খেলাধুলা
আনচেলত্তিকে নতুন করে সময় বেঁধে দিল ব্রাজিল
ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা পাকাপাকি হয়ে যাওয়ার পরও কার্লো আনচেলত্তির সেই চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পথে; রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে জটিলতার কারণেই ব্রাজিলকে দেওয়া কথা তিনি রাখতে পারছেন না বলে একাধিক ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। তবে নতুন খবর হলো, এই ইতালিয়ান কোচকে পাওয়ার আশা নাকি এখনও ছাড়েনি লাতিন আমেরিকার দেশটি।
সূত্রের বরাত দিয়ে এসপিএন জানিয়েছে, লা লিগার চলতি মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত আনচেলত্তির জন্য অপেক্ষা করতে চায় ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)।
লা লিগায় মাত্র পাঁচটি ম্যাচ বাকি রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। এই মুহূর্তে টেবিলের শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে চার পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে রয়েছে আনচেলত্তির দল। এর মাঝে আগামী ১১ মে মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোয় মুখোমুখি হবে দলদুটি। আগামী ২৪ বা ২৫ মে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে শেষ লিগ ম্যাচ খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ। ওই ম্যাচসহ বাকি ম্যাচগুলো জিততে পারলে হিসাব উল্টেও দিতে পারে মাদ্রিদ জায়ান্টরা।
এমন বাস্তবতায় আগামী ২৬ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে বলে আনচেলত্তিকে জানিয়ে দিয়েছে সিবিএফ। তবে রিয়াল মাদ্রিদ শেষ পর্যন্ত তাকে ছাড়বে কি না, সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে ফেডারেশন বিকল্পও ভেবে রেখেছে।
সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলালের কোচ হোর্গে হেসুস ও ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসের কোচ আবেল ফেরেইরা তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে ইএসপিএনের খবরে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘নিয়ে ফেলেছেন’ আনচেলত্তি
এর আগে, গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এল ক্লাসিকো ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-২ গোলে হেরে কোপা দেল রের শিরোপা হাতছাড়া হয় রিয়াল মাদ্রিদের। তার আগে গত ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের কাছে দ্বিতীয়বার হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
এছাড়া বার্সেলোনার কাছেই স্প্যানিশ সুপার কাপ খোয়ানোর পর লা লিগায়ও খুব বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই আনচেলত্তির দল। তাছাড়া একের পর এক দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় চোটে পড়ায় লা লিগা শিরোপা ধরে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে রিয়ালের। এর ফলে শিরোপাহীন এক মৌসুম কাটানোর আশঙ্কায় ভুগছে ইউরোপের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই ক্লাবটি।
একের পর এক শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় পুরো মৌসুমজুড়ে মাঝেমধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে আনচেলত্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার রাতেই তিনি তাৎক্ষণিক বরখাস্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। তেমন কিছু হলে সবসময় তৈরি আছেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আনচেলত্তি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল পর্যন্ত দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। এমনকি এই ট্রফিটি জিততে পারলে চুক্তির বাকি সময়টুকুও, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি রিয়ালে টিকে যেতে পারেন বলে সমালোচক মহলে আলোচিত হয়। কিন্তু হতাশাজনক হারে সব হিসাব পাল্টে যায়।
এর মাঝে গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) খবর চাউর হয় যে, বরখাস্ত হওয়া তো পরের কথা, তিনি নিজেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এমনকি রিয়াল কর্তৃপক্ষকে তিনি তার সিদ্ধান্তের ব্যাপারেও নাকি জানিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে দুদিন পর ফের নাটকে আসে নতুন মোড়। জানা যায়, রিয়ালকে চুক্তির বাকি মেয়াদের অর্থ পরিশোধ করার কথা বলেছিলেন আনচেলত্তি। তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান ক্লাবটির সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেস। এমনকি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আনচেলত্তিকে দলে ভেড়াতে চাইলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সিবিএফকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে বলেও জানানো হয় এই কোচকে।
এই জটিলতায় আনচেলত্তির ব্রাজিলে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। সিবিএফ অবশ্য আগেই জানিয়েছিল যে, জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে যদি আনচেলত্তি ব্রাজিলে যেতে না পারেন, তবে বিকল্প পদক্ষেপ নেবে তারা।
তবে দীর্ঘদিন ধরে এই ইতালীয় কোচকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্রাজিলের। শেষে এসে সহজেই তাই হাল ছেড়ে দিতে চায়নি কর্তৃপক্ষ। তাই ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ডাগআউটে তাকেই দেখার সাধ পূরণের লক্ষ্যে শেষ আরও একটি সুযোগ দিল ফেডারেশন।
২২৭ দিন আগে
ইউরোপা-কনফারেন্স লিগে ইংলিশ ক্লাবগুলোর জয়জয়কার
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজির কাছে আর্সেনালের হারতে হলেও উয়েফার অপর দুই টুর্মামেন্টের শেষ চারে ভালো করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। গত রাতে ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে খেলা তিন ইংলিশ ক্লাবের তিনটিই পেয়েছে বড় জয়ের দেখা।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিপক্ষের জন্য স্পেনের অন্যতম প্রতিকূল স্টেডিয়াম সান মামেসে খেলতে নেমেছিল চলতি মৌসুমে নিদারুণ ভুগতে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে মাঠে নেমেই পুরনো চেহারায় ফেরে দলটি। আর তাতে করে আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে তুলে নেয় ৩-০ গোলের দারুণ এক জয়।
অথচ প্রিমিয়ার লিগে এই দলটিই সবশেষ পাঁচ ম্যাচ জয়বঞ্চিত। এই সময়ে মাত্র দুটি ম্যাচ ড্র করে দুই পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে রুবেন আমোরিমের দল।
বিলবাও ডিফেন্ডার দানি ভিভিয়ান ম্যাচের ৩৫ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে দশ জনের দলে পরিণত হয় এর্নেস্তো ভালভের্দের দল। তার পাঁচ মিনিট আগেই অবশ্য কাসেমিরোর গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। এরপর লাল কার্ডের ওই ফাউল থেকে পাওয়া পেনাল্টি গোলে পরিণত করে দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি গোল করেন এই মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধে অল-আউট ডিফেন্স খেলে ইউনাইটেডকে আটকে রাখতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘নিয়ে ফেলেছেন’ আনচেলত্তি
এখানে ব্রুনো ফের্নান্দেসের কথা বিশেষ করে না বললেই নয়। দল মৌসুমজুড়ে ভুগতে থাকলেও একাই আলো ছড়িয়ে চলেছেন এই পর্তুগিজ। চলতি মৌসুমের সব মিলিয়ে ৫২ ম্যাচ খেলে ১৯ গোল ও ১৮ অ্যাসিস্টসহ মোট ৩৭ গোলে অবদান রেখে ফেলেছেন এরই মধ্যে।
২২৮ দিন আগে
ব্রাজিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘নিয়ে ফেলেছেন’ আনচেলত্তি
চলতি মৌসুমে অসংখ্যবার সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে জেরবার হয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি—রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আপনার সরে যাওয়ার বিষয়ে কী বলবেন? মৌসুমের শেষের দিকে এসে একের পর এক ব্যর্থতায় এই প্রশ্নবাণে আরও বেশি বিদ্ধ হতে হচ্ছে এই ইতালিয়ান কোচকে। তবে কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে রিয়ালের হারের পর সিদ্ধান্তটি তিনি নিয়েই ফেলেছেন—আর নয়, সরে যাওয়ার সময় এসেছে।
শনিবার রাতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এল ক্লাসিকো ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-২ গোলে হেরে কোপা দেল রের শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। তার আগে গত ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের কাছে দ্বিতীয়বার হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
বার্সেলোনার কাছেই স্প্যানিশ সুপার কাপও খোয়ানোর পর লা লিগায়ও খুব বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই আনচেলত্তির দল। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা কাতালানদের চেয়ে চার পয়েন্টে পিছিয়ে দলটি। সামনে আর পাঁচটি ম্যাচ থাকলেও তার একটি আবার রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে, তাদের মাঠেই। ফলে লিগ জয় বার্সেলোনার জন্য যতটা সহজ এবার, ঠিক ততটাই কঠিন হয়ে পড়েছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের জন্য। আর তাতে করে শিরোপাহীন এক মৌসুম কাটানোর আশঙ্কায় পড়েছে ইউরোপের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই ক্লাবটি।
একের পর এক শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় মাঝেমধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে আনচেলত্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার রাতেই তিনি তাৎক্ষণিক বরখাস্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। তেমন কিছু হলে সবসময় তৈরি আছেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আনচেলত্তি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল পর্যন্ত দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। এমনকি এই ট্রফিটি জিততে পারলে চুক্তির বাকি সময়টুকুও, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি রিয়ালে টিকে যেতে পারেন বলে সমালোচক মহলে আলোচিত হয়। কিন্তু হতাশাজনক হারে সব হিসাব উল্টে গেছে।
এর মাঝে খবর এলো, বরখাস্ত হওয়া তো পরের কথা, তিনি নিজেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে দ্য অ্যাথলেটিকের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক মারিও কর্তেগানা লিখেছেন, লা লিগার যে পাঁচ ম্যাচের খেলা বাকি, তা সম্পন্ন করেই রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনচেলত্তি। তার পরবর্তী গন্তব্য ব্রাজিল। জুন মাসের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরু হওয়ার আগেই দেশটির জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি।
আর তা-ই যদি হয়, তাহলে আসন্ন জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে দেখা যাবে না ৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচকে।
আরও পড়ুন: অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
ব্রাজিলের সঙ্গে আনচেলত্তির সংযোগের এই বিষয়টি অবশ্য একেবারে নতুন নয়। গত দুই বছর ধরে রিয়াল বসকে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে একাধিকবার তার ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ট্রান্সফার গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো জানিয়েছিলেন, সবশেষ সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আর্সেনালের বিপক্ষে হারের ওই ম্যাচের আগে ব্রাজিলের একজন দূত মাদ্রিদে আসেন। ম্যাচটির পর আনচেলত্তির ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেন তিনি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল সামনে থাকায় তার অপেক্ষা বাড়ে।
দিয়েগো ফের্নান্দেস নামের ওই ব্রাজিলীয় ব্যবসায়ী শনিবার লা কার্তুহা স্টেডিয়ামেও উপস্থিত ছিলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য অ্যাথলেটিক। এমনকি রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আনচেলত্তির সঙ্গে তিনি মিটিং করেছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। আর সেখানেই আনচেলত্তি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন বলে লিখেছেন কর্তেগানা।
ট্রেনিং গ্রাউন্ড সূত্রের বরাত দিয়ে এই সংবাদিক জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কথা ড্রেসিংরুম সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন রিয়াল বস আনচেলত্তি। আশা করা হচ্ছে, জুন মাসেই তিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবেন। ফলে এই গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হতে চলা ক্লাব বিশ্বকাপে তাকে কোচ হিসেবে পাবে না রিয়াল।
এক্ষেত্রে বিকল্প কোচের সন্ধানে নামতে হবে মাদ্রিদ জায়ান্টদের। দলটির সাবেক অধিনায়ক ও বায়ের লেভারকুজেনের বর্তমান কোচ শাবি আলোনসোকে বের্নাবেউতে টানার ইচ্ছার কথা জানা গিয়েছিল গত গ্রীষ্মেই। কিন্তু জার্মান ক্লাবটিতে তার কাজ তখনও শেষ হয়নি জানিয়ে তখন লেভারকুজেনেই থেকে গিয়েছিলেন আলোনসো। আনচেলত্তি যদি সত্যি সত্যিই চলে যান, সেক্ষেত্রে আলোনসো যদি নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার আগে আসতে না পারেন, তবে অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের টাচলাইনে দেখা যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবল বিভাগের পরিচালক সান্তিয়াগো সোলারিকে। অন্তত স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাসহ দেশটির একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিকের মত তা-ই। ফাব্রিৎসিও রোমানো ও কর্তেগানাও বলছেন একই কথা।
আসন্ন কয়েক ঘণ্টা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। সোমবার ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা আনচেলত্তি ও তার ক্যাম্পের। সেখানেই আনচেলত্তির থাকা-না থাকার বিষয়টির ফয়সালা হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্যাপক তোড়জোড় করেও হেরে গেল রিয়াল, সেমিফাইনালে আর্সেনাল
কর্তেগানা বলছেন, মূলত দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়েই রিয়াল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসবেন এই কোচ। এরপরই তিনি ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন। এমনকি ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ পর্যন্ত ব্রাজিল ফুটবল দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন বলে মৌখিকভাবে সম্মতও নাকি হয়েছেন।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪-১ গোলে হারের পর গত ২৮ মার্চ কোচ দরিভাল জুনিয়রকে বরখাস্ত করে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। তারপর থেকে অভিভাবকহীন রয়েছে দেশটির জাতীয় ফুটবল দল। ফলে জুনের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরুর আগে ফেডারেশন যদি আনচেলত্তিকে দায়িত্ব অপর্ণ করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প নামও ঠিক করে রেখেছে তারা। এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ সৌদি ক্লাব আল হিলালের কোচ হোর্গে হেসুস।
পিএসজি ছেড়ে ২০১৩ সালে প্রথমবার রিয়াল মাদ্রিদের হাল ধরেন আনচেলত্তি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বের্নাবেউতে কাটানোর পর বায়ার্ন মিউনিখ-নাপোলি-এভারটন ঘুরে ফের ২০২১ সালে রিয়ালে জিনেদিন জিদানের স্থলাভিষিক্ত হন এই ইতালিয়ান।
দুই দফায় তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লা লিগাসহ রিয়ালকে মোট ১৫টি শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি। বর্ণিল রিয়াল মাদ্রিদ ক্যারিয়ারে আনচেলত্তি দলটিকে সম্ভাব্য সব শিরোপার স্বাদ পাইয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৩), লা লিগা (২), কোপা দেল রে (২), স্প্যানিশ সুপার কাপ (২), উয়েফা সুপার কাপ (৩), ক্লাব বিশ্বকাপ (২) ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ (১)।
আরও পড়ুন: আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
২৩২ দিন আগে
অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
চার মৌসুম ধরে কোপা দেল রের শিরোপা খুঁজে চলা বার্সেলোনা মাঠে নামার আগেই রেফারিকাণ্ডে বিতর্ক ওঠে চরমে। তারপর খেলতে নেমে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নাটকীয় পালাবদলের মধ্যে দিয়ে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছে, তখনই কোথা হতে উড়ে এসে গোল করে বসলেন জুল কুন্দে, আর তাতেই দীর্ঘ দিনের অধরা শিরোপা নিয়ে উদযাপনে মাতল কাতালান জায়ান্টরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে কোপা দেল রে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে বার্সেলোনা। এর ফলে কোপার ৩২তম ট্রফি জয়ের উল্লাসে মেতেছে এই টুর্নামেন্টের রাজারা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে নিজেদের খুঁজে চলা রিয়ালের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ২৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক বুলেট শটে বার্সাকে লিড এনে দেন পেদ্রি। গোলটির কারিগর ছিলেন বার্সার ১৭ বছর বয়সী তারকা উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল।
গোল খেয়ে ম্যাচের আধঘণ্টা পার হওয়ার পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির সময় রদ্রিগোকে বসিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে মাঠে নামিয়ে দিলে দলটির আক্রমণে ধার আরও বাড়ে। তারপর ৫৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচ ও আর্দা গুলের দলে ভারসাম্য এনে দেয়। এর ফলস্বরূপ ৭০ ও ৭৭তম মিনিটে এমবাপ্পে ও অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি দুই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন।
তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সেই লিড। ৮৪তম মিনিটে লামিন ইয়ামালের আরও একটি অ্যাসিস্ট থেকে অসাধারণ এক গোল করে বার্সাকে ম্যাচে ফেরান ফেররান তোরেস।
এরপর ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে দুই দলই জয়সূচক গোলটির সন্ধানে জোর চেষ্টা চালায়, কিন্তু ১১৬তম মিনিটে মদ্রিচের দুর্বল পাস আর ব্রাহিম দিয়াসের গড়িমসির সুযোগ নেন কুন্দে। ছুটে গিয়ে বল লুফে নিয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়েই রিয়ালের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেন চমৎকার একটি শট, আর তা ঝাঁপিয়ে পড়া থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে জালে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাস ছড়িয়ে যায় বার্সার ডাগআউট থেকে শুরু করে গ্যালারির অর্ধেক অংশে।
ওই গোলেই ম্যাচটি জিতে নেয় বার্সেলোনা। আর চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের। অবশ্য ম্যাচের শেষদিকে বেঞ্চে থাকা আন্টোনিও রুয়েডিগার ও লুকাস ভাসকেসের পাওয়া দুটি লাল কার্ড সঙ্গী হয় তাদের।
ফলে সুপার কাপের পর কোপা দেল রের ফাইনালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে বঞ্চিত করে টানা দুই শিরোপা ঘরে তুলল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন বারের দেখায় তিনটি ম্যাচই বার্সেলোনার কাছে হেরে গেল আনচেলত্তির শিষ্যরা।
আর কোয়াড্রাপল মিশনে সুপার কাপের পর কোপা দেল রে জয় করে অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়ে ফেলল কাতালান জায়ান্টরা। এখন তাদের সামনে কেবল লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
লা লিগাতেও অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ ফাঁড়া কাটাতে হবে ফ্লিকের দলকে, তবে সেখানে চ্যালেঞ্জ অত কঠিন নয়। শুধু হার এড়িয়ে বাকি চারটি ম্যাচে আট পয়েন্ট সংগ্রহ করলেই চলবে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠায় দীর্ঘদিন ধরে অধরা এলিট ওই ট্রফিটি জিততে তাদের প্রয়োজন তিনটি ম্যাচ ভালোভাবে উৎরে যাওয়া।
মৌসুমের শেষভাগে এসে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত দল নিয়ে তার কতটা পূরণ করতে পারবেন হান্সি ফ্লিক, তা এখন অজানা। তবে ওসব হিসাব আজ করছে বার্সেলোনা; কোপা দেল রে জিতে আজ কেবলই তাদের উদযাপনের সময়।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
২৩৩ দিন আগে
বায়ার্নের শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়ে দিল লেভারকুজেন
বুন্দেসলিগায় চলতি মৌসুমে ম্যাচ বাকি আছে আর তিনটি। এই সময়ে টেবিলের শীর্ষে আট পয়েন্টের ব্যবধান নিয়ে মাঠে নেমেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। নিজেদের ম্যাচটি জয় ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ের লেভারকুজেন পয়েন্ট হারালে আজই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত দলটি। কিন্তু জিতে বাভারিয়ানদের শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছে শাবি আলোনসোর দল।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) মাইন্সের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতলেও এক মৌসুম পর ঘরের মাঠে শিরোপা উদযাপন-বঞ্চিত হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। এই ম্যাচে দলটির তিন গোলদাতা ছিলেন লেরয় জানে, মাইকেল অলিস ও এরিক ডায়ার।
এই জয়ে ৩১ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই রয়েছে বায়ার্ন। তবে তাদের কাছে এবার লিগ শিরোপা ছেড়ে দিতে হলেও শেষে এসে দলটিকে বাঁদর নাচ নাচাচ্ছে লেভারকুজেন।
আজ একই সময়ে ঘরের মাঠে আউগসবুর্গের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ভালো রকমের চ্যালেঞ্জ জানালেও লেভারকুজেনের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারেনি আউগসবুর্গ। হেরেছে ২-০ গোলে। ফলে বায়ার্নের সমান ৩১ ম্যাচে লেভারকুজেনের পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৬৭। আর তাতেই হতাশ হতে হয়েছে ভিনসেন্ট কোম্পানির শিষ্যদের। কারণ কাগজে-কলমে এখনও লিগে টিকে রয়েছে শাবি আলোনসোর দল।
শিরোপা জয় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেলেও তাই আরও এক ম্যাচ অপেক্ষা করতে হবে কোম্পানির শিষ্যদের। আগামী ৩ মে লাইপসিগের মাঠে খেলতে যাবে বায়ার্ন। ওই ম্যাচে হার এড়ালেই এক মৌসুম পর ফের বুন্দেসলিগার শিরোপা স্পর্শ করার সুযোগ মিলবে জার্মানির সবচেয়ে সফলতম দলটির।
এর ফলে ক্লাব ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পেতে চলেছেন বায়ার্নের ইংলিশ তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। এটি হতে চলেছে ১৬ বছরের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে তার প্রথম দলীয় শিরোপা জয়।
টটেনহ্যাম হটস্পারের একাডেমিতে বেড়ে উঠে ২০০৯ সালে ক্লাবটির জার্সিতেই ক্যারিয়ার শুরু করেন ৩২ বছর বয়সী এই তারকা। এরপর বেশকিছু ব্যক্তিগত অর্জন হলেও ক্লাব হোক বা জাতীয় দল, দলীয় পর্যায়ে এখনও কোনো সাফল্যের দেখা পাননি তিনি।
টটেনহ্যামের প্রতি অনুগত থাকলেও ক্যারিয়ার শিরোপা-সমৃদ্ধ করতে ২০২৩ সালে ইংল্যান্ড ছেড়ে জার্মানিতে পাড়ি জমান তিনি। জার্মানির সফলতম ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিলেও ২০২৩/২৪ মৌসুমে শিরোপা বঞ্চিত হন এই স্ট্রাইকার।
কেইন দলে ভেড়ার পর শাবি আলোনসোর অধীনে অভাবিতভাবে জ্বলে ওঠে বায়ের লেভারকুজেন এবং গত মৌসুমে ইতিহাস গড়ে ঘরোয়া সব শিরোপা পকেটে পুরে নেয় দলটি। ফলে দেশ, ক্লাব বদল করেও শিরোপা জয়ের স্বপ্ন আরও দীর্ঘায়িত হয় হ্যারি কেইনের।
তবে গত মৌসুমের ব্যর্থতা মুছে ফেলে চলতি মৌসুমে ফের স্বরূপে ফিরেছে বায়ার্ন মিউনিখ। নিজেদের সেরাটা উপহার দিয়ে চলেছেন কেইনও। আর সব ঠিক থাকলে আগামী শনিবারই হয়তো আরাধ্য শিরোপা ধরা দেবে তার হাতে।
২৩৩ দিন আগে
জব্বারের বলি খেলায় এবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলার এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ান হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শীরফ। রানার-আপ হয়েছে কুমিল্লারই আরেক প্রতিযোগী রাশেদ।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) চট্টগ্রামে লালদীঘির ময়দানে বলী খেলার ১১৬তম আসর অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ বিকেল চারটার দিকে বেলুন উড়িয়ে খেলার উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী আয়োজনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি জব্বারের বলী খেলাকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অনন্য পরিচায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বলী খেলা ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকেই লালদিঘীর ময়দান ও আশপাশের এলাকায় জমে ওঠে বৈশাখী মেলা। বলী খেলার সঙ্গে মিশে গেছে মেলার নানা রঙয়ের ছোঁয়া, যা উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
এবারের বলী খেলায় ১২০ জন নিবন্ধন করলেও শেষ পর্যন্ত ৮০ জন অংশ নেন।
২৩৪ দিন আগে
ক্রিকেটারদের বেইজ্জত করা হচ্ছে, দাবি তামিমের
ফিক্সিং, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন তামিম ইকবাল। ক্রিকেটারদের ‘বেইজ্জত-অপমান’ করা হচ্ছে বলে দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
হার্ট অ্যাটাকের পর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তামিম। বিসিবির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সময় একাধিক বিষয়ে অসন্তোষের কথা জানান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
মূলত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএলে) তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যু নিয়ে আজ (শুক্রবার) বৈঠক বসে মোহামেডান ও বিসিবি। মোহামেডানের জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার তামিমসহ বেশ কয়েকজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাটি গত ১২ এপ্রিলের। ডিপিএলে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে সেদিন তর্কে জড়ান মোহামেডানের অধিনায়ক হৃদয়। শুধু মাঠে তর্কে জড়িয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, ম্যাচ শেষে কিছুটা বিতর্কিত সুরে বলেছিলেন, ‘তিনি (সৈকত) আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হলে আমিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।’
ম্যাচ অফিশিয়ালদের সঙ্গে তর্ক ও তাদের কটাক্ষ করার কারণে ২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান হৃদয়। তবে তার শাস্তি কমানোর জন্য ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির কাছে আবেদন করে মোহামেডান কর্তৃপক্ষ। কমিটি তাতে সাড়া না দিলেও তাদের সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে এক ম্যাচে নিয়ে আসে বিসিবির আম্পায়ার বিভাগ, অথচ এই এখতিয়ার তাদের নেই।
নিয়ম ভেঙে হৃদয়ের এই শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে বিসিবির চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সৈকত। তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সৈকতের অভিমান ভাঙায় বিসিবির আম্পায়ার বিভাগ এবং সেই এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা নতুন করে দেওয়া হয় হৃদয়কে। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা।
এ বিষয়ে তামিমের ভাষ্য, ‘হৃদয়ের ইস্যুটা... ওকে দুটি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি! আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে নিষিদ্ধ করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি, সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল, কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পর দেখলাম যে, (নিষেধাজ্ঞা) দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো; এটা বিসিবি করেছে। তখনও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তারপর হৃদয় একটা ম্যাচ না খেলে পরের দুটি ম্যাচ খেলল। স্বাভাবিকভাবে ওর যে শাস্তি ছিল, সেটা সে ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর গতকাল শুনলাম যে, তাকে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
‘এটা কোন নিয়মে, কীভাবে করা হয়েছে—তা আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এটা হাস্যকর ছিল। কোনোভাবেই সে নিষিদ্ধ হতে পারে না যে কিনা আগেই (একবার) নিষিদ্ধ হয়েছে। বিসিবি তাকে দুটি ম্যাচ খেলতে দিয়েছে। তাকে আবার আপনি কীভাবে নিষিদ্ধ করতে পারেন?’
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন তামিম, ফিরেছেন বাসায়
এছাড়া, ডিপিএলের চলতি আসরে একটি ম্যাচকে ঘিরে ফিক্সিংয়ের সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুরের ম্যাচকে ঘিরে ওঠা সেই সন্দেহের ম্যাচটি নিয়ে বিসিবির তদন্ত চলছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে গত ১০ এপ্রিল শাইনপুকুরের দুই ক্রিকেটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরকে মিরপুরে ডাকা হয়। এই দুজন স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে উপস্থিত হয়ে বিসিবি কর্মকর্তাদের সামনে বিতর্কিত স্টাম্পিংয়ের সেই ঘটনা পুনরায় মঞ্চায়ন করে দেখান। উইকেটের দুই পাশে দুটি ক্যামেরায় ধারণ করা হয় সেই দৃশ্য। মিডিয়াকর্মীরাও সে সময় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মনে করেন, মিডিয়ার সামনে এই দুই ক্রিকেটারকে দিয়ে অভিনয় করানোর কোনো অধিকার কারও নেই।
‘আমরা এই জিনিসটা ক্রিকেট বোর্ডকে সরাসরি বলেছি যে দেখেন, যদি ওখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি হয়ে থাকে বা কোনো খেলোয়াড় কোনো ধরনের দোষ করে থাকে, আমরা সবাই চাই এটার (জন্য) শাস্তি হোক; এতে আমরা শতভাগ একমত। কিন্তু তার মানে এটা না যে, আপনি ওই দুটি ছেলেকে নিয়ে গিয়ে মিডিয়ার সামনে অভিনয় করাবেন, এমনটা করার অধিকার কারো নেই।’
‘বিশ্বের কোথাও দুর্নীতি দমন ইউনিটে এমন নিয়ম নেই যে, একই জিনিস অভিনয় করিয়ে আপনি ওই দুটি ছেলেকে বেইজ্জত করবেন মিডিয়ার সামনে। এটা খেলোয়াড়দের অপমান করা। এই জিনিস নিয়ে আমরা একবিন্দুও খুশি ছিলাম না।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসরে কয়েকজন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ওঠে। যাদের নাম গণমাধ্যমে আসায়ও বিসিবিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তামিম।
‘বিপিএলেও ১০ জনের নাম ফাঁস হয়েছে বিসিবির ভেতর থেকে; ১০ জনের ছবি মিডিয়াতে দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই চাই, ওখান থেকে কেউ যদি দোষী হয়, তার শাস্তি হোক।
কিন্তু তাদের মধ্যে যদি দুজন বা আটজনও নির্দোষ বলে প্রমাণিত হয়?—প্রশ্ন রেখে তামিম তাদের নামগুলো জনগণের সামনে ফাঁস করে দেওয়াকে ‘অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হলো ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের যদি এভাবে ট্রিট করা শুরু করেন, তাহলে তো হলো না! এই জিনিস নিয়ে আমরা প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেছি আসতে। উনি এসেছেন, সঙ্গে আরও দুজন পরিচালক (নাজমুল আবেদীন ও ইফতেখার আহমেদ) ছিলেন। আমরা লম্বা আলোচনা করেছি। আমাদের পয়েন্ট তুলে ধরে উনাকে বলেছি যে, (বিষয়গুলো নিয়ে) আমরা আপসেট।’
‘এসব নিয়ে আমাদের বিতর্ক হয়েছে। উনাদের আমরা সুন্দর করে (নিজেদের) অবস্থান পরিষ্কার করেছি যে আমরা কী অনুভব করি। তারপর উনারা উনাদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবেন।’
২৩৪ দিন আগে
মৌসুম শেষ কামাভিঙ্গার, ফাইনালে আলাবাকে নিয়ে সংশয়ে রিয়াল
গেতাফের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকলেও কোপা দেল রের ফাইনালের আগে দুঃসংবাদ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার। এছাড়া ফাইনালে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবাও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে আরদা গুলেরের গোলে গেতাফেকে ১-০ ব্যবধানে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। আলাবা শুরুর একাদশে থেকে ম্যাচ শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামেন কামাভিঙ্গা। তবে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয় অস্বস্তি নিয়ে।
ম্যাচশেষে আনচেলত্তি জানান, কামাভিঙ্গা ও আলাবা পেশিতে টান পেয়েছেন। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের পাওয়ার আশা করছেন না তিনি।
কোচের সেই আশঙ্কা সত্যি করে আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, কামাভিঙ্গার বাঁ পায়ের অ্যাডাক্টর টেন্ডন সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই মিডফিল্ডারকে।
এর ফলে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে এই ফরাসি মিডফিল্ডারের। এমনকি আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপও খেলতে পারবেন না তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কোপের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক আরানচা রদ্রিগেস জানিয়েছেন, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে কামাভিঙ্গাকে। আগস্টের মাঝামাঝি লা লিগার পরবর্তী মৌসুম শুরুর হওয়ার সময় দলে ফিরবেন এই মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
কামাভিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে হারালেও আলাবাকে নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আনচেলত্তি, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে।
আরানচা জানিয়েছেন, আলাবার চোট ততটা গুরুতর নয়। আগামীকাল (শুক্রবার) তিনি যদি খুব বেশি অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে দলের সঙ্গে সেভিলে যেতে পারেন।
সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচের আগে কামাভিঙ্গার ছিটকে যাওয়া ও আলাবাকে নিয়ে সংশয় থাকায় রিয়ালের লেফট ব্যাক পজিশনে এখন একমাত্র নাম ফ্রান গার্সিয়া। তবে চলতি মৌসুমে তার পারফরম্যান্স খুব বেশি আশা জাগানিয়া নয়। ফলে ১৭ বছর বয়সেই ফুটবল বিশ্বের আলো কেড়ে নেওয়া লামিন ইয়ামালকে আটকাতে কী কৌশল অবলম্বন করবেন আনচেলত্তি, তার ওপর দলের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফাইনাল ম্যাচে দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না। এদের মধ্যে দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাও চোট পেয়ে বেশ আগেই এই মৌসুমের জন্য দলের বাইরে চলে গেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন কামাভিঙ্গা। তাছাড়া দাভিদ আলাবা ও ফেরলঁ মঁদির খেলা নিয়েও রয়েছে সংশয়। পাশাপাশি চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপ্পে শনিবারের ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনা যে খুব ভালো অবস্থায় আছে, তা নয়। চোটের কারণে কাতালান দলটিও আছে বিপদে।
আরও পড়ুন: কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
লেগানেসের বিপক্ষে চলতি মাসের ১২ তারিখের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান দলটির নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। এরপর সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন চলতি মৌসুমে বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কিও। শুধু কোপার ফাইনালই নয়, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেও তাকে না পাওয়া শঙ্কায় আছেন হান্সি ফ্লিক।
এছাড়া, পেশির চোটে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে দলটির মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদোর। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন অনুশীলনে ফিরলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন তারা। মাঠে ফিরতে তাদের আরও কিছুটা দেরি আছে।
তাছাড়া বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ম্যাচ খেলার ধকল থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বেশি বিশ্রামের সুযোগ মিলবে রিয়াল মাদ্রিদের। সব মিলিয়ে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ছাড়াই কোপার ফাইনালে শনিবার রাতে মাঠে নামতে হচ্ছে দুই দলকে। ফলে দুই কোচের কৌশল ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে উঠতে চলেছে এবারের কোপা দেল রে।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
২৩৫ দিন আগে
একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
৩৬ শতাংশ পজেশন রেখেও ২০টি শট নিয়ে তার ছয়টি লক্ষ্যে রাখল গেতাফে। ম্যাচজুড়ে গোল করার চারটি পরিষ্কার সুযোগও তৈরি করল তারা। তবে গোল আর করা হয়ে উঠল না। বিপরীতে ১৪টি শটের সাতটি লক্ষ্যে রেখে দুটি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করে তা থেকেই ঠিকানা খুঁজে নিল রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাতেই কোনোমতে ম্যাচ জিতে নিয়ে শিরোপার লড়াই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল কার্লো আনচেলত্তির দল।
বুধবার রাতে গেতাফের কলিসেউম স্টেডিয়ামে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আগের রাতে মায়োর্কাকে একই ব্যবধানে হারানোয় রিয়ালের সঙ্গে বার্সেলোনার পয়েন্ট ব্যবধান বেড়ে হয় সাত। তাই নিজেদের ম্যাচটি হারা তো দূর, ড্র করলেও লিগ শিরোপার লড়াই থেকে একপ্রকার ছিটকে যেত আনচেলত্তির দল। তবে জিতে সেই ব্যবধান ফের চারে নামিয়ে তা হতে দেয়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
৩৩ ম্যাচে ২৪ জয় ও চার ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৬। সমান সংখ্যক ম্যাচে ২২ জয় ও ৬ ড্রয়ে নিজেদের পয়েন্ট ৭২-এ উত্তীর্ণ করেছে রিয়াল।
আরও পড়ুন: মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
শনিবারের কোপা দেল রের ফাইনালে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ফিট রাখতে বার্সার মতোই বেশ কয়েকজনকে বিশ্রামে রেখে একাদশ সাজান আনচেলত্তি।
চোটের কারণে এই ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপ্পের না খেলার কথা জানা গিয়েছিল আগেই। এছাড়া আন্টোনিও রুয়েডিগার, জুড বেলিংহ্যাম, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, লুকা মদ্রিচ ও রদ্রিগোকে এদিন বেঞ্চে রাখেন রিয়াল বস। এর ফলে ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে আক্রমণভাগে খেলার সুযোগ পান ব্রাহিম দিয়াস ও এন্দ্রিক। মাঝমাঠে খেলতে নামেন আরদা গুলেরও।
একাদশে অদল-বদল হলেও প্রথমার্ধে অসাধারণ পারফর্ম করে রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য তাদের সমানে জবাব দিয়ে যাচ্ছিল গেতাফেও।
তবে ২১তম মিনিটে গুলেরের চমৎকার এক গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। এ সময় ব্রাহিমের শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে পরমুহূর্তে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান গুলের। জায়গা বানিয়ে নিয়েই ২০ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন এই তরুণ তুর্কি, গোলরক্ষক দাভিদ সরিয়া ঝাঁপিয়ে তাতে হাত ছোঁয়ালেও আটকাতে ব্যর্থ হন।
৩২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটিও পেয়েই গিয়েছিল রিয়াল। এন্দ্রিকের শট সরিয়া প্রতিহত করলেও তা গোলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন গেতাফের এক ডিফেন্ডার।
২৩৬ দিন আগে
মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
পুরো ম্যাচজুড়ে শট নিল চল্লিশটি, অথচ গোল পেল মাত্র একটি। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। এমনটিই ঘটেছে মায়োর্কার বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচে। ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতার এমনই এক রাতে অবশ্য জিতেই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মঙ্গলবার রাতে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠে মায়োর্কাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন দানি অলমো।
গত ১৫ বছরে লা লিগার কোনো দল এক ম্যাচে এত বেশি (৪০) শট নিতে পারেনি। ফ্লিকের বার্সেলোনার সৌজন্যে সেই বিরল ঘটনার সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব।
চোটে খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি এবং আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর কথা মাথায় রেখে টানা ম্যাচ খেলা একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড়দের ছয়জনকে বদল করে নতুন একাদশ সাজিয়ে এদিন শিষ্যদের মাঠে নামান হান্সি ফ্লিক। তবে তাতে তার দলের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি।
অপরদিকে, গত কয়েক মৌসুম ধরে কোনোরকমে অবনমন এড়ানো মায়োর্কা চলতি মৌসুমে দারুণ পারফর্ম করে চলেছে। লিগ টেবিলের সাতে থাকা এই দলটির পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ফলে তাদের ওপর পুরো ম্যাচজুড়ে ছড়ি ঘুরিয়েছে বার্সেলোনা।
৭৮ শতাংশ পজেশন ধরে রেখে ম্যাচজুড়ে মোট ৪০টি শট নেয় দলটি, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, মাত্র চারটি শট নিলেও একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি মায়োর্কা।
এর ফলে এক গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতলেও আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হতে চলা কোপা দেল রের ফাইনালের প্রস্তুতি সেরেছে কাতালান জায়ান্টরা। সেই সঙ্গে অনিয়মিত খেলোয়াড়দেরও ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ফ্লিক।
চোটে ছিটকে যাওয়া লেভানডোভস্কি এবং রাফিনিয়াকে বিশ্রামে রাখায় এদিন কপাল খোলে আনসু ফাতির। তাকে বাঁ পাশে রেখে ফেররান তোরেস ও লামিন ইয়ামালকে নিয়ে আক্রমণ ত্রয়ী সাজান ফ্লিক।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
মাঠে নেমে প্রথম মিনিটেই গোলের উদ্দেশ্যে শট নেন ফাতি, তবে শটটি মায়োর্কার রক্ষণে আটকে যায়। এরপর সপ্তম থেকে নবম মিনিটের মধ্যে লামিনের দুটি ও ফেররানের একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বাদশ মিনিটে ফেররান ও লামিনের জোড়া শট প্রতিহত করেন মায়োর্কা গোলরক্ষক লেও রোমান। সতীর্থের বাড়ানো থ্রু বল ধরে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থেকে জোরালো শট নেন ফেররান, গোলরক্ষক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে তা ফিরিয়ে দিলে বল চলে আসে ডানপাশে থাকা লামিনের পায়ে। তিনি সেখান থেকে শট নিলেও বল লুফে নেন রোমান।
অষ্টাদশ মিনিটের শুরুতে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণে উঠে গোল করার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে মায়োর্কা। তবে গোলমুখে বাড়ানো নিচু ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হওয়ায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগবঞ্চিত দলটি।
২৬তম মিনিটে গোল পেয়েই গিয়েছিলেন অলমো, কিন্তু তার অসাধারণ টোকায় গোলের উদ্দেশে বাড়ানো বলের দিক পরিবর্তন করে দেন রোমান। ২৯তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল খাওয়া থেকে দলকে রক্ষা করেন তিনি। পরের মুহূর্তেই গাভির নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তার কয়েক মুহূর্ত পর গোলমুখে বল পেয়েও বাইরে মারেন আরাউহো।
এই সময় থেকে মোটামুটি পাঁচ মিনিট মায়োর্কার খেলোয়াড়দের ওপর বুলডোজার চালাতে থাকে বার্সার খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণ, শটে গোল আদায়ের জোরালো প্রচেষ্টা চালাতে থাকে দলটি। কিন্তু কোনোমতে বার্সার আক্রমণগুলো প্রতিহত করে ম্যাচে নিজেদের ধরে রাখে মায়োর্কা।
চল্লিশতম মিনিটে আরও একবার দুর্দান্ত আক্রমণ শানিয়ে তিন তিনবার গোলে শট নেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা, তবে এবারও মায়োর্কার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন রোমান। ৪৪তম মিনিটে বাঁ পাশ থেকে বক্সে ঢুকে নেওয়া ফাতির শট পোস্টঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ফিরতি বল থেকেই আক্রমণে উঠে বার্সার রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে গিয়ে গোল করেন আন্তোনিও সানচেস, তবে শেষ পর্যন্ত তা অফসাইডে কাটা পড়ে।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
এর কিছুক্ষণ পর বিরতিতে যায় দুদল। বিরতির আগে প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙিয়ে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করলেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ৭৮ শতাংশ সময় পজেশন রেখে প্রথমার্ধে মোট ২৪টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৬টি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমার্ধে তিনিট ‘বিগ চান্স’ তৈরি করে দলটি, কিন্তু স্কোরবোর্ডে কিছুই যোগ করতে পারে না। অপরদিকে, নিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকা মায়োর্কার আক্রমণের খাতা ছিল একেবারে শূন্য।
২৩৭ দিন আগে