বৈদেশিক-সম্পর্ক
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়ন-ঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও ক্রমবর্ধমানভাবে নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তহবিল সংকটে শিক্ষার ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সোয়া ২ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
এ সময় তারুণ্যের গৌরব প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং সাম্প্রতিক জুলাই বিপ্লবসহ সব আন্দোলনে অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার ছিল বাংলাদেশের তরুণ সমাজ।
তিনি বলেন, তরুণরা যদি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে তারা সহজেই চরমপন্থার শিকার হতে পারে। এ ছাড়া দারিদ্র্য, বৈষম্য ও উন্নয়ন-ঘাটতি যদি দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকে, তাহলে একপর্যায়ে তা সহিংসতা ও অস্থিরতায় রূপ নিতে পারে।
বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের তিন শূন্য নীতির কথা উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল একটি ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে থাকবে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে উন্নয়ন ও শান্তি স্থাপন প্রচেষ্টাকে এক সূত্রে যুক্ত করতে হবে।
পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিসবিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের দাবি তারেক রহমানের
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য ‘সামাজিক ব্যবসায়’ ব্যবস্থার প্রাসঙ্গিকতার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবর্তিত এই মডেল দারিদ্র্য বিমোচন ও সংঘাত প্রতিরোধে একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে।
বক্তৃতাকালে একটি সমৃদ্ধ, ন্যয়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
১৯১ দিন আগে
অভিন্ন অভিজ্ঞতা ও ত্যাগের বন্ধনে গড়ে উঠেছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: ভারতের পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী
অভিন্ন অভিজ্ঞতা ও ত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং। এ সম্পর্কের স্থায়ী শক্তির ওপর আলোকপাত করে একে সহনশীল ও ভবিষ্যতমুখী অংশীদারত্বের ভিত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের (২৬ মার্চ) বিলম্বিত উদযাপনে যোগ দিয়ে এসব বলেন তিনি।
কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সবক্ষেত্রে আন্তঃসম্পর্ক ও সংযোগ জোরদারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং আমাদের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে আগ্রহী, যা আমাদের অংশীদারত্বের মূলভিত্তি।’
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিস্তৃত প্রকৃতি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি, নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক বিস্তৃত এবং আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে পর্যটন সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ
বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছেন, নতুন হাইকমিশনারের আগমন ও পরিচয়পত্র পেশ এবং সেই সময়ে রমজান পালনের কারণে স্বাধীনতা দিবসের (২৬ মার্চ) স্বাভাবিক সময়ের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, নাগরিক সমাজের সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় প্রতিবেশি দেশ দুটির মধ্যে ভবিষ্যতমুখী সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. রিয়াজ হামিদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু অতীতকে স্মরণ করতেই এই সন্ধ্যা উদযাপন করছি না, বরং প্রতিবেশী ও উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনার সুযোগ হিসেবেও এটি পালন করছি।’
পাশাপাশি আঞ্চলিক অংশীদারত্ব পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে হাইকমিশনার সম্প্রতি ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট নেপালি জলবিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টিকে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ইউনূস-মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
তিনি আরও বলেন, ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল এন্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিমসটেক) বর্তমান চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতা পুনর্জীবিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
১৯২ দিন আগে
বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে পর্যটন সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ
বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্কের ক্ষেত্রে পর্যটন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সরাসরি সংযোগের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের অংশ হিসেবে হিমালয়ের উচ্চতা এবং বঙ্গোপসাগরের গভীরতার মধ্যে প্রকৃত সংযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভিসা সমস্যা ও সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-আমিরাত: লুৎফে সিদ্দিকী
‘নেপাল-বাংলাদেশ ট্যুরিজম মিট’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত। নেপাল পর্যটন বোর্ডের সহযোগিতায় ঢাকাস্থ নেপাল দূতাবাস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নেপাল সরকার পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা তুলে ধরার পাশাপাশি নেপালকে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলতে যাত্রা ও ভ্রমণ উদ্যোক্তাদের অবদানও প্রশংসার যোগ্য।’
১৯৩ দিন আগে
অধ্যাপক ইউনূসের লন্ডন সফর অত্যন্ত সফল: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ বলে বর্ণনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে সাক্ষাৎ করতে না পারার জন্য কিছু কারণও উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিবেচনায়, এই সফর অত্যন্ত সফল ছিল।’
সচিব (পূর্ব) ড. মো. নজরুল ইসলাম ও মহাপরিচালক (জন কূটনীতি) শাহ আসিফ রহমানও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সফরের আগে তার সঙ্গে এক প্রাতঃরাশের বৈঠকে জানিয়েছিলেন যে, এই সফরকে একটি সরকারি সফরে উন্নীত করা হয়েছে।
পড়ুন: ড. ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করলেন কিং চার্লস তৃতীয়
পরে, তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন এবং বাংলাদেশ পক্ষকে একই বার্তা দেন।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলামকেও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে এটি একটি সরকারি সফর।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি এক সরকারি সফর। তারা মনে করেন কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে, যার মধ্যে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠক।
সিদ্দিক বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বৈঠকটি এজেন্ডায় ছিল কিন্তু নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়নি। ‘শেষ মুহূর্তেও আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে বৈঠকটি হবে। শেষ মুহূর্তে, যেকোনো কারণে বৈঠকটি হয়নি।’
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ব্যতীত প্রধান উপদেষ্টা পরিকল্পনার চেয়ে বেশি বৈঠক করেছেন এবং তাকে পূর্ণ প্রোটোকল দেওয়া হয়েছে।
তবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব স্বীকার করেন যে, তাদের কাঁধে কিছু দায়িত্ব আসে কারণ তারা (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) সফরের প্রস্তুতির অংশ ছিলেন।
এই সফরকে কেন অত্যন্ত সফল হিসেবে দেখা হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করে তিনি পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধার, প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ এবং রাজার সঙ্গে একান্ত বৈঠকের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘একটি ইস্যুতে সফল সফরের পর দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টিকে জটিল করে তোলার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ তিনি দেখছেন না।’
বৃহস্পতিবার লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে প্রধান উপদেষ্টা কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি পুরস্কার গ্রহণ করেন।
মানুষ, প্রকৃতি এবং পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তুলতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক ইউনূসকে এই পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।
পড়ুন: হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের আগে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস
পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আগে রাজা চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে একান্ত সাক্ষাতকালে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।
আো ঘন্টাব্যাপী একান্ত বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
যুক্তরাজ্য সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস বিবিসিকে বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারেননি।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি জানি না তার হতাশ হওয়া উচিত নাকি একটি সুযোগ হাতছাড়া।’ ‘এজন্যই আমি বলছি বাংলাদেশে আসাটা হবে সহজ, সেই মুহূর্তটি দেখার এবং অনুভব করার একটি ভালো সুযোগ।’
ডাউনিং স্ট্রিট স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের সময়সূসি নির্ধারণ না করার কোনো কারণ জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না আমরা এই ধরণের কোনো ব্যাখ্যা পেয়েছি। সম্ভবত তিনি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যস্ত।’
১৯৪ দিন আগে
ভিসা সমস্যা ও সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-আমিরাত: লুৎফে সিদ্দিকী
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘সামগ্রিক পুনর্গঠনের’ অংশ হিসেবে ভিসা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক-বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জনগণের চলাচল-সংক্রান্ত বিষয়ে পারস্পরিক সদিচ্ছা ও বিশ্বাস গঠনের চেষ্টা অব্যাহত রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৬ জুন) ইউএইয়ের ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটির (আইসিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহেইল সাঈদ আল খাইলির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব বলেন।
এ সময় তার সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য সহকর্মীরাও ছিলেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘মেজর জেনারেল সুহেইলের সঙ্গে দীর্ঘ, খোলামেলা ও অকপট আলোচনা করেছি।’নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আরব আমিরাতের ভিসা বা আবাসন নীতিমালার সবচেয়ে বড় সংখ্যক লঙ্ঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন বাংলাদেশিরা। এখানকার মোট ভিসা লঙ্ঘনকারীর মধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশি।’
আরও পড়ুন: সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে ভিসা নবায়নের ঝুঁকি: দূতাবাসের সতর্কতা
এই সমস্যার মূল কারণ সম্ভবত বাংলাদেশে কর্মী নিয়োগের পর্যায়েই নিহিত এবং এটি এক ধরনের দুষ্ট চক্র সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেন এই দূত।
তার ভাষ্যে, অন্যান্য দেশের নাগরিকদের তুলনায় বাংলাদেশিদের জন্য কার্যকর অভিবাসন ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি, বিশেষ করে প্রাপ্ত বেতনের সঙ্গে তুলনা করলে।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আমাদের সরকার অপরাধমূলক আচরণের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় তেমন গুরুত্বই দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসা নীতিতে কিছু সময়ের জন্য শিথিলতা আসার পর এর অপব্যবহার বেড়ে গেলেও সরকার তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’
দূত বলেন, ‘শুধু যে অনেকে ওভার স্টে (ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও থাকা) করে (এবং গত বছরের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে) তা নয়, বরং বাংলাদেশিরা প্রচুর ভুয়া সনদ তৈরি করে, যা কখনো কখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিসহ পেশ করা হয়–এমন অভিযোগও রয়েছে।’
তিনি জানান, সেখানে একটি রিক্রুটমেন্ট ফার্মের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেছেন (যারা আফ্রিকা ও এশিয়ার একাধিক দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজের সুযোগ করে দেয়)। তারাও অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের মার্চে ভিসা আংশিকভাবে চালু হওয়ার পর মধ্যস্বত্বভোগীদের কিছু উদ্বেগজনক আচরণের কথাও তিনি বেসরকারিভাবে শুনেছেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সন্তোষ প্রকাশ
বিশেষ দূত জানান, তারা এখন বিভিন্ন ধরনের ভিসার (পরিবার বা দম্পতির জন্য, দেশীয় নিয়োগকর্তার মধ্যে স্থানান্তর, পর্যটক ভিসা, বিভিন্ন দক্ষতার জন্য ওয়ার্ক পারমিট, নাবিকদের জন্য ভিসা ইত্যাদি) বিষয়ভিত্তিক ভাগ করেও দেখার চেষ্টা করবেন।
তিনি বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে আমাদের সবাইকে অনিয়ম ও এর মূল কারণ দমন করার কাজে আরও ভালো করতে হবে। এসব অনিয়ম দীর্ঘ প্রভাব ফেলছে।’
১৯৫ দিন আগে
তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের যেকোনো সময় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, দূতাবাসের বর্তমান ভবনটি নিরাপদ নয়। কারণ এটি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত, যা সাম্প্রতিক সময়ে হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল।
আরও পড়ুন: ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু
এ ছাড়া তেহরানের দুটি ইন্টারনেট হাবের একটি ওই ভবনের খুব কাছেই অবস্থিত। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশঙ্কা করছেন, এসব স্থাপনায় হামলা হলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
হটলাইন চালু
এদিকে, ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে।
এ ক্ষেত্রে ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের স্বজনরা নিচের নম্বরগুলোতে (হোয়াটসঅ্যাপসহ) জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারবেন:
বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান হটলাইন:
১. +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮
২. +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা হটলাইন:
+৮৮০১৭১২০১২৮৪৭
ইরানে নথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা ২ হাজারেরও কম বলে জানিয়েছে সূত্র।
১৯৫ দিন আগে
ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু
ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এমতাবস্থায় ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু করেছে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৬ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইরানে বসবাসরত সকল বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকায় স্থাপন করা হটলাইনে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
হটলাইন নাম্বারগুলোর হোয়াটসঅ্যাপে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান- হটলাইন:১। +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮২। +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা- হটলাইন:+৮৮০১৭১২০১২৮৪৭
১৯৫ দিন আগে
সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে ভিসা নবায়নের ঝুঁকি: দূতাবাসের সতর্কতা
সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করলে বিদেশি অভিভাবকরা ভবিষ্যতে তাদের ভিসা নবায়নের সুযোগ হারাতে পারেন বলে সতর্ক করেছে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
এক বার্তায় দূতাবাস জানিয়েছে, অনেক বিদেশি অভিভাবক পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সন্তান জন্মদান করেন। এই চিকিৎসাসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা ব্যবহার করেন, যার ব্যয়ভার পড়ে দেশটির করদাতাদের ওপর। এই ব্যয়ভার মার্কিন নাগরিকদের বহন করতে হয়। ফলে ভবিষ্যতে এসব অভিভাবকরা ভিসা নবায়নের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত বিবেচিত হতে পারেন।
দূতাবাস আরও জানায়, কোনো আবেদনকারীর ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য যদি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে তাকে মার্কিন নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়া হয় বলে সন্দেহ হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে কনস্যুলার কর্মকর্তারা ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।
১৯৭ দিন আগে
পাচারের টাকা উদ্ধারে ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে: অধ্যাপক ইউনূস
যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া দেশের অর্থ উদ্ধার করতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ব্রিটিশ সরকার এই প্রয়াসে ‘অত্যন্ত সহায়ক’ ভূমিকা পালন করছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ বিষয়ে তারা যে দ্রুততা দেখিয়েছেন, আমি তার জন্য অনেক প্রশংসা করি।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও যুক্তরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে সহায়তার সুযোগ খুঁজছে। বিশেষ করে হাসিনা সরকারের আমলের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের ধারণা, হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (১৭৪ বিলিয়ন পাউন্ড) দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, এসব অর্থের বেশিরভাগই যুক্তরাজ্যে লুকিয়ে রাখা হয়েছে অথবা খরচ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আ.লীগের ১৫ বছরের হত্যা-গুম ও অর্থ পাচারের বিচার হবে: উপদেষ্টা
লন্ডনে আইএসিসিসিকে জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) আমন্ত্রণ জানায়। এনসিএ’র এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রকৃতি সম্পর্কে নিয়মিত মন্তব্য করি না। যদি কোনো তদন্ত শুরু হয়ে থাকে বা কোনো অংশীদারের তদন্তে সহায়তা দেওয়া হয়—তা নিশ্চিত করি না।’
অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি বাকিংহাম প্যালেসে কিং চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশটির পার্লামেন্টে বাণিজ্য সচিব জনাথন রেনল্ডসের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
রেনল্ডস এক টুইট বার্তায় জানান, তারা ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টির ও সমৃদ্ধির জন্য তাদের পারস্পরিক যৌথ আকাঙ্ক্ষা’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যবস্থা করতে পারেননি। টিউলিপ সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একই নির্বাচনী এলাকার প্রতিবেশী প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি জানি না আমার হতাশ হওয়া উচিৎ, নাকি দুঃখিত হওয়া উচিৎ। এটি একটি হারানো সুযোগ।’
স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো ব্যাখ্যা পাইনি। সম্ভবত তিনি অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত ছিলেন।’
চারদিনের সফর শেষে অধ্যাপক ইউনূস শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান। সফরকালে একাধিক বৈঠক ঢাকা-লন্ডন সম্পর্কের আরও বিস্তৃত ও গভীরতাকে তুলে ধরে।
১৯৭ দিন আগে
ড. ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করলেন কিং চার্লস তৃতীয়
মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে শান্তি, স্থায়িত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আজীবন প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি পুরস্কার ২০২৫’ -এ ভূষিত করেছেন রাজা চার্লস তৃতীয়।
২রাজা চার্লস ২০২৪ সালের জুনে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপন উদযাপন করতে একটি নতুন পুরস্কার চালু করেন।
পুরষ্কার অনুষ্ঠানের আগে, রাজা তৃতীয় চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে একান্ত দর্শকদের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাগত জানান।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ কিং চার্লস অধ্যাপক ইউনূসের কাজের অনুরাগী। তার কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ, দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক ব্যবসার প্রচারণা ও সভ্যতাকে আত্ম-ধ্বংস থেকে বাঁচাতে তিন শূন্যের জন্য তার প্রচারণামূলক কাজ।
তিনি বলেন, এমনকি কিং চার্লস অধ্যাপক ইউনূসের একটি বইয়ের ভূমিকাও লিখেছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় ড. ইউনূসের গভীর শোক প্রকাশ
৩০ মিনিট ধরে চলা এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা কিং চার্লসকে বাংলাদেশে তার সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।
এই সাক্ষাৎকে সৌহার্দ্যপূর্ণ বর্ণনা করে আলম বলেন, যেহেতু কিং চার্লস অধ্যাপক ইউনূসকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তাই তারা অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘এই পুরো সফরে, আমি বলব এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।’
বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে একান্তে দেখা করে, বা 'একজন শ্রোতাকে সুযোগ দিয়ে', কিং চার্লস নির্দিষ্ট ব্যক্তি এবং তাদের কাজের গুরুত্বের স্বীকৃতি দেন। একই সঙ্গে তাদের সম্পর্কে আরও জানার এবং তাদের একটি স্মরণীয় রাজকীয় অভিজ্ঞতা দেন। ‘শ্রোতা’ বলতে কেবল কিং চার্লসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকে বোঝায়।
কিং চার্লস তৃতীয় হারমনি অ্যাওয়ার্ডের উদ্বোধনী বিজয়ী ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন।
কিংস ফাউন্ডেশনের পুরষ্কারগুলো রাজা চার্লসের হৃদয়ের খুব কাছের একটি বিষয়। তিনি প্রায়ই মানবতার এবং প্রকৃতির মধ্যে মিলনের প্রায় আধ্যাত্মিক ধারণা সম্পর্কে কথা বলেছেন।
এটি রাজার নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি: ‘আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে কাজ করা উচিত, তার বিরুদ্ধে নয়।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক অধ্যাপক ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার জন্য আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক দেখা করে অভিনন্দন জানান। এসময় পুরস্কারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,‘এটি একটি বিরাট সম্মানের বিষয়।’
এদিকে, বর্তমানে লন্ডনে থাকা সারা কুক বৃহস্পতিবার বলেছেন যে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে সন্তুষ্ট।
তিনি তার ভ্যারিফায়েড এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘এই সপ্তাহে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে যুক্তরাজ্যে স্বাগত জানাতে পারে অসাধারণ লাগছে।’
হাইকমিশনার বলেন, তার (অধ্যাপক ইউনূস) বিস্তৃত বৈঠকের কর্মসূচি ‘গণতন্ত্র, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু কর্মকাণ্ড, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থনের প্রতি তাদের অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি’ তুলে ধরে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস মঙ্গলবার লন্ডনে পৌঁছেছেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর আরও বেশি গুরুত্বসহ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নবায়ণের জন্য তিনি চার দিনের সরকারি সফর শুরু করেছেন।
এর আগে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেছে, ‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর,’ বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং বৈচিত্র্যময়।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
১৯৯ দিন আগে