তবে, বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রকাশ করা ২০২০ সালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোরের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানায়, সিপিআই ২০২০ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২৬ যা আগের দুই বছরেও একই ছিল।
টিআই ১৮০ দেশ নিয়ে এ সূচক তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: অনিয়ম-দুর্নীতিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্প
তালিকায় সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম অবস্থানে রয়েছে যা সিপিআই ২০১৯-এর তুলনায় ২ ধাপ পিছিয়েছে এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ১৪৬তম যা গত বছরের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে।
এ বছর একই স্কোর পেয়ে বাংলাদেশের সাথে তালিকায় নিম্নক্রম অনুযায়ী ১২তম অবস্থানে সম্মিলিতভাবে আরও রয়েছে উজবেকিস্তান ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র।
আরও পড়ুন: করোনার টিকা নিয়েও সরকার দুর্নীতি ছাড়তে পারেনি: মির্জা ফখরুল
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ আগের বছরের মতো এবারও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ রয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে ১৯ স্কোর নিয়ে প্রথমে আছে আফগানিস্তান।
টিআইবি জানায়, সিপিআই ২০২০ অনুযায়ী বৈশ্বিক গড় স্কোর ১০০-এর মধ্যে পাওয়া গেছে ৪৩। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশের স্কোর ২৬ হাওয়ায় দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনও উদ্বেগজনক বলে প্রতীয়মান হয়।
দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতার কারণে ‘বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত বা বাংলাদেশের অধিবাসীরা সবাই দুর্নীতি করে’ এ ধরনের ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়। যদিও দুর্নীতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য দূরীকরণ, সর্বোপরি টেসকই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে কঠিনতম অন্তরায়, তথাপি দেশের আপামর জনগণ দুর্নীতিগ্রস্ত নয়। তারা দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী মাত্র। ক্ষমতাবানদের দুর্নীতি ও তা প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণে দেশ বা জনগণকে কোনোভাবেই দুর্নীতিগ্রস্ত বলা যাবে না, উল্লেখ করে টিআইবি।
আরও পড়ুন: সরকার দুর্নীতি মামলা প্রত্যাহারে সুপারিশ করতে পারবে না: হাইকোর্ট
এবারের সিপিআই অনুযায়ী ৮৮ স্কোর পেয়ে যৌথভাবে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। তারপর ৮৫ স্কোর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড এবং ৮৪ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে নরওয়ে।
আর সর্বনিম্ন ১২ স্কোর পেয়ে তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়া। আর ১৪ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিরিয়া এবং ১৫ স্কোর পেয়ে তৃতীয় সর্বনিম্নে আছে ইয়েমেন ও ভেনেজুয়েলা।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান। এ দেশটির স্কোর ৬৮ এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী সূচকে অবস্থান ২৪ যা গত বছরের সমান স্কোর হলেও অবস্থানে ১ ধাপ এগিয়েছে। এরপরের অবস্থানে বড় ধরনের অগ্রগতি করে ৪৩ স্কোর নিয়ে ৭৫তম স্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। গতবার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারত তিন নম্বরে নেমে গেছে। তাদের স্কোর ৪০ এবং বৈশ্বিক অবস্থান ৮৬। শ্রীলঙ্কা ৩৮ স্কোর পেয়ে আছে ৯৪তম অবস্থানে। তারপরে থাকা নেপাল ৩৩ স্কোর নিয়ে আছে ১১৭তম এবং পাকিস্তান ৩১ স্কোর পেয়ে ১২৪তম অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: খালের বর্জ্যের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিও অপসারণ করা হচ্ছে: মেয়র তাপস
এরপর ১৪৬তম অবস্থানে বাংলাদেশ এবং ১৯ স্কোর পেয়ে ১৬৫তম স্থানে আছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ সিপিআই সূচক অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে অষ্টমবারের মতো এবারও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবাজ রুই-কাতলদের আইনের আওতায় আনতে হবে: হাইকোর্ট