তিনি জানান, প্রক্রিয়াটি যাচাই বাছাই করার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি অনেক পুরানো এবং পাসপোর্টগুলো নবায়নের সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সৌদি আরবে গিয়েছে।
তবে নিপীড়িত মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করা ছাড়াও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগে সহায়তার জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং আশাবাদী যে সৌদি সরকার বাংলাদেশকে তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশিদের ভিসার মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সৌদি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
সৌদি রাষ্ট্রদূত জানান, ঘরোয়া ব্যস্ততার কারণে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফর স্থগিত করা হয়েছে এবং শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করবে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসেই এই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
রবিবার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, ভার্চ্যুয়ালি বেইজিং থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে যোগ দেবেন চীনের ভাইস মিনিস্টার লুও জাওহুই।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানান, বাংলাদেশ ৮ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা যাচাই করার জন্য মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
সৌদি ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠাবে না, পুনরায় বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার মাত্র ৪২ হাজার মানুষের তথ্য যাচাই করেছে। এ বিষয়ে তাদের গুরুত্বের অভাব রয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু মিয়ানমার একইভাবে সহায়তা করছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি সর্বদা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আশাবাদী কারণ ইতিহাস বলছে তারা (মিয়ানমার) ১৯৭৮ এবং ১৯৯২ সালে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়েছিল।
মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও স্বপ্ন দেখেছিল ২০২০ সালে মর্যাদার সাথে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের। কিন্তু তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সামনে আবারও নতুন একটি বছর, আবারও স্বপ্ন দেখছেন তারা।
ডকুমেন্টস না থাকলে সৌদিতে থাকা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেবে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোভিড-১৯ মহামারি ও মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের কারণে প্রত্যবাসন বাধাগ্রস্ত হয়েছে ২০২০ সালেও। তবে নতুন বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রত্যবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান রয়েছে বলে মনে করে বিশ্বের বড় দেশগুলো।
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমার রাজি থাকলেও আন্তরিক নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের আস্থার অভাবের কারণে ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে দুবার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবসান: বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ১৯ জানুয়ারি
২০১৮ সালের ১৬ জানুায়ারি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ সম্পর্কিত একটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করে ঢাকা-নেপিদো, যা রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হয়েছিল।