প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
গাজায় ইসরাইলের তাণ্ডব ঠেকাতে বিশ্বের ব্যর্থতায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
বিশ্ববাসী গাজায় হত্যা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ড দেখছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৪ মার্চ) সফররত ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেব্রিল আলরজব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার নিন্দা জানান তিনি।
তিনি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
আরও পড়ুন: সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিসরের মাধ্যমে দুইবার ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমি যখনই সুযোগ পাই তখনই ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে আমার কণ্ঠ তুলে ধরি।’
১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নীরব থাকার অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'এটা এক ধরনের ভণ্ডামি।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের স্বার্থে এটা করা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে তিনি পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন ও আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ফাতেহ মুভমেন্টের নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরিল আলরজব।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, 'অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।’
আরও পড়ুন: ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চান প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘গাজায় খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং জনগণ অনাহারে রয়েছে। সেখানে খাদ্য সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়াই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।
তিনি বলেন, আরব দেশগুলোতে ৪০ কোটি মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয়।
তিনি বলেন, ‘তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হবে। আরব বিশ্বের ক্ষমতা ও সম্পদ রয়েছে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য তাদের মধ্যে কেবল ঐক্য প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।
অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে ইসরাইলের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে সমর্থন জানানোর জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রবিবার সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন তিনি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সব সমরাস্ত্র সম্বলিত প্রদর্শনীটি ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল হেলিকপ্টার থেকে প্যারা জাম্পিংয়ে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিগত ১৫ বছরে বর্তমান সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কথা তুলে ধরতে স্থাপিত বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
দেশ ও জাতি গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অবদানের কথা তুলে ধরা হয় ৩ বাহিনীর সদস্যদের এই স্টলগুলোতে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম তাকে স্বাগত জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সচিব, বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর জিএসপি সহায়তা পেতে আয়ারল্যান্ডের সহায়তা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে চান প্রধানমন্ত্রী
ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভুটান থেকে সহজে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের সহায়তা চেয়েছেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে এবং আগামী ২৫ মার্চ ভুটানের রাজার আসন্ন সফরে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হবে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ভুটান থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে তার দেশের অ্যান্টি-ডাম্পিং পরিমাপকারীদের অপসারণের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ভারত সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কসপকে আধুনিকায়ন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, দেশে অব্যাহত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জন করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এবং ১৯৯৬ সালের আগে পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী কে হতো তা একটি 'নির্দিষ্ট মহল' নির্ধারণ করত।
শেখ হাসিনা বলেন, এ কারণেই জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু ১৯৯৬ সালে সেই একই মহল গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার কাছে মাথা নত করে। ওই বছর আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো দুষ্টচক্র ভেঙে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল।’
আরও পড়ুন: বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, গত বছর ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় বাংলাদেশে মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর বাস্তবায়নের জন্য আরও দুটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের লেনদেনে রুপি-টাকার ব্যবহার, ডিজিটাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক এবং বঙ্গবন্ধু বায়োপিকসহ দু'দেশের কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগ রয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ভারত দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের (সিইপিএ) আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে উত্তরণের পর সিইপিএ সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, এলওসিকে প্রকল্পভিত্তিক করে তুলতে একটি নতুন কাঠামো প্রস্তুত করতে নতুন চিন্তাভাবনা ও আলোচনা চলছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারত বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের মধ্যে একটি উচ্চ বিদ্যুৎ গ্রিড লাইন স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যাতে এই চার দেশের যেকোনো অংশে সহজে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা যায়।
আরও পড়ুন: দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য সৈয়দপুর থেকে নাটোর পর্যন্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের উদ্যোগ রয়েছে।
ভার্মা বলেন, বিশ্বখ্যাত প্রতিরক্ষা শিল্পগুলো ভারতে তাদের কারখানাগুলো স্থানান্তরিত করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি প্রতিরক্ষা কারখানা স্থাপনে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বাংলাদেশ।
তিনি শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি তার দেশের জাতীয় নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
ভারতীয় হাইকমিশনার উল্লেখ করেন, তারা রংপুরে একটি অফিস স্থাপনে আগ্রহী।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিবেচনা করবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর জিএসপি সহায়তা পেতে আয়ারল্যান্ডের সহায়তা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর জিএসপি সহায়তা পেতে আয়ারল্যান্ডের সহায়তা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সময়ে ২০২৯ সালের পরিবর্তে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর বাজারে অগ্রাধিকারমূলক ব্যবসায়িক সুবিধা- জিএসপি পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আয়ারল্যান্ডের সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার গণভবনে আয়ারল্যান্ডের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী সাইমন কোভেনির নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের আয়ারল্যান্ড প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সমর্থন চান।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার এবং ইইউ সদস্য দেশটি সব সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পাশে থাকে।
আরও পড়ুন: দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
ইইউ প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে আয়ারল্যান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়ারল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন, যাতে বাংলাদেশের জন্য ব্যবসায়িক সুবিধা বিশেষ করে জেনারালাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ায় ইইউ।
আইরিশ ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিন-চার বিলিয়ন ভোক্তার জন্য বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় বড় বিপণন হাব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের জন্য আইসিটি, ওষুধ ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের মতো বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
শ্রমিক ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শ্রমনীতি নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানতে ইইউভুক্ত দেশগুলো সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতেই তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের প্রথম অনারারি কনস্যুলেট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে তিনি এখানে এসেছেন উল্লেখ করে কোভেনি বলেন, এই কার্যালয় দু'দেশের জনগণের মধ্যে ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়তা করবে।
কোভেনি বলেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে কারিগরি এবং খাদ্য শিল্পে (কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প) সহায়তা দিতে চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আয়ারল্যান্ড জাতিসংঘ ও ইইউ ফোরামে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করছে উল্লেখ করে সফররত মন্ত্রী আশ্বাস দেন, ইউরোপীয় দেশটি বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী নেবে।
আরও পড়ুন: শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে অভিভাবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
তবে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা জোরদার করা, তাদের আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী ও আরও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন।
জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এরপরও সেখানে মাঝে মাঝে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে। কারণ তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী ঘর নির্মাণ করা হয়েছে এমন নজির পৃথিবীতে নেই। তারপরও ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ।
তারা সেখানে যেতে চাইলে আমরা ভাসানচরে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভাসানচরে আবাসন প্রকল্পটি কিছু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বেসরকারি সংস্থা ও দেশের বিরোধিতার কারণে সফল হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ জামিল খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আয়ারল্যান্ড সরকারের সেন্ট প্যাট্রিক দিবসের অংশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশে সাত দিনের সরকারি সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে রবিবার ঢাকায় আসেন দেশটির মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনের জন্য নয়, বরং দেশকে আবার অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল চায়।
সোমবার (১৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে কেউ অন্ধকারের যুগে ঠেলে দিতে পারবে না।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ, যার জন্ম হয়েছিল সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আর আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করেই এই পরিবর্তন আনব।
আরও পড়ুন: বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য বাতিল করা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা হবে বলে বিএনপির দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন,‘কেন তারা এটা চায়? তাদের প্রত্যাশা কী? ২০০৮ সালের নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। ওই নির্বাচনে তারা পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন। আর আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৩টি আসন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে এটা মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকে ততদিন গরিবরা খাবার পায়, আশ্রয় পায়।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কেউ বাড়ি, ঠিকানা ও জমি ছাড়া থাকবে না।
এ লক্ষ্য পূরণে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আর এই জিনিসটাই তারা সহ্য করতে পারছে না। সাধারণ ও দরিদ্র মানুষ ভালো জীবন যাপন করছে এটা তারা পছন্দ করে না।’
আরও পড়ুন: জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী রবিবার
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন নতুন দুই ডেপুটি গভর্নরের
এরপর প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন এবং বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার জন্য দোয়া করবেন।
জাতীয় শিশু দিবসের একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকেসহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মুছে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপুল রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটপণ্যের বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পাটের নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে, বিভিন্ন দেশে কী ধরনের পণ্যের চাহিদা রয়েছে তা মূল্যায়ন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জাতীয় পাট দিবস-২০২৪ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৬টি পাটকল ও ৩ দিনব্যাপী বহুমুখী পাট পণ্য মেলা-২০২৪ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতি বছর ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালিত হয়। এ বছর ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ, স্মার্ট পাট শিল্পের বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানে ইফতার পার্টি না করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যদি পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন যতটা সম্ভব বাড়াতে পারে, তাহলে দেশে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি বিপুল রপ্তানি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
পাটকে সোনালি আঁশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সোনালি আঁশ বাংলাদেশের জন্য সোনালি দিন বয়ে আনতে পারে। তাই আমাদের এর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের রপ্তানি ঝুড়িতে বৈচিত্র্য আনতে চাই, আমি মনে করি পাট ও পাটজাত পণ্য এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ইজারা নেওয়া পাটকলগুলো নতুন পণ্য উৎপাদন, নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
পাটকে পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে পাটজাত পণ্যের বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত পাট কৃষিপণ্য বা রপ্তানিমুখী পণ্য হিসেবে সুযোগ-সুবিধা পায় না।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কৃষিপণ্য ও রপ্তানি পণ্য হিসেবে পাটের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিত করব।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাট খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং পাটসংশ্লিষ্ট ৯টি সমিতির মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি গোলাম দস্তগীর গাজী এবং বাংলাদেশ পাটকল সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সূচনা বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট সচিব আব্দুর রউফ।
বিজেএমসির ইজারা নেওয়া নতুন ৬টি পাটকল হলো- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কেএফডি জুট মিলস লিমিটেড, নরসিংদীর ঘোড়াশালে বাংলাদেশ জুট মিলস লিমিটেড, সিরাজগঞ্জের রায়পুরে জাতীয় জুট মিলস লিমিটেড, যশোরের রাজঘাটে যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড এবং খুলনার শাহর খালিশপুরের দৌলতপুর জুট মিলস লিমিটেড।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
রমজানে ইফতার পার্টি না করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান: প্রধানমন্ত্রী
রমজানে সাধ্যমতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্বকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ একটা আবেদন জানিয়েছেন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে ইফতার পার্টি না করার জন্য একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা আগ্রহী বা যাদের সাধ্য আছে তারা যেন সাধ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। ইফতার পার্টির যে টাকা সেটি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
এছাড়াও তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য দুটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করেছেন--- একটি হলো কৃষিভিত্তিক সমবায় গড়ে তোলা এবং দ্বিতীয়টি হলো কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য দেশের আটটি বিভাগে আধুনিক সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কৃষিভিত্তিক সমবায় গড়ে তুলতে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগকে নির্দেশ দেন।
আধুনিক সংরক্ষণাগার নির্মাণ কিছু পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অফ সিজনে বাজারে পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আধুনিক সংরক্ষণাগারে বিভিন্ন কৃষি পণ্যের জন্য আলাদা চেম্বার থাকা উচিৎ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার মানসিকতাকে কবর দিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় আরও সময় দিতে দেশের চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমরা একটি সেক্টরে পিছিয়ে আছি। আর সেটি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা। চিকিৎসকরা প্র্যাকটিস করে অর্থ উপার্জনে নিয়োজিত থাকেন এবং তারা গবেষণার কাজে আগ্রহী না।’
'বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ', 'জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপ' এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের বিশেষ গবেষণার অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার(১১ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
শেখ হাসিনা শ্রোতাদের মধ্যে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বিষয়ে জানতে চান।
তিনি বলেন, ‘এটি ঠিক যে, এখানে চিকিৎসকরাও আছেন, আমি সরাসরি তাদের জিজ্ঞাসা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী এখন থেকেই গবেষণা কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দেশের মানুষকে সুস্থ, সবল ও মেধাবী হতে হবে। তাদের মেধা বিকশিত করার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য গবেষণা অপরিহার্য।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণায় যারা সম্পৃক্ত হবেন তাদের সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে।
তিনি বলেন, 'আমি আবারও অনুরোধ করবো সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণা কাজে আরও বেশি সময় দিন।’
তিনি বলেন, গবেষণা কাজকে উৎসাহিত করতে যা যা করা দরকার সরকার তাই করবে।
প্রধানমন্ত্রী কৃষি খাতে গবেষণার ফলাফলের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করে। আমাদের বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গবেষণার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো ধরনের গবেষণায় সব ধরনের বাধা দূর করতে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গবেষণার জন্য বিনিয়োগের অর্থ দেশের গণমানুষের পকেট থেকে আসছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভার সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের এই অর্থ অবশ্যই জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। এটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে।’
দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি নির্মাণের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের মাটি খুবই নরম। আমরা প্রতিটি দ্বীপে মাটি পরীক্ষা করেছি, কিন্তু সেখানে এ ধরনের প্লান্ট নির্মাণ করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, বর্তমান বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে সরকার রূপপুরে দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে।
তিনি বলেন, 'আমি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীকে প্রথমটি শেষ করার পরপরই দ্বিতীয়টি শুরু করতে বলেছি এবং এখন থেকেই আমাদের তার প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.আলী হোসাইন এতে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার নতুন প্রযুক্তি ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে (বিসিজি) একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ২টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের মাধ্যমে এভিয়েশন উইং গঠনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছি, যা কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসবে গড়ে তুলবে।’
আজ রবিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিসিজি সদর দপ্তরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য ৯টি প্রতিস্থাপন জাহাজ নির্মাণের জন্য একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রভিত্তিক পেশা ও নৌপথে নিয়োজিত জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য কোস্ট গার্ড কর্তৃক গভীর সমুদ্রে টহলের জন্য আরও ৪টি ওপিভি, ২টি মেরিটাইম ভার্সন হেলিকপ্টার সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, মেরিটাইম সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম, হোভারক্রাফট ও দ্রুতগতির বোট।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এসব জাহাজ সংযোজন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে এই বাহিনী একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও সক্ষমতা অর্জন করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, সমুদ্রে ‘নীল অর্থনীতি’ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বাহিনীর আধুনিকায়নের লক্ষ্যে রূপকল্প ২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বর্তমান জনবল ১৫ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এ বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’
আরও পড়ুন: শিশুদের দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস শেখান: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে অন্তত ৪০ জন বিসিজি কর্মকর্তা, নাবিক ও বেসামরিককে সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ ১০টি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক, ১০টি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক, ১০টি রাষ্ট্রপতি কোস্ট গার্ড পদক এবং ১০টি রাষ্ট্রপতি কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক প্রদান করেন।
এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট কোস্ট গার্ড।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিসিজির মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে।
কোস্ট গার্ড ভিস্যাটনেট সিস্টেমের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
আরও পড়ুন: জনগণের কাছে যান ও তাদের জন্য কাজ করুন: সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী