বিএনপি
নির্বাচনে ভয় পেলে রাজনীতি নয়, এনজিওতে যোগ দিন: আমীর খসরু
নির্বাচনে যারা ভয় পান, তাদের রাজনীতিতে না থেকে এনজিও বা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচনে ভয় পান, তাদের রাজনীতি করার দরকার নেই। তারা চাইলে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারেন, এনজিওতে যেতে পারেন। আপনি রাজনীতি করবেন, নির্বাচন এড়াবেন, আবার একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত করবেন—এটা চলতে পারে না।’
রবিবার (২৭ জুলাই) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’–এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, যেসব দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে, সেখানে বিভাজন, গৃহযুদ্ধ ও রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতার উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু যারা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রে ফিরে গেছে, তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে উন্নতি করেছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে তিনি বলেন, এই আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, একে কেউ ‘হাইজ্যাক’ করার সুযোগ পাবে না। এই আন্দোলন নতুন কিছু নয়, কারণ অধিকার আদায়ের আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের রক্তে রয়েছে।
পড়ুন: স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে একমত রাজনৈতিক দলগুলো: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনা না গেলে আমরা বাড়ি ফিরতাম না। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকত।’
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল দেশের ওপর জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
যদিও বিএনপি নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তবে বিএনপি কখনও এর কৃতিত্ব দাবি করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হবে।
আমীর খসরু বলেন, সব বিষয়ে পূর্ণ ঐকমত্য প্রয়োজন নেই।
‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত ও বিশ্বাস থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে ঐক্য জরুরি। মতপার্থক্য ছাড়া গণতন্ত্র টিকে না। আমরা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে আসিনি।’
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ‘পলায়নের’ পর দেশের জনগণের মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে।
‘যারা এই পরিবর্তন বুঝতে পারছে না, তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, একটি নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাই সঠিকভাবে কাজ করছেন না এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষায় আছেন।
১৫৪ দিন আগে
রংপুরে বিএনপি কর্মীর লাশ নিয়ে স্বজনদের বিক্ষোভ
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি কর্মী শফিকুল হত্যার বিচারের দাবিতে তার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। তিন মাস ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শফিকুল ইসলাম মারা যান।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার শহিদ মিনার চত্বরে নিহত শফিকুলের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন তার স্বজনরা। এ সময় আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানান তারা।
শফিকুল ইসলামের বাড়ি বদরগঞ্জের লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি গ্রামে। গত ৫ এপ্রিল মানিক মিয়ার বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
শফিকুলের স্বজন ও সহকর্মীদের দাবি, গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জে গেলে দোকানভাড়াকে কেন্দ্র করে একটি সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান তিনি। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান মানিক মিয়ার বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হন। এরপর রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশকে কল্যাণধর্মী রাষ্ট্র বানাতে ব্যর্থ: মেজর হাফিজ
গতকাল সন্ধ্যায় লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শফিকুলের সন্তান ও স্বজনরা।
এ সময় তার ছেলে মুরাদ বলেন, ‘আজকে আমরা এতিম হয়েছি, কাল আপনারা হবেন। এরকম সন্ত্রাসীকে বদরগঞ্জের মাটি থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তাই সবাইকে আহ্বান জানাই, আপনারা সবাই একজোট হয়ে মানিক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ে মিম আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা যে এতদিন ধরে কষ্ট করেছেন, সেজন্য আমরা চাই এই খোলা আকাশের নিচে দোষীদের ফাঁসি দেওয়া হোক। তাহলে আমাদের মন শান্তি পাবে; আমার বাবাও শান্তি পাবে। মানিক চেয়ারম্যান, তার ছেলে তমাল ও তাদের সঙ্গীরা দিনদুপুরে কুপিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে।’
এ সময় জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী থাকার কারণে নামধারী একটি কুচক্রী মহল দিবালোকে হত্যা করেছে তাকে। এ নিয়ে থানায় মামলা হলেও নির্বিকার ভূমিকায় পুলিশ। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত আছেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
১৫৫ দিন আগে
উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশকে কল্যাণধর্মী রাষ্ট্র বানাতে ব্যর্থ: মেজর হাফিজ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশকে একটি কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রধান ড. ইউনূস একজন দেশবরেণ্য ব্যক্তি। বিদেশে তার অনেক সুনাম আছে। আমাদের দলসহ সব রাজনৈতিক দলই তাকে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তার কাছ থেকে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম— তিনি ও উপদেষ্টা পরিষদ তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা জুলাই মাসে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, তাদের দেখতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত উপদেষ্টাদের নেই।’
সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নানা ধরনের আতেলরা মনের মাধুরী মিশিয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে। তার একটি হলো পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি। অথচ মানুষ প্রার্থীর চেহারা দেখতে চায়, একজন ব্যক্তির গুণাগুণ বিচার করে, অতীত কর্মকাণ্ড দেখে শুনে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে চায়। কোনো কুচক্রী মহলের কথায় আমরা কান দেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। তাদের গোপন অভিপ্রায়—এই সরকার যেন পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো উপায় নেই। জনগণ যাদের ভোট দেবে, আমরা তাদের মেনে নেব।’
লালমোহন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তাহারাত হাফিজ আর্কের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ক.ন কুদ্দুস রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ভোলা জেলা সমন্বয়ক আবু নাছের রহমত উল্লাহ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, সদস্য সচিব রায়সুল আলমসহ স্থানীয় নেতারা।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সাবেক ও বর্তমান নেতারা বক্তব্য দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটি গঠনের জন্য কাউন্সিলরদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে মো. জাফর ইকবালকে সভাপতি এবং বাবুল পঞ্চায়েতকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
১৫৫ দিন আগে
ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই সংস্কারের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও বিদেশ থেকে ভাড়াটে লোক এনে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে কিছু লোক ভাড়া করে কি একটা দেশ চালানো যায়? না, যায় না। এটিই সহজ সত্য, আমাদের তা বুঝতে হবে।’
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়া পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচিটি পালন করা হয়, যা শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের’ পতনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, কয়েকটি বৈঠক করলেই সংস্কার হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয়। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তা একদিনে হয় না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আগামীকাল থেকে পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে তা হবে না। তাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা নিরুৎসাহিত করা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান আমলাতন্ত্র দেশের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি নেতিবাচক একটি আমলাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ইতিবাচক আমলাতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে। আর তা করতে হলে জনগণকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফেরা, তাদের চাহিদা জানা এবং সেই চাহিদার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা।’
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই বলা হচ্ছে বিএনপি শুধু ভোট চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা সংসদে যাবে কীভাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে জনগণের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?’
আংশিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো সুরে কথা বলছে। কিন্তু পিআর নির্বাচন কী—সাধারণ মানুষ তা বোঝে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, সেটি হলো—রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, প্রতীক হবে ধানের শীষ, পাল্লা, হাতপাখা ইত্যাদি; আর ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবে। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।’
পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে জনগণ ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। এরপর দল যাকে ইচ্ছা তাকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়। ফলে জনগণের পছন্দের, নিজেদের এলাকার কোনো নেতাকে তারা আর সংসদে পাঠাতে পারবে না।’
পড়ুন: পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
এই কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক গভীর সংকটে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কখন গণতন্ত্রের পথে ফিরব। দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে ক্ষতি করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে না। তারা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাত, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধ্বংস করেছে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকায় যেসব অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের গড়া দল। এই দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সততাই প্রধান ভিত্তি। সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকাল পত্রপত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, সেগুলো বিএনপির আদর্শ বা জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তাই যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন, তাদের জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ হতে হবে।’
১৫৬ দিন আগে
নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করে কোনও প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক আলোচনাসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি তাদের সমালোচনা করেন যারা মনে করেন, সংস্কার রাতারাতি বা কয়েকটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
বিএনপি নেতা বলেন, যদি সরকার মনে করে যে, তারা চাইলেই কাল থেকে পুলিশ ঘুষ নেওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে সেটা হবে না। ‘আপনাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে ঘুষ নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়।’
জিয়া পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে, যার শিরোনাম ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল দেশের উন্নয়নে বাধা হিসেবে বিদ্যমান আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নয়নের একটি বড় বাধা। এটি একটি নেতিবাচক আমলাতন্ত্র এবং এটিকে একটি ইতিবাচক কাঠামোয় রূপান্তর করতে হবে। তা করতে হলে মূলত জনগণকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া, তাদের চাহিদা বোঝা এবং সেই চাহিদাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত করা।
আরও পড়ুন: পাইলট তৌকিরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানালেন ফখরুল
নির্বাচন চাওয়ার কারণে বিএনপিকে ঘিরে চলমান সমালোচনার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বলা হলো, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় না। ‘আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে সংসদে যাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে কীভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে?’
ফখরুল বলেন, ‘আপনি দেশ চালাতে বাড়ি ও বিদেশ থেকে কয়েকজন লোক ভাড়া করে আনতে পারেন না। এটি সম্ভব নয়।’
১৫৬ দিন আগে
পাইলট তৌকিরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানালেন ফখরুল
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) ফখরুল বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসার্স মেসে গিয়ে তৌকিরের স্ত্রী আকসা হোসেন নিঝুমের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার বাবা ও মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, স্ত্রী নিঝুম এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন।
এসময় ফখরুল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এই কঠিন সময়ে পরিবারের প্রতি দলের পূর্ণ সমর্থন এবং সংহতির আশ্বাসও দেন তিনি।
ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিমান ও সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) ফখরুল আজম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহী আকবর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) একেএম শামসুল ইসলাম শামস এবং কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) শামসুজ্জামান খান।
পড়ুন: বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন স্বৈরাচার হাসিনা: রিজভী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও এই সফরে উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার(২১ জুলাই) উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে একজন দক্ষ পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম প্রাণ হারান। পরে তাকে রাজশাহীর নিজ গ্রাম সপুরায় দাফন করা হয়।
সাগর নামেও পরিচিত তৌকির রাজশাহী ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরে তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেন এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন।
মাত্র এক বছর আগে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিঝুমকে বিয়ে করেছিলেন।
বিএনপি নেতারা পৃথকভাবে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুর গ্রামে স্কুল শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর কবর জিয়ারত করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি মারা যান।
অ্যানি তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং সেখানে ফাতেহা পাঠ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
বিএনপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানাতে তিনি মাসুকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করেন।
এদিকে, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বুগুলাগাড়ি গ্রামে শিক্ষিকা মেহেরিন চৌধুরীর কবর জিয়ারত করেন।
শ্রেণিকক্ষে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে মেহেরিন মারা যান। আফরোজা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
পড়ুন: উত্তরায় যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৫ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সমবেদনা জানালেন ফখরুল
নীলফামারী এবং লালমনিরহাটের মহিলা দলের নেতারাও পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান আনিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
তিনি রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকায় নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এ জেড জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দলের এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
১৫৬ দিন আগে
বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন স্বৈরাচার হাসিনা: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বিচারপতি খায়রুল হক দেশের বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেল খাটিয়েছেন। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করায় ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান রিজভী।
তিনি বলেন, বিএনপির কোটি কোটি সমর্থক রয়েছেন। এ বছর আমরা এক কোটি সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন করব।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজার এম সাইফুর রহমান অডিটোরিয়াম জেলা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পড়ুন: উত্তরায় যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৫ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সমবেদনা জানালেন ফখরুল
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, বিগত দিনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের দিনের পর দিন, মাসের পর মাস জুলুম, নির্যাতন ও অত্যাচার করেছেন। সেই মামলায় আমি ও আমাদের নেতা কর্মীরা জেল খেটেছি।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূনের সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ সাবেক এমপি রশিদুজ্জান মিল্লাত। এছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপি সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সিলেট বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম টিম লিডার সৈয়দ আশরাফুল মজিদ খোকন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম নাসের রহমান প্রমুখ।
পড়ুন: খায়রুলের গ্রেপ্তারে মির্জা ফখরুলের শুকরিয়া, চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, আব্দুল ওয়ালী সিদ্দিকী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, বকশী মিছবাহ উর রহমান, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমেদ রাজনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল ইসলাম সেলুনসহ জেলার ৭ উপজেলা এবং ৫টি পৌরসভার সিনিয়র নেতারা।
১৫৮ দিন আগে
উত্তরায় যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৫ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সমবেদনা জানালেন ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাম্প্রতিক যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনায় যেসব পরিবার তাদের সন্তানদের হারিয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
ফখরুল কিছু বিএনপি নেতার সঙ্গে প্রথমে উত্তরার দিয়াবাড়ির তারারটেক এলাকায় যান এবং বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষার্থী উমায়ের নূর আশিক, বোরহান উদ্দিন ব্যাপ্পি এবং মাহিত হাসান আরিয়ানের পারিবারিক কবরস্থানে বেলা ১১টার দিকে ফাতেহা পাঠ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
পরে তিনি শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে সান্ত্বনা ও সহানুভূতির কথা বলেন। আশিক, ব্যাপ্পি এবং আরিয়ান একই পরিবারের সদস্য এবং চাচাতো ভাই ছিলেন।
তারা তিনজনই উত্তরার দিয়াবাড়ির তারারটেক মসজিদ এলাকায় একসঙ্গে বড় হয়েছেন। এরপর ফখরুল কাছাকাছি নয়ারনগর এলাকায় যান এবং আরও দুই শিক্ষার্থী জুনায়েদ ও শরিয়ারের কবরেও ফাতেহা পাঠ করেন।
তিনি ওই দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন, ‘এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা, শুধু আপনাদের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য। আমরা এই দুঃখের সময়ে আপনাদের পাশে আছি।’
তিনি বলেন, পুরো জাতির মতো বিএনপিও এই গভীর শোকে শোকাহত।
আরও পড়ুন: খায়রুলের গ্রেপ্তারে মির্জা ফখরুলের শুকরিয়া, চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
ফখরুল জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করে দলীয়ভাবে গভীর সমবেদনা জানাতে এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে থাকার বার্তা পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেছেন।
দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘যখনই আমরা কোনো দুর্ঘটনায় শিশুদের মৃত্যুর কথা শুনি, সেটা আমাদের গভীরভাবে আহত করে। শিশুদের ভবিষ্যৎ— পরিবার ও জাতির ভবিষ্যৎ।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি শিশুকে হারানোর বেদনা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সান্ত্বনার ভাষা আমাদের নেই। তবে এই শোকের সময় আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
বিএনপির ঢাকা উত্তর সিটি ইউনিটের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সৈয়দুল কবির খানসহ আরও অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৫৮ দিন আগে
খায়রুলের গ্রেপ্তারে মির্জা ফখরুলের শুকরিয়া, চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দায়িত্বে থাকাকালীন এই বিচারপতি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ভবিষ্যতে যেন কেউ রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে উচ্চপদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে, সে জন্য খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘খায়রুল হক বাংলাদেশের বড় শত্রুদের একজন। তিনি দায়িত্বে থেকে দেশের বড় ক্ষতি করেছেন। আজ তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধান বিচারপতির পদে থেকে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু তিনি সেখানে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেটির মাধ্যমে তিনি একইসঙ্গে জনগণ ও রাষ্ট্রকে প্রতারিত করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনেক পার্থক্য ছিল। আমরা মনে করি, তার দেওয়া সংক্ষিপ্ত রায়টি রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিরোধী। আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, তারা দেরিতে হলেও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে রায় পরবর্তী রাজনৈতিক সংকটের জন্য খায়রুল শতভাগ দায়ী।’’
পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে সরকার সঠিক পথেই এগোচ্ছে: ফখরুল
তাকে কী ধরনের শাস্তি দেয়া উচিত—এই প্রশ্নে ফখরুল বলেন, সেটি নির্ধারণের তিনি কেউ নন।
‘আমরা চাই, এসব বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হোক এবং আইনি বিধান অনুযায়ী বিচার হোক। তবে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই পদে থেকে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার সাহস না পায়,’ বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থা জনগণের সবচেয়ে আস্থা জায়গা। কিন্তু খায়রুল হক তার রাজনৈতিক মানসিকতার কারণে সেই আস্থা ধ্বংস করেছেন, যা দেশের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে।এ দিন সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবন থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
১৫৮ দিন আগে
জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা জিয়া
জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে নিজ বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি জানান, চিকিৎসা বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী গতকাল রাত রাত ১টা ৪৮ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রায় ৩৫ মিনিট অবস্থানকালে তার কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়।
শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন হাসপাতালে প্রায় ৩৫ মিনিট অবস্থান করেন এবং সেখানে কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে রাত ২টা ৫২ মিনিটে তাকে নিজ বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, তার জন্য অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত চিকিৎসা বোর্ডের দেওয়া পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ঐক্য ধরে রেখে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আহ্বান খালেদা জিয়ার
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা বোর্ডের জরুরি ভিত্তিতে শারীরিক অবস্থা মূল্যায়নের প্রয়োজন হওয়ায় তাকে কিছু পরীক্ষা করাতে নেওয়া হয়েছিল।’
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন।
লন্ডনে চার মাসের উন্নত চিকিৎসা শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরার পর থেকে তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও রয়েছেন।
লন্ডনে অবস্থানকালে তিনি লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধায়নে বিশেষায়িত চিকিৎসা নেন।
১৫৮ দিন আগে