অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে নির্দিষ্টকরণ বিল, ২০২০ অনুমোদিত হয়।
সংসদীয় অনুমোদনের জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও বেসরকারি ব্যয় তহবিল নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সভায় গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণ করে সংসদে অর্থমন্ত্রী বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন।
এরআগে, এসব দাবির মধ্যে মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতায় নিয়ে বিরোধীদলের সংসদ সদস্য মোট ৪২১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো পরে কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিরোধীদলের এবং বিএনপির ৯ জন সংসদ সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তার হলেন- কাজী ফিরোজ রশীদ, মজিবুল হক, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, হারুনুর রশীদ ও রুমিন ফারহানা।
তারা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও আইন, বিচার ও সংদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় খাতে ২টি মঞ্জুরি দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন।
পরে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী মধ্যাহ্নভোজের বিরতি না দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দাবি পাসের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে গিলোটিন প্রয়োগ করেন।
সংসদে বিলটি পাস হওয়ার সময় বিরোধী ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সভায় উপস্থিত থাকলেও বিল পাসের বিরুদ্ধে কোনো আওয়াজ তোলেননি।
গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে বৈশ্বিক মহামারি করোনার (কোভিড-১৯) প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ধাক্কা সফলভাবে মোকাবিলা করে চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশ নির্ধারণ করে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উত্থাপন করেন। এতে পরবর্তী বছরের জন্য সংশোধিত ৫ দশমিক ২ শতাংশ পরিবর্তে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ মুদ্রাস্ফিতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মোট বাজেটের আকার আগে অনুমান করা হয়েছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি কোটি টাকা। যা পরে ২১ হাজার ৬১৩ কোটি টাকার ব্যয় হ্রাস করে সংশোধিত করে ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাস্তব পরিস্থিতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত সংস্কারের কথা চিন্তা করে সরকার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয় নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং কর বহির্ভুত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা গত বছরের জিডিপির ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা আহরণ করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এর আগে সোমবার কিছু পরিবর্তনসহ সংসদে অর্থবিল ২০২০ পাস করা হয়েছে।