শুক্রবার ভোরে তেরশ্রীর শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস।
এ সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবীবসহ বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা ও এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনী তেরশ্রীর তৎকালীন জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরী, কলেজ অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন স্বাধীনতাকামী মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ওই সময় তারা পুরো গ্রামে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
এলাকার বয়োবৃদ্ধরা জানান, সেই দিন শীতের কাকডাকা ভোরে পুরো গ্রামটি ঘিরে ফেলে হানাদার বাহিনী এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনী। তারা ঘুমন্ত গ্রামবাসীর ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রথমে তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানকে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে। এরপর তেরশ্রীর জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদেরও একই কায়দায় হত্যা করে ও পুরো গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। হানাদাররা চলে যাওয়ার পর আশপাশের গ্রামের লোকজন এসে মৃত দেহগুলো নিয়ে স্থানীয় শ্মশানে ও কবরস্থানে মাটি চাপা দেয়।
এলাকাবাসীর দাবির মুখে ৪১ বছর পর শহীদদের স্মরণে তেরশ্রী গ্রামে সরকারিভাবে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়। সেই স্তম্ভে ৩৬ জন শহীদের নাম লিপিবদ্ধ হলেও বাকিদের নাম অজানাই রয়ে গেছে। প্রতি বছর এই দিনে এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা শহীদদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করে।