কুমিল্লা, ২৫ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- শিক্ষক সংকটে রয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ। এছাড়া রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটও। এতে ব্যাহত হচ্ছে ১৬০ আসনের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম
মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৯২সালে কুমিল্লার কুচাইতলীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজটি প্রতিষ্ঠা হয়। ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। ৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরিতে যে জনবল নিয়ে এই মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২৬ বছরে এসেও জনবল বাড়েনি বরং কমেছে। কলেজটিতে প্রতি বছর ১৬০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে ৬১৪ জন শিক্ষার্থীর কলেজটিতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের ১৪৬টি পদের মধ্যে ৫৮টি পদ শূন্য রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা আরও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজটির এনাটমি বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক নেই। প্রভাষক আর গেস্ট টিচার দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এছাড়া ফিজিওলজিতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক নেই। বায়োকেমিস্ট্রিতে সহযোগী অধ্যাপক থাকলেও অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক নেই।
কমিউনিটি মেডিসিনে সহকারী অধ্যাপক আছে, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক নেই। ফরেনসিক মেডিসিনে মাত্র দুইজন প্রভাষক রয়েছে। আর প্যাথলজিতে সহকারী অধ্যাপক থাকলেও, নেই অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক।
একই অবস্থা মাইক্রো বায়োলজি বিভাগেও। এ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক আছে। তবে নেই অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক।
ফার্মাকোলজিতে আছে সহকারী অধ্যাপক; কিন্তু অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের পদটি শূন্য দির্ঘদিন ধরেই।
এমন অবস্থায় মেডিকেল কলেজটি চলছে জোড়াতালি দিয়ে। যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন দারুন ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকের অভাবে পরিপূর্ণ শিক্ষা লাভ করতে না পারায় ভবিষ্যত কর্মজীবনে এর প্রভাব পড়ার হতাশা ব্যক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ১ম ও ২য় বর্ষে বেসিক সাবজেক্টগুলো পড়ানো হয়। শুরুতে শিক্ষকের সংকটের কারণে আমাদের কোর্স শেষ করায় সমস্যায় পড়তে হয়। এখানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অতিথি শিক্ষক এনে পাঠদান করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার মান নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তারা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. মহসিন-উজ-জামান চৌধুরী বলেন, আমরা বার বার আবেদন করার পরও পদের সংখ্যা বাড়েনি। মঞ্জুর করা পদ গুলোও খালি।
তিনি বলেন, গেস্ট টিচার দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি। এতো সংকট স্বত্ত্বেও আমরা শিক্ষা দানের চেষ্টা করছি। ভালো রেজাল্টও হচ্ছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেলে আমরা আরো ভালো রেজাল্ট করতে পারবো।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, এখানে শিক্ষকদের বাসস্থান নেই। নেই মসজিদ ও অডিটরিয়াম। এ বিষয়েও কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।
তিনি বলেন, একেবারে প্রয়োজনীয় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও নেই। এতে দাপ্তরিক ও অভ্যন্তরিণ কাজও ব্যাহত হচ্ছে।