পোশাক-শিল্প
পোশাকখাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ সম্পন্ন: বিজিএমইএ
শ্রমিকদের কাছে ঈদুল আজহা আনন্দময় করতে বেতন-ভাতা পরিশোধ করেছে পোশাক শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা। ফলে শ্রমিকরা উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে পারবেন।
শনিবার (১৫ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেতন-ভাতা পরিশোধের তথ্যটি নিশ্চিত করেছে বিজিএমইএ।
এতে বলা হয়, পোশাক খাতের মোট ২ হাজার ১৬০টি কারখানার মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৮৩৫টি এবং চট্টগ্রামে ৩২৫টি চালু রয়েছে। এর মধ্যে সব কারখানার মে মাসের বেতন ও ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা শতভাগ পরিশোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২.৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে
তবে এখনো মাত্র ৪টি কারখানায় উৎসব ভাতা দেওয়া প্রক্রিয়াধীন। যা শনিবারের মধ্যেই পরিশোধ করবেন।
বিজিএমইএ বলছে, তাদের জানামতে আর কোথাও বেতন-ভাতা পরিশোধ বাকি থাকার কোনো তথ্য নেই।
সরকারের আহ্বানে ও বিজিএমইএ’র অনুরোধে পোশাক কারখানাগুলো ১৩ জুন থেকে ১৫ জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব শ্রমিককে ছুটি দিয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই শ্রমঘন পোশাক শিল্প খাতে বেতন-ভাতা দেওয়ার সুবিধার্থে সরকারি ছুটির দিনে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট এলাকার তফসিলি ব্যাংকের শাখাসমূহ খোলা রাখতে বিজিএমইএ অনুরোধ জানিয়েছিল।
এছাড়া বিজিএমইএ রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমসহ দেশের রপ্তানি বাণিজ্য সচল রাখতে সরকারি ছুটির দিনে ইপিবি, চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ, আইসিডি কমলাপুর, ঢাকা কাস্টমস, মোংলা কাস্টমস, বেনাপোল কাস্টমস ও পানগাঁও কাস্টমস হাউজ এবং ঢাকা ও চট্রগ্রামের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কার্যালয় এবং একইসঙ্গে এসব কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশন-সংশ্লিষ্ট বন্দর, ব্যাংকের শাখা ও অন্যান্য স্টেকহোলিং প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়।
আরও পড়ুন: আরও দুই পোশাক কারখানা পেল এলইইডি সনদ
আরও দুই পোশাক কারখানা পেল এলইইডি সনদ
চলতি মাসে এলইইডি সনদ পেয়েছে দেশের আরও দুটি তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানা। এতে দেশে এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২০টিতে।
চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এলইইডি সার্টিফাইড কারখানার সংখ্যা ছিল ২১৮টি, গত ৫ মাসে ১২টি কারখানা সনদ অর্জন করেছে।
লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) একটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গ্রিন বিল্ডিং রেটিং সিস্টেম যা পরিবেশগত দায়বদ্ধতা এবং শক্তি দক্ষতার ওপর জোর দেয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এলইইডি সনদের স্বীকৃতি পোশাক খাতে সবুজায়নের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
সনদপ্রাপ্ত ২২০টি কারখানার মধ্যে ৮৪টি সর্বোচ্চ প্লাটিনাম রেটিং, ১২২টি স্বর্ণ, ১০টি রৌপ্য এবং ৪টি সাধারণ সনদ পেয়েছে।
নতুন যে দুটি কারখানা সনদ পেয়েছে সেগুলো হলো- গাজীপুরের কাশিমপুরের কটন ক্লাব ও কটন ক্লাউট বিল্ডিং-১ এবং ঢাকার ধামরাইয়ের গ্রাফিক্স টেক্সটাইল লিমিটেড। কারখানা দুটি গোল্ড ক্যাটাগরিতে ৭১ ও ৭৮ স্কোর অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এখন আরএমজি সেক্টরে ২০৪টি 'সবুজ' কারখানা
মে পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে নতুন সনদপ্রাপ্ত ৮টি কারখানাকে প্লাটিনাম রেটিং এবং বাকি ৪টি কারখানাকে গোল্ড রেটিং দেওয়া হয়েছে।
১০৬ পয়েন্ট নিয়ে এসএম সোর্সিং এবং ১০৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রিন টেক্সটাইল লিমিটেড ইউনিট-৪ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে আছে।
এছাড়া শীর্ষ স্থানের তালিকায় ৯৯ পয়েন্ট নিয়ে ইন্টিগ্রা ড্রেসেস ও নিট এশিয়া লিমিটেড, ৯৭ পয়েন্ট নিয়ে রেমি হোল্ডিংস লিমিটেড এবং ৯৭ পয়েন্ট নিয়ে ফতুল্লা অ্যাপারেলস অবস্থান করছে।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী এলইইডি-সনদপ্রাপ্ত ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে ৫৬টিই বাংলাদেশে হওয়ায় বিশ্বজুড়ে টেকসই ফ্যাশন আন্দোলনে নেতৃত্বের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।
বিজিএমই থেকে আরও জানা যায়, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত শীর্ষ ১০টি কারখানার মধ্যে ৯টি এবং শীর্ষ ২০ কারখানার মধ্যে ১৮টি কারখানাই বাংলাদেশে।
এলইইডিসনদ প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের এই অবস্থান দেশের পোশাক শিল্পের টেকসই অঙ্গীকারের চিত্র তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: টেকসই ফ্যাশন: ২০২৩ সালে ২৪টি নতুন এলইইডি সবুজ কারখানা নিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাত নেতৃত্বে
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২.৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি হয়েছে বলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশ করা তথ্যে উঠে এসেছে।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ১১ মাসে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত পোশাক রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময় রপ্তানি ছিল ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমকি ৬৭ শতাংশ।
চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে রপ্তানি একটানা কমে যাওয়ার ফলে বিগত ১১ মাসের গড় রপ্তানিতে মন্দাভাব সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ন্যায্য-ন্যূনতম মূল্য ও সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের আহ্বান বিজিএমই সভাপতির
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানিয়েছেন, ১১ মাসে আমাদের পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছে।
রুবেল আরও বলেন, গেল মে মাসে নীটওয়্যার পণ্যের প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৭৫ কমেছে এবং ওভেন পোশাক রপ্তানি ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সুদহার বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। ফলে পোশাকের খুচরা বিক্রয় ও আমদানি কমেছে (২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ইউরোপের কমেছে ১২ দশমিক ৮৪)। পাশাপাশি ইউনিট প্রতি পণ্যের উল্লেখযোগ্য দরপতন (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আমাদের প্রধান পণ্যের দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ) রপ্তানি কমার অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুন: পোশাককর্মীদের কল্যাণে বিজিএমইএর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ইন্ডাস্ট্রিঅল
বিশেষ করে নূন্যতম মজুরি বৃ্দ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, ব্যাংক সুদ সিঙ্গেল ডিজিট থেকে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া, এবং এই সংকটময় সময়ে নগদ সহায়তা কমিয়ে আনার ফলে শিল্প প্রতিযোগি সক্ষমতার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তার কিছুটা প্রতিফলন রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ফুটে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, পোশাকখাতকে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। আমরা একদিকে এনবিআর, বন্দর ও ব্যাংকিং সংক্রান্ত জটিলতা মোকাবিলা করছি। অন্যদিকে শিল্পাঞ্চলের বাইরে নতুন কোন কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ ও ব্যাংক ঋণ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা আমরা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ ও রপ্তানি আরও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি এবং সেই অনুযায়ী উদ্যেক্তারা নতুন পণ্যে বিনিয়োগ করছেন এবং নতুন বাজার তৈরিতে তৎপর আছেন। আমরা বিশ্বাস করি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় ও অর্থনীতির কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধির স্বার্থে সরকার পোশাক খাতের জন্য বিকল্প ইনসেনটিভ প্রবর্তনের আগ পর্যন্ত চলমান সকল সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং এর মাধ্যমে শিল্পের উৎকর্ষতা ও টেকসই হওয়ার পথটি মসৃণ করতে সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন দিতে মানবাধিকার কমিশনের আহ্বান
ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন দিতে মানবাধিকার কমিশনের আহ্বান
ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পোশাক কারখানা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৪ জুন) কমিশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি।
কোনো স্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে বলেন কামাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, গত ১ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঈদুল আজহা-২০২৪ এর বেতন-বোনাস পরিশোধের জন্য পোশাক শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। বিশেষ করে ঈদের আগে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের দাবিতে প্রতিবছরই বিক্ষোভ ও মিছিল হয়।’
আরও পড়ুন: ন্যায্য-ন্যূনতম মূল্য ও সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের আহ্বান বিজিএমই সভাপতির
এ প্রেক্ষাপটে সময়মতো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
চেয়ারম্যান বলেন, মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকারের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। ১৯৪৮ সালে প্রণীত জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ২৩ অনুচ্ছেদে ন্যায্য ও অনুকূল পারিশ্রমিকের অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সময়মতো নির্ধারিত মজুরি নিশ্চিত করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।’
শ্রমিক অধিকার রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এর বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মজুরিই তাদের জীবিকার একমাত্র উৎস। এক্ষেত্রে সময়মতো মজুরি না পাওয়া খুবই দুঃখজনক।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে শ্রম অধিকার রক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্মস্থলে নিরাপত্তা, মর্যাদাপূর্ণ ও অনুকূল মজুরি এবং সার্বিক শ্রম অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে কমিশন নিয়মিতভাবে কারখানা পরিদর্শন করে।
আরও পড়ুন: আসন্ন বাজেটে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে খুশি করতে চান অর্থমন্ত্রী
পোশাককর্মীদের কল্যাণে বিজিএমইএর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ইন্ডাস্ট্রিঅল
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের কর্মীদের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইন্ডাস্ট্রিঅলের টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টর ক্রিস্টিনা হাজাগোস-ক্লসেন।
সোমবার (২৭ মে) বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নানের (কচি) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য শ্রমিকদের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে বিজিএমইএ।
আরও পড়ুন: যাতায়াতের দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত হলো আরএমজি এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমে
এ সময় পোশাককর্মীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণের জন্য বিজিএমইএর চলমান প্রচেষ্টাগুলো তুলে ধরেন তিনি।
বৈঠকে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও শ্রম অধিকারসহ আরও বেশকিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অর্জনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ ও ইন্ডাস্ট্রিঅল।
ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আরও ছিলেন- বিজিএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক হারুন আর রশিদ, পরিচালক আশিকুর রহমান (তুহিন) এবং বিজিএমইএর স্ট্যান্ডিং কমিটি অন লেবার অ্যান্ড আইএলও অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান আ ন ম সাইফুদ্দিন।
আরও পড়ুন: ন্যায্য-ন্যূনতম মূল্য ও সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের আহ্বান বিজিএমই সভাপতির
ন্যায্য-ন্যূনতম মূল্য ও সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের আহ্বান বিজিএমই সভাপতির
ন্যায্য, ন্যূনতম মূল্য ও সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়ণে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)।
সোমবার (২০ মে) বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বিজিএমইএর সভাপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আইএলওর নেতৃত্বে চলমান উদ্যোগগুলোর অগ্রগতি, বিশেষ করে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কর্মীদের জন্য কাজের পরিবেশ উন্নত করা এবং তাদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ প্রকল্পের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করেন প্রতিনিধিরা।
এই বৈঠকে শিল্পের আরও বিকাশের জন্য, ডিউ ডিলিজেন্স ডাইরেকটিভের মতো আসন্ন প্রবিধানগুলো অনুসরণ করা এবং কর্মীদের কল্যাণ বাড়াতে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আইএলও এবং বিজিএমইএর মধ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়।
এ সময় তারা সোশ্যাল ও টেকনিক্যাল অডিটের জন্য শিল্পে সর্বজনস্বীকৃত একটি সমন্বিত আচরণবিধি (ইউনিফাইড কোড অব কন্ডাক্ট) প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় বিশ্বব্যাপী ক্রেতা, প্রস্তুতকারক এবং শ্রমিকসহ সব স্টেকহোল্ডারদের সুবিধার্থে এ ধরনের একটি সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আইএলওকে আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
পোশাকের ন্যায্য ন্যূনতম মূল্যের ওপর জোর দিয়ে এস এম মান্নান আরও বলেন, মূল্য নির্ধারণের এই ধরনের ব্যবস্থা ছাড়া শিল্প দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হবে না। বিজিএমইএ সভাপতি শ্রমনির্ভর পোশাকখাতে ন্যায্য মূল্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে আইএলওকে বৈশ্বিক ফোরামে এবং ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানান।
বৈঠকে আইএলওর প্রতিনিধিদলে ছিলেন বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ আনিস আগুং নুগরোহো, প্রোগ্রাম এবং অপারেশন অফিসার লিনিয়া স্ট্র্যান্ড এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম।
বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ছিলেন- সহসভাপতি আরশাদ জামাল (দীপু), সহসভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহসভাপতি মিরান আলী, সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক মো. ইমরানুর রহমান, পরিচালক শোভন ইসলাম, পরিচালক হারুন আর রশিদ, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক শেহরিন সালাম ঐশী, পরিচালক সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, পরিচালক মো. রেজাউল আলম (মিরু) এবং বিজিএমইএর শ্রম ও আইএলও বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আ ন ম সাইফুদ্দিন।
যাতায়াতের দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত হলো আরএমজি এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমে
বাংলাদেশ সরকার পাইলট এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমের পরিধি বাড়িয়েছে। এতে শ্রমিকদের কাজে আসা-যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকারদের জন্য ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) অনুষ্ঠিত এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইএস) পাইলটের গভর্নেন্স বোর্ড তার অষ্টম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে 'যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনা'কে শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে পোশাক শ্রমিকদের জন্য চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প ও শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইএস) পাইলটে যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’
আইএলও জানিয়েছে, নিয়োগকর্তাদের সংগঠন (বিইএফ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ), শ্রমিক সংগঠন (ইউএফজিডাব্লু, এনসিসিডব্লিউই) এবং সরকারি সংস্থাগুলো (কেন্দ্রীয় তহবিল, ডিওএল, ডিআইএফই) সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে, যারা ইআইএস পাইলট গভর্নেন্স বোর্ডের সদস্য।
আরও পড়ুন: ইউএসআইটিসির শুনানিতে তৈরি পোশাক শিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি
আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিয়াইনেন বলেন, '২০২২ সালের ২১ জুন থেকে ইআইএস পাইলট তৈরি পোশাক খাতের আহত শ্রমিক এবং নিহত শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীলদের কর্মসংক্রান্ত দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে আসছে।’
পুটিয়াইনেন বলেন, যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্তির এই উদ্যোগ শ্রমিকদের সুরক্ষা আরও বাড়িয়ে দেবে এবং শিল্পের সঙ্গে শ্রমিকদের সম্পর্কের উন্নতি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রায়ই শ্রমিকদের কাজে আসা বা যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কারণে বিঘ্নিত হয় বলে জানান তিনি।
আইএলওর কারিগরি বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের সম্প্রসারণের কারিগরি ও আর্থিক দিক সম্পর্কে মূল দিকগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে দুর্ঘটনাকে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করার শর্ত। এছাড়া কারখানার বাইরে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এবং কোনো কারখানার সঙ্গে তাদের পরিচয় না দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথক রেকর্ড রাখার শর্তও দেন তারা।
এছাড়া ইআইএস পাইলটের অধীনে দুর্ঘটনার আওতায় আর্থিক স্থায়িত্বের জন্য একটি শক্তিশালী নজির উপস্থাপন করেছে তারা।
আগামী ১ জুলাই থেকে এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম পাইলটের আওতায় যাতায়াত দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করতে সম্মত হওয়ার কথা উল্লেখ করে নিয়োগকর্তাদের সংগঠনগুলো বলেছে ‘আমরা সামাজিক সুরক্ষার জন্য শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারকে সমর্থন করি এবং নতুন সুবিধাগুলো বিবেচনা করতে পেরে খুশি হব, যদি তারা শিল্পের প্রতিযোগিতাকে প্রভাবিত না করে।’
শ্রমিক প্রতিনিধিরাও এ উদ্যোগে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ‘তৈরি পোশাক খাত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ খাত, তবে সড়ক ভ্রমণ এই কাজের সবচেয়ে ভয়াবহ অংশ, তাই যাতায়াত দুর্ঘটনা কভার করা গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: উচ্চমানের পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছে বিজিএমইএ
আইএলও এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি বেনিফিট কনভেনশন নম্বর ১২১ (সি-১২১)’র ৭ নম্বর অনুচ্ছেদের আলোকে দেশগুলোকে শিল্প দুর্ঘটনার সংজ্ঞা দিতে হবে। যার মধ্যে একটি যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনাকে শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হবে এমন শর্তগুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এই পদক্ষেপ অভিযোজন করা বাংলাদেশের ইআইএসকে সি-১২১ এ বর্ণিত প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তোলে।
ইআইএস পাইলটের পরিধিতে, যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনা কর্মস্থল ও শ্রমিকদের স্থানীয় বাসস্থানের মধ্যে সরাসরি যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। ইআইএস পাইলটে যাতায়াত দুর্ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে পাইলট এখন প্রস্তাবিত তিনটি দুর্বলতার মধ্যে দুটি অন্তর্ভুক্ত করে। তবে 'পেশাগত রোগ' এখনও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
তবে পেশাগত রোগের জাতীয় সক্ষমতা এবং তথ্য বিকাশের একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আইএলও ও জিআইজেড যৌথভাবে এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম পাইলট বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।
আইএলও উদ্যোগটিতে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা সরকার অর্থায়ন করে। অন্যদিকে জিআইজেড উদ্যোগটি জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএমজেড) অর্থায়ন করে থাকে।
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ
২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, উল্লিখিত সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ এ সময় তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৪০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ইতালিতে বাণিজ্য সুবিধা কাজে লাগানোর আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
নিটওয়্যারের রপ্তানি হয়েছে ২২ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ওভেন (বুনন জাতীয়) পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের এপ্রিলে পোশাক রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৩ সালের এপ্রিলের তুলনায় ১ দশমিক ০১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্চ মাসের বেতন-ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে সব কারখানা: বিজিএমইএ সভাপতি
'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' চালু করল বিজিএমইএ
মার্চ মাসের বেতন-ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে সব কারখানা: বিজিএমইএ সভাপতি
ঈদুল ফিতরের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পুরোপুরি পরিশোধ করায় তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম মান্নান।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা যাতে তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে আসন্ন ঈদ উদযাপন উপভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে কারখানা মালিকদের প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা তুলে ধরেন বিজিএমইএর নবনির্বাচিত সভাপতি।
এই আর্থিক প্রক্রিয়াটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকার জন্য সরকার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শ্রমিক নেতা এবং গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ঈদের আগে বেতন ভাতা বিষয়ে সমস্যা হতে পারে এরকম ৪৫০টি কারখানার ওপর নজরদারির কথা উল্লেখ করেন মান্নান। বিশেষ করে ২৬টি কারখানায় বিজিএমইএর সরাসরি হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধানে সাফল্যের কথা তুলে ধরেন তিনি।
মান্নান বিবৃতিতে আরও জানান, এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে সব কারখানা মার্চ মাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস পরিশোধ করতে পেরেছে। অল্পকিছু কারখানা বাকি আছে, তারাও আজকের মধ্যে পরিশোধ করে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আর্থিক খাতের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিজিএমইএ সভাপতি পোশাক কারখানার আশেপাশের এলাকাগুলোতে সরকারি ছুটির দিনেও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। এই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপটি শ্রমিকদের সময়মত এবং সম্পূর্ণ বেতন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ভবিষ্যতে ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মান্নান। বিশেষ করে বাস, ট্রেন এবং নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' চালু করল বিজিএমইএ
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে 'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' উদ্বোধন করেছে বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার(২ এপ্রিল) ঢাকায় বিজিএমই’র প্রধান কার্যালয়ে এটির উদ্বোধন করা হয়।
খলিলুর রহমানের মেয়ে নাসরিন সুবহান, ছেলে স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল ও পুত্রবধূ রূপা সায়েফের উপস্থিতিতে 'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' উদ্বোধন করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
বিজিএমইএ বৈশ্বিক বাজারের প্রবণতার ক্রমবর্ধমান প্রেক্ষাপটে নেভিগেট করার ক্ষেত্রে ক্রমাগত শেখার ও উদ্ভাবনের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বিজিএমইএ ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান দিয়ে শিল্প অংশীজনদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি প্রয়াত মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানের (অব.) সম্মানে নামকরণ করা এই নলেজ সেন্টারটি বাংলাদেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক।
আরও পড়ুন: উচ্চমানের পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছে বিজিএমইএ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য অব্যাহত জ্ঞানার্জনের অপরিহার্যতার উপর জোর দেন।
তিনি শিল্প-প্রাসঙ্গিক জ্ঞানার্জনে সহায়তা এবং এর সামগ্রিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে নলেজ সেন্টারটি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তা তুলে ধরেন।
অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস সম্বলিত খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার প্রশিক্ষণ সেশন, সেমিনার এবং কর্মশালার সুবিধার্থে শিক্ষা ও সহযোগিতার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
এর ডিজিটাল-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, শিল্প বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত এবং বিশ্বজুড়ে পেশাদাররা ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়ার, বর্তমান ও উদীয়মান ব্যবসায়িক বিষয়গুলোর পাশাপাশি শিল্প-সম্পর্কিত প্রযুক্তিগুলোতে অগ্রগতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতা বিনিময় করার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দাবি