বিএনপি
নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করার পর এখন পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনের স্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না করায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের এ হতাশার কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যে বিবৃতি উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে—সেটি অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর।
বিএনপিরি এই নেতা বলেন, ‘আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি, এখনো করছি না। তবে আমরা শুরু থেকেই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’
রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার(২৫ মে) তার সরকারি বাসভবন যমুনায় আলাদাভাবে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন।
পরের দিন তিনি আরও ২০টি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনুসের নেতৃত্বে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আশা তারেক রহমানের
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এই সংবাদ সম্মেলন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন,‘ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার গঠন করা, যা মানুষের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।’
‘অন্যথায়, জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে,’ বলেন, বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এর পর রমজান, বর্ষা ও এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার মতো বিষয়গুলো রয়েছে, যা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে। আমরা সম্প্রতি এটি বলছি তা নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা বলছি।’
বিএনপির নেতা অভিযোগ করেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য বিভিন্ন অজুহাত দেওয়া হচ্ছে—যেমন সংস্কার কার্যক্রম, বিচার প্রক্রিয়া ইত্যাদি। তিনি বলেন, ‘সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, তাই এটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমান্তরালভাবেই চলতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী শক্তি ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার চলবে, তবে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত।
তিনি সমালোচনা করে বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ এনইসি বৈঠকের পর যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটি অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। আমরা শুরু থেকেই উপদেষ্টা পরিষদকে তাদের দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবিকে ‘মহাপাপ’ মনে করছেন কিছু উপদেষ্টা: রিজভী
তিনি আরও বলেন, ‘পরাজিত শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের উসকানি ও বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে সরকার তার দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা বলছি, কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই পারে এসব ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে।’
তিনি বলেন, সরকারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবিলম্বে অনুষ্ঠানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিৎ- এর কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপি আশা প্রকাশ করে বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার যেন জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশ চালায়, যাতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকে এবং বিনিয়োগ, ব্যবসা ও বাণিজ্যে গতি আসে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকারের নিরপেক্ষতার অভাব এবং শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা জনমনে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন রোধে এবং সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষায় বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ জরুরি।’
মোশাররফ বলেন, ‘মানুষ রক্ত দিয়েছে ফ্যাসিবাদ হটিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে, কিন্তু সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ড জনমনে আবারও প্রশ্ন তুলেছে।’
ইশরাক হোসেনের শপথে বিলম্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের পক্ষে আদালতের রায় এলেও সরকার এখনও তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি। ‘আমরা আশা করি, সরকার আর দেরি না করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পায়নি বিএনপি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
২১৫ দিন আগে
ড. ইউনুসের নেতৃত্বে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আশা তারেক রহমানের
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জনগণ শিগগিরই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দেখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জাতীয় পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের এখনকার প্রত্যাশা হলো—জনগণ শিগগিরই সবচেয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে—যা হবে দক্ষ, যোগ্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের নেতৃত্বে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আবারও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে এবং জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ও সময় স্পষ্টভাবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি দাবি করেছে, জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে।’
‘বিএনপি এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছে, তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে পুরোপুরি সহযোগিতা করে যাচ্ছে—যাতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায়,’ যোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহির সরকার প্রতিষ্ঠায় যেকোনো অজুহাত বা অপ্রয়োজনীয় বিলম্বের সুযোগ নিয়ে পতিত, পলাতক এবং পরাজিত স্বৈরশাসক জেগে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে।’
তবে, তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে ফ্যাসিস্ট, ধ্বংসাত্মক ও অপশক্তির পুনর্বাসন রোধ করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবিকে ‘মহাপাপ’ মনে করছেন কিছু উপদেষ্টা: রিজভী
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আবারও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে এবং জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ও সময় স্পষ্টভাবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি দাবি করেছে, জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছে, তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে পুরোপুরি সহযোগিতা করে যাচ্ছে—যাতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায়।
বিএনপি নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহির সরকার প্রতিষ্ঠায় যেকোনো অজুহাত বা অপ্রয়োজনীয় বিলম্বের সুযোগ নিয়ে পতিত, পলাতক এবং পরাজিত স্বৈরশাসক জেগে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে।’
তবে, তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে ফ্যাসিস্ট, ধ্বংসাত্মক ও অপশক্তির পুনর্বাসন রোধ করা সম্ভব।’
তারেক বলেন, ‘যদিও আমরা আমাদের দলীয় মতাদর্শ ও কর্মসূচি অনুযায়ী ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত পার্থক্য দেখতে পাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণ এখন ৫ আগস্টের মতোই ঐক্যবদ্ধ। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ও জনগণের স্বার্থে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের জন্য একটি ইস্যুতে এই ঐক্য হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পায়নি বিএনপি
তারেক বলেন, ‘যদিও আমরা আমাদের দলীয় মতাদর্শ ও কর্মসূচি অনুযায়ী ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত পার্থক্য দেখতে পাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণ এখন ৫ আগস্টের মতোই ঐক্যবদ্ধ। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ও জনগণের স্বার্থে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের জন্য একটি ইস্যুতে এই ঐক্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যার ফলে বিভিন্ন পেশা এবং শ্রেণির মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন দাবিতে রাস্তায় নামছেন। ‘দুর্ভাগ্যবশত, তাদের দাবির প্রতি কেউ কান দিচ্ছে না।
‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শাসনকালে রাজনৈতিক দলগুলো নানা নির্যাতন, ষড়যন্ত্র এবং দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। এখন সব রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য হওয়া উচিত পরাজিত ফ্যাসিস্টের রাজনৈতিক পুনরুত্থান রোধ করা। এর জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন দেশের জনগণ রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান হবে, তখন কোনো সরকারই স্বৈরাচারী হতে পারে না। এজন্য জনগণের একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।’
তারেক রহমান সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন করার হঠাৎ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। উদ্যোগটি জাতীয় বাজেটের আগে নেওয়া হয়েছে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে রাজস্ব সংগ্রহ ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে—সতর্ক করেন তিনি।
২১৭ দিন আগে
নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবিকে ‘মহাপাপ’ মনে করছেন কিছু উপদেষ্টা: রিজভী
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিএনপি যে নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করেছে, সেটিকে কিছু উপদেষ্টা ‘মহাপাপ’ হিসেবে দেখছেন বলে মন্তব্য করছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নির্বাচনের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান জানানো কি মহাপাপ? কিছু উপদেষ্টার মন্তব্য থেকে মনে হচ্ছে যে, তারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে এই ধারণা উসকে দিচ্ছেন।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (২৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বলেছে। শেখ হাসিনা জনগণের এই ভোট দেওয়ার অধিকার বিলম্বিত করেছিলেন, বঞ্চিত করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পায়নি বিএনপি
‘আমাদের সব বিক্ষোভ ও আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল এই পরিস্থিতির উত্তরণ। প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা এবং একটি মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন, নির্বাচনকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত চলছে,’ যোগ করেন রিজভী।
নিজেদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। এ কারণেই রাজনৈতিক সংকট বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।
রিজভী বলেন, ‘যদি উপদেষ্টারা তাদের দায়িত্বের বাইরে কোনো গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন—তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ভূমিকা পরিবেশ রক্ষা এবং উন্নত করা, কিন্তু তিনি বরং নির্বাচনের কথা বলেন ‘
‘বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষার জন্য রিজওয়ানা কী করেছেন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি কেন? দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে তার কোনো উদ্যোগ বা কর্মসূচি আমরা দেখিনি।’
দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য তার দলের আহ্বানকে সমর্থন করে রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা হলো নিরপেক্ষ থাকা। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল গঠনে সহায়তা করা বা এর বিকাশে সহায়তা করা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয় ‘
রিজভী বলেন, ‘অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে, যদি একজন উপদেষ্টা (কুমিল্লার) এসপিকে ফোন করে বিএনপির লোকজনকে গ্রেপ্তার করার এবং দলটিকে সেখানে কোনো কার্যকলাপ পরিচালনা করতে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দেন—তাহলে কেন তার পদত্যাগের দাবি উঠবে না?’
২১৮ দিন আগে
নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পায়নি বিএনপি
নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ, ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং সংস্কার সম্পন্ন করার দাবিগুলো আবারও উত্থাপন করলেও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো আশ্বাস পায়নি বিএনপি।
শনিবার (২৪ মে) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার, বিচার (ফ্যাসিস্টদের) এবং নির্বাচন – এই তিনটি বিষয়ই বৈঠকে আলোচনায় এসেছে। আমরা বলেছি, এগুলো একে অপরের পরিপূরক নয়।’
নির্দিষ্ট সময়সীমার বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন কি না – এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি… কিন্তু তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) এ বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট বলেননি।’আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি বিএনপির
তবে তিনি জানান, ‘এ বিষয়ে পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।’
বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্ট কি না – এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় রাজনৈতিক উত্তেজনা কমাতে একটি চার সদস্যের বিএনপি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকটি সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় শুরু হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুই রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত
২১৮ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি বিএনপির
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।
শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আলোচনায় তিনটি বিষয়—সংস্কার প্রক্রিয়া, বিচারিক কার্যক্রম ও নির্বাচন—বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আর কোনো পথ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ চাই।’
বিএনপি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে আমীর খসরু বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কীভাবে ও কত দ্রুত আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারি। সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই।’আরও পড়ুন:রাজনৈতিক উত্তেজনা: ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল
তিনি জানান, দেশের মানুষ গত ১৬ বছর ধরে যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তারা এখন ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচনের সুযোগ চায়।
অন্যদিকে, ড. মঈন খান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তরই এখন একমাত্র সমাধান। ১৫ বছরের স্বৈরতন্ত্র থেকে ৫ আগস্ট মুক্তির পর জনগণ নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এই রূপান্তর থেমে গেলে গণতন্ত্রও থেমে যাবে।’
সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধানের বক্তব্য এবং রাজনৈতিক দলগুলোর লাগাতার কর্মসূচি ও চাপের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন উঠেছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
২১৮ দিন আগে
কোনো দল গোছানোর জন্য নির্বাচন পেছানো যাবে না: নজরুল ইসলাম খান
জনগণ স্থায়ী সরকার চায় উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো নির্বাচিত ও স্থায়ী সরকার নয়। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
শনিবার (২৪ মে) বিকাল ৪টায় বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, তা আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে কোনো বাধা নেই। তবে কোনো রাজনৈতিক দল যদি নিজেদের সংগঠিত করতে কিংবা জোট গঠন করতে দেরি করে—তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যাবে না।’
‘তারেক রহমান দেশের বাম, ডান সকলকে নিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন। আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর জোটবদ্ধ আন্দোলন করেছি। তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়েই আগামী দিনের রাজনীতিকে এগিয়ে নেবেন তারেক রহমান। তাই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় তরুণদের লড়াই করতে হবে,’ যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবকদল কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহসভাপতি আবু হাসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, বগুড়ার নিহত যুবদল নেতা ইমরান হোসেনের কন্যা সামিয়া ইসলাম মীম, এবং অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: আ. লীগের সঙ্গে আপস করবে না বিএনপি: নজরুল ইসলাম খান
২১৮ দিন আগে
রাজনৈতিক উত্তেজনা: ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল
দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনায়’ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের আলোচনা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার রোডম্যাপ নিয়ে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গ্রহণযোগ্য ও দ্রুত নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। আজকের আলোচনায় এটি কীভাবে এবং কত দ্রুত সম্ভব—সেই বিষয়েই কথা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় এই বৈঠকের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডার প্রয়োজন নেই।’
‘বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন হলো—আমরা কীভাবে এগোব এবং কীভাবে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্রে ফিরতে পারব।’
বিএনপি নেতা বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ‘এটাই কেন্দ্রীয় বিষয় এবং আমি নিশ্চিত আজকের আলোচনায় তা আসবে।’
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ইচ্ছা নিয়ে প্রকাশিত খবরে দেশ সংকটে পড়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, বিএনপি এই পরিস্থিতিকে সংকট হিসেবে দেখছে না।আরও পড়ুন: আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি
তিনি বলেন, দেশের এখন সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ—যা একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে। এটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আমরা বর্তমানে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি, তা কাটিয়ে উঠতে পারি।
গত ১৬ বছরে জনগণের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে খসরু বলেন, তারা এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিএনপি কি আগের বৈঠকে অসন্তোষের পর এবার সন্তুষ্ট হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘এটা আমাদের সন্তুষ্টির বিষয় নয়। আমরা রাজনীতি করি জনগণের সন্তুষ্টির জন্য। আমরা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাই। জনগণ চায় তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত করতে—এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি ইঙ্গিত দেন, নির্বাচন ডিসেম্বরের আগেই হতে পারে। আমরা কেন ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব?
অন্য এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, দেশের চলমান সংকট ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান হলো গণতান্ত্রিক রূপান্তর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৫ বছর ধরে স্বৈরতন্ত্রের অধীনে ছিল। তাই এখন একমাত্র সমাধান গণতন্ত্রে রূপান্তর। দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।’
গত ৯ মাসের ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে জাতির উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে ড. মঈন বলেন, এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার গান গাইতে শুরু করেছে—৫ আগস্টের রূপান্তরমূলক ঘটনার পর থেকে।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছিল প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন—১৫ বছরের জুলুম ও স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তির দিন। এটি ছিল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সূচনা... এই রূপান্তরই বর্তমান অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এই সত্য উপলব্ধি করতে হবে, বুঝতে হবে ও গ্রহণ করতে হবে।’
২১৮ দিন আগে
আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি
দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নানা গুঞ্জনের মধ্যে আজ (শনিবার) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য শুক্রবার (২৩ মে) দিবাগত রাতে ইউএনবিকে জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের অংশ হিসেবেই বিএনপি এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক
তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করুক বিএনপি তা চায় না। কারণ তা নতুন করে দেশে রাজনৈতিক সংকট ডেকে আনবে বলে মনে করেন তিনি।
তবে এই বৈঠকে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিজেদের পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন এবং দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে জানান ওই নেতা।
এর আগে, গতকাল (শুক্রবার) বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা সোমবার (১৯ মে) থেকেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সময় চেয়ে আসছি, কিন্তু এখনও তা নির্ধারণ করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ আমরা চাইনি; আমরা শুধু কয়েকজন বিতর্কিত উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছি।
আরও পড়ুন: জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে জামায়ত
‘ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছি। তিনি রোডম্যাপ না দিয়ে পদত্যাগ করতে চাইলে সেটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, কিন্তু আমরা সেটি চাইনি।’
এর আগের দিন (বৃহস্পতিবার) বিএনপি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করা হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারে তারা।
সেদিন এক সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষতা ও সুনামের স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও নবগঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে যেসব উপদেষ্টা ‘বিতর্কিত’, তাদের অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলন এবং বুধবার সেনাপ্রধানের একটি অফিসার সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে সরকারের কার্যক্রম ও নির্বাচনের বিষয়ে করা মন্তব্যে হতাশ হয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন।
২১৯ দিন আগে
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জুলাই-আগস্টে শহীদ-আহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র: রিজভী
জুলাই-আগস্টে শহীদদের রক্তের উপর থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শহীদদের তালিকা না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আজকে যারা জুলাই আন্দোলনের সুফল পাচ্ছেন, যারা উপদেষ্টাসহ বড় বড় পদ পাচ্ছেন, এমনকি রাজনৈতিক দল গড়ে তুলছেন—তাদের শহীদদের পরিবারের আরও বেশি খোঁজ-খবর নেওয়া উচিত।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘যারা এতো এতো কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন! শহীদদের রক্তের উপর থাকা এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শহীদদের তালিকা নেই কেন? যাদের রক্তের উপর আজকের সরকার এবং আমরা রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছি।’
বিএনপি ক্ষমতায় এলে জুলাই-আগস্টে শহীদ এবং আহতদের সকলের পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার মেহেরপারা ইউনিয়নের চৌয়া এলাকার চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরমানের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আজকে আমরা যতটুকু স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছি, এর জন্য যারা নিজের জীবন দিয়েছেন—তাদের মধ্যে অন্যতম শহীদ বীর আরমান মোল্লা। যে লোকটি জীবন দান করেছেন, দেশের মুক্ত বাতাস কেনার জন্য, সে পরিবারের সন্তানরা বাড়িতে না থেকে এতিমখানায় থাকতে হবে, এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক।
তিনি বলেন, আমরা আরমানের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এখানে এসেছি। এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের পর গণমানুষের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি এই পরিবারের দায়িত্ব নেন এবং ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ ও আমাদেরকে তিনি তার বাড়িতে পাঠিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আবুল কাশেম, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মেহের পাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে সম্মেলন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
গত বছরের ২১ জুলাই নরসিংদীর শিলমান্দী ইউনিয়নের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আরমান।
বর্তমানে আরমান মোল্লার স্ত্রী সালমা বেগম তিনটি নাবালক সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তিনি বড় মেয়ে মাহি (১০) ও ছেলে রাফিকে (৭) দিয়েছেন একটি এতিমখানায় আর ছোট মেয়ে আফরামনিকে (৩) নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ইউএনবি/জেএ
২১৯ দিন আগে
মেহেরপুরে সম্মেলন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
মেহেরপুরে ইউনিয়ন কাউন্সিল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়ট পর্যন্ত সদর উপজেলার আমঝুপি বাজারে সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটে।
এসময় সদস্য সচিবের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহতদের মধ্যে সদস্য সচিব কামরুল হাসানের অনুসারী ৬জন ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের তিন সমর্থক আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপি নেতা মুকুল ও তৌহিদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ দুইটি পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আমঝুপি গ্রামের গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।
আরও পড়ুন: অস্থিরতা এড়াতে ড. ইউনূসকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান বিএনপির
তিনি বলেন, এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নিতে মেহেরপুর শহর থেকে রওনা হই। আমঝুপি বাজারের সড়ক দিয়ে গন্ধরাজপুরে যেতে চাইলে সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা আমাদের গাড়িবহরে বাধা দেয়।’
এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে একটি টিম ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ভিন্ন পথে পাঠায়।
পরে কামরুল হাসানের গাড়িবহরটি আমঝুপি সামিউল টাওয়ারের সামনের গলি দিয়ে গন্ধরাজপুরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা চালায়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল তাদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ওই গাড়িবহরটি গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছায়। আহত ৬ জনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
এরপর হামলাকালীদের থামাতে সাইফুল ইসলাম পক্ষের ৩ নেতাকর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এসময় আটকদের ছাড়িয়ে নিতে সাইফুল ইসমাম পক্ষের নেতাকর্মীরা মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক আমঝুপি বাজারে অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই তিন নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।
অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটিকে মেনে না নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে ।
পাল্টা অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, বেআইনিভাবে তারা আমঝুপি ইউনিয়নের সম্মেলন করতে চাইলে আমরা বাধা দিয়েছি। তবে কামরুল হাসানের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
২১৯ দিন আগে