আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ডলফিনের পর কাছিম হত্যা, রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেই
করোনা সংকটে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার সৈকতসহ এখানকার হোটেল-মোটেল ও সব পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু জনশূন্য এই সমুদ্র সৈকত সয়লাব হয়ে গেছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্যে। বিশেষ করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, দরিয়া নগর থেকে শুরু করে হিমছড়ি সৈকত এলাকা পর্যন্ত শনিবার রাত থেকে একের পর এক বর্জ্য ভেসে আসছে।
এই বর্জ্যের মধ্যে শুধু প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক পণ্য নয় ভেসে এসেছে ছেঁড়া নাইলনের জাল ও শত শত বিভিন্ন প্রকারের মদের বোতল। এতে আটকে সামুদ্রিক নানা ধরনের প্রাণী মারা পড়ার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা করছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা।
কলাতলী ভ্যালি হ্যাচারি এলাকার বাসিন্দা জাফর আলম বলেন, ‘একসাথে এত বর্জ্য ভেসে আসার ঘটনা এই প্রথম। দীর্ঘ এলাকা জুড়ে শুধু বর্জ্য আর বর্জ্যে সয়লাভ হয়ে গেছে। এসব বর্জ্যের স্তুপের সাথে মৃত কাছিম ভেসে আসায় বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।’
কক্সবাজার পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, কক্সবাজারের কলাতলীতে অবস্থিত হোটেল মোটেলগুলো এমনিতে মলমূত্র সরাসরি সৈকতের পানিতে ছেড়ে দিচ্ছে। তার উপর নির্জন সৈকতে কেউ না থাকার সুযোগে বর্জ্যগুলো সাগরে ফেলে দিয়েছে। হয়তো হোটেল কর্তৃপক্ষ মনে করছিল সাগরে পানিতে এসব বর্জ্যগুলো ভেসে যাবে, কিন্তু সাগরের পানি বর্জ্যগুলোকে উল্টো তীরে ভিড়ে দিয়েছে।
সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশ নামের কক্সবাজার ভিত্তিক পরিবেশ সংগঠনের চেয়ারম্যান আ.ন.ম মোয়াজ্জেম হোসাইন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখেছি প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক বর্জ্য আর ছেঁড়া জাল ও মদের বোতল ভেসে এসেছে। তবে কি কারণে ভেসে এসেছে জানা না গেলেও এসব বর্জ্যে সামুদ্রিক মাছসহ বিভিন্নভাবে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই, দ্রুত বর্জ্যগুলো সাগর থেকে অপসারণ জরুরি।’
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘সাগরে বর্জ্য ভেসে আসার খবরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে নানা প্রকার বর্জ্যের পাশাপাশি বেশ কিছু ছেঁড়া জাল, প্লাস্টিক, ইলেক্ট্রনিক ও কিছু সামুদ্রিক মৃত কাছিমও ভেসে এসেছে। তবে কি পরিমাণ বর্জ্য সেটি নির্ণয় করা কঠিন। আমার ধারণা সাগরে মাছ ধরার ট্রলার থেকে এসব বর্জ্য সাগরে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক কারণে বর্জ্যগুলো ভেসে আসতে পারে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বর্জ্যগুলো কোথা থেকে কীভাবে এসেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সাথে সমুদ্র চর থেকে এসব বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’