বিএনপি
শেরপুরে বিএনপির ৫ উপজেলা, ৪ শহর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
শেরপুরে জেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় দলটির ৫টি উপজেলা ও ৪টি শহর কমিটি মিলিয়ে মোট ৯টি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে শহরের জেলা আইনজীবী সমিতির হলরুমে জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির এক বর্ধিত সভায় কমিটি বিলুপ্তির এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে রাতেই ফেসবুকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৯টি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে জেলা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় একইসঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিএনপির উপজেলা ও শহর কমিটিগুলো গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুব একটা চর্চা হয়নি: মির্জা ফখরুল
সভাশেষে কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ বি এম মামুনুর রশিদ পলাশ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জেলার বিএনপির উপজেলা ও পৌর শহর বিএনপির নয়টি ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দ্রুত এসব ইউনিটে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। নতুন কমিটিতে দলের ত্যাগী, দায়িত্বশীল, পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারী নেতারাই স্থান পাবেন। কোনো চাঁদাবাজ, দখলবাজ, অবৈধ বালু ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে নাই—এমন কেউ স্থান পাবে না।’
সভায় সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ছাড়াও অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল, সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান কমিটির সদস্য মো. হযরত আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান তারা, শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান পিপি, ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা, প্রকৌশলী মো. ফাহিম চৌধুরী, মো. আবু রায়হান রূপন, মো. কামরুল হাসান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
গত ৫ জুন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং এ বি এম মামুনুর রশিদ পলাশকে সদস্যসচিব করে কেন্দ্র থেকে শেরপুর জেলা বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির এটিই ছিল প্রথম বর্ধিত সভা।
১৭৩ দিন আগে
বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুব একটা চর্চা হয়নি: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুব কমই চর্চা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুব কমই চর্চা হয়েছে। সম্ভবত এটি পাকিস্তানের রাজনীতির উত্তরাধিকার থেকে এসেছে... আমরা গণতন্ত্রকে অল্প সময়ের জন্যই চর্চা হতে দেখেছি। তারপর আমরা আবার এই চর্চা থেকে অনেক দূরে চলে গেছি।’
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে দ্য বাংলাদেশ ডায়লগ এবং ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত 'সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনাল ২০২৫' শীর্ষক জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ফখরুল এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যেখানে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। এবং আপনাদের (অসন্তুষ্টদের) কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। এটাই কার্যকর গণতন্ত্রের সারাংশ।’
পড়ুন: নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লববিরোধী: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেমন থাকবে, তেমনি ভিন্নমতের মানুষেরও মত প্রকাশের অধিকার থাকতে হবে—এটাই কার্যকর গণতন্ত্রের মূল সত্তা।’
তিনি বলেন, ‘এটা ভিন্নমত দমন করার বিষয় নয়; বরং আমাদের এর জন্য জায়গা তৈরি করতে হবে। কেউ যদি আমার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেও, তবুও তাদের মত প্রকাশের অধিকার রক্ষার জন্য আমাকে সবকিছু করতে হবে।’
ফখরুল বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে বাংলাদেশের জন্য আরও সুদিন আসবে। একদিন, আমরা গর্বের সঙ্গে একটি জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।’
তরুণদের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলে যে কিছুই বদলাবে না। কিন্তু আমাদের তরুণরা ইতোধ্যেই আমাদের ছাড়িয়ে গেছে। আমি এখন খুব আশাবাদী যে পরিবর্তন আসবে। বিতর্ক হবে, মতবিরোধ থাকবে— এবং আমাদের একে অপরের ভিন্নমত পোষণের অধিকার রক্ষা করতে হবে। আমি যদি কারো সঙ্গে একমত নাও হই, তবুও তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার রক্ষার জন্য আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নেব। আমরা এটাই বিশ্বাস করি।’
বিতর্কের সময় আগে ব্যবহৃত ‘সম্মানিত’ শব্দটির কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, বিতর্কের একটি বিষয়ে তার আপত্তি আছে। ‘প্রধানমন্ত্রী বা স্পিকার বলার আগে কি আমাদের সত্যিই ‘মাননীয়’ শব্দটি ব্যবহার করা উচিত? আমি বিশ্বাস করি এই ধরনের শব্দের অতিরিক্ত ব্যবহার কর্তৃত্ববাদকে প্ররোচিত করে।’’
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশেদা ইমাম এবং ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস উপস্থিত ছিলেন।
১৭৩ দিন আগে
চাঁদাবাজ, দখলদারদের বরদাশত করবে না বিএনপি: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজ বা দখলদারকে বরদাশত করা হবে না। এই দলে (বিএনপি) সমাজবিরোধী কোনো ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান নেই।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, তবে এমন ঘটনা ঘটলে দল কখনও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করে না।
তিনি বলেন, দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে লড়াই করে আসছে।
‘এই দল একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে বিশ্বাস করে, যেখানে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত দক্ষ, সৎ, মানবিক ও যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে,’ বলেন রিজভী। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখনই ক্ষমতায় ছিল, এই নীতিগুলোকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সমাজে নানা ধরনের সামাজিক অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণে ‘মব কালচারের’ প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
রিজভী বলেন, অবৈধ কালো টাকা ও গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে ‘মব কালচারের’ নামে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে।
‘অন্যদিকে, একটি সুবিধাভোগী মহল খুবই পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। মানুষ বিশ্বাস করে এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, তৎপরতা ও কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি সামাজিক অস্থিরতা গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করছে এবং নির্বাচন বিলম্বিত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ,’ বলেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
আরও পড়ুন: আমি নিজেই এখনো নির্বাচনের তারিখ জানি না: সিইসি
তিনি বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার চারপাশে যে প্রচারণা ও আলোচনা চলছে, তা শেখ হাসিনা সরকারের ‘উন্নয়নের অদ্ভুত বয়ানের’ মতোই।
বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে দল তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘দলের ভেতর থেকেই যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, অনেক নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার, অব্যাহতি, স্থগিত কিংবা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘সন্দেহজনকভাবে শিথিল ভূমিকা’ পালন করছে। তিনি বলেন, দলটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় অনুরোধ করা হলেও দুষ্কৃতকারী ও উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি করছে।
১৭৩ দিন আগে
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে চীনা রাষ্ট্রদূত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের চীন সফরের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাদের আন্তরিক আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
সাক্ষাতে মির্জা ফখরুলের পাশাপাশি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এবিএম আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে দলীয় সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে বিএনপির নয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে পাঁচ দিনের সফরে চীন গিয়েছিল।
১৭৩ দিন আগে
নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কোনো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এতে বিনিয়োগ থেমে যাবে, নারী-শিশুর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরা চরম অবনতি ঘটবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার এখন দেশে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টায় নগরীর একটি হোটেল মিলনায়তনে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি সম্মানে একটি বিশেষ স্মরণ ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমনিতেই হাসিনা পালিয়ে যায়নি। বহু মানুষের আত্মত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে জনগণ মত প্রকাশে স্বাধীন থাকবে, নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, তরুণরা কর্মসংস্থান পাবে, জনগণ চিকিৎসার সুযোগ পাবে—এমন একটি কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। আমাদের প্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ অবস্থায় আমাদের প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এখন আর কেবল কথার রাজনীতি নয়, এখন সময় কাজের। ত্যাগ ও রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছরে এই শাসকগোষ্ঠী প্রায় বিশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ৩৬ দিনের মধ্যে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। তাদের পুনর্বাসন, সন্তানদের শিক্ষার নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি নতুন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ নির্বাচন চাই—যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম. এ. মালিক ও ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ।
১৭৪ দিন আগে
আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা মির্জা ফখরুলের
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশ সঠিক পথে অগ্রসর হবে।’তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন, বিশেষ করে জুলাইয়ের রক্তাক্ত ছাত্র গণঅভ্যুত্থান যে নতুন পথ দেখিয়েছে তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সবাইকে।’
এ ছাড়া, বিএনপির প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং এসব মামলা ও দমন-পীড়নের কারণে অনেক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লববিরোধী: ফখরুল
এর আগে, সকাল ৯টা ২৫ মিনিটির দিকে বিএনপি মহাসচিবসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকার একটি ফ্লাইটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এ সময় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, সোমবার বিকালে সিলেটের পাঠানটুলা এলাকার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিলাদ মাহফিলে অংশ নেবেন মির্জা ফখরুল।
পাশাপাশি সিলেটের দরগাহ গেট এলাকার হোটেল স্টার প্যাসিফিকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সিলেটে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিবের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ অন্যান্য নেতারা।
১৭৫ দিন আগে
নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লববিরোধী: ফখরুল
যারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাচ্ছেন, নিশ্চিতভাবেই তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি কিংবা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সমর্থক না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (৬ জুলাই) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায়, তারা নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, তারা নিশ্চয়ই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তি নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে সংস্কার কমিশনের সংস্কার বিষয়ে বিএনপি কোন কোন বিষয়ে একমতে পৌঁছেছে সেটিরও একটি পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে প্রথম যে প্রস্তাব ছিল, আমরা আমাদের মতামত দিয়ে দিয়েছি, এটা বহু আগে দিয়েছি। তারপরে তো সরকার বলেছে তারা দায়িত্ব নিয়েছে তারা করবে। এখন পর্যন্ত তারা কিছু আনেনি।’
‘আমরা যেকোনো সময়ে যেকোনো ব্যাপারে আলোচনায় সব সময় ছিলাম, এখনো আছি। এই ব্যাপারে আমাদের কোনো সমস্যা নেই,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তি তারা বিএনপির সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন, যেগুলো সঠিক নয়। বিএনপির কমিটমেন্ট টু রিফর্মস, এটা কোয়েশ্চেন করবার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি হচ্ছে সেই দল যে, ২০১৬ সালে খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ তিনি সংস্কারের কথা বলেছিলেন। তারপরে বিএনপি ’২২ সালে ২৭ দফা এবং অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা করে ’২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছি।
‘এটাতে আমরা আন্তরিক বলেই কিন্তু ৩১ দফা নিয়ে সারা দেশে অসংখ্য প্রোগ্রাম করেছি, জনগণের কাছে যাওয়া হয়েছে, সুধী সমাজ, সুশীল সমাজের কাছে যাওয়া হয়েছে। আজকে একটা মহল, একটা চক্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করবার একটা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আছে, মব মোকাবিলায় সচেষ্ট সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কত কর্মসূচি, কত সমাবেশ, কত লাঠিপেটা আপনারা দেখেছেন, আপনারা কাভার করেছেন। এখন বিএনপিকে নিয়ে এই প্রশ্নটা কেন করে? এটাকে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ছাড়া আমি কী বলব?
‘বিএনপিকে মেলাইন করা, তাকে ভুলভাবে চিত্রিত করতে এটা একটা গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা চালানো মাত্র। কোনো একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি বা কয়েকটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা সমানে করে যাবেন আর সেটাতে তারা মনে করবেন জনগণ খুব সাড়া দিচ্ছে। জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। জনগণ বলতে গুটিকতক শহুরে লোক নয়, জনগণ বলতে সারা বাংলাদেশ।’
বিএনপির নীতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি প্রমাণ করেছে, এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সংস্কার আমাদের দলের প্রতিষ্ঠা জিয়াউর রহমান করেছেন। বাক স্বাধীনতা, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা, সংগঠন করবার স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র, এমন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে তিন তিনটা নির্বাচন সব কিছুই বিএনপি। সব কিছুই সংস্কারের মাধ্যমে বিএনপি করেছে।’
বিএনপির অবদান নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির পাঁয়তারা করে কোনো লাভ হবে বলে সতর্ক করেছেন ফখরুল।
সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হতে পারে না, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে কী না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা মনে করি যে, জনগণ নির্বাচন চায়, যেটা আলোচনা হয়েছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
সেই লক্ষ্যেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে চায়। আমরা কোনো বিপ্লবের মাধ্যমে বা অন্য কিছুর মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা ১৫ বছর ধরে লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি একটা মাত্র উদ্দেশ্যে যে আমরা গণতন্ত্রের ফিরে যেতে চাই।
১৭৫ দিন আগে
জামায়াতের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ রিজভীর
জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামী জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে দ্বিচারিতা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (জামায়াত) নির্বাচন পেছাতে চান কেন? বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ৫ আগস্ট। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে। এত সময় কি সংস্কার করার জন্য যথেষ্ট নয়?’
রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী।
পরোক্ষভাবে জামায়াতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে, অন্যদিকে কিছু আসনে প্রার্থীও দিচ্ছে। এটিই হলো দ্বিচারিতা।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, জামায়াত ৩৩ থেকে ৩৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে, অথচ এখন তারা নির্বাচন পেছাতে চায়। ‘একদিকে মনোনয়ন দিচ্ছে, আরেকদিকে ভোট পেছানোর দাবি করছে।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণের মনোভাব বুঝতে জামায়াতের ইতিহাসই ব্যর্থ। ১৯৭১ সালে তারা যদি জনগণের মন বুঝত, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করত না। তারা ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে যেত না। তারা সবসময় জনগণের মতামত উপেক্ষা করেছে। আসলে তাদের কাছে জনগণই কোনো বিষয় নয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রাজনীতি করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘তাই তো তারা একা নির্বাচন করলে দুই-একটার বেশি আসন পায় না।’
রিজভী বলেন, ‘এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান, আর মুসলমানরা কথা রাখে। কিন্তু তারা (জামায়াত) কোনোদিন কথা রাখে না। খালেদা জিয়াই কথা রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসী এখন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন।’
নির্বাচনের সময় পেছানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী। বলেন, ‘সমতাভিত্তিক পরিবেশ তৈরির জন্য এখনো যথেষ্ট সময় আছে। তাহলে ভোট পেছানোর দরকার কী?’
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক অপরাধ বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। নির্বাচনের দোষ কী?’
তিনি বলেন, ‘কিছু দল হয়তো নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জোরদার বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে।’
তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো দল বা ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে বাড়তি সময় দেবে না। আমরা চাই তারা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক। কারণ, রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক দায়িত্বই নির্বাচিত সরকারের।’
আওয়ামী লীগের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা একসময় অংশ নিয়েছিলেন, এখন তারা নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী।
কারবালার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘ইমাম হোসাইন অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আজকের কিছু রাজনৈতিক দল সেই ইতিহাস থেকে কিছু শিখেছে কি না, জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও তারা (জামায়াত) বলছিল পরিবেশ অনুকূলে নয়। এখন ভোট পেছানোর দাবি করছে। কেন? ১৫–১৬ বছরের আন্দোলন, এত ত্যাগ, গুম, হত্যা—সবই তো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। তাহলে নির্বাচনই এখন দোষী হয়ে গেল?’
আরও পড়ুন: জামায়াত ‘ঘোলা পানিতে’ মাছ শিকারের চেষ্টা করছে: অভিযোগ রিজভীর
১৭৫ দিন আগে
নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গণতন্ত্রবিরোধী, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থী: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা গণতান্ত্রিক শক্তি নয়, বরং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনারও বিপরীতমুখী।
রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষ চায় অবিলম্বে নির্বাচন। আমরা আগেও বলেছি, আবারও বলছি—যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তারা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক শক্তি হতে পারে না, তারা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবেরও সমর্থক নয়।’
ফখরুল বলেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এবং তারেক রহমানের মধ্যে যেসব আলোচনা হয়েছে, বিএনপি বিশ্বাস করে তার ভিত্তিতেই দেশে নির্বাচনের পথ তৈরি হবে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপিকে ঘিরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
তার ভাষ্যে, ‘কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিএনপিকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে চায়। কিন্তু জনগণ এর প্রতি সাড়া দিচ্ছে না। দেশের মানুষ বিএনপিকে জানে। তারা জানে— বিএনপি কীভাবে এদেশে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের অধিকারের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, বিএনপি একটি পরীক্ষিত উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়েই জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাই। বিপ্লব বা অন্য কোনো পন্থায় আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমাদের অবস্থান নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। আমরা ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি।’
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম ও ব্যক্তি বিএনপির সংস্কারসংক্রান্ত অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। অথচ ২০১৬ সাল থেকেই বিএনপি সংস্কার নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে।’
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’-এর মাধ্যমে প্রথম সংস্কারের কথা বলেন। এরপর আমরা ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব এবং পরবর্তীতে ৩১ দফা প্রস্তাব ঘোষণা করি।
‘সংস্কারের প্রতি আমাদের আন্তরিকতা থেকে দেশজুড়ে অসংখ্য কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণ ও নাগরিক সমাজের সামনে আমরা এসব প্রস্তাব তুলে ধরেছি।’
‘এরপরও একটি গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার।’
ফখরুল বলেন, ‘এক দশকের বেশি সময় ধরে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াইয়ের মাধ্যমে বিএনপি শুধু টিকে থাকেনি, বরং আরও শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়েছে।’
‘শত শত শহিদের রক্ত, গুম-হত্যার শিকার সহকর্মীদের ত্যাগ আর লাখ লাখ নেতা-কর্মীর সীমাহীন কষ্ট—সব মিলিয়ে বিএনপির ঐক্য আজ আরও সুদৃঢ়।’
এই ঐক্য, জনগণের ব্যাপক সমর্থন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়েই বিএনপি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদের উত্থান রুখতে সক্রিয় রয়েছি। যেমন ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক অতিরিক্ত ক্ষমতা ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করে, তেমনি নির্বাচিত সরকার ও সংসদের ক্ষমতা খর্ব করাও রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে তোলে।’
দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে রক্ত দিয়ে কেনা এই পরিবর্তনের সুযোগকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে এ সময় সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চলুন, আমরা যেন ব্যর্থ না হই। মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলনের চেতনায় একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব পালন করি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নির্বাচিত সরকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: মির্জা ফখরুল
১৭৬ দিন আগে
আ. লীগ নেতাদের দমন-পীড়নকে কারবালা ট্র্যাজেডির সঙ্গে তুলনা করলেন তারেক
আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের পরিচালিত নির্মম দমন-পীড়নকে কারবালায় ইয়াজিদ বাহিনীর করা নিষ্ঠুরতার অনুরূপ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শনিবার (৫ জুলাই) এক বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার গত ১৬ বছর ধরে ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে চরম নিপীড়ন ও অবিচারের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জোরপূর্বক গুম করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করেছে, সহিংসতা, অস্থিরতা এবং বিদেশে জনগণের অর্থ পাচার করেছে।’
তারেক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিল এবং তার যথাযথ চিকিৎসা প্রদান থেকে বঞ্চিত করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিষ্ঠুর আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিচালিত নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন ছিল ইয়াজিদ বাহিনীর বর্বরতার মতই।’
তারেক বলেন, ইমাম হোসেন (রা.) এবং তার ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের ত্যাগের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জাতিকে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ইমাম হোসেনের বাহিনীর যুদ্ধ আমাদের সর্বদা সকল প্রকার অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করবে, যাতে এই ধরণের নিষ্ঠুর অত্যাচারীরা আর কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।’
বিএনপি নেতা শহীদ হযরত ইমাম হোসেন (রা.), তার শহীদ পরিবারের সদস্য এবং সাহাবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন।
পড়ুন: জামায়াত ‘ঘোলা পানিতে’ মাছ শিকারের চেষ্টা করছে: অভিযোগ রিজভীর
তিনি বলেন, ‘এই দিনে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) কারবালার ভূমিতে অন্যায়, নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন। এটি শোক, শ্রদ্ধা ও ত্যাগের দিন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পার্থিব অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইমাম হোসেনের প্রতিবাদ এবং তার ত্যাগ বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য, সেইসঙ্গে সমগ্র মানবতার জন্য এক গৌরবময় ও কালজয়ী উদাহরণ হয়ে আছে।
তিনি বলেন, ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বেদনা ও শাহাদাত এবং ইসলামকে সমুন্নত রাখার জন্য তার আত্মত্যাগ বিশ্বজুড়ে মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার এক শক্তিশালী উৎস হিসেবে কাজ করে চলেছে। ‘একই সঙ্গে, এই ঘটনা ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার, ধার্মিকতা, ত্যাগ এবং মানবিক মর্যাদার বার্তাও প্রকাশ করে।’
তারেক বলেন, হযরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাত অন্যায়, নিপীড়ন এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আদর্শিক সংগ্রামের এক অতুলনীয় উদাহরণ।
তিনি বলেন, ‘ইমাম হুসাইনের (রা.) সহযোগীরা ক্ষমতার লালসায় অন্ধ হয়ে ন্যায়বিচার ও মানবতাকে পদদলিতকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কারবালায় ইমাম হুসাইনের (রা.) অনুসারীদের শাহাদাত বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে প্রতিটি যুগে এবং প্রতিটি দেশে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে অনুপ্রাণিত করছে।’
১৭৬ দিন আগে