বৈদেশিক-সম্পর্ক
মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়ন জোরদারে জাইকার সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) বাস্তবায়নে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি জানান, এই অঞ্চলে গভীর সমুদ্রবন্দর, মহাসড়ক ও রেলপথ গড়ে তুলে এটি দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।
টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া’র ফাঁকে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জাইকার প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্ট বলেন, ‘এমআইডিআই অঞ্চলই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। বঙ্গোপসাগরের সংযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা এই অঞ্চলকে নেপাল, ভুটানসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে যুক্ত করতে বন্দর, সড়ক ও রেল অবকাঠামো গড়ে তুলছি।’
জাইকার প্রস্তাবেই মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এখন এমআইডিআই অঞ্চলকে বন্দর, লজিস্টিক, মৎস্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতে রূপান্তরের জন্য একটি সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নেবে জাপান
প্রধান উপদেষ্টা জানান, এমআইডিআই অঞ্চলে একটি মেগাসিটি গড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে এবং বিমানবন্দরগুলোকে উন্নত করা হচ্ছে বেড়ে যাওয়া যাত্রী চাহিদা মেটাতে।
ড. তানাকা এমআইডিআই প্রকল্পে জাইকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলেও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন যাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হয়।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, এমআইডিআই প্রকল্পে তদারকি ও জাইকা ও অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
তিনি আরও জানান, এমআইডিআই অঞ্চলে একাধিক মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা হবে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা স্থাপনের আহ্বান জানানো হবে।সরকার এই অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট মৎস্য অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনাও করছে, যেখানে বড় আকারের মাছ ধরার জাহাজ পরিচালিত হবে।
‘আমাদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার দিকে যেতে হবে,’ বলেন ড. ইউনূস। ‘বর্তমানে প্রতিবেশী দেশের জাহাজগুলো আমাদের জলসীমায় মাছ ধরে যাচ্ছে, অথচ আমাদের ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে যাওয়ার উপযোগী নয়। আমরা এই সক্ষমতা গড়ে তুললে মাছ প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি ও দেশীয় বাজারে সরবরাহ করা যাবে।’
ড. তানাকা বলেন, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার বিষয়ে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি নেতার কাছ থেকে শুনলেন।
বৈঠকে জুলাইয়ের রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতির পর বাংলাদেশে সংস্কার কর্মসূচি, গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, সাধারণ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি তার আগের পেশায় ফিরে যাবেন।এছাড়া বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা এমআইডিআই অঞ্চলে মানবিক সহায়তায় জাইকার সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
জবাবে জাইকার প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে অংশগ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
২১৩ দিন আগে
বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নেবে জাপান
ক্রমবর্ধমান শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের কথা জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিও-তে মানবসম্পদ নিয়ে এক সেমিনারে তিনি এসব বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাপানে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমার জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও প্রেরণার দিন। শুধু কাজ করার জন্য নয়; এ পদক্ষেপ জাপানকে জানারও দ্বার উন্মোচন করবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য।’
সেমিনারে দুই দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কাইকম ড্রিম স্ট্রিটের (কেডিএস) মধ্যে। অন্যটি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি—জাপানে ৬৫টির বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএর (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি) মধ্যে।
আরও পড়ুন: এশিয়াকে অভিন্ন সমৃদ্ধির বাতিঘরে পরিণত করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ সেমিনারটি দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বার উন্মোচনের প্রতীক। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। সরকারের কাজ হলো তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।’
এ সময় শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, ‘অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমি বিশ্বাস করি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি মেধাবীদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের প্রতিভা লালন করা আমাদের দায়িত্ব।’
সেমিনারে স্মৃতি আউড়িয়ে এনবিসিসির চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর আগে অধ্যাপক ইউনূস জাপানে এসেছিলেন। সে সময় তিনি ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের সহায়তার গল্প বলেছিলেন।’
তাদের ফেডারেশন তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে দেখছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া, এই শ্রমিকরা উভয় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে আমর এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।’
ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল প্রতিবছর ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়। এই সংখ্যা তারা ৩ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা ইইউর
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন।’
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনিং অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (জেইটিসিও) চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে বলে মত দেন তিনি।
জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমএইচএলডব্লিউ) প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, ‘জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং সে কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে।’
শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, জাপানের জন্যও এই উদ্যোগ একটি আশাব্যঞ্জক দিক হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট এক কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারে।
২১৩ দিন আগে
এশিয়াকে অভিন্ন সমৃদ্ধির বাতিঘরে পরিণত করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের নতুন পথ নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি এশিয়াকে অভিন্ন সমৃদ্ধির বাতিঘরে পরিণত করার লক্ষ্যে সাত দফা কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’র উদ্বোধনী অধিবেশনের মূল বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যদি ভবিষ্যতের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাই, এশীয় দেশগুলো আরও ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ করে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। আমাদের একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ ও সমৃদ্ধির সুস্পষ্ট পথ তৈরি করতে হবে।’
এশিয়ার দেশগুলোর পারস্পরিক নির্ভরশীলতাকে সহযোগিতায় রূপান্তরিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এশিয়ার অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈচিত্র্য একদিকে যেমন শক্তি, অন্যদিকে তেমনি তা একটি কঠিন পরীক্ষাও। আমাদের পরস্পরের ভাগ্য এখন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে গেছে। এক দেশে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন দেখা দিলে তা অন্য দেশেও প্রভাব ফেলে।’
‘এক দেশের পরিবেশ বিপর্যয় অন্য দেশের বৃষ্টিপাতের ওপর প্রভাব ফেলে; এক অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও বাণিজ্য প্রবাহ প্রভাবিত হয়।
‘এই আন্তঃনির্ভরতাকে সংঘাতে নয়, সহযোগিতায় রূপ দিতে হবে; অভিন্ন সমৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করতে হবে, কোনো ধরনের প্রতিযোগিতায় যাওয়া যাবে না।’
২১৪ দিন আগে
সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা ইইউর
১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন উল্লেখ করে তাদের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক বার্তায় ঢাকাস্থ ইইউ দূতাবাস এ কথা জানিয়েছে।
বার্তায় বলা হয়, সংঘাতের অবসান ও প্রাণ রক্ষার এই প্রচেষ্টার স্বীকৃতি জানাই আমরা। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ইইউ দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের এই কর্মকাণ্ড আমাদের নিরাপদ রাখে এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
২১৪ দিন আগে
জাপানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আসন্ন এই বৈঠক দুই দেশের বিভিন্ন খাতে চলমান সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে নিক্কেই ইনকরপোরেশেনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী সুয়োশি হাসেবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনের প্রাক্কালে সাক্ষাৎটি অনুষ্ঠিত হয়। জাপান সফরের তৃতীয় ও শেষ দিনে শুক্রবার জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক খাতে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে; আমি এটির ওপর কাজ করতে চাই।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি নিয়মিত জাপানে সফর করতেন, তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এই প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ে। পাশাপাশি নিক্কেই ফোরামের মাধ্যমে জাপানে অনেক বন্ধু তৈরির সুযোগ পাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান হাসেবে। প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও প্রধান উপদেষ্টা এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জাপানে একটি প্রবাদ আছে— আগুন থেকে বাদাম তোলার সাহস থাকতে হয়।’
সাক্ষাৎ শেষে নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’য় বক্তব্য দেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: টোকিও থেকে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তায় চায় ঢাকা
২১৪ দিন আগে
চীনা বাজারে বাংলাদেশি আমের প্রবেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
চীনের বাজারে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশি আম। এটি শুধু চীন-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধিই করবে না, ভারসাম্য উন্নত করবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকায় নিযুক্ত বেইজিংয়ের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশের তাজা আমের প্রথম চালানের বিমান পরিবহনের বিদায়ের অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এই পদক্ষেপ বাণিজ্যের ভারসাম্য উন্নতির পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ‘উইন-উইন‘ অবস্থা সৃষ্টি করবে। যেখানে দুই পক্ষই জয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি বাংলাদেশি আম চীনা ভোক্তাদের টেবিলে ঠিকঠাকভাবে পৌঁছাবে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনা বাজারে প্রবেশ করবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও মো. আনোয়ার হোসাইন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, গঙ্গার বদ্বীপ এলাকার উর্বর মাটিতে উৎপাদিত বাংলাদেশি আম সবুজ ও উচ্চমানের কৃষিপণ্য হিসেবে পরিচিত।
চীনা ভোক্তাদের সবজির ঝুড়িতে এটি বৈচিত্রপূর্ণ বিকল্প সরবরাহ করবে এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
চীনা বাজারের বিশাল সম্ভাবনা বাংলাদেশের আম শিল্পে সরাসরি উন্নয়ন আনবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি এ উদ্যোগ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলেও মত দেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং বহুবার উল্লেখ করেছেন, চীনের উন্মুক্ত হওয়ার দরজা কখনো বন্ধ হবে না, বরং ক্রমশ আরও বিস্তৃত হবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানান, ‘চীনে বাংলাদেশি আমের রপ্তানি কেবল একটি সূচনা মাত্র। ইতোমধ্যে দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পেয়ারা ও কাঁঠালের প্রবেশ নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে বেইজিং।’
বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পশম আমদানি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ থেকে চীনে ইলিশ মাছ রপ্তানির প্রত্যাশাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আশা করছি শিগগিরই আরও বেশি সংখ্যক উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনের সুপারমার্কেটে জায়গা করে নেবে, যা দুই দেশের মানুষের জন্য বাস্তবিক সুবিধা বয়ে আনবে।’
ইয়াও বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বিরাজ করছে অস্থিরতা ও অনিশ্চিয়তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাভাবে শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ব্যাপকভাবে ব্যাহত করেছে।
চীন ও বাংলাদেশসহ সব দেশ শান্তিপূর্ণ বিশ্ব ও স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক পরিবেশ কামনা করে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান, সমর্থন, সমতা ও উইন-উইন সহযোগিতা বজায় রাখতে চায় বেইজিং।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো বহুপাক্ষিক কাঠামোতে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করব এবং দুই দেশের শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের সমন্বিত উন্নয়ন ঘটাবো।’
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বেইজিং সফরের কথা উল্লেখ করে ইয়াও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সফলভাবে সফর সম্পন্ন করেছেন এর ফলাফল প্রত্যাশার বাইরে। বাংলাদেশের আম চীনে রপ্তানি হওয়া এ ফলাফল বাস্তবায়নের একটি দৃশ্যমান পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
২১৪ দিন আগে
জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
চার দিনের সরকারি সফরে জাপানের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সফরকালে তিনি টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৩০তম ‘নিক্কেই ফোরাম ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ইউএনবিকে জানান, মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর আড়াইটায় তিনি জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন এবং সফর শেষে আগামী শনিবার (৩১ মে) তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে বলে জানান উপ-প্রেস সচিব।
এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) এক ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সফরে বাংলাদেশ ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা এবং রেল খাতে আরও ২৫ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়ার আশা করছে।
আরও পড়ুন: এমআইডিআই অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নের গতি বাড়ানোর তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
জাপানের সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলার বা ১০০ কোটি ডলারের ‘সফট লোন’ চুক্তির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঋণ ঘোষণা হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রেস সচিব।
তিনি আরও জানান, জাপানে ১ লাখ দক্ষ কর্মী পাঠাতে চায় বাংলাদেশ। এ বিষয়ে একটি সেমিনারে অংশ নেবেন অধ্যাপক ইউনূস। পাশাপাশি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করতে জেট্রো ও জাইকার যৌথ আয়োজনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দুই দেশের শতাধিক ব্যবসায়ী অংশ নেবেন।
সফরকালে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এটি অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম জাপান সফর। এর আগে তিনি ২০০৪ ও ২০০৭ সালে ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে দেশটি সফর করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউনূসের এ সফরে রোহিঙ্গা সংকট, অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি ও মানবসম্পদসহ কৌশলগত নানা বিষয়েও আলোচনা হবে।
২১৫ দিন আগে
টোকিও থেকে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তায় চায় ঢাকা: শফিকুল আলম
বাংলাদেশ জাপান থেকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা এবং অতিরিক্ত ২৫ কোটি ডলার রেল খাতে সহায়তা প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অংশ হিসেবে অন্যান্য খাতেও জাপানের সহায়তা পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস বুধবার (২৮ মে) ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চার দিনের সরকারি সফরে জাপানের উদ্দেশে রওনা হবেন। তিনি ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’-তে অংশগ্রহণ করবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর,’ বলেন প্রেসসচিব। ‘বাংলাদেশ জাপান থেকে ১ বিলিয়ন ডলার সফট লোন হিসেবে চেয়েছে এবং দুই নেতার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও নোট বিনিময় স্বাক্ষরিত হবে।’
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আহম্মাদ ফয়েজ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাপানে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য ১ লাখ দক্ষ কর্মী পাঠানো।’
‘প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ, বিশেষ করে ভাষা শিক্ষা নিশ্চিত করে তাদের দ্রুত পাঠাতে চায় সরকার। এটি প্রধান উপদেষ্টার অগ্রাধিকারভুক্ত বিষয় এবং বাংলাদেশ এ খাতটি নিয়ে কাজ করছে।’
শফিকুল আলম বলেন, এছাড়াও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে—একটি জেট্রো ও জাইকা আয়োজিত বিনিয়োগ বিষয়ক সেমিনার, যেখানে দুই দেশের শতাধিক ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করবেন। অন্যটি হবে দক্ষ শ্রমিক বিষয়ে, যা বাংলাদেশ পক্ষ আয়োজিত এবং এতে জাপানি সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণ থাকবে।
উভয় সেমিনারে কিছু সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে মাতারবাড়ি অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। উপকূলীয় এই এলাকাকে দেশের প্রধান শিল্প ও রপ্তানিমুখী ফ্রি ট্রেড জোনে পরিণত করার লক্ষ্যে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
সোমবার রাজধানীর স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অধ্যাপক ইউনুস মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআইডিআই) প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।
তিনি বলেন, এই এমআইডিআই অঞ্চল উন্নয়ন তার আসন্ন জাপান সফরের মূল আলোচ্য বিষয়গুলোর একটি হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৩০ মে টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং মূল প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
“আমরা মাতারবাড়িকে দেশের বৃহত্তম বন্দর, লজিস্টিকস, শিল্প ও জ্বালানি হাবে পরিণত করতে চাই। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের ব্যাপক বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রয়োজন,” বলেন তিনি।
তিনি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কথা তুলে ধরে বলেন, এই বিনিয়োগ বাস্তবায়নের জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান অপরিহার্য।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এটি হবে অধ্যাপক ইউনুসের প্রথম জাপান সফর। এর আগেও তিনি একাধিকবার জাপান সফর করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া প্রাইজ পুরস্কার গ্রহণ এবং ২০০৭ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অপিনিয়ন লিডার ইনভাইটেশন প্রোগ্রাম’-এ অংশগ্রহণ।
তিনি টোকিও সময় বুধবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন এবং শনিবার দেশে ফিরবেন। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, ৩০ মে টোকিওতে প্রধান উপদেষ্টা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
‘এই বৈঠকে বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে—বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, অবকাঠামো, মানবসম্পদ উন্নয়ন,’ বলেন তিনি। রোহিঙ্গা ইস্যুটিও আলোচনায় থাকবে বলে জানান রুহুল আলম সিদ্দিকী।
প্রধান উপদেষ্টাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘এই সফরের মূল ফোকাস হচ্ছে বাজেট সহায়তা।’ পাশাপাশি কৌশলগত সব বিষয় আলোচনা হবে। সফরে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
২৮ মে জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী লীগের সভাপতি তারো আসো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
তিনি নিপ্পন ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ইয়োহেই সাসাকাওর আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন, যেখানে জাপানি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত থাকবেন। নৈশভোজের পর প্রধান উপদেষ্টা জাপানি বিশিষ্টজনদের সঙ্গে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সভায় অংশ নেবেন।
২৯ মে নিক্কেই ফোরামের উদ্বোধনের আগে নিক্কেই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনুস ‘এক অস্থির বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন এবং বিশ্বকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাবেন।
জাইকার প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে জাইকার ভবিষ্যৎ সহযোগিতা এবং চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় ভাইস-মিনিস্টার ইকুইনা আকিকো অধ্যাপক ইউনুসকে এই নিক্কেই ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া প্রাইজ পান।
সফরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, খাতভিত্তিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক বিনিময়, রোহিঙ্গা ইস্যু, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলো আলোচিত হবে।
‘জাপান-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারত্ব’-এর অধীনে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২১৫ দিন আগে
কমলগঞ্জ সীমান্তে ২১ জনকে ঠেলে পাঠালো বিএসএফ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় নারী ও শিশুসহ ২১ জনক আটক করেছে বিজিবি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ঠেলে পাঠানো (পুশ-ইন) করেছে। আটকরা বাংলাদেশি নাগরিক বলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (২৬ মে) সকাল পৌনে ৮টার দিকে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মতেরবল সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় তাদের আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৮ শিশু রয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, এদিন সকালে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় ২১ জনক আটক করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সবাই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
বিজিবি-৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এ এস এম জাকারিয়া ২১ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটকদের কমলগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আটরা হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার সদর থানার দেওয়াবের খামার গ্রামের বেলাল হোসেন (৪৫), রাশেদা বেগম (৩৫), ফুলবাড়ি উপজেলার শিমুল বাড়ি গ্রামের মজিবুল (২২), সেলিনা (২০), মৌপিতা (৩), মরিয়ম (৮ মাস),গোলদার (৫০), আনজু (৪০), রাশেদুল (২০), জেসমিন (৮), রাঙ্গামাটি গ্রামের আশরাফ (৪০), রাহেনা (৩০), রায়হান (৮), আশা মনি (১৮), আখের আলী (২৩), তৈয়ব আলী (৪৫), ইব্রাহিম (২ মাস), খাদিতা (২), নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতি গ্রামের নাজমুল হাসান (২৪), ইনচার আলী (৫০), হামিদা বেগম (২০) ও রাবেয়া খাতুন (২)।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটকদের এখনও থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। হস্তান্তরের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে চলতি মাসের ৭ মে কমলগঞ্জের দলই সীমান্তে নারী, শিশুসহ ১৫ জনকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ। এ নিয়ে চলতি মাসে কমলগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো মোট ৩৬ জনকে আটক করল বিজিবি।
২১৬ দিন আগে
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলোহাব সাইদানি বৈঠক করেছেন। সোমবার (২৬ মে ) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন ও বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও টেকসই করতে উভয়দেশকে বাণিজ্যিক সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এসময় তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আলজেরিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান পাট উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বে পাট ও বাংলাদেশ সমার্থক হিসেবে পরিগণিত হয়। এসময় তিনি বাংলাদেশ থেকে পাটজাত ও ঐতিহ্যবাহী পণ্য আমদানি করতে আলজেরিয়ার প্রতি আহবান জানান।
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ইন্টার গভর্নমেন্ট জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (আন্ত:সরকার যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন)গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: কোরবানির চামড়ার উপযুক্ত দাম নিশ্চিতে সংরক্ষণে সহায়তা দেবে সরকার : বাণিজ্য উপদেষ্টা
তিনি বলেন,আলজেরিয়ায় পাট পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। সেকারণে বাংলাদেশ থেকে পাটের তৈরি পণ্য আমদানি করতে তারা আগ্রহী।এসময় তিনি আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এক্সপোতে বাংলাদেশি পাট ও ঐতিহ্যবাহী পণ্য প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আফ্রিকা উইং) বি এম জামাল হোসেন ও অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
২১৬ দিন আগে