বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় নবনিযুক্ত সুইডিশ এবং স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূতরা গণভবনে পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আহ্বান জানান।
সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সেজেন্দ্রা বার্গ ভন লিনডি বলেন, ‘আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি। আমরা সেখানে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। ফলে সুইডেন এখানে বিনিয়োগ করতে পারে।’
বাংলাদেশ-সুইডেন সম্পর্ককে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে সুইডেন বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ; বিশেষ করে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন এবং তার মেয়াদের প্রায় ১২ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন তুলে ধরেন।
হাসিনা বলেন, তার সরকার কার্যকরভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করছে।
কোভিড-১৯ মহামারির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পেয়েছে।তবে তার সরকার পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি চলাকালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সম্পর্কিত ক্রয় আদেশ বাতিল না করায় সুইডেনের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সবশেষে প্রধানমন্ত্রী নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশে তার মেয়াদকালে সব ধরনের সহযোগিতা বাড়ানোর আশ্বাস দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, পৃথক এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এবং উচ্চ-প্রযুক্তিগত সুবিধাসম্পন্ন হাইটেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগের জন্য স্পেনের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিস্কো ডি বেনিতেজ সালাসকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি। আমরা সেখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ এবং সুযোগ রেখেছি। ফলে স্পেন এখানে বিনিয়োগ করতে পারে।’
দেশে তৈরি পোশাক ছাড়াও পাট, চামড়া ও ওষুধ খাতে সাম্প্রতিক সময়ে শক্তিশালী খাত হিসাবে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্পেন এই খাতগুলোতে বিনিয়োগের কথা ভাবতে পারে।
এছাড়াও তৈরি পোশাক এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্পেনের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের দেওয়া ট্যাক্স সুবিধা এবং আকর্ষণীয় বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগবান্ধব প্যাকেজ পেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্পেন পানি পথেও বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
কোভিড-১৯ মহামারির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ৮.১৫ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫.৪ শতাংশে, তবে তার সরকার পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।
অনেক দেশের মধ্যে কোভিড সংকটের মাঝেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বাংলাদেশ সরকার প্রধান।
স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূতও বাংলাদেশের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
স্পেন বাংলাদেশের সাথে অবকাঠামো উন্নয়ন ও রেলপথে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায় বলে উল্লেখ করেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।
তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য স্পেন বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ বৃহত্তম গন্তব্য বলে জানান রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিস্কো ডি বেনিতেজ।
প্রধানমন্ত্রী স্পেনের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং এখানে তার মেয়াদকালে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এই বৈঠক চলাকালেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।