বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার বায়ুমান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে মহাপরিচালককে (ডিজি) হাজির হতে নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের তলবে সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি হাইকোর্টে হাজির হন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম।
আদালতের শুনানিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, বায়ূদুষণ নিয়ে আদালতের আদেশ আমাদেরকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে। এত কিছুর পরেও কেন দূষণ কমছে না-বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে সে বিষয়ে একটি সেমিনার করেছি। সেখানে তারা কিছু মতামত দিয়েছেন।
সে মতামতগুলো তিনি আদালতে পড়ে শোনান। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
এদিকে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে গত বছরের ৯ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিল পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। কিন্তু এর মধ্যে খুলনার জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করে জনপ্রশাসন। এ তথ্য আদালতকে অবহিত করার পর এক মাসের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয় আদালত।
এরপর আদালত-বায়ু দূষণরোধে বিশেষজ্ঞ মতামত এবং উচ্চতর কমিটির সুপারিশ নিয়ে একটি সমন্বিত কার্যক্রম তৈরি করে ১০ মার্চের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেয়।
রাজধানীতে বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
এই রিটের ধারাবাহিকতায় ১৩ জানুয়ারি এ আদেশ দেয় আদালত।
এর আগে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে গত বছরের ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেয়।
ওইদিন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, রুলে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছে আদালত।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকা শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তা ও নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজ করার পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
১৫ দিনের মধ্যে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ পালন করে এর দুই সপ্তাহের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে এবং যেসব এলাকা ধুলাবালুপ্রবণ, সেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দুবার পানি ছিটিয়ে দিতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দেয়া হয়।
এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে দুই সিটির নির্বাহীকে তলবও করেছিল হাইকোর্ট।