ইউএস-ও-কানাডা
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র: গোয়েন্দা প্রতিবেদন
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করতে গত সপ্তাহে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে হামলার প্রাথমিক মূল্যায়নে জানা গেছে, হামলা চালানো তিনটি স্থাপনার মধ্যে দুটিই ধ্বংস হয়নি। তাছাড়া, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সম্ভবত মাত্র কয়েক মাসের জন্য পেছনে ঠেলে দিতে পেরেছে এই মার্কিন হামলা।
পেন্টাগনের গোয়েন্দা শাখা হিসেবে কাজ করা ‘প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা’ (ডিআইএ) এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) ওই প্রাথমিক তদন্ত-সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি এ তথ্য জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় (সেন্ট্রাল কমান্ডে) পরিচালিত যুদ্ধ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির ওপর ভিত্তি করে এই প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডিআইএ। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম তদারকি করে থাকে এই সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে করা ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণু কর্মসূচির প্রধান উপাদান, যেমন: সেন্ট্রিফিউজগুলো কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় চালু করা সম্ভব।
প্রতিবেদরে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে— এমন উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের অনেকটা অংশ হামলার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেগুলো ইরানের গোপন অন্যান্য পারমাণবিক স্থাপনায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ‘পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে’ বলে ট্রাম্প যে দাবি করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শনিবার (২১ জুন) রাতে ট্রাম্প জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, নাতাঞ্জ, ফোরদো ও ইসফাহানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চান না ট্রাম্প
তিনি বলেন, ‘এই হামলা ছিল এক অসাধারণ সামরিক সাফল্য। ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ও চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দখলদার ইরান এখন শান্তির পথ বেছে নিতে বাধ্য।’
যদিও ডিআইএয়ের প্রতিবেদনটি ছিল একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন, তবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা গোয়েন্দা তথ্য কয়েক দিনের মধ্যেই ফোরদো ধ্বংস হয়নি বলে নিশ্চিত করে, তাহলে পরবর্তী মূল্যায়নে আরও কম ক্ষয়ক্ষতির কথা উঠে আসতে পারে।’
ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত ফোরদোর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। এটি জাগরোস পর্বতমালার নিচে অবস্থিত।
এই কেন্দ্রটি প্রায় ৪৫ থেকে ৯০ মিটার (১৪৫ থেকে ৩০০ ফুট) পাথরের নিচে নির্মিত, যার বেশিরভাগই লাইমস্টোন ও ডোলোমাইট।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন প্রথমে এই গোয়েন্দা মূল্যায়নের কথা জানালেও হোয়াইট হাউস তা প্রত্যাখ্যান করে।
প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই তথাকথিত মূল্যায়ন ফাঁসের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হেয় ও সাহসী ফাইটার পাইলটদের অবদানকে অস্বীকার করার চেষ্টা করা হয়েছে, যারা নিখুঁতভাবে পরিচালিত এক অভিযানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করেছেন।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের ওপর আমি সন্তুষ্ট নই: ট্রাম্প
তবে রবিবার (২২ জুন) মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স স্বীকার করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র জানে না ইরানের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ কোথায় আছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী কয়েক সপ্তাহে নিশ্চিত করব; কীভাবে ওই জ্বালানির ব্যবহার রোধ করা যায়।’
এদিকে, সোমবার (২৩ জুন) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিও বলেন একই কথা। তার মতে, ইরানের ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের মজুদ কোথায় আছে, তা এখন আর তারা নির্ধারণ করতে পারছে না।
এর আগে, গত বুধবার (১৮ জুন) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে পেন্টাগনের শীর্ষ রাজনৈতিক কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছিল, ফোরদোয় ব্যবহারের জন্য তৈরি ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের ‘বাংকার বাস্টার’ জিবিইউ-৫৭ বোমাগুলো ওই স্থাপনাটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না।
জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ওই ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনের ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সি জানায়, জিবিইউ-৫৭ বোমা ভূমির পর্যাপ্ত গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। কেবল একটি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রই ফোরদোকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে সক্ষম।
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাতে প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলায় বি২ বোমারু বিমানে করে ফোরদোয় ১২টি, নাতাঞ্জে ২টি জিবিইউ-৫৭ বোমা ফেলা হয় এবং একটি মার্কিন সাবমেরিন ইসফাহানে প্রায় ৩০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইরানে ইসরায়েলের হামলা, দুই জেনারেলসহ নিহত ৭
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ট্রাম্পের দাবি পুর্নব্যক্ত করে বলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
তবে অপারেশনের তত্ত্বাবধায়ক মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ার জেনারেল ড্যান কেইন তার মন্তব্যে কিছুটা সংযত ছিলেন।
কেইন বলেন, তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাতেই ‘গুরুতর ক্ষতি ও ধ্বংস’ হয়েছে। তবে সামরিক অভিযানের চূড়ান্ত যুদ্ধ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন এখনও বাকি রয়েছে বলেও সে সময় সতর্ক করেছিলেন তিনি।
১৮৭ দিন আগে
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পেলেন ট্রাম্প
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) মার্কিন কংগ্রেসের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি বাডি কার্টার নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্পের মনোনয়ন সুপারিশ করেন।
চিঠিতে তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়নে ট্রাম্পের অসাধারণ ভূমিকা বিশ্ব শান্তির জন্য এক মাইলফলক।’
কার্টার আরও বলেন, ‘অনেকের কাছে যা অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল, সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ট্রাম্পের দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’
সোমবার (২৩ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। যদিও দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। তবে, ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
কার্টার আরও উল্লেখ করেন, ‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রটি যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করেছেন।’
আরও পড়ুন: ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চান না ট্রাম্প
এর আগেও ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে ‘আব্রাহাম চুক্তি’ বাস্তবায়নের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আলোচনায় ছিলেন। এবার ইরান-ইসরায়েল সংকটে তার ভূমিকা তাকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
সবশেষ ২৪ জুন ইরানে হামলা চালিয়ে দুই জেনারেলসহ দেশটির অভিজাত বাহিনী আইআরসিজির সাত সদস্যকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত দেশ ইসরায়েলের হামলায় ৬১০ জন ইরানি নিহত হয়েছেন। অপর দিকে ইরানের মিসাইল হামলায় ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে উভয় পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা।
উল্লেখ্য, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে তা ধ্বংসের দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিক্রিয়ায় কাতারে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালায় ইরান।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
১৮৭ দিন আগে
দুই সপ্তাহের কথা বলে দুদিনের মাথায় হামলা চালানো ছিল ট্রাম্পের ‘রণকৌশল’
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আবার নিজের অস্থিতিশীল আচরণের জন্য আলোচনায় এসেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে হামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দুই সপ্তাহ সময় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুদিন না যেতেই তেহরানে হামলা চালিয়ে বসেন ট্রাম্প। মূলত হামলার পরিকল্পনা গোপন রাখতেই ওই তিনি ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে সামরিক অভিযানের ব্যাপারে কয়েকদিন ধরেই দৃঢ়ভাবে আগ্রহী ছিলেন ট্রাম্প। হামলার বিষয়ে তার প্রকৃত চিন্তাভাবনা গোপন রাখতেই তিনি তার জ্যেষ্ঠ সহকারীদের একটি নির্দেশ দেন— প্রেসকে জানিয়ে দেওয়া হোক, দুই সপ্তাহের মধ্যে অভিযান চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প!
তার মানে দাঁড়ায়, দুই সপ্তাহের ঘোষণা দিয়ে দুদিনের মাথায় হামলা চালানো কোনো অস্থিতিশীল আচরণ নয়, বরং এটি ট্রাম্পের সুপরিকল্পিত রণকৌশল।
সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন বলছে, ইতোমধ্যেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন— কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প। এ কারণে দুই সপ্তাহের সময়সীমার ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: শান্তি স্থাপন করুন, নইলে আরও হামলা আসছে: ইরানকে ট্রাম্প
ইরানিদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি এবং তার পরিকল্পনা গোপন রাখার অভিপ্রায়েই এই কৌশল অবলম্বন করেন ট্রাম্প।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানোর ব্যাপারে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ভাষ্যে, ওই দিন তিনি তার সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননের সঙ্গে দুপুরের খাবারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। ব্যানন প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
এরপরই তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট হোয়াইট হাউস ব্রিফিং রুমে গিয়ে প্রেসিডেন্টের নির্দেশ অনুসারে ওই দুই সপ্তাহের সময়সীমার ঘোষণা দেন।
যদিও হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসেছিল শনিবার (২১ জুন), তবে ট্রাম্পের আশপাশের মানুষের বিশ্বাস, ইরানে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের মন অনেক আগেই স্থির হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ইরানের আকাশসীমার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের দাবি ট্রাম্পের
সূত্র আরও জানায়, ট্রাম্পকে আগেই হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল এবং তিনি প্রতিদিনই জ্যেষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করছিলেন। এর পাশাপাশি দিনে একাধিকবার ফোনালাপও চলছিল বলে বিশ্বাস তার আশেপাশের লোকেদের।
এরপর, রবিবার (২২ জুন) ভোরে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় অত্যন্ত সফলভাবে হামলা পরিচালনা করেছি, যার মধ্যে রয়েছে ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান।’
১৮৯ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যা দুই দেশের প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
লন্ডনে দেশ দুটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুই দিনের বৈঠকের পর নিজের মালিকাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু চীনের প্রেসিডেন্ট শি ও আমার অনুমোদন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘চীন থেকে প্রয়োজনীয় দুর্লভ ধাতব পদার্থ ও চুম্বক যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে, চীনা শিক্ষার্থীরাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পাবেন।’
আধুনিক প্রযুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুর্লভ ধাতু রপ্তানির বিষয়টি লন্ডনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি মদদপুষ্ট ৫০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা হামাসের
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্কারোপ করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চীন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বেইজিংও মার্কিন পণ্যে উচ্চ শুল্কারোপ করে। পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের হার এপ্রিলে এসে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশে পৌঁছায়।
মে মাসে সুইজারল্যান্ডে হওয়া আলোচনায় সাময়িক সমঝোতায় পৌঁছায় দুই দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক হার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে এবং চীনও তা ১০ শতাংশে কমিয়ে আনে। পাশাপাশি চীন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রপ্তানিতে বাধা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে উভয় পক্ষই পরে একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ আনে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন দুর্লভ ধাতু রপ্তানিতে বিধিনিষেধ তুলে নেয়নি। অপরদিকে, বেইজিং দাবি করে— যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করেছে, চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের তৈরি চিপ ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছে এবং চিপ ডিজাইন সফটওয়্যারের রপ্তানি বন্ধ করেছে।
এই সপ্তাহের আলোচনার আগে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা কিছু দুষ্প্রাপ্য খনিজ উপাদান রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে।
ট্রাম্প শুক্রবার (৬ জুন) জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট শি বাণিজ্য পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
২০০ দিন আগে
আটকের পর যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটকার
ভিসাশর্ত লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানবন্দরে আটকের পর স্বেচ্ছায় দেশটি ছেড়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটকার খাবি লেইম।
শুক্রবার (৬ জুন) লাসভেগাস শহরের হ্যারি রেইড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্কপ্রয়োগকারী সংস্থার (আইসিই) কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন তিনি।
তবে, কোনো নির্বাসন আদেশ ছাড়াই তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বেচ্ছাপ্রস্থানের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র।
২৫ বছর বয়সী এই সামাজিকমাধ্যম তারকার (ইনফ্লুয়েন্সার) পুরো নাম সেরিঞ্জে খাবানে লেইম। জন্ম সেনেগালেও হলেও শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে ইতালিতে পাড়ি জমান তিনি। পরে, ইতালির নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন।
আইসিই জানিয়েছে, খাবি লেইম ৩০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ভিসার শর্ত ভঙ্গ করে দেশটিতে অবস্থান করছিলেন তিনি। তাকে স্বেচ্ছাপ্রস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।সংস্থাটি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি হারিয়ে স্বেচ্ছাপ্রস্থান করা ব্যক্তিরা ডিপোর্টেশন অর্ডার এড়াতে পারেন। এই আদেশে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ১০ বছর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে।
আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ২ হাজার সেনা মোতায়েন ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপ দিনদিন আরও জোরালো করছে। এরমধ্যেই দেশটির লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন জায়গায় আইসিইর অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প তার নির্বাহী ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা করছেন। এমন এক সময়েই জনপ্রিয় এ ইনফ্লুয়েন্সারের আটক ও স্বেচ্ছাপ্রস্থানের ঘটনাটি ঘটলো।
এ বিষয়ে জানতে, মঙ্গলবার (১০ জুন) তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তিনি এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোন মন্তব্যও করেননি।খাবি লেইম কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রথম আলোচনায় আসেন। সংলাপহীন ভিডিওর মাধ্যমে জটিল ও অপ্রয়োজনীয় লাইফ হ্যাকগুলোর সোজাসাপ্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তিনি সামাজিক মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম টিকটকে তার অনুসারীর সংখ্যা ১৬ কোটি ২০ লাখের বেশি।
টিকটকে খ্যাতি পাওয়ার পর তিনি দ্রুতই ফ্যাশন ও মানবিক কাজে যুক্ত হন। ২০২২ সালে তিনি নামকরা ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুগো বসের সঙ্গে কয়েকবছরের চুক্তি করেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কয়েকদিন পর গত মে মাসে নিউইয়র্কে ফ্যাশন দুনিয়ার অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন অনুষ্ঠান মেট গালায় অংশ নেন তিনি।
২০০ দিন আগে
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ২ হাজার সেনা মোতায়েন ট্রাম্পের
ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে অঙ্গরাজ্যটির গভর্নরের আপত্তি সত্ত্বেও লস অ্যাঞ্জেলেসে ২ হাজারের মতো জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
স্থানীয় সময় শনিবার (৭ জুন) ক্যালিফোর্নিয়ার বিশৃঙ্খলা দমনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম। সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ উসকানিমূলক এবং এটি কেবল উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।’
সম্প্রতি ১১৮ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) কর্মকর্তারা। তাদের দাবি গ্রেপ্তারদের মধ্যে পাঁচজন অপরাধী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং কিছু ব্যক্তির আগের ফৌজদারি রেকর্ড রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ( ৬ জুন) ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে একটি পোশাকের গুদামের বাইরেও অভিযান চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের প্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ওই কোম্পানির এক নিয়োগকর্তা কিছু কর্মীর জন্য ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করছিলেন।
অভিবাসী অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেন, হোম ডিপোর দোকানগুলোর বাইরে এবং একটি ডোনাট শপের সামনেও অভিবাসীদের আটকের ঘটনা ঘটে।
এর পরপরই গ্রেপ্তার ও আটকদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দ্বিতীয় দিনেও চলতে থাকায় এবং টিয়ার গ্যাস ও ধোঁয়ায় বাতাস ভরে উঠলে হোয়াইট হাউজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ জোরদার করে। বর্ডার প্যাট্রোলের দাঙ্গা-প্রতিরোধী ইউনিট মোতায়ন করা হয় বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের আগ্রাসী অবস্থান বোঝাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্স পোস্টে বলেন, ‘যদি সহিংসতা চলতেই থাকে, তাহলে ক্যাম্প পেন্ডলটনের অ্যাকটিভ ডিউটি মেরিনদেরও মোতায়েন করা হবে— তারা সর্বোচ্চ সতর্কতায় আছে।’
এদিকে, নিউসামের অফিস জানায়, ‘টাইটেল ১০’ কর্তৃত্ব ব্যবহার করে ক্যালিফোর্নিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি অংশ ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ট্রাম্প, যার ফলে গভর্নর নয়, এখন কমান্ড চেইনের শীর্ষে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।
এ বিষয়ে, হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, বিক্ষোভের সময় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ যে কাজ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অপরাধীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও তাদের ফিরিয়ে দিতে অপরিহার্য। এই সহিংসতার প্রেক্ষিতে ক্যালিফোর্নিয়ার অদক্ষ ডেমোক্র্যাট নেতারা তাদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব পুরোপুরি ত্যাগ করেছেন।’
সেনা মোতায়নের আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউসাম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস নিজেদের কাজ না করেন, তাহলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করবে এবং সমস্যা সমাধান করবে। যেভাবে দাঙ্গা ও লুটপাটকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, ঠিক সেভাবেই করবে।’
এর আগে, ২০২০ সালে মিনিয়াপলিসে জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশ হত্যা করার পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমন করতে ট্রাম্প একাধিক রাজ্যের গভর্নরদের ওয়াশিংটন ডিসিতে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ করেন। অনেক গভর্নর তাতে সম্মত হয়ে ফেডারেল জেলার উদ্দেশ্যে সেনা পাঠানো হয়েছিল।
এ ছাড়াও ট্রাম্প তখন বিদ্রোহ দমন আইন প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছিলেন। আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে এটি খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছে। তবে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বলেন, এটি ‘শুধুমাত্র সবচেয়ে জরুরি ও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে’ প্রয়োগ করা উচিত।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ওই আইন কার্যকর করেননি এবং শনিবারও তিনি এটি কার্যকর করেননি বলে জানিয়েছেন ক্যারোলিন লেভিট ও গ্যাভিন নিউসাম।
আরও পড়ুন: পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
এই বিক্ষোভে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের মধ্যে ছিলেন সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়নের আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট ডেভিড হুয়ের্তা। বিচার বিভাগীয় মুখপাত্র কিয়ারান ম্যাকএভয় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হুয়ের্তার আইনি প্রতিনিধিত্ব রয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
ডেমোক্র্যাট সিনেট ও সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার তার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমর এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘মুক্তভাবে মত প্রকাশের অধিকার চর্চার কারণে মার্কিন নাগরিকদের গ্রেপ্তার ও আটকের একটি ভয়ানক ঘটনা দেখা যাচ্ছে।’
এই অভিবাসন গ্রেপ্তারগুলো এমন সময়ে হচ্ছে, যখন ট্রাম্প ও তার প্রশাসন দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে অভিবাসীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস বলেন, ‘এই কর্মকাণ্ড দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে ভয় তৈরি করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।’
২০৪ দিন আগে
ড্রাগন ক্যাপসুল বন্ধে মাস্কের হুমকি, সংকটের শঙ্কায় নাসা
যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফেরায় মার্কিনিদের তো বটেই বিশ্ববাসীরও নজর কেড়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বন্ধুত্ব। তবে সম্প্রতি এ সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছুদিনের আগেরও ঘনিষ্ঠ এই দুই মিত্র এবার সামাজিক মাধ্যমে জড়িয়ে পড়েছেন বাক-বিতণ্ডায়। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পর্যন্ত নভোচারী ও রসদ পাঠানোর কাজে ব্যবহৃত ড্রাগন ক্যাপসুল বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন মাস্ক। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এই হুমকি দেন রকেট কোম্পানি স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা মাস্ক।এর আগে, স্পেসএক্স ও স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায় সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর জবাবে মাস্ক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,‘ স্পেসএক্স তার ড্রাগন ক্যাপসুল অবিলম্বে বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।’অবশ্য মাস্কের হুমকি কতটা বাস্তবসম্মত, তা স্পষ্ট নয়। তবে সরকারি অর্থায়নে তৈরি এই ক্যাপসুলটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন সচল রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এ ছাড়া, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক অভিযান ও এই দশকের শেষ দিকে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারী পাঠানোর মতো বড় প্রকল্পের জন্যও স্পেসএক্সের ওপর নির্ভরশীল ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)।
ড্রাগন ক্যাপসুল আসলে কী
এই মুহূর্তে স্পেসএক্সই একমাত্র মার্কিন কোম্পানি, যারা চারজনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে মহাকাশ স্টেশনে যাতায়াতের সুযোগ দিয়ে আসছে।
বোয়িং-এর স্টারলাইনার ক্যাপসুল এখন পর্যন্ত একবারই নভোচারী নিয়ে উড়েছে। গত বছরের সেই পরীক্ষামূলক মিশন ছিল অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। ওই মিশনে গিয়ে মহাকাশে আটকে পড়া দুই নভোচারীকে দীর্ঘ নয়মাস পর এ বছরের মার্চ মাসে স্পেসএক্সের একটি ক্যাপসুলে করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর থেকে স্টারলাইনার এখনও স্থগিত রয়েছে।
স্পেসএক্স তাদের নিজস্ব বেসরকারি মিশনের জন্যও ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে। পরবর্তী মিশনটি হবে আগামী সপ্তাহে। অ্যাক্সিওম স্পেস নামের হিউস্টনভিত্তিক একটি কোম্পানি এটি ভাড়া করেছে। তাছাড়া, খাদ্য ও অন্যান্য রসদ পরিবহনের জন্যও ড্রাগনের কার্গো সংস্করণ ব্যবহার করে স্পেসএক্স।
নাসার অন্য বিকল্প রাশিয়ার সোয়ুজ
এই মুহূর্তে রাশিয়ার সোয়ুজ ক্যাপসুলই একমাত্র বিকল্প, যা দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে ক্রুদের নিয়ে যাওয়া যায়।
অন্যদিকে, প্রতিটি স্পেসএক্স মিশনে একজন রাশিয়ান থাকেন। এই বিনিময় ব্যবস্থার ফলে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রতিটি ক্যাপসুলে একজন করে আমেরিকান ও রাশিয়ান থাকা নিশ্চিত করা হয়।
২০২০ সালে স্পেসএক্স নাসার জন্য প্রথম নভোচারী পাঠায়। এর ফলে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমাতে পারে নাসা। এর আগে রুশ ফ্লাইটে প্রতি আসনে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হতো কয়েক কোটি ডলার। রসদের জন্যও রুশ মহাকাশযান ও মার্কিন কোম্পানি নর্থরপ গ্রুম্যানের ওপর নির্ভরশীল ছিল নাসা।
স্পেসএক্সের অন্যান্য সরকারি মিশন
নাসার বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক মিশন এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎক্ষেপণের কাজেও ব্যবহৃত হয় এই কোম্পানিটি।
গত বছর মহাকাশ স্টেশন ব্যবহারের অযোগ্য হলে সেটিকে কক্ষপথ থেকে নামিয়ে আনার দায়িত্বও পায় স্পেসএক্স।এ ছাড়াও, নাসা চাঁদের কক্ষপথ থেকে নভোচারীদের চাঁদের পৃষ্ঠে নামানোর জন্য স্পেসএক্সের স্টারশিপ মেগা রকেট বেছে নিয়েছে। অন্তত প্রথম দুটি ল্যান্ডিং মিশনের জন্য এটি ব্যবহার করবে নাসা। এদিকে, স্টারশিপ গত সপ্তাহে টেক্সাস থেকে নবমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে উড্ডয়ন করে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে।
২০৬ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া ৭টি দেশের ভ্রমণকারীদের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) এ ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আগামী সোমবার (৯ জুন) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এসব নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
এটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের অন্যতম বিতর্কিত নীতির পুনরাবৃত্তি। তবে ২০১৭ সালের নিষেধাজ্ঞার সময় বিমানবন্দরে দেখা দেওয়া বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবার আগাম নোটিশের মাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘোষণায় ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কিছু দেশ আবারও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১২টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
অন্যদিকে, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা থেকে আগত ভ্রমণকারীদের জন্য অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আরোপের কারণ হিসেবে কলোরাডোর বোল্ডারে রোববারের সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টানেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যেসব ভ্রমণকারী ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যান, তারা বিপজ্জনক হতে পারে।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো কলোরাডো হামলার সন্দেহভাজন ব্যক্তি মিশরের নাগরিক হলেও দেশটি ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি পর্যটক ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুনরায় দায়িত্ব নিয়েই ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আগের এক সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমর্থন থাকায় এবার তার আইনি ভিত্তি আরও শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বছর ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশের তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালককে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘বৈরী মনোভাব’ ও নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিনা তা নথিভুক্ত করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
এর আগে, প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এক নির্বাহী আদেশে ৭ টি দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ট্রাম্প। ইরাক, সিরিয়া, ইরান, সুদান, লিবিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেন- এই ৭টি দেশ ছিল সে তালিকায়। এগুলো মূলত প্রধানত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।
এই আদেশটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুরুর দিককার সবচেয়ে বিশৃঙ্খল ও বিভ্রান্তিকর মুহূর্তগুলোর একটি ছিল।
নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশের যাত্রীদের কেউ কেউ বিমানেই উঠতে পারেননি, আবার কেউ যুক্তরাষ্ট্রে নেমে বিমানবন্দরেই আটক হন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, পর্যটক এবং বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের দেখতে আসা মানুষরাও ছিলেন।
এই আদেশটিকে সাধারণত ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ বা ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ নামে ডাকা হতো, যা পরে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে পুনর্গঠিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
২০৭ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসার সাক্ষাৎকারের নতুন সময়সূচি স্থগিত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি বাড়াতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের নতুন ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইতোমধ্যে যাদের সাক্ষাৎকারের সময়সূচি দেওয়া হয়েছে তারা এই সিদ্ধান্তের আওতায় থাকবেন না।
মঙ্গলবার (২৭ মে) নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
তিনি জানান, এই স্থগিতাদেশ অস্থায়ী এবং যাদের সাক্ষাৎকারের সময়সূচি এরইমধ্যে নির্ধারিত রয়েছে, তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওয়ের সই করা এক তারবার্তার বরাত দিয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাবেন, তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রম যাচাই ও তদারকি করার জন্য নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হবে। নতুন নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত দূতাবাসগুলোকে নতুন শিক্ষার্থী বা পর্যটক বিনিময় কর্মসূচির ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি নির্ধারণ না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘শিক্ষার্থী হোক বা অন্য কেউ, আমরা ভিসা আবেদনকারীদের যাচাই করার জন্য সব ধরনের কৌশল ব্যবহার করি। আমরা প্রতিটি কৌশল অবলম্বন করে দেখার চেষ্টা করব যে এখানে কে আসছেন।’
আরও পড়ুন: হার্ভাডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদেও সব ভিসা আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়েও এই নীতি বহাল ছিল।
এ পদক্ষেপকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নজরদারির সাম্প্রতিক উদাহরণ বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।
এর আগে, গত ২২ মে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার সুযোগ বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করলে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে দেশটির আদালত ।
এ ছাড়াও, দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর আইনগত অবস্থাও বাতিল করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে সময় ভয়ের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যান।
পরবর্তীতে এই প্রচেষ্টা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং এতে অনেক শিক্ষার্থীর বৈধতা পুনর্স্থাপিত হয়। এ ছাড়া, প্রশাসন যেন আর এভাবে বৈধতা বাতিল করতে না পারে সেজন্য সারা দেশের জন্য একটি নিষেধাজ্ঞাও জারি করে আদালত।
আরও পড়ুন: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই সাক্ষাৎকার সময়সূচির স্থগিতাদেশ দীর্ঘমেয়াদি হলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্ম ও শরৎকালীন কোর্সে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তাছাড়া, বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে তহবিল কাঁটছাট করেছেন। এ কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করে টিউশন ফি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল।
২১৫ দিন আগে
হার্ভাডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালত এই স্থগিতাদেশ দেন।
সম্প্রতি বোস্টনের ফেডারেল আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মার্কিন বিচারক অ্যালিসন ব্যুরোজ রায়ে মামলার শুনানি মুলতবি রেখে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাটি স্থগিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তটি প্রতিশোধমূলক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে।নিষেধাজ্ঞার ফলে হার্ভার্ড ও এতে অধ্যয়নরত সাত হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা, গবেষণা ও বসবাস অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়।
মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন, হার্ভার্ডের মোট শিক্ষার্থীর এক-চতুর্থাংশই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। অথচ সরকার কলমের খোঁচায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও তাদের অবদানগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। অথচ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ছাড়া, হার্ভার্ড আর হার্ভার্ড থাকে না।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বেআইনি হিসেবে অভিহিত করে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। তারা প্রশাসনের সিদ্ধান্তটিকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্পষ্ট বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল
চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যায়ের বিরোধ শুরু হয়। গত বসন্তে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরেুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য চান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম।
তিনি শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্য দেয়ে হার্ভার্ডকে চিঠি দেন। কিন্তু তার অনুরোধ রাখতে ব্যর্থ হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এখান থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে হার্ভার্ডের দ্বন্দ্বের শুরু হয়।
২১৭ দিন আগে