বৈদেশিক-সম্পর্ক
ডিএনসিসির খালগুলোর টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন খাল খনন, পানি দূষণ রোধ এবং খালগুলোর টেকসই উন্নয়নে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে ডিএনসিসির নগরভবনে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ডিএনসিসির আওতাধীন খালগুলোর উন্নয়ন এবং খালের পানি দূষণ রোধকল্পে খালের ময়লা অপসারণ (ফিক্যাল স্ল্যাজ ম্যানেজমেন্ট) ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা হবে।
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বিতভাবে খালের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ঢাকার জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে এবং খালের দূষণ রোধ করে পরিবেশবান্ধব শহর গড়তে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে ডিএনসিসির শিশুপার্কে বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ওয়াটার স্পেশালিস্ট ও টাস্ক টিম লিডার হার্শ গোয়েল, লিড ওয়াটার স্পেশালিস্ট ডেভিড ম্যালকম লর্ড, সিনিয়র ওয়াটার সাপ্লাই ও স্যানিটেশন স্পেশালিস্ট আরিফ আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ প্রমুখ।
৩০৫ দিন আগে
ড. ইউনূসকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি, সংহতি প্রকাশ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন গুতেরেস।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ মহাসচিবের লেখা চিঠির একটি অনুলিপি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের সঙ্গে আমি একমত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ।’
রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরিসহ মিয়ানমারে সৃষ্ট সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ান এবং অন্যান্য অংশীদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে দেশটিতে অবস্থানরত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন গুতেরেস।
তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল কীভাবে রাখাইনের জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে আমি আমার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। রাখাইনসহ পুরো মিয়ানমারের সংকটপূর্ণ এলাকায় মানবিক সহায়তা যেন নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই ও নির্বিঘ্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ বদ্ধপরিকর। এ জন্য জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী এবং মিয়ানমারে অবস্থিত জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ১৩ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব
আসিয়ান সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব লিখেছেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের এই সম্মেলন নতুন করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে ভূমিকা রাখবে। এই প্রক্রিয়াকে সর্বোচ্চ সমর্থনের জন্য (আসিয়ানের) সদস্য দেশগুলোর পরামর্শের পর সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনার জন্য আমরা অপেক্ষায় রয়েছি।’
আগামী ১৩ মার্চ চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে তার এই সফরে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কার্যকর আলোচনা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূত ড. খলিলুর রহমান ড. ইউনূসের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রটি হস্তান্তর করেন।
৩০৫ দিন আগে
বাংলাদেশে এমন একটি ফার্ম ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কর্মী: ট্রাম্প
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত করতে একটি ফার্মকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কর্মী কাজ করেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে গভর্নরদের এক বৈঠকে তিনি এ কথা জানান। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা বার্ষিক শীতকালীন সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে সমবেত হয়েছিলেন।
স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) সুপারিশে ইউএসএআইডির বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এসব কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, ‘এমন একটি প্রতিষ্ঠানে গেছে সেই অর্থ গেছে, যেটির নাম কেউ কখনো শোনেনি আর সেখানে কাজ করেন মাত্র দুজন কর্মী।’
‘আপনি কী ভাবতে পারেন, আপনার একটি ছোট্ট ফার্ম আছে, আপনি এখানে ১০ হাজার ডলার পান, সেখানে ১০ হাজার ডলার পান, তারপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেলেন। সেই ফার্মে মাত্র দুজন কাজ করেন, মাত্র দুজন, আমি মনে করি, তারা খুবই সুখী, তারা খুবই ধনী,’ বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।আরও পড়ুন: শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প
বিদ্রূপ করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তাদের খুব শিগগিরই কোনো বিখ্যাত বিজনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে দেখা যাবে—মহাপ্রতারক (গ্রেট স্ক্যামারস) হিসেবে!’
প্রেসিডেন্ট হিসেনে দায়িত্ব নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ইলন মাস্কের নেতৃত্বে নতুন দপ্তর ‘ডিওজিই’ চালু করেন ট্রাম্প। এই দপ্তরের সুপারিশে বাংলাদেশ ও ভারতের এ দুই প্রকল্পসহ মোট ১৭টি আন্তর্জাতিক সাহায্য কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
ভারতের প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতকে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধির জন্য। আমাদের কি হবে! আমিও তো চাই ভোটার উপস্থিতি বাড়ুক।’
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে নেপাল দুটি প্রকল্পের জন্য ৩৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। এর মধ্যে জীববৈচিত্র্যের জন্য নেপাল পেয়েছে ১৯ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া সার্বিয়া, মলদোভাসহ আরও কয়েকটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থ পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।
৩০৯ দিন আগে
ভিসা প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ ইতালি দূতাবাসের
ভিসা প্রক্রিয়া করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে ঢাকাস্থ ইতালির দূতাবাস। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ইতালিতে প্রতারণামূলক কার্যক্রম বোঝার এবং শনাক্ত করতে দূতাবাস উভয় দেশের পুলিশ কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহায়তা দিয়ে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে।
সম্প্রতি এসব ক্ষেত্রে প্রতারণা সংক্রান্ত ঘটনায় ইতালির পুলিশ (গার্ডিয়া ডি ফিনানজা) একটি তদন্ত করেছে। এরপর দূতাবাসের দুই জন প্রাক্তন কর্মী সদস্যসহ অন্যান্য ইতালীয় এবং বাংলাদেশি নাগরিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গৃহবন্দী করা হয়েছে।
এটি দূতাবাস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলার উদ্যোগ। একই সঙ্গে এটি অভিবাসীদের নির্যাতন ও প্রতারণা থেকে রক্ষা করার জন্য দূতাবাস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিখুঁত তল্লাশি কার্যক্রমের আরও একটি প্রমাণ।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ইউরোপীয় দেশগুলোর ভিসা সেন্টার খোলার চেষ্টা চলমান: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ভিএফএস গ্লোবালের আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত কনস্যুলার এবং পরিষেবা ফি ব্যতীত কাউকে কিছু না দিতে এবং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের এড়াতে ভিসা আবেদনকারীদের আবারও অনুরোধ করেছে দূতাবাস।
আবেদনকারীদের তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত যেকোনো অসদাচরণের অভিজ্ঞতা কর্তৃপক্ষের কাছে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
পরিশেষে, দূতাবাস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইতালি থেকে অতিরিক্ত কর্মী আনার কারণে ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় কমেছে এবং সামনের মাসগুলোতে বিদ্যমান সমাস্যা দ্রুত সমাধান হবে বলে দূতাবাস আত্মবিশ্বাসী।
আরও পড়ুন: ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
৩১০ দিন আগে
মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া ৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন শুক্রবার
উন্নত জীবন ও ভালো কাজের আশায় সাগরপথে ইউরোপের পাড়ি জমিয়ে ভূমধ্যসাগর মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া পাঁচ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন।
আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ভোর সাড়ে ৫টায় টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন তারা।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহায়তায় নিজের দেশে ফিরছেন তারা।
ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম হেড শরিফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মুখে অভিবাসীবাহী মার্কিন ফ্লাইট অবতরণে অনুমতি দিল কলোম্বিয়া
পাচারকারীদের প্রলোভনে পড়ে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন পাঁচ বাংলাদেশি। ভয়ংকর মানব পাচারচক্র তাদেরকে মাফিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিল। তাদের পরিবারের কাছ থেকেও আদায় করা হয় মুক্তিপণ।
ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা হলেন- মুন্সিগঞ্জের মোস্তাকিন সরকার, শেরপুরের মোজাম্মেল হক ও মাদারীপুরের জিহাদ ফকির, রোমান হাওলাদার এবং ইয়াসিন হাওলাদার।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও আলজেরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় দেশে ফিরছেন তারা।
এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ব্র্যাক ও টিআইপি (ট্রাফিকিং পারসনস) হিরো নেটওয়ার্কের সহায়তায় একই ধরণের অপরাধের শিকার আরও আট বাংলাদেশি ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে পৌঁছে দিল মার্কিন উড়োজাহাজ
৩১১ দিন আগে
বাংলাদেশ ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে’ উত্তরণে সফল হোক, চায় ইইউ
সফলতার সঙ্গে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে’ উত্তরণ এবং সমমনা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যেন এই উত্তরণে সফল হতে পারে, তা আমরা চাই। এটি বাস্তবায়নে কিছু বিষয়ের দ্রুত পরিবর্তন দরকার, আর এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য রয়েছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমরা দক্ষতা, বিনিয়োগ ও ধারাবাহিকতার অংশীদার হিসেবে এখানে (বাংলাদেশে) আছি।’
‘আমরা বাংলাদেশ ২.০ এর উত্থান এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের পরও এ দেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব বজায় রাখতে চাই।’
‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রদূত মিলার এসব কথা বলেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় কসমস গ্রুপের দাতব্য সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন এই সংলাপের আয়োজন করে।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ইইউ কেন অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সংস্কার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করতে চায়, তা ব্যাখ্যা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। বলেন, ‘এই সম্পর্ককে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি আমাদের এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে এখানে মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে, দেশের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে, আইনের শাসন সমুন্নত রয়েছে এবং সব (নাগরিক) অধিকার বৈষম্যহীমভাবে সবার জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সবার জন্য। এগুলো শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য নয়, বিশ্বের সবার জন্য; এক কথায় সর্বজনীন। সব ধরনের মানবাধিকার প্রাপ্তি যেমন এই দেশের সকল নাগরিকের অধিকার, তেমনই আমাদের (ইইউ) দেশগুলোর নাগরিকদেরও অধিকার।’
‘এই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা আনতেও এগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে; এক্ষেত্রে সকলের অধিকারই সমান। ফৌজদারি অপরাধের যৌক্তিক অভিযোগে আটক না হলে কাউকেই কারাগারে রাখা উচিৎ নয়।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশন ও বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়া বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও কসমস ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপদেষ্টা ইমেরিটাস অ্যাম্বাসেডর (অব.) তারিক এ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন, কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের সম্মানিত কনসাল মাসুদ খান, কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট কূটনীতিক ও শিক্ষাবিদরাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ মূল্য দেয় জানিয়ে এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ‘আসুন আমরা কৌশলগত সহযোগিতা, অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক সম্পৃক্ততার একটি যুগের দিকে তাকাই। বাংলাদেশ ২.০ নামে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। এ সময় ইইউয়ের অব্যাহত সমর্থন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
৩১৩ দিন আগে
সংস্কার পদক্ষেপ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত
সংস্কার সংক্রান্ত যেকোনো পদক্ষেপ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর চীনা দূতাবাসে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সবসময়ই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, ঐক্য ও উন্নয়ন কামনা করে চীন।
বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে চীন। বাংলাদেশে চলমান সংস্কার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি।
এ সময় তিনি ডিজিটাল অর্থনীতি, গ্রিন ইকনোমি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর মতো বিকাশমান ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহায়তার কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে জাপানের প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টার আহ্বান
ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে আরও বেশি চীনা প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে তারা।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ ও চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশটিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বলেও জানান চীনের এই রাষ্ট্রদূত। কূটনৈতিক সম্পর্কের এই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও কৌশলগত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে চীন আগ্রহী বলে জানান তিনি।
এ সময় চীন নিজেদের রোড এন্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। ব্রিফিং চলাকালে বাংলাদেশকে দেওয়া চীনের ঋণের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন কখনোই ঋণের সাথে কোনো শর্ত জুড়ে দেয় না।’
চীন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। দুই কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ ও চীন পরস্পরকে সাহায্য করে আসছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
৩১৩ দিন আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে জাপানের প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টার আহ্বান
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে জাপানের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দীন। বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে অধিক সংখ্যক পণ্য ও জনশক্তি আমদানিরও আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে টোকিওতে জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বাাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এ সময়ে বাংলাদেশে জাপানের ব্যবসা অব্যাহত রাখা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। বাংলাদেশকে জাপানের কৌশলগত অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত। তারা আমাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রধান উন্নয়ন সহযোগী।’
আরও পড়ুন: ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়াও জাপান বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচটি রপ্তানি গন্তব্যের একটি
‘বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫০টির বেশি জাপানি কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জাপান থেকে আমরা আরও বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি।’এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী, জেটরো প্রতিনিধি লুইজি অ্যান্ডো ও জাইকা প্রতিনিধি ইয়াসুজুকি মুরাহাসি এবং জাপানে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোরারজী দেশাই বর্মন।
বৈঠকে জাপানের প্রতিনিধি দলটিতে উপস্থিত ছিলেন জাপানের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য গ্রুপ এনইএক্সআই (নিপ্পন), মিতুসি, মারুবেনি, এইচএসবিসি মিতুসিবিসি হেভি ইন্ডাস্ট্রি ও জেট কোম্পানির সদস্যরা।
৩১৫ দিন আগে
ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দুবাইয়ে দুদিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতি বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি জানান, আমিরাতি কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেয়ৌদি এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলে ড. ইউনূস আমিরাতি ব্যবসার জন্য একটি বিশেষ শিল্পপার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে একটি ‘হালাল পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, যেখানে কম খরচে শ্রমসুবিধা পাওয়া যাবে।
এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
শুক্রবার দুবাই বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।
৩১৮ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে শিশুমৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ, সুরক্ষা ও জবাবদিহি চায় ইউনিসেফ
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এটিকে হৃদয়বিদারক উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউনিসেফ।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক অফিসের প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ১ জুলাই থেকে ১৫ই আগস্টের মধ্যে যে ১ হাজার ৪০০ ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শতাধিক শিশু ছিল। ইউনিসেফ এইসব মৃত্যুর অনেকের বিষয়ে ইতোমধ্যে রিপোর্ট করেছে এবং মোট কত শিশু নিহত বা আহত হয়েছে—তা স্পষ্ট করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের প্রত্যেকের জন্য শোক প্রকাশ করছি।
অভ্যুত্থানে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। তা ভাষ্যে, ‘এ সময় নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার জন্য শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকিসহ নানাপ্রকার জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনার নথি পাওয়া গেছে।’
‘শিশুরাও এই সহিংসতা থেকে রেহাই পায়নি; তাদের অনেককে হত্যা করা হয়, পঙ্গু করে দেওয়া হয়, নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়, অমানবিক অবস্থায় আটক করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।’
বিবৃতিতে শিশুদের ওপর সহিংসতার তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ফ্লাওয়ার্স। বলেছেন, ‘একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ধানমণ্ডিতে, যেখানে ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার কারণে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে মারা যায়। আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জে; সেখানে ছয় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। এই বিক্ষোভের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন ৫ আগস্ট পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়ে আজমপুরের ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে বলে— সব জায়গায় বৃষ্টিপাতের মতো গুলি চলছিল। সে অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখতে পেয়েছিল সেদিন।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে।’
বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দেশের সকল মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে ৩২ শিশু নিহতের বিষয়ে ইউনিসেফের বিবৃতির জবাব দিল সরকার
প্রাপ্ত এসব ফলাফলের আলোকে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনা-বিষয়ক ইউনিসেফের আগের বিবৃতিগুলোর জের ধরে বাংলাদেশের সমস্ত নীতিনির্ধারক, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের শিশু, যুবসমাজ ও পরিবারগুলোকে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত সারিয়ে ওঠার পাশাপাশি আশা সঞ্চার করে তাদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
এজন্য তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরিভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক এই সংস্থাটি:
প্রথমত, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে, তাদের ও তাদের শোকাহত পরিবারের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত, যারা এখনও আটক অবস্থায় আছে এবং যাদের জীবন কোনো না কোনোভাবে এই ঘটনাগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, তাদের সবার জন্য পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজোট হওয়া।
তৃতীয়ত ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এই সময়টাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সার্বিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সব রাজনৈতিক নেতা, দল ও নীতিনির্ধারকদের পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একজোট হতে হবে, যাতে বাংলাদেশের কোনো শিশুকে আর কখনও এমন বিচার-বহির্ভূতভাবে ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে আটক থাকতে না হয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়ে, যা তাদের অধিকার, তাদের যেন নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হতে না হয়। আর এভাবে বাংলাদেশের শিশুদের সুরক্ষা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব।
জবাবদিহি ও সংস্কারের এই আহ্বানে ইউনিসেফ যেসব কাজে সহায়তা দিতে চায় তার মধ্যে রয়েছে—
১. শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ও বেআইনিভাবে আটকে রাখার ক্ষেত্রে স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করা।
২. বিচার খাতের সংস্কার নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিশু সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আদলে বাংলাদেশের আইনি কাঠামোকে সাজিয়ে তোলা।
৩. ভবিষ্যতে শিশু অধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের জন্য স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ও নীরিক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসহ শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৪. আমরা সবাই শিশুদের উপযুক্ত এমন বিচার ব্যবস্থা চাই, যেটি শিশুদের অপরাধী হিসেবে দেখবে না, শিশুদের হুমকি হিসাবে বিবেচনার পরিবর্তে তাদের কথা ও ব্যাখ্যা বুঝবে; তাদের যত্ন, সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সে মোতাবেক কাজ করবে।
আরও পড়ুন: জুলাই বিপ্লব চলাকালে পরিকল্পিত দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে: জাতিসংঘ
৫. যেসব শিশু অপরাধ করেছে বলে আদালতে সাব্যস্ত হয়েছে, তাদের আটক করে না রেখে এর বিকল্প ব্যবস্থা বের করতে হবে। শাস্তি যা শিশুর স্থায়ী ক্ষতি করে, তার পরিবর্তে বিভিন্ন ডাইভারশন প্রোগ্রাম, প্রবেশন ও পুনর্বাসনমুখী বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
৬. শিশু-সংবেদনশীল আইনি প্রক্রিয়াগুলি নিশ্চিত করবে; যেখানে শিশুদের জন্য বিশেষ আদালত, আইনি সহায়তা এবং শিশু-সংবেদনশীল তদন্ত ব্যবস্থা থাকবে।
৭. শিশু ভুক্তভোগীদের রক্ষা করবে; ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে, যাতে ভবিষ্যতে শিশুদের অধিকার এমন লঙ্ঘন না হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এখন বড় এক পরিবর্তন, প্রত্যাশা ও রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে। সংস্কার কমিশনগুলো বর্তমানে পুলিশ, আদালত ও বিচার ব্যবস্থার পুনর্নির্মাণে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে যেভাবে কাজ করছে, তাতে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও আরও ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ তৈরির সুযোগ রয়েছে।
৩১৮ দিন আগে