বৈদেশিক-সম্পর্ক
এশিয়ায় নেতৃত্ব দেবে জাপান, বাংলাদেশকে সহযোগিতা বাড়ানোর আশায় ড. ইউনূস
টোকিও সফরকালে জাপানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও গভীর হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার আশা, জাপান এশিয়ায় নেতৃত্ব দেবে এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য একটি নতুন সহায়তা কাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে।
টোকিওতে জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকেকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তার ক্ষেত্রে জাপান নেতৃত্ব দেখাবে এবং আমাদের দেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়াবে— এটাই আমার প্রত্যাশা।
সাক্ষাৎকারে জাতীয় নির্বাচনের আগে যতটা সম্ভব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান বলেন, ‘সরকার পুরনো কাঠামো, নীতিমালা ও বিচারব্যবস্থায় ফিরতে চায় না। সেগুলো ছিল দমন-পীড়নের হাতিয়ার, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার উপায়।’
তার ভাষায়, ‘বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠান ও কাঠামো রয়েছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে এবং যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে সেগুলো পরিবর্তন করা হবে।’
আরও পড়ুন: দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আশা করা হচ্ছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
জাপানের কর্মী সংকট ও বাংলাদেশে উদ্যোগ
এদিকে, শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কর্মী নিয়োগ দিতে চায় জাপান। এ লক্ষ্যে দেশটির রেস্তোরাঁ গ্রুপ ওয়াতামি ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছে নিক্কেই এশিয়া।
খবরে বলা হয়েছে, এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রে স্থানীয়দের কৃষিকাজ, গ্রাহকসেবা, কারখানায় কাজের দক্ষতা এবং খাবার সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতি বছর প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশিকে ‘বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী ভিসা’য় জাপানে পাঠানোর লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে।
এ বছরের অক্টোবরে চালু হতে যাওয়া জাপানের প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি থাকবে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনায়।
খাদ্য পরিষেবাসহ ১১টি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে ২০২৩ সালে এন্ট্রি ভিসার আওতা সম্প্রসারণ করে জাপান। এর ফলে দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি কর্মীরা এখন দোকান পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার মতো কাজে অংশ নিতে পারছেন।
আরও পড়ুন: ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পাশে চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
ওয়াতামির চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে বলেন, ‘রেস্তোরাঁ ব্যবসায় প্রবৃদ্ধির পথে মানবসম্পদ নিশ্চিত করা একটি বড় বাধা। সে ক্ষেত্রে নিজেদের কর্মী নিজেরাই গড়ে তুলতে পারাটা আমাদের জন্য একটি বড় শক্তি হবে।’
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়াতামি এজেন্ট নামের মানবসম্পদ উন্নয়ন ইউনিটটি ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৯০০ বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ছিলেন কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষানবিস ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী। তাদের মধ্যে ৪০০ জনকে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করা হয়েছে।
২১২ দিন আগে
বাংলাদেশের পুনর্গঠনে জাপানি বিনিয়োগ চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও সংস্কার উদ্যোগে জাপানি কোম্পানিগুলোকে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে রয়েছি, যখন আপনাদের সহায়তা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। বাকি পথটা একসঙ্গে কাজ করে আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গেই পাড়ি দিতে চাই।’
শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জাপানের বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকে উভয় নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গত ১৬ বছরে দেশের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামো অনেকাংশে ভেঙে পড়েছিল। আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়, প্রশাসন ও পুলিশ ব্যবস্থাও কার্যত অচল হয়ে পড়ে। আমরা মূলত খারাপ অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করেছি।’
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১০ মাস ছিল এক ধ্বংসস্তূপ থেকে টুকরো টুকরো করে পুনর্গঠনের সময়। এ কাজে জাপান সরকার ও ব্যবসায়ীদের সহায়তা অত্যন্ত সহায়ক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সরকার নতুন বাংলাদে গড়তে চায়, কারণ পুরোনো বাংলাদেশে অনেক খারাপ জিনিস রয়েছে। সেই যাত্রায় আপনারা আমাদের বন্ধু ও অংশীদার হবেন।’
ড. ইউনূস বলেন, অতীতের সব ভয়াবহ ঘটনা পেছনে ফেলে জাতি গঠনের এটি একটি সুযোগ। আমরা আশা করি, সেগুলো অতীতেই রয়ে যাবে। আমরা সবাই সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি, এখন তা অতীত করে রাখতে চাই। আমরা একটি নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরশাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুনভাবে জীবন ফিরে পেয়েছে এবং তিনি এই বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছুটা ‘শ্বাস নেওয়ার সুযোগ’ চান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ঘাটতিগুলো শিগগিরই কাটিয়ে ওঠা যাবে।
জেট্রোর চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বাজেট সহায়তা দেবে জাপান
জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির চেয়ারম্যান ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করছে, চলতি বছর অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি(ইপিএ) সই হবে।
তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর আইনের সংস্কারের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি রক্ষা করতে পেরেছে, তা হলো— অর্থনীনৈতিক কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়নি, কোনো ব্যবসাও থেমে যায়নি।
অনুষ্ঠানে সুমিতোমো করপোরেশনের সিইও শিনগো উএনো, ইউগ্লেনা কোম্পানির সিইও মিতসুরু ইজুমো, জেরা গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভেন উইন, জেবিআইসির সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজুনোরি ওগাওয়া, ওনোদা ইনকের প্রেসিডেন্ট শিগেওশি ওনোদা, জেট্রোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো এবং আইডিই-জেট্রোর ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা বক্তব্য দেন।প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এতে সমাপনী বক্তব্য দেন।
২১২ দিন আগে
বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বাজেট সহায়তা দেবে জাপান
বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার দেবে জাপান। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে এ সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি সই হয়েছে।
এই ঋণ সহায়তার অর্থের ৬৪ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার দেশের রেলওয়ে খাতের উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে ব্যয় করা হবে। এর মাধ্যমে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েল-গেজ ডাবল-লেন রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তন স্থিতিশীলতার জন্য ৪১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার ও মানব উন্নয়ন বৃত্তির জন্য অনুদান ৪২ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পাশে চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি নিজ নিজ দেশের পক্ষে এসব চুক্তিতে সই করেন।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এসব চুক্তি সই ও নথি বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন।
২১২ দিন আগে
ফেনীর পশুরাম সীমান্তে শূন্যরেখায় বিএসএফের খাল খননের চেষ্টা, বিজিবির বাধা
ফেনীর পরশুরামের বল্লামুখার বাঁধের পাশে শূন্যরেখায় (নো ম্যান্স ল্যান্ড) খাল খননের চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে, তাদের এ অপতৎপরতা স্থানীয়দের সহায়তায় থামিয়ে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টার দিকে মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে বল্লামুখার বেড়িবাঁধের উত্তরে নোম্যান্সল্যান্ডের ১৫০ মিটারের ভিতরে এ ঘটনা ঘটেছে।
পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ মিয়া (৬০) জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টির মধ্যে স্কেভেটর ও যন্ত্রপাতি নিয়ে খাল খননের চেষ্টা করে বিএসএফ ও ভারতীয়রা। সীমান্তের পিলার থেকে ২০-৩০ গজ ভিতরে তারা খনন করার চেষ্টা করে। আমরা বিজিবির সঙ্গে উপস্থিত থেকে তাদের বাধা দিলে তারা চলে যায়।
স্থানীয় সংবাদকর্মী এম এ হাসান জানান, ভারত পূর্বের খননকৃত একটি খাল খননের কাজ পুনরায় শুরু করতে চাইলে বিজিবি বাধা দেয়। এরপর ভারতীয়রা সেখান থেকে সরে গেছে।
আরও পড়ুন: দুই জেলায় আরও ২৭ জনকে ঠেলে পাঠালো বিএসএফ
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ভারত সীমান্তে টিলা কেটে পানি বাংলাদেশের ভেতরে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় মানুষ এটি প্রতিরোধ করেছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। এ ধরনের কাজ আমরা করতে দেব না।
বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ অংশে বাঁধ দেওয়ার ফলে যে পানি জমে তা সরানোর জন্য ভারতের নিজেদের জমিতে একিটি মোটা ড্রেন করে। সেটি শুন্য লাইন থেকে ভারতের দিকে ১৫০ গজের মধ্যে পড়ায় সেটার আমরা প্রতিবাদ করি।
তিনি বলেন, নোম্যান্সল্যান্ডে স্থাপনা তৈরি উভয় দেশের আইনে নিষেধ রয়েছে। তাদের খাল খননের জায়গা নোম্যান্সল্যান্ডে হওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। বিজিবি-বিএসএফ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২১২ দিন আগে
অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিল জাপানের সোকা বিশ্ববিদ্যালয়
মাইক্রোক্রেডিট, সামাজিক ব্যবসা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে জীবনভর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে জাপানের খ্যাতনামা সোকা ইউনিভার্সিটি।
শুক্রবার (৩০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে এই মর্যাদাপূর্ণ ডিগ্রি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে তিনি বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে একটি বিশেষ বক্তব্য দেন।
নিক্কেই ফোরাম: ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া’য় অংশগ্রহণ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে অধ্যাপক ড. ইউনূস বুধবার (২৮ মে) বিকালে টোকিও পৌঁছান।
আরও পড়ুন: জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
তিনি ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সরকারি সফরে জাপানে অবস্থান করবেন।
এ অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাক্ষেত্রের শীর্ষ নেতাদের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম ‘নিক্কেই ফোরাম: থার্টিয়েথ ফিউচার অব এশিয়া’য় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে বৈঠকও করেছেন অধ্যাপক ড. ইউনূস।চার দিনের সফর শেষে তিনি শনিবার (৩১ মে) রাতে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২১২ দিন আগে
‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পাশে চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে জাপান সরকার ও দেশটির উদ্যোক্তাদের পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওতে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার ইন টোকিও’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। জেট্রো ও জাইকার আয়োজনে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা বড় সমস্যায় আছি। বাস্তবিক অর্থেই বাংলাদেশ গত ১৬ বছর ধরে একটি ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে গেছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে... এখন আমরা সেগুলো গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে জাপানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘একজন ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায়; জাপান তেমনই এক বন্ধু। আমি এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে।’
আরও পড়ুন: জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
তরুণদের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের কোটি কোটি তরুণের অসংখ্য স্বপ্ন আছে। সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতার দরকার।’
এই চ্যালেঞ্জকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই—হ্যাঁ, এটি সম্ভব হয়েছিল এবং তা হয়েছিল নিখুঁতভাবে।’
‘আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি এবং বলছি— আমরা কাজে নামার জন্য তৈরি। আপনাদের সহযোগিতা থাকলে এটি সম্ভব। চলুন একসঙ্গে এগিয়ে যাই এবং কাজটি শেষ করি। এটি অর্থ শুধু উপার্জন নয়, মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে তার সরকার, আর সে পথে জাপান বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার।
তিনি বলেন, ‘আরেকটি বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করুন, যাকে আমরা “নতুন বাংলাদেশ” নাম দিয়েছি। আমরা একসঙ্গে সেই বাংলাদেশ গড়ব। আপনারা পাশে থাকলে এটি অবশ্যই সম্ভব, আর তার ভিত্তি ইতোমধ্যে আমরা স্থাপন করেছি।’
মাতারবাড়ী উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি একটি পিছিয়ে পড়া দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাপান
প্রধান উপদেষ্টার ভাষ্যে, ‘নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের মানুষ মাতারবাড়ীর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে প্রবেশাধিকার পেতে পারে। মাতারবাড়ী হবে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্তির দরজা... আমরা এই দরজা সবার জন্য খোলা রাখব।’
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোকে সংযুক্তকারী কৌশলগত কেন্দ্র এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যা এখন ৩০০ ছাড়িয়েছে, যা গত এক দশকে ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে জাপান এখন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে চায়।
জাপান সরকার দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহ দিচ্ছে বলে জানান তিনি। জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন শিনজি। বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইলকেন্দ্রিক হলেও তা আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার আহ্বান জানান ভাইস-মিনিস্টার।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রচেষ্টায় জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
অনুষ্ঠান শেষে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতাবিষয়ক ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেট্রো চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি করপোরেশনের নির্বাহী করপোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু।
২১৩ দিন আগে
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা বিষয়ে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে এসব সমঝোতা স্মারক সই হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জেবিআইসি) ও বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে প্রথম সমঝোতা স্মারকটি সই হয়। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে জ্বালানি খাতে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেবিআইসি ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপ-প্রেস সচিব।
বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বিএসইজেড) জমি ইজারা চুক্তির জন্য জাপানের ওনোডা ইনকরপোরেশনের সঙ্গে দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়। ওনোডা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) উদ্যোগে বাংলাদেশে গ্যাস মিটার স্থাপনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং বিএসইজেডের একটি কারখানায় গ্যাস মিটার অ্যাসেম্বলি, পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাপান
তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটিও বিএসইজেডের একটি জমি ইজারা চুক্তির জন্য বাংলাদেশ ন্যাক্সিস কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সই হয়। বিএসইজেডের কারখানায় পোশাক সামগ্রী উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে ন্যাক্সিস।
ব্যাটারিচালিত সাইকেল ও ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল তৈরির একটি কারখানা স্থাপনে সহযোগিতার বিষয়ে গ্লাগিট, মুসাশি সেইমিৎসু ইন্ডাস্ট্রি গ্লাফিট ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মধ্যে চতুর্থ সমঝোতা স্মারকটি সই হয়।
পঞ্চম সমঝোতা স্মারকের আওতায় সাইফার কোর কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশে তথ্য নিরাপত্তার জন্য ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। পুরস্কারপ্রাপ্ত উদ্ভাবক তাকাতোশি নাকামুরার কমপ্লিট সাইফার টেকনোলজির ওপর ভিত্তি করে এই প্রকল্প বাংলাদেশকে ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তরে সহায়তা করবে।
ষষ্ঠ সমঝোতা স্মারকটি জাইকা ও বিআইডিএর মধ্যে সই করা হয়। এই সমঝোতা স্মারকটি ইন্টিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্মের (আইএসডব্লিউপি) প্রাথমিক পর্যায়ের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিগত ও ইন-কাইন্ড সহায়তা প্রদানের জন্য জাইকার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
এই প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশজুড়ে বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রচার সংস্থার পরিচালিত ব্যক্তিগত ওয়ান-স্টপ পরিষেবাগুলোকে একীভূত করার জন্য বিডার নেতৃত্বে একটি প্রচেষ্টা।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রচেষ্টায় জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস এই চুক্তিগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ এগুলো বাস্তবায়ন করা। আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত।’
বাংলাদেশের গত ১৬ বছরের পরিস্থিতিকে ভূমিকম্পের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘অনবরত ভূমিকম্পের মুখে পড়ার কারণে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট একটি আকৃতি পেতে ব্যর্থ হয়েছে।’
‘এই পরিস্থিতিতে একজন ভালো বন্ধু এগিয়ে এসেছে… সেই বন্ধু হলো জাপান। আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে।’
এই চ্যালেঞ্জকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই—হ্যাঁ, এটি সম্ভব হয়েছিল এবং তা হয়েছিল নিখুঁতভাবে।’
‘আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি এবং বলছি— আমরা কাজে নামার জন্য তৈরি। আপনাদের সহযোগিতা থাকলে এটি সম্ভব। চলুন একসঙ্গে এগিয়ে যাই এবং কাজটি শেষ করি। এটি অর্থ শুধু উপার্জন নয়, মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে তার সরকার, আর সে পথে জাপান বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার।
তিনি বলেন, ‘আরেকটি বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করুন, যাকে আমরা “নতুন বাংলাদেশ” নাম দিয়েছি। আমরা একসঙ্গে সেই বাংলাদেশ গড়ব। আপনারা পাশে থাকলে এটি অবশ্যই সম্ভব, আর তার ভিত্তি ইতোমধ্যে আমরা স্থাপন করেছি।’
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোকে সংযুক্তকারী কৌশলগত কেন্দ্র এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির সংখ্যা এখন ৩০০ ছাড়িয়েছে, যা গত এক দশকে ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে জাপান এখন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে চায়।
আরও পড়ুন: মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়ন জোরদারে জাইকার সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
সমঝোতা সই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেট্রো চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি করপোরেশনের নির্বাহী করপোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু।
২১৩ দিন আগে
নির্বাচন আগে-পরে নয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক রূপান্তর দেখতে চায় ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার
বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে তা নির্ধারণ করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দায়িত্ব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। বরং ইইউ বাংলাদেশে একটি সফল রাজনৈতিক রূপান্তর দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ হোটেলে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মিলার বলেন, ‘আমি মনে করি, নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত। নিবার্চন আগে-পরে হওয়া নিয়ে মতামত দেওয়া বা চাপ সৃষ্টি করা ইইউয়ের উচিত হবে না। এটি একেবারেই আমাদের বিষয় নয়।’
বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর ভিত্তি করে ভোট ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে তা হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের রূপান্তর প্রক্রিয়াকে আমরা সমর্থন করি এবং তা সফল হোক, এই কামনা করি।’
তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমসহ চলমান রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সংস্কার কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ইইউ বিশেষজ্ঞ দিয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা ইইউর
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোন দল নিবন্ধিত হবে আর কোনটি হবে না, সেটি বাংলাদেশের বিষয়। কারণ নিবন্ধন ও বাদ দেওয়া সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে রাজশাহীর আমের সম্ভাবনা
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজশাহীর আম ইউরোপীয় বাজারে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। শুধু আম নয়, এখানকার আরও অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা যেতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেও ইইউ সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
মিলার জানান, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে, যা বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিশ্বজুড়ে শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: ইইউ
এ ছাড়া রাজশাহী শহরের পরিকল্পিত অবকাঠামো ও পরিবেশেরও প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। বলেন, ‘রাজশাহী শহর খুব পরিষ্কার ও সুপরিকল্পিত। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।’
২১৩ দিন আগে
বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাপান
বাজেট সহায়তা, রেলপথ উন্নয়ন ও অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাপান।
শুক্রবার (৩০ মে) এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে জাপান ও বাংলাদেশ।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ অর্থ সহায়তার মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতার জন্য ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন হিসেবে দেওয়া হবে প্রায় ৪১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এ ছাড়া, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রুটকে ডুয়েল গেজ ডবল রেলপথে উন্নীত করার জন্য ৬৪ কোটি ৪১ লাখ ডলার এবং বৃত্তির জন্য ৪০ লাখ ২০ হাজার ডলার সহায়তা দেবে টোকিও।
আজ (শুক্রবার) সকালে টোকিওতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সফররত দলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার এবং বাংলাদেশের সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তর প্রচেষ্টার প্রতি জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে পরে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্রগঠনের উদ্যোগ, সংস্কার প্রচেষ্টা ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের অঙ্গীকারের প্রতি জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।’
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রচেষ্টায় জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
বৈঠকে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। অপরদিকে, রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অস্থায়ী আশ্রয় ও তাদের জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ইশিবা।
এ সময় দক্ষ মানবসম্পদ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারের উপায়সহ পারস্পরিক সার্থসংশ্লিষ্ট একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দুই নেতা।
২১৩ দিন আগে
অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার প্রচেষ্টায় জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তর প্রচেষ্টার প্রতি জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইশিবা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ মে) সকালে টোকিওতে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইশিবা এ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
পরে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্রগঠনের উদ্যোগ, সংস্কার প্রচেষ্টা ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের অঙ্গীকারের প্রতি জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।’
বৈঠকে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। বিশেষ করে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) উদ্যোগের আওতায় মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পে জাপানের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাধীনতার পর থেকে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে উভয়পক্ষ কৌশলগত অংশীদারত্বের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। পাশাপাশি তারা ‘ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক’ ধারণার প্রতি সমর্থন জানিয়ে সকলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার অভিন্ন লক্ষ্যের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়ন জোরদারে জাইকার সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
বৈঠকে উভয় দেশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে এবং জাতিসংঘ সনদের মূলনীতিকে ভিত্তি করে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেয়। উভয় দেশই এ সময় আইনের শাসনের ভিত্তিতে বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্রের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে। এ ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও আলোচনা করেন দুই নেতা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা জোরদারে দুটি ঋণচুক্তি এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ঋণচুক্তি-সংক্রান্ত ‘এক্সচেঞ্জ অব নোটস’ স্বাক্ষরকে উভয়পক্ষ স্বাগত জানায়।
বৈঠকে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে বিডায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস, প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন, ব্যাটারিচালিত সাইকেল তৈরির কারখানা, তথ্য নিরাপত্তাবিষয়ক পাইলট প্রকল্প এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভূমি চুক্তিসহ একাধিক সমঝোতা স্মারক ও সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। পাশাপাশি উভয় পক্ষই পারস্পরিক লাভজনকভাবে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং দ্রুততম সময়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও আলোচক দলগুলোকে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
নিরাপত্তা সহযোগিতায় পাঁচটি টহল নৌকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সরবরাহের বিষয়টি তুলে ধরা হয় এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের চুক্তির বিষয়ে নীতিগত সম্মতির কথাও জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নেবে জাপান
এ সময় দক্ষ মানবসম্পদ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারের উপায় নিয়েও আলোচনা করেন দুই নেতা। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জাপানের ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস।
অন্যদিকে, রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অস্থায়ী আশ্রয় ও তাদের জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ইশিবা। এদের মধ্যে ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য জাপানের মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন অধ্যাপক ইউনূস। আর এ বিষয়ে জাপান তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
বৈঠকে উভয় পক্ষই সম্মত হয় যে, রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হলো তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসন, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে সহায়ক হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথাও স্বীকার করেন তারা।
বৈঠকের শেষে অধ্যাপক ইউনূস জাপান সরকারের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
২১৩ দিন আগে