বিএনপি
দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি, অন্তর্বর্তী সরকারকে অসহযোগিতার হুঁশিয়ারি
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছে বিএনপি। কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণা না করা হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারে তারা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিএনপি।
নিরপেক্ষতা ও সুনামের স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও নবগঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে যেসব উপদেষ্টা ‘বিতর্কিত’—তাদের অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা—যাতে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই, আমরা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
মোশাররফ বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত— জনগণের সর্বোচ্চ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা, যা একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। অন্যথায়, জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তিদের উপদেষ্টার ভূমিকায় রাখা সরকারের ভাবমূর্তি ও জনসাধারণের আস্থা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, ‘সবাই জানেন ও বোঝেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত। উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় পরিচয়কে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের বুধবারের মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য, তাকেও তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। আমরা অতীতে বহুবার ফ্যাসিবাদের সহযোগী কিছু উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তুলেছি।’
দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. আব্দুল মঈন খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
২২০ দিন আগে
কাকরাইলের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করলেন ইশরাক
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। আদালরে রায় পক্ষে থাকলেও তার সমর্থকরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনস্থলে ট্রাকের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে তিনি এই ঘোষণা দেন। আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও জানান এই নেতা।
ইশরাক বলেন, হাইকোর্টের রায় শোনার পর আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই আপাতত আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত রাখব।
তবে সরকারের কর্মকাণ্ড আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশনা আসবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিল বুধবার(২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে।
আরও পড়ুন: রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
আজ তারা রাজধানীর কাকরাইল মোড়, মৎস্য ভবন মোড় ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করেন। ফলে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
আদালতের রায়ের মাধ্যমে ইশরাকের দাবি আদায় হলেও তার সমর্থকরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানান।
চলমান আন্দোলনের ফলে নগরবাসীর দুর্ভোগের জন্য ক্ষমাও চান ইশরাক হোসেন। বলেন, ‘এটি আমাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল না। বর্তমান সরকার আমাদের অধিকারবঞ্চিত করতে গিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: ইশরাকের শপথ নিয়ে আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: মির্জা ফখরুল
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থাইল্যান্ড থেকে ফোনে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটি হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটি বিজয় হয়েছে।’
ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, মন্ত্রণালয় আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন।’
অবস্থঅন কর্মসূচির স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শেষে জুলাই আন্দোলনে আহত কয়েকজনকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুন সংলগ্ন কাকরাইল মোড়ের ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে ওঠানো হয়। সেখানে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায় ও এলাকার নেতারা বক্তব্য দেন। বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে ইশরাক কাকরাইল এলাকা ত্যাগ করেন। এরপর নেতা-কর্মীরাও চলে যেতে শুরু করেন। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের অন্যতম ব্যস্ত ওই সড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়।
২২০ দিন আগে
ইশরাকের শপথ নিয়ে আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণে হাইকোর্ট যে পথ খুলে দিয়েছে, তাকে ‘জনগণের বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) থাইল্যান্ড থেকে ফোনে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটি হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটি বিজয় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে- যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি জোর করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিল।’
ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আশা করব, মন্ত্রণালয় আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন।’
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট খারিজ: ইশরাক হোসেনের শপথে বাধা নেই
এ সময় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি মনে করি যেহেতু আদালতে এ বিষয়ে রায় হয়েছে, জনগণের বিজয় হয়েছে, তাই আর সড়ক অবরোধের প্রয়োজন নেই।’
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি সরকার এখন সংবেদনশীল আচরণ করবে এবং ইশরাকের শপথ নিশ্চিত করবে। আমাদের কর্মীদের উচিত এখন জনদুর্ভোগ এড়াতে সড়ক থেকে সরে আসা।
এর আগে, আজ (বৃহস্পতিবার) ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ ঠেকাতে করা একটি রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এতে মেয়র হিসেবে তার শপথ গ্রহণে আর কোনো বাধা রইল না।
নির্বাচনি রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান
রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট, এই সংকট দূর করবার একটিমাত্র পথ তা হচ্ছে, অতি দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এখানে অন্য কথা বলে লাভ নেই।’
আরও পড়ুন: রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটাও সুপারিশ করবে যারা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে আছে, তারা অতি দ্রুত যেগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সে গুলো তারা ঘোষণা করবেন। যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য করে সনদ তৈরি করবেন। সুতরাং এটি নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করা, কিংবা টানাহেচড়া করা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলবে।’
‘সেই কারণে জনগণের প্রত্যাশা যে, অতি দ্রুত একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলমান যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো, যেগুলোতে ঐক্যমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন। আর যেসব সংস্কার প্রস্তাবে ঐক্যমত্য হবে না, সেগুলো সনদের ভেতরে নিয়ে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে রাখবেন।’
গত ১৪ মে চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য বিএনপি মহাসচিব ব্যাংকক যান। পরদিন ব্যাংকক রুটনিন আই হসপিটালে তার বাম চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।
২২০ দিন আগে
রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা দূর হলেও বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর মৎস্যভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে আছেন তার সমর্থকরা। এদিকে আরও জোরালো আন্দোলন করতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্টের রায়ের পর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক বলেন, ‘আন্দোলনকারী ভাইদের বলবো— এইসব মূলা দিয়ে গাধা বস করা যায়; আমাদের না। দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগের খবর না আসা পর্যন্ত চলেছে, লড়াই চলবে। রাস্তা তো ছাড়বেন না—আরও বিস্তৃত করতে হবে।’
ইশরাকের পক্ষে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরও কাকরাইল মসজিদ এলাকায় অবস্থান করে প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন বিক্ষোভকারীরা। রায়ের খবর পেয়ে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এ সময় স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন, ‘এই মুহূর্তে খবর এলো, ইশরাক মেয়র হলো’, ‘এই মাত্র খবর এলো, জনগণের বিজয় হলো’।
তারা বলছেন, হাইকোর্টের রায় তাদের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু, তাদের নতুন আরেকটি দাবি আছে। সেটি হলো—সরকারের দুজন উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজকে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। তারা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ইশরাককে শপথ পড়ানোর পাশাপাশি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান করছেন তারা। যতক্ষণ না ওই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এর আগে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অবস্থান কর্মসূচিতে এসে ঘোষণা দেন, মেয়র পদে তাকে দায়িত্ব বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট খারিজ: ইশরাক হোসেনের শপথে বাধা নেই
পাশাপাশি তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেন। পরে সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনস্থলে অবস্থান নেন তিনি।
এদিকে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা কাটায় ‘জনগণের বিজয়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটা হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।’
‘এটাতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটা বিজয় হয়েছে। আমরা জানি যে যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি জোর করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিল,’ বলেন ফখরুল।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদ।
অন্যদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে ওইদিনই আন্দোলন শুরু করেন তার সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়ে নগর ভবন। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
২২১ দিন আগে
তারেককে নিয়ে খলিলুরের মন্তব্যের নিন্দা বিএনপির, পদত্যাগ দাবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমানের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানকে নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশের মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফ্যাসিবাদের প্রতিভূ হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্রের কফিন পেরিয়ে কথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটাতেন, উপদেষ্টার এই মন্তব্য যেন তারই পুনরাবৃত্তি।’
‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, রাষ্ট্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। ড. খলিলুরকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেশের জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ড. খলিলুর তার নিজের পক্ষে ওঠা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পলাতক স্বৈরাচারের মতো তারেক রহমানের বিপক্ষে প্রোপাগান্ডার পথ বেছে নিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করেছেন। জনগণ এসব মেনে নেবেন না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের প্রশ্ন, ‘ফ্যাসিবাদের দেড় দশক ড. খলিলুর কোথায় ছিলেন? কীভাবে ছিলেন? কোন দেশে ছিলেন? বিদেশে তার স্ট্যাটাস কী ছিল? ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে তার ভূমিকা কী ছিল? অবশ্যই এ সব প্রশ্নের জবাব জনগণকে জানাতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদেশি নাগরিকত্ব থাকার দাবি প্রত্যাখ্যান খলিলুরের
তারেক রহমানকে নিয়ে ড. খালিলুর রহমানের বক্তব্য গণতন্ত্রের স্থায়ী সুরক্ষার জন্য ক্ষতিকর বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এখনও যেন লোকসমাজে উজ্জ্বলতর তারেক রহমানের ভাবমর্যাদাকে বিনষ্ট করার জন্য প্রতিশোধের চোরা স্রোতে আঘাত হানার চেষ্টা চলছে—নানা মহল থেকে, নানা দিক থেকে।’
এর আগে, গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কেবল আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয়— আপনি বিদেশি নাগরিক; তাহলে কালকে তারেক রহমান সাহেবকেও সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে!’
তবে এ বিষয়ে রিজভীর বক্তব্য, “ড. খলিলুর রহমান (তারেক রহমানের) যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গাওয়ার মতো।”
২২১ দিন আগে
জনসাধারণের হৃদয়ের স্পন্দন বুঝুন, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ত্বরান্বিত করুন: মঈন খান
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ত্বরান্বিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, দেশের জনগণ দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে পারে। একসময় যাদের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে পারে।
বিশ্ব গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। আমরা আশা করি সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।’
দেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার চেষ্টা না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন।
তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ আবেগপ্রবণ ও খুব দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। কারণ তারা কঠিন পরিস্থিতিতে বাস করে। জনগণের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ও মনস্তত্ত্ব এমন যে, তারা আজ যাদের খুব প্রশংসা করে, তারা আগামীকাল তাদের পায়ের তলায় পিষে ফেলতে দ্বিধা করবে না। যারা এই সত্য বুঝতে ব্যর্থ হবে, তারা ইতিহাসের পাতায় পরাজিত হয়ে থাকবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, তার দলও মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার চায়, তবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, সংস্কার অব্যাহত থাকবে। কিন্তু সংস্কার এবং গণতন্ত্র পারস্পরিকভাবে একচেটিয়া বা ধারাবাহিক নয়—তারা একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে। এটি মানব সভ্যতার ইতিহাস। আমি আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সত্যটি বুঝতে পারবে।’
ড. মঈন বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো দেশের কল্যাণের জন্য ঐক্য। ‘আমাদের জাতির কল্যাণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমি বাকশালের পক্ষে কথা বলছি না—ঐক্যের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে।
বিএনপি নেতা জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হবে না। ‘বিএনপি অতীতে স্বৈরাচারী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে—এমন উদাহরণ কেউ দিতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: ভোট থেকে জনগণের মনোযোগ সরাতে ‘নাটক’ মঞ্চস্থ করা হচ্ছে: বিএনপির ফারুক
তিনি বলেন, যারা দলের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য, বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছে—তাদের যথাযথ জবাব বিএনপিকে দিতে হবে।
ড. মঈন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। বলেন, তারা গর্বের এক নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে। ‘কিন্তু আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, বাংলাদেশে এই ধরনের সম্মান বজায় রাখা কঠিন।’
বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি মাত্র অপকর্ম জনগণের চোখে শত শত ভালো কাজকে ম্লান করে দিতে পারে।
বিএনপি নেতা বলেন, জাতির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ‘যদি তারা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা যোগ্যতা ছাড়াই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে—তাহলে জাতির ধ্বংস অনিবার্য।’
২২১ দিন আগে
ভোট থেকে জনগণের মনোযোগ সরাতে ‘নাটক’ মঞ্চস্থ করা হচ্ছে: বিএনপির ফারুক
জনগণের ভোটাধিকারের দাবি ও তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক
তিনি বলেন, ‘আপনারা (সরকার) ইশরাকের মতো একজন ব্যক্তিকে শপথ পাঠ করাননি ও আবদুল হামিদের মতো একজন কুখ্যাত ব্যক্তিকে বিদেশে যেতে দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণকে ভোট দেওয়ার ও তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ন্যায্য পথ থেকে বিচ্যুত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আপনারা বিভিন্ন ধরণের নাটক মঞ্চস্থ করছেন।’
বুধবার (২১ মে) জাতীয় নির্বাচনকে ব্যাহত করার ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদে বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, জাতি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন, নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর গ্রেপ্তার ও সম্প্রতি অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের নাটক দেখেছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের জন্য আর কতক্ষণ অপেক্ষা, প্রশ্ন বিএনপির নজরুলের
তিনি বলেন, ‘দেশে আসলে কী ঘটছে? অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই জামিন দেওয়া হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে এভাবে তাদের গ্রেপ্তার করার অর্থ কী? আর জামিন দেওয়ার অর্থ কী?’
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভের পিছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক দাবিগুলোকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, এনসিপি ইসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। সংস্কারের আগে এর নিরপেক্ষতা ও গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। আর যখন কমিশন যখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে—তখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে তারা।
তিনি আরও বলেন যে, এখনও পর্যন্ত কেউ নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচনা করেনি। ‘তাহলে, আপনারা (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনের সামনে কেন প্রতিবাদ করছেন? কার পরামর্শে এবং কোন প্রেত্মার সাহায্যে আপনারা এটা করছেন?... তাহলে আপনারা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মান করেন না, তার কথা শোনেন না।’
ফারুক বলেন, আদালত ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করার পরও সরকার এখনও তার শপথ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আদালতের রায়ের পরেও কেন ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না? যদি আপনি কারো কথা শুনে তার শপথ বন্ধ করেন—তাহলে এটি খুবই খারাপ কাজ। আমার মনে হয় সরকারের ভেতরে একটি বড় ষড়যন্ত্র চলছে। এনএসআই, ডিজিএফআই ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে, কিন্তু তারা কোথাও আটকে যাচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘আপনি যদি এটি করেন—তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা আপনাকে আর বিভ্রান্ত করার সাহস পাবে না। আপনার ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা আপনার সঙ্গে আছি।’
প্রধান উপদেষ্টাকে শেখ হাসিনার শাসনবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় বসার ও একটি স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানান ফারুক। বলেন, ‘অন্যথায়, বাংলাদেশে যদি কোনো খারাপ পরিস্থিতি দেখা দেয়—তাহলে আমরা দায়ী থাকব না—আপনার সরকার এর জন্য দায়ী থাকবে।’
২২১ দিন আগে
গণতন্ত্রের জন্য আর কতক্ষণ অপেক্ষা, প্রশ্ন বিএনপির নজরুলের
জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রচেষ্টায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের গর্বিত জনগণ—যারা ভাষা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছি। আমরা এখনও গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষা করছি এবং এর জন্য আমাদের আওয়াজ তুলছি, স্লোগান দিচ্ছি এবং সমাবেশ করছি। আর কতক্ষণ? আমাদের আর কতবার এই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে?’
মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল বলেন, একটি মহল বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন পূর্বশর্ত উত্থাপন করে ও বিভিন্ন দাবি তুলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে। তারা বলছে এটা আগে করতে হবে এবং সেটা আগে করতে হবে...। আগে বা পরে করার কোনো প্রশ্নই আসে না। যা করা দরকার তা করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল বলেন, তারা শুনছেন যে অনেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি করছেন। ‘এটা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। আমরা সবাই জানি যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে এক বছরেরও বেশি সময় লাগবে। তাই, এই ধরনের দাবি করা মানে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের উপর ‘কালো ছায়া,’ নির্বাচনকে ব্যাহতের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
যারা সংস্কারকে নির্বাচনের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছেন, তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার একটি প্রচেষ্টা।
নজরুল বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনকে বিরোধী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার এই প্রচেষ্টা আরেকটি ভুল, এমনকি একটি অপরাধও। গণতন্ত্র নিজেই একটি সংস্কার।’
তিনি বলেন, রাজতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্র থেকে সংস্কার ও বিপ্লবের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উদ্ভব হয়েছে। ‘বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র বিভিন্নভাবে কাজ করে... তাই, সংস্কার ও গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী নয় বরং পরিপূরক। সেকারণেই আমরা বলি- ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, সংস্কার করতে হবে, নির্বাচন করতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর সবকিছুই করতে হবে।’
নজরুল আরও বলেন, একটি মহল প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে যে বিএনপি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু আমাদের চেয়ে কি কেউ বেশি সংস্কার চায়?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।
২২২ দিন আগে
সরকার ইশরাককে মেয়র হতে বাধা দিচ্ছে: রিজভী
আদালতের রায় সত্ত্বেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে বল প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আদালতের রায়ের পরেও, ইশরাককে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এটি প্রমাণ করে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার কর্তৃত্বের অপব্যবহার করছে। ড. শাহাদাত যদি চট্টগ্রামে মেয়র হতে পারেন, তাহলে ইশরাকের ক্ষেত্রে সমস্যা কী?’
জুলাই আন্দোলনে আহত খিলক্ষেতের বিএনপি কর্মী রাকিবুল হাসানকে মঙ্গলবার (২০ মে) দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি নেতা এই মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়াঁর অপরিণত আচরণের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘ অল্প বয়সে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হঠাৎ করে গ্রহণের কারণে তার বক্তব্যে পরিপক্কতা এবং ভারসাম্যের অভাব স্পষ্ট।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পেছনের প্রকৃত অপরাধীদের এখনও বিচারের আওতায় আনা হয়নি, অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনমূলক পদক্ষেপের চেয়ে বেশি প্রতিকূল পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের উপর ‘কালো ছায়া,’ নির্বাচনকে ব্যাহতের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
সাম্প্রতিক বিক্ষোভে পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আবাসনের দাবিতে যমুনায় মিছিল করেন, তখন তাদের অসম্মান করা হয় এবং পুলিশকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। এটি শেখ হাসিনার শাসনামলে অতীতের নির্যাতনের প্রতিধ্বনি।’
বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক শাখার কর্মী রকিবুল হাসান গত বছরের ১৮ জুলাই ঢাকার ইসিবি চত্বরে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সময় আহত হন।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা তার উপর হামলা চালায় বলে জানা গেছে।
বিএনপিপন্থী প্ল্যাটফর্ম ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ (আমরা বিএনপি পরিবার) -এর একটি প্রতিনিধিদল রকিবুলের সঙ্গে দেখা করেন এবং তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। সংগঠনটির আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমান।
২২২ দিন আগে
গণতন্ত্রের উপর ‘কালো ছায়া,’ নির্বাচনকে ব্যাহতের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের উপর ‘নতুন কালো ছায়া’র আভাস দিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় নির্বাচনকে ব্যাহত করার ও জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের বিষয়েও সতর্ক করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে বিএনপির যৌথ সভায় থাইল্যান্ড থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রকৃত গণতন্ত্র এবং সত্যিকারের ফ্যাসিবাদমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন, সেই আশার উপর একটি নতুন ছায়া পড়েছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার: সালাহউদ্দিন আহমদ
সম্প্রতি থাইল্যান্ডে তার চোখের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার এবং জনগণের ভোটদান এবং অন্যান্য অধিকার হরণের একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি সরকারের মধ্যে কিছু অনুপ্রবেশকারীকে দেশকে বিভ্রান্ত করার এবং গণতান্ত্রিক পথ থেকে বিচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও করেন। বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, বিভাজনের রাজনীতি আবারও শুরু হয়েছে।’
আরও পড়ুন: আ. লীগের সঙ্গে আপস করবে না বিএনপি: নজরুল ইসলাম খান
বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির প্রতিটি নেতা ও কর্মীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে এবং তাদের সচেতনভাবে কাজ করতে হবে এবং যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
ফখরুল বলেন, এখন বিএনপির প্রধান দায়িত্ব হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ পুনর্গঠন এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের কাছে আমি অনুরোধ করছি, তারা এই বিষয়গুলো খুব সচেতনভাবে মনে রাখবেন...। বিএনপির নেতা ও কর্মীদেরই ভূমিকা পালন করতে হবে—যাতে কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করতে না পারে, কেউ যেন আর স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ দিয়ে গণতন্ত্রকে দমন করতে না পারে।’
২২২ দিন আগে