বায়োগ্যাসের কল্যাণে রান্নার কাজে গৃহিণীরা থাকছেন স্বাস্থ্যঝুঁকি মুক্ত। সেই সাথে প্লান্ট স্থাপনের জন্য এলাকাবাসী ঝুঁকছেন ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারের দিকে।
বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ইমপ্যাক্ট (ধাপ-২) প্রকল্পের আওতায় সদর দক্ষিণ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন শুরু হয়। প্রথম বছরে ২০টি পরিবার প্লান্ট পায়। পরের অর্থবছরে স্থাপন করা হয় ১৭০টি প্লান্ট। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত আরো ১১০টি প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি প্লান্ট হতে তিন থেকে পাঁচটি পরিবার সংযোগ নিয়েছে।
উপজেলার ধনঞ্জয়নগর, রাধাকৃষ্ণনগর, নাওড়া, আলমপুর, ধনপুর ও হাজতিয়া গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে এসব বায়োগ্যাস প্লান্টের ব্যবহার দেখা গেছে।
ধনঞ্জয়নগরের জাকির হোসেন জানান, তিনি পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছেন। যা থেকে নিজে গ্যাস ব্যবহার করছেন এবং বাণিজ্যিকভাবে চারটি সংযোগ দিয়েছেন। এতে যেমন জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে আবার কিছু বাড়তি আয়ও পাওয়া যাচ্ছে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বাড়িতে তিনটি দেশি বা একটি বিদেশি গরু থাকলেই যে কেউ বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করতে পারেন। এছাড়া পোল্ট্রি খামারের মুরগির বর্জ্য থেকেও প্লান্ট স্থাপন করা যায়। এ জন্য বিনামূল্যে কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি প্রতিটি প্লান্ট স্থাপনে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়। সেই সাথে সহজ শর্তে ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা আছে।
সদর দক্ষিণ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্লান্ট স্থাপনে এ পর্যন্ত ২৭ জন ঋণ নিয়েছেন। যেখানে অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক প্রজেষ কুমার সাহা জানান, যে কেউ প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিলে তাদের গরু বা মুরগি কেনার জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়। সেই সাথে নিজস্ব প্রকৌশলীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্লান্ট স্থাপন তদারকি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপালী মণ্ডল বলেন, একটি ছোট পরিবারের রান্নার জন্য একটি ছোট প্লান্টই যথেষ্ট। এতে ওই পরিবারের জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি গৃহিণীর শরীরও ভালো থাকে। বায়োগ্যাস ব্যবহারে মানুষকে সামাজিকভাবে উদ্বুদ্ধকরণ ও জানানোর কাজটি সরকারি উদ্যোগেই করা হবে বলে জানান তিনি।