বাংলাদেশ
নির্বাচনি দায়িত্বে ‘সৎ ও নিরপেক্ষ’ কর্মকর্তা চায় পুলিশ সদরদপ্তর
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে নিয়োগ দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে সৎ, নিরপেক্ষ ও প্রশাসনিকভাবে দক্ষ পরিদর্শকদের তালিকা চেয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
গত ১৬ নভেম্বর পুলিশ সদরদপ্তরের কর্মী ব্যবস্থাপনা শাখা-২ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত নির্দেশাবলিতে বলা হয়, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার জন্য দক্ষ, নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য ওসি অত্যন্ত জরুরি।
পুলিশ সদরদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনের সময়ে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় থানার ভারপ্রাপ্ত করমকর্তাদের কার্যকর ও নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সহিংসতা নিরসনে থানাপ্রধানদের প্রাথমিক নির্দেশ পালনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আগের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওসির দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে।
দেশব্যাপী রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পুলিশ সদরদপ্তর ওসি নির্বাচনের এ প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানায় সদরদপ্তর।
ডিএমপি, সিআইডি ও এসবি-প্রধানদের নিকট যোগ্য, পরিচ্ছন্ন রেকর্ডধারী, পরিক্ষীত প্রশাসনিক দক্ষতাসম্পন্ন এবং সততার জন্য পরিচিত পরিদর্শকদের তালিকা চেয়েছে সদরদপ্তর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ওসি নিয়োগের আগে একটি কমিটি তাদের নিকট প্রেরিত তালিকা পর্যালোচনা করে এরপর কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেবে।
পুলিশ সদরদপ্তরের কর্মী ব্যবস্থাপনা শাখা-২-এর পক্ষে অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল্লাহ আল জহির স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা কৌশলের অংশ হিসেবে দ্রুত এই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে গুরুত্বারুপ করেন।
সদরদপ্তরের আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, এ উদ্যোগ মাঠপর্যায়ের বৃহৎ পুলিশিং কার্যক্রমের একটি অংশ। এতে বুদ্ধিভিত্তিক সমন্বয়ের অগ্রগতি, দুর্বল ভোটকেন্দ্রগুলোতে নজরদারি বাড়ানো, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনি এলাকাগুলোতে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাও এই কার্যক্রমের অংশ।
২৫ দিন আগে
বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ আরেক ধাপ এগোল
উচ্চ আদালতের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপন করে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর ফলে বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি অবশেষে সরকারের সবুজ সংকেত পেল।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগ স্বাধীন হবে। পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে নিম্ন আদালতের বিচারক নিয়োগ, বদলি, অন্যান্য বিষয় এবং আদালতের কন্ট্রোল ও শৃঙ্খলা সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের হাতে ন্যাস্ত থাকবে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘এ নিয়ে গেজেট প্রকাশ করতে সাত দিনের মতো সময় লাগতে পারে। পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে। পুরোটাই নির্ভর করছে প্রধান বিচারপতির ওপর।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা এখন আইন মন্ত্রণালয়ের। পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তা সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত হবে।
২৫ দিন আগে
হাসিনা, কামালকে ফেরাতে আইসিসিতে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন: আইন উপদেষ্টা
সরকার ভারতকে প্রত্যার্পণের জন্য চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) দ্বারস্থ হয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফেরানোর বিষয়টিও বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এই দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ফেরত আনার বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যেতে পারি কি না—তা নিয়ে শিগগিরই একটি বৈঠক করব।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রত্যর্পণের জন্য সরকার ভারতকেও একটি চিঠি পাঠাবে। তারা দুজনই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (আইসিটি-১) কর্তৃক মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’
‘মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রত্যর্পণের জন্য আমরা একটি চিঠি পাঠাচ্ছি।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘তারা যেহেতু এখন দোষী সাব্যস্ত এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাদের ফেরত পাঠাতে ভারতের অতিরিক্ত দায়িত্ব রয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা ভারতকে তাদের প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি এবং সে কারণেই এই চিঠি পাঠানো হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
২৫ দিন আগে
বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে সুযোগ দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই: সিএসসিকে ঢাকা
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ‘স্থিতিশীল, নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ’ পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। পাশাপাশি কোনো অবস্থাতেই কোনো বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে সুযোগ দেওয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লিতে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতার সময় এ কথা বলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ কিংবা সমাজের কোনো অংশের নিরাপত্তা ও কল্যাণকে চ্যালেঞ্জ জানায়—এমন কোনো বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে সুযোগ দেওয়ার সামর্থ্য আমরা রাখি না।
‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার জটিলতা মোকাবিলায় আমরা পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান, অভিন্ন স্বার্থ এবং সুবিধা ভাগাভাগির নীতিতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি। একটি স্থিতিশীল, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে ও কাজ করতে প্রস্তুত।’
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার এবং গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিষয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে নয়াদিল্লিতে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাগতিক দেশ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মালদ্বীপ, মরিশাস, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের স্বাগত জানান। এ ছাড়া পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবে সম্মেলনে অংশ নেয় সেশেলস এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল মালয়েশিয়া।
সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া ড. খলিলুর রহমান বলেন, কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভকে ‘উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাবাদের’ ভিত্তিতে একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপক্ষীয় সংস্থা হিসেবে বিকশিত দেখতে চায় বাংলাদেশ।
কনক্লেভের পাঁচটি চিহ্নিত কর্মস্তম্ভকে বাংলাদেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এবং সেগুলোর মাধ্যমে সমষ্টিগত নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সিএসসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এমন মূল্যবোধ ও নীতিমালা অনুসরণ করে, যা সবার যৌথ সমৃদ্ধির জন্য একটি স্বাধীন, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত মহাসাগর নিশ্চিত করার দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। যেখানে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি, আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা—এসবকে অবশ্যই প্রধান ভিত্তি হিসেবে থাকতে হবে। টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।
খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলের সামুদ্রিক ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালনে অটল। জলদস্যুতা, অবৈধ মাছ ধরা, সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধ মোকাবিলায় আমরা মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। অতীতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের কিছু চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশও মোকাবিলা করেছে। আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে সব প্রকার সন্ত্রাসবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করি।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের (মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন) হুমকির মুখোমুখি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। বাংলাদেশের অঙ্গীকার হলো নিজস্ব সাইবার স্পেস, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রযুক্তিকে সুরক্ষিত রাখা; শুধু নাগরিকদের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যই নয়, বরং নিশ্চিত করার জন্য যে বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মকাণ্ড যেন আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের জন্য হুমকিস্বরূপ না হয়।
আঞ্চলিক নিরাপত্তার জটিলতা মোকাবিলায় পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মান, অভিন্ন স্বার্থ এবং সুবিধা ভাগাভাগির নীতিতে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘একটি স্থিতিশীল, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে ও কাজ করতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘পারস্পরিক বিশ্বাস ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যেকোনো বিষয়ে অভিন্ন সমাধান খুঁজে পেতে আমরা প্রস্তুত। বাংলাদেশ এই কনক্লেভকে একটি উন্মুক্ত আঞ্চলিকতাবাদচালিত, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপক্ষীয় সংস্থা হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যাশা করে।’
এর আগে, বুধবার নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. খলিলুর রহমান। বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, তারা সিএসসি-এর কাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
২৫ দিন আগে
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের দাবি বাংলাদেশের
১৩ লাখ রোহিঙ্গার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তাদের নিজ দেশে ফেরানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটি রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গৃহীত প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি এ সংকটের টেকসই সমাধান এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরার জন্য নতুন করে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে এবং ১০৫টি দেশ এতে সমর্থন জানায়।
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ প্রস্তাব গৃহীত হয়ে আসছে। এ বছরের প্রস্তাবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধাদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রে জোর করে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের এই কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য এই কমিটি আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দেয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১৯ নভেম্বর প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। গত ৮ বছরে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে হতাশাও ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২৫ দিন আগে
নির্বাচনে আস্থার সংকট দূর করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রয়োজন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকার, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে আরও বলিষ্ঠ ও স্বচ্ছ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘নাগরিকদের মনে এখনো যে শঙ্কা ও ভীতি রয়েছে, তা দূর করা না গেলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।’
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে খুলনায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভাটি নগরীর হোটেল সিটি ইনে অনুষ্ঠিত হয়।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের পরিচালনায় খুলনার জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, ছাত্র, নারী নেতৃত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক মানুষ এই সভায় অংশ গ্রহণ করেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, চলমান সংস্কার, বিচার, ও নির্বাচনি প্রক্রিয়ার আলোচনা ও বিতর্কে পিছিয়ে পড়া বা সুবিধাবঞ্চিত জনগণের চাহিদা ও আশা তুলে ধরতে এবং তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম একটি নাগরিক ইশতেহার তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছে, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তাদের ইশতেহারে বিশেষভাবে সন্নিবেশিত করতে অনুরোধ জানানো হবে।
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘জনগণ আস্থা না পেলে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রূপ পায় না। তাই মুক্ত আলোচনা, স্বচ্ছতা ও সততার ভিত্তিতে আস্থা পুনরুদ্ধার আজ সময়ের দাবি। দেশ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠছে, নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু আমরা কেমন নির্বাচন পাব—সেই প্রশ্ন জনগণের মনে রয়ে গেছে।’
খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এ অঞ্চলের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ, বাস্তবসম্মত ও জবাবদিহিমূলক আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি জানান, পদ্মা সেতুর পর যে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার প্রভাব দৃশ্যমান হয়নি—জমির দাম বাড়লেও শ্রমিকের মজুরি বাড়েনি। কৃষিভিত্তিক ও চিংড়িনির্ভর শিল্পসহ পর্যটন খাতেও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন প্রজন্মকে শিল্পে আকৃষ্ট করতে অঞ্চলভিত্তিক শিল্পায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, সুন্দরবন ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠা সম্ভব।
মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রে তিনি সতর্ক করে বলেন, “সংস্কার প্রয়োজন, বিদেশি বিনিয়োগও দরকার; কিন্তু অসচ্ছতা ও তাড়াহুড়োর কারণে সঠিক সংস্কারও ব্যর্থ হতে পারে। সংস্কারের টেকসই নিশ্চিত করতে জনমানুষের সঙ্গে আলোচনাভিত্তিক স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন রপ্তানি ও আমদানিমুখী অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক হলেও অস্বচ্ছ তাড়াহুড়ো ভবিষ্যতে সুফলকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই অর্থনৈতিক সংস্কারে স্বচ্ছতা, গণআলোচনা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি জনগণ, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানান।
সভায় সমাপনী বক্তব্য দেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, এনসিপির ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
২৫ দিন আগে
বিনিয়োগ ও নীতিগত স্থিতিশীলতা না এলে জ্বালানি সংকটে পড়বে বাংলাদেশ: বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে স্থিতিশীল করতে এখনই পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তী সরকার এই খাত নিয়ে ব্যাপক সংকটে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্প বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীতে ‘পাওয়ারিং প্রসপারিটি: ক্রিয়েটিং অ্যা স্টেবল অ্যান্ড ব্যাংকেবল এনার্জি ফিউচার ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ সতর্কবার্তা দেন। পলিসি এক্সচেঞ্জ এবং ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
দেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে বিদেশি বিনোয়োগ বাধাগ্রস্ত হয় বলে বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে টেকসই অর্থায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও দ্বিপক্ষীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
ইন্ডেপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মো. তামিম বলেন, বাস্তবভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক পরিকল্পনার অভাব পরবর্তী সরকারকে তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যে ফেলতে পারে। বর্তমান নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণ পরিকল্পনার সমালোচনা করে তিনি একে ‘ভিত্তিহীন আমলাতান্ত্রিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ বলে মন্তব্য করেন। এ সময় বাপেক্সের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানির মাধ্যমে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ুন সিক, বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জামায়াতে ইসলামের শুরা সদস্য ড. মোবারক হোসেন, বিএনপির উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এমসিসিআই সভাপতি কামরান রহমান, বিডার মহাপরিচালক মো. আরিফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক, ইবিএল, আইডিসিওএল এবং কনফিডেন্স পাওয়ার রংপুর লিমিটেডের প্রতিনিধিরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, বিদ্যুতের সক্ষমতা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট থেকে ২৮ হাজার ৩৫৯ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত দুর্বলতার জন্য ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ সক্ষমতার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করেন তারা।
ইএমএ পাওয়ার ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক আবু চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগ কমে গেলে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০২৯ সালে ৩৫ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। কিন্তু কিছু প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া, গ্যাস স্বল্পতা এবং নতুন প্রকল্পের অভাবে ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে তা কমে ৩০ হাজার মেগাওয়াটে নেমে যেতে পারে।
দেশে প্রতি বছর ৬ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, ২০৩৩ সালের মধ্যেই চাহিদা সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে। কারণ ২০৪০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ হাজার ৯০০ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে।
তাদের মতে, বিদ্যুতের অতিরিক্ত সক্ষমতার ধারণাটি আসলে বিভ্রান্তিমূলক। কারণ ২০৩২ সালের পর প্রকৃত উৎপাদন কমে যাবে। ২০৪০ সালে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ৩৫ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিপরীতে ওই সময় প্রকৃত উৎপাদন হবে ২০ হাজার ৯০১ মেগাওয়াট, অর্থাৎ ঘাটতি হবে ১৪ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট।
এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করেছেন যা মোট বিনিয়োগের ৪৮ শতাংশ।
দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রাকৃতিক গ্যাস নির্ভর। বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪৩ শতাংশই প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। ফলে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেলে বিদ্যুৎ উপাদনেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।
২০৩৩ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে হ্যাভি ফুয়েল অয়েল (এইচএফও) জ্বালানির প্রধান উৎস হয়ে উঠতে পারে, যা ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে বলেও ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জোর দিয়ে বলেন, নীতিগত সমন্বয় না করা হলে টেকসই জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।
২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ২০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে তা ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের মধ্যে রয়েছে— বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো, দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন আকৃষ্ট করতে গৃহীত নীতি বারবার পরিবর্তন না করে তা চালু রাখা, বিভিন্ন প্রকল্প ও নীত বাস্তবায়নের ধীরগতি ও বিলম্বের কারণ খুঁজে বের করে সেদিকে নজর দেওয়া।
অনুষ্ঠানে আর্থিক বিভাগের সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিজিএমইএ, এমসিসিআই, বিডা ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
২৬ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ‘ডিএসসিএসসি সনদ বিতরণ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২৫-এর গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে এই সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সামরিক শিক্ষায় উৎকর্ষতার স্তম্ভ হিসেবে ডিএসসিএসসির প্রতি নেতৃত্ব গঠনে জাতির আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নকারী সকল অফিসারকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি তাদের এই কোর্সে অর্জিত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সংকল্পকে জাতির অগ্রগতিতে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। এ ছাড়াও, শীর্ষস্থানীয় সামরিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডিএসসিএসসির বিশ্বব্যাপী অর্জিত সুনামের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কমান্ড্যান্ট, মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘ এক বছর কঠোর প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান নিজ নিজ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২৫-এর সাফল্য নিশ্চিত করতে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাহিনী সদর দপ্তরসমূহ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং সকল অংশীজনের প্রতিও নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আইএসপিআরের তথ্যমতে, ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২৫-এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭০ জন, নৌবাহিনীর ৪৫ জন এবং বিমান বাহিনীর ৩৬ জন কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ৩ জন কর্মকর্তা এবং চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, জর্ডান, কেনিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, সিয়েরা লিওন, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, তুরস্ক ও উগান্ডা থেকে আগত ৫৮ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। সব মিলিয়ে এ বছর মোট ৩১১ জন প্রশিক্ষণার্থী গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। এতে বাংলাদেশ পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জন মহিলা কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েশন অর্জন করেন, যা নারীর অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নে প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উচ্চতর দায়িত্ব ও নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তুত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৫,৩২৯ জন কর্মকর্তা, ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বন্ধুপ্রতিম ৪৫ দেশের ১,৪৬৫ জন বিদেশি সামরিক কর্মকর্তাসহ মোট ৬,৮১৪ জন অফিসার এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
অনুষ্ঠানে সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা (চাকরিরত এবং অবসরপ্রাপ্ত), বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অধ্যাপক, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের মিলিটারি/ডিফেন্স অ্যাটাচি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
২৬ দিন আগে
উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সম্মিলিত নিরাপত্তা প্রচেষ্টার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন, যাতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে সম্পন্ন করা যায়।
তিনি বলেছেন, ‘এখন নির্বাচনের সময়। আমরা প্রস্তুত, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা প্রয়োজন।’
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২৫-এর সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়াকে বড় দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি বড় প্রয়াস। অভ্যুত্থান থেকে নির্বাচনের পথে যাত্রা। এটি হবে শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, আনন্দ ও মিলনের সময়। মানুষ তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারবে।’
সংস্কারমূলক কর্মসূচির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা অতীতে ফিরে যেতাম, সকল ত্যাগ বৃথা যেত। আমাদের স্বপ্নের দেশ গড়ে তুলতে হবে। এই ছিল সংস্কারের সংকল্প। সংস্কার একটি বিষয়, কিন্তু তা ঠিকমতো সম্পন্ন করতে হবে, যাতে আমরা আর কোনো ভুল না করি— এটিও জানা জরুরি।’
২৬ দিন আগে
শ্রমবাজার খুললেও মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ফের শ্রমবাজার খুললেও ১০টি শর্ত যুক্ত করেছে মালয়েশিয়া, যেগুলোকে অগ্রহণযোগ্য মনে করছে ঢাকা। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে আবারও সিন্ডিকেট হবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) হোটেল শেরাটন ঢাকায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সহযোগিতায় তৈরি ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্লাটফর্মের (ওইপি) উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে একবার বন্ধ হওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি আবার চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ (যেমন: ভারত, নেপাল, মিয়ানমার) থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এই শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে; অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে; মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠনসহ অনেকেই এই শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক, অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করছেন।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে যে ১০টা শর্ত দিয়েছে, কয়েকটা শর্তের ব্যাপারে আমরা শক্ত আপত্তি জানিয়েছি। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলার পরে মালেশিয়াকে জানিয়েছি যে এসব শর্ত মিটআপ (পূরণ) করা সম্ভব না। কারণ এগুলো মিটআপ করতে গেলে এখানে আবার সিন্ডিকেট হবে। অল্প কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি সুযোগ পাবে। এটি আমরা চাই না।’
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া আশ্বাস দিয়েছে যে তারা এগুলো বিবেচনা করবে। শ্রমবাজার সবসময় সবার জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপ অব্যাহত রাখব।’
২৬ দিন আগে