বরিশাল
শেবাচিমে চিকিৎসকের অবহেলায় বীর প্রতীকের মৃত্যুর অভিযোগ
বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট রত্তন আলী শরিফ বীর প্রতীকের (৮২) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে হাসপাতালের পঞ্চম তলার ৫০০৩ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগ থেকে কয়েকবার কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকতে গেলেও চিকিৎসকরা কেবিনে গিয়ে চিকিৎসা দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের।
শনিবার বিকেলে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। রত্তন আলী বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন।
তার মেয়ে তানজিলা আক্তার ইমু বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমার বাবার ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শনিবার বিকেলে বাবাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির পর কেবিনে এসে একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যান। পরের দিন, অর্থাৎ গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একজন চিকিৎসক দেখে যান। এরপর গতকাল দুপুরে আমার বাবার অক্সিজেন লেভেল কমে যায়। ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ায় তিনি অচেতন হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে আমি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ডাকতে গেলে চিকিৎসক কেবিনে না এসে বাবাকে ওয়ার্ডে, নয়তো প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, তারপর বাবার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখনও চিকিৎসককে ডাকতে গেলে সেবারও তিনি আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। আমার বোন এক জ্যেষ্ঠ সচিবকে ফোনে ধরিয়ে দিলে তারপর কেবিনে আসেন চিকিৎসক। ততক্ষণে আমার বাবা মারা গেছেন।
রত্তন আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা দেশের জন্য যুদ্ধ করেও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন। সরকারের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে, এ ঘটনার পরপরই শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহাবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, এ রোগীকে আমার তত্ত্বাবধানে কেবিনে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা অবহেলার বিষয়টি আমি নিশ্চিত নই। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
১ ঘণ্টা আগে
ভোলায় ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি ট্রাকের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় থাকা তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাট বাজার-সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— মো. মিজান (৩৬), রিয়াজ উদ্দিন ও আজমিরী আমরিন (২০)। এদের মধ্যে মো. মিজান ও রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় আজমিরী আমরিনকে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে লালমোহন থেকে পাঁচ যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভোলার দিকে যাচ্ছিল। পথে মানিকার হাট বাজার এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী নিহত হন।
দুর্ঘটনায় আহত অটোরিকশার চালকসহ বাকি তিন যাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।
জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওসার বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
১ দিন আগে
১৫ বছরেও ভাঙা হয়নি আমতলীর পরিত্যক্ত আদালত ভবন, প্রাণের ঝুঁকিতে বিচারপ্রার্থীরা
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন-বিএডিসির অর্ধশত বছরের পুরনো পরিত্যক্ত দুটি দোতলা ভবনের কারণে বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২০ হাজার বিচারপ্রার্থীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
ঝুঁকি নিয়েই তারা পরগাছা গজানো ভবন-সংলগ্ন প্রবেশপথ দিয়ে আদালতে যাওয়া-আসা করছেন। জীর্ণ ভবনটির ইট-পলেস্তারা খসে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই দ্রুত ভবন দুটি অপসারণের দাবী জানিয়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, মেশিনারি যন্ত্রাংশ ও যন্ত্রপাতি মজুদ রাখার উদ্দেশ্যে আমতলী উপজেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ দুটি দোতলা ভবন নির্মাণ করে। ভবন দুটি ১৫ বছর আগেই উপজেলা প্রশাসন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। এত বছরেও ভবন দুটি অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বরগুনা জেলা বার কাউন্সিলের সদস্য ও অতিরিক্ত প্রকিসিউটর অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভবন দুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেগুলোর মাঝখান দিয়ে আদালতের প্রবেশদ্বার। সেখান দিয়ে প্রতিদিন বিচারকাজে হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আদালতে আসা-যাওয়া করছেন। ভবন দুটি এতই ঝুঁকিপুর্ণ যে, যেকোনো সময় ধ্বসে পড়তে পারে। ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ভবনগুলোতে পরগাছা জন্মে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলায়ও ভবনের ভেতরে মানুষ প্রবেশ করতে ভয় পায়। তাই ভবন দুটি যত দ্রুত সম্ভব অপসারণের দাবি তুলেছেন আদালতের বিচারপ্রার্থীরা।
সরেজমিনে আদালত চত্বর ঘুরে দেখা যায়, দুটি ভবনেরই কিছু কিছু স্থান থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়েছে। ভবনে পরগাছা জন্মে ভুতুড়ে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভগ্নদশা ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতে যাওয়া-আসা করছে অসংখ্য মানুষ। এই অবস্থায় যদি ভবন ধ্বসে পড়ে, তাহলে বিচারপ্রার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
আদালতে আসা বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ মাস্টার বলেন, আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন দেখতে যেমন অসুন্দর, তেমনি জীবনের ঝুঁকিও অনেক। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এত ঝুঁকিপুর্ণ ভবন আদালতের যেমন ভাবমুর্তি বিনষ্ট করছে, তেমনি আদালতের প্রবেশদ্বার দিয়ে চলাচলকারী মানুষের জন্যেও বেশ ঝুঁকি রয়েছে।
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে দুটি দ্বিতল ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো ধসে পড়লে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুহু-উল আলম নবীন বলেন, বিএডিসির পরিত্যক্ত ভবন দুটি বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। আদালতে প্রবেশপথে কখন কী হয়ে যায়, আল্লাই জানে!
আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও যন্ত্রপাতি মজুদ রাখতে ভবন দুটি নির্মাণ করা হয়। ওই ভবন দুটি অনেক আগেই উপজেলা প্রশাসন পরিত্যক্ত ঘোষণ করেছে। কিন্তু কেন সেগুলো অপসারণ করা হচ্ছে না, তা আমার বোধগম্য নয়।
বরগুনা জেলা বার কাউন্সিল সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণ করতে উপজেলা প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের জীবনের ঝুঁকি লাঘবের দাবি করেন তিনি।
আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আগের পরিত্যক্ত তালিকায় ওই ভবন দুটি থাকতে পারে। তবে খোঁজ খবর নিয়ে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, ওই পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত অপসারণ করা হবে।
৩ দিন আগে
ভোলায় ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ভোলায় পূর্ববিরোধের জেরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের এক নেতা হত্যার শিকার হয়েছেন।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার ক্লোজার বাজার এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত ছাত্রদল নেতার নাম রেজওয়ান আমিন সিফাত (২৮)। তিনি ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন হাওলাদারের পুত্র এবং ভোলা সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে সিফাতের সঙ্গে তার চাচাতো ভাইদের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে তার সঙ্গে চাচাতো ভাই হাসিব ও সাকিবের কথা কাটাকাটি হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে সিফাত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য রওনা হন। তখন ক্লোজার বাজার এলাকায় সিফাতকে একা পেয়ে তার চাচাতো ভাইসহ আরও কয়েকজন মিলে হামলা চালান। এ সময় তাকে কুপিয়ে আহত করে রেখে যান তারা।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সিফাতের বাবা মো. আলাউদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলা থেকে লক্ষাধিক বিএনপির নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন। গত তিন দিন ধরে দলে দলে লোকজন ঢাকায় যাচ্ছেন। ভোলা থেকে বুধবার রাতে ১০টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। সিফাতও ঢাকা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মাগরিবের নামাজের পরে ব্যাগ নিয়ে বের হলে পথে হাসিব, সাকিব, রনিসহ আরও কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে। পরে তাকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে চলে যায় তারা।
রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শাজাহান বেপারী বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আলাউদ্দিনের ছেলে রেজওয়ানকে কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায় তার চাচাতো ভাইয়েরা।
ভোলা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়া উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
৪ দিন আগে
হাফ ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে বরিশালে ‘অর্ধশতাধিক’ বাস ভাঙচুর
বরিশালে হাফ ভাড়া না নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাস টার্মিনালে হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক বাস ভাঙার অভিযোগ উঠেছে ব্রজমোহন (বিএম) কলেছের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এ সময় পাল্টাপাল্টি হামলায় দুপক্ষের ৪০-৫০ জন আহত হওয়ার দাবি উঠেছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনালে এই ঘটনা শুরু হয়। রাত সোয়া ৮টায় এইদ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুর চলছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে গেলে পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় তাদের ২৫ জন আহত হন।
তবে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনোরকম হামলার ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে।
৪৩ দিন আগে
ভোলায় উচ্ছেদ অভিযানে হামলা, পৌরসভার ৩ গাড়িতে আগুন
ভোলা শহরের প্রাণকেন্দ্র নতুন বাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের সময় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পৌরসভার তিনটি ময়লা ও মালামাল পরিবহনের গাড়ি (ট্রাক) পুড়ে যায়।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে পৌরসভার কর্মীরা নতুন বাজার চত্বরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের পাশে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে গাড়িতে মালামাল তুলছিলেন। এ সময় বিক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা বাধা দিলে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষ।
পৌরসভার উচ্ছেদ অভিযানের কর্মী আনাসার-ভিডিপি আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরে পৌরসভার তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি আগুন দেওয়া গাড়ির কাছে কাউকে যেতে দেয়নি।
এদিকে, স্থানীয়দের সহায়তায় ও পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে তার আগেই গাড়িগুলোর বডি ও ইঞ্জিনসহ অনেকাংশ পুড়ে যায়।
এ ব্যাপারে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভোলা পৌরসভার প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নতুন বাজারে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করার সময় বিক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এবং উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের আশ্বাস দেন। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাৎ মো. হাছনাইন পারভেজ বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে আগে থেকে পুলিশ চাওয়া হয়নি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৬৪ দিন আগে
ভোলায় বাড়িতে ঢুকে মসজিদের খতিবকে কুপিয়ে হত্যা
ভোলায় নিজ বাড়িতে ঢুকে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী (৪৫) নামে এক মসজিদের খতিব ও মাদরাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে শহরের চরনোয়াবাদে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মাওলানা আমিনুল হক নামের ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।এরপর স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাত ১০টার দিকেভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
নিহত মাওলানা আমিনুল হক নোমানী ওই এলাকার মাওলানা এনামুল হকের ছেলে। তিনি ভোলা সদর উপজেলা জামে মসজিদের খতিব ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম চরনাবাদ জামে মসজিদ থেকে এশার নামাজ শেষ করে বাড়িতে যান আমিনুল হক। এ সময় তার স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তানদের কেউই বাড়িতে ছিল না। রাত সোয়া ৯টার দিকে আমিনুল হককে তার নিজ ঘরের মধ্যে কুপিয়ে জখম করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
এ সময় তার চিৎকার শুনে ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আমিনুল হককে ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মাথা, গলা, ঘাড়, বুক ও পেটসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখমের আঘাত ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আমিনুল হকের বাড়ির ড্রয়িং রুমে সোফার সামনে মেঝেতে রক্ত পড়ে আছে। একটি ওয়েব ক্যামসহ কম্পিউটার অন করা অবস্থায় রয়েছে। টেবিলের ওপর তার কম্পিউটারের সামনে একটি ঘড়ি। অপর টেবিলে তার টুপি পড়ে আছে। তবে তাকে হত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি।
এ ঘটনার বিচার দাবিতে তাৎক্ষণিক ভোলা সদর রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামিক দলের নেতারা ও এলাকাবাসী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীকে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশের একাধিক টিম কার্যক্রম শুরু করেছে।
১১৩ দিন আগে
বরগুনায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলায় আওয়ামীপন্থী ১২ আইনজীবী কারাগারে
বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বরগুনা আইনজীবী সমিতির আওয়াপন্থী ১২ আইউনজীবীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বরগুনা বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুর রহমানের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বরগুনা জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
আসামিরা হলেন- মাহবুবুল বারী আসলাম, মজিবুর রহমান, এম মজিবুল হক কিসলু, হুমায়ুন কবির, হুমায়ুন কবির পল্টু, সাইমুল ইসলাম রাব্বি, জুনায়েদ জুয়েল, আমিনুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন মোল্লা, ইমরান হোসেন, আব্দুর রহমান জুয়েল।
মামলা সূত্র জানায়, দুই বছর আগে ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা জেলা আওয়ামী লীগের অফিস কার্যালয়ে কেক কেটে শেখ মজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করেন। পরে সেখান থেকে সবাই একত্রিত হয়ে লোহার রড, জিআই পাইপ, বগি দাসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে বরগুনার বিএনপিকে উৎখাত করতে মিছিল সহকারে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। পরে অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন তারা।
মামলার পর ১২ আসামি চলতি বছরের ২ জুলাই হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন নেন এবং ২১ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিননামা দাখিল করেন। পরে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ২৪ জুলাই তারা আবারও জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেদিন নথি তলব করে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন। মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুল মোতালেব মিয়া ও মো. হাবিবুর রহমান আকন বলেন, ‘আমরা আবারও জামিনের জন্য আবেদন করব। আসামিরা প্রত্যেকেই কোর্টে নিয়মিত কর্মরত, পালানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া, মামলাটি দুই বছর আগের ঘটনা নিয়ে করা হয়েছে এবং অনেক আসামি আওয়ামী লীগের সদস্যও নন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মো. নুরুল আমীন বলেন, ২০২৩ সালে ১৭ মার্চ বরগুনা জেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও শহীদ জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেন তারা। এ ঘটনার মামলায় ১২ জন আইনজীবী আসামি ছিল। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগের পদধারী।
১১৮ দিন আগে
ভোলায় ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার
ভোলায় মো. সাইফুল্লাহ আরিফ নামে (৩০) এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) ভোরে সদর উপজেলার কালিবাড়ী রোড এলাকার নববী মসজিদ-সংলগ্ন নিজ বাড়ির সামনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার পুলিশ।
নিহত আরিফ ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং স্থানীয় সাবেক শিক্ষক মো. বশির উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। তিনি পেশায় একজন ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার।
একমাত্র ছেলের এমন হত্যা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাবা-মা, ছেলেকে হারিয়ে প্রায় পাগল তারা।
আরিফের বাবা জানান, গতকাল (শুক্রবার) রাতের খাবার শেষে মাকে পানি খাইয়ে ১২টার দিকে আরিফ তার রুমে ঘুমাতে যান। শনিবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় গেইট খুলে বাইরে বের হলে বাড়ির সামনের রাস্তায় আরিফের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন।
স্থানীয় ও স্বজনদের ধারণা, রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা আরিফকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: সাভার ও আশুলিয়ায় শিশুসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার
এরপর ভোলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, কারা বা কী কারণে আরিফকে হত্যা করেছে তা তাদের জানা নেই। এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন নিহতের পরিবার।
ভোলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, এ ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে।
১২১ দিন আগে
শেরপুরে শাপলা তুলতে গিয়ে বিলে ডুবে দুই শিশু নিহত
শেরপুর সদর উপজেলায় শাপলা ফুল তুলতে গিয়ে বিলের পানিতে ডুবে ফাহিমা আক্তার নুন (৯) ও জেমি (৮) নামে দুই শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গাজিরখামার ইউনিয়নের চকপাড়া এলাকার বলেশ্বর বিল থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফাহিমা আক্তার নুন চকপাড়া এলাকার মাসেক আলীর মেয়ে এবং জেমি একই এলাকার জয়নুদ্দিনের মেয়ে।
আরও পড়ুন: ভোলায় পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
নিহতের স্বজনরা জানান, গতকাল (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে ফাহিমা ও জেমি বাড়ির পাশের বলেশ্বর বিলে শাপলা তুলতে যায়। এরপর তারা আর ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির পর একপর্যায়ে বিকেলে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, শাপলা তুলতে তুলতে তারা বিলের মাঝখানের গর্তে পড়ে যায়। সেখানে পানি বেশি থাকায় ডুবে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
১২১ দিন আগে