গরু শান্ত স্বভাবের হলেও জোয়াল কাঁধে দেয়ার পর পরই মুহূর্তের মধ্যে তার চরিত্র পাল্টে যায়। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছ্বসিত হাজার হাজার দর্শক।
আরও পড়ুন: গরুর খুরা রোগে খুলনায় কমেছে দুধ উৎপাদন
গরুর গাড়ির এমন রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতা দেখতে রবিবার ঝিনাদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামের মাঠে জড়ো হয়েছিল ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলার কয়েক হাজার মানুষ। গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা রুবেল হোসেন নামে এক দর্শক বলেন, গরুর গাড়ি যে মানুষকে আনন্দ দিতে পারে তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ ফোন: খামার থেকে চুরি হওয়া গরু ২ ঘন্টায় উদ্ধার
দর্শক শাহেদ বলেন, ‘আধুনিক যুগে এসে গরুর গাড়ির এমন দৌড় প্রতিযোগিতা এই বেতাই গ্রামে এসে দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে। আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি। এরকম আয়োজন হলে আমাদের যারা নতুন প্রজন্ম তারা এর সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবে। তাই প্রতি বছরই আয়োজন করা দরকার।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, এই গান্না একসময় সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এখন মানুষ গান্নায় বিনোদনের জন্য আসে। সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ, মাদক দূর করতে হলে এ ধরনের বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন:
অনুষ্ঠানের আয়োজক সহযোগী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুল হাসান মাসুম জানান, দিনভর এ খেলায় যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে বাছাই করা মোট ৩৮টি রুর গাড়ি অংশ নেয়। খেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরের আবু সাঈদ। পুরস্কার হিসেবে তার হাতে তুলে দেয়া হয় একটি গরু। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার খালিদুর রহমান, তাকে একটি বাইসাইকেল ও তৃতীয় স্থান অধিকারী বেতাই গ্রামের আমিরুল খাঁকে একটি ছাগল উপহার দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: কেশবপুরে খড়ের সংকট চরমে, লোকসান এড়াতে কম দামে গরু বিক্রি
অনুষ্ঠানের আরেক আয়োজক আব্দুল ওহাব বলেন, গত ৯ বছর যাবৎ এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। এলাকার মানুষকে আনন্দ দেয়ার জন্য আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা সম্ভব।