এলাকাবাসী জানায়, গাইনি চিকিৎসক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডিগ্রি না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে কৈতক সরকারি হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক সেজে শত শত রোগীর সাথে প্রতারণা করে আসছেন আয়শা নামের ওই নার্স।
নার্স আয়েশা শুধু নামে নয়, প্যাডেও পদবী লিখে নিজেকে গাইনি চিকিৎসক পরিচয় দিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালে কৈতক হাসপাতালে একজন নার্স হিসেবে যোগদান করেন আয়শা বেগম। কিছুদিন পর গাইনি চিকিৎসক সেজে বাসায় চেম্বার খুলে নিয়মিতভাবে রোগী দেখা শুরু করেন তিনি।
‘হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক না থাকার সুযোগে ওই বিভাগের নার্স হয়তো এমনটি করে থাকতে পারেন। তবে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার প্রতারণার প্রতিবাদ করলে তাদের নানা ধরনের হুমকি দেয়া হয়। চিকিৎসকরা মান সম্মানের খাতিরে প্রতিবাদ থেকে বিরত থাকেন।
এছাড়া নার্স আয়শার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতিসহ ভুয়া জখমি সনদ (মেডিকেল রিপোর্ট) ইস্যু করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, নার্স আয়শা বেগম যোগদান করার পরই নানা অনিয়ম শুরু হয়। গাইনি চিকিৎসক সেজে রোগীদের ভুয়া ব্যবস্থাপত্র দেয়াসহ ভুয়া জখমি সনদের একাধিক ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এসব বিষয়ে হাসপাতালে গিয়ে সরাসরি নার্স আয়শা বেগমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কৈতক হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক মোহাম্মদ মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এখানে গাইনি চিকিৎসক নেই, দীর্ঘদিন নার্সদের দ্বারাই গাইনি বিভাগের কাজ চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, নার্সরা রোগীর সেবা দেবে কিন্তু ব্যবস্থাপত্র দেয়া যাবে না। এছাড়া ডেলিভারি চিকিৎসা বিষয়ে নার্সদের পরামর্শ দেয়া আছে রোগী আসলে তারা কি ধরনের চিকিৎসা দেবে।
হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬০০ এর অধিক রোগীর ডেলিভারি করা হয়েছে এ হাসপাতালে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাক্তার আশুতোষ দাস বলেন, কৈতক হাসপাতালের নার্স আয়শা বেগমের বিরুদ্ধে গাইনি চিকিৎসক পরিচয়ে প্রাইভেট চিকিৎসাসহ নানা অনিয়মে অভিযোগ তদন্ত চলছে। তদন্তের পর দোষী প্রমাণিত হলে তাকে এখান থেকে অন্য জায়গায় বদলি করা হবে।