আমদানিকৃত উন্নতমানের পাথর দিয়ে সেতুর পাইলিং নির্মাণ কাজ করার কথা থাকলেও সেখানে নিন্মমানের স্থানীয় পাথর ব্যবহারের ঘটনাটি হাতে-নাতে ধরা পড়ায় এমন নির্দেশ দেন তিনি।
শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁ সড়কে পোড়ার দোকান ও শিমুলতলা এলাকায় দুটি সেতু নির্মাণের টেন্ডার হয়। আজ (শনিবার) সকাল ১১টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের করতে যান হুইপ আতিক।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় এলাকাবাসীরা নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলে ধরলেহুইপ আতিক সরেজমিন নির্মাণ সামগ্রী পরিদর্শন করেন।
এসময় অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শিমুলতলা কজওয়ে এলাকার ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য সেতুর কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। সেখানকার নিন্মমানের কিছু নির্মাণসামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীকে পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিম্নমানের এসব পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী অপসারন এবং কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন হুইপ আতিক।
এর আগে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনকালে হুইপ আতিক বলেন, বর্তমান সরকার এ করোনা মহামারির সময়েও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
সরকারি অর্থ দিয়ে নির্মিত এ কজওয়ে সেতুতে যাতে কোন অবস্থায় দূর্নীতি না হয় সে ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের ঠিকাদার শেরপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজাহারুল ইসলাম আজাদের যোগসাজসে শুরু থেকেই সেতুর পাইলিং কাজে নিম্নমানের পাথর ও পুরনো রাস্তার ঢালাই উঠিয়ে খোয়া তৈরি করে কাজ শুরু করেন। কাজের সাইটে স্টক ইয়ার্ডে মজুদ করা পাথরের স্তুপে উপরে কিছু আমদানিকৃত পাথর রেখে তার নীচে স্থানীয় মরা পাথরগুলো রেখে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিলো।
ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড দুটি সেতুর কাজই সাব-কন্ট্রাক্টে জামালপুরের দুই ঠিকাদারের মাধ্যমে করাচ্ছে। শিমুলতলা কজওয়ের সেতুর নির্মাণ কাজটি জামালপুরের জাকির কন্ট্রাক্টর নামে একজনের মাধ্যমে করানো হচ্ছিলো।
শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নিজস্ব অর্থায়নে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫২ মিটার দৈর্ঘ্য দুটি কজওয়েতে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ১৮ মাসের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যার পানি প্রবাহিত হলে বছরের তিন মাস শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। দুটি কজওয়ের নির্মাণ কাজ শেষ হলে রৌমারী, রাজিবপুর, বকশীগঞ্জ ও শেরপুর জেলা শহর থেকে জামালপুর হয়ে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হয়ে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
তবে পুরাতন রাস্তা ভেঙে খোয়া ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের ঠিকাদার প্রতিনিধি শামিম মিয়া জানান, এলসি পাথর না থাকায় সিলেটের পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনো ধরনের যোগসাজসের নেই উল্লেখ করে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ সব নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। আমরা সাইটে রাখা সকল পাথর বাতিল করবো।’