খুলনা
নড়াইলে শিশুহত্যা মামলায় সৎ মায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় তিন বছরের শিশু নুসরাত জাহান রোজা হত্যার ঘটনায় সৎ মা জোবাইদা বেগমকে (২০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি জোবাইদা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জোবাইদা বেগম লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে মামলার বাদী আবুল খায়ের কাজীর ছেলে সজীব কাজীর সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী রুপা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর সজীবের দুই সন্তান; ৫ বছর বয়সী ছেলে ইয়াসিন ও ৩ বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহান রোজা দাদার (আবুল খায়ের) সঙ্গে বসবাস করতে থাকে। পরবর্তীতে সন্তানদের কথা চিন্তা করে সজীব কাজী দ্বিতীয় বিয়ে করেন জোবাইদা বেগমকে।
ঘটনার দিন ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নুসরাতকে তার বড় ভাই ইয়াসিন মারধর করলে সে কান্না শুরু করে। এরপর সৎ মা জোবাইদা বেগম তাকে ঘরের একটি কক্ষে নিয়ে যান। শিশুটি কান্না থামাচ্ছিল না দেখে একপর্যায়ে জোবাইদা তার মুখ চেপে ধরেন, যার ফলে শ্বাসরোধে নুসরাতের মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুটিকে একটি কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে শ্বশুর মো. খায়ের কাজীর ঘরের বারান্দার খাটে রেখে দেন তিনি।
পরে দাদা খায়ের কাজী বাড়িতে ফিরে নুসরাতকে গোসল করাতে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্ত্রী পান্না বেগমকে বিষয়টি জানান। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পান্না বেগম জোবাইদাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, নুসরাত বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। সেখানে গিয়ে দাদী শিশুটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া থানায় এবং পরে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওই দিনই সজীব কাজী ও জোবাইদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। তবে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সজীব কাজীকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পরদিন নিহত শিশুর দাদা মো. খায়ের কাজী লোহাগড়া থানায় জোবাইদা বেগমকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার দুপুরে আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।
১৪৫ দিন আগে
কালিয়া পৌর বিএনপি-ছাত্রদল নেতাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
নড়াইলে কালিয়া পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ছাত্রদল আহবায়কসহ সাত জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মালামাল লুট মামলায় কালিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এই মামলা হয়।
এতে আসামি করা হয়েছে কালিয়া পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ইউসুফ (৪৫), পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেকাইল ওরফে ধলু শেখ (৩৯), মো. ইনামুল শেখ ওরফে কালু (৪০), গোলাম রসুল মান্দার শেখ (৬২), মো. মিরাজ শেখ (৩৩), মো. ইমরান শেখ (৩৪), মো. সাদ্দাম শেখ (৩২), এ মামলাটি দায়ের করেন রহিমা খানম নামের এক ব্যক্তি।
মামলার সূত্রে জানা যায় নাম কি বাদীর স্বামী কালিয়া পৌরসভার কালিয়া মোড়ে রড সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করেন। বাদীর স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর গত গত বছরের ১০ আগস্ট আসামিরা দোকানে এসে বাদীর দেবরের নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় আসামিরা চলতি বছরের ২ মার্চ পুনরায় দোকানে এসে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় বাদীর দেবরকে কিল ঘুষি মারতে থাকে এবং দোকান থেকে রড, সিমেন্ট ও নগদ টাকা সহ ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ফ্লাইট এক্সপার্ট কেলেঙ্কারি: এমডিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৩
এ বিষয়ে কালিয়া পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও এ মামলার আসামি সেলিম রেজা ইউসুফ মুঠোফোনে জানান এ মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা দায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১৪৫ দিন আগে
খুলনায় চরমপন্থী নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
খুলনায় চরমপন্থী সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা শেখ শাহাদাত হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে নগরীর সঙ্গীতা সিনেমা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
শেখ শাহাদাত নিষিদ্ধঘোষিত পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির একজন আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। দেড় যুগ কারাভোগের পর চলতি বছর তিনি জামিনে মুক্তি পান। তারপর থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা, বাবাসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
পুলিশ সূত্রো জানা গেছে, শাহাদাতের বিরুদ্ধে বোমা মেরে দুই পুলিশ খুনসহ একাধিক হত্যা মামলা ছিল।
নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একদল দুর্বৃত্ত তাকে ধাওয়া করে সঙ্গীতা সিনেমা হলের নিচে শফি টায়ারের দোকানে কুপিয়ে ও গুলি করে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
১৪৫ দিন আগে
গাংনী থানার অদূরে ককটেল ফাটিয়ে ফের গণডাকাতি
এক মাসের ব্যবধানে গাংনী থানা থেকে মাত্র তিনশ গজ দূরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবারও গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন পথচারীর কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে ডাকাতদল।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী-ধানখোলা সড়কের বিল্লাল নার্সারির কাছে হারেজ মোড়ে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতদের কাছে হাতবোমা ও দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ছিল বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
২০ জন পথচারীর কাছ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা লুট করেছে ডাকাতদল। ভুক্তভোগীদের বাড়ি গাংনী উপজেলার ধানখোলা, মহিষাখোলা ও আড়পাড়া এলাকায়।
ভুক্তভোগী ইয়াসির আরাফাত আলীর কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা, আব্দুল হালিমের কাছ থেকে ৬০০ টাকা, শাহজামাল আলীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা, রেজিয়া খাতুনের কাছ থেকে ৭০০ টাকা, মিন্টু হোসেনের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা, মহব্বত আলীর কাছ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, মিন্টু আলীর কাছ থেকে পৌনে ১০ হাজার টাকা, কুরসিয়া খাতুনের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকাসহ অন্যান্যদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, সাত/আটজনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হঠাৎ রাস্তা অবরোধ করে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা পথচারী অন্তত ২০ থেকে ২৫ জনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো ঘটনা ঘটিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে।
খবর পেয়ে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ডাকাতি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।’
এদিকে এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুত পুলিশি টহল জোরদার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে হাতবোমা ফাটিয়ে গণডাকাতি
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে একই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ডাকাতি হয়। কয়েকদিন পর পাশের পুড়াপাড়া-জুগিন্দা সড়কেও একই ঘটনা ঘটে। এভাবে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গাংনী থানা পুলিশের ডিএসবি শাখার অধিকাংশ সহকারী উপ-পরিদর্শক ও কনস্টেবল তাদের মূল কাজ ফেলে পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে দেনদরবার ও দোসরদের সঙ্গে চামচামি করে সময় কাটিয়ে থাকেন।
বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এবং জেলা বিশেষ শাখায় দায়িত্বরত অফিসারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
১৪৫ দিন আগে
খুলনায় ঘের ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা
খুলনার দৌলতপুরে আল আমিন (৩০) নামে এক মাছের ঘের ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
রবিবার (৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া খানাবাড়ি এলাকার খানাবাড়ি রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আল আমিন খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা দিঘীর পূর্বপাড় এলাকার সাহেদ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন মাছের ঘের ব্যবসায়ী ছিলেন।
দৌলতপুর থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর বণিকপাড়া খানাবাড়ি পল্লবের বাড়ি সংলগ্ন সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা আল আমিনকে হত্যা করে তার লাশ ফেলে রেখে যায়। রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: রংপুরের পীরগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা
ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি, কালো রঙের একটি পালসার মোটরসাইকেলসহ গলাকাটা অবস্থায় এক যুবকের লাশ বণিকপাড়া খানাবাড়ির সামনে পড়ে আছে। পরে জানতে পারি, মোটরসাইকেলটি চলন্ত অবস্থায় ছিল। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা কেউ বলতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধারালো অস্ত্র দিয়ে যুবকের গলাকাটা হয়েছে। তার পরনে ছিল গেঞ্জি ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট। ঘটনার পরপরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
ওসি জাহিদুল জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
১৪৭ দিন আগে
কুষ্টিয়ায় স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, আটক ৫
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় স্বামীর সামনেই স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার দিন রাতেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কের উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকার ফাঁকা মাঠ নামক স্থানের একটি লিচু বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, শনিবার রাত ১১টার দিকে ওই ঘটনার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামীকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে থানায় নিয়ে এসে বসিয়ে রাখে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ওই নারী (২৬) পেশায় একজন হোটেল কর্মচারী। ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে তার স্বামীর বাড়ি। বারো মাইল এলাকার ওই হোটেলে কাজ শেষ করে রাতে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানযোগে তিনি বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় উপজেলার মসলেমপুর ফাঁকা মাঠ এলাকা থেকে একদল দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে। এরপর স্বামীকে মারধর করে বেঁধে রেখে ওই নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
ঘটনার পরপরই ভেড়ামারা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৫ জনকে আটক করে।
আটকৃতরা হলেন— মসলেমপুর গ্রামের কালু প্রামানিক (৪৬), ষোল দাগ এলাকার মুর্শিদ শেখ (৪৫), টিটু মন্ডল ওরফে টিপু (৪২), এজাজুল (৪২) এবং ভ্যানচালক রুবেল আলী (২৪)।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকদের মধ্যে তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ধর্ষণ মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
অন্যদিকে, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বামীকে পুলিশ ভেড়ামারা থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাতভর তাদের থানায় রাখা হয়। সে সময় সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করলেও ভেড়ামারা থানা পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
ভুক্তভোগী নারীকে রাতেই থানায় নেওয়া হলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ সময় পরও তাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। এ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলা শেষে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করা হলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে ওই নারী দাবি করেছেন যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন। তার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পাঁচজনকে আটক করেছি।’
১৪৮ দিন আগে
শার্শায় সরকারি চালের বস্তা ছিনতাই, বিএনপির ২ কর্মী গ্রেপ্তার
যশোরের শার্শার উলাশী ইউনিয়নে দুস্থ নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি চালের বস্তা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২ আগস্ট) বিকালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শার্শার ধলদাহ গ্রামের রাজ্জাক বিশ্বাসের ছেলে মিজানুর বিশ্বাস ও মোসলেম বিশ্বাসের ছেলে লাল্টু বিশ্বাস। তারা ওই এলাকার বিএনপির কর্মী।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার রামপুর ধলদা গ্রামের মোড়ে চালের বস্তা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। তারা শার্শা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আমিনুর রহমানের অনুসারী বলে জানা গেছে।
শার্শার উলাশী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক সমবায় কর্মকর্তা আব্দুর রাশেদ জানান, উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের ধলদা মোড়ে ভিডব্লিউভি তালিকাভুক্ত প্রত্যেক নারী সদস্যকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিন বস্তা করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। নারীরা নিজ দায়িত্বে ভ্যান করে চাল বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ধলদা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়ানুর, রাজ্জাক বিশ্বাসের ছেলে মিজানুর বিশ্বাস, সুরত আলীর ছেলে মশিয়ার এবং আতিয়ার বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ভ্যান থামিয়ে তিন বস্তা করে চাল ছিনিয়ে নেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নাজমুল হোসেন বাদী হয়ে শার্শা থানায় মামলা করেন।
এব্যপারে শার্শা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, অভিযুক্তরা কেউ আমার লোক নয়। কেবল বিএনপি পরিবারের সদস্য। তাদের দলে কোনো পদও নেই। চাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ শোনার পর শুক্রবার সকালে গ্রামে দলের সভা ডাকা হয়। পরে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরিউল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত চাল নারীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
১৪৯ দিন আগে
প্রেমিকার বিয়ের দিন যুবকের মৃত্যু, পরিবারের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিন সৈয়দ মাসুম বিল্লাহ (২০) নামের এক যুবককে আহত উদ্ধারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং বাঁ হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার। তারা এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বেলা ১১টার পর গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতি সেতুর পাশ থেকে মাসুমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন এক অটোরিকশাচালক। পরে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মাসুম লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল (মধ্যপাড়া) গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
স্বজনরা জানান, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মাসুমের। তবে পারিবারিকভাবে মেনে না নেওয়ায় সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। বুধবার (৩০ জুলাই) এলাকা ছেড়ে ঢাকায় কাজের সন্ধানে মাসুম বড় বোনের বাসায় ওঠেন। তবে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে তিনি সকাল ৬টার পর লোহাগড়ায় পৌঁছান। সকাল ৯টার দিকে চাচাতো ভাই তরিকুল মোবাইলফোনে কল করে জানতে পারেন মাসুম লোহাগড়ায়। তরিকুল তাকে অনুরোধ করেন বাড়িতে ফেরার জন্য। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি মাসুমের।
অটোরিকশাচালক সুজন বলেন, ‘তাকে যেখান থেকে উদ্ধার করি, সেখানে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন ছিল না। জিজ্ঞেস করছিলাম, আশপাশের কেউ দুর্ঘটনার কথা শোনেননি। মাসুমের আহত শরীর দেখে মনে হয়েছে, সম্ভবত তাকে কেউ গাড়ি থেকে ফেলে রেখে গেছে।’
নিহতের চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুম সকালে ঢাকা থেকে ফিরে প্রেমিকার বিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামের সাইফুল মোল্যার কাছে প্রেমিকার বাবা সকালে ফোন দিয়ে জানান মাসুম ঝামেলা করছে। তার ছেলেপেলেরা মাসুমকে পেলে অবস্থা খারাপ হবে। আমরা খবর পাই, মানিকগঞ্জ বাজারের এক পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুম দেখা করে কথা বলেছে। ওইদিকে হুমকির খবরে আমরা মাসুমকে খুঁজতে বের হই, কিন্তু তার ফোন বন্ধ ছিল। পরে হাসপাতাল থেকে একজন ফোন করে তার আহত হওয়ার খবর দেন।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
শরিফুল ইসলামের দাবি, বড় গাড়িতে অ্যাক্সিডেন্ট হলে তো হাত-পা অক্ষত থাকার কথা না। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তার বাঁ হাতের একটা আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা মাসুমকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় মাসুমের প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
১৪৯ দিন আগে
খুলনায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
খুলনার দিঘলিয়ায় আলামিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের নন্দনপ্রতাপ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আলামিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১
কামারগাতী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল জানান, আজ (শনিবার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আলামিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, স্ত্রীকে আলামিন কেন বিয়ে করেছেন— এই ক্ষোভ থেকেই আসাদুল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামিনের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার বিস্তারিত তথ্যসহ তদন্তের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই জামিল।
১৪৯ দিন আগে
খুলনায় বাড়িতে ঢুকে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
খুলনায় বাড়িতে ঢুকে মনোয়ার হোসেন টগর নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত সোয়া ১০টার দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে। মসজিদের পাশে নিজের বাড়িতে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: রংপুরে জমি নিয়ে বিরোধে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত যুবক রংয়ের ঠিকাদার ছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে কয়েকটি যুবক তার বাড়িতে প্রবেশ করে এবং কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে ছুরিকাঘাত করে। বুকের ডান পাশে আঘাতটি লাগে। এরপর ওই ঠিকাদার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই বলেন, রাত সোয়া ১০টার দিকে ৩ জন যুবক তার বাড়িতে আসে। তাদের দরজা খুলে দিলে আলাপের একপর্যায়ে ওই তিনজনের একজন টগরের বুকের ডান পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করে।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকারীরা নিহতের পূর্বপরিচিত। তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আসামিরা গ্রেপ্তার হবে।
১৪৯ দিন আগে