বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের আসনগুলো একরকম চূড়ান্তই বলা যায়। তবে অন্য আসনগুলোতে দুই দলই বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কড়া সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। দল থেকে আজীবন বহিষ্কারের কথা বলা হলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী ৭৯ জন।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে ক্ষমতাসীন দলের অনেক সিনিয়র নেতা জানান, বিরোধী দলের প্রার্থীদের তুলনায় নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন।
এ বিষয়ে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল কাজ শুরু করেছে।
অন্য সদস্যরা হলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক এবং আরেক মনোনয়ন বঞ্চিত আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বিদ্রোহী প্রার্থীদের আজীবন বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বারবার একই ঘোষণা দিয়ে এসেছেন।
তবুও হাই কমান্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে ৭৯ জন প্রার্থী বিভিন্ন সংসদীয় আসনে লড়ার জন্য স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানান। দলের পরাজয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বড় কারণ হতে পারেন বলে জানান তারা।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১১তম সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনে ২৬৪টি মনোনয়ন জমা দেয় আওয়ামী লীগ। বহিষ্কারের বিষয়টি তোয়াক্কা না করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ৭৯ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
অনেক সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্যের পরিবর্তে এবার আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন ৪৭ জন নতুন মুখ। কিছু নেতা দলের মনোনিত প্রার্থীদের বিষয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।
রাজধানীতে গত মঙ্গলবারের এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন। ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, এখানে অনেক সমস্যা বিরাজমান। আলোচনার পর যদি বিদ্রোহীরা দ্বিমত পোষণ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই এবং আওয়ামী লীগ থেকে তাদের আজীবন বহিষ্কার করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, এই সমস্যা দ্রুত সমাধানে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত কয়েকজন নেতা কাজ করবেন।
সিনিয়র নেতারা জানান, যথাযথভাবে বিদ্রোহী প্রার্থী সমস্যা সমাধান করা হবে। কেননা নির্বাচনে তাদের উপস্থিতি বিরোধী দলের জন্য লাভজনক হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জানান, তাদের আলোচনার প্রক্রিয়া পুরোদমে চলছে। ‘যারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরাসরি দলের মনোনিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছি।’
ওবায়দুল কাদের জানান, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে এই টিম নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করবে এবং নির্বাচনী কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের জানাবে।