বৈদেশিক-সম্পর্ক
আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় দিল্লির উদ্বেগ প্রকাশ, দ্রুত নির্বাচনের প্রত্যাশা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের উপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত।
মঙ্গলবার (১৩ মে) নয়া দিল্লিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই আওয়ামী লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা একটি উদ্বেগজনক ঘটনা।’
পড়ুন: আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে অন্যদের বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে না, সরকারের আশ্বাস
জয়সওয়াল বলেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত স্বাভাবিকভাবেই ‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণ ও সংকোচন হওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের দ্রুত আয়োজনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলের নেতা-কর্মীদের বিচার চলমান অবস্থায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সমস্ত কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সরকার।
২২৯ দিন আগে
আলী রীয়াজের সঙ্গে দ্য কার্টার সেন্টারের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টরের বৈঠক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সঙ্গে দ্য কার্টার সেন্টারের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জনাথন স্টোনস্ট্রিট বৈঠক করেছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাকায় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় দ্য কার্টার সেন্টারের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর সাইরাহ জাইদি ও লোকাল সহকারী বিশেষজ্ঞ কাজী শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ঐকমত্য কমিশনের কার্য অগ্রগতি এবং লক্ষ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এই রাষ্ট্র পুনর্গঠন আলোচনা: আলী রীয়াজ
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার সংক্রান্ত ৫টি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট মতামত জানতে ইতোমধ্যে সুপারিশমালা স্প্রেডশিট আকারে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আমরা মতামত পেয়েছি এবং তার ভিত্তিতে ৩২টি দলের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে আলোচনা করেছে কমিশন। শিগগিরই প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করে দ্বিতীয় ধাপে আলোচনা শুরু করবে কমিশন।
তিনি আরও বলেন, সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চায় কমিশন, যা ভবিষ্যত বাংলাদেশের পথরেখা নির্দেশ করবে। একটি গণতান্ত্রিক এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণে এই জাতীয় সনদ ভূমিকা রাখবে। যা দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী এবং স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত রাখার নিশ্চয়তা দেবে।
২২৯ দিন আগে
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পরিবেশবান্ধব ব্যবসা মডেল গ্রহণ জরুরি: সুইডিশ রাষ্ট্রদূত
ক্রেতাদের চাহিদা টেকসই পণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়েছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে সুইডেনের বড় বড় ব্র্যান্ড, জলবায়ু ইস্যুতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস।
তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পণ্য সরবরাহকারীদের পরিবেশবান্ধব ব্যবসা মডেল গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক।’
সোমবার (১২ মে) অনুষ্ঠিত ‘সাসটেইনেবল ফ্যাশন প্ল্যাটফর্মের চতুর্থ উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে পোশাক খাতে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে সহযোগিতা জোরদার করাই ছিল সংলাপের মূল লক্ষ্য।
রাষ্ট্রদূত উইকস নিজেই এ সংলাপের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সুইডেনের বৈশ্বিক উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো টেকসই ব্যবসায়িক মডেল। বাংলাদেশে এই দৃষ্টিভঙ্গি সবচেয়ে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে, যেখানে এইচঅ্যান্ডএম গ্রুপ, আইকেয়া ও লিন্ডেক্স-এর মতো সুইডিশ ব্র্যান্ডগুলো পরিবেশগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ রূপান্তরের ‘গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে’: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
তিনি বলেন, টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে, যা সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক ক্ষেত্র তৈরি করে।
এই পদ্ধতি শুধু অপারেশনাল ঝুঁকি কমাবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে, জলবায়ু লক্ষ্যে অবদান রাখবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-৬) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদীয়মান দায়িত্বশীল ব্যবসা নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবে।
প্রযুক্তি স্থানান্তর, নীতিনির্ধারণী সংলাপ এবং যৌথ পদক্ষেপের মাধ্যমে এই রূপান্তরকে সহায়তা করতে সুইডেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখা ও শক্তিশালী করা সম্ভব।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার নিয়ে প্রতিযোগী বিভিন্ন খাতের মধ্যে টেকসইভাবে পানি বণ্টনের জন্য নীতিমালার প্রয়োজন রয়েছে। আরএমজি শিল্পকে স্পষ্ট করতে হবে তারা কোন কোন মন্ত্রণালয় থেকে কী ধরনের নীতিগত সহায়তা চায় এবং দ্রুততম সময়ে ভূগর্ভস্থ ও ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির ব্যবহারের ওপর একটি কার্যকর ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন জরুরি।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘পানি ব্যবস্থাপনায় কার্যকর দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে যাতে শিল্প, কৃষি এবং সাধারণ জনগণের পানির প্রয়োজন পূরণ হয়—এবং এই ভারসাম্য বজায় রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিষ্কার পানি নিশ্চিত করা যায়।’
এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল শিল্প খাতে, সরকারি নীতিতে এবং সরবরাহ চেইনে টেকসই পানি ব্যবহারের চর্চা উন্নয়নের জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীজনদের একত্র করা।
এটি ব্যবসায়িক স্বার্থ, নীতিগত সমাধান এবং বিস্তৃত উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে প্রতিযোগিতা, সঙ্গতি ও পরিবেশগত সততা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাভিদ শফিউল্লাহ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. লুৎফর রহমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পানি সরবরাহ উইং) মো. ফজলুর রহমান, পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার তুষার মোহন সাধু খান।
আরও পড়ুন: ঢাকা-বেইজিংয়ের বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন স্তরে উন্নীত হবে: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
সাসটেইনেবল ফ্যাশন প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশে সুইডিশ দূতাবাস, বিজনেস সুইডেন, এইচঅ্যান্ডএম গ্রুপ, আইকেয়া, লিন্ডেক্স, নর্ডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআই), সুইডেন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (এসবিবিসি) এবং সুইডিশ এনার্জি এজেন্সির (এসইএ) একটি যৌথ উদ্যোগ।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে সুইডিশ পক্ষগুলোর টেকসই কার্যক্রমকে একটি প্ল্যাটফর্মের অধীনে আনা এবং বাংলাদেশ-সুইডেন অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করাই এই নীতিনির্ধারণী সংলাপের লক্ষ্য। এটি ইউনিসেফের সহায়তায় আয়োজন করা হয়।
২৩০ দিন আগে
সীমান্তে ভারতের ‘পুশ ইন‘ সুপরিকল্পিত ও ন্যাক্কারজনক: বিজিবি ডিজি
ভারত তাদের দেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়াকে (পুশ ইন) মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে দাবি করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
সোমবার (১২ মে) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে বিজিবি মহাপরিচালক এ কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে ভারতের পুশ-ইনের ঘটনা সুপরিকল্পিত ও ন্যাক্কারজনক বলেও মন্তব্য করেন বিজিবি ডিজি।
তিনি বলেন, ‘গত ৭ ও ৮ মে দুই দিনে আমরা ২০২ জনকে পেয়েছি। তাদের বিএসএফ বিভিন্নভাবে জনবসতি নেই—এমন সব জায়গায় পুশ-ইন করেছে। আপনারা জানেন, সীমান্তের প্রতিটি জায়গা শারিরীকভাবে দখলে রাখা যায় না। যেসব জায়গায় কেউ ছিলো না, সেখানেই পুশ-ইন করেছে।’
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে ৮১ ভারতীয়কে পুশ-ইন করল বিএসএফ
তাদের নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘আমরা পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাদের বাংলাদেশি পেয়েছি, তারা গত ২ থেকে ৩ বছর মধ্যে এমনকি অনেকে ২০ থেকে ২৫ বছর আগে নানান কাজে ভারতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেরই সন্তান-সন্তানদি আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতের আধারকার্ডসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস ছিল। ভারতের পুলিশ বা বিএসএফ সেগুলো রেখে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বলে জানান বিজিবি মহাপরিচালক।
পুশ-ইনের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের নিজ নিজ এলাকায় ফেরত পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তে আটকদের মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে। তারা আমাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের আমরা ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছি।’
ডিজি বলেন, ‘এরমধ্যে একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো কিছু রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে—যারা ভারতের ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশন) এর তালিকাভুক্ত শরণার্থী। তাদের আইডি কার্ডও আমাদের কাছে আছে।’
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে ইউএনএইচসিআর-এর পরিচয়পত্রগুলো তুলে ধরেন।
আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সকলকে জানাতে চাই, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। যে দেশের শরণার্থী সেখানেই তাদের রাখার দরকার ছিল। আমরা এমন পাঁচজন শরণার্থী পেয়েছি।’
বিএসএফ বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করছে জানিয়ে ডিজি বলেন, ‘তারা (বিএসএফ) বলছেন, এ বিষয়ে তারা জানেন না। হয়তো তারা নিজেই চলে গিয়েছিল ভারতে, হয়তো তারা নিজেরাই ফেরত আসছে–এ ধরনের কথা বলছে। এটা আমরা মানছি না। আমরা পতাকা বৈঠক করে প্রতিবাদ লিপি দিয়েছি। একই সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলেছি৷ তারা যদি বাংলাদেশি হয়—তাহলে আমরা তাদের গ্রহণ করব। তবে সেটি এমন লুকোচুরির মাধ্যমে না হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেই করা হবে বলে জানান বিজিবির ডিজি।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি খাগড়াছড়ির দিকে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনের মতো শরণার্থী ওপারে আছে। যাদেরকে বিএসএফ পুশ-ইন করার চেষ্টা করেছিল। আমাদের টহল বাড়ানোয় ও সীমান্তে সজাগ দৃষ্টি থাকায় গত দুই দিন ধরে তারা চেষ্টা করেও পারছে না।’
ডিডি বলেন, স্থলপথ দিয়ে পুশ-ইন দিতে না পেরে বিএসএফ সুন্দরবনের দুর্গম মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় একটি জাহাজে করে ৭৮ জনকে ফেলে গেছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে ভারতের পুশ-ইন: সরকারের নীরবতায় ক্ষোভ ঝাড়লেন রিজভী
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করেছে। তাদের নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর প্রক্রিয়ায় আছে। আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি, একই সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিজিবি ডিজি বলেন, ‘মূলত খাগড়াছড়ির বানছগি, জামিনি পাড়া, খেদাছড়া সীমান্ত ও কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারির চর অঞ্চল এবং সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া দিয়ে পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ যেসব এলাকায় জনবসতি নাই বা টহল যেতে সময় লাগে সেসব এলাকা টার্গেট করে পুশ-ইনের চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
২৩০ দিন আগে
‘সমন্বিত অর্থনৈতিক কৌশলের’ আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
জলবিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা ও সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার সম্ভাবনার উপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল, ভূটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের (সেভেন সিষ্টার্স) মধ্যে একটি ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক কৌশল’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১২ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ সফররত নেপালের ফেডারেল পার্লামেন্টের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেপুটি-স্পিকার ইন্দিরা রানা প্রধান উপদেষ্টর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
ঢাকায় নেপাল দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করছেন ইন্দিরা রানা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা আলাদাভাবে কাজ করার চেয়ে একসঙ্গে কাজ করলে বেশি লাভবান হতে পারি।’ সমন্বিত অবকাঠামো ও জ্বালানি উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জন্য একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থাকা উচিত।’
ইন্দিরা রানার সঙ্গে ড. ইউনূসের আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জলবিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ ও নেপালের পারস্পরিক সহযোগিতা।
আরও পড়ুন: র্যাব হবে পুনর্গঠন, পুলিশের হাতে থাকবে না মারণাস্ত্র: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য গত অক্টোবরে সই করা বাংলাদেশ-নেপাল-ভারত ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। বৈঠকে উভয়ই বৃহত্তর পরিসরে আরও জলবিদ্যুৎ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন।
আঞ্চলিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, ‘রংপুরে নির্মাণাধীন ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি নেপাল ও ভূটানের রোগীদের জন্যও উন্মুক্ত থাকবে। তিনি বলেন, আমরা আঞ্চলিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অভিন্ন অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বাসী।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার কাঠমান্ডুর আগ্রহের কথা জানান দেশটির ডেপুটি-স্পিকার ইন্দিরা রানা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল সংসদ সদস্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। আমরা অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করতে ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে আন্তরিক।’
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৭০০ বেশি নেপালি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এসব শিক্ষার্থীর বেশিরভাগই মেডিকেল কলেজে পড়ছেন। ডেপুটি-স্পিকার বাংলাদেশের শিক্ষার মানের প্রশংসা করেন এবংতিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রশংসা করেন এবং আরও শিক্ষা বিনিময় ও একাডেমিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।
দুই দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে দুদেশের মধ্যে সরাসরি সংযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে সরাসরি সড়ক সংযোগ উন্নয়ন করা গেলে বাণিজ্যিক ব্যয় কমবে এবং মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহন সহজ হবে।’
এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইসরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন।
২৩০ দিন আগে
বাংলাদেশ রূপান্তরের ‘গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে’: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আশা প্রকাশ করেছেন, চীনের আধুনিকীকরণ বাংলাদেশ ও অন্যান্য গ্লোবাল সাউথের দেশের জন্য কিছু উদাহরণ হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ এই ‘গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে’ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিকীকরণ গ্লোবাল সাউথের জন্য একটি স্বাভাবিক ঘটনা। পশ্চিমা দেশগুলো শতাব্দী ধরে যা অর্জন করেছে, কয়েক দশকের মধ্যে চীন তা অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, দুটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে— দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই সামাজিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা হয়েছে, যা পশ্চিমাদের আধুনিকতার তত্ত্বকে ভেঙে দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীনের অনুশীলন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব আধুনিকীকরণের পথ অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করে।
রবিবার (১১ মে) বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘শি জিনপিং: দ্য গভর্নেন্স অব চায়না’ বই সম্পর্কে চীন-বাংলাদেশ পাঠক ফোরাম’-এ তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সম্প্রতি ফাওজুল কবির প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে চীন সফর করেছেন।
তিনি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য-শিল্প প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
২৩১ দিন আগে
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য-শিল্প প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকি বৈঠক করেছেন।
রবিবার (১১ মে ) দুপুরে ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২৫-এর ভেন্যুর জাপান প্যাভিলিয়নে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর ও সুদৃঢ় করতে আগ্রহী। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (এপিএ) সইয়ের পঞ্চম রাউন্ডের আলোচনা ফলপ্রসূভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
জাপানের প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে জাপান সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়নে দুদেশের মধ্যে যে সকল মতপার্থক্য রয়েছে আলোচনার মাধ্যমে দূর করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ তরুণ শ্রেণির—যাদের বয়স ১৬- ৩০ বছরের মধ্যে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তিতে রূপান্তর করে জাপানের শ্রম বাজারে পাঠাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। তার অংশ হিসেবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসময় তিনি বাংলাদেশে আরও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তৈরি ও আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণদানের সুযোগ তৈরিতে জাপান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সার কারখানায় বিনিয়োগ করেছে যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তিনি বাংলাদেশে আরও বেশি জাপানি বিনিয়োগের জন্য জাপান সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
জাপানের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকি বলেন, জাপানে দক্ষ শ্রমিকের খুব প্রয়োজন। বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি এদেশের শ্রমবাজারে আসলে বাণিজ্যের একটি নতুন দিক উন্মোচন হতে পারে, যা দুদেশের জন্যই সুখকর হবে। এসময় তিনি দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে জাপানের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী, জাপানের ট্রেড পলিসি ব্যুরোর দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়াবিষয়ক পরিচালক শিমানো তোশিয়ুকি, ট্রেড পলিসি ব্যুরোর ইকোনমিক পার্টনারশিপ ডিভিশনের পরিচালক উচিনো হিরুতো এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোরারজী দেশাই বর্মনসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শূন্যে নামাতে জরুরি কর্মপরিকল্পনা: বাণিজ্য উপদেষ্টা
২৩২ দিন আগে
ঢাকা-বেইজিংয়ের বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন স্তরে উন্নীত হবে: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, এই মাসের শেষের দিকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন্টাওর নেতৃত্বে চীন থেকে বাংলাদেশে আসা সর্ববৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সফর করবেন। এই সফর উন্মুক্ত বাণিজ্য, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধার একটি 'জোরালো সংকেত' দেবে। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশ ও চীনের অর্থনৈতিক-বাণিজ্য সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করবে।
তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে, এই সফর উন্মুক্ত বাণিজ্য, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধার একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত দেবে। চীন ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করবে।’ বলেন, এই মাসের শেষে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে শতাধিক চীনা বিনিয়োগকারী বাংলাদেশ সফর করবেন।
আরও পড়ুন: মানবিক করিডর ইস্যুতে চীন জড়িত নয়: রাষ্ট্রদূত
সফরকালে, উভয় পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে। যেখানে শতাধিক চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোগ অংশগ্রহণ করবে এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ খুঁজবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হতে বাংলাদেশ-চীনের যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য কমিশনের ১৫তম বৈঠক হবে।
আম ও ইলিশ শিগগিরই পৌঁছাবে চীনের বাজারে
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশি আম চীনে রপ্তানি ত্বরান্বিত করছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, এই বছরের জুনের প্রথম দিকে তাজা আমের প্রথম চালান চীনের বাজারে যাবে।
তিনি বলেন, এরপর, বাংলাদেশি কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানির প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা আশা করছি বাংলাদেশ শিগগিরই চীনে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ পাবে। সর্বোপরি, চীনা খাদ্যপ্রেমীরা তাদের খাবারের টেবিলে এই সুস্বাদু মাছ উপভোগ করার জন্য অধীর আগ্রহে আর অপেক্ষা করতে পারছেন না।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের আরও উন্নতমানের কৃষিপণ্য চীনে আসার সঙ্গে সঙ্গে ও আরও বেশি চীনা কোম্পানি এই উর্বর ভূমিতে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবন নিয়ে আসবে। ফলে তারা অবশ্যই অবিশ্বাস্য কিছু ঘটতে দেখবে!
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প আরও শক্তিশালী হবে, সরবরাহ শৃঙ্খল আরও শক্তিশালী হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ - নতুন সুযোগ ও বৃহত্তর সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে মানুষের জীবন উন্নত হবে।’ ‘আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা একসঙ্গে এটি করতে পারি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য চীনের সমর্থন একটি প্রকৃত এবং স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি। ‘পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল হোক না কেন, এটি সর্বদা অপরিবর্তিত থাকবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিনিয়োগকারী চীন।
চীনে রপ্তানি করা বাংলাদেশি করযোগ্য পণ্যের শতাভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে চীন। একই সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের দুই বছর পর অর্থাৎ ২০২৮ সাল পর্যন্ত এই অগ্রাধিকারমূলক নীতি সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ১৫টিরও বেশি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তি সই করেছে, যার মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
৩০টিরও বেশি কোম্পানি চট্টগ্রাম চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্প অঞ্চলে বিনিয়োগের ইচ্ছাপত্রে সই করেছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে 'বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: একটি নতুন উচ্চতার দিকে' শীর্ষক দেশীয় বক্তব্যের আয়োজন করে।
বিআইআইএসএস’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস স্বাগত বক্তব্য দেন। সংস্থাটির চেয়ারম্যান এএফএম গাউসূল আজম সরকার অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন। সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস, বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ একটি উপস্থাপনা করেন।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, কূটনৈতিক মিশন, গণমাধ্যম, গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উন্মুক্ত আলোচনা অধিবেশনে তাদের মতামত, মন্তব্য, পরামর্শ এবং পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
বক্তব্যে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ যখন তার উন্নয়ন লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং চীন তার বিশ্বব্যাপী প্রচারণা অব্যাহত রাখছে—তখন এই সম্পর্কের পরবর্তী অধ্যায় আরও বৃহত্তর সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেয়।
তারা বলেন, উদ্ভাবন, আস্থা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীন এমন একটি ভবিষ্যত তৈরি করতে পারে, যা তাদের জনগণ ও বৃহত্তর এশীয় অঞ্চলের জন্য কল্যাণকর।
২৩৪ দিন আগে
মানবিক করিডর ইস্যুতে চীন জড়িত নয়: রাষ্ট্রদূত
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন ‘তথাকথিত মানবিক করিডর’ ইস্যুতে জড়িত নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, চীন যেকোনো দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: নতুন উচ্চতায়’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘করিডর ইস্যু—তথাকথিত মানবিক করিডর ইস্যুতে আমি বলব, চীন এতে জড়িত নয়। আমি যতটুকু বুঝি, এটি (মিয়ানমারে) সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সরবরাহে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর একটি উদ্যোগ। এ বিষয়ে চীন জড়িত নয়।’
তিনি জানান, চীন কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে না। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার যথাযথ সমাধান করবে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে পারবে বলে আশাপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।
তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের (টিআরসিএমআরপি) হালনাগাদ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ সংবাদ বিবৃতির কথা উল্লেখ করেন ওয়েন। ওই বিবৃতিতে বাংলাদেশ চীনা কোম্পানিগুলোকে এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য স্বাগত জানিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের
তিনি বলেন, ‘আমি বলব, এ বিষয়ে চীন প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই। এখন বাংলাদেশ এগিয়ে আসতে চায় কিনা, সে সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে।’
‘দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক না কি আন্তর্জাতিক জোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে—সে বিষয়ে বলা যায়, এই প্রকল্পটি কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, তা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে চীন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, এই প্রকল্পটি শুরু করা যেতে পারে। এটুকুই আমি বলতে চাই।’
২৩৫ দিন আগে
ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের
ভারত-পাকিস্তানকে প্রতিবেশী আখ্যায়িত করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘বেইজিং কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করে না।’
এ সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে এ ঘটনায় তিনি একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশ দুটিকে সংযত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন এই রাষ্ট্রদূত।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: নতুন উচ্চতায়’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই চীনের প্রতিবেশি। শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে উভয় পক্ষকেই আমরা শান্ত থাকার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই।’
পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে— এমন যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে দুই দেশকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এ সময় পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালানো ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘আজকের বিশ্ব অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলায় ভরা। তবে চীন সবসময় ইতিহাসের সঠিক ও মানবজাতির অগ্রগতির পক্ষে অটল থাকবে।’
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কে কী বলল
চীনকে বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল, নির্ভরযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ শক্তি হিসেবেও দাবি করেন তিনি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অর্থনীতির মধ্যে চলমান আলোচনার কথা উল্লেখ করে ইয়াও বলেন, আপস নয়, বরং নীতিনিষ্ঠতা, ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতায় অটল থেকে দেশগুলো তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।
চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস
দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংযোগ রক্ষায় এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চীনের আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
এ সময় বাংলাদেশসহ অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। মুক্ত বাণিজ্য ও বহুপাক্ষিকতা রক্ষায় তিনি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ন্যায় ও সুবিচার রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে শান্তি, উন্নয়ন, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধার নীতি অব্যাহত রাখবে চীন। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ ভবিষ্যতের সমাজ গঠনেও কাজ করবে।’
‘দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতা, আঞ্চলিক সংযোগ, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে একতরফা সুরক্ষা ও আধিপত্যবাদী আচরণের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত চীন,’ বলেন এই রাষ্ট্রদূত।
এ ছাড়াও জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামে সমন্বয় রক্ষার মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ইতিবাচক প্রভাব সারা অঞ্চল ও বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চায় বলেও জানান তিনি।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার রক্ষায় চীন অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
তিনি জানান, ‘ভবিষ্যতে নিজ নিজ জাতীয় উন্নয়নের পথে পাশাপাশি হাঁটবে চীন ও বাংলাদেশ। দুই দেশের নেতাদের মধ্যে যেসব ঐকমত্য হয়েছে, তা অনুসরণ করে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী থেকে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চায়।’
ইয়াও বলেন, ‘আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি এবং আমাদের কৌশলগত ও সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাই। এরই মধ্যে দিয়ে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরবর্তী সোনালী ৫০ বছরে পা রাখি।’
২৩৫ দিন আগে