গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) নিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ এলাকায় হাজারেরও বেশি দৌড়বিদ উপস্থিত হয়েছেন। বৃষ্টির কোনো বাধাই যেন মানবেন না তারা। ভোর ঠিক ৬টায় বাঁশির এক আওয়াজে শুরু হাফ ম্যারাথন।

জেলা শহর হয়ে চলে যায় সবুজ শ্যামল চা বাগান ঘেরা সিলেট বিমানবন্দর সড়কে। চা বাগানের মাঝ দিয়ে শত শত মানুষের ছুটে চলা। ১২ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ অংশ নেন এই ম্যারাথনে।

সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথনের ২১ ও ১০ কিলোমিটারের ম্যারাথন শেষ হয় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে।

প্রকৃতি কন্যা সিলেটে হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন অনেকে।

স্বামী-সন্তান নিয়ে ম্যারাথনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে সিলেটে এসেছেন মিতা মাহফুজা।

তিনি বলেন, সিলেট আমার অনেক পছন্দের জায়গা। সবুজ চা বাগানের মাঝ দিয়ে যে রাস্তাটা, সেখানে দৌঁড়াতে আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে এবার শুক্রবার সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি যেন এক অন্যরকম মাত্রা যোগ করেছে, সকালটা অনেক সুন্দর ছিল। হাঁটা ও দৌড়ানো আমার খুব পছন্দের। এটা আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখে।

মোট ১২০০ দৌড়বিদের সমন্বয়ে ২১ দশমিক ১ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটার এই দুই ক্যাটাগরিতে ম্যারাথন আয়োজিত হয়।

ম্যারাথনে অংশ নেওয়া দৌড়বিদরা মনে করেন, খেলাধুলার মাধ্যমে সুন্দর ও সুস্থ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো হাফ ম্যারাথন দৌড় অনুষ্ঠিত

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী হস্তশিল্পকে মূল থিম করে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সিলেটে অনুষ্ঠিত হয় হাফ ম্যারাথন। সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত এই ম্যারাথনে অংশ নেন দেশ-বিদেশের প্রায় ১২০০ দৌড়বিদ।

সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন ডা. ওরাকাতুল জান্নাত বলেন, আমরা সবসময় আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ও রক্ষা করতে চাই। ২০২২ সালে সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথনের মূল থিম ছিল সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি। গত বছর আমরা চেয়েছিলাম ম্যারাথনের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী  শীতল পাটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার।

তিনি আরও বলেন, এবার আমরা সিলেটের মণিপুরী হস্তশিল্পকে আরেকটু সামনে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। মণিপুরী হস্তশিল্প আমাদের সিলেটের একটা ঐতিহ্য যা যথাযথ প্রচার ও প্রসার না হওয়ার কারণে সেভাবে বিকশিত হচ্ছেনা। তাই আমরা চেষ্টা করছি আমাদের ঐতিহ্য মণিপুরী হস্তশিল্পকে দেশ ও দেশের বাইরে মানুষের কাছে পরিচয়ে করিয়ে দেওয়ার।

ম্যারাথনের ২১ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটারে সমাপ্তিস্থল ছিল সিলেটের  ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম সেখানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইউনিমার্ট লিমিটেডের চিফ অপারেশন অফিসার শাহীন মাহমুদ, ইউনিমার্ট লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং এইচ ইউ এম মেহেদি সাজ্জাদ এবং আয়োজক কমিটির সদস্য সিলেট রানার্স কমিউনিটির অ্যাডমিন সৈয়দ ফজলুর রহিম সোহাগ, মো. হাসান আহমেদ, মোহাম্মদ আবু সালেহ,  ফয়েজ জামান, মাহমুদুর রহমান মিতুল ও কামরুল ইসলাম।

১০ কিলোমিটারে পুরুষ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন এম ডি সাখাওয়তা হোসেন হৃদয়, দ্বিতীয় ⁠দ্বীপ তালুকদার এবং তৃতীয় রহিম উদ্দীন।

নারী বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন আফসানা হালিমা, দ্বিতীয় ⁠রাশিদা আক্তার এবং তৃতীয় শাহ তামান্না সিদ্দীকা।

২১ দশমিক ১ কিলোমিটারে পুরুষ বিভাগের প্রথম স্থান অর্জন করেন গোলাম রাহাত তোফায়েল, দ্বিতীয় এম ডি ইমরান হোসেন এবং তৃতীয় ⁠আশরাফুল আলম।
 
২১ কিলোমিটার নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মভি সূত্রধর এবং রানার্স আপ হয়েছেন তাসিনিয়া তিথি।

আরও পড়ুন: শুক্রবার মুজিবের বাংলাদেশ-বিমান হাফ ম্যারাথন ২০২৩

বয়সকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মুম্বাই ম্যারাথনে শাড়ি পরে দৌড়ালেন ৮০ বছরের ভারতী