বিএনপি
মবস্টাররা আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে: ফজলুর রহমান
দেশ-বিদেশ থেকে মবস্টাররা প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমাকে মব সৃষ্টিকারীরা (মবস্টার) হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমার সেগুনবাগিচার ভাড়া বাসার সামনে ওরা অবস্থান নিয়েছে… আজ আপনাদের মাধ্যমে আমি সারা জাতিকে জানাতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ আপনারা জেনে রাখুন, আমার জীবন বড় শঙ্কায় আছে।’
এর আগে রবিবার (২৫ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেওয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। ফজলুর রহমানের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার তার বাসার সামনে অবস্থান নেয় কয়েকজন ব্যক্তি।সংবাদ সম্মেলনে ফজলুর রহমান বলেন, আমি দেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি।
তিনি বলেন, আমি দেশের একজন মানুষ। সংবিধানের মৌলিক অধিকার অনুযায়ী, এ দেশে আমার বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তিনি গণমাধ্যমকে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাহায্যের আহ্বান জানান।
কারা মব সৃষ্টি করছেন জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ‘আমি ওদেরকে চিনি না— বাচ্চা তো। ওরা সকাল ৭টা থেকে সেখানে আছে। শুনেছি তারা একটি ছাত্র সংগঠনের। তবে এটা আমাদের দলের ছাত্র সংগঠন নয়।’ফজলুর বলেন, মবসৃষ্টিকারীর সংখ্যা সাত থেকে নয় জন। আপনারা একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন এরা কারা?
তিনি বলেন, আমার বাসার সামনে জড়ো হয়ে ‘ফজলু পাগলাকে গ্রেপ্তার কর, ফজলু পাগলাকে বাঁচতে দেব না, ফজলু পাগলাকে হত্যা কর,’ এমন স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।
‘আমি নাকি ফজলু পাগলা। এই ফজলু পাগলা নামটি প্রথমে আমাকে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াতে ইসলাম। এখন এই এই ছেলেপেলেরাও আমার নামে ফজু পাগলা স্লোগান দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের একজন পাগলা। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হলো, তারা আমাকে হত্যা করতে চায়। কিন্তু আমার মতো একজন সিনিয়র মানুষ যে দেশটার জন্য যুদ্ধ করেছি, আমি যুদ্ধ না করলে বা মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ না করলে এই সন্তনেরা তো বাংলাদেশের সন্তান হইত না, এরা হইত পাকিস্তানের সন্তান। এটি খুবই হতাশাজনক।এমন পরিস্থিতিতে আপনি দল থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল তো সাপোর্ট করবেই, করবে না কেন?’
তিনি দাবি করেন, এখন তিনি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে। ‘আমার পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমরা নিরাপদ বোধ করছি না।’
পড়ুন: নির্বাচন আয়োজনে দেশ প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা
ফজলুর রহমান বলেন, ‘মৃত্যুকে আমি কোনো দিন ভয় করি না। কিন্তু অপমৃত্যু আমার কাছে সবচেয়ে বেশি লজ্জাজনক।’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে, দেশ-বিদেশ থেকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যারা ইউটিউবার এবং যারা তাদের (স্বাধীনতাবিরোধীর) পক্ষে সাংবাদিকতা করে, তারাই এসব করছে। বিশেষ করে ফ্রান্স থেকে দুজন ইউটিউবার বলেছে, তাকে (ফজলুর রহমান) হত্যা কর? পরশু রাতে দেখলাম যে, জামায়াতের একজন ইউটিউবার বলছে যে, ফজলু পাগলাকে জবাই করে হত্যা করতে হবে।’
ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি হাত জোড় করে জানাব, আমি একজন মানুষ। আমি হাত জোড় করে আপনাদের কাছে, জনগণের কাছে বলতে চাই, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাঁচার অধিকার এ দেশে আছে, এটা আমি মনে করি। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আমার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।’
মবসৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো মামলা করব না; জিডি-টিডি কিছুই করব না।”
বিএনপির শোকজ নোটিশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা খুবই একটা স্বাভাবিক ঘটনা। একটা রাজনৈতিক দলে একজন কর্মীর প্রতি তার দল মনে করে যে, কর্মীর বোধহয় কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি আছে, দল তাকে শোকজ করতেই পারে, আমাকেও করেছে।’
তিনি বলেন, আমি শোকজের উত্তর দলকে দেব। দল যা জানতে চায়, তা–ও আমি বলব। তারপরে দল সিদ্ধান্ত নেবে। এখন পর্যন্ত কিন্তু আমি দলের মধ্যেই আছি, এখন পর্যন্ত আমি দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা।’
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে ফজলুর রহমান ৫ আগস্ট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
এ বক্তব্য ঘিরে সমালোচনা শুরু হলে বিএনপির পক্ষ থেকে ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ যে, আপনি ৫ অগাস্টের অভ্যুত্থানকে নিতে পারছেন না। জবাবে ফজলুর রহমান বলেন, ‘তারা বলুক, তারা বললে যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক, আমার বিরুদ্ধে মিছিল করুক, জুতা মারুক। কিন্তু আমার বাসার সামনে গিয়ে মব সৃষ্টি করে আমাকে হত্যা করার স্লোগান দেবে, এটা হবে কেন?’
সংবাদ সম্মেলনে ফজলুর রহমানের স্ত্রী উম্মে কুলসুম রেখা ও আইনজীবী অভিক রহমান উপস্থিত ছিলেন।
১২৫ দিন আগে
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আশাবাদী পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ একটি সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। রবিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাদেশ একটি সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি (ইসহাক) মন্তব্য করেছেন। তারা এটির প্রশংসা করেছেন।’
পড়ুন: জামায়াত আমিরের সঙ্গে দেখা করলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) গতিশীল করা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেটা যখন সুযোগ আসবে, তখন দেখতে পাবেন। সার্ককে গতিশীল করার জন্য বিএনপি যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এসেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কথা হয়েছে। কথা বলার ফাঁকে ম্যাডাম হয়তো জিজ্ঞেস করেছেন যে আপনাদের দেশে বন্যা কেমন হয়েছে, আগে বন্যা বাংলাদেশেও হতো, এখন আপনাদের দেশেও হচ্ছে। এমন কিছু কথা হয়েছে।’
‘কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সার্ক নিয়ে তারা যেমন বলেছেন, ম্যাডামও তেমনি সার্কের স্মৃতিচারণ করেছেন। সার্ক প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময় কী অবস্থা ছিল? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সার্কের যে ঘোষণা, পরবর্তীতে তার পাকিস্তান সফর, বাংলাদেশেও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সফর—এগুলো নিয়ে কথা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
পড়ুন: সম্পর্ক জোরদারে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের সাক্ষাৎ
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বলতে পারেন, এটা কুশলবিনিময় কিংবা খোঁজখবর নেওয়া, বা সেগুলো স্মৃতিচারণ করা হয়েছে।’
দুদেশের বিদ্যমান সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো স্বাভাবিক কথা। দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভবিষ্যতে যাতে দুদেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবাই মিলিতভাবে কাজ করতে পারি, সে আলোচনা তারা করেছেন।’
বাংলাদেশের গণতন্ত্র কিংবা নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না প্রশ্নে ডা. জাহিদ বলেন, ‘বাংলাদেশ যেহেতু নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, সেহেতু তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়ে যাচ্ছে, সে কথা তিনি বলেছেন।’
১২৬ দিন আগে
নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রবিবার সতর্ক করে বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সারা দেশ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করা হলে চরম ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী দলগুলোর কাছে অবৈধ অস্ত্র এবং অর্থ আছে...। যদি অন্তর্বর্তী সরকার এই অবৈধ অস্ত্র জব্দ করতে না পারে—তাহলে পরবর্তী নির্বাচন বিপজ্জনক হবে। এই অস্ত্রগুলো অবিলম্বে উদ্ধার করতে হবে।’
রবিবার (২৪ আগস্ট) বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।
পড়ুন: জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান রিজভীর
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমান প্রশাসনের মধ্যেই লুকিয়ে থেকে আগের স্বৈরাচারী শাসনকে সমর্থনে নীরবে কাজ করছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রশাসনের এই ব্যক্তিরা সুযোগ পেলে অন্তর্বর্তী সরকার এবং গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।
রিজভী বলেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও প্রশাসনের ভেতরে, এমনকি সচিবালয়েও লুকিয়ে থাকা এই উপাদানগুলো লক্ষ্য করেছেন। তারা সেখানে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য কাজ করছে। ‘এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন পালনের অংশ হিসেবে রিকশা ও ভ্যানচালকদের মধ্যে রেইনকোট বিতরণের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
‘জুলাই সনদের জন্য আইন বা সংবিধান সংশোধন করতে হলে সেটা নির্বাচিত সংসদই করবে। একটি রাজনৈতিক দল বলছে আগেই গণভোট দিতে হবে—কেন? যদি মূলনীতিতে কোনো পরিবর্তন করতে হয়, মূলনীতি একটি অখণ্ড বিষয়। তারপরও সংবিধানের বিধান অনুসারে সংশোধন করা যায়। কিন্তু সেই সংশোধন করবে সংসদ,’ যোগ করেন তিনি।
নির্বাচনের আগে কেন এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির এই নেতা।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা যেমন গায়ের জোরে চালিয়েছেন যে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার মতের মিল হয়নি, তাই গোয়েন্দা সংস্থা পাঠিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। সেই ধরনের আলামত এখন কেন থাকবে? আমরা তো এমনটা করতে পারি না। কাজেই সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার তৈরি করুন। তারপর গণতন্ত্রের স্বার্থে যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে তারা সেটা করবে। এটা তাদের দায়িত্ব।
নির্বাচনের আগে কেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপর এত দাবি উত্থাপন করা হচ্ছে— সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। ‘আমরা যদি 'তালগাছটি আমার' বলে চিৎকার করতে থাকি—তাহলে আমরা কেবল ফ্যাসিবাদের দরজা খুলে দেব,’ বলেন রিজভী।
১২৬ দিন আগে
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান রিজভীর
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যদি দেশের স্বার্থে সংবিধানের কোনো পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে সেটা নির্বাচিত সরকারই করবে।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘জিয়া পরিষদ রিকশা ও ভ্যানগাড়ি চালকদের মধ্যে বৃষ্টির পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানে’ তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ৫ আগস্টের মাধ্যমে আমরা যে অর্জন করেছি, সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। গত ১৬ বছর ধরে একটি দানবীয় সরকারের রোষানল ও নিষ্ঠুর নিপীড়নের মধ্যে এ দেশের মানুষ দিন কাটিয়েছেন। সেই সরকার যাতে আর ফিরে না আসে, সে জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সুযোগ যেন তৈরি না হয়।
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে এই জাতিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। তখন দেশে কোনো আইন-কানুন ছিল না, কোনো ন্যায়বিচার ছিল না। শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য তারা আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একের পর এক রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে।’
‘দেশে এমন এক রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল, শেখ হাসিনা, তার ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া কেউ কথা বলতে পারতেন না। যা ছিল হিংসা ও রক্তপাতের রাজত্ব। আপনারা যদি সেটার পুনরাবৃত্তি না চান, তাহলে সবাইকে অন্তত ন্যূনতম একটা বোঝাপড়ার মধ্যে আসতে হবে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এটা যদি না করতে পারেন, তাহলে আবারও ভয়ঙ্করভাবে ফ্যাসিবাদ উঁকি দিতে পারে। শেখ হাসিনা কতখানি প্রতারক হলে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে ক্ষমতায় এসে নিজেই সেটা বাতিল করে দিয়েছে। এই হচ্ছে শেখ হাসিনা, যার কোনো অঙ্গীকার নেই, যে রাজনীতিকে মনে করে প্রতারণা ও উদ্দেশ্য হাসিলের মাধ্যম। আমরা দেশে সেই রাজনীতি ফেরত আসতে দিতে পারি না।’
রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ। তাদের কাছে মানুষের অনেক দাবি-দাওয়া ও প্রত্যাশা রয়েছে। সেগুলো পূরণে সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই, কিন্তু এখন মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমে এসেছে, জিনিসপত্রের দাম না কমলেও অন্তত বাড়ছে না। কিন্তু কর্মসংস্থান তো হচ্ছে না। একের পর এক মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান না থাকলে দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হয়।
‘দুয়েকজন উপদেষ্টা হয়তো হাঁসের মাংস খেতে পারবেন যেকোনো জায়গায়। কিন্তু জনগণ তো আর হাঁসের মাংস খেতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়।’
আরও পড়ুন: পুলিশ-প্রশাসনে আ. লীগের অনুগতদের রেখে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী
তিনি আরও বলেন, গার্মেন্ট খাত থেকে এক লাখ লোকের চাকরি চলে গেছে। কারণ, ফ্যাসিবাদের পূজারীদের অনেকেই মিলমালিক। আমরা আগেও বলেছি, কলকারখানা যেন বন্ধ না হয়, মানুষের ক্ষুধা যেন না বাড়ে। মানুষের ক্ষুধার সঙ্গে রাজনীতি করা যাবে না। দরকার হলে সরকার এসব কারখানা নিলামে বিক্রি করে দেবে অথবা প্রশাসক দিয়ে চালাবে। কিন্তু কর্মসংস্থান যেন ঠিক থাকে, সরকারকে সেই চেষ্টা করতে হবে।
‘জুলাই সনদের জন্য আইন বা সংবিধান সংশোধন করতে হলে সেটা নির্বাচিত সংসদই করবে। একটি রাজনৈতিক দল বলছে আগেই গণভোট দিতে হবে—কেন? যদি মূলনীতিতে কোনো পরিবর্তন করতে হয়, মূলনীতি একটি অখণ্ড বিষয়। তারপরও সংবিধানের বিধান অনুসারে সংশোধন করা যায়। কিন্তু সেই সংশোধন করবে সংসদ,’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা যেমন গায়ের জোরে চালিয়েছেন যে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার মতের মিল হয়নি, তাই গোয়েন্দা সংস্থা পাঠিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। সেই ধরনের আলামত এখন কেন থাকবে? আমরা তো এমনটা করতে পারি না। কাজেই সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার তৈরি করুন। তারপর গণতন্ত্রের স্বার্থে যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে তারা সেটা করবে। এটা তাদের দায়িত্ব।
১২৭ দিন আগে
রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।’
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি ফখরুলের
এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’
‘কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।’
১২৮ দিন আগে
মুক্ত সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে কমিশন গঠন করবে বিএনপি: আমীর খসরু
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং সাংবাদিকদের মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে পেশা চর্চায় উৎসাহিত করতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে একটি কমিশন গঠন করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘ফ্যাসিস্ট আমলে সাংবাদিকতা এবং বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে সাংবাদিকতাকে রীতিমতো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সাংবাদিকতার কোনো পরিবেশ রাখেনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বাধীন সাংবাদিকতায় সোচ্চার। আগামীতে কমিশন গঠন করে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।’
গত ১৫ বছরের প্রসঙ্গ টেনে খসরু অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক বাংলাদেশে টিকতে না পেরে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। অনেকে আবার সাংবাদিকতা পেশাই ছেড়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, যেখানে সাংবাদিকতা বলে কিছু নেই।’
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল অন্তর্বর্তী বাজেট দেওয়া: আমীর খসরু
‘আমি নিজেই দুই-চারজন সাংবাদিককে বিদেশে যেতে সাহায্য করেছি। দেশে থেকে তারা টিকতে পারছিল না।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও সংসদের মধ্যে যেমন আলাদা সীমারেখা থাকা উচিত, একইভাবে একটি মিডিয়া হাউসে ম্যানেজমেন্ট এবং সাংবাদিকতার মধ্যেও সীমারেখা থাকা প্রয়োজন।’
‘হাসিনা সরকারের আমলে যেমনি বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং সংসদের মধ্যকার ড্র লাইন তুলে দিয়ে দেশকে অকার্যকর করা হয়েছে, একইভাবে ম্যানেজমেন্ট আর সাংবাদিকদের মধ্যকার ড্র লাইন তুলে দিয়ে সাংবাদিকতা ধ্বংস করা হয়েছে,’ মন্তব্য করেন তিনি।
খসরু বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্র নয়, অর্থনৈতিক গণতন্ত্র এবং মতপ্রকাশের গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত না হলে গণতান্ত্রিক পদযাত্রা ব্যাহত হয়। পাঁচ আগস্টের পর একজন কার্টুনিস্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি কার্টুন আঁকেন। অন্য কেউ হলে হয়তো প্রতিক্রিয়া দেখাতেন, সমালোচনা করতেন। কিন্তু তারেক রহমান নিজেই সেই কার্টুন শেয়ার দিয়ে কার্টুনিস্টের প্রশংসা করেছেন। এটাই মুক্ত গণমাধ্যম এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।’
সাংবাদিকদের যে আদর্শই থাকুক না কেন, সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে ‘অবজেকটিভ’ থাকার পরামর্শ দেন খসরু।
১২৮ দিন আগে
শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি ফখরুলের
গুম করে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে 'মায়ের ডাক' আয়োজিত মানববন্ধন ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি জানান।
ফখরুল আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনাগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করতে ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের কান্না থামাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমি আশা করি সরকার বাবা হারানো শিশু, ভাই হারানো বোন ও ছেলে হারানো মা সম্পর্কে পূর্ণ তথ্য প্রকাশের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে। এসবের জন্য যেই দায়ী হোক না কেন, তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, মানবতার বিরুদ্ধে এই অপরাধের চেয়ে ভয়াবহ আর কিছু হতে পারে না।’
তিনি বলেন, সকলেই জানেন যে জোরপূর্বক গুম মানবতার বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অপরাধ এবং এই ধরনের অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন প্রমাণিত হয়েছে যে হাসিনা এই হত্যাকাণ্ড ও গুমের জন্য দায়ী। তার বিচার এই দেশেই হওয়া উচিত এবং তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত।’
পড়ুন: দেশকে বিরাজনীতিকরণে নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয়: মির্জা আব্বাস
তিনি ভুক্তভোগীদের পরিবারকে আশাহত না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয় না এবং অতীতেও কখনও ব্যর্থ হয়নি, যা গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
ফখরুল বলেন, তরুণ প্রজন্ম এমনকি শিশুরাও একদিন তাদের বাবা ও ভাইদের প্রতি করা অন্যায়ের বিচার দেখতে পাবে।
তার দলের পক্ষ থেকে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে বিএনপি সর্বদা ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এখন তাদের সাথে আছে এবং চূড়ান্তভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাথে থাকবে।
বিএনপি মহাসচিব বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।
অন্তর্বর্তী সরকার গুম কমিশনকে শক্তিশালী করে এই ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার জনসাধারণের সামনে গুম কমিশন উপস্থাপন এবং শুনানি করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের মা, ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়দের কষ্ট লাঘব করতে এবং কান্না থামাতেও ব্যর্থ হয়েছে। তাদের জবাবদিহি করতে হবে।’
তিনি বলেন, তাদের দাবি সবসময়ই ছিল যে এই ঘটনার বিচার করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি বাবা হারানো শিশুদের পাশে থাকবে। বিএনপির দাবি সবসময়ই ছিল যে এই ঘটনাগুলোর বিচার করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কষ্টের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
পড়ুন: গুম-নির্যাতনের প্রমাণ সংরক্ষণে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার আহ্বান ড. ইউনূসের
কাঁদতে কাঁদতে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের সময় অনেককে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে, এমনকি একটি পরিবারের সাতজন সদস্যকেও গুম করা হয়েছিল। বাবা-মা হারানো শিশুদের দেখে আমার হৃদয় ভেঙে যায়, কারণ আমি তাদের খুব ছোটবেলা থেকেই জানতাম। এখন তারা তাদের প্রিয়জনদের ছাড়াই বড় হচ্ছে।’
তিনি ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি বিএনপির পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই আমরা নিখোঁজদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের পাশে থাকব।’
ফখরুল বলেন, বিএনপি এই অপরাধের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য নির্বাচন চায়। ‘জোরপূর্বক গুম কখনও আমাদের ইতিহাসের অংশ ছিল না। এই দানবীয় হাসিনার শাসনামলে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এগুলো করা হয়েছে।’
১২৮ দিন আগে
দেশকে বিরাজনীতিকরণে নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয়: মির্জা আব্বাস
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের পলায়নের পর বিএনপিকেও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে রাজনীতিশূন্য করতে দেশি-বিদেশি মহলের প্ররোচনায় আবারও একটি নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয় হয়েছে।
সম্প্রতি ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, খাগড়াছড়ির সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালকে কেন্দ্র করে ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ সাধনে সচেষ্ট মহলগুলো দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন অজুহাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে এমন চক্রান্তকারীদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষিত ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে দেশকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে বলেও সতর্ক করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
পড়ুন: কৌশল নয়, জনগণের রায়ের মাধ্যমে রাজনীতির মোকাবিলা করুন: তারেক
আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুন এক মাইনাস-টু ফর্মুলা চালু হয়েছে, যা ১/১১ সময়কার মাইনাস-টু ফর্মুলার মতোই। আগেরবার সেটি এসেছিল সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে। আর এবার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ভিন্ন আকারে একই চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’
তিনি বলেন, এসব অপচেষ্টার অংশ হিসেবে একটি গোষ্ঠী সমন্বিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা ও রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে বিএনপিকে ‘খারাপ’ বা ‘অবিশ্বস্ত’ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এখনো প্রশাসনের ভেতরের আওয়ামীপন্থী ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক ও আদর্শিক গোষ্ঠীর একাংশ বিএনপিকে দুর্বল করতে সক্রিয় রয়েছে। ‘তারা মনে করছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় বিএনপিকে সরিয়ে দিতে পারলেই দেশের শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে চলে যাবে।’
আব্বাস বলেন,‘যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাখতে চায়, তারাই নিজেদের স্বার্থে নতুন করে মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ১/১১–তে এটি এক রূপে এসেছিল, তখন একটি সেনাসমর্থিত সরকার ছিল। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থাকায় ভিন্ন ধরনের ‘মাইনাস-বিএনপি ফর্মুলা’ চালানো হচ্ছে।
কারা এর পেছনে রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘শয়তান নানা ছদ্মবেশে আসে। একই দেশি-বিদেশি মাস্টারমাইন্ডরা নতুনভাবে মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।’
পড়ুন: আসন্ন নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আইআরআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
তার মতে, এই প্রচেষ্ঠার উদ্দেশ্য একমাত্র বিএনপিকে দুর্বল বা সরিয়ে দিয়ে দেশের রাজনীতি নিজেদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করা। এই পরিকল্পনায় পিছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়।
আব্বাস দাবি করেন, অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক আমলা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে, কারণ তারা মনে করছে বিএনপিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিলে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল হবে। ‘প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব থেকে তারা বিএনপিকে বাদ দিতে চায়।’
তিনি বলেন, এমনকি কিছু রাজনৈতিক দলও এই সুরে সুর মিলিয়ে বলছে, বিএনপি এখন সেই একই পথে এগোচ্ছে, যা একসময় আওয়ামী লীগ অনুসরণ করেছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ইসলামী দলসহ কয়েকটি রাজনৈতিক শক্তি নানা ইস্যু উত্থাপন করছে, যাতে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পথ রুদ্ধ হয়।
‘একটি দল তো বলছে, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত নির্বাচন হতে দেবে না। তারা ফ্যাসিবাদীদের মতো আচরণ করছে’ যোগ করেন আব্বাস।
এই পরিস্থিতিতে আব্বাস দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ‘আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি, নিজ দেশের মাটি অন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নয়।’
তার মতে, নতুন মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা এবং সেন্ট মার্টিন, সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনাও আসলে একই সূত্রে গাঁথা, ভিন্ন কোনো বিষয় নয়।
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং হবে। বিএনপির বিপুল জনপ্রিয়তা থাকায় কিছু মহল প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। ‘কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে, মিথ্যা প্রচারণায় কেউ দলের জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করতে পারবে না,’ বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের সরাতে হবে। ‘অন্যথায়, সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন হবে।’ বিএনপি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং ফেব্রুয়ারিতে ভোটের প্রত্যাশায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্ভাব্য জোট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আব্বাসের ধারণা, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, যা সফল হলে দেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের ফেব্রুয়ারিতে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণার প্রতি আস্থা প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই, নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে।’
পড়ুন: বিএনপি পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে: ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না—এ বিষয়ে আব্বাস বলেন, এটি তার ইচ্ছা ও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ‘খালেদা জিয়া নিজেও এ বিষয়ে কিছু বলেননি।’বিএনপি ক্ষমতায় গেলে খালেদা জিয়ার কোনো ভূমিকা থাকবে কি না—এমন প্রশ্নে আব্বাস বলেন, সময়ই এই প্রশ্নের উত্তর দেবে।
ইসলামী দলগুলোর জোট গঠনের চেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিএনপি এতে চিন্তিত নয়। ‘বাংলাদেশের জনগণ উদারপন্থী মুসলিম, তারা সাম্প্রদায়িকতাকে নয়, গণতান্ত্রিক ও মধ্যপন্থী দলকেই পছন্দ করে।’
১২৮ দিন আগে
কৌশল নয়, জনগণের রায়ের মাধ্যমে রাজনীতির মোকাবিলা করুন: তারেক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের রায়কে ঠেকাতে নয়, বরং রাজনীতির মোকাবিলা রাজনীতির মাধ্যমেই করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জন্মাষ্টমী উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ মন্তব্য করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির বিজয় রোধে অপকৌশলের বা শর্তের বেড়াজালের আশ্রয় নিচ্ছেন। জনগণকে রায় দেওয়ার সুযোগ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা না করে রাজনীতিকে রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করে তারেক বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ— ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবাক করা বিষয় হলো, আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার নয়, বরং কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও দল—যারা একসময় রাস্তায় নেমে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সহযাত্রী ছিলেন—তাদের আচরণ এখন উৎখাত হওয়া স্বৈরাচারী সরকারের মতোই বিএনপির বিজয় ঠেকানোর প্রবণতা দেখাচ্ছে।’
তারেক অভিযোগ করেন, একসময় ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপির বিজয় ঠেকাতে দেশকে বিশাল কারাগার ও পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।
তিনি বলেন, ‘আজকের ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও কিছু দল ও গোষ্ঠী আছে, যারা আশঙ্কা করছে নির্বাচন হলে জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে সরকার গঠনের জন্য। এই ভয় থেকেই তারা অশুভ কৌশল নিচ্ছে এবং বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা শর্ত আরোপ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই—রাজনীতির মোকাবিলা রাজনীতির মাধ্যমেই করুন। জনগণের শক্তির ওপর ভরসা ও আস্থা রাখুন। যদি বিএনপির বিজয় জনগণের মধ্য থেকেই আসে—তাহলে শুধুমাত্র বিএনপির জয় ঠেকাতে জনগণের রায় দেওয়ার অধিকারকে বন্ধ করবেন না।’
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।
অনুষ্ঠানে তারেক বলেন, দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখনো পিআর পদ্ধতির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়।
তিনি বলেন, ‘জনগণের জানার অধিকার আছে তারা কাকে ভোট দিচ্ছে এবং কোন ব্যক্তি তাদের প্রতিনিধি হয়ে সংসদে যাচ্ছেন। কিন্তু পিআর পদ্ধতিতে ভোটারদের জানার কোনো স্বচ্ছ উপায় থাকে না যে, কোন ব্যক্তি নির্বাচিত হচ্ছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি যদি জাতির প্রতিনিধি হয়ে সংসদ বা সরকারে যেতে চান, তবে অবশ্যই সরাসরি জনগণের মুখোমুখি হতে হবে, তাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে এবং ভোটের মাধ্যমে তাদের ম্যান্ডেট নিতে হবে।
পড়ুন: আসন্ন নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আইআরআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পিআর পদ্ধতি ও আরও কিছু ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতপার্থক্য রয়েছে—তা সময়ের সঙ্গে সহজভাবে মিটে যাবে।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে যারা ধোঁয়াশা তৈরি করছে, তারা হয়তো অজান্তেই গণতন্ত্রের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে। একই সঙ্গে তারা উৎখাত হওয়া ফ্যাসিবাদী সরকারের পুনর্বাসনের পথও প্রশস্ত করতে পারে।’
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তারেক বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর দেওয়া বিবৃতি কিংবা নতুন শর্ত জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি বিষয়ে সব দলের ঐকমত্য প্রয়োজন না হলেও স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার মতো ইস্যুতে ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে সবার ঐক্য জরুরি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ ও প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান তারেক। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গ করা হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতিও তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তারেক বলেন, অতীতে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা মূলত অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অবৈধ লোভ থেকে হয়েছে, ধর্মীয় কারণে নয়। তিনি যোগ করেন, ‘কোনো কারণেই কাউকে হামলা বা অবিচারের শিকার হতে না দেওয়াটা রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ১৬ বছর দেশ শাসন করা আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছে এবং দেশের বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন এক ধরনের প্রবল প্রচেষ্টা চলছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেওয়ার। এ ধরনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এই জাতিকে স্বাধীনতা, ভূখণ্ড ও পরিচয় দিয়েছে। আর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান মানুষকে দিয়েছে গণতন্ত্রের স্বপ্ন। ‘উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে স্মরণ করতে হবে।’
পড়ুন: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব চরমপন্থার উত্থান সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশে এর বিস্তার কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।তিনি সবাইকে বিভেদমূলক রাজনীতি এড়িয়ে একসঙ্গে কাজ করে জাতীয় পরিচয় রক্ষা, অস্তিত্ব সুরক্ষা ও দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
কেউ যেন সাম্প্রদায়িকতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের তিনি আহ্বান জানান।
সাম্প্রদায়িকতায় বিএনপি বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তার দল বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করে একটি রংধনু জাতি গড়ে তুলতে চায়।
অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।
১২৯ দিন আগে
আসন্ন নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আইআরআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে দেশের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন এবং সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। অন্য দুই সদস্য ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহদী আমিন।
আইআরআই প্রতিনিধিদলে ছিলেন এশিয়া-প্যাসিফিক ডিরেক্টর স্টিফেন চিমা, ডেপুটি ডিরেক্টর ম্যাথু কার্টার এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. মঈন খান। তিনি জানান, বৈঠকে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, চলমান সংস্কার উদ্যোগ এবং আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জামায়াতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আইআরআই’র প্রতিনিধি দল
তিনি আরও বলেন, তারা আইআরআই প্রতিনিধিদের বিএনপির কৌশলগত দৃষ্টি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।
ড. খান বলেন, ‘বৈঠক গঠনমূলক ছিল… আমরা ব্যাখ্যা করেছি কিভাবে আমরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক রূপান্তর দেখছি এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার ও আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের মতামত শেয়ার করেছি।’
আইআরআই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করছে। গত ১৯ আগস্ট একই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী’র শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অফিসে বৈঠক করেছে।
আইআরআই হল একটি ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা, যা রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন করে।
১৩০ দিন আগে