্মেন্টসে বিনিয়োগ করতে পারতেন না। কিন্তু কেইপিজেডে নতুন করে একটি সিনথেটিক লাইন খুলেছেন। ওখানে এখন তারা হাইভ্যালু গার্মেন্টস উৎপাদন করছেন। যেটি অবশ্যই লাভজনক হবে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল চীনের হান্ডার সঙ্গে একটি সমঝোতায় স্বাক্ষর করা হয়েছে। সেখানে তাদের বড় একটি বিনিয়োগ ছিল এই সিনথেটিক গার্মেন্টেসের ওপর। আমরা যদি এভাবে আরও দুয়েকটি হাইভ্যালু অ্যাংকর ইনভেস্টমেন্ট পাই, তখন ভ্যালু অ্যাডেড গার্মেন্টসে আরও বেশি বিনিয়োগ পাওয়া শুরু করব।’
বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে অনেক সময় বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার বিনিয়োগকারীরা এসে দেখেছেন যে, এ বিষয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে ৭০ জনের মতো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থাকায় তাদের অনুমোদন পেতে কষ্ট হতো, এখন হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন—২৫ থেকে ২৬ জন উপদেষ্টা আছেন। এখন সিদ্ধান্তগুলোও অনেক বেশি সেন্ট্রালাইড (কেন্দ্রীভূত) ও সহজ হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা নিজেরাও তা বলেছেন। তবে আমাদের আরও অনেকদূর যেতে হবে।’
এই সম্মেলনে কতগুলো দেশ থেকে কী পরিমাণ বিনিয়োগ পেলাম—প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত গতকাল আমরা যে কয়েকটি হাইভ্যালু সমঝোতায় সই করেছি, তার মধ্যে হান্ডার ১৫০ মিলিয়ন ডলার, যেটা এই সম্মেলনেই সই হয়েছে। তার আগে গতকাল সকালে জানলাম, ১১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পেয়েছে স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপ। কোনো কিছু আসলে একদিনে হয় না, অনেক দিনের কাজের ফল এগুলো।’
কী পরিমাণ বিদেশি এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন—প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের বিভিন্ন অংশে আমরা ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০’র মতো বিদেশি অংশগ্রহণকারী পেয়েছি। তবে একই কোম্পানি থেকেও দুজন করে এসেছেন।’
এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে বেসরকারি খাতকেও মোবিলাইজ করার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে নাহিয়ান রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দিক থেকেও অনেক তৎপরতা ছিল। আমরা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে সবকিছু না করে সবাইকে নিয়ে কীভাবে বিনিয়োগের পাইপলাইনটিকে সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেটিই ছিল আজকের অন্যতম লক্ষ্য।’
এ সময়ে বিডার নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব ও প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
২৬২ দিন আগে
অবশেষে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন
টানা তিনদিন পতনের পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। পাশাপাশি ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ঢাকার বাজারে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার (৯ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসসিএস ২ পয়েন্ট বাড়লেও ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ কমেছে ২ পয়েন্ট।
তবে সূচক বাড়লেও ঢাকার বাজারে দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ১৪৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১৯৩ কোম্পানি এবং ৫৮ কোম্পানির দর অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড-তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী।
গতদিন পতনের মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করলেও, এদিন সুবিধা করতে পারেনি এ খাত। ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। দর কমেছে ২৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৭ কোম্পানির ২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে লাভেলো আইসক্রিম সর্বোচ্চ ৪ কোটি টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
বুধবার ডিএসইতে মোট ৫২৭ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা ঈদের ছুটির পর সর্বোচ্চ। ৪১৫ কোটি টাকা লেনদেন দিয়ে সপ্তাহ শুরু করে চতুর্থ কার্যদিবসে বাজার লেনদেনের প্রবৃদ্ধি ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
সারাদিনের লেনদেনে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে কনফিডেন্স সিমেন্ট। সকালে শেয়ারপ্রতি ৫০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে হয়েছে ৫৫ টাকা দরে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে বিচ হ্যাচারি। শেয়ারপ্রতি ৯৮.৮০ টাকায় লেনদেন শুরু করে সারাদিনে দাম কমে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮৯ টাকায়।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
চট্টগ্রামে পতন
ডিএসইতে প্রধান সূচক বাড়লেও সুবিধা করতে পারেনি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। লেনদেন শেষে সিএসই'র সার্বিক সূচক কমেছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৯ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। ৮৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সূচক হারালেও গতদিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। সিএসইতে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
৯.৯৬ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে কে&কিউ (KAY&QUE), অন্যদিকে ১০ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে ডেলটা স্পিন।
২৬৩ দিন আগে
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
পুঁজিবাজারে ব্যাংক বিনিয়োগের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সিদ্ধান্তে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে শেয়ারবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ডিবিএ থেকে পাঠানো এক বার্তায় সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সাইফুল বলেন, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে তফসিলি ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ করে ডিবিএর পক্ষ থেকে গত ২৮ জানুয়ারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। গভর্নর ডিবিএ'র সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে এই বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন। এ সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার আগের থেকে আরও চাঙ্গা হবে।
এই তহবিলের যথাযথ ব্যবহার ও বিনিয়োগ বাজারের তারল্য প্রবাহ বৃ্দ্ধিতে সহায়তা করবে এবং দৈনিক শেয়ার লেনদেনে গতি এনে বাজারকে ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করে ডিবিএ।
আরও পড়ুন: সূচকের উত্থানে চলছে পুঁজিবাজারের প্রথমার্ধ
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, "গভর্নর পুঁজিবাজারের প্রতি সর্বদা সুদৃষ্টি রাখবেন এবং এর উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।"
এছাড়াও, ডিবিএর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
পুঁজিবাজারের সার্বিক স্বার্থে অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, ডিএসইসহ বাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ডিবিএ।
২৬৩ দিন আগে