������������-���-������������������
ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
গত সপ্তাহে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো হাউস অব কমন্সের মঞ্চে উঠে কানাডার মাটিতে এক কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার জন্য ভারত সরকারের এজেন্টদের অভিযুক্ত করেন। কানাডার ওই নাগরিক একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী যাকে ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। এতে ভারত-কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ককের মধ্যে চিড় ধরেছে।
ট্রুডোর প্রকাশ্যে অভিযোগের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংঘাত সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) কানাডিয়ান স্টেশন প্রধানকে অটোয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে বহিষ্কার করেছে উত্তর আমেরিকার দেশটি।
এদিকে এর বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। কানাডার এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে ভারত সরকার। পরে কানাডার নাগরিকদের জন্য সমস্ত ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে।
কূটনৈতিক এই অবস্থার মধ্যে- একটি বিষয় খুব তাৎপর্যপূর্ণ যে ভারত ও কানাডা উভয়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমের মিত্র।
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সংঘাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত।
এমন শীতল ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে কেউ ভাবতে পারে যে জাস্টিন ট্রুডো বিশ্ব মঞ্চে কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ট্রুডো একা গত এক সপ্তাহ ধরে ভূ-রাজনীতির শীতল বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
বিবিসির খবরে বলা হয়, কানাডার চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি জনসংখ্যার এবং বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ ভারত। তাদের মুখোমুখি হতে গিয়ে জনগণের চোখে ট্রুডো একা হয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত ফাইভ আইস ইন্টেলিজেন্স অ্যালায়েন্সের কাছ থেকে নয়াদিল্লির ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে কানাডা।
তবে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা নেটওয়ার্কে ট্রুডোর মিত্ররা তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, কানাডা যেসব কথা বলছে, তার দেশ তা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছে।
প্রায় একই ভাষা ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া বলেছে, তারা এই অভিযোগ নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এদিকে অটোয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা আশা করছে- দিল্লি এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অটোয়াকে সহযোগিতা করবে।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি উল্লেখ করেছে যে- ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ বর্তমানে ফিকে।
উইলসন সেন্টারের কানাডা ইনস্টিটিউটের গবেষক জেভিয়ার ডেলগাডো বিবিসিকে জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ সব পশ্চিমা ও ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্ররা ভারতকে কেন্দ্র করে একটি কৌশল তৈরি করেছে। এটি চীনের বিরুদ্ধে একটি রক্ষাকবচ ও পাল্টা শক্তি হতে পারে। এটি এমন বিষয় যে ছুঁড়ে ফেলার সামর্থ্যও তাদের নেই।
আরও পড়ুন: কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে কানাডার নাগরিকদের ভিসা স্থগিত করল ভারত
ইন্দো-প্যাসিফিকের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হতে চায় কানাডা
যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর ৪৭০টি নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে
২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৪৭০টি গণ গুলির ঘটনা ঘটেছে এবং ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ বন্দুক সহিংসতায় মারা গেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি সংবাদপত্র গালফ নিউজ একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১৭ বছর বা তার কম বয়সী ২২ শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। এদের অধিকাংশই মারা যায়। তবে আত্মহত্যার কারণেও অনেকের মৃত্যু হয়।
গালফ নিউজ বলেছেন, ‘আমেরিকাতে আপনারা একটি শিশুকেও জীবিত ফিরে আসার গ্যারান্টি ছাড়াই স্কুলে পাঠান। এটি এমন একটি দেশ যারা ভালোর সঙ্গে যুদ্ধে খারাপকে জয়ী হওয়ার ক্ষমতা দেয়। খুনের লাইসেন্সে কোনোদিন স্বপ্ন দেখা যায়না।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহে বন্দুক হামলায় ৮ জন নিহত
এতে বলা হয়েছে, আমেরিকানরা যে বন্দুক সংস্কৃতি গ্রহণ করেছে, তা তাদের সাংবিধানিক অধিকারের অংশ। যা স্থানীয়দের মানসিকতায় এতটাই জড়িয়ে আছে যে প্রতিদিন শিশুদের গুলি করা হলেও এ পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হবে না।
এই দুঃখজনক পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস মারফি সিএনএনকে বলেছেন, ‘এটি বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে বাস্তবতায় পিষ্ট পুরুষরা গণহত্যার মাধ্যমে তাদের ভেতরের দানবকে অবদমিত করে।’
বন্দুক সহিংসতা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন সমাজে একটি বিভাজনকারী ও মারাত্মক সমস্যা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র অনুসারে, ২০০৪ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক-সম্পর্কিত সহিংসতার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০২১ সালে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৮ হাজার ৮৩০ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে ৪০০টিরও বেশি
যুক্তরাষ্ট্রে হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৫
হারিকেন ইডালিয়ার আঘাতে তলিয়ে গেছে ফ্লোরিডার রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
হারিকেন ইডালিয়া ঘন্টায় ১২৫ মাইল বেগে আঘাত হেনেছে ফ্লোরিডায়। বুধবার হারিকেনের আঘাতে গাছগুলো ভেঙে পড়েছে, হোটেলের ছাদ ধসে পড়েছে এবং ছোট গাড়িগুলোকে নৌকার মতো ভাসিয়ে নিয়েছে। এর আগে জর্জিয়া এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনায় শক্তিশালী ঝড় হিসাবে এটি আঘাত হানে, যাতে রাস্তাঘাট প্লাবিত করে এবং বাসিন্দাদের উঁচু ভূমিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে।
পেরির বেলন্ড থমাস বলেছেন,‘নরকে পরিণত হয়েছে’,বিগ বেন্ড অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ একটি মিল শহরের তীরে আঘাত হেনেছিল ইডালিয়া।
টমাস তার পরিবার এবং কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে একটি মোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন এই ভেবে যে ঝড়ের সময় বাড়ির বাইরে এটি নিরাপদ হবে। কিন্তু যখন সকাল সাড়ে ৮টা বাজল তখন ইডালিয়ার একটি উচ্চ শব্দের প্রবল বাতাস ভবনের ছাদটি ভেঙে ফেলে। এতে বিছানায় শুয়ে থাকা তার গর্ভবতী কন্যার উপর ভবনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে। সৌভাগ্যক্রমে তিনি আহত হননি।
টমাস বলেছিলেন।‘এটি ছিল ভয়ঙ্কর,’ ‘জিনিসগুলো খুব দ্রুত উড়ে যাচ্ছিল। ... সবকিছু ঘুরছিল।’
উপকূলে আসার পর, ইডালিয়া সকাল পৌনে আটটায় কিটন বিচের কাছে তীরে উচ্চ গতির ঘন্টায় ১২৫ মাইল (২০৫ কিলোমিটার) বেগের কাছাকাছি একটি বাতাস আঘাত করেছে। সিস্টেমটি একটি হারিকেন হিসেবে পরিগণিত হয়। কারণ এটি ৯০ মাইল (১৫০ মাইল প্রতি ঘন্টা) বেগে বাতাসের সঙ্গে জর্জিয়া অতিক্রম করেছে। এটি বুধবার বিকালে একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে এর বাতাসের গতিবেগ ৬৫ মাইল (১০০ কিলোমিটার) এ নেমে যায়।
চোখের পলকে প্রবল বাতাস জিনিসগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়, ছাদ উড়িয়ে দেয়, শীট মেটাল উড়ে যায় এবং লম্বা গাছগুলো ভেঙে ফেলে। এতে জর্জিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। তবে ফ্লোরিডায় হারিকেন-সম্পর্কিত কোনো মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। ফ্লোরিডা হাইওয়ে প্যাট্রোল জানিয়েছে, ইডালিয়া আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা আগে পৃথক আবহাওয়া-সম্পর্কিত দুর্ঘটনায় দুজন লোক মারা গেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় ক্যারোলিনাসের দিকে যাওয়ার সময় ঝড়টি সাভানা, জর্জিয়ার প্রবল বাতাস বয়ে আনছিল৷ পূর্বদিকে বাঁক নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার ভোরে দক্ষিণ ক্যারোলিনার চার্লসটনের উপর দিয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
জাতীয় আবহাওয়া সেবা বিভাগ জানিয়েছে, ইডালিয়া একটি টর্নেডোর রূপ নিয়েছে যা সংক্ষিপ্তভাবে গুজ ক্রিকের চার্লসটন শহরতলিতে আঘাত হেনেছে। কর্তৃপক্ষ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিডিও অনুসারে, বাতাস একটি গাড়িকে উড়িয়ে নিয়েছিল এবং এটি উল্টে যায়। এতে দুইজন সামান্য আহত হয়েছেন।
দক্ষিণ ক্যারোলিনার উপকূল বরাবর, নর্থ মার্টল বিচ, গার্ডেন সিটি এবং এডিস্টো দ্বীপের সবগুলোই রিপোর্ট করেছে যে সমুদ্রের পানি বালির টিলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং বুধবার সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকতের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে। চার্লসটনে, ইডালিয়া থেকে ঝড়ের ঢেউ সমুদ্রের তীরে শহরের কেন্দ্রকে রক্ষাকারী বাধের উপর উঠেছিল। রাস্তা এবং আশেপাশে ঘোড়া-টানা গাড়িগুলো ও মিলিয়ন ডলারের বাড়ি এবং বিখ্যাত উন্মুক্ত বাজারে সমুদ্রের পানিতে পায়ের গোড়ালি সমান হয়।
প্রাথমিক তথ্য দেখায় যে বুধবার সন্ধ্যায় উচ্চ জোয়ার মাত্র ৯ দশমিক ২ ফুট ( ২ দশমিক ৮ মিটার)। এটি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট (শূন্য দশমিক ৯ মিটার) বেশি। চার্লসটন হারবারে ১৮৯৯ সালে পঞ্চম-সর্বোচ্চ রিডিং রেকর্ড করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মাউই দাবানল: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯
গত বছরের হারিকেন ইয়ান থেকে পুনরুদ্ধার করার সময় ফ্লোরিডা সবচেয়ে খারাপের আশঙ্কা করেছিল। যেটি ব্যাপক জনবহুল ফোর্ট মায়ার্স এলাকায় আঘাত হেনিছিল। সেসময় রাজ্যটিতে মারা গিয়েছিল ১৪৯ জন। সেই ঝড়ের বিপরীতে, ইডালিয়া ফ্লোরিডার ‘প্রকৃতি উপকূল’ নামে পরিচিত একটি খুব হালকা জনবসতিপূর্ণ এলাকাকে উড়িয়ে দিয়েছে। এটি রাজ্যের অন্যতম গ্রামীণ অঞ্চল যা জনাকীর্ণ মহানগর বা ব্যস্ত পর্যটন এলাকা থেকে দূরে অবস্থিত এবং লাখ লাখ একর অনুন্নত জমি রয়েছে।
এর মানে এই নয় যে এটি বড় ক্ষতি করেনি। ফ্লোরিডা এবং জর্জিয়ার প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক উপকূলের কাছাকাছি পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তা, নিরবচ্ছিন্ন ছোট নৌকা এবং পাঁচ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। পেরিতে দোকানের জানালা উড়িয়ে নিয়েছে বাতাস, ভবনের সাইডিং ভেঙ্গে ফেলে এবং একটি গ্যাস স্টেশনের ছাউনি উল্টে দেয়। ভারি বর্ষণ আংশিকভাবে টাম্পায় আন্তঃরাজ্য ২৭৫ প্লাবিত করেছে এবং জর্জিয়ার ভালদোস্তার ঠিক দক্ষিণে আন্তঃরাজ্য ৭৫-এর উত্তর দিকের বিদ্যুতের লাইনগুলোকে বাতাসে ভেঙ্গে পড়েছে।
২০ মাইল (৩২কিলোমিটার) এরও কম দক্ষিণে যেখানে ইডালিয়া ভূমিতে আচড়ে পড়েছে। ফ্লোরিডার স্টেইনহাটচিতে ব্যবসা, নৌকা ডক এবং বাড়িগুলো ডেডম্যান উপসাগর থেকে আসা পানির ঢেউ গ্রাস করেছে। পুলিশ অফিসাররা মাছ ধরা এবং বন শিল্পের জন্য পরিচিত ৫০০জনের অধিক বাসিন্দার উপকূলীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
রাজ্যের কর্মকর্তারা সাড়ে ৫ হাজার জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং উদ্ধারকর্মীদের সাহায্যে অনুসন্ধান এবং পুনরুদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে। সেতুগুলো পরিদর্শন করছে, উপড়ে পড়া গাছগুলো পরিষ্কার করছে এবং দুর্দশাগ্রস্ত কেউ থাকলে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: মাউই দাবানল: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০১
ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অফ ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, বিগ বেন্ড এলাকার দূরবর্তী হওয়ার কারণে অনুসন্ধান দলগুলোকে কাজ শেশ করতে অতীতে শহুরে এলাকায় হারিকেনের আগাতের তুলনায় আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
কেভিন গুথরি আরও বলেন, ‘৫ মাইল (৮-কিলোমিটার) রাস্তায় আপনার দুটি বাড়ি থাকতে পারে তাই এটি কিছুটা সময় লাগতে পারে।’
তালাহাসির ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস ইডালিয়াকে ‘একটি নজিরবিহীন ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছে, কারণ এর আগে কখনো কোনো বড় হারিকেন বিগ বেন্ডের উপর দিয়ে উপসাগরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার রেকর্ড নেই।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোয় আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিলারি
যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহে বন্দুক হামলায় ৮ জন নিহত
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি, ফ্লোরিডা ও ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে বেশ কয়েকটি বন্দুক হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ গত রবিবার (২৭ আগস্ট) ভোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি রাজ্যের ডাউনটাউন লুইসভিলের একটি রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
শনিবার বিকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসনভিলে বর্ণবাদী কারণে একটি জেনারেল স্টোরে এক ব্যক্তি বন্দুক হামলা চালায়। এসময় বন্দুকধারীসহ কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।
এডওয়ার্ড ওয়াটার্স ইউনিভার্সিটির ঐতিহাসিক ব্ল্যাক কলেজ থেকে কয়েক ব্লক দূরে এই গুলির ঘটনা ঘটেছে।
জ্যাকসনভিল শেরিফ টি.কে. ওয়াটার্স এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহতদের দুজন পুরুষ এবং একজন নারী। তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ।
আরও পড়ুন: আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাম্বিয়ার সঙ্গে তথ্য বিনিময় করেছে
২১ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী রায়ান পালমিটার তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ফ্লোরিডার ক্লে কাউন্টিতে থাকতেন।
পুলিশের মতে, তিনি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাইফেল এবং একটি হ্যান্ডগান দিয়ে গুলি চালিয়েছিলেন।
শেরিফ জানান, হামলাকারী তার ‘ঘৃণাত্মক মতাদর্শ’ এবং আক্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বর্ণনা লিখে গেছেন।
হামলার পর পালমিটার গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশের মতে, তিনি একাই এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই স্পষ্টভাবে এবং জোর করে বলতে হবে যে আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের কোনো স্থান নেই।’
রবিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসনভিলে হামলার শিকারদের শান্তি কামনায় গির্জায় প্রার্থনায় শত শত লোক জড়ো হয়েছিল।
বন্দুক সহিংসতা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন সমাজে একটি মারাত্মক সমস্যা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র অনুসারে, ২০০৪ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২১ সালে তা রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৮ হাজার ৮৩০-এ পৌঁছেছে।
বন্দুক সহিংসতা আর্কাইভ অনুসারে, ১ আগস্ট পর্যন্ত এই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ২৫ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে।
অর্থাৎ, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১৮ জন মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৮৭৯ জন কিশোর এবং ১৭০ জন শিশু।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ও মিয়ানমারের সব মানুষের ন্যায়বিচার চায় যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন
ক্যালিফোর্নিয়ার বাইকার বারে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বাইকার বারে গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বন্দুকধারীও মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন অরেঞ্জ কাউন্টি শেরিফের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে অরেঞ্জ কাউন্টির গ্রামীণ ট্রাবুকো ক্যানিয়নের কুকস কর্নারে গুলি চালানো হয়।
টুইটারে এক পোস্টে শেরিফ বিভাগ জানিয়েছে, আহত আরও ছয়জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন বন্দুকের গুলিতে আহত হয়েছেন।
শেরিফ বিভাগ রাত ৯টার পর ‘কুকস কর্নারে ঘটনার দৃশ্যটির বর্ণনা’ দিয়ে টুইটার পোস্ট করেছে।
আরও পড়ুন: কলাম্বাইন থেকে ন্যাশভিল: যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে গণবন্দুক হামলায় নিহত ১৭৫
কুকস কর্নার পানীয় -এর জন্য দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বাইকার সম্প্রদায়ের কাছে জনপ্রিয়। অনেক মোটরসাইকেল আরোহী এবং উৎসাহী সেখানে সাপ্তাহিক রাতে এবং সপ্তাহান্তে লাইভ মিউজিক, ওপেন-মাইক নাইট কিংবা দীর্ঘ যাত্রার পরে শুধুমাত্র একটু ঠান্ডা বিয়ারের জন্য জড়ো হন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৫
গুলির কয়েক ঘন্টা আগে বিকালে বেশ কয়েকজন পৃষ্ঠপোষক পানীয় এবং খাবারের জন্য থেমেছিলেন। মোটরসাইকেল এবং বাইকের সারি নুড়ি প্রবেশদ্বার সাজানো যেখানে ফলকগুলো ১৮৮৪ সালে নির্মিত বারটির বহুতল ইতিহাস বর্ণনা করে।
বুধবার সন্ধ্যায় কয়েক ডজন টহল গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজমের কার্যালয় এক টুইটে জানিয়েছে, ‘তিনি গুলির ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং আরও বিস্তারিত জানার জন্য স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।’
আরও পড়ুন: চীন-রাশিয়াকে ছাড়াই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারে বেসামরিক হত্যার নিন্দা জানাল
যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোয় আঘাত হানতে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিলারি
প্রশান্ত মহাসাগরের মেক্সিকো উপকূল বরাবর আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিলারি। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ আগস্ট) শক্তিশালী ক্যাটাগরি-৪ এ রূপান্তরিত হয়ে হিলারি এ আঘাত হানে।
এটি ৮৪ বছরের মধ্যে প্রথম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় হিসেবে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানছে। এর প্রভাবে সীমান্ত শহর টিজুয়ানাতে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ঝড়টির প্রভাবে ওই অঞ্চলজুড়ে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধস ও এমনকি টর্নেডোও হতে পারে।
হিলারি শুক্রবার পর্যন্ত দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করেছে। তবে এরপর কিছুটা শক্তি হারিয়েছে। ঝড়টির কেন্দ্রে সর্বোচ্চ বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১৪৫ মাইল (২৩০ কিলোমিটার)। তবে সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩০ মাইল (২১৫ কিলোমিটার)।
তা সত্ত্বেও, শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে মেক্সিকোর বাজা ক্যালিফোর্নিয়া উপদ্বীপে এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে এবং রবিবার (২০ আগস্ট) দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় হিসেবে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
হিলারি ইতোমধ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত করেছে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় আয়োজিত মেজর লিগ বেসবল এর রবিবারের তিনটি খেলার সময় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস জোশুয়া ট্রি ন্যাশনাল পার্ক এবং মোজাভে ন্যাশনাল প্রিজার্ভ বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে মানুষ বন্যার মধ্যে আটকে না পড়ে।
অ্যারিজোনাসহ সারা রাজ্যের শহরগুলো বন্যার পানি ঠেকাতে বালির ব্যাগ মজুত রেখেছে।
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তথ্যমতে, ১৯৩৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরের পর কোনো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র জীবন ও সম্পদের সম্ভাব্য হুমকির বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করেছে।
সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, হিলারি প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দর শহর এনসেনাডা থেকে প্রায় ২০০ মাইল (৩৩০ কিলোমিটার) দক্ষিণে বাজা উপদ্বীপের একটি কম জনবহুল এলাকা বরাবর এগিয়ে যাচ্ছে।
এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিজুয়ানাতে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
মেয়র মন্টসেরাট ক্যাবলেরো রামিরেজ বলেছেন, তারা নিবিড়ভাবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করছেন।
১ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষের বসবাসকারী এই সীমান্ত শহরটি বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার কারণে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ ছাড়াও, কয়েক ডজন মানুষ এখানকার সড়ক ও খালের তীরে বাস করে। যার মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন আসা অভিবাসীরাও রয়েছে।
ক্যাবলেরো রামিরেজ বলেছেন, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে চারটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসা সীমান্তের মধ্যে একটি এবং আমাদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একটি ঝুঁকিপূর্ণ শহর।’
অন্যদিকে, মূল ভূখণ্ডের কিছু অংশে আঘাত হানা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের ব্যাপারে নজরদারি জারি করেছে মেক্সিকো এবং ১৮ হাজার সেনাসদস্য প্রস্তুত রেখেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় হিলারি বাজা উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তের কাছে কাবো সান লুকাসের দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ৩১০ মাইল (৪৯৫ কিলোমিটার) জুড়ে কেন্দ্রীভূত ছিল।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে ৪০০টিরও বেশি
এটি উত্তর-পশ্চিমে ঘণ্টায় ১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) বেগে অগ্রসর হচ্ছিল এবং এটি আরও উত্তরের দিকে এগোবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শহরটির কর্মকর্তা ফ্লোরা আগুইলার বলেন, কাবো সান লুকাসের কয়েকটি স্কুল অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কর্টেজ সাগরের তীরের বাজা ক্যালিফোর্নিয়া সুর রাজ্যের মনোরম রাজধানী লা পাজে সাঁতারুদের সমুদ্র থেকে দূরে রাখতে পুলিশ সৈকতে টহল দিচ্ছে। পাঁচটি এলাকায় স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবার সান দিয়েগো অফিস জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের শক্তি নিয়ে সোমবার সকালে হিলারি ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানবে। তবে শনিবার সকাল থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কর্মকর্তারা বলেছেন, ঝড়টির প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ৩ থেকে ৬ ইঞ্চি (৮-১৫ সেন্টিমিটার) বৃষ্টি হতে পারে এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া ও দক্ষিণ নেভাদার অংশে কোনো কোনো জায়গায় ১০ ইঞ্চি (২৫ সেন্টিমিটার) পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানী ও প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টেন কোরবোসিয়েরো বলেন, বছরের এই সময়ে ‘দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাতের কথা শোনা যায় না।’
ইয়েল ক্লাইমেট সংযোগের আবহাওয়াবিদ ও সাবেক সরকারি ইন-ফ্লাইট হারিকেন আবহাওয়াবিদ জেফ মাস্টারস বলেছেন, এই অঞ্চলে এবার ১০০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টি হতে পারে এবং নেভাদায় সর্বকালের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই অঞ্চলে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির উদ্ধারকারীরা অবস্থান করেছে।
শুক্রবার ক্যাম্প ডেভিডে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এই ঝড়ের ব্যাপারে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং রাষ্ট্র ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশনা শুনতে অনুরোধ করছি।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে উপকূলে ভেসে এসেছে কয়েক হাজার মরা মাছ
মাউই দাবানল: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০১
মাউইতে দাবানলে নিহতদের দেহাবশেষ শনাক্ত করতে হাওয়াইয়ের কর্মকর্তাদের সহায়তা করার জন্য মঙ্গলবার একটি ভ্রাম্যমাণ মর্গ ইউনিট পৌঁছেছে। কারণ, মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে এবং সেখানে কাজ করা দলগুলো ছাই হয়ে যাওয়া আশেপাশের এলাকায় আরও লাশের সন্ধান জোরদার করেছে।
গভর্নর জোশ গ্রিন এক ভিডিও বার্তায় মৃতের সংখ্যা ৯৯ থেকে বেড়ে ১০১ জনে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা মর্মাহত যে আমাদের এমন ক্ষতি হয়েছে।’
এজেন্সির প্রতিক্রিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী সচিব জোনাথন গ্রিন বলেন, মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগ আক্রান্তদের শনাক্ত করতে এবং অবশিষ্টাংশ প্রক্রিয়া করার জন্য পরীক্ষার টেবিল, এক্স-রে ইউনিট এবং অন্যান্য সরঞ্জামসহ প্যাথলজিস্ট এবং টেকনিশিয়ানদের একটি দল মোতায়েন করেছে।
আরও পড়ুন: মাউই দাবানল: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯
তিনি বলেন, ‘এটি একটি খুব, খুবই কঠিন মিশন হতে চলেছে। এবং আক্রান্তের সংখ্যার আধিক্যের কারণে অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে ধৈর্য ধারণ।’
ঐতিহাসিক লাহাইনায় আগুন লাগার এক সপ্তাহ পরে বেঁচে যাওয়া অনেকে বাস্তুচ্যুত স্থানীয়দের জন্য আলাদা করা শত শত হোটেল কক্ষে যেতে শুরু করেন। তাদের জন্য খাদ্য, বরফ, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হয়।
মাউই কাউন্টি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দল ক্যাডাভার কুকুর ব্যবহার করে প্রায় ৩২ শতাংশ এলাকা তল্লাশি করেছে। গভর্নর সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: তাপ, দাবানল ও বন্যা গ্রীষ্মকে ‘তীব্র গরম’ করে তুলেছে
হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
মাউই দাবানল: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯
ঐতিহাসিক মাউই শহর বিধ্বংসী দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯ জনে পৌঁছেছে। তবে নিহতদের লাশ অনুসন্ধান এবং শনাক্ত করার প্রচেষ্টা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি সবচেয়ে মারাত্মক দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
মাউই পুলিশ প্রধান জন পেলেটিয়ার বলেছেন, কুকুরের অনুসন্ধানী দল ওই অঞ্চলের মাত্র তিন শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ৫ বর্গমাইল এলাকায় অনুসন্ধান চালাতে হবে, যেখানে আমাদের প্রিয়জনের কেউ থাকতে পারে। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে আমাদের কেউই এটির সত্যিকার আকার বা পরিধি জানি না।’
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী শহরে দাবানল, পালিয়েছে শত শত মানুষ
তিনি বলেন, ফেডারেল জরুরি সেবা কর্মীদের তোলা ছবিতে লাহাইনার ধ্বংসস্তুপের দৃশ্যে ধরা পড়ে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দলগুলো উজ্জ্বল কমলা ক্রস চিহ্ন দিয়ে বাড়ির ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেছে । যখন তারা মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছে তখন ‘এইচআর’ চিহ্ন দিয়েছেন।
পেলেটিয়ার বলেন, মৃতদের শনাক্ত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কারণ যখন কোনো দেহাবশেষ খুঁজে তাদের তুলে নিই, তখন সেগুলোর শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অধিকাংশ দেহাবশেষ গলিত ধাতুর মতো অবস্থায় পাওয়া যাচ্চে। এখন পর্যন্ত দুইজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কুকুরগুলো ধ্বংসস্তূপে কাজ করেছিল এবং তারা মাঝে মাঝে একটি সম্ভাব্য মৃতদেহ সম্পর্কে তাদের হ্যান্ডলারদের সতর্ক করছিল।
শনিবার গভর্নমেন্ট জশ গ্রিন ঐতিহাসিক ফ্রন্ট স্ট্রিটের বিধ্বংসী এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেন , ‘এটি অবশ্যই সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর আগে হাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি। আমরা কেবল অপেক্ষা করতে পারি এবং যারা বেঁচে আছে তাদের সমর্থন করতে পারি। আমারা এখন উদ্ধার করা লোকদের তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে এবং তাদের আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবার দিকে গুরুত্ব দেব।’
গ্রিন বলেন, পশ্চিম মাউইতে কমপক্ষে ২ হাজার ২০০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। যার মধ্যে ৮৬ শতাংশই আবাসিক।
তিনি আরও বলেন, দ্বীপটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ বিলিয়ন। এটি পুনরুদ্ধার করতে ‘অবিশ্বাস্য পরিমাণে সময়’ লাগবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগেও মাউই কমপক্ষে দুবার আগুনে পুড়েছে। তবে সেগুলোতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় চতুর্থটি লাহাইনার উত্তরে একটি উপকূলীয় সম্প্রদায় কানাপালিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তবে ক্রুরা এটি নিভিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
গ্রিন বলেন, আপকান্ট্রিতে অগ্নিকাণ্ডে ৫৪৪টি কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ শতাংশই আবাসিক।
মাউইতে জরুরি ব্যবস্থাপকরা তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের থাকার জায়গাগুলো সন্ধান করছিলেন। ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি এবং প্যাসিফিক ডিজাস্টার সেন্টারের পরিসংখ্যানকে উদ্ধৃত করে কাউন্টি কর্মকর্তারা শনিবারের প্রথম দিকে ফেসবুকে বলেছেন, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের আশ্রয়ের প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের পরিবার সহায়তা কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করেন।
পেলেটিয়ার বলেছেন, ‘আপনাদের স্বজনদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।’
অবসরপ্রাপ্ত দমকল কর্মী ক্যাপ্টেন জিওফ বোগার এবং তার ৩৫ বছরের বন্ধু ফ্র্যাঙ্কলিন ট্রেজোস লাহাইনায় অন্যদের সাহায্য করতে এবং বোগারের বাড়ি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালের দিকে আগুনের শিখা যতই কাছে চলে আসরে তারা বুঝতে পারেন, তাদের বের হতে হবে। এজন্য প্রত্যেকে নিজ নিজ গাড়িতে পালিয়ে যান। কিন্তু বোগারের গাড়ি চালু হচ্ছিল না। তখন তিনি একটি জানালা ভেঙে বেরিয়ে পড়েন। তারপর মাটিতে হামাগুড়ি বেরোনোর চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পুলিশ টহল তাকে খুঁজে পায় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ট্রেজোস ভাগ্যবান ছিল না। পরের দিন যখন বগার ফিরে আসেন, তখন তিনি তার গাড়ির পেছনের সিটে তার ৬৮ বছর বয়সী বন্ধুর হাড় দেখতে পান। উদ্ধারকারীরা দেখতে পায় বোগারের প্রিয় ৩ বছর বয়সী কুকুর স্যামের দেহাবশেষের উপরে পড়ে আছেন তিনি। তিনি রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন।
সদ্য প্রকাশিত মৃতের সংখ্যা উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এবারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫ জনে এবং ধ্বংস করেছে প্যারাডাইস শহরকে। এক শতাব্দী আগে ১৯১৮ সালের ক্লোকেট অগ্নিকাণ্ডে উত্তর মিনেসোটাতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে এবং শত শত মানুষ নিহত হয়।
দাবানলগুলো কয়েক দশকের মধ্যে রাজ্যের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যা ১৯৬০ সালের সুনামিতে ৬১ জনের মৃত্যুকেও ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৪৬ সালে আরও একটি মারাত্মক সুনামিতে বিগ আইল্যান্ডে ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। একটি অঞ্চল জুড়ে মাসব্যাপী সাইরেন বাজানোসহ জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছিল।
হাওয়াই ফায়ারফাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ববি লি বলেন, ৬৫টি কাউন্টির ফায়ারফাইটার কাজ করছে, যারা মাউই, মোলোকাই ও লানাই দ্বীপে কর্মরত।
গ্রিন বলেন, কর্মকর্তারা নিরাপত্তা উন্নত করতে নীতি ও পদ্ধতি পর্যালোচনা করবেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণ জিজ্ঞাসা করেছে কেন এমন হলো, কী ঘটছে তা পর্যালোচনা করছি। এর কারণ হলো বিশ্ব পরিবর্তিত হয়েছে। একটি ঝড় এখন হারিকেন-আগুন বা অগ্নি-হারিকেন হতে পারে।’ ‘এটিই আমরা অনুভব করেছি, তাই আমরা কীভাবে আমাদের জনগণকে সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করতে পারি তা খুঁজে বের করার জন্য আমরা এই নীতিগুলো অনুসন্ধান করছি।’
আরও পড়ুন: তাপ, দাবানল ও বন্যা গ্রীষ্মকে ‘তীব্র গরম’ করে তুলেছে
হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই শহরে দাবানলে পুড়ে কমপক্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এ তথ্য নিশ্চিত করে হাওয়াইয়ের গভর্নর জোশ গ্রিন বলেন, ‘কয়েকটি জায়গা ছাড়া পুরো লাহাইনা পুড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, আগুনে এক হাজারেরও বেশি স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো এখনও জ্বলছে।
গ্রিন আরও বলেন, আমরা মর্মাহত। ১৯৬০ সালের সুনামিতে বিগ আইল্যান্ডে ৬১ জন নিহত হওয়ার পর এটিই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৩। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) উত্তপ্ত গ্রীষ্মকাল এবং একটি ক্ষণস্থায়ী হারিকেনের প্রবল বাতাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মাউইবাসীকে অবাক করে দিয়ে মুহূর্তে দ্বীপের বাড়িঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের পর থেকে এটি দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল। ২০১৮ সালে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয় এবং প্যারাডাইস শহর ধ্বংস হয়ে যায়।
হাওয়াই ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র অ্যাডাম ওয়েইনট্রাব বলেছেন, ‘আমরা এখনও জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় আছি। অনুসন্ধান ও উদ্ধার আমাদের অগ্রাধিকার।’
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
ওয়েইনট্রাব আরও বলেন, ফায়ার লাইনগুলো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভেতরে ঢুকতে পারবে না।
বস্কো বে নামে লাহাইনার এক বাসিন্দা মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তার প্রায় প্রতিটি ভবনে আগুন জ্বলছে, বাতাসের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ ছুটে আসছে।
বে বলেন, তিনি দ্বীপের বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে একজন। তিনি দ্বীপের প্রধান বিমানবন্দরে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন তিনি বাড়ি ফেরার অনুমতির অপেক্ষায় আছেন।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা গুয়াতেমালার ৩১ বছর বয়সী বাবুর্চি মার্লন ভাসকেজ জানান, তিনি যখন ফায়ার অ্যালার্ম শুনতে পান, তখন আর গাড়ি নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমি দরজা খুলে দেখি আগুন প্রায় আমার উপরে ছিল।’
বর্তমানে তিনি একটি জিমনেসিয়ামের পরিত্যক্ত একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দৌড়ে পালিয়েছিলাম। প্রায় সারারাত এবং পরের দিন পর্যন্ত আমরা দৌড়েছি। কারণ আগুন তখনও থামেনি।’
লাহাইনার বাসিন্দা কামুয়েলা কাওয়াকোয়া ও আইউলিয়া ইয়াসো দম্পতি ধোঁয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের পালানোর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
তারা জানান, তাদের ৬ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে তারা সুপারমার্কেটে গিয়েছিলেন। সেখানে আগুন দেখে দ্রুত তাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফেরেন তারা। এসময় তাদের চারপাশের ঝোপগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তারা দ্রুত পোশাক পরিবর্তন করে দৌড়ানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
বৃহস্পতিবার চেলসি ভিয়েরার নামক এক বাসিন্দা জানান, সে ও তার দাদি লুইস আবিহাই হেল মাওলুতে বাস করতেন। সে আগুন থেকে পালাতে পারলেও তার দাদির কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। দাদির বয়স ৯৭ বছর।
তিনি বলেন, মানুষ ওই দ্বীপে বসবাসরত স্বজনদের খুঁজছে এবং হাসপাতালে ফোন করছেন। আমার কাছে ফোন নেই, তাই পরিবারকেও জানাতে পারছি যে আমি নিরাপদে আছি।
তিনি বলেন, ‘তিনি (দাদি) কোথায় গেছেন, কোথায় খোঁজ করব বা কাকে জিজ্ঞাসা করব আমি জানি না।’
৯১১, ল্যান্ডলাইন ও সেলুলার পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় দ্বীপে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মাউয়ের কিছু অংশেও বিদ্যুৎ চলে গেছে।
রাজ্য পরিবহন পরিচালক অ্যাড স্নিফেন জানান, দ্বীপে পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার মাউইয়ের প্রায় ১১ হাজার অধিবাসীকে এবং বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ১৫০০ জনকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা রাজধানী হনলুলুর হাওয়াই কনভেনশন সেন্টারে কয়েক হাজার মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তূত করেছে।
লাহাইনার দক্ষিণ-পূর্বের কিহেইতে বুধবার রাতেও গাছ ও বাড়িতে আগুন জ্বলতে থাকায় দ্বীপটির মাটি পর্যন্ত পুড়ে লাল হয়ে গেছে।
এই গ্রীষ্মে বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে এটি সর্বশেষতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ছে।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের এনভা্য়রনমেন্টাল জিওগ্রাফি’র একজন সহযোগী অধ্যাপক টমাস স্মিথ বলেছেন, হাওয়াইতে দাবানল অস্বাভাবিক নয়। গত কয়েক সপ্তাহের আবহাওয়া একটি বিধ্বংসী দাবানলের জ্বালানি তৈরি করেছিল এবং হারিকেন ডোরা’র ফলে সৃষ্ট প্রবল বাতাস মিলে এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়র মিচ রথ বলেছেন, হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডও বর্তমানে দাবানলের কবলে পড়ছে। যদিও সেখানে কোনো আহত বা ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
হাওয়াইয়ের রাজ্য প্রতিরক্ষা বিভাগের মেজর জেনারেল কেনেথ হারা বুধবার রাতে বলেছেন, তিনি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ পুনরুদ্ধার ও খাবার পানি সরবরাহ করার কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক পুনরুদ্ধারের গতি বাড়িয়েছে বেইজিং
তিনি বলেন, ন্যাশনাল গার্ড হেলিকপ্টার আগুনের উপর ১ লাখ ৫০ হাজার গ্যালন (৫ লাখ ৬৮ হাজার লিটার) পানি দিয়েছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, তারা ১৪ জনকে উদ্ধার করেছে যারা আগুনের শিখা ও ধোঁয়া থেকে বাঁচতে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল।
মাউই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসেন জুনিয়র বুধবার বলেছেন, কর্মকর্তারা এখনও আগুনের কারণ অনুসন্ধান শুরু করেননি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার উটাহ ভ্রমণ করে মাউই’র ঘটনাকে দেশের জন্য বড় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছেন।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছে, যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে; অবিলম্বে তাদের সাহায্য পৌঁছানোর বিষয়টি ফেডারেল সরকার নিশ্চিত করবে।
ইউক্রেনে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা সরবরাহ করবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন। যাতে পাল্টা আক্রমণে দেশটির রাজধানী কিয়েভ টিকে থাকতে পারে। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সামনের সারির সৈন্যরা প্রশিক্ষিত রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই গোলাবারুদের প্যাকেজে থাকছে হাই-মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (এইচআইএমএআরএস) এবং প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ছোট কামান ও ট্যাংকের জন্য গোলাবারুদ, জ্যাভলিন রকেট, মাইন-ক্লিয়ারিং সরঞ্জাম, ১২ মিলিয়ন রাউন্ড ছোট অস্ত্রের গোলাবারুদ এবং ধ্বংসাত্মক গোলাবারুদ।
নাম প্রকাশের ওই দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সহায়তার বিষয় এখনও জনসমক্ষে ঘোষণা করা হয়নি।
ইউক্রেনের জন্য নির্ধারিত মার্কিন তহবিলের প্রায় পুরোটাই ব্যয় হয়ে গেছে এবং বাইডেন প্রশাসন এই সমর্থন অব্যাহত রাখতে কংগ্রেসের কাছ থেকে পরিপূরক সহায়তার একটি নতুন প্যাকেজের জন্য অনুরোধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
গত বছর রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা পেয়েছে। এসব তহবিলের মাধ্যমে রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ছোট কামান ও লাখ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদসহ নানা অস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করা হয়েছে। রক্তক্ষয়ী তীব্র এই যুদ্ধে সহায়তার বেশিরভাগ গোলাবারুদ ও অস্ত্র ইতোমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বুধবার তার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, দেশটির পূর্বাঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ে সামনের সারিতে অবস্থান ও নিয়ন্ত্রণে একদিনের মধ্যে ‘একাধিক পরিবর্তন’ঘটে।
বাইডেন প্রশাসন দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে যুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থায়ন করছে। যার একটি হলো প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটি বা পিডিএ, যা বিদ্যমান মার্কিন মজুদ থেকে অস্ত্র সরবরাহ করে। অন্যটি হচ্ছে ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিসট্যান্স ইনিশিয়েটিভ বা ইউএসএআই, যা ট্যাংকের মতো বড় আকারের অস্ত্র ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে অর্থায়ন করে। উভয় তহবিল চলতি অর্থবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
পেন্টাগন ইতোমধ্যেই এই তহবিল নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। কারণ, কংগ্রেস অতিরিক্ত তহবিল অনুমোদন না করা পর্যন্ত সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পিডিএ অর্থে প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এই অবশিষ্ট থেকেই ২০০ মিলিয়ন ডলারের সর্বশেষ সহায়তার প্যাকেজটি দেওয়া হচ্ছে।
পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারব। আমি কংগ্রেসের কাছে কোনো সম্পূরক বা অতিরিক্ত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কিছুতেই এগিয়ে যাচ্ছি না।’
এ ছাড়াও চলতি অর্থবছরে ইউএসএআই তহবিলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭