সেই সাথে সংস্থাটি শিক্ষা ব্যবস্থায় যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা পেয়েছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সুপারিশ বিষয়ে দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত দুটি পত্র (বিভিন্ন বিদ্যালয়ে দুদক চেয়ারম্যানের আকস্মিক পরিদর্শন সংক্রান্ত প্রতিবেদনসহ) আজ কমিশনের বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে সচিবালয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পৌঁছানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পাঁচটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তিনি কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ১১ শিক্ষকের মধ্যে নয়জনকে অনুপস্থিত পেয়েছেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে অলসভাবে বসে ছিল এবং ঘোরাঘুরি করছিল।
অন্যদিকে ভাটিয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ১১ শিক্ষকের মধ্যে দুজনকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। সেখানে দ্বিতীয় শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী ২৬ জানুয়ারি অনুপস্থিত থাকলেও তাদের উপস্থিত দেখানো হয়।
সীতাকুণ্ড উপজেলার শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। তাছাড়া এ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে এক বা দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ ২৭ শিক্ষার্থীকে জনপ্রতি দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তীর্ণ করার মাধ্যমে শিক্ষাবিমুখ করা হচ্ছে। কারণ তারা জানে, ফেল করলেও টাকার বিনিময়ে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। শিক্ষকরাও না পড়িয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। এক ভয়াবহ দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হতে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা,’ বলা হয় প্রতিবেদনে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন মনে করে, এ ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা ও অবক্ষয় থেকে আশু উত্তরণ প্রয়োজন। এ অবস্থার পরিত্রাণ না ঘটলে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা-৪ অর্জন অনিশ্চিত এবং বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করা দুরূহ হয়ে পড়বে।’
দুদক মনে করে, কমিশনের চেয়ারম্যানের আকস্মিক পরিদর্শনে দেখা ঘটনাগুলো পুরো শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান বিশৃঙ্খলা ও অবক্ষয়ের চিত্র বহন করে। বিদ্যালয়গুলোর এমন অব্যবস্থাপনা সারা দেশের চিত্র কিনা তা ভেবে তারা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা দূর করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জরুরি কর্মসূচি নেয়া অত্যাবশ্যক বলে পরামর্শ দেয়া হয় কমিশনের চিঠিতে।