আইনশৃঙ্খলা
চট্টগ্রামে জুলাই হত্যাকাণ্ড: ২৩১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল
জুলাই বিপ্লবের এক বছরের মাথায় চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত একটি হত্যা মামলায় ২৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে পুলিশ।
গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই দিন আগে গুলিবর্ষণে এক দোকান কর্মচারী নিহত হয়। চট্টগ্রামে জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের প্রথম কোনো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিল পুলিশ।
অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ১২৮ জনকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরীর চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) আদালতের প্রসিকিশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রসিকিউশন শাখা থেকে অভিযোগপত্রটি চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়। আদালত আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।
পড়ুন: চট্টগ্রাম আদালতের ১,৯১১ মামলার নথি গায়েব
সিএমপির চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ জানান, তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিচারের আবেদন করা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা আদালত গ্রহণ করবেন।
আসামিদের মধ্যে আরও আছেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, পুলক খাস্তগীর, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন এবং নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের ২৩১ নেতা কর্মি রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শহিদুল ইসলাম শহিদ। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ওই বছরের ১৫ আগস্ট ভুক্তভোগীর ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে এক বছরের মাথায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো আদালতে।
১৪৮ দিন আগে
মুরাদনগরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) মুরাদনগর থানায় সংবাদকর্মী মো. শাহে ইমরান এই মামলাটি করেছেন। মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বাদী মো. শাহে ইমরান কোতোয়ালি থানার পাঁচথুবী এলাকার বাসিন্দা। তিনি দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি।
আসামিরা হলেন— মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মজিদ মিয়ার ছেলে শুকুর আলী (৩৫), খামার গ্রাম গ্রামের তাজুল মেম্বারের ছেলে আশিকুল ইসলাম সিদ্দিকী (২১), সিদ্ধেশ্বরী গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে নাহিদুল ইসলাম নাঈম (২৪) ও গুঞ্জর গ্রামের সামাদ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (২৫)।
শুক্রবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। ঘটনার পরপরই আসামিরা এলাকা থেকে পালিয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমরা।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তার বাবার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমবেশের আয়োজন করেন তার সমর্থকরা। সমাবেশের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের সাথে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় সংবাদ কর্মীরা হামলার ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে একদল সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলার ঘটনায় ৭ জন সাংবাদিক আহত হন। হামলার সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মুঠোফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেন অভিযুক্তরা।
মো. শাহে ইমরান বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আমরা হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের মারধরের পাশাপাশি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
১৪৯ দিন আগে
সিলেট সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
সিলেটে সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় চোরাইপণ্য আটক করেছে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিজিবি সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়ন জেলার গোয়াইনঘাটের সংগ্রাম, প্রতাপপুর, সোনালীচেলা, বাংলাবাজার এবং নোয়াকোট বিওপি'র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে এসব ভারতীয় চোরাইপণ্য আটক করে।
জব্দ মালামালের মধ্যে রয়েছে— ভারতীয় স্মার্ট ফোন ডিসপ্লে, থ্রি পিস, গরুর মাংস, চিনি, টমেটো, মদ, বাংলাদেশ থেকে পাচারকালে শিং মাছ এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী নৌকা। সব মিলিয়ে জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৫৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বলে জানায় বিজিবি।
এ বিষয়ে সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, সদর দপ্তরের নির্দেশনায় গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চোরাই মালামাল আটক করা হয়। বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
আটক সব চোরাচালানী পণ্যের বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
১৪৯ দিন আগে
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আপিলের পরবর্তী শুনানি ১৩ আগস্ট
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের করা আপিলের ওপর বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি শেষ হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৩ আগস্ট দিন ঠিক করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির এই দিন ঠিক করেন।
আদালতে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অন্যদিকে আসামি পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান। সে রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে গত ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করার অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। এরপর আপিল দায়ের করলে গত ১৭ জুলাই প্রথম দিনের মতো এই আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।
তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১’র বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন। আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।এ ছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামিকে খালাস দেন।
১৫০ দিন আগে
স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট মহাচুরির বন্দোবস্ত ছিল: প্রেস সচিব
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ‘স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ আইনকে মহাচুরির বন্দোবস্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে একটি আইন ছিল, স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর চেয়ে বাজে আইন আর আসেনি। এটা ছিল মহাচুরির একটা বন্দোবস্ত। এই আইনের আড়ালে লাখ কোটি টাকা চুরি হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘ব্যাপারটা এমন ছিল— আমি আর আমার দুলাভাই বসে ঠিক করব কে কোথায় কাজ পাবে। কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া নেই, আইনের ন্যূনতম অনুসরণ নেই। সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ১০ দিনের মাথায় আমরা ওই আইন বাতিল করেছি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কাছে ২১ পাতার একটি কার্যবিবরণী দিয়েছে। আপনারা গত এক বছরে পুলিশকে লেথাল ওয়েপনস ব্যবহার করতে দেখেননি। এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘জুডিশিয়ারিতে যুগান্তকারী কিছু কাজ হয়েছে। জজ নিয়োগ, ফাইন্যান্স, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক— এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে গত এক বছরে এই সরকার কাজ করেনি।’
তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো স্থিতিশীলতা। ভয়ংকর এক দুর্যোগ থেকে দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনা খুবই কঠিন কাজ। সরকার তা করতে পেরেছে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘এক-দু’টি বিচ্ছিন্ন হত্যাকাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পরিসংখ্যানই বলবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল। পুলিশের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে এবং তা আরও বাড়বে।’
প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘গত ১২ মাসে সরকার অনেক শ্রম দিয়েছে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে। আমরা সফল হয়েছি।’
আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে চাঁদাবাজি ও সহিংসতা নিয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহেই বেশ কিছু হাই-প্রোফাইল চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি আওয়ামী লীগের অপশাসন থেকে সবাই শিক্ষা নেবেন, সাংবাদিকরাও। ভবিষ্যতে আর যেন কোনো মনস্টার না তৈরি হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
১৫০ দিন আগে
দুদকের ৬ মামলায় শেখ হাসিনা, জয় ও পুতুলের বিচার শুরু
দুদকের করা পৃথক ছয় মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে এসব মামলা করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় এবং বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম আরও তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।
এর মধ্য দিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
মামলায় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এ বিষয়ে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ৬ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আসামিরা আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ২০ জুলাই রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে দুদকের করা ছয় মামলা বিচারের জন্য পৃথক দুটি আদালতে বদলি করা হয়।
পড়ুন: হাসিনার প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলার বিচার প্রক্রিয়া বদলির নির্দেশ
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এবং ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এ তিনটি করে এই ছয় মামলা পাঠানো হয়।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ছয় মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলায় শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।
সম্প্রতি সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
১৫১ দিন আগে
গত ছয় মাসে ঢাকায় ১২১ হত্যাকাণ্ড, ছিনতাই-ডাকাতি ২৮১: ডিএমপি
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রাজধানীর ৫০টি থানায় মোট ১২১টি হত্যাকাণ্ড, ২৪৮টি ছিনতাই, ৩৩টি ডাকাতি ও ১, হাজার ৬৮টি চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে—নিজ হাতে আইন তুলে নেবেন না। অপরাধীর তথ্য পেলে পুলিশকে জানান। আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপি নিরলসভাবে কাজ করছে।’
ডিএমপি জানায়, সম্প্রতি পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে তালেবুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবসময় সতর্ক। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি।’
মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। হ্যাঁ, অপরাধ হচ্ছে—তবে আমরা সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’
পুলিশ ফাঁড়ি ও থানায় জামায়াত বা এনসিপি নেতাদের মধ্যরাতের ‘শালিস’ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তালেবুর রহমান বলেন, ‘থানায় শালিসের সুযোগ নেই। অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত চাইলে আপসে মীমাংসা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, তবে থানার ভেতরে দরকষাকষির সুযোগ নেই। কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ছাড়া পুলিশের উপপরিদর্শকদের প্রতি পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
১৫১ দিন আগে
৭ দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল
দুর্নীতি ও সাজানো রায় প্রদানসংক্রান্ত মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক মো. সানাউল্লাহ এ আদেশ দেন।
এর আগে খায়রুল হকের ১০ দিন রিমান্ড আবেদন করেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক খালেক মিয়া।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি ২০১২ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বিষয়ে বেআইনিভাবে রায় লেখেন। ওই রায়ে পরবর্তীতে বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সই করেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলার বিচার প্রক্রিয়া বদলির নির্দেশ
গত বছরের ২৭ আগস্ট খায়রুল হকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়। একজন আইনজীবী মামলাটি করেছিলেন।
এরপর গত ২৩ জুলাই খায়রুল হককে ধানমন্ডির বাসা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
১৫২ দিন আগে
রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ভাঙচুর, লুটপাট এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ জুলাই) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দুপাড়ায় অজ্ঞাতনামা লোকজন ভাঙচুর, লুটপাট এবং পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনায় শ্রী রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় যৌথ অভিযানে এরই মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধর্ম অবমাননা মামলা: সিলেটে হিন্দু মহাজোটের নেতা রাকেশ রায়ের ৭ বছরের কারাদণ্ড
১৫২ দিন আগে
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরেক মামলায় আসামি সাড়ে ৫ হাজার
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ হাজার ৪৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক মো. মতিয়ার মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।
ওসি সাজেদুর রহমান জানান, মামলায় ৪৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় পাঁচ হাজারজনকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, গোপালগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএম মাসুদ রানা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদ মাহামুদ বাপ্পি, সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতীশ রায়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ আলী আশরাফ, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নাঈম খান (জিমি), ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে সমাবেশ করার জন্য স্থান নির্ধারণ করে এনসিপি। সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখেন। আসামিরা রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে। সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি কর্মচারীদের আক্রমণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল নিক্ষেপ করে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের মারধর ও গুরুতর জখম করে।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যার ঘটনায় মোট ১৩টি মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়েছে।
এই মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশতাধিক।
১৫২ দিন আগে