বিশ্ব
ভারতে ২৪২ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত
ভারতের আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটিতে ২৪২ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রু রয়েছেন। নয়াদিল্লিভিত্তিক এনডিটিভির খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি অনেকটা নিচ দিয়ে উড়ছিল, এসময়ে উপরের দিকে উঠতে বারবার চেষ্টা করছিল। এরপর হঠাৎ করে আকাশযানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে এবং বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের কুণ্ডলী বেরিয়ে আসে।আরও পড়ুন: ফ্লোরিডায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৩
এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আহমেদাবাদ-লন্ডন গ্যাটউইকে পরিচালিত এআই১৭১ বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঘন ধূসর ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠছে। আশপাশে দুই ডজনেরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স জড়ো হয়েছে। কোনো কোনো অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে পারেনি দেশটির পুলিশ। তারা জানিয়েছে, বিমানবন্দরের কাছের একটি বেসামরিক এলাকায় এটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
১৮৬ দিন আগে
ইসরায়েলি আগ্রাসন: গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়াল
গত ২০ মাসে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়েছে। যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। বুধবার (১১ জুন) হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজার ১০৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ২৭ হাজার ৩৯৪ জন। তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা বা চিকিৎসা সেবার নাগালের বাইরে থাকা আরও বহু মানুষের নিহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যদিও ইসরায়েল এই পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের দাবি, হামাস যোদ্ধাদের নিশানা করে তারা হামলা চালাচ্ছে। এমনকি বেসামরিক প্রাণহানির জন্যও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটিকে দায়ী করছে তারা। হামাস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকে বলে অভিযোগ তাদের।
আরও পড়ুন: গাজায় চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের ৯ জনই নিহত
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমানায় স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে এক হাজার ২০০ জন বেসামরিক ইসরায়েলি নিহত হন।
সেই সঙ্গে আরও ২৫১ জন ইসরায়েলি নাগরিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর থেকেই বন্দিদের মুক্তির অজুহাতে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও লাখো মানুষ।
১৮৬ দিন আগে
দিল্লিতে তীব্র দাবদাহ, রেড অ্যালার্ট জারি
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (১১ জুন) দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) দিল্লিতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
দিল্লির বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা ৪০.৯ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করলেও হিট ইনডেক্স বা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার সম্মিলিত প্রভাব ৫১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
রাজধানীতে পারদ চড়লেও উত্তর-পশ্চিম ভারতে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি। সংস্থাটির মতে, ১৪ জুন থেকে ওই এলাকায় তাপমাত্রা কমতে পারে। যদিও পশ্চিম রাজস্থান ও আশপাশের এলাকাগুলোতে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে, তবুও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে যাওয়ার সময় গোপালগঞ্জের আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ প্রকাশিত সর্বশেষ বুলেটিনে আইএমডি জানায়, ‘পূর্ব ভারতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রায় বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে পরবর্তী তিন দিনে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং এরপর থেকে তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকবে।’
কবে থেকে কমবে দিল্লির তাপমাত্রা
আইএমডির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, পশ্চিম দিক থেকে আসা ঝোড়ো বাতাস কারণে দিল্লিতে শুক্রবারের (১৩ জুন) পর থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে।
তার কথায় সমর্থন দিয়েছেন আইএমডির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী নরেশ কুমারও। স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তীব্র গরম অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ১৩ জুন রাত থেকে পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হওয়া বাতাসের প্রভাবে দিল্লিতে হালকা বৃষ্টি ও বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।’
গতকাল (১১ জুন) আইএমডির বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির সবচেয়ে উত্তপ্ত এলাকা ছিল আয়ানাগার (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এরপর যথাক্রমে পালাম (৪৪.৫), রিজ (৪৩.৬), পিতমপুরা (৪৩.৫), লোধি রোড (৪৩.৪), সফদরজং (৪৩.৩), ও ময়ূর বিহার (৪০.৯) সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে।
আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে রেড অ্যালার্ট বহাল থাকলেও শুক্রবার রাত থেকে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা জারি
পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে দিল্লিতে গ্রীষ্মকালীন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা (৮,২৩১ মেগাওয়াট) রেকর্ড করেছে রাজ্য লোড ডিসপ্যাচ সেন্টার (এসএলডিসি)।
১৮৬ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে কমছে সন্তান জন্মদানের হার, জাতিসংঘের জরিপে উদ্বেগ
নম্রতা নাংগিয়া ও তার স্বামী মুম্বাইয়ে তাদের পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলেও আরেকটি সন্তান নেওয়ার চিন্তা করছিলেন। তবে দ্বিতীয় সন্তানের ব্যয় তারা বহন করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান এই দম্পতি।
নম্রতা মুম্বাইয়ে একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন। তার স্বামীও সেখানে একটি টায়ার কোম্পানিতে কর্মরত। তবে একটি সন্তানেরই স্কুল ফি, স্কুল বাস, সাঁতার শেখা ও চিকিৎসাসহ সন্তানের নানাবিধ খরচ বহন করতে হিমশিম খাওয়া এই দম্পতি দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে বারবার সরে আসছেন।
এ বিষয়ে নম্রতার ভাষ্য, ‘আমাদের সময় শিশুকালটা ভিন্ন ছিল। আমরা শুধু স্কুল যেতাম, অতিরিক্ত কোনো কার্যক্রম ছিল না। আর এখন সন্তানকে সাঁতার শেখাতে, আঁকা শেখাতে পাঠাতে হয়, দেখতে হয় যে সে আর কী শিখতে পারে।’
এই ধরনের পরিস্থিতি এখন কেবল মুম্বাইয়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, অর্থনৈতিক সংকট, স্বাস্থ্যসংক্রান্ত উদ্বেগ, উপযুক্ত সঙ্গীর অভাব ও বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি মিলিয়ে শত কোটি মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত সন্তানের সংখ্যা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন।
জরিপে উদ্বেগজনক জন্মহার
ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইউএনএফপিএ প্রথমবারের মতো জন্মহার পতনকে কেন্দ্র করে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, হাঙ্গেরি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়া—এই ১৪টি দেশে পরিচালিত জরিপে মোট ১৪ হাজার মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই দেশগুলো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে বলে খবরে বলা হয়েছে।
এসব দেশের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের দেশ এবং উচ্চ ও নিম্ন জন্মহারের দেশ। তরুণদের পাশাপাশি প্রজনন বয়স অতিক্রান্ত ব্যক্তিদেরও জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইউএনএফপিএর প্রধান ড. নাটালিয়া কানেম বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে জন্মহার নজিরবিহীনভাবে কমছে। অধিকাংশ মানুষ দুই বা ততোধিক সন্তান চান, কিন্তু সক্ষমতার অভাবে বাস্তবে তা পারছেন না। সেটিই আসল সংকট।’
আরও পড়ুন: মৃত শিশুর জন্মহারে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ
এ বিষয়টিকে সংকট বলার মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপে জন্মদানের প্রবণতা নিয়ে গবেষণা করা ও ফিনল্যান্ড সরকারের পরামর্শদাতা হিসেবে কর্মরত জনসংখ্যা বিশ্লেষক আনা রোটকির্চ।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, মানুষ যত সন্তান চায় বাস্তবে তার চেয়ে কম নিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সন্তান কম হচ্ছে, বেশি নয়।’
জরিপে অংশ নেওয়া ৫০ বছরের বেশি বয়সী উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ বলেছেন যে, তারা যত সন্তান চেয়েছিলেন তা নিতে পারেননি। এই বিষয়টিই তাকে সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে বলে মন্তব্য করেন রোটকির্চ।
ইউএনএফপিএর এই জরিপটি মূলত একটি প্রাথমিক ধাপ, পরবর্তীতে এটি ৫০টি দেশে বিস্তৃতভাবে পরিচালনা করা হবে।
বড় বাধা অর্থনৈতিক সংকট ও সময়ের অভাব
জরিপ থেকে জানা গেছে, ৩৯ শতাংশ মানুষ অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে সন্তান নিতে পারেননি। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই হার সর্বোচ্চ (৫৮ শতাংশ), আর সুইডেনে সর্বনিম্ন (১৯ শতাংশ)।
অন্যদিকে গর্ভধারণে সমস্যায় থাকা মানুষের হার মাত্র ১২ শতাংশ। এই হার থাইল্যান্ডে ১৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫ শতাংশ, নাইজেরিয়ায় ১৪ শতাংশ ও ভারতে ১৩ শতাংশ।
এই জরিপের বিষয়ে হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির জনসংখ্যা বিশ্লেষক অধ্যাপক স্টুয়ার্ট গাইটেল-বাস্টেন বলেন, ‘জাতিসংঘের কোনো সংস্থা কমসংখ্যক সন্তান গ্রহণের বিষয়ে আগে কখনো এত গুরুত্ব দেয়নি।’
‘এতদিন পর্যন্ত এই সংস্থা মূলত অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ ও গর্ভনিরোধক পদ্ধতির অভাব নিয়েই বেশি জোর দিয়েছিল। তবে এখন তারা জন্মহার হ্রাসের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: জাপানে সবচেয়ে কম শিশু জন্মহার ২০২৩ সালে, কমেছে বিয়ের হারও
ড. নাটালিয়া কানেম বলেন, ‘আমরা এখন এমন একটা সময় দেখছি যখন একদিকে অতিরিক্ত জনসংখ্যা নিয়ে কথা হচ্ছে, অন্যদিকে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। তবে এ সম্পর্কিত আলোচনা অনেক সময় অতিরঞ্জিত তো বটেই, কখনো কখনো প্ররোচনামূলক নীতির দিকেও চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কখনো নারীদের বেশি সন্তান নেওয়ার জন্য, আবার কখনো কম সন্তানের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
৪০ বছর আগেও চীন, কোরিয়া, জাপান, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে জন্মহার বেশি থাকায় উদ্বেগ ছিল। অথচ ২০১৫ সালের মধ্যে এই দেশগুলো জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন ড. কানেম।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক স্টুয়ার্ট সতর্ক করেন, ‘এসব দেশে কম জন্মহার, বয়স্ক জনসংখ্যা ও স্থবির জনসংখ্যাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে জাতীয়তাবাদী, অভিবাসন-বিরোধী ও লিঙ্গ সম্পর্কে রক্ষণশীল নীতিগুলো বাস্তবায়ন করতে দেখা যাচ্ছে। তবে আমরা চাই, এসব হঠকারী নীতি যেন গ্রহণ না করা হয়।’
ইউএনএফপিএ আরও বলছে, আর্থিক সীমাবদ্ধতার চেয়েও বড় বাধা হলো সময়ের অভাব। মুম্বাইয়ের নম্রতার ঘটনাটি এ প্রসঙ্গে একেবারে মিলে যায়।
প্রতিদিন অফিস যাওয়া-আসায় অন্তত তিন ঘণ্টা চলে যায় তার। বাড়িতে ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়লেও মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে চান তিনি। দিন শেষে দেখা যায়, পর্যাপ্ত ঘুমের সময়ই পাচ্ছে না তাদের পরিবার।
নম্রতা বলেন, ‘একেকটা কর্মদিবসের পর একজন মা হিসেবে অপরাধবোধ কাজ করে যে, সন্তানের সঙ্গে যথেষ্ট সময় কাটাতে পারছি না। তাই আমরা কেবল একজনকেই নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’
১৮৭ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যা দুই দেশের প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
লন্ডনে দেশ দুটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুই দিনের বৈঠকের পর নিজের মালিকাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু চীনের প্রেসিডেন্ট শি ও আমার অনুমোদন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘চীন থেকে প্রয়োজনীয় দুর্লভ ধাতব পদার্থ ও চুম্বক যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে, চীনা শিক্ষার্থীরাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পাবেন।’
আধুনিক প্রযুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুর্লভ ধাতু রপ্তানির বিষয়টি লন্ডনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি মদদপুষ্ট ৫০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা হামাসের
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের পণ্যে শুল্কারোপ করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চীন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বেইজিংও মার্কিন পণ্যে উচ্চ শুল্কারোপ করে। পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের হার এপ্রিলে এসে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশে পৌঁছায়।
মে মাসে সুইজারল্যান্ডে হওয়া আলোচনায় সাময়িক সমঝোতায় পৌঁছায় দুই দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক হার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে এবং চীনও তা ১০ শতাংশে কমিয়ে আনে। পাশাপাশি চীন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রপ্তানিতে বাধা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে উভয় পক্ষই পরে একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ আনে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন দুর্লভ ধাতু রপ্তানিতে বিধিনিষেধ তুলে নেয়নি। অপরদিকে, বেইজিং দাবি করে— যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করেছে, চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের তৈরি চিপ ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছে এবং চিপ ডিজাইন সফটওয়্যারের রপ্তানি বন্ধ করেছে।
এই সপ্তাহের আলোচনার আগে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তারা কিছু দুষ্প্রাপ্য খনিজ উপাদান রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে।
ট্রাম্প শুক্রবার (৬ জুন) জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট শি বাণিজ্য পুনরায় শুরুর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
১৮৭ দিন আগে
ইসরায়েলি মদদপুষ্ট ৫০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা হামাসের
সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি মদদপুষ্ট একটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর অন্তত ৫০ সদস্যকে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এমনকি, চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা ওই গোষ্ঠীকে রক্ষায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, এই গোষ্ঠিটি জাতিসংঘের ত্রাণের ট্রাক লুটে জড়িত।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম আই-২৪ এর খবরের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (১০ জুন) গাজা উপত্যকার রাফায় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ইয়াসের আবু শাবাবের নেতৃত্বাধীন একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠী। স্থানীয়ভাবে নিজের অপরাধের জন্য কুখ্যাতি রয়েছে আবু শাবাবের।
মঙ্গলবার (১০ জুন) এক বিবৃতিতে অ্যান্টি টেরর সার্ভিস বা পপুলার ফোর্সেস নামে পরিচিত আল শাবাবের মিলিশিয়া গোষ্ঠিটি জানিয়েছে, ‘ত্রাণ সুরক্ষা দিতে গিয়ে আমাদের ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নেতা ইয়াসেরের আত্মীয়রাও রয়েছেন। তারা আরও দাবি করেছে, বিস্ফোরক অপসারণ করতে গিয়েও কিছু সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।’অথচ, গাজায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা কাজে নিয়োজিত কর্মীদের মতে— এই গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের ত্রাণের ট্রাকগুলো লুট করে আসছে।
আরও পড়ুন: গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজার জন্য ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটক করেছে ইসরায়েল
গণমাধ্যম আই-২৪ এর প্রতিবেদনে জানা গেছে, হামাস যোদ্ধাদের হাত থেকে আবু শাবাবকে রক্ষায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এতে, উভয়পক্ষেই হতাহত ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে এই গোষ্ঠীকে অস্ত্র সহায়তার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। হামাসকে দুর্বল করতেই এ সহায়তা করা হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমটির মতে, গত সপ্তাহে আবু শাবাবের গোষ্ঠীকে সহায়তা করতে প্রথমবারের মতো হামলা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ড্রোন হামলায় হামাসের ৪ সদস্য নিহত হয়েছিলেন।
অথচ ইসরায়েল দাবি করেছে, কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায়মুখী ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েনেট জানিয়েছে, আবু শাবাবের গোষ্ঠীটি হামাসের অ্যারো নামে পরিচিত ইউনিটের ছয় সদস্যকে হত্যা করেছে। এ ইউনিটটি সাধারণত ইসরায়েলের সহযোগীদের ওপর হামলাগুলো পরিচালনা করে থাকে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের সময় আবু শাবাব গাজার এক হামাস-নিয়ন্ত্রিত কারাগারে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে বন্দি ছিলেন। যুদ্ধ শুরুর পর তিনি কীভাবে ছাড়া পেলেন, তা স্পষ্ঠভাবে জানা যায়নি।
বর্তমানে পূর্ব রাফায় শতাধিক সদস্য নিয়ে তার গোষ্ঠীটি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সামাজিকমাধ্যমে তাকে ইসরায়েলি এজেন্ট ও বিশ্বাসঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। হামাস এরমধ্যেই তাকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে হামাস বলেছে, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিমান হামলা তাকে রক্ষা না করলে আজই সে আমাদের হাতে ধরা পড়তো।’ তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘ইসরায়েলের তাকে আজীবন রক্ষা করতে পারবে না। আজ না হয় কাল আমরা বিশ্বাসঘাতকদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করবো।’
আরও পড়ুন: খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ গেল ৩১ গাজাবাসীর
ইসরায়লের এমন একটি গোষ্ঠীকে অস্ত্র দেওয়ার পদক্ষেপ গাজাকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইসরায়েলি বিশ্লেষকরা।
১৮৭ দিন আগে
আটকের পর যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটকার
ভিসাশর্ত লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানবন্দরে আটকের পর স্বেচ্ছায় দেশটি ছেড়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটকার খাবি লেইম।
শুক্রবার (৬ জুন) লাসভেগাস শহরের হ্যারি রেইড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্কপ্রয়োগকারী সংস্থার (আইসিই) কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন তিনি।
তবে, কোনো নির্বাসন আদেশ ছাড়াই তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বেচ্ছাপ্রস্থানের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র।
২৫ বছর বয়সী এই সামাজিকমাধ্যম তারকার (ইনফ্লুয়েন্সার) পুরো নাম সেরিঞ্জে খাবানে লেইম। জন্ম সেনেগালেও হলেও শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে ইতালিতে পাড়ি জমান তিনি। পরে, ইতালির নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন।
আইসিই জানিয়েছে, খাবি লেইম ৩০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ভিসার শর্ত ভঙ্গ করে দেশটিতে অবস্থান করছিলেন তিনি। তাকে স্বেচ্ছাপ্রস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।সংস্থাটি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি হারিয়ে স্বেচ্ছাপ্রস্থান করা ব্যক্তিরা ডিপোর্টেশন অর্ডার এড়াতে পারেন। এই আদেশে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ১০ বছর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে।
আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ২ হাজার সেনা মোতায়েন ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপ দিনদিন আরও জোরালো করছে। এরমধ্যেই দেশটির লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন জায়গায় আইসিইর অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প তার নির্বাহী ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা করছেন। এমন এক সময়েই জনপ্রিয় এ ইনফ্লুয়েন্সারের আটক ও স্বেচ্ছাপ্রস্থানের ঘটনাটি ঘটলো।
এ বিষয়ে জানতে, মঙ্গলবার (১০ জুন) তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তিনি এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোন মন্তব্যও করেননি।খাবি লেইম কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রথম আলোচনায় আসেন। সংলাপহীন ভিডিওর মাধ্যমে জটিল ও অপ্রয়োজনীয় লাইফ হ্যাকগুলোর সোজাসাপ্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তিনি সামাজিক মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম টিকটকে তার অনুসারীর সংখ্যা ১৬ কোটি ২০ লাখের বেশি।
টিকটকে খ্যাতি পাওয়ার পর তিনি দ্রুতই ফ্যাশন ও মানবিক কাজে যুক্ত হন। ২০২২ সালে তিনি নামকরা ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুগো বসের সঙ্গে কয়েকবছরের চুক্তি করেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কয়েকদিন পর গত মে মাসে নিউইয়র্কে ফ্যাশন দুনিয়ার অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন অনুষ্ঠান মেট গালায় অংশ নেন তিনি।
১৮৭ দিন আগে
গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজার জন্য ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটক করেছে ইসরায়েল
গাজা অভিমুখে ত্রানবাহী ‘ম্যাডলিন’ জাহাজ দখলে নিয়ে জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ কর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
স্থানীয় সময় সোমবার (৯ জুন) ভোরে তাদের আটক করা হয় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এই যাত্রার আয়োজনকারী আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার সময় কর্মীদের অপহরণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জাহাজটিতে বেআইনিভাবে অভিযান চালানো হয়েছে, নিরস্ত্র বেসামরিক নাবিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং শিশুখাদ্য, খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ জব্দ করা হয়েছে।’
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ম্যাডলিন নিয়ে এক সপ্তাহ আগে যাত্রা শুরু করেছিলেন গ্রেটাসহ ওই কর্মীরা।
তবে এই যাত্রাকে একটি ‘জনসংযোগমূলক স্ট্যান্ট’ বলে অভিহিত করেছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তারা বলেছে, ‘সেলফি ইয়টে’ করে আসা ‘সেলিব্রেটিরা’ এখন নিরাপদে ইসরায়েলের উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা তারা জানায়, ওই কর্মীরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবেন এবং ত্রাণ সহায়তা তাদের পরিচালিত চ্যানেলের মাধ্যমে গাজায় পাঠানো হবে।
পরে আটক কর্মীদের স্যান্ডউইচ ও পানি বিতরণের একটি ভিডিও প্রকাশ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে দেখা যায়, আটকরা কমলা রঙের লাইফ জ্যাকেট পরে আছেন।
গাজায় চলমান আগ্রাসনকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অন্যতম ভয়াবহ এবং ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযান বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ ২০ লাখ মানুষের এই ভূখণ্ডে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
সপ্তাহব্যাপী যাত্রা
জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ছিলেন ম্যাডলিনে থাকা ১২ জন অ্যাক্টিভিস্টের একজন। এক সপ্তাহ আগে সিসিলি থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন তারা।
যাত্রাপথে গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) জাহাজটি লিবীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার আশঙ্কায় সাগরে ঝাঁপ দেওয়া চার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে।
ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজ থামানোর আগে এক ভিডিও বার্তায় গ্রেটা বলেন, ‘আমি আমার বন্ধু, পরিবার ও সহযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন সুইডিশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে আমাকে ও অন্যদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া হয়।’
ওই জাহাজে আরও ছিলেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের নীতির বিরোধিতা করায় তাকে ইসরায়েলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হামাসকে চাপে রাখতে দুই মাসেরও বেশি সময় পুরোপুরি অবরোধের পর, গত মাসে ইসরায়েল গাজায় কিছু মৌলিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয়।
তবে অবরোধ তুলে না নেওয়া হলে ও সামরিক অভিযান বন্ধ না করলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন মানবিক সহায়তাকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা।
গত মাসেও ফ্রিডম ফ্লোটিলার গাজায় পৌঁছানোর আরেকটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সে সময় আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাল্টার কাছে যাত্রাকালে তাদের আরেকটি জাহাজ ড্রোন হামলার শিকার হয়। জাহাজটির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই হামলার জন্য তারা ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
এদিকে, গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৫ হাজরের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজার প্রায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ। সেখানকার জনগণ এখন প্রায় সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
কয়েক মাস ধরেই অচল অবস্থায় রয়েছে আরেকটি যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতার চেষ্টা। হামাস বলছে, তারা কেবল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়ে অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে।
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
অন্যদিকে, যতক্ষণ না সব জিম্মিকে মুক্ত করা, হামাস পরাজিত বা নিরস্ত্র ও নির্বাসিত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে অঙ্গীকার ইসরায়েলের।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস অভিযান চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। আর ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কয়েক দফা বন্দি বিনিময়ের পর এখনো হামাসের হাতে ৫৫ জন ইসরায়েলি বন্দী রয়েছেন। জিম্মিদের অনেকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।
১৮৯ দিন আগে
বিশ্বব্যাপী কমেছে খাদ্যের দাম: এফএও
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, মে মাসে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ০.৮ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে উদ্ভিজ্জ তেল ও চিনি জাতীয় পণ্যের দাম।
শুক্রবার (৬ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে সিনহুয়া জানায়, খাদ্যমূল্য সূচকের সবচেয়ে বড় উপাদান—শস্য ও খাদ্যশস্যের দাম মে মাসে ১.৮ শতাংশ কমেছে। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভালো ভুট্টার ফলন এবং বৈশ্বিকভাবে গমের চাহিদা কমেছে।
তবে ইন্দিকা চালের চাহিদা ও মার্কিন ডলারের মূল্য পতনের কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তা সত্ত্বেও, সামগ্রিক সূচকের ওপর তা প্রভাব ফেলেনি।
বেড়েছে মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম
মে মাসে মাংসের দাম বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। গরু, খাসি ও শুকরের মাংসের চাহিদা বাড়ায় এই প্রবণতা দেখা গেছে। বিশেষ করে জার্মানিতে পা ও মুখের রোগের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় দেশটির বাজারে চাহিদা বাড়লে শুকরের মাংসের দাম বেড়ে যায়। তবে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের শঙ্কায় মুরগির মাংসের চাহিদা কমেছে।
এদিকে, দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ০.৮ শতাংশ। এশিয়ার চাহিদার কারণে মাখনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে, ফলে পনির ও গুড়ো দুধের দামও বেড়েছে।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে উদ্ভিজ্জ তেল ও চিনির দামে।
উদ্ভিজ্জ তেলের দাম কমেছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, যদিও এটি এখনো গত বছরের তুলনায় ১৯.১ শতাংশ বেশি। পাম, রেপসিড, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের দাম কমে গেছে—এর পেছনে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমে যাওয়াকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে এফএও।
এদিকে খাদ্য ও পানীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় চিনির দাম কমেছে ২.৬ শতাংশ।
১৯০ দিন আগে
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ২ হাজার সেনা মোতায়েন ট্রাম্পের
ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে অঙ্গরাজ্যটির গভর্নরের আপত্তি সত্ত্বেও লস অ্যাঞ্জেলেসে ২ হাজারের মতো জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
স্থানীয় সময় শনিবার (৭ জুন) ক্যালিফোর্নিয়ার বিশৃঙ্খলা দমনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম। সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ উসকানিমূলক এবং এটি কেবল উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।’
সম্প্রতি ১১৮ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) কর্মকর্তারা। তাদের দাবি গ্রেপ্তারদের মধ্যে পাঁচজন অপরাধী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং কিছু ব্যক্তির আগের ফৌজদারি রেকর্ড রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ( ৬ জুন) ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে একটি পোশাকের গুদামের বাইরেও অভিযান চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের প্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ওই কোম্পানির এক নিয়োগকর্তা কিছু কর্মীর জন্য ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করছিলেন।
অভিবাসী অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেন, হোম ডিপোর দোকানগুলোর বাইরে এবং একটি ডোনাট শপের সামনেও অভিবাসীদের আটকের ঘটনা ঘটে।
এর পরপরই গ্রেপ্তার ও আটকদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দ্বিতীয় দিনেও চলতে থাকায় এবং টিয়ার গ্যাস ও ধোঁয়ায় বাতাস ভরে উঠলে হোয়াইট হাউজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ জোরদার করে। বর্ডার প্যাট্রোলের দাঙ্গা-প্রতিরোধী ইউনিট মোতায়ন করা হয় বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের আগ্রাসী অবস্থান বোঝাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্স পোস্টে বলেন, ‘যদি সহিংসতা চলতেই থাকে, তাহলে ক্যাম্প পেন্ডলটনের অ্যাকটিভ ডিউটি মেরিনদেরও মোতায়েন করা হবে— তারা সর্বোচ্চ সতর্কতায় আছে।’
এদিকে, নিউসামের অফিস জানায়, ‘টাইটেল ১০’ কর্তৃত্ব ব্যবহার করে ক্যালিফোর্নিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি অংশ ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ট্রাম্প, যার ফলে গভর্নর নয়, এখন কমান্ড চেইনের শীর্ষে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।
এ বিষয়ে, হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, বিক্ষোভের সময় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ যে কাজ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অপরাধীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও তাদের ফিরিয়ে দিতে অপরিহার্য। এই সহিংসতার প্রেক্ষিতে ক্যালিফোর্নিয়ার অদক্ষ ডেমোক্র্যাট নেতারা তাদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব পুরোপুরি ত্যাগ করেছেন।’
সেনা মোতায়নের আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নিউসাম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস নিজেদের কাজ না করেন, তাহলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করবে এবং সমস্যা সমাধান করবে। যেভাবে দাঙ্গা ও লুটপাটকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, ঠিক সেভাবেই করবে।’
এর আগে, ২০২০ সালে মিনিয়াপলিসে জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশ হত্যা করার পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমন করতে ট্রাম্প একাধিক রাজ্যের গভর্নরদের ওয়াশিংটন ডিসিতে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ করেন। অনেক গভর্নর তাতে সম্মত হয়ে ফেডারেল জেলার উদ্দেশ্যে সেনা পাঠানো হয়েছিল।
এ ছাড়াও ট্রাম্প তখন বিদ্রোহ দমন আইন প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছিলেন। আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে এটি খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছে। তবে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বলেন, এটি ‘শুধুমাত্র সবচেয়ে জরুরি ও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে’ প্রয়োগ করা উচিত।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ওই আইন কার্যকর করেননি এবং শনিবারও তিনি এটি কার্যকর করেননি বলে জানিয়েছেন ক্যারোলিন লেভিট ও গ্যাভিন নিউসাম।
আরও পড়ুন: পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
এই বিক্ষোভে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের মধ্যে ছিলেন সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়নের আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট ডেভিড হুয়ের্তা। বিচার বিভাগীয় মুখপাত্র কিয়ারান ম্যাকএভয় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হুয়ের্তার আইনি প্রতিনিধিত্ব রয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
ডেমোক্র্যাট সিনেট ও সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার তার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমর এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘মুক্তভাবে মত প্রকাশের অধিকার চর্চার কারণে মার্কিন নাগরিকদের গ্রেপ্তার ও আটকের একটি ভয়ানক ঘটনা দেখা যাচ্ছে।’
এই অভিবাসন গ্রেপ্তারগুলো এমন সময়ে হচ্ছে, যখন ট্রাম্প ও তার প্রশাসন দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে অভিবাসীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস বলেন, ‘এই কর্মকাণ্ড দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে ভয় তৈরি করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।’
১৯০ দিন আগে