চট্টগ্রাম
এসএসসি: মেয়ের ভালো ফলেও মুখে হাসি নেই রিকশাচালক বাবার
বাবা পেশায় রিকশাচালক, নাম আবদুল কাদের। আর তার মেয়ে কোহিনুর আক্তার—এবার এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তবুও মেয়ের এই অসাধারণ সাফল্যে আনন্দ নেই বাবার চোখে-মুখে। কারণ, মেয়েকে আর লেখা পড়া করাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এ অবস্থায় বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন বাবা আবদুল কাদের।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, লাকসাম উপজেলার গ্রামের একটি স্কুল উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়। তার থেকে দুই কিলোমিটার দূরে খিলপাড়া গ্রাম। সেই গ্রামের আবদুল কাদের ও রেহানা বেগম দম্পতির ২ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে কোহিনুর মেজ। সে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। ৭ম থেকে তার ক্লাস রোল এক।
কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘বাবার তেমন সামর্থ্য নেই। দুপুরে খাবারের জন্য কিছু টাকা পেতাম। তা দুই মাস না খেয়ে জমিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে এক মাস প্রাইভেট পড়েছি। পরে টাকা না থাকায় আর প্রাইভেটে যাইনি। এদিকে কতদিন দুপুরে কিছু না খেয়ে থাকা যায়? পরে প্রাইভেটে না যাওয়ায় স্যাররা কারণ জানতে চান। টাকা না থাকার কথা বলায় তারা বিনামূল্যে পড়িয়েছেন। আল্লাহর রহমত,বাবার মা‘র দোয়া আর স্যারদের সহযোগিতা এ রেজাল্ট পেয়েছি। ভবিষ্যতে চিকিৎসত হতে চাই। কারণ আমার গ্রামে একটি মাত্র ফার্মেসি আছে। কেউ অসুস্থ হলে দূরে লাকসাম নিতে হয়। চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করতে চাই।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘আমার যে আয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন, সেখানে কিভাবে মেয়েকে আরও পড়ালেখা করাবো তা নিয়ে টেনশনে রয়েছি। সহযোগিতা পেলে মেয়েটিকে আরও পড়াতে পারবো।’
উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. মাসুদুল হক বলেন, ‘কোহিনুর মেধাবী শিক্ষার্থী। সে মোট ১১৯৩ নম্বর পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে। তার বাবার পক্ষে মেয়ের লেখাপড়ায় যোগান দেওয়া দুষ্কর। সে সহযোগিতা পেলে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে।’
১৬৮ দিন আগে
বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যু
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
১৭০ দিন আগে
হত্যার পর স্ত্রীকে ১১ টুকরো: ‘ঘাতক’ স্বামী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরো করে গুম করার চেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭।
শুক্রবার (১১ জুলাই) মধ্যরাতে ইউএনবিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাবের জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক এম আর এম মোজাফ্ফর হোসেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিক্তিতে র্যাব-৭ এর একটি দল চট্টগ্রাম থেকে স্ত্রীর খুনি এবং হত্যার পর ঠান্ডা মাথায় লাশ ১১ টুকরো করে নিজ ঘরে ফেলে পালিয়ে যাওয়া ঘাতক স্বামীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এ ব্যাপারে (শনিবার) সকালে সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে এসএসসি ফলপ্রত্যাশীকে হত্যা, ঘাতক গ্রেপ্তার
এর আগে বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অক্সিজেন এলাকার পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির এফজেড টাওয়ারের ১০ তলার বাসা থেকে ওই নারীর টুকরো করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয়রা নিহত গৃহবধূর স্বামীকে আটকে রাখলেও গ্রিল কেটে পালিয়ে যেতে সমর্থ হন সুমন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের।
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় দেড় মাস আগে এফজেড টাওয়ারের দশম তলায় বাসা ভাড়া নেন সুমন ও ফাতেমা। তাদের সিফাত নামে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
১৭০ দিন আগে
বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে জালে জড়িয়ে প্রাণ হারালেন বৃদ্ধ
ফেনীর ফুলগাজীতে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে পাতানো কারেন্ট জাল তুলতে গিয়ে নুরুল আলম (৬২) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকালে উপজেলার বন্দুয়া দৌলতপুর এলাকা থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আলম দৌলতপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক কমান্ডারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) ফজরের নামাজ শেষে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে পাতানো কারেন্ট জাল তুলতে যান নুরুল আলম। এ সময় অসাবধানতাবশত তার পা জালে আটকে যায়। সেখানেই আটকে ছটফট করে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭ স্থানে ভাঙন, ৩৫ গ্রাম প্লাবিত
নিহতের প্রতিবেশী ফখরুল আলম স্বপন জানান, নুরুল আলম কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন এবং কিছুদিন আগে স্ট্রোকও করেছিলেন। সারা দিন নিখোঁজ থাকার পর বিকালে স্বজনরা বাড়ির পাশ থেকে তার লাশটি উদ্ধার করেন।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, রাতে এ ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। এমন মৃত্যু কখনোই কাম্য নয়।
১৭১ দিন আগে
চট্টগ্রামে গৃহবধূর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ থানার রৌফাবাদ এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে ফাতেমা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ওই গৃহবধূর স্বামীকে স্থানীয়রা আটক করলেও তিনি কৌশলে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে পাহাড়িকা হাউজিংয়ের এফজেড টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে ১১ খণ্ডে বিভক্ত লাশটি উদ্ধার করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ।
নিহত ফাতেমা আক্তার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মো. কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তিনি সুমন (২৫) নামে এক গাড়িচালকের স্ত্রী। তাদের ঘরে সিফাত নামে একটি ছোট্ট সন্তান রয়েছে।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান জানান, গতকাল (বুধবার) রাত দেড়টার দিকে প্রতিবেশীরা ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক শব্দ শুনে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফাতেমা আক্তারের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমাকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ একাধিক টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখা হয়। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবিদ হোসেন জানান, পাহাড়িকা আবাসিক এফজেড টাওয়ারের দশম তলায় বসবাস করতেন স্বামী সুমন ও ফাতেমা আক্তার। ঘটনাস্থল থেকে একটি বটি ও একটি চাপাতি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা গতকাল রাতে নিহত গৃহবধূর স্বামীকে ধরে একটি বাড়িতে আটকে রাখেন। কিন্তু সেই ঘরের জানালার গ্রিল কেটে তিনি পালিয়ে যান।
১৭২ দিন আগে
ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত
ফেনীতে টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে ফেনী শহরের।
ফেনী বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, প্লাবিত এলাকার অনেক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার ও সাব-স্টেশন ডুবে যাওয়ায় নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হতে পারে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১২টায় নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ১৩.৯২ মিটার, যা বিপদসীমার চেয়ে ১.৫৭ মিটার বেশি। মাত্র ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে নদীর পানি বেড়েছে ৬.৯২ মিটার (২২ ফুট ১০ ইঞ্চি)।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেনীতে ৪৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, বুধবার ও বৃহস্পতিবারও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বাঁধের পরশুরামের জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধরে একটি এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুরে একটি স্থানের বাঁধ ভেঙেছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগরে একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়ায় দুটি স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরামের সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি এবং ফুলগাজীর দৌলতপুরে একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।
১৭৩ দিন আগে
ফেনীতে ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, বেড়িবাঁধে ভাঙন
টানা দুই দিনের বর্ষণে ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানের রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাট পানিতে ডুবে গেছে। ফুলগাজীর শ্রীনগর, পরশুরামের রাধানগর, জঙ্গলঘোনা ও মির্জানগর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলগাজী ও পরশুরামের নিম্নাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ স্থানে নিতে মাইকিং করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মজিবুর রহমান জানান, ফেনীতে গত সোমবার (৭ জুলাই) বেলা ৩টা থেকে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৪৪০ মিলিমিটার, যা চলতি মৌসুমে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত। এতে শহরজুড়ে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
টানা বৃষ্টিতে ফুলগাজী বাজারের শ্রীপুর রোডে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি দোকান ধসে গেছে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সিলোনিয়া নদীর পানি ও পরশুরামে বৃষ্টির পানি বিপৎসীমায় পৌঁছেছে।
বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে শহরের এসএসকে রোড, একাডেমি রোড, পাঠানবাড়ি রোড, নাজির রোড, মিজান রোড, কলেজ রোড, শান্তি কোম্পানি রোড, কদলগাজী রোড, পেট্রোবাংলোসহ বিভিন্ন এলাকা।
শহরে রিকশা, ভ্যান ছাড়া তেমন কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও আবার কোমর পানি জমে আছে। অধিকাংশ বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি উঠে গেছে।
স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করেও কোমরপানির কারণে যেতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন গ্রুপে স্কুলগুলো ছুটি ঘোষণা করেছে। যারা পরীক্ষার্থী ছিলেন তারা বিশেষভাবে পানির মধ্যে হেঁটে বা রিকশা-ভ্যানে করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
মার্কেট ও দোকানগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে গেছে অনেক গাড়ি। সকাল থেকে সড়কে আটকেপড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় কোমর পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। ফুলগাজী বাজারের শ্রীপুর রোডে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ফেনী পৌর হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী তারেক জানান, সকাল থেকে দোকানে পানি ঢুকে সব মালপত্র ভিজে গেছে। গেল বছরের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সিলোনিয়া নদীর মেলাঘর, গদানগর ও মনিপুর গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলার মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মান্নান বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি গড়িয়ে সুবার বাজারের দক্ষিণাংশ তলিয়ে গেছে।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১২.৯৬ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে বিকেল ৩টায় ১২.২৬ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল। বিকেল চারটার পর থেকে মুহুরী নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফেনী উজানে ভারতের ত্রিপুরা ও ফেনীতে এখনও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার নেপাল সাহা বলেন, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) চারটার পর থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মজিবুর রহমান জানান, আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি নামছে ধীরগতিতে।
ফেনী পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেন বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টি ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।
ইতোমধ্যে পৌরসভার সাতটি টিম মাঠে কাজ করছে। চলমান বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কহুয়া নদীর বাঁধের উপর দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। তবে এখনো তা বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে সীমান্তবর্তী মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বাড়ছে।
১৭৩ দিন আগে
টানা বর্ষণে ডুবেছে ফেনী শহর, ভেঙেছে মুহুরীর বাঁধ
ফেনীতে গতকাল সোমবার (৭ ই জুলাই ) দুপুর ১২টা হতে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি মৌসুমের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
টানা বর্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে গেছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শহরবাসী। বৃষ্টির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দুর্যোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
১৭৪ দিন আগে
চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর
চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আজ সোমবার থেকে পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম ড্রাইডক কর্তৃপক্ষ। রবিবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে এনসিটি হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চুক্তি শেষ হওয়ায় ১৭ বছর পর এনসিটি ছেড়েছেন সাইফ পাওয়ার টেক। আজ সোমবার থেকে টার্মিনাল পরিচালনা শুরু করেছে নৌবাহিনীর মাধ্যমে ড্রাইডক। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় সরাসরি নৌবাহিনীকে না দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত একটি সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানার মধ্যেই এটির অবস্থান।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তির বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে। সোমবার ড্রাইডকের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই দিন সাইফ পাওয়ার টেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। আজ সোমবার থেকে নৌবাহিনীর মাধ্যমে এটি পরিচালনা করছে চিটাগাং ড্রাইডক।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টেকনিক্যাল কারণে নৌবাহিনী সরাসরি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেনি। তবে ড্রাইডকের মাধ্যমে তারা এটি পরিচালনা করবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের দায়িত্ব নিচ্ছে ড্রাইডক
সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমীন গণমাধ্যমকে জানান, নৌবাহিনীকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন তারা। এনসিটি ছাড়লেও তাদের কার্যক্রম চুক্তি অনুযায়ী বহাল আছে সিসিটিতে।
চট্টগ্রাম বন্দরে চারটি কনটেইনার টার্মিনাল আছে। এগুলো হলো– চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি), নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), জেনারেল কার্গো বার্থ (কনটেইনার ও বাল্ক-জিসিবি) এবং পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হওয়া ৩২ লাখ টিইইউস কনটেইনারের মধ্যে ৪৪ শতাংশ এককভাবে পরিচালনা হয়েছে এনসিটি থেকেই।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সাল থেকে এনসিটি পরিচালনা করছিল সাইফ পাওয়ারটেক।
১৭৫ দিন আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মসজিদে মিলল নিখোঁজ শিশুর রক্তাক্ত লাশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের একদিন পর ময়না আক্তার (৯) নামে এক শিশুর বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত লাশ স্থানীয় একটি মসজিদের দ্বিতীয় তলা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়ার পাড়া থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ময়না ওই পাড়ার বাহরাইন প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে এবং লতিফ মোস্তারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসার নূরানী বিভাগে পড়াশোনা করতেন।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে ময়না বাড়ি থেকে খেলাধুলা করতে বের হয়, তারপর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করা হলেও কোনো খবর না পেয়ে মাইকিংও করা হয়। পরদিন সকালে, শিশুরা হাবলিপাড়া জামে মসজিদে গিয়ে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় ময়নার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়। এরপর মসজিদের ঈমাম ময়নার মাকে খবর দেন।
পরে গ্রামবাসী মসজিদে গিয়ে ময়নার বিবস্ত্র ও গলায় কাপড় পেঁচানো লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্রে নৌকাডুবি: নিখোঁজের ২২ ঘণ্টা পর দুই শিশুর লাশ উদ্ধার
এদিকে, এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসী এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তপন সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে, তবে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা— তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
১৭৫ দিন আগে