প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বাজার যেমন বাড়াতে হবে তেমনি পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্যও আনতে হবে।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একটি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে নিকারাগুয়ার নেতাদের অভিনন্দন
তিনি আরও বলেন, উৎপাদিত পণ্যে গুনগত মান যেন নিশ্চিত থাকে সেদিকেও ব্যবসায়ীদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন জানান, সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ প্রতিনিধি দলটি ব্যবসা, বাণিজ্য, রপ্তানি ও সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
আরও পড়ুন: ১৯৭৫ সালের পর ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে: শেখ হাসিনা
এসময় তারা বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে সৃষ্ট কিছু সমস্যাও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তা মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং যথাসম্ভব সমাধানের আশ্বাস দেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, প্রাক্তন সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম ও সিদ্দিকুর রহমানসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় হাঙ্গেরি ও কিরগিজস্তানের অভিনন্দন
গণতন্ত্রের স্বার্থেই জাতীয় নির্বাচন আ. লীগের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত ছিল: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি যদি গত মাসে(৭ জানুয়ারি) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার দলের সদস্যদের নির্বাচনে অংশ নিতে না দিতেন, তাহলে দেশের গণতন্ত্র হরণ করা হতো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে শুধু নির্বাচনই কলঙ্কিত হতো না, দেশের গণতন্ত্রও ছিনতাই হয়ে যেত।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম, তা ভুলে গেলে চলবে না এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। প্রতি বছর বাজেট প্রণয়নের সময় আমরা নির্বাচনি ইশতেহার অনুসরণ করি।’
আরও পড়ুন: টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো উচিত: প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তার দল আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে দলের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকাকালীন সাধারণ মানুষের জন্য কতটুকু কাজ করেছেন, কারা করতে পেরেছেন বা পারেননি তাও খতিয়ে দেখা হবে। এর মাধ্যমে আমরা দেখব জনগণ কাকে গ্রহণ করে।
আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেকোনো ধরনের সংঘাতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো ধরনের সংঘাত চাই না। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যেই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: আইএমও'র প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছি: সংস্থাটির প্রধান
আইএমও'র প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছি: সংস্থাটির প্রধান
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে আইএমও মহাসচিব আর্সেনিও ডমিনগুয়েজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, ‘আইএমওতে বাংলাদেশ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে দেশ (বাংলাদেশ) আমাদের মিলিত লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান অব্যাহত রাখবে।’
আইএমও মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আইএমও'র এই প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন: আইএমও'র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
তিনি বলেন, শিপিং নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়বদ্ধ জাতিসংঘের সংস্থা হিসেবে মহাসাগরের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ, সুরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে সুষ্ঠু শিপিং খাতে উন্নীত করতে এবং একটি টেকসই প্রবৃদ্ধি দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশন করতে সক্ষম নির্ভরযোগ্য বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের লক্ষ্যে সদস্য দেশগুলোর সমর্থন করার জন্য ব্যাপকভাবে জড়িত আইএমও।
আর্সেনিও ডমিনগুয়েজ উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সক্রিয় পদক্ষেপ, বিশেষ করে জাহাজের নিরাপদ ও পরিবেশগত পুনর্ব্যবহারের জন্য হংকং আন্তর্জাতিক কনভেনশনের চুক্তিবদ্ধ দেশ হওয়ার সাম্প্রতিক উদ্যোগ, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও পরিবেশগত নেতৃত্বের প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতির উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রশংসনীয় পদক্ষেপটি কেবল কনভেনশনটি কার্যকর করার সুবিধার্থেই নয়, আমাদের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কার্যক্রমের প্রভাবশালী ফলাফলগুলোকেও তুলে ধরে।’
মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের কর্মকাণ্ড অন্যান্য দেশের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে, যা তাদেরকে আরও টেকসই সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ তৈরির লক্ষ্যে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় যোগ দিতে উৎসাহিত করে।
আরও পড়ুন: ‘বিজয়ের মাসে আইএমওর নির্বাহী পরিষদে জয়লাভ বড় অর্জন’
আইএমও কাউন্সিলের জন্য ১ ডিসেম্বর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বাংলাদেশ
টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো উচিত: প্রধানমন্ত্রী
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে বিশ্বে সঠিক নীতি ও প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিজ্ঞান সমাবেশে নবম আন্তর্জাতিক নারী ও কন্যা দিবসের আয়োজনে এক ভিডিও বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ন্যায্য, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারী ও মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন। নারীরা যাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার বেছে নেয় সেজন্য আমাদের অবশ্যই সঠিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।’
বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের নেতৃত্বে আসা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশে আমাদের নারী বিজ্ঞানীদের কাজের স্বীকৃতি ও প্রণোদনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সারাদেশে হাজার হাজার নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন করছে।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি দেখে আমি আনন্দিত। তরুণীদের আইটি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও প্রতিবন্ধী তরুণদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তনের সুযোগ করে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ করছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সব উচ্চ বিদ্যালয়ের স্নাতকদের জন্য বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে শিক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছি।’
সরকার প্রধান বলেন, অতীতে উচ্চশিক্ষায় বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সন্তোষজনক ছিল না।
তিনি বলেন, সমন্বিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৪০ শতাংশ নারী, যেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের হার ৩০ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনী অনুদানগুলোতে নারীরা অগ্রাধিকার পান তা আমরা নিশ্চিত করি।‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর ভিশন অনুধাবনের জন্য আমাদের তরুণ মেয়েদের প্রস্তুত হতে হবে।'
আরও পড়ুন: নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের শিক্ষার প্রতি সবসময় নিবেদিত থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সারা বিশ্বে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের শাখার সব স্তরে বছরের পর বছর ধরে লিঙ্গ বৈষম্য বিরাজ করছে।
উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণে নারীরা অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখালেও এখনও এই ক্ষেত্রগুলোতে তাদের প্রতিনিধিত্ব পর্যাপ্ত নয়।
বলা হয়ে থাকে, লিঙ্গ সমতা সবসময় জাতিসংঘের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লিঙ্গ সমতা এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন শুধু বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নেই নয়, টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা-এর সমস্ত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
২০১১ সালের ১৪ মার্চে তাদের ৫৫তম অধিবেশনে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারীদের প্রবেশাধিকার এবং অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন গ্রহণ করে নারীর অবস্থাবিষয়ক কমিশন। এছাড়াও এই ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থান ও উপযুক্ত কাজের জায়গায় সমান সুযোগের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন বিষয়ে সাধারণ পরিষদে একটি রেজুলেশন গৃহীত হয়। সেখানে সব বয়সের নারী ও মেয়েদের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে পূর্ণ ও সমান প্রবেশাধিকার এবং অংশগ্রহণ জেন্ডার সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের জন্য অপরিহার্যতার বিষয়ে সবাই সম্মত হয়।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
১৯৭৫ সালের পর ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত মাসে(৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর দেশে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এটি।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বর্জন করা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি ১৯৭৫ সালের পর অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনের মধ্যে এবারের নির্বাচনটি সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।’
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাসভবন গণভবনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
তিনি বলেন, একজন সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে প্রতিষ্ঠিত একটি দল (বিএনপি) এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে চেয়েছিল বলেই নির্বাচন বানচাল করার অনেক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হয়েছিল।
'তবে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছে,’ বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য সামনের যাত্রা এত সহজ হবে না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হবে। এই বাংলাদেশকে ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক দূর এগিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী।
আরও পড়ুন: এবার দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
দ্রব্যমূল্য নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ কিছুটা অসুবিধায় পড়ছে।
তিনি বলেন,‘আমরা সবাই যদি পতিত জমিতে চাষ করি তাহলে খাদ্যের অভাব হবে না। বরং আমাদের উদ্বৃত্ত থাকতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে হবে এবং সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা দেবে।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তাদের কর্মের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনেরও আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিয়মিত আন্তঃস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আন্তঃস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমনকি আন্তঃউপজেলা ও জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে।’
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫২তম জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির যৌথ উদ্যোগে ৭ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
শেখ হাসিনা বলেন, বছরব্যাপী নানা টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হলে তরুণরা শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যা তাদের সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করবে এবং তাদের মনে সমাজ ও দেশের প্রতি ভালবাসা জাগিয়ে তুলবে।
তিনি বলেন, তারা তাদের পরিবারের জন্যও সম্মান ও মর্যাদা বয়ে আনতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় খেলাগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করতে এবং সেগুলোর ওপর আরও গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি খেলাধুলা মানুষের মধ্যে একতা, বন্ধুত্বের পরিবেশ, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ও মানসিক শক্তি তৈরিতে সহায়তা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিয়েছে।
তিনি সব ধরনের খেলাধুলার জন্য মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের টুর্নামেন্ট চালু করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর আবেদনে সম্মত হন।
আরও পড়ুন: এবার দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের খেলাধুলাকে আরও উন্নত করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় ছেলেমেয়েরা যাতে সব ধরনের খেলাধুলায় ভালো করতে পারে সেজন্য তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রশিক্ষক তৈরি করা জরুরি। সে লক্ষ্যে আমরা আটটি বিভাগে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করব এবং ছেলেমেয়েদের খেলাধুলায় আরও দক্ষ করে তুলব।’
তিনি বলেন, সরকার বছরব্যাপী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে।
এ সময় রাজশাহীতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে ডিজিটাল বই প্রকাশের উদ্যোগ নিন: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও গবেষণায় ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্রহ প্রকাশ
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বায়োমেডিক্যাল গবেষণায় যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে এই আগ্রহ প্রকাশ করে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলপার্ট মেডিকেল স্কুলের ডিন ড. মুকেশ জৈনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বায়োমেডিক্যাল গবেষণায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিশেষ উদ্যোগ ও কার্যক্রম বিষয়ে জানান ড. কামাল চৌধুরী।
ড. কামাল চোধুরীর সম্মানে আয়োজিত এই সভায় অংশ নেন ডিন অধ্যাপক মুকেশ জৈন, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ গবেষণার পরিচালক ড. রুহুল আবিদ, গ্লোবাল হেলথের প্রধান ড. অ্যাডাম লেভিন, ড. সুসান কুভিন, ট্রান্সলেশনাল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. শ্যারন রাউন্ডস ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ভারত রামরত্নম।
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে এবং কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ ও সফলতা অর্জনের ভূয়সি প্রশংসা করেন ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ জাতিসংঘে প্রশংসিত হওয়ায় ব্রাউন বিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল কর্তৃক গত সেপ্টেম্বরে তাকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়ার স্মৃতিচারণ করেন জৈন ও ড. আবিদ।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ছাত্র-শিক্ষক-গবেষক বিনিময় ও যৌথ গবেষণায় প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ প্রকাশের কথাও তুলে ধরেন তারা।
আরও পড়ুন: বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে ডিজিটাল বই প্রকাশের উদ্যোগ নিন: প্রধানমন্ত্রী
তারা আরও জানান, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় কাজ করছে। ইতোমধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তন, ইলেক্ট্রনিক হেলথ রেকর্ড পদ্ধতির মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উপজেলা ও জেলা হাসপাতাল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের মেডিকেল ডাটা বিনিময় করছে। এছাড়াও শিশুদের ডায়রিয়াজনিত চিকিৎসা গবেষণার কাজে তারা সহায়তা করেছে। ভবিষ্যতে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ঢাকায় ব্রাউন-বাংলাদেশ যৌথ সেমিনার আয়োজনের আগ্রহের কথাও জানান তারা।
আলোচনায় ড. কামাল চৌধুরী ব্রাউন-বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ ও এডুকেশন ইনিশিয়েটিভের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ব্রাউন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসা গবেষণা খাত বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজগুলোর মানোন্নয়ন এবং হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং গবেষণা কার্যক্রমে আলপার্ট মেডিকেল স্কুলের বিশেষ সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: এবার দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
এবার দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান মেয়াদে তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হবে অতি দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের বলেছেন, তার সরকার তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যমান সম্পর্ককে উচ্চতর পর্যায়ে নিতে সম্মত বাংলাদেশ-সৌদি আরব
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে কায়েস বলেন, 'তারা (তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ) উন্নয়নে অন্তর্ভুক্ত হলে পুরো দেশ উন্নত হবে এবং জনগণ এর সুফল পাবে।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আগে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪২ শতাংশের বেশি।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নারীরা প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করছে।
স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে নারী ও শিশুরা চিকিৎসা পাচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে তার সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
দুস্থ নারীদের বিশেষ করে বিধবা এবং স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ হওয়া নারীদের জন্য তার সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকায় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও যোগাযোগ নিশ্চিত করতেও সরকার কাজ করছে।
বৈঠকের শুরুতে বতসোয়ানা, কম্বোডিয়া, গাম্বিয়া, হাঙ্গেরি, জ্যামাইকা, মেসিডোনিয়া, মঙ্গোলিয়া, লুক্সেমবার্গ, স্লোভাক রিপাবলিক, স্লোভেনিয়া, পেরু ও ভেনিজুয়েলার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা টানা চতুর্থবারের মতো এবং সামগ্রিকভাবে পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
দূতরা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখে তারা অভিভূত ও অনুপ্রাণিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে ডিজিটাল বই প্রকাশের উদ্যোগ নিন: প্রধানমন্ত্রী
বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে ডিজিটাল বই প্রকাশের উদ্যোগ নিন: প্রধানমন্ত্রী
বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়নে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বই প্রকাশনা এবং অনুবাদের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে চাই- তাহলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমি প্রকাশকদের অনুরোধ করব, শুধু মুদ্রিত বই নয়, ডিজিটাল বইও প্রকাশ করুন।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও সংলগ্ন এলাকায় দেশের সর্ববৃহৎ বার্ষিক বইমেলার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি।
প্রকাশকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল প্রকাশক হলে বিদেশের সব মানুষের কাছে তাদের বই পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, 'অন্য ভাষাভাষীর মানুষও বইগুলো পড়তে পারবেন।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসা গবেষণা বাড়াতে বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলা একাডেমিকে অনলাইন পাঠকদের জন্য প্রকাশিত বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ নিয়ে একটি ওয়েব পোর্টাল খোলার নির্দেশ দেন।
ছাপানো বইয়ের পাশাপাশি অডিও ভার্সন বই পাঠাগারে সহজলভ্য করা অপরিহার্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী অনুবাদ সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘একসময় অনেকেই বিদেশি সাহিত্য অনুবাদ না করার দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অন্য ভাষার সাহিত্য অনুবাদ না হলে আমরা কীভাবে অন্য জাতি, দেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানব?’
শেখ হাসিনা বলেন, একই সঙ্গে বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ বাংলা সাহিত্য যেমন অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করতে পারবে, তেমনি বাংলা সাহিত্য পড়ার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের বইগুলো অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করতে পারি তাহলে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের সর্বত্র আরও দ্রুত তুলে ধরতে পারব। সুতরাং আমাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যমান সম্পর্ককে উচ্চতর পর্যায়ে নিতে সম্মত বাংলাদেশ-সৌদি আরব
সরকারের ভিশন-২০৪১ এর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা, সরকার, অর্থনীতি ও সমাজকে স্মার্ট করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে স্মার্ট হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একটি স্মার্ট সমাজ গড়ে তুলতে চাই, তাহলে আমাদের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সবকিছুকে সমৃদ্ধ করতে হবে।’
এখন বইমেলা জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে এই বইমেলাকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বক্তব্য, কর্ম এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক দরবারে নিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীতে বইপ্রেমী ও প্রকাশকদের বার্ষিক অনুষ্ঠান মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন করছে বাংলা একাডেমি।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত 'কালেক্টেড ওয়ার্কস অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: খণ্ড-২' ও 'প্রাণের মেলায় শেখ হাসিনা' শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রতি কর্মদিবসে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল ৮টায় মেলাপ্রেমীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশ করতে পারবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ (বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩) বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কারপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে পুরস্কারের অর্থের চেক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
কবিতায় শামীম আজাদ, শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক হিসেবে যৌথভাবে ঔপন্যাসিক নূরউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বানী, প্রবন্ধ/গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদ কর্মে সালেহা চৌধুরী এবং নাটকে অসামান্য কাজের জন্য মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক একুশে পদক পেয়েছেন।
শিশুসাহিত্যে তপঙ্কর চক্রবর্তী, পরিবেশ বা বিজ্ঞান ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পক্ষীবিদ ইনাম আল হক এবং লোকসাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তপন বাগচী ও সুমন কুমার এ পুরস্কার পেয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক লেখালেখির জন্য আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর জীবনীগ্রন্থের জন্য সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান এবং আত্মজীবনী বিভাগে কাজের জন্য ইসহাক খান এ পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বক্তব্য রাখেন।
বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলায় ৩৭টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে (একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান শাখায় ৩৬টি)।
এ বছর মেট্রোরেল স্টেশন চালু হওয়ায় মেলা থেকে বের হওয়ার পথটি কালীমন্দির গেটের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন এলাকায় আটটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ থাকবে।
খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে অবস্থিত এবং এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে বইমেলায় আসা পাঠকদের কোনো বিড়ম্বনা না হয়। মেলায় অংশগ্রহণকারীদের প্রার্থনা এলাকা, বিশ্রামাগার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও থাকবে।
প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশু মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী "শিশু প্রহর" গত বছরের মতো এবারও মন্দির এলাকাসংলগ্ন পূর্ব পাশে রয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার, এরপর অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লিটল ম্যাগাজিন প্রাঙ্গণটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানে প্রায় ১৭০টি লিটলম্যাগ স্টল রয়েছে।
বাংলা একাডেমিতে মেলার নির্ধারিত ভেন্যু ছাড়াও ২০১৩ সালে প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার স্থান বাড়ানো হয়।
অনুষ্ঠানস্থল ও এর আশপাশে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য নিরাপত্তা প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তিন শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পুরো মেলা এলাকা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিজুড়ে বইমেলার আয়োজন করা হয়।
১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনানুষ্ঠানিকভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হয় এবং এরপর ১৯৭৮ সালে একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি বছর মেলা আয়োজনের দায়িত্ব গ্রহণ করে।