নিজ কার্যালয়ে ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কফি আনানের রাখাইন রাজ্যবিষয়ক পরামর্শক কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ দেয়া হয়েছে তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের আহ্বান জানায় সুইজারল্যান্ড।
রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সংকটকে মূলত ‘রাজনৈতিক সংকট’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করতে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে সুইজারল্যান্ড।
সংকট সমাধানে তার দেশ সেবা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান রেনে হোলেসটাইন।
রাষ্ট্রদূতের মতে, জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্টের যৌথ সফরের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তা সমাধানে তারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুইস প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসের বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে যাওয়া নিয়ে হোলেসটাইন বলেন, ‘আসলে, প্রেসিডেন্টের সফরের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এ মানবিক সংকটের কারণে গুরুতর আক্রান্ত বাংলাদেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করা।’
আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য ঘূর্ণিঝড় ও বর্ষাকাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, উদ্বাস্তুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উচ্চতর প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে একাধিকবার যাওয়া সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের নতুন করে আগমন সাধারণভাবে বাংলাদেশের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপরও সাংঘাতিক চাপ সৃষ্টি করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুসহ এ সংকটের কারণে গুরুতরভাবে আক্রান্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সুসংগঠিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সাড়া দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক চ্যালেঞ্জ এবং সীমাবদ্ধতা থাকার পরও বাংলাদেশ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের গ্রহণ ও আশ্রয় দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টির মতো কাজ করায় আবারো প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত হোলেসটাইন।
তিনি জানান, উদ্বাস্তুদের আশ্রয়কেন্দ্রের মানোন্নয়ন এবং নতুন কেন্দ্র করার পরিকল্পনায় সুইজারল্যান্ড সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নেয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এমন পরিবেশে স্থানান্তর করা নিরাপদ, সম্ভব ও কার্যকরী হবে কিনা তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট নয়।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সব উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে মানবাধিকারের আইন মেনে গ্রহণ করার প্রতি গুরুত্ব দেন হোলেসটাইন।