বিজ্ঞান-এবং-উদ্ভাবন
অভ্র কি-বোর্ড: বাংলা ভাষার ডিজিটাল রূপান্তরে মেহেদী হাসান ও নেপথ্য কুশলীরা
নিরঙ্কুশ স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ভাষা কণ্ঠে ধারনের সময় নিউরনের প্রতিটি অনুরণন মিলিত হয় ঐকতানে। ইন্টারনেটে প্রথম বাংলা অক্ষরটি টাইপ করার সময় ঠিক এই অনুভূতির সঞ্চার হয়েছিল প্রত্যেক বাংলা ভাষাভাষি মানুষের হৃদয়ে। সেখানে অভ্র শব্দটি যেন ইন্টারনেটের নিঃসীম জগতে এক টুকরো বাংলাদেশের অবিরাম প্রতিধ্বনি। ডিজিটাল বাংলা লেখনীর সেই অভ্র কি-বোর্ড এবং তার নেপথ্যের কুশলীদের নিয়েই আজকের প্রযুক্তি কড়চা। চলুন, ঘুরে আসা যাক অভ্র সফ্টওয়্যারের ক্রমবিকাশের মঞ্চ থেকে, জেনে নেওয়া যাক কারিগরদের স্বপ্নগাঁথা।
সাবলীল বাংলা টাইপ ও একটি স্বপ্নের অঙ্কুরিদ্গম
২০০৩ সালের একুশে বইমেলায় বাংলা ইনোভেশন থ্রু ওপেন সোর্স বায়োস নামক স্টলে প্রদর্শনী করা হয়েছিল ‘বাংলা লিনাক্স’-এর। কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম (ওএস)টির মেনু ও ফাইলের নামসহ সবকিছুই ছিল বাংলাতে। কতক তরুণদের এমন অভাবনীয় উদ্যোগের সবচেয়ে বিস্ময়কর দিকটি ছিল পুরোপুরি বাংলায় বানানো ওয়েবসাইট।
এসব দেখে আর সব প্রযুক্তিপ্রেমিদের মতো যারপরনাই অবাক হয়েছিলেন মেহেদী হাসান খানও। স্কুল জীবন থেকেই কম্পিউটার নিয়ে তার অগাধ আগ্রহ। বিশেষ করে প্রোগ্রামিংয়ের বিষয়গুলো তার মধ্যে ভীষণ উদ্দীপনা তৈরি করে। এগুলোর উপর তার বেশ দখলও ছিল। তাই বাংলা লিনাক্সের ইউনিবাংলা নামের ফন্টটি যে ইউনিকোড সমর্থিত, তা বুঝতে তার একদমি সময় লাগেনি।
বাসায় ফিরে মেহেদী ফন্টটি তার কম্পিউটারে ইন্সটল করে দেখলেন যে, এতে কঠিন যুক্তাক্ষরও লেখা যাচ্ছে। কিন্তু অক্ষরের তালিকা থেকে মাউস দিয়ে ক্লিক করে অক্ষর বসাতে হচ্ছে, যেটি বেশ ঝামেলার। তখনি সহসা মাথায় আসে একটা কি-বোর্ড লে-আউট থাকলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেতো। ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ইন্টারনেটে লে-আউটের অনুসন্ধান। কিন্তু কোথাও কিছু পাওয়া গেলো না। সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এই লে-আউট বানানোর কাজটা তিনিই করবেন।
আরো পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
অভ্র কি-বোর্ডের পথচলা
ঢাকার আইডিয়াল স্কুল এবং নটরডেম কলেজ পাশের পর মেহেদী পড়াশোনা করছিলেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। এরপরেও তার যথেষ্ট দক্ষতা ছিল তদানিন্তন বহুল প্রচলিত প্রোগ্রামিং ভাষা ভিজ্যুয়াল বেসিক ডটনেট-এ। মেহেদীর উদ্দেশ্য ছিল লিনাক্সের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত উইন্ডোজ ও এস-এও কি-বোর্ড ইন্টারফেসটি কাজ করবে। সে অনুযায়ী পুরোদমে শুরু হয়ে গেলো কোড লেখার কাজ।
অতঃপর ২০০৩ সালের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ-এ প্রকাশিত হলো ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার অভ্রের প্রথম সংস্করণ। এখানে প্রথম লে-আউট হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছিল জনপ্রিয় বিজয় বাংলা কি-বোর্ড। কিন্তু এতে টাইপ করার সময় কোন ‘কী’তে কোন বর্ণ রয়েছে তা মনে রাখতে হতো। বিশেষ করে একদম নতুনদের জন্য এটি ছিলো বেশ বিড়ম্বনার। এই সমস্যা দূর করতে মেহেদী নিজেই বানিয়ে ফেললেন অভ্র ইজি।
সফ্টওয়্যার সহজে এবং বিনামূল্যে ডাউনলোড করার জন্য তৈরি করা হলো পরিপূর্ণ একটি ওয়েবসাইট; নাম ওমিক্রনল্যাব। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল অনলাইন ফোরাম, যেখানে অভ্র নিয়ে চলতো ব্যাপক আলোচনা। ব্যবহারকারীরা অভ্র সম্পর্কে বিভিন্ন কারিগরি প্রশ্ন করতেন এবং বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি পেশ করে প্রয়োজনীয় উন্নয়নের জন্য মতামত দিতেন।
পরবর্তীতে এই অভ্র উন্নয়নের কাজে আরও কিছু প্রোগ্রামার যুক্ত হন। এদের মধ্যে ছিলেন রিফাত উন নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম, রায়ান কামাল, শাবাব মুস্তাফা, নিপন হক, ওমর ওসমান, ও সারিম খান।
আরো পড়ুন: নতুন স্মার্টফোন কিনছেন, জেনে নিন সেটি আসলেই নতুন কিনা!
সফ্টওয়্যার বিকাশের ধারাবাহিকতায় অভ্রতে যুক্ত হয় ন্যাশনাল, প্রভা, ও মুনীর অপটিমার মতো নতুন নতুন লে-আউট। ফোনেটিক লে-আউট আসার পর আরও সহজ হয়ে ওঠে বাংলা টাইপিং। ইংরেজিতে ‘ami banglay gan gai’ লিখলেই বাংলা বর্ণমালায় রূপান্তরিত হয়ে স্ক্রিনে প্রদর্শিত হতো ‘আমি বাংলায় গান গাই’।
বিনামূল্যের পরিষেবার অমূল্য হয়ে ওঠা
পরিকল্পনা থেকে শুরু করে রিলিজ অতঃপর উত্তরোত্তর বিকাশে অভ্রকে কখনোই বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে দেখা হয়নি। অথচ মেহেদী নিয়মিত সফ্টওয়্যারের রিলিজ লগ লিখতেন, প্রতিবার জুড়ে দিতেন ক্রমিক ভার্সন নম্বর। একই সঙ্গে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য লেখা হতো বিশাল বিশাল ইউজার ম্যানুয়াল। সফ্টওয়্যারটি বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হলেও সেবাটিকে পেশাদার রূপ দিতে তিনি এতটুকু কার্পণ্য করেননি। ওমিক্রনল্যাবের ফোরামের দৌলতে ব্যবহারকারীদের অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন যে, এর পেছনে হয়ত কোনো বিদেশি সফ্টওয়্যার কোম্পানি রয়েছে।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হওয়ায় অভ্রের নামের সঙ্গে কোনো ধরনের পাইরেসি জড়িয়ে পড়ার অবকাশ ছিল না। পরবর্তীতে ওপেনসোর্স করে দেওয়াতে এটি কপিরাইটের জটিলতা থেকেও মুক্ত ছিল। সুতরাং সর্বাঙ্গীনভাবে একটি আইনসিদ্ধ পেশাদার সফ্টওয়্যারে পরিণত হয়েছিল অভ্র। এর ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’ স্লোগানের মতো এটি আক্ষরিক অর্থেই জনসাধারণের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা তৈরি করেছিল। পরে পরবর্তীতে মেহেদী তার এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অথচ ডাক্তারি পড়াশোনার চাপে কখনোই থেমে থাকেনি অভ্রর উন্নয়ন।
আরো পড়ুন: শিশুদের টিকটক আসক্তি: ঝুঁকি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
বর্তমানে বিশ্বের যে প্রান্তেই বাংলা ভাষাভাষি জনগোষ্ঠির উপস্থিতি বিদ্যমান, সেখানেই রয়েছে অভ্রের পদচারণা। ২ দশকেরও বেশি সময় অতিক্রমের পরে এখনও এটি প্রথম দিনের মতোই বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
৩২১ দিন আগে
লেখকদের সৃজনশীলতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব: ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা
বর্তমান বিশ্বের সব থেকে আলোচিত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই মানুষেরই তৈরি। অথচ ক্রমবিকাশের চরম মহূর্তে সৃষ্টি নিজেই যেন তার স্রষ্টাকে প্রতিস্থাপন করতে চলেছে। মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তাকে লেখ্য রূপ দেয়ার শৈলী বিগত শতাব্দীর শেষ লগ্নেও ব্যক্তির বিশেষত্বকে অনন্য করে তুলতো। কিন্তু বর্তমানে চোখের পলকে অবলীলায় লিখতে পারা এআই সেই বিশেষত্বের নেপথ্যে যেন কতক শর্ত জুড়ে দিয়েছে। লিখিত সৃষ্টিকর্মে এআইয়ের ব্যবহার বিচিত্রভাবে প্রভাবিত করছে সাংবাদিক ও লেখক সমাজকে। যার ধারাবাহিকতায় প্রশ্ন উঠেছে তথ্যবহুল প্রতিবেদন বা অনবদ্য রচনার জন্য নতুন মাপকাঠি নিরুপণের। চলুন, লেখকদের সৃজনশীল কাজে এআইয়ের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যাক।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি লেখকদের সৃজনশীলতার পরিপন্থী
একটি লেখার পটভূমি থেকে শুরু করে প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এআইয়ের যুগে এখন সেই পরিসরটি অনেক ছোট হয়ে এসেছে। বিশ্বের নামকরা এআই টুলগুলোর মধ্যে রয়েছে চ্যাটজিপিটি, গ্রামার্লি, জেমিনি, জ্যাস্পার, এবং ক্লড। সম্প্রতি সর্বাধিক প্রসিদ্ধ চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রথম সারিতে থেকে অন্য সব এআইকে টেক্কা দিচ্ছে চীনের ডিপসিক। এগুলোর মাধ্যমে সময়সাপেক্ষ কাজগুলো খুব কম সময়েই করে ফেলা যায়। ফলশ্রুতিতে, পেশাদার লেখকরা মনোনিবেশ করতে পারেন লেখার আবহ ও মৌলিকতার দিকে। চলুন, লেখালেখিতে এআই টুলগুলোর প্রধান সুবিধাগুলো জেনে নিই।
লেখকদের সৃজনশীলতায় এআইয়ের ইতিবাচক দিক
.
কন্টেন্টের বিচিত্রতা
এআইয়ের পারদর্শিতার ব্যাপ্তি তথ্যবহুল প্রতিবেদন থেকে পৌঁছে গেছে সৃজনশীল গল্প পর্যন্ত। ধরণ ও আকার নির্বিশেষে মার্কেটিং-এর জন্য যেকোনো কপিরাইটিং-এর জন্য এখন আর দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করতে হয় না। আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, লেখাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে উদ্দিষ্ট পাঠকদের জন্য তৈরি হয়, যা পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দৈনিক তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা এই টুলগুলোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা
শুধু তাই নয়, ওয়েব অ্যাপগুলো লেখার ভাষাশৈলীতেও ভিন্নতা আনতে সক্ষম। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক রিপোর্ট, কথোপকথন ধাচের ব্লগ পোস্ট, নাটকের সংলাপ নির্ভর স্ক্রিপ্ট, এবং ই-মেইল রাইটিং; প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রতা বজায় থাকে।
রাইটার্স ব্লক থেকে পরিত্রাণ
লেখকদের জন্য এআইয়ের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হচ্ছে রাইটার্স ব্লক থেকে মুক্তি। প্রত্যেক সৃষ্টিশীল লেখকের এমন কিছু সময় আসে যখন তার চিন্তা লেখার প্রয়োজনীয় রসদ যোগাতে পারে না। এতে করে যেকোনো লেখা শুরু করতেই তার মধ্যে একরকম স্থবিরতা কাজ করে। এই রাইটার্স ব্লকের জড়তা কাটতে পেরিয়ে যায় অনেকটা সময়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই বন্দিদশা থেকে নিমেষেই উদ্ধার করে নিয়ে যেতে পারে এআই সফটওয়্যারগুলো। অবশ্য ইন্টারনেটের আগমনের পর থেকেই লেখকরা এই মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা মোকাবিলার হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছিলেন। আর এখন সেই হাতিয়ার আরও মোক্ষম হয়ে উঠেছে।
এআই প্ল্যাটফর্মগুলো যেকোনো বিষয়ের উপর নতুন নতুন ধারণা দেখাতে পারে। এছাড়া এখানে পুরোনো কোনো রচনার ভেতর থেকে অভিনব দৃষ্টিকোণও খুঁজে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: শিশুদের টিকটক আসক্তি: ঝুঁকি থেকে যেভাবে বাঁচবেন
চতুর্মাত্রিক গবেষণা
ইন্টারনেটের যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো গবেষণা প্রক্রিয়ায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। কিন্তু এগুলো সার্চ করা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ইন্টারনেট জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কন্টেন্টগুলোকে সামনে হাজির করেই ক্ষান্ত হতো। ব্যবহারকারী সেগুলোর উপর গবেষণা করে তার কাঙ্ক্ষিত ঊত্তরটি খুঁজে নিতেন। কিন্তু এখন এআই ব্যবহারকারীর হয়ে এই ঊত্তরটি সরাসরি বের করে দেয়। বিশেষ করে গুগলের জেমিনি এক ক্লিকেই দীর্ঘ কন্টেন্টের সারবস্তু বের করে দেয়।
সামগ্রিকভাবে এই বৈশিষ্ট্যগুলো সাধারণ গবেষণার সময় কমিয়ে এনেছে। ফলে লেখক ও সাংবাদিকরা আরও সুক্ষ্ম গবেষণার দিকে যেতে পারেন।
ব্যাকরণগত দিক থেকে নির্ভুল লেখনীর নিশ্চয়তা
প্রকাশনা জগতের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় প্রুফরিডিং বা লেখার খসড়া সম্পাদনার ঝামেলাকে অনেকটা কমিয়ে এনেছে এআই। তথ্য ভুল না শুদ্ধ এবং লেখার ধরণ যেমনি হোক না কেন; প্রতিটি লেখাই ব্যাকরণগত নির্ভুলতা নিয়েই তৈরি হয়। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ধরণ অনুযায়ী নির্দেশনা দেওয়া হলে ভাষাশৈলীর সমস্যাও দূর হয়। বাকি থাকে তথ্যের যথার্থতা, যা সম্পূর্ণভাবেই গবেষণার উপর নির্ভরশীল।
আরও পড়ুন: ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের উপায়
লেখার নির্দিষ্ট ধরণ বা নিজস্বতা সংরক্ষণ
চ্যাটজিপিটিসহ প্রথম সারির সবগুলো এআইয়েই রয়েছে লেখকদের নিজস্ব শৈলী সংরক্ষণ করে রাখার সুযোগ। এর মধ্যে রয়েছে একজন লেখকের বাক্য বিন্যাস, শব্দ চয়ন, এবং পাঠকদের সম্বোধনের ধারা, যা লেখকের স্বকীয়তার পরিচায়ক। সেটিং থেকে একবার নির্ধারণ করে রাখা হলে প্রতি কন্টেন্ট জেনারেশনের ক্ষেত্রেই সেই স্বকীয়তা বজায় থাকে।
লেখকদের সৃষ্টিশীল কাজে এআইয়ের নেতিবাচক ভূমিকা
.
গতানুগতিক রচনার প্রসার
বিষয়বস্তুর গভীরে গিয়ে প্রতিটি সূক্ষ্ম স্থানগুলোর জন্য সঠিক প্রম্প্ট বা নির্দেশনা না দেওয়া হলে এআই মোটা দাগে বিষয়টি বিশ্লেষণ করে। তাতে বাক্য বিন্যাস হয় গতানুগতিক এবং সার্বজনীন শব্দগুচ্ছে পরিপূর্ণ হওয়ায়, তা ইন্টারনেটে থাকা অন্যান্য লেখার সঙ্গে মিলে যায়। এ ধরণের রচনার সবচেয়ে মানহীন দিক হচ্ছে একই শব্দ বা শব্দগুচ্ছের পুনরাবৃত্তি।
এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নির্দেশনার পদ্ধতি নিয়ে যথার্থ ধারণা ব্যতীত মানসম্পন্ন লেখা পাওয়া অসম্ভব। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সাধারণ নির্দেশনা দেওয়ার চর্চাটি বিপুল পরিসরে ঘটছে। এতে করে গোটা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে গতানুগতিক রচনা। এটি সাহিত্যসহ সামগ্রিক প্রেস মিডিয়ার জন্য ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন: কীভাবে জানবেন ঢাকার যানজটের সর্বশেষ অবস্থা?
স্বকীয়তার অবক্ষয়
এআই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যমান কাজ ও তথ্যের ভিত্তিতে লেখা তৈরি করে। শিরোনাম ও পর্যালোচনায় কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সেগুলো দিনশেষে সমজাতীয় লেখারই পৃষ্ঠপোষক। কিংবদন্তির কোনো গল্পে অ্যাডাপ্টেশনও একটি সৃজনশীলতা যখন সেখানে লেখকের স্বকীয়তা থাকে। কিন্তু বর্তমানে কম সময়ে এআইয়ের লেখাগুলো লেখকদের সেই স্বকীয়তা আরোপের প্রতি নিরুৎসাহিত করছে। এআই প্রস্তাবিত আবহ এবং কাঠামোর উপরেই তারা নিজেদের কাজগুলো প্রস্তুত করছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে কিংবদন্তিতুল্য লেখক তৈরির সম্ভাবনা ধূলিস্মাৎ করে দিতে পারে।
৩২৮ দিন আগে
গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করলেন বাকৃবির অধ্যাপক
দেশে প্রথম গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস বা ওলান ফোলা রোগের ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ও মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান।
অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান ইউএনবিকে জানান, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ হলেই সেটি সফল ভ্যাক্সিন হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু তার উদ্ভাবিত ভ্যাক্সিনটি ম্যাসটাইটিস রোগের বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ শতাংশ কার্যকর।
তিনি বলেন, দুগ্ধপ্রধানকারী গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ম্যাসটাইটিস বা ওলান ফোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রোগ। তবে দেশের দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মোট চাহিদার ৯০ শতাংশই পূরণ করা হয় গরুর দুধ থেকে। ম্যাসটাইটিস রোগে গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ভালো দুধ উৎপাদন পেতে গাভীর ওলানের সুস্থতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মূলত ব্যাকটেরিয়া ও ক্ষেত্র বিশেষ কিছু ছত্রাকের আক্রমণে গাভীর এই রোগ হয়ে থাকে। দেশে বর্তমানে অনেক উচ্চ ফলনশীল গাভী পাওয়া যাচ্ছে। এইসব গাভীর দুধ উৎপাদন বেশি তাই ওলানও অনেক বড় হয়। ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশে থাকলে বা দুধ দোহন করার পরপরই গাভীগুলো মাটিতে শুয়ে পড়লে ম্যাসটাইটিসের সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। সাব ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিসে গাভী আক্রান্ত হলে দুধ উৎপাদন কমে যায় ও জীবাণু ছড়ায় কিন্তু ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিস হলে গাভীর দুধ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। গাভীর সুস্থতা নিশ্চিত করতে ও দুধ উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেই উদ্দেশ্যেই সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ভ্যাক্সিন তৈরির গবেষণাটি করা হয়েছে।
ভ্যাক্সিন তৈরির গবেষণাতে অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী-ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (বাস-ইউএসডিএ)।
অধ্যাপক বাহানুরের নেতৃত্বে এই গবেষণায় আরও ছিলেন পিএইচডি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কিছু শিক্ষার্থী।
এছাড়া দেশের অর্থনীতিতে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের ভূমিকা সম্পর্কে অধ্যাপক জানান, দেশের প্রায় ৩৬ লাখ পরিবার জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে দুধ উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। একজন মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য দৈনিক ২৫০ গ্রাম দুধ পান করা উচিত। তথ্যমতে দেশে ১৫৮ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন দুধের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১৩০ দশমিক ৭৪ লাখ মেট্রিক টন দুধ। এছাড়া বিপুল পরিমান দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য বিদেশ থেকে প্রতিবছর আমদানি করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১ লাখ ১৮ হাজার টন দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করা হয়েছে। অর্থের হিসেবে প্রায় ১২২ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা শুধু বাংলাদেশই দুধের ঘাটতি পূরণে ব্যয় করে থাকে। এছাড়া দেশের অনেক পরিবার এক থেকে দুটি গাভীকে কেন্দ্র করেই জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়াও ম্যাসটাইটিস হলে প্রচলিত এন্টিবায়োটিক চিকিৎসাতেও তেমন কাজ হয় না।
তিনি জানান, ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ভ্যাক্সিনটি এন্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে, মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করে।
দেশে পূর্বে এই রোগের ভ্যাক্সিন বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও বর্তমানে এই ভ্যাক্সিন দেশে আর পাওয়া যায় না। দেশে উৎপাদিত গাভীর নমুনা থেকে সংগৃহীত ম্যাসটাইটিস রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করেই ভ্যাক্সিনটি তৈরি করা হয়েছে। অধ্যাপক বলেন, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নেত্রকোনাসহ দেশের ৯টি অঞ্চল থেকে প্রায় ৫১৭টি গাভী থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।
প্রাপ্ত নমুনা থেকে ম্যাসটাইটিসের জন্য দায়ী চারটি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো- স্ট্রেপ্টোকক্কাস অ্যাগালাক্টিয়া (Streptococcus agalactiae), এসচেরিচিয়া কোলি (Escherichia coli), স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস (Staphylococcus aureus) ও স্ট্রেপ্টোকক্কাস উবেরিস (Streptococcus uberis)। চারটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করবে বিধায় একে পলিভ্যালেন্ট ম্যাস্টাইটিস ভ্যাকসিন (Polyvalent Mastitis Vaccine) বলা হয়।
অধ্যাপক বাহানুর বলেন, প্রাপ্ত নমুনায় দেখা গেছে প্রায় ৪৬ দশমিক ২৩ শতাংশ গাভী ওলান ফোলা রোগে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিস ও ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ সাব ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিসে আক্রান্ত। তবে উদ্ভাবিত ভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ গাভীকে প্রয়োগ করলে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ কমে যাবে।
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে অধ্যাপক বাহানুর বলেন, নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে শুরুতে গাভীর চারটি ওলান ক্যালিফোর্নিয়া ম্যাস্টাইটিস পরীক্ষা (California Mastitis Test) বা সিএমটি (CMT) দ্বারা পরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর সংক্রমিত গাভীর সোমাটিক কোষ (Somatic cell) গণনা করা হয়েছে। সুস্থ গাভীর ক্ষেত্রে সোমাটিক কোষ (Somatic cell) এর সংখ্যা শূন্য থেকে দুই লাখ, সাব ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিসের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা দুই থেকে পাঁচ লাখ এবং ক্লিনিকেল ম্যাসটাইটিসের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা পাঁচ লাখের ওপরে পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া প্রচলিত চিকিৎসায় রোগাক্রান্ত গাভীর সোমাটিক কোষ এর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না, অর্থাৎ এন্টিবায়োটিকগুলো কাজ করছে না।
অধ্যাপক বাহানুর রহমান গাভী ও দুধে তার আবিষ্কৃত ভ্যাক্সিনের প্রয়োগে তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছেন।
৩৪৯ দিন আগে
ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের উপায়
ভিডিও গেমের অনুষঙ্গ উত্থাপিত হলে স্বাভাবিকভাবেই যে বিষয়টি সামনে আসে, তা হলো শিশুদের বিনোদনের মাধ্যম। ধারণাটির সূচনা থেকেই বিনোদনের খোরাক যোগাতে বছরের পর বছর ধরে ব্যবসা করে এসেছে গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের চাহিদার আলোকে গ্রাহক শ্রেণিও সীমাবদ্ধ ছিলো সর্বোচ্চ টিনেজার পর্যন্ত। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে এই দৃশ্যপটে। বিশ্ব জুড়ে গেম খেলা এখন কেবল একটি শখ নয়, বরং অর্থ উপার্জনের একটি বিরাট মাধ্যম। শিশু থেকে বুড়ো সব বয়সের মানুষরাই এখন এই ইন্ডাস্ট্রির অনুগত গ্রাহক। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৫ সালে এই খাতে ৩১২ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের বাজারে পরিণত হবে। আয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে ওঠার কারণে অনেকেই রীতিমত ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন গেমিংকে। চলুন, ভিডিও গেম খেলার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার কয়েকটি উপায় নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের কয়েকটি পদ্ধতি
সর্বপ্রথম যে বিষয়টি অনুধাবন করা জরুরি তা হচ্ছে, এটি কোনো তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া নয়। যে কোনো পেশার মতো গেমিং থেকে আয়ের জন্যেও প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, নিবেদিত হওয়া এবং গেমিং সম্পর্কে গভীর জ্ঞান। সাম্প্রতিক সময়ে নিম্নোক্ত কার্যক্রমগুলো চমকপ্রদ আয়ের পথ তৈরিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
লাইভ স্ট্রিমিং
একজন গেমার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুপরিচিত এবং সফল উপায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে লাইভ স্ট্রিমিং। এখানে গেম খেলার পুরো সেশনটিকে সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে শেয়ার করা যায়। অন্যান্য যেকোনো লাইভ অনুষ্ঠান উপভোগের মতো এটিও একটি নিত্য-নৈমিত্তিক বিনোদনের উৎস। পৃথিবীর কোনো এক প্রান্তে ঘরে বসে নিজের কম্পিউটার একজন গেম খেলেন আর ঠিক একই সময়ে তা দেখতে পারেন লাখ লাখ উৎসাহীরা। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তারা সরাসরি লাইক, কমেন্ট, এবং শেয়ারও করতে পারেন।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
এমন অনেকগুলো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে গেমাররা লাইভ স্ট্রিমিং করে আয় করতে পারেন। যেমন- টুইচ, কিক, ইউটিউব গেমিং, ফেসবুক গেমিং এবং ডিলাইভ। এগুলোতে কত দর্শক দেখছেন, গেমারের ফলোয়ার সংখ্যা, লাইক, শেয়ার এবং কমেন্টের উপর নির্ভর করে আয়ের মাপকাঠি নির্ধারিত হয়। সঙ্গত কারণেই এখানে দর্শকদের ধরে রাখতে গেম খেলার পাশাপাশি দরকার হয় আরও কিছু দক্ষতার। সেগুলো হলো-
ভয়েস ওভার বা ধারা বিবরণী: গেমপ্লেতে প্রাসঙ্গিক এবং বিনোদনে ভরপুর ধারা বিবরণী দর্শকদের ধরে রাখার একটি মোক্ষম উপায়। যেমন- গেমিং-এর লাইভ রি-অ্যাকশন দেওয়া, গেমের সুনির্দিষ্ট কৌশল বা চিটকোড প্রদর্শনপূর্বক টিউটোরিয়াল, অথবা দর্শকদের সঙ্গে গেমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চ্যাট করা।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: স্ট্রিমিংটিকে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপযুক্ত উপায় হচ্ছে অনলাইন মার্কেটিং। আর সোশ্যাল মিডিয়ার বিশ্বে বিপণনের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো। কেননা এখানেই উদ্দিষ্ট দর্শকশ্রেণির এক বিশাল অংশের বিচরণ। এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনটি যত বেশি সংখ্যক দর্শকদের সামনে পৌঁছে, স্ট্রিমিং-এ ভিউ হওয়ার সম্ভাবনাও তত বাড়তে থাকে। আর এরই সঙ্গে উন্মোচন হতে শুরু করে আয়ের পথ।
আরো পড়ুন: কীভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা
নেটওয়ার্কিং: ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয়তা গেমারদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া পরিচিতি বাড়ানোর একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। এতে সেই গেমারদের দর্শকদের কাছে এক্সপোজার পাওয়ার পাশাপাশি তার কাছ থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে সফল হওয়ার কার্যকরি টিপস পাওয়া যায়।
পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, ২০২৯ সাল নাগাদ প্রায় ১০৮ কোটি লোক গেমিং লাইভস্ট্রিমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। ফলে এত বিশাল দর্শকের চাহিদা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাড়বে ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ ও চ্যানেল মেম্বারশিপের মতো প্ল্যাটফর্মকেন্দ্রিক আয়ের ক্ষেত্র।
গেমিং নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি
গেমিং কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য এক বিশাল প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব। প্ল্যাটফর্মটিতে প্রতিদিন ২০ কোটিরও বেশি মানুষ গেমিং ভিডিও দেখেন। বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক সাবস্ক্রাইবকৃত পাঁচটি চ্যানেলের মধ্যে দুটিই গেমিং চ্যানেল। তাই গেমারদের জন্য ইউটিউব যতটা বৈচিত্র্যময় ঠিক ততটাই লাভজনক।
আরো পড়ুন: টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
ইউটিউবে গেমারদের আয়ের পথ তৈরির পদ্ধতি
অ্যাড রেভ্যিনিউ: ভিডিওতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এই আয়ের ক্ষেত্রটি তৈরি হয়। যত সংখ্যক দর্শক এই বিজ্ঞাপন দেখেন, তাতে ক্লিক করেন কিংবা বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত ওয়েবপেজে গিয়ে কোনো কিছু ক্রয় করলে তা থেকে আয়ের একটি অংশ বরাদ্দ হয় কন্টেন্ট নির্মাতার জন্য। সঙ্গত কারণেই বিজ্ঞাপনগুলো কন্টেন্টের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয় এবং ভিডিওর সঠিক স্থানে যুক্ত করতে হয়।
ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ: জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে চায়। আর এই জন্য তারা চ্যানেলটির মালিক বা সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট নির্মাতার সঙ্গে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের উপর ভিত্তি করে চুক্তি করে। এই ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপনটি ভিডিওর কিছু অংশে প্রচার করা হয়। কখনও কখনও কন্টেন্ট নির্মাতারা নিজেরাই ধারা বিবরণীর সময় পণ্যের প্রোমোশন করে দেন।
পেইড প্রোমোশন এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে গেম, গেমিং গিয়ার বা প্রযুক্তি-সংক্রান্ত পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট কমিশন লাভ করা যায়। এখানে যেই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার প্রোমোশন করা হবে তাদের পক্ষ থেকে প্রতি পণ্যের জন্য একটি রেফারেল লিঙ্ক কন্টেন্ট নির্মাতাকে দেওয়া হয়। সেই লিঙ্ক ভিডিওর ভেতরে অথবা ডেসক্রিপশন বক্সে উল্লেখ করা থাকে। অতঃপর দর্শকরা এই লিঙ্কের মাধ্যমে সেই পণ্যের ওয়েবপেজে গিয়ে পণ্যটি ক্রয় করলে আয়ের একটি শতাংশ কন্টেন্ট নির্মাতাকে দেওয়া হয়।
এছাড়া পোস্টকৃত ভিডিওগুলো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্যাম্পেইন চালিয়েও চ্যানেলটি কম সময়ে অধিক সংখ্যক দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। পেইড ক্যাম্পেইনের জন্য জনপ্রিয় মার্কেটিং টুলগুলো হচ্ছে গুগল অ্যাড্স, বিং অ্যাড্স, ফেসবুক অ্যাড্স ও ইন্স্টাগ্রাম অ্যাড্স।
আরো পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
সুপার চ্যাট্স এবং মেম্বারশিপ: অনেক সময় নির্মাতা ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি চ্যাট করার সময় অনুদান প্রদানের বার্তা দিতে পারেন। এছাড়া স্রেফ ডেসক্রিপশন বক্সেও ক্রাউড ফান্ডিংয়ের লিঙ্ক রেখে দেওয়া যায়। পরবর্তীতে আগ্রহীরা সেখানে তাদের অনুদান দিতে পারেন। তাছাড়া ভিডিওর বাইরে বিশেষ সুবিধা দিতে নির্মাতারা দর্শকদের কাছ থেকে চ্যানেল মেম্বারশিপ নিতে পারেন। অনেক প্রসিদ্ধ ইউটিউব চ্যানেলে ফি প্রদানের ভিত্তিতে মেম্বারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি তাদের কিছু কিছু ভিডিও দেখার জন্যও অর্থ দিতে হয়।
চ্যানেলকে সম্পূর্ণরূপে আয়ের পর্যায়ে নিতে হলে দর্শকদের চাহিদার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া অপরিহার্য। গেমিংয়ের ক্ষেত্রে মূলত টিউটোরিয়াল, কৌশল নির্দেশিকা বা সাম্প্রতিক গেমের খবর, রি-অ্যাকশন এবং গেম রিলিজগুলো বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। গেমের সুনির্দিষ্ট সাবটপিক নির্বাচনের পাশাপাশি মানসম্পন্ন কন্টেন্ট নির্মাণ, নতুনত্ব এবং মার্কেটিংয়ের দিকেও নজর রাখা জরুরি।
গেম টেস্টিং
যারা বিশদ আকারে সূক্ষ্মতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণসহ যেকোনো সিস্টেমের অসঙ্গতিগুলো খুঁজে বের করতে পারেন, তাদের জন্য চমৎকার একটি কাজ গেম নিরীক্ষণ। যেকোনো ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যার টেস্টিংয়ের মতো এখন গেম টেস্টিংও একটি লাভজনক পেশা। এর জন্য বিভিন্ন ধরণের গেমপ্লের পাশাপাশি কম্পিউটার সহ নানা প্ল্যাটফর্মকেন্দ্রিক গেমের কারিগরি জ্ঞান থাকাও আবশ্যক।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
একজন গেম টেস্টার সাধারণ গেমারের দৃষ্টিকোণ থেকে গেমগুলো খেলার মাধ্যমে এর অসঙ্গতিগুলো খুঁজে বের করেন। অতঃপর সেই ত্রুটিগুলো দূর করে গেমটিকে সাধারণের কাছে আরও সহজ, আরামপ্রদ ও আনন্দদায়ক করে তোলার জন্য পরামর্শ দেন।
বর্তমানে গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গেমপ্লে, মেকানিক্স এবং গেমের সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গেম টেস্টারদের সম্মানী হিসেবে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ের গিগ-কেন্দ্রিক বা ফ্রিল্যান্স বাজারে চটকদার গিগগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই গেম টেস্টিং। ফ্রিল্যান্স গিগের সুযোগ দেওয়া যে কোম্পানিগুলো হলো- প্লেটেস্টক্লাউড, বেটা ফ্যামিলি এবং ইউজার টেস্টিং।
চূড়ান্ত পেইড গেমপ্লে টেস্টার হিসেবে নিয়োগের পূর্বে অনেক ক্ষেত্রে প্লেয়ারদের গেমের বেটা টেস্টিং প্রোগ্রামে নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি অনেকটা চাকরিতে স্থায়ী হওয়ার পূর্বে ইন্টার্নি বা অন-দ্যা-জব ট্রেনিংয়ের মতো। এখানে মূরত গেমারের গেম নিরীক্ষণের দক্ষতা যাচাই করা হয়।
আরো পড়ুন: শীতকালে গরম পানির গিজার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
গেমিং প্রতিযোগিতা
যারা গেমিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে ইচ্ছুক তাদের পোর্টফোলিও সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন গেমিং টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। নগদ আর্থিক পুরস্কার অর্জনের বাইরে এই টুর্নামেন্টগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে গেম প্রতিষ্ঠানগুলো এবং অন্যান্য দক্ষ প্রতিযোগিদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিংয়ের সম্ভাবনা। অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই সংঘটিত এই প্রতিযোগিতাগুলো সারা বিশ্বের গেমার, গেম উৎসাহী এবং গেম নির্মাতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
কিছু বৃহৎ এবং প্রসিদ্ধ টুর্নামেন্টগুলো হলো- দ্যা ইন্টারন্যাশনাল (ডোটা ২), লিগ অফ লিজেন্ডস ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ ও ফোর্টনাইট ওয়ার্ল্ড কাপ।
একটি বড় টুর্নামেন্টে জয়লাভের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে একজন দক্ষ গেমার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। স্পোর্টস ইভেন্টগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান বা গেমিং সংঘগুলো স্পন্সর করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান অধিকারী গেমারদের দিকে তাদের আলাদা নজর থাকে। এর মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে সেই বিজয়ীদের গেম সংক্রান্ত নানা পেশায় চাকররি ক্ষেত্র তৈরি হয়।
আরো পড়ুন: শীতে রুম হিটার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট গেমগুলোতে পারদর্শিতা থাকা অনেক গেমাররা নিজেই পুরো একটি টুর্নামেন্টের পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এটি গেম ডোমেইনে উদ্যোক্তা মনোভাবের নামান্তর। এতে এন্ট্রি ফি, স্পন্সরশিপ ডিল এবং করপোরেট অংশীদারদের মাধ্যমে অর্থায়নের সুযোগ থাকে। বিস্তৃত পরিসরে একটি নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক থাকলে এই টুর্নামেন্টগুলো দীর্ঘমেয়াদে একটি লাভজনক ব্যবসায়িক মডেলে রূপ নেয়।
গেমিং পডকাস্ট তৈরি
সম্প্রতি চিত্তাকর্ষক অনলাইন বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে পডকাস্ট। গেমিং-এর বিস্তৃতি এই মিডিয়া পর্যন্তও চলে এসেছে। গেমাররা তাদের নিজস্ব পডকাস্ট নিয়ে যুক্ত হয়েছে হাল ফ্যাশনের মূল ধারায়। গেম রিভিউ, লাইভ ভাষ্য, ইন্ডাস্ট্রির খবরাখবর, গেম ডেভেলপমেন্ট, রি-অ্যাকশন এবং গেমিং জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাত্কারগুলো স্থান পাচ্ছে গেম পডকাস্টে।
স্পন্সরশিপ ডিল, ফান্ড রাইজিং বা ডোনেশন, সরাসরি পণ্য বিক্রয় বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মতো অনলাইনের সাধারণ পদ্ধতিগুলো এখন পডকাস্টের সঙ্গেও জুড়ে গেছে। তাই এই প্ল্যাটফর্মটিও আয়ের একটি লাভজনক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
আরো পড়ুন: শীতে ঘরের শুষ্কতা দূর করতে হিউমিডিফায়ার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল ও দাম
বাজস্প্রাউট, স্পটিফাই, পডবিনের মতো স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি ইউটিউবের মতো ভিডিও স্ট্রিমিং সাইটও পডকাস্ট হোস্ট করছে।
গেম নিয়ে ব্লগিং
ইউটিউব চ্যানেল যেখানে কাজ করে শুধুমাত্র ভিডিও নিয়ে, ব্লগিং সেখানে গুরুত্ব দেয় লিখিত কন্টেন্টকে। অবশ্য এখন একটি ব্লগসাইটকেও টেক্স্ট, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্টের সমন্বয়ে একটি সামগ্রিক প্ল্যাটফর্মে রূপ দেওয়া যায়। এখানেও একইভাবে জনপ্রিয়তার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গেমপ্লে পর্যালোচনা, কৌশল বিশ্লেষণ, নতুন গেম বা প্রসিদ্ধ গেমের নতুন ভার্সনের আপডেট ও রি-অ্যাকশন।
এখানেও ব্লগাররা তাদের লিখিত কন্টেন্টকে উপজীব্য করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও অ্যাড রেভিনিউয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারে। এছাড়া নামী-দামী ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে নির্দিষ্ট স্পন্সরশিপের ভিত্তিতে তাদের পণ্য বা সেবার বিষয়ে পোস্ট লেখাও আয়ের একটি উপায়।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে যে প্রযুক্তিগত দক্ষতাগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকবে
একটি সফল গেমিং ব্লগের নেপথ্যে প্রধান উপকরণ হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান বা এসইও। এর মাধ্যমে গুগল, বিং বা ডাকডাকগো’র মতো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে ব্লগকে নিয়ে আসা যায়। এতে করে ব্লগে পাঠক সমাগম বেশি হয়। ব্লগে পাঠকদের আনাগোণা যত বেশি হয়, সাইটে থাকা অ্যাড বা রেফারাল লিঙ্কে ক্লিক করা এবং ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ প্রাপ্তির সম্ভাবনা ততই বেশি থাকে। আর এর মধ্য দিয়েই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পথ সুগম হয়।
শেষাংশ
ভিডিও গেম খেলে অর্থ উপার্জনের এই পদ্ধতিগুলোতে সফলতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প, অধ্যবসায় এবং প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। এগুলোর মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিকাশ ঘটেছে গেমভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল ও ব্লগিংয়ের। শুধুমাত্র কারিগরি দিক থেকে বিশেষজ্ঞরা অগ্রাধিকার পেলেও ইন্ডাস্ট্রিতে পিছিয়ে নেই গেম টেস্টিংও। এই প্রতিটি উপায়ে গেমার শুধু গেমপ্লে করেই ক্ষান্ত হন না। এর পাশাপাশি তাকে যোগাযোগ এবং বিপণনেও মনোযোগী হতে হয়। একই সঙ্গে গেমপ্লেকে দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য গ্রহণযোগ্য কন্টেন্টে রূপ দিতে হয়। আর এর পথ ধরে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনে বাড়ছে গেমিং ইভেন্ট।
ফলশ্রুতিতে, আর সব পেশার মতই সৃজনশীল ও উদ্যোগী মনোভাবকেও গেমের ডোমেনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন: এয়ার পিউরিফায়ার: প্রয়োজনীয়তা, দাম, জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ও নতুন মডেল
৩৫১ দিন আগে
শীতে ঘরের শুষ্কতা দূর করতে হিউমিডিফায়ার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল ও দাম
শীতকালে ঘরের অভ্যন্তরীণ বাতাসের গুণমান বৃদ্ধিতে উৎকৃষ্ট গৃহস্থালি ডিভাইস হিউমিডিফায়ার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিসরে এসব ডিভাইসের ব্যবহার বেড়েছে। এই ডিভাইসগুলো চার দেয়ালের মাঝের শুষ্ক পরিবেশকে নিমেষেই আরামদায়ক করে তোলে। এতে শুষ্ক ত্বক ও শ্বাসকষ্টের আশঙ্কা থাকে না। এমনকি কম আর্দ্রতার কারণে কাঠের আসবাবপত্রের সমস্যাও দূর করতে পারে হিউমিডিফায়ার। আজকের নিবন্ধে বর্তমান বাজারে সেরা কিছু হিউমিডিফায়ারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হবে। চলুন, সঠিক ডিভাইসটি কেনার জন্য কোন কোনও বিষয়গুলো যাচাই করা উচিত- তা জেনে নেওয়া যাক।
হিউমিডিফায়ার কেনার সময় যে বিষয়গুলো দেখে নেওয়া উচিত
একটি মানসম্পন্ন হিউমিডিফায়ারের ন্যূনতম কিছু বিশেষত্ব থাকে, যা সামগ্রিকভাবে এর ব্যবহারের উপর প্রভাব ফেলে। ক্রয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের যাওয়ার পূর্বে সেই বিষয়গুলো যাচাই করে দেখা উচিত। চলুন সেগুলোর বিশদ বিশ্লেষণ করা যাক।
ধরণ
নির্দিষ্ট পরিবেশের জন্য নির্ধারিত ফাংশনের হিউমিডিফায়ার তৈরি করা হয়। কুল মিস্ট মডেলগুলো কক্ষ-তাপমাত্রার আর্দ্রতা ছড়ায় বিধায় এগুলো উষ্ণ মৌসুমের জন্য ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে, শীতকালে ব্যবহৃত ওয়ার্ম মিস্ট হিউমিডিফায়ার জলীয়বাষ্প নির্গত করে। এতে ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন অ্যালার্জেন ধ্বংস হয় এবং হিম শীতল পরিবেশে আরামদায়ক উষ্ণতা বিরাজ করে।
আল্ট্রাসনিক হিউমিডিফায়ার উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে সূক্ষ্ম মিস্ট তৈরি করে শব্দবিহীন অপারেশন নিশ্চিত করে। ইভাপোরেটিভ মডেলগুলো আর্দ্রতা ছড়ানোর জন্য ফ্যান এবং ল্যাম্প ফিল্টারের উপর নির্ভর করে। কম পাওয়ারের স্টিম ভ্যাপোরাইজার সাধারণত থেরাপি বা চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
কভারেজ এলাকা এবং ধারণক্ষমতা
হিউমিডিফায়ারের কার্যকারিতা মূলত পুরো আবদ্ধ স্থানটিকে সঠিকভাবে মিস্ট ছড়াতে পারছে কিনা সেই ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। ছোট রুমের জন্য ডিজাইন করা মডেলগুলো স্বাভাবিকভাবেই বড় লিভিং রুমের জন্য প্রযোজ্য হবে না। তাই ঘরের মাত্রা পরিমাপ করে তার সঙ্গে ডিভাইসের বাক্সের গায়ে লিপিবদ্ধ কভারেজ এলাকা মেলাতে হবে। এটি সাধারণত বর্গফুট বা বর্গমিটারে উল্লেখ থাকে।
একইসঙ্গে ট্যাঙ্কের পানি ধারণক্ষমতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যাচাইয়ের মূল দিক হচ্ছে অপারেশনের সময়কাল। ট্যাঙ্ক আকারে বড় হলে ঘন ঘন রিফিল করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে, ছোট ট্যাঙ্কগুলো বারবার পানি ভরার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। এগুলো সহজে বহনযোগ্য এবং যে কোনো স্থানে সহজেই রাখা যায়।
সহজে রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা
ডিভাইসটি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের মাঝে কতটা পরিষ্কার বা প্রতিস্থাপন করতে হবে তা জানা জরুরি। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা ছাড়া এগুলো নিমেষেই ছাঁচ, ব্যাকটেরিয়া এবং খনিজের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এটি এর যথাযথ কার্যকারিতার ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে ঘরের বাতাসের গুণমানকে নষ্ট করে।
এর জন্য ভেতরের অংশ সহজে খুলে ফেলা যায় এবং ডিশওয়াশার পার্ট আছে এমন মডেলগুলো পছন্দ করা যেতে পারে। ফিল্টার ভালো হলে পর্যায়ক্রমিক প্রতিস্থাপনের পরেও ময়লা পরিষ্কারে সাহায্য করে। আল্ট্রাসনিক মডেলগুলোতে জমতে থাকা খনিজ পদার্থগুলো বারবার পরিষ্কারের প্রয়োজন হয়। মোট কথা তুলনামূলকভাবে কম রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এমন ডিজাইনগুলো অনেক দিন স্থায়ী হয়।
আরো পড়ুন: শীতকালে গরম পানির গিজার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
শব্দের মাত্রা এবং শক্তির যথার্থ ব্যবহারযোগ্যতা যান্ত্রিক শব্দ প্রায়শই বিরক্তির উদ্রেক করে। এদিক থেকে আল্ট্রাসনিক মডেলগুলো সেরা হিউমিডিফায়ার, কেননা এগুলোর অপারেশনের কোনো শব্দ হয় না বললেই চলে। কিন্তু ইভাপোরেটিভ মডেলের কার্যকারিতা বেশি হলেও ফ্যান ঘূর্ণনে সৃষ্ট শব্দ যথেষ্ট লক্ষণীয়।
নিঃশব্দে দীর্ঘ সময় ধরে ডিভাইস চালানোর ক্ষেত্রে আমলে নিতে হয় শক্তির মাত্রা। কম বিদ্যুৎ খরচ করে পুরো ঘর কভার করতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া আবশ্যক। এনার্জি সেভিং মোড থাকলে তা কেবল বিদ্যুৎ বিলই কমায় না বরং পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাবও হ্রাস করে।
অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য এবং খরচ
আধুনিক হিউমিডিফায়ারগুলোতে প্রায়শই উন্নত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। অতিরিক্ত মান সংযোজনের জন্য অধিকাংশ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান একের ভেতর অনেক কিছু রাখার চেষ্টা করেন। যেমন পরিবর্তনযোগ্য টাইমার, রিমোট কন্ট্রোল এবং অ্যাপভিত্তিক পরিচালনার জন্য স্মার্ট কানেক্টিভিটির সংযোগ।
খরচের ন্যায্যতা বিচারের জন্য এই উন্নত ফিচারগুলো উৎকৃষ্ট নির্ধারকের কাজ করবে। সেই সঙ্গে প্রতিস্থাপন ফিল্টার আছে কিনা ও অত্যাধুনিক ফিচার থাকলেও তা সহজে ব্যবহারযোগ্য কিনা- সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত।
আরো পড়ুন: শীতে রুম হিটার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
বর্তমানে বাজারের সেরা ১০টি হিউমিডিফায়ার
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হিউমিডিফায়ারের ঐতিহ্যবাহী কাঠামো ও কার্যপ্রক্রিয়াতে আসছে নতুন নতুন সংযোজন।
তন্মধ্যে দেশের বাজারে চলমান ১০টি ভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিভাইসের দাম ও প্রধান ফিচারগুলো নিম্নে দেওয়া হলো-
রিম্যাক্স আরটি-এ৭১০ অ্যারোমা ম্যাগ সিরিজ / দাম: ১৪০০ টাকা
ইউএসবি পোর্ট সংযুক্ত রিম্যাক্স-এর এই ম্যাগ মডেলটিতে আর্দ্রকরণের পাশাপাশি আছে অ্যারোমাথেরাপির সুবিধা। তেল যোগ করার পর সৃষ্ট মিস্ট সুগন্ধিযুক্ত। এর নকশা এমনভাবে করা যে সহজেই যে কোনো স্থানে মানিয়ে যায় এবং একই সঙ্গে সহজে বহনও করা যায়। তাছাড়া এটি বিভিন্ন ধরণের পাওয়ার সকেটের সঙ্গে স্থাপনের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ। যারা অ্যারোমাথেরাপির ফিচারকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাদের জন্য এটি দারুণ একটি বাজেট-বান্ধব সমাধান।
ওরিকো ডি২০-ডব্লিউএইচ / দাম: ১৬৯০ টাকা
২৬০ এমএল (মিলিলিটার) ট্যাঙ্কের এই ডিভাইসে রয়েছে ৫০ এমএল/এইচ (মিলিলিটার পার আওয়ার) এর মিস্ট ভলিউম নির্গত করার ক্ষমতা। এর ৯০ ডিগ্রি কোণে (উল্লম্ব ও আনুভূমিক বরাবর) মিস্ট ছড়ানোর প্রক্রিয়া ৩ দশমিক ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এর নেপথ্যে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে রয়েছে ১০০০ এমএএইচ (মিলি-অ্যাম্পিয়ার-আওয়ার)-এর ব্যাটারি। আরজিবি (রেড-গ্রিন-ব্লু) লাইট মুডগুলো যোগ করে নান্দনিকতা। সেই সঙ্গে কমপ্যাক্ট ডিজাইনের হওয়ায় এটি বেডসাইড থেকে শুরু করে অফিস স্পেস পর্যন্ত সব পরিবেশের জন্য উপযুক্ত।
আরো পড়ুন: টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
জো এইচএফ০৯ / দাম: ১৭৫০ টাকা
এতে একসঙ্গে ডিফিউজার এবং হিউমিডিফায়ার দুটি ডিভাইসের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। পোর্টেবল ডিভাইসটিতে রয়েছে ৩০০ এমএল ট্যাঙ্ক। একটি মুড দিয়ে অবিরাম প্রবাহ পরিচালনা করা হয়, আরেকটি মুড অল্প বিরতিতে মিস্ট ছড়ানোর প্রক্রিয়া চালু থাকে। আরজিবি লাইটিং বৈশিষ্ট্য শিথিলতা বাড়ায়, সঙ্গে ৩০ ডেসিবলের নিচে থাকা নয়েজ লেভেল প্রশান্তির পরিবেশ নিশ্চিত করে। ইউএসবি পোর্ট থাকায় এটি অনায়াসেই ছোট কক্ষ; এমনকি ডেস্কের উপর মানিয়ে যায়।
লর্ডউয়ে এ৮ / দাম: ১৯৯০ টাকা
দেখতে বেশ সাধারণ হলেও কার্যকারিতার দিক থেকে এটি অতুলনীয়। ১ হাজার ১৫০ এমএল ট্যাঙ্ক এবং ডাবল মিস্ট মোড এর বিরতিহীন মিস্ট তৈরির কাজ চালু রাখে। এতে থাকা আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তি ৩০ ডেসিবল-এর নিচে কাজ করে বিধায় এটি গভীর রাতের পিনপত্তন নিরবতায় কোনো বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে না। উপরন্তু, ৭টি রঙ-পরিবর্তনকারী লাইট পুরো পরিবেশে এক ভিন্ন অলঙ্করণ যোগ করে। নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করতে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় শাট-অফ সুবিধা। ইউএসবি ডিভাইসটি যে কোনো জায়গায় সেট করার জন্য উপযোগী।
বেসউস অ্যারোমাথেরাপি হিউমিডিফায়ার / দাম: ১৯৯৫ টাকা
কমপ্যাক্ট ডিজাইনের এই মডেলে অ্যারোমাথেরাপির সঙ্গে আর্দ্রতার মেলবন্ধন ঘটেছে। ৭৫ এমএল ধারণক্ষমতার ট্যাঙ্ক ২০ থেকে ৩৫ এমএল/এইচ আউটপুট দিতে পারে। স্বভাবতই এটি ছোট জায়গার জন্য সেরা। কাঠামোতে উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে পিসি+এবিএস, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য টেকসই হয়। মাত্র ২০০ গ্রাম ওজনের এই ডিভাইস সহজে বহনযোগ্য। নয়েজ ফ্রি হওয়ায় ডেস্ক বা বেডসাইড টেবিলে রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়া যায়।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
জিসুলাইফ জেবি০৮ / দাম: ২২৯০ টাকা
পোর্টেবল এবং ইউএসবি-চালিত এই হিউমিডিফায়ারে সর্বপ্রথম দৃষ্টিগোচর হয় অগ্রভাগের ডাবল স্প্রে। এর প্রতিটি পোর্ট ৩৫ এমএল/এইচ মিস্ট ভলিউম সরবরাহ করে, যা সর্বোচ্চ ১০ বর্গ মিটার পর্যন্ত আবদ্ধ জায়গা কভার করতে পারে। ৩ হাজার ৬০০ এমএএইচ-এর ব্যাটারি ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত রানটাইম প্রদান করে। শুষ্কতা দূরীকরণের জন্য এতে রয়েছে ডুয়েল পাওয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আল্ট্রাসনিক পরমাণুকরণ ব্যবস্থা বেশ সূক্ষ্ম মিস্ট তৈরি করে। শব্দের মাত্রা সীমাবদ্ধ থাকে ৩৬ ডেসিবলের মধ্যে। এর সঙ্গে একটি ক্লিনিং ব্রাশও দেওয়া হয়। আরও আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে- যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের জন্য এর ৬ মাসের ওয়ারেন্টি আছে।
এইচ-টু-ও ডিকিউ১১৬ / দাম: ২৩৫০ টাকা
মাত্র ১৮০ গ্রাম ওজনের এই ডিভাইসে রয়েছে ৬০ থেকে ৯০ এমএল/এইচ পর্যন্ত ডুয়েল মিস্ট মোড এবং একটি ২ হাজার এমএএইচ রিচার্জেবল ব্যাটারি। আলাদাভাবে এসি বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই এটি কাজ করে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। ট্যাঙ্ক ধারণক্ষমতা ৩০০ এমএল হওয়ায় এটি যে কোনো সংকীর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত কভারেজ নিশ্চিত করে। অটো স্লিপ মুড ৩ বা ৬ ঘণ্টা পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপারেশন বন্ধ করে দেয়। কম্পেক্ট ডিজাইনকে আবৃত করে রেখেছে টেকসই এবিএস উপাদান। যে কারণে একই সঙ্গে এটি সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায়।
বিম্পেরিয়াল পোর্টেবল হিউমিডিফায়ার / দাম: ৩৮৯০ টাকা
আধুনিক বৈশিষ্ট্য ও শৈলীর এক দারুণ সংমিশ্রণ ঘটেছে বিম্পেরিয়ালের এই মডেলটিতে। উর্ধ্বগামী শীতল মিস্টের পাশাপাশি এটি দ্বিগুণ অনুপাতে বাতাস পরিশোধন করে। ৮৫০ এমএল ট্যাঙ্কের এই হিউমিডিফায়ার ছোট বেডরুম বা অফিসের জন্য উপযুক্ত। এর সর্বোচ্চ মিস্ট কভারেজ প্রতি ঘণ্টায় ২০০ ঘনমিটার। সবচেয়ে চিত্তকার্ষক ফিচার হচ্ছে- এই হালকা ও পোর্টেবল ডিভাইস ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
কিউম্যালন টু পোর্ট স্প্রে / দাম: ৪৭৯০ টাকা
বিপুল জায়গার জন্য ডিজাইনকৃত কিউম্যালন টু পোর্ট স্প্রে’র রয়েছে ৮ লিটারের বিশাল পানিরভান্ডার। এর রানটাইম প্রায় ২৪ ঘণ্টা এবং এই পুরোটা সময়ে ন্যানো আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তির দৌলতে এটি অতি-সূক্ষ্ম মিস্ট সরবরাহ করতে পারে। এর অগ্রভাগের পোর্ট থেকে ৩৬০ ডিগ্রিতে মিস্ট ছড়িয়ে ঘরের সর্বত্র সমহারে মিস্ট ছড়ানো নিশ্চিত করা হয়। এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় তিনটি সামঞ্জস্যপূর্ণ মিস্ট কন্ট্রোল সেটিংসের মাধ্যমে। শীর্ষ কভারটি অপসারণযোগ্য এবং ট্যাঙ্ক স্বচ্ছ হওয়ায় এর রিফিলিং এবং পরিষ্কার করা বেশ সহজ। পানির স্তর একটি নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে এলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। নয়েজ ফ্রি অপারেশনের জন্য এটি বেডরুম ও মিটিং রুমের জন্য উৎকৃষ্ট।
শাওমি স্মার্ট হিউমিডিফায়ার টু / দাম: ৬ হাজার ৯৯০ টাকা
উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সংস্পর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে হিউমিডিফায়ার ক্যাটাগরিতে শাওমির কোনো জুড়ি নেই। ট্যাঙ্কের ধারণক্ষমতা ৪ দশমিক ৫ লিটার হওয়ায় এই মডেল থেকে ৩২ ঘণ্টা একটানা অপারেশন পাওয়া যায়। এই উল্লেখযোগ্য সময়ে এর মিস্ট সরবরাহ ৩৫০ এমএল/এইচ মাত্রায় অব্যাহত থাকে। অতিবেগুনী পরিস্রাবণ ব্যবস্থার কল্যাণে মিস্ট আউটপুট পরিষ্কার থাকে। শাওমির নিজস্ব মি হোম অ্যাপের মাধ্যমে ডিভাইসের মিস্ট সেটিংস এবং টাইমারগুলোকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর স্বয়ংক্রিয় মুডটি অতিরিক্ত আর্দ্রতা প্রতিরোধ করে ঘরের আসবাবপত্র এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশকে রক্ষা করে।
পরিশিষ্ট
উপরোক্ত ১০টি হিউমিডিফায়ারের যে কোনোটি শীতকালীন শুষ্কতা দূর করে ঘরকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারে। উন্নত বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্ট কন্ট্রোলের জন্য শাওমি স্মার্ট হিউমিডিফায়ার টু নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। বৃহৎ ক্ষমতা এবং কভারেজের জন্য একই সারিতে থাকবে কিউম্যালন ২ পোর্ট স্প্রে। জিসুলাইফ, এইচটুও, এবং ওরিকো’র মতো ছোট কাঠামো সহজে বহনের জন্য আদর্শ। নান্দনিকতার নিরিখে বিম্পেরিয়াল বা বেসিউস-এর মডেলগুলো বেছে নেওয়া যেতে পারে। আর সাশ্রয়ী খরচে উল্লেখযোগ্য কার্যকারিতার বিচারে লর্ডউয়ে, জো, এবং রিম্যাক্স-এর যথেষ্ট মান-সম্পন্ন।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
৩৬৪ দিন আগে
শীতে রুম হিটার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
শীতের প্রকোপ যত বাড়তে থাকে, বাসা-বাড়ির প্রতিটি ঘরের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পেতে অস্বস্তিকর মাত্রায় পৌঁছে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে ভোরবেলা এবং গভীর রাতে অতিরিক্ত গরম কাপড় ছাড়া থাকাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। নানা প্রতিকূল আবহাওয়ায় পরম আশ্রয়ের জায়গাটি রীতিমতো হিমঘরে পরিণত হয়। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একটু আরামপ্রদ উষ্ণতা অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আর এখানেই আসে রুম হিটার, যা মাঘের শীতেও ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারে। চলুন, বর্তমান সময়ের কয়েকটি রুম হিটারের দাম ও ফিচারের পাশাপাশি জেনে নিই, গৃহস্থালি যন্ত্রটি কেনার সময় কোন বিষয়গুলো যাচাই করা উচিত।
রুম হিটার কেনার সময় যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি
.
উষ্ণায়নের ক্ষমতা
মূল উদ্দেশ্য যেহেতু ঘর গরম করা, তাই প্রথমেই যন্ত্রটির ক্ষমতা কতটুকু, তা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত প্রতি বর্গফুট গরম করার জন্য ন্যূনতম ১০ ওয়াট ক্ষমতার দরকার হয়। সে অনুযায়ী ছোট একটি ঘরের জন্য ন্যূনতম ৬০০ ওয়াট হিটারের প্রয়োজন হবে।আর বড় জায়গাগুলোর জন্য ২ হাজার ওয়াটের মডেলগুলো উপযুক্ত হবে। সুতরাং কিনতে যাওয়ার আগে ঘরের ক্ষেত্রফলটি ভালোভাবে মাপা জরুরি।জায়গার তুলনায় কম ক্ষমতার হিটার নিলে সঠিক মাত্রায় উষ্ণতা পাওয়া যাবে না,আবার অতিরিক্ত হয়ে গেলে বিদ্যুৎ অপচয় হবে।
নিরাপত্তা
বাজেট যেমনি হোক না কেন, এ ধরনের গৃহস্থালি যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যাপারে কখনই আপস করা উচিত নয়। অত্যধিক তাপ সুরক্ষা, টিপ-ওভার সুইচ এবং অন্তর্নির্মিত থার্মাল ফিউজ থাকা হিটারগুলো যান্ত্রিক ত্রুটি বা আগুন লাগার ঝুঁকি হ্রাস করে। অ্যান্টি-ফায়ার প্লাস্টিক বা অটো শাট-অফ মেকানিজম অতিরিক্ত নিরাপত্তার সংযোজনের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যতা বাড়ায়। এই ফিচারগুলোর মাধ্যমে যন্ত্রকে সার্বক্ষণিক সতর্ক নজরে রাখার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মেলে।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
বিদ্যুতের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহারের কার্যকারিতা
সর্বোচ্চ মাত্রার উষ্ণতা দেওয়ার জন্য যন্ত্রটি কতটুকু বিদ্যুৎ শক্তি খরচ করছে, তা ভালো মানের হিটার বাছাইয়ের অত্যাবশ্যকীয় একটি নির্ধারক। এনার্জি-এফিশিয়েন্ট হিটারগুলো বিদ্যুৎ বিল সংরক্ষণ করে। থার্মোস্ট্যাট এবং ইকো-এনার্জি মোড সঠিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, যাতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ শক্তি নষ্ট না হয়। সিরামিক হিটিং উপাদান ঘরের সর্বত্র সমানভাবে এবং দ্রুত তাপ বিতরণ করে, শক্তির অপচয় রোধ করে। এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখার ফলে একদিকে যেমন দীর্ঘ মেয়াদে বাজেট বাঁচানো যায়, অন্যদিকে পরিবেশকেও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা যায়।
পোর্টেবিলিটি এবং ডিজাইন
যাদের ঘন ঘন বাসা বদলের প্রয়োজন হয় তাদের জন্য তাৎপর্যবহুল একটি ব্যাপার হচ্ছে গৃহস্থালি যন্ত্রপাতির ওজন। কাঠামোগত দিক থেকে সহজে বহনযোগ্য হলে স্থানান্তর ও পুনরায় স্থাপনের কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। বিশেষ করে ক্যারি-হ্যান্ডেল সমেত হাল্কা মডেলগুলো বহন করা সুবিধাজনক। লম্বা কমপ্যাক্ট ডিজাইনেরগুলো ঘরের মেঝেতে জায়গা বাঁচায়। কিছু হিটার দেয়ালেও সেট করা যায়। নান্দনিক ও সুবিধাজনক নকশা ব্যবহারযোগ্যতার পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্য্যও বাড়ায়।
শব্দের মাত্রা
হিটার নির্বাচনের সময় আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর শব্দ। সিরামিক প্রযুক্তি বা সাইলেন্ট অপারেশন মুডের মডেলগুলো ঘরের মধ্যে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট উপযোগী। অবশ্য পুরাতন ডিজাইনের ফ্যান হিটারগুলোর আওয়াজ থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় থাকে না। এদিক থেকে অত্যাধুনিক ডিজাইনগুলো অনেকটা এগিয়ে। একেবারে পিন-পিতম নিরবতা না দিতে পারলেও এগুলো প্রশান্তিদায়ক উষ্ণতা প্রদানে কোনো ঘাটতি রাখে না।
আরো পড়ুন: কীভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা
স্থায়িত্ব এবং ওয়ারেন্টি
ঘন ঘন মেরামত বা প্রতিস্থাপনের ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে অবশ্যই হিটারের ওয়ারেন্টি দেখে নেওয়া উচিত। পরপর কমপক্ষে দুটি শীত কাটানোর জন্য কাঠামোগত উপাদান হিসেবে অগ্নিরোধী প্লাস্টিক, সিরামিক উপাদান বা মজবুত ধাতব উপাদানগুলোর প্রতি অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্তত এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকলে আকস্মিক যান্ত্রিক ত্রুটি রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা পাওয়া যায়। বিক্রয় পরবর্তী সার্ভিস ওয়ারেন্টি দীর্ঘ মেয়াদে খরচ বাঁচায় বিধায় কোম্পানির প্রতি গ্রাহকদের নির্ভরতা বাড়ে।
বর্তমানে বাজারের সেরা কয়েকটি রুম হিটার
.
ভিশন ইজি-হোয়াইট / ১ হাজার ৪৮৫ টাকা
বরাবরের মতো এবারও সাশ্রয়ী মূল্যের বিপরীতে চমৎকার সব ফিচার পাওয়া যাচ্ছে ভিশনে। মডেলটির দুই ধরণের (১ হাজার ওয়াট/২ হাজার ওয়াট) তাপমাত্রা সেটিং-এ তাপ বিতরণের জন্য রয়েছে পিটিসি হিটিং উপাদান। অপারেশন চলাকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রয়েছে টিপ-ওভার সুইচ, অতিরিক্ত হিটিং সুরক্ষা ও একটি ফিউজ। এর তাপমাত্রা কমবেশি করার নব এবং একাধিক এয়ার মোড (ফ্যান/লো/উচ্চ) যন্ত্রের উপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ ও আরামদায়ক অনুভূতির সঞ্চার করে।
হাল্কা ওজন এবং ইন্টিগ্রেটেড হ্যান্ডেল হিটারটিকে সহজে বহন করার জন্য উপযোগী করে তুলেছে। ১২০ বর্গফুট জায়গার জন্য উপযুক্ত যন্ত্রটি সংকীর্ণ স্থানেও স্থাপনযোগ্য।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
ভিগো কজি / ১ হাজার ৬৫০ টাকা
২ হাজার ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই হিটারে রয়েছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী থার্মোস্ট্যাট ও তাপীয় ফিউজ। এগুলো অতিরিক্ত তাপ সরবরাহে সুরক্ষা মাত্রা নিশ্চিত করে। এক স্থান থেকে অন্যস্থানে সহজে স্থানান্তর এবং স্থাপনে সুবিধার জন্য রয়েছে সহায়ক ক্যারি হ্যান্ডেল। ব্যবহারযোগ্যতায় আলাদা মাত্রা যোগ করে এর পাওয়ার ইন্ডিকেটর লাইটটি। মাঝারি আকারের কক্ষগুলোর জন্য বেশ ভালো একটি পছন্দ এই হিটারটি।
নোভা এনএইচ-১২০১এ / ১ হাজার ৮৯৯ টাকা
টেকসই অ্যান্টি-ফায়ার প্লাস্টিক বডির এই হিটারটি নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট নির্ভরতা প্রদান করে। কেননা ২ হাজার ওয়াট দ্বারা চালিত এই যন্ত্রে আছে তাপীয় ফিউজ ও অতিরিক্ত উত্তাপ সুরক্ষা। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ফ্যানের গতি কমবেশি করার সুবিধা এর প্রধান আকর্ষণ। উপরন্তু, এই সামঞ্জস্যতার নেপথ্যে সুদূরপ্রসারি নিয়ন্ত্রক হিসেবে রয়েছে থার্মোস্ট্যাট।
মডেলটিতে দেওয়া হচ্ছে ২ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি এবং ১ বছরের স্ট্যান্ডার্ড ওয়ারেন্টি।
আরো পড়ুন: টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
ওয়াল্টন ডব্লিউআরএইচ-পিটিসি০০৭ / ২ হাজার ৬১ টাকা
ব্র্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী সহজ ডিজাইনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওয়াল্টনের এই হিটারটি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অতিরিক্ত তাপ সুরক্ষায় এতে অংশ নেয় পিটিসি হিটিং প্রযুক্তি, যা এর নিরবচ্ছিন্ন কার্যকারিতাকে অটুট রাখে। ৫০০/১ হাজার ওয়াট রেটিং ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যযোগ্য তাপ সেটিংয়ের জন্য যন্ত্রটি যেকোনো ছোট বা সংকীর্ণ জায়গার জন্য উপযুক্ত।
এলজি ব্লু ম্যাজিক কেপিটি-৬০২এম / ২ হাজার ৫০০ টাকা
নজরকাড়া ডিজাইন সমৃদ্ধ এই হিটারটিতে প্রথমেই চোখে পড়ে ডিজিটাল ডিসপ্লে। চিত্তাকর্ষক বেশভূষার সঙ্গে সিরামিক প্রযুক্তি দ্রুত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ হিটিং নিশ্চিত করে। অপসারণযোগ্য ডাস্ট ফিল্টারের পরিবর্তে পাওয়া যায় পরিস্কার বায়ু সঞ্চালন। এক্সট্রা হিটিং সেফ্টি এবং টিপ-ওভার সুইচ থাকায় সৌন্দর্য্যের সঙ্গে এর নির্ভরযোগ্যতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ ক্ষমতার মাত্রা ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ ওয়াট পর্যন্ত ওঠা-নামা করতে পারে। এই পরিবর্তন প্রয়োজনীয়তার স্বাপেক্ষে হিটিং সেটিংসের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হয়।
কনিয়ন বিই-৫০০এন / ২ হাজার ৬০০ টাকা
সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ক্ষমতা ও সার্বিক ফাংশন পাওয়ার ক্ষেত্রে কনিয়নের এই মডেলটিকে অনেকটা এগিয়ে রাখা যেতে পারে। এর নিরাপত্তার দিকটা দেখে থার্মাল কাট-আউট সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং কুলিং মুড। এটি বছর জুড়ে যন্ত্রটিকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। টেকসই গঠনের বডিতে হিটারটির সর্বোচ্চ ক্ষমতা ২ হাজার ওয়াট। কোম্পানির পক্ষ থেকে ১ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি এর নির্ভরযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আরো পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
মিয়াকো পিটিসি-১০এম / ৩ হাজার ৮০ টাকা
৪০০ বর্গফুটের বৃহৎ এলাকার জন্য তৈরি হয়েছে মিয়াকোর এই হিটার। ১ দশমিক ৫ কিলোওয়াট উষ্ণতায়ন ক্ষমতা এবং ৯০-ডিগ্রি ঘূর্ণন ফাংশন আবদ্ধ কক্ষের সমস্ত জায়গা জুড়ে উষ্ণতা ছড়াতে সক্ষম। কার্যকর থার্মোস্ট্যাটের পাশাপাশি কমপ্যাক্ট বডি যত্ন সহকারে ব্যবহারের ভিত্তিতে দীর্ঘস্থায়িত্বের প্রতিশ্রুতি রাখে। মূল্য সহ পণ্যের যাবতীয় ফিচারগুলো পূর্ণতা পেয়েছে অতিরিক্ত সংযোজন হিসেবে ১ বছর সার্ভিস ওয়ারেন্টির মাধ্যমে।
শাওমি ডুহি ডেস্কটপ ইলেক্ট্রিক হিটার / ৩ হাজার ৮০ টাকা
প্রযুক্তি-বান্ধব পণ্যশ্রেণিতে শাওমির খ্যাতি রয়েছে দীর্ঘদিনের। এই ইলেক্ট্রিক হিটারটিও তার ব্যতিক্রম নয়। যন্ত্রটির প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে অপারেটিংয়ের জন্য টাচ প্যানেল এবং ওয়াইড-এঙ্গেল ঘূর্ণন প্রক্রিয়া। স্মার্ট ফিচারগুলোতে আরও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে দ্রুত উষ্ণতায়নের পিটিসি প্রযুক্তি।
কমপ্যাক্ট ডেস্কটপ গঠন ও ডিজাইন নিমেষেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহনে সহায়ক হয়। সাধারণ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে টিপ-ওভারের অতিরিক্ত সুরক্ষা বেষ্টনী। ৬০০ ওয়াটের পাওয়ার রেটিং সম্পন্ন হিটারটি ছোট জায়গায় ব্যবহারের জন্য উত্তম।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ডানাজ ডিএএন-আরএইচ২৫০ইসি / ৩ হাজার ৯০০ টাকা
সিরামিক ফ্যান প্রযুক্তি এবং অটো-রোটেশনের মত প্রিমিয়াম সুবিধার বেশ কম পাওয়া রেটিং-এর মধ্যে দিচ্ছে ডানাজ। অবশ্য রেটিংটি ৭৫০ ওয়াট এবং ১ হাজার ৫০০ ওয়াটের দুটি হিটিং গ্রেডেশনে বিভক্ত। এটি সরাসরি অংশগ্রহণ করে থার্মোস্ট্যাটের তাপমাত্রা পরিচালনায়। অন্যান্য হিটারগুলোর সঙ্গে এর সুরক্ষা ক্যাটাগরির ভিন্নতা হলো এক্সট্রা হিটিং সেফ্টির পাশাপাশি এর আছে অ্যান্টি ওভারটার্নিং সুরক্ষা। সঙ্গে ১ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি মূল্যের পরিমিত ন্যায্যতা প্রদান করে।
রোওয়া কেপিটি-০৯১৮জি / ৪ হাজার ৪৫৯ টাকা
১ হাজার ৮০০ ওয়াট হিটিং পাওয়ারের এই হিটারটির বিশেষ দিক হচ্ছে অসিলেটিং সিরামিক প্রযুক্তি। এটি থার্মোস্ট্যাটের সঙ্গে সমন্বয় করে তাপমাত্রার সঠিক নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখে। বড় কক্ষগুলোর জন্য উপযুক্ত এই যন্ত্র টিপ-ওভার সুইচ, অতিরিক্ত তাপ সুরক্ষা, এবং স্বয়ংক্রিয় শাট-অফ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ। ওজন ২ দশমিক ৫ কেজি এবং ডিজাইন কমপ্যাক্ট হওয়ায় হিটারটিকে স্থানান্তর এবং পুনঃস্থাপন করা সহজ।
শেষাংশ
উপরোক্ত ১০টি রুম হিটারের যেকোনোটি পৌষ-মাঘের মৌসুমের প্রতিটি দিনকে আনন্দদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলতে সহায়ক হতে পারে। তন্মধ্যে স্বল্প বাজেটের জন্য দেখা যেতে পারে ভিশন ইজি-হোয়াইট এবং ভিগো কোজি মডেল দুটি। অপরদিকে, রোওয়া এবং ডানাজের মতো প্রিমিয়াম মডেলগুলোতে মিলবে ফ্যানের নিখূঁত ঘূর্ণন এবং সিরামিক হিটিংয়ের মতো উন্নত ফিচার। নোভা এবং এলজি ব্লু ম্যাজিক মিড-রেঞ্জার হিসেবে যথেষ্ট কার্যক্ষমতার অধিকারি এবং সেই সঙ্গে নির্ভরযোগ্য। আর প্রযুক্তিপ্রেমিদের জন্য রয়েছে চমকপ্রদ ডিজাইনের শাওমি ডুহি। সর্বপরি, ক্রয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাওয়ার আগে কর্মক্ষমতা ও নিরাপত্তামূলক ফিচারগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
আরো পড়ুন: শীতকালে গরম পানির গিজার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
৩৮৬ দিন আগে
শীতকালে গরম পানির গিজার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
শীতের মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই যে বিপত্তির অনুষঙ্গ আসে তা হলো ঠান্ডা পানিতে গোসলের অস্বস্তি। প্রাথমিক পর্যায়ে অস্বস্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমেই তা ধাবিত হয় সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডাজনিত অসুস্থতার দিকে। এই স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে অনায়াসেই মুক্তি পাওয়ার একটি কার্যকর উপায় হলো গিজার ব্যবহার করা। ইতোমধ্যে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা যন্ত্রটি শীতকালে প্রতিদিনের স্নানকে আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে। চলুন,বর্তমান বাজারে চলমান কয়েকটি গিজারের দাম ও ফিচারের পাশাপাশি জেনে নিই- এই গৃহস্থালি যন্ত্রটি কেনার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
গিজার কেনার সময় যে বিষয়গুলো দেখে নেওয়া উচিত
.
ধারণ ক্ষমতা
পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে একটি গিজারের উপযুক্ত ধারণ ক্ষমতা ভিন্ন হয়ে থাকে। ছোট পরিবারের জন্য সাধারণত ৬ থেকে ১৫ লিটার ইউনিট-ই যথেষ্ট,অপরদিকে বড় পরিবারগুলো জন্য দরকার হয় ২৫ থেকে ৫০ লিটার। ধারণ ক্ষমতা কি রকম হবে তার সঙ্গে সারা মাসে বিদ্যুৎ শক্তির খরচও সম্পৃক্ত। ছোট গিজারগুলো কম শক্তি ব্যবহার করে চাহিদা মেটাতে পারে, অন্যদিকে বড় আকারের গিজারগুলোর জন্য মাসে বিদ্যুৎ বিল অতিরিক্ত বেড়ে যায়।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
গিজারের ধরন
গিজার প্রধানত দুই ধরনের হয়- ইন্স্ট্যান্ট এবং স্টোরেজ। ইন্স্ট্যান্ট মডেলগুলো চাহিদা অনুযায়ী পানি গরম করে, স্থাপনে কম জায়গা নেয়, এবং বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চয় করে। এগুলো মূলত রান্নাঘর বা ছোট বাথরুমের মতো সংকীর্ণ রুমগুলোতে স্থাপনের জন্য উপযুক্ত। আর স্টোরেজ গিজারে থাকে উত্তাপযুক্ত ট্যাংক,যেখানে পরবর্তীতেও ব্যবহারের জন্য গরম পানি সংরক্ষণ করা থাকে। ফলে দিনে দুইয়ের অধিকবার গোসল করা যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত লোড নিতে পারে বিধায় স্টোরেজের মডেলগুলোতে বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়।
কর্মদক্ষতা
পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের জন্য উচ্চ কর্মদক্ষতা সম্পন্ন গিজারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এর জন্য উচ্চ শক্তির স্টার রেটিং বা উচ্চ-ঘনত্ব পিইউএফ (পলিউরেথেন ফোম) নিরোধকের মতো উন্নত বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কিনা তা দেখা উচিত। এই ধরনের নিরোধক তাপের অপচয় রোধ করে পানির তাপমাত্রা বেশিক্ষণ ধরে রাখে এবং কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এর সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় শাটঅফের ফিচারটি থাকলে সর্বোত্তম কর্মক্ষমতা নিশ্চিতের জন্য অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহারের দরকার হয় না।
পানির ট্যাংকের গাঠনিক উপাদান
পানি সংরক্ষণের ট্যাংকটি কি ধরনের উপাদান দিয়ে বানানো হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে গিজারের স্থায়িত্ব এবং কার্যক্ষমতা। স্টেইনলেস স্টিলের ট্যাংকে প্রায়শই কাচ বা এনামেলের প্রলেপ থাকে। এতে করে পুরো গঠনটি ক্ষয় প্রতিরোধী হয় এবং উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। একইভাবে,এবিএস প্লাস্টিকের ট্যাংকগুলো ওজনে হালকা,মরিচারোধী এবং সহজে রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য হয়। এভাবে যন্ত্রটি টেকসই হওয়ার মাধ্যমে এতে কোনো রকম ফাটল বা চিড় ধরার আশঙ্কা লোপ পায়।
আরো পড়ুন: কীভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা
গরম করার উপকরণ
পানি কতটা দ্রুত গরম হচ্ছে এবং উষ্ণতার মাত্রা কতটুকু এগুলোর জন্য কিছু উপকরণের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। এক্ষেত্রে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য উপাদান হচ্ছে কপার, কেননা এর আছে উচ্চতর তাপ পরিবাহিতা এবং স্থায়িত্ব। এর বিকল্প হিসেবে গ্লাসের প্রলেপ থাকা উপাদানগুলোর যান্ত্রিক ক্ষয় প্রতিরোধ এবং আয়রনযুক্ত পানি প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা রয়েছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে রক্ষণাবেক্ষণের খরচও যথেষ্ট পরিমাণে কমিয়ে আনে।
নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
অধিকাংশ গিজারের একটি সাধারণ যন্ত্রাংশ হলো থার্মোস্ট্যাট। যখন যন্ত্রের মধ্যে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় তখন এর চাপ রিলিজ ভাল্বগুলো খুলে যায়। এভাবে গিজার অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে মুক্তি পায়। এর সঙ্গে আরও যুক্ত করা যায় শকপ্রুফ এক্সট্যারিয়র এবং ড্রাই হিটিং সুরক্ষা,যেগুলো নানা ধরনের বৈদ্যুতিক বিপদের আশঙ্কা দূর করে। এই অন্তর্ভুক্তিগুলোতে অতিরিক্ত খরচের ধাক্কা থাকলেও বাসা-বাড়িতে নিরাপদে থাকার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
স্থাপনের জায়গা
বাথরুম বা রান্নাঘরে যে স্থানেই বসানো হোক না কেন,সেই জায়গাটির প্রশস্ততা এবং উচ্চতা কতটুকু তা আগে থেকেই দেখে নিতে হবে। উল্লম্ব গিজারগুলো সীমিত প্রস্থের লম্বা বাথরুমের জন্য প্রযোজ্য,অপরদিকে অনুভূমিকগুলো উচ্চতায় কম অথচ প্রশস্ত সিলিং স্পেসগুলোতে ভালো ফিট করে। এই জায়গা নির্ধারণটি গিজারের সুষ্ঠভাবে কাজ করার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয়।অপর্যাপ্ত জায়গায় যন্ত্রের সামগ্রিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে।
আরো পড়ুন: অ্যাপলের আইফোন ১৬ সিরিজ উদ্বোধন: নতুন ফিচার ও মূল্য তালিকা
ওয়ারেন্টি এবং বিক্রয় পরবর্তী সেবা
যেকোনো ইলেক্ট্রিক যন্ত্রপাতির গুণমানের নিশ্চয়তা বিচারের একটি বড় নির্ধারক হলো ওয়ারেন্টি। সার্ভিস ও পার্ট্স দুটোতেই ওয়ারেন্টি থাকলে সেই যন্ত্রের কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে। বিষয়টি গিজারের জন্যও প্রযোজ্য। স্ট্যান্ডার্ড কভারেজ ট্যাংকের জন্য ৩ থেকে ৫ বছর এবং গরম করার সামগ্রীগুলোর জন্য ১ থেকে ২ বছর ওয়ারেন্টি থাকা উচিত। সেই সঙ্গে ডিস্কেল করা এবং নিরাপত্তা ভাল্ব চেক করার মতো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণগুলো করা হলে তা যন্ত্রের আয়ু বাড়ানো ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গিজারে যুক্ত হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি। তেমনি একটি প্রযুক্তি হচ্ছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী সেটিংস,যেখানে পছন্দ অনুযায়ী যন্ত্রের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সেট করা যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো কোনো গিজারে সামঞ্জস্যযোগ্য নব থাকে;একদম সাম্প্রতিকগুলোতে থাকে ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এই ফিচারের মূল উদ্দেশ্য হলো যন্ত্রের কার্যক্ষমতার সঙ্গে আরামদায়ক উষ্ণ গোসলের সমন্বয় করা। এতে করে যন্ত্র সর্বোচ্চ পাওয়ারে পরিচালিত হয় না বিধায় তাপশক্তি অপচয় কমে এবং সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ শক্তিও তুলনামূলকভাবে কম খরচ হয়।
দাম এবং ব্র্যান্ড
যারা যন্ত্রের প্রতিটি সুক্ষ্ম বিষয় যাচাই করা নিয়ে বিড়ম্বনায় থাকেন তারা কেবল ব্র্যান্ড পরিচয়কে গুরুত্ব দিতে পারেন। গ্রাহকদের কাছে কোম্পানিটির গ্রহণযোগ্যতা কেমন শুধু এক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করা হলে কোম্পানিটির পণ্যের গুণমান এবং বিক্রয়োত্তর পরিষেবা যাচাই করা যায়। এ ধরনের বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডগুলো সর্বস্তরের গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে তাদের পণ্য ডিজাইন বা আমদানি করে থাকে। তাই যারা স্বল্প বাজেটের ওপর নির্ভর করে দাম ও ফিচারের সঙ্গতির হিসেব করেন তারাও ব্র্যান্ড যাচাইকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
বর্তমানে বাজারের সেরা কয়েকটি গিজার
.
হায়ার ইএস৩০এইচ-সিকে৩ (বিডি)
মূল্য: ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার ৮০০ টাকা
এই অনুভূমিক মডেলটির পানি ধারণ ক্ষমতা ৩০ লিটার এবং এটি ছোট থেকে সর্বোচ্চ মাঝারি পরিবারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এর ১ হাজার ৬৫০ ওয়াটের এনকোলজি হিটিং উপাদানটি শক্তির ব্যবহার কমিয়ে কার্যকরভাবে উষ্ণকরনের বিষয়টি নিশ্চিত করে। আর্দ্র পরিবেশে যন্ত্রের স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তাকে অটুট রাখতে রয়েছে পানিরোধী আইপিএক্স৪ এবং শকপ্রুফ রেটিং। ইউএমসি ট্যাংক এবং ম্যাগনেসিয়াম রড ক্ষয় রোধ করে ট্যাংকের আয়ুষ্কাল বাড়ায়। উপরন্তু,ট্যাংকে ৭ বছর এবং হিটিং পার্টসে ৪ বছরের ওয়ারেন্টি আছে।
ওয়ালটন ডব্লিউজি-ডব্লিউ৬৭এল
মূল্য: ৯ হাজার ৭১১ টাকা
৬৭ লিটারের এই বৃহদাকৃতির মডেলটি যেকোনো যৌথ পরিবারের জন্য উপযোগী। এর বিশেষত্বের মধ্যে রয়েছে মোবাইল অ্যাপ কন্ট্রোল,অ্যালেক্সা এবং গুগল হোমের মাধ্যমে ভয়েস কমান্ড। ব্যবহারের সময় সেট করার জন্য রয়েছে স্বয়ংক্রিয়-শিডিউলার ব্যবস্থা। গ্যালভানাইজ্ড স্টিলের ট্যাংকে প্রলেপ রয়েছে ২৭৫জিএসএম পর্যন্ত এবং হিটিং সামগ্রীর কেন্দ্রে আছে ইনকলয়-৮০০। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সুবিধা দেয় ডাবল-পোল থার্মোস্ট্যাট এবং ক্ষয়রোধের জন্য একটি ম্যাগনেসিয়াম অ্যানোড রড।
আরো পড়ুন: টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
মিডিয়া ডি৪০-২০এ
মূল্য: ১২ হাজার ৮০০ থেকে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা
এখানে হিটিং উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে কপার এবং ঘন ম্যাগনেসিয়াম অ্যানোড ৬০ শতাংশ শক্তি সাশ্রয়ের ক্ষমতা রাখে। ৪০ লিটারের গিজারটি সিলিং থেকে ঝুলিয়ে স্থাপন করতে হবে। মাত্র ৭ কেজি ওজনের যন্ত্রটি যথেষ্ট টেকসই, তাই স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। মিডিয়া থেকে এর বডি ওয়ারেন্টি দেওয়া হচ্ছে ৫ বছর এবং কপার কয়েল গ্যারান্টি ৩ বছর। কার্যকারিতা ও সহজে বহনযোগ্যতার বিবেচনায় মাঝারি পরিবারের জন্য এটি উৎকৃষ্ট হতে পারে।
ভিশন গিজার ৩০ লিটার প্রাইম
মূল্য: ৭ হাজার ৭০০ থেকে ৮ হাজার ২৫০ টাকা
এই সিলিং-টাইপ গিজারটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অটোস্টপ থার্মোস্ট্যাট যন্ত্রাংশ। ৩০ লিটার ধারণ ক্ষমতার ট্যাংকটির অভ্যন্তরীণ ভাগ গ্লাস ফাইবার দিয়ে গড়া বিধায় উত্তাপের মাত্রা নিখুঁত থাকে। মজবুত বডি ৭ বার (চাপের একক) পর্যন্ত চাপ সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। অবশ্য ২ বছরের ওয়ারেন্টি অনেক কম, তবে শক্তিশালী বিল্ড এবং সাশ্রয়ী মূল্যের দিক থেকে এটি ছোট পরিবারের জন্য একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
আরো পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
ডিওয়ানকো ৪৫ লিটার গিজার
মূল্য: ৪ হাজার ৭৯৯ থেকে ৫ হাজার ১০০ টাকা
অভূতপূর্ব সীমিত মূল্যের এই গিজার বডি অগ্নিরোধী গ্লাস ফাইবারে সমৃদ্ধ। স্বয়ংক্রিয় তাপীয় কাট-অফ ব্যবস্থা দক্ষতা বাড়ানো পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তার দিকটি তদারক করে। প্রতিবার পানি গরম করতে এটি ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় নেয়, যার পর উষ্ণতা বজায় থাকে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা পর্যন্ত। যন্ত্রাংশ এবং সার্ভিস ওয়ারেন্টি ৩ বছর। সব মিলিয়ে,এটি ন্যূনতম খরচে গিজারের অত্যাধুনিক ফিচারগুলোর অভিজ্ঞতা নেওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ।
পরিশিষ্ট
উপরোক্ত গরম পানির গিজারগুলোর মাধ্যমে এক নজরে চলমান শীতের বাজারের ধারণা লাভ করা যায়। মূলত পরিবারের সুনির্দিষ্ট চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গিজারের ধারণক্ষমতা,কর্মদক্ষতা ও ওয়ারেন্টিসহ প্রয়োজনীয় ফিচারগুলো যাচাই করা উচিত। বড় পরিবারের জন্য ওয়াল্টনের ৬৭ লিটারের মডেলটি উৎকৃষ্ট, অন্যদিকে হায়ারের ৩০ লিটারের মডেলটি ভারসাম্যতা দিচ্ছে দক্ষতা এবং স্থায়িত্বে। বাজেট-সচেতন ক্রেতাদের জন্য উপযুক্ত হতে পারে ডিওয়ান্কো বা ভিশন। এক্ষেত্রে অবশ্য কর্মদক্ষতার বিচারে এগিয়ে থাকবে মিডিয়ার ডি৪০। উপরন্তু,দীর্ঘ মেয়াদে খরচ বাঁচানোর ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফিচারকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্রয়ের সময় বাজেট বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটু নমনীয় হওয়া উত্তম।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
৩৯৪ দিন আগে
হোয়াটসঅ্যাপকে ২১৩.১৪ কোটি রুপি জরিমানা ভারতের
২০২১ সালের বিতর্কিত গোপনীয়তা সম্পর্কিত নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে মেটার মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপকে ২১৩.১৪ কোটি রুপি জরিমানা করেছে ভারতের প্রতিযোগিতা কমিশন (সিসিআই)।
প্রযুক্তি সাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে সোমবার এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
একইসঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য মেসেজিং অ্যাপটিকে বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে অন্যান্য মেটা ইউনিটের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের ডেটা শেয়ার করা বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে অভিযোগ ওঠার পর ওই বছরই এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে সিসিআই।
আরও পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
অনুন্ধানে দেখা গেছে, ‘টেক ইট অর লিভ ইট’ গোপনীয়তা আপডেটে ব্যবহারকারীদের অস্বীকৃতি জানানোর কোনো সুযোগ না রেখেই ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে এই নীতি গ্রহণ করতে তাদের বাধ্য করে হোয়াটসঅ্যাপ।
হোয়াটসঅ্যাপের সংগৃহীত ব্যবহারকারীদের ডেটা মেটার অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার ফলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য বাধা তৈরি হয়েছে।
ভারতে মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪৫ কোটিরও বেশি।
৪০৪ দিন আগে
চাঁদের দূরবর্তী অংশের অজানা তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা
নতুন একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, কোটি কোটি বছর আগে চাঁদের রহস্যময় দূরবর্তী অংশেও আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল।
চীনের চ্যাং’ই-৬ প্রথম মহাকাশযান চাঁদের দূরবর্তী দিক থেকে পাথর ও ধুলা নিয়ে ফেরার পর তা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা এ দাবি করেছেন। শুক্রবার নেচার অ্যান্ড সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
পাথরগুলোর মধ্যে প্রায় ২৮০ কোটি বছরের পুরনো আগ্নেয়গিরির শিলার টুকরা খুঁজে পেয়েছে দুটি পৃথক গবেষক দল। সেগুলোর মধ্যে এমন একটি শিলার টুকরা পাওয়া গেছে যা ৪২০ কোটি বছর আগের।
অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহ আগ্নেয়গিরি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার হ্যামিল্টন বলেছেন, ‘(চাঁদের) ওই অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা নমুনা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি এমন একটি অঞ্চল যেখানকার বিষয়ে আমাদের কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই।’
আরও পড়ুন: ইসরো চন্দ্রযান-৩: ভারতের চন্দ্র বিজয়ে নারী বিজ্ঞানীদের সাফল্য
পৃথিবী থেকে চাঁদের যে অংশ দেখা যায়, অর্থাৎ নিকটবর্তী অংশে যে একসময় সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ছিল, বিজ্ঞানীরা সে বিষয়ে আগেই জেনেছেন। ফলে একটি ধারণা সবসময়ই ছিল যে, দূরবর্তী অংশেও এমন আগ্নেয়গিরি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। আর সাম্প্রতিক গবেষণা এ ধারণাকেই সত্যতা দিয়েছে।
চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক কিউ-লি লি বলেন, নতুন অনুসন্ধানে চাঁদের দূরবর্তী অংশে ১০০ কোটি বছরেরও বেশি সময় ধরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের তথ্য পাওয়া গেছে। এই প্রক্রিয়া কীভাবে এত দিন স্থায়ী হয়েছিল তা ভবিষ্যতের গবেষণায় জানা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
৪০৮ দিন আগে
আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে ব্যবহৃত বস্তুটি হওয়ায় ক্রমশ মূল্যবান হয়ে উঠছে স্মার্টফোনগুলো। বিশেষ করে পুনঃবিক্রয় মূল্য এবং জনপ্রিয়তার কারণে রীতিমতো সম্পদতুল্য বস্তু আইফোনগুলো। তাই ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই ফোনগুলো চুরি হওয়ার পরিমাণ। এই সমস্যার নিরসনে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের রয়েছে অত্যাধুনিক সুরক্ষা ব্যবস্থা। এই প্রতিরক্ষামূলক ফিচারগুলো চুরি করা ডিভাইস ব্যবহার বা বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে, ব্যবহারকারীর ডেটাগুলোর চূড়ান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। চলুন, আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের কয়েকটি কার্যকরী ফিচার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আইফোন চুরি প্রতিরোধে কয়েকটি কার্যকরী নিরাপত্তা ফিচার
.
অ্যাক্টিভেশন লক
ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাপলের তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা বা ক্লাউড সার্ভিসটি আইক্লাউড নামে পরিচিত। এখানে আইফোনকে একটি অনন্য অ্যাপল আইডির সঙ্গে লিংক করা হয়। যখন ডিভাইসে থাকা ফাইন্ড মাই আইফোন ফিচারকে সক্রিয় করা হয়, তখন তার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায় অ্যাক্টিভেশন লক। এর ফলে চুরির পর ডিভাইসটি পুরো ফর্মেট দেয়া বা রিসেট করা হলেও, আসল মালিকের অ্যাপল আইডি ও পাসওয়ার্ড ছাড়া ফোন খোলা যাবে না। সঙ্গত কারণেই কল করা বা এসএমএস পাঠানোসহ বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহারের মতো কাজগুলো করা সম্ভব হবে না। এতে করে বিক্রয়ের জন্য একের পর এক হাত বদল হলেও প্রান্তিক গ্রাহক পর্যায়ে ফোনটি আর বিক্রয় উপযোগী থাকে না।
ফেস ও টাচ আইডি
মুখের ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ আইফোন আনলক করার সবচেয়ে নিরাপদ উপায়গুলোর শীর্ষে রয়েছে। এখান ফেস আইডি মূলত উন্নত ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য একটি অনন্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ করে। বিষয়টি টাচ আইডির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেখানে আঙ্গুলের ছাপও প্রতিটি মানুষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হয়। তাই কোনোভাবে পিন কোড বা পাসওয়ার্ড যোগাড় করা সম্ভব হলেও এই বায়োমেট্রিক তথ্যগুলোর অভাবে ফোনটি আনলক করা দুষ্কর হয়ে পড়ে।
টপ লোড বনাম ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন: জেনে নিন সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
ফাইন্ড মাই নেটওয়ার্ক
অ্যাপলের এই উদ্ভাবনী ব্যবস্থাটি হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হওয়া আইফোন খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর। এমনকি অফলাইনে থাকলেও এই ট্র্যাকিং সিস্টেমটি চালু থাকে। অবশ্য এখানে ব্লুটুথ অন থাকার প্রয়োজন হয়। ফাইন্ড মাই নেটওয়ার্ক প্রধানত কাছাকাছি থাকা অ্যাপল ডিভাইসের ব্লুটুথ সংকেত ব্যবহার করে হারিয়ে যাওয়া আইফোনের অবস্থান চিহ্নিত করে। এই বেনামী ও এন্ক্রিপ্ট করা সংকেতগুলো চোরের অলক্ষ্যেই ফোনের অবস্থানটি আসল মালিককে জানিয়ে দিতে পারে।
দূর থেকে ডেটা মুছে ফেলা
এখানে আগে থেকে আইফোনে ফাইন্ড মাই আইফোন অ্যাপটি চালু বা আইক্লাউডের সঙ্গে ফোনকে লিংক করে রাখতে হয়। এতে করে পরবর্তীতে চুরি হলে ব্যবহারকারীরা দূর থেকেই ডিভাইসে থাকা যাবতীয় সংবেদনশীল তথ্য মুছে ফেলতে পারে। ফলে কোনোভাবে ফোনের নিরাপত্তা বূহ্য ভাঙা সম্ভব হলেও ফোনের আসল মালিকের গোপনীয়তাগুলো প্রকাশিত হয় না। ফোনের ডেটা নিয়মতি আইক্লাউডে ব্যাকআপ রাখা হলে, ডিভাইস পুনরুদ্ধারের পর সেই মুছে ফেলা তথ্যগুলোও ফিরে পাওয়া যেতে পারে।
টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (টুএফএ)
পিন কোড বা পাসওয়ার্ডের ওপর নিরাপত্তার অতিরিক্ত স্তর যোগ করে এই টুএফএ সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে অ্যাপল আইডিতে সফলভাবে সাইন ইন করার জন্য ডিভাইসে নিবন্ধিত ফোন নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হয়। ফলে অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে যাওয়ার পরেও যাচাইকরণ কোড ছাড়া অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না। এই পদ্ধতিটি আইক্লাউড ও আইটিউন্সসহ অন্যান্য অ্যাপল পরিষেবাগুলোকে অননুমোদিত লগইন থেকে বিরত রাখে।
মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
সিকিউর ইন্ক্লেভ
বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি তথ্যচুরির মতো সাইবার অপরাধগুলোতেও ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ফলে প্রায় ক্ষেত্রে পেশাদার হ্যাকারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীরা। এই পেশাদার চৌর্যবৃত্তি থেকে সাধারণ আইফোন ব্যবহারকারীকে নিরাপত্তা দিতেই ডিজাইন করা হয়েছে সিকিউর ইন্ক্লেভের। এটি অনেকটা ব্যক্তিগত লকারের মতো কাজ করে, যেখানে সংরক্ষিত থাকে ফেস আইডি, টাচ আইডি এবং অ্যাপল পে-এর মতো বায়োমেট্রিক তথ্যাদি। প্রত্যেকটি গোপনীয় তথ্য এখানে এমনভাবে এন্ক্রিপ্ট করা থাকে যে আপাত অবস্থায় এগুলোকে কোনো পাসকোড বলে মনে হয় না। ফলে হ্যাকিংয়ের জন্য এগুলো খুঁজে বের করাটাই যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অবশ্য এই প্রচেষ্টাটি একেবারে ব্যর্থ হয় না; তবে তাতে অনেক বেশি সময় লাগে। আর এই সময়টি অ্যাপলের ট্র্যাকিং সিস্টেম কাজে লাগিয়ে ফোনের অবস্থান শনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট।
পরিশিষ্ট
আইফোন চুরি প্রতিরোধে এই নিরাপত্তা ফিচারগুলো সামগ্রিকভাবে ডিভাইসের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। অ্যাক্টিভেশন লক, টুএফএ, এবং ফেস ও টাচ আইডি আইফোনকে অননুমোদিত অ্যাক্সেস থেকে রক্ষা করে। অপরদিকে ফাইন্ড মাই নেটওয়ার্ক ও রিমোট ডেটা ইরেজ ফোন চুরির পরেও ডেটা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। এগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলো ফিচারই আইফোন এক্স ও এর পরবর্তী মডেলগুলোতে পাওয়া যায়। তবে টাচ আইডি আইফোন ৬ থেকে ৮ এবং আইফোন এসই-এর ২য় প্রজন্ম ও তার পরবর্তী মডেলগুলোতে রয়েছে। উপরন্তু, সিকিউর এন্ক্লেভ ফিচারটি রয়েছে আইফোন ৫এসসহ তার পরবর্তী ভার্সনগুলোতে।
রয়্যাল এনফিল্ড ৩৫০ সিসির নতুন চারটি মোটরবাইক মডেলের আকর্ষণীয় সব ফিচার
৪৩২ দিন আগে