রংপুর
সীমান্তে আটক বাবা ও তিন সন্তানকে ফেরত দিল বিএসএফ
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি ও তার তিন সন্তানকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বামনবাড়ি সীমান্তে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলারসংলগ্ন এলাকায় ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ওই ব্যক্তিরা হলেন— বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কাশুয়া বাদামবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম (৫২) এবং তার তিন ছেলে সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ মিস্টার ও মোহাম্মদ আলফাস।
স্থানীয়রা জানান, কাজের সন্ধানে নজরুল ইসলাম তার তিন সন্তানকে নিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। গতকাল (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তারা বালিয়াডাঙ্গীর নাগরভিটা সীমান্ত দিয়ে ৩৭৩/১-এস নম্বর পিলারের কাছ দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করলে বামনবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের আটক করে।
এ ঘটনার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে বিজিবির-৫০ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরবর্তীতে দুই বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর তাদের ফেরত আনা হয়।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁও সীমান্তে ঠেলে পাঠানো দুই পরিবারের ৬ সদস্য আটক
বিজিবি জানায়, ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের ভারতে প্রবেশের পেছনে জড়িত দালাল চক্রের সন্ধানও চালানো হবে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (ইউপি) মোহাম্মদ আবু সালেহ বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বিজিবি এবং বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের চারজনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।’
ঠাকুরগাঁও-৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজির আহমেদ বলেন, ‘বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক।’
১৪৫ দিন আগে
ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আবু সাঈদের মা
আজ ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বছরপূর্তি। এই দিনে সারা দেশে বিজয় উৎসব হলেও ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখাই এখন একমাত্র ইচ্ছা বলে জানিয়েছেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছে, সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি। যেন এ দেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয়। এ দেশে আর যেন বৈষম্য, হানাহানি, খুনোখুনি না থাকে।’
পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ায় শহীদ আবু সাঈদের পৈতৃক নিবাসে ছেয়ে আছে শূন্যতা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন বাড়িতে, রয়েছে তার ব্যবহৃত জামা-কাপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্রও।
তবে প্রকৃতির নিয়মে সব আগের মতো চললেও বাবা-মায়ের কাছে আবু সাঈদের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
রংপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ার একটি সাধারণ পরিবারের সন্তান ছিলেন আবু সাঈদ। বাড়িতে ঘরের পাশেই আবু সাঈদের কবরের সামনে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে ছিলেন মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে: আইন উপদেষ্টা
মা মনোয়ারা বলেন, ‘আমার সন্তানের কারণে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমার ছেলের মতো যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এটাই সবার কাছে আমার দাবি। সে যে চেতনা নিয়ে বুকের রক্ত দিয়েছে, সেই চেতনার বাংলাদেশ দেখে মরলে শান্তি পাব।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে এখন সবাই আসেন, জানতে চান আমার ছেলের আত্মদানের কথা। সকাল হচ্ছে, সন্ধ্যা হচ্ছে, মানুষজন আগের মতোই বাড়িতে আসেন। কিন্তু হাজার মানুষের ভিড়েও আমার বুকে এক শূন্যতা বিরাজ করে। এক বুক হাহাকার নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আমার। সেই শূন্যতা কে পূরণ করবে? আমি একজন মা হিসেবে আমার ছেলের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি।’
বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জালিম সরকারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। দেশের মানুষ স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে।’
আন্দোলনে তার ছেলের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছেলেরা পড়াশোনা করে চাকরি না পাওয়ায় আন্দোলন করেছে। এটা ছিল ন্যায্য দাবি।’
আবু সাঈদের হত্যাকারীদের ব্যাপারে মকবুল হোসেন বলেন, ‘যে পুলিশ সদস্য আমার ছেলের বুকে গুলি চালিয়েছে, সেই পুলিশসহ অন্যান্য হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
১৪৬ দিন আগে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, তবে নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা
উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি কিছুটা কমলেও তিস্তা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যা শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার, যা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে। এর আগে সকাল ৬টায় পানির পরিমাণ ছিল ৫২ দশমিক ১০ মিটার, যা ছিল বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে।
তবে রবিবার সকাল ৬টায় এ পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ভারতের উজানে ভারী বর্ষণের কারণে হঠাৎ নদীতে পানি বাড়ে। এতে তিস্তা তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
রাতেই হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে গেছে আমন ধানের চারা, সবজির মাঠ, পুকুর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। এখন নৌকা ও ভেলাই চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্লাবিত নতুন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে—পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী;কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী ও নোহালী; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী; সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন: তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু জানুয়ারিতে, ব্যয় হবে ১২ হাজার কোটি টাকা
পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল দিন থেকে পানি বাড়তে বাড়তে রাতেই ঘরে ঢুকে গেছে। গরু-ছাগল নিয়ে খুব বিপাকে পড়েছি। কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি লোক খোঁজ নেয়নি। আমরা কি কখনো স্থায়ী সমাধান পাবো না?’
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের জালাল মিয়া বলেন, ‘সারারাত পানি ঢুকেছে। রান্না বন্ধ। বাচ্চারা স্কুলেও যেতে পারছে না। কেউ দেখতে আসছে না। রাজনৈতিক নেতারা শুধু তালিকা নিচ্ছে, ত্রাণ বা সহায়তা কিছুই দিচ্ছে না।’
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণীল কুমার বলেন, ‘রোববার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। এখন কিছুটা কমলেও নিম্নাঞ্চলে সতর্কতা জারি রয়েছে। দুই-তিন দিন এই পরিস্থিতি স্থায়ী হতে পারে। তবে পানি আবার বাড়বে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
১৪৭ দিন আগে
রংপুরে দোকান উদ্বোধনে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত ২, আহত ১৩
রংপুরে একটি সারের দোকানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৩ জন।
রবিবার (৩ আগস্ট) রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সাহাবাজ (আমতলা) এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন— পীরগাছা উপজেলার জোবেদ আলীর ছেলে শাহাবুদ্দিন (৪৫) এবং মিঠাপুকুর উপজেলার শরিফুল ইসলাম (৩৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাহাবাজ বাজারে নজর আলী নামে এক ব্যক্তি নতুন একটি সারের দোকান চালু করেন। এ উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। যে প্যান্ডেল সাজানো হয়, সেখানে একটি বিদ্যুতায়িত বাঁশের সংস্পর্শে এসে কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু, আহত ৩
তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৈদ্যুতিক সংযোগে ত্রুটির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, ‘কেন এমন ঘটনা ঘটলো, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
১৪৭ দিন আগে
গেটম্যানবিহীন রেল ক্রসিংয়ে ট্রাক্টরে ট্রেনের ধাক্কা, গুরুতর আহত চালক
রংপুরের পীরগাছায় গেটম্যানবিহীন একটি রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একটি ট্রাক্টর দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে ট্রাক্টরচালক আসাদ মিয়া (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে উপজেলার চৌধুরানী এলাকার সুবিদ রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত আসাদ মিয়া উপজেলার কৈকুড়ি ইউনিয়নের সুবিদ গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।
পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জেনারুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি রেলক্রসিংটি অতিক্রম করছিল। এ সময় ট্রাক্টরটি রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করলে দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি চালকসহ নিহত ৪
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় জমি চাষের জন্য ট্রাক্টর নিয়ে বের হন আসাদ মিয়া। সুবিদ রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় হঠাৎ করে লালমনিরহাটগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন এসে ট্রাক্টরটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাক্টরটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং চালক গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে আহত চালককে উদ্ধার করে রমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সুবিদ রেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কোনো গেটম্যান বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষজন চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দ্রুত সেখানে গেটম্যান নিয়োগ এবং সুরক্ষিত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
১৪৮ দিন আগে
হাতীবান্ধায় ইউএনওর সই জালের অভিযোগ, উপজেলা জামায়াত আমিরকে অব্যাহতি
শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সই জাল করার অভিযোগে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় উপজেলা প্রশাসন।
তিনি একই সঙ্গে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমিরও। শোকজ পাওয়ার পর রাতেই দলীয় পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয় জামায়াতে ইসলামীর লালমনিরহাট জেলা কমিটি।
জানা গেছে, কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। মোট চারজনের অধ্যক্ষ পদের দাবির কারণে চলছিল টানাপোড়েন। এর ফলে সরকারঘোষিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু নীতিগত পরিবর্তনের সুযোগে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাতীবান্ধা ইউএনও শামীম মিঞা চলতি বছরের ১৩ মে হাছেন আলীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে ইউএনওর গাড়িবহরে হামলা, ভাঙচুর
তবে নিয়োগ পাওয়ার পর নতুন শিক্ষক-কর্মচারী দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ১৩টি নিয়োগ ফাইল পাঠান হাছেন আলী। অভিযোগ উঠেছে, এসব ফাইলে ইউএনওর স্ক্যান করা সই বসিয়ে অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, ‘আমি ওই নিয়োগ ফাইলে সই করিনি। আমার অনুমতি ছাড়াই সই স্ক্যান করে পাঠানো হয়েছে, এটি জালিয়াতি। তাই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও হাছেন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমির আবু তাহের বলেন, ‘হাছেন আলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ তবে ঠিক কী কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি।
১৪৯ দিন আগে
গঙ্গাচড়ার হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় ১৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি: পুলিশ
রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাতপুর ছয়আনি এলাকায় হিন্দুপল্লীর বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় ১৬ লাখ টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গরু-ছাগল ও স্বর্ণালঙ্কার লুট, বসতবাড়িতে ভাঙচুরে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙচুর করা বাড়িঘর মেরামতে কাজ করছে প্রশাসন।
এ ঘটনায় করা মামলায় আদালতে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি ছায়আনিপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের ১২টি বাড়িতে হামলা করে। সেখানে বসবাসকারী ২২টি পরিবারের টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, গরু-ছাগল, পানির পাম্পসহ প্রায় ১১ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া বসতবাড়ির দরজা-জানালায় ব্যাপক ভাঙচুর করায় প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন। এরপর সেদিন রাতেই নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বুধবার কারাগারে পাঠানো হয়। শুনানি বৃহস্পতিবার তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন: হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন দুই দিনের রিমান্ডে
গংগাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল ইমরান জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হিন্দু পল্লীতে। চূড়ান্তভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
১৫০ দিন আগে
রংপুরে জমি নিয়ে বিরোধে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত
রংপুরের কাউনিয়ায় জমি বন্ধকের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে নিকটাত্মীয়ের ছুরিকাঘাতে হুমায়ুন আহমেদ (২৫) নামের এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি টেপামধুপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হুমায়ুন। তিনি উপজেলার বিনোদন মাঝি গ্রামের জহুরুল হকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জহুরুল হক জমি বন্ধক রেখেছিলেন একই গ্রামের আত্মীয় মহির উদ্দিনের কাছে। পরে মহির সেই জমি অন্যের কাছে বেশি দামে বন্ধক দেন। এ নিয়ে ২৩ জুলাই স্থানীয় একটি স্কুলের সামনে হুমায়ুন ও তার ভাই হাছেনুরের সঙ্গে মহির উদ্দিনের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মহির ছুরি দিয়ে হুমায়ুনের বুকে আঘাত করে পালিয়ে যান।
রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে রংপুর মেডিকেল এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাকে ছুরিকাঘাত
নিহতের বড় ভাই হাছেনুর অভিযোগ করেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।’
টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল মতিন বলেন, ‘বিনোদন মাঝি গ্রামের জহুরুল হক ও মহির উদ্দিন চাচাতো ভাই। জমি বন্ধকের টাকাকে কেন্দ্র করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যদিও এটি কাম্য নয়। পুলিশ তদন্ত করে হত্যাকারীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করবে বলে আশা করি।’
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
১৫১ দিন আগে
লালমনিরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু, আহত ৩
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে যামিনী কান্ত রায় (৫২) নামে এক কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সারপুকুর ইউনিয়নের সবদল এলাকার মৃত হেদল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও তিনজন কাঠমিস্ত্রী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন—জগদীশ (৪৮), রাশেদ (২০) ও সুজন (২৬)।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, যামিনী কান্ত পাশের ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামের মহর উদ্দিনের বাড়িতে ঘর মেরামতের জন্য কাজ করছিলেন। কাজের সময় ঘরের বেড়া সরাতে গিয়ে বিদ্যুতের মিটারের তারে স্পর্শ করলে তিনি বিদ্যুতায়িত হন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরও তিন কাঠমিস্ত্রী বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা সুস্থ হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’
১৫১ দিন আগে
গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লীতে হামলা: গ্রেপ্তার ৫ জন জেলহাজতে
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নে আলদাদপুরে হিন্দু পাড়ায় ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় পাঁচজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে গঙ্গাচড়ায় গ্রেপ্তারদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সিঙ্গেরগাড়ি মাঝাপাড়া গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াসিন আলী (২৫), একই উপজেলার মাগুরা ধনীপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ স্বাধীন মিয়া (২৮) দক্ষিণ চাদখানা মাঝাপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম(২৮) উত্তর সিংগের গাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের বাবুল খানের ছেলে এম এম আতিকুর রহমান আতিক(২৮) এবং সিঙ্গের গাড়ি চাওড়া পাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)।
কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, ২৭ জুলাই গঙ্গাচড়ায় মহানবীকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির প্রতিবাদে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ অভিযুক্ত রঞ্জন কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায়। এরপরে কিছু উত্তেজিত লোকজন একত্রিত হয়ে হিন্দু পল্লীতে হামলা চালিয়ে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই রাতে ক্ষতিগ্রস্ত আলদাদপুর এলাকার ছয়ানি পাড়ার দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) গঙ্গাছড়া মডেল থানায় অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় যৌথবাহিনী সদস্যরা অভিযান চালিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে পাঁচজন অভিযুক্তকে আটক করে। বিচারক ঘটনার পর্যবেক্ষণ শেষে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গঙ্গাছড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল ইমরান জানান হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ১০০০ থেকে ১২০০ আসামি উল্লেখ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রবীন্দ্রনাথ রায় যে মামলাটি করেছেন ওই ঘটনায় রাতেই পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে গত রবিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।
জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হবে। অযথা কোনো সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হবে না বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, গঙ্গাচড়া উপজেলায় হিন্দুপল্লীর বাড়িঘর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল থেকে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে সেনা এবং পুলিশ সদস্যরা তদারকি করছেন বলে তিনি জানান।
১৫১ দিন আগে